ইসলাম
ইসলাম (আরবি: ۘالِإسْلَام, আল-ইসলাম [ʔɪsˈlæːm] () একটি )একেশ্বরবাদী এবং ইব্রাহিমীয় ধর্মবিশ্বাস যার মূল শিক্ষা হলো এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন স্রষ্টা নেই এবং মুহাম্মাদ (ﷺ) হলেন আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ নবী ও রাসূল।[৪][৫][৬] এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্ম,[৭][৮] যার অনুসারী এবং স্বীকৃতিদানকারীর সংখ্যা প্রায় ২০০কোটি[৯][১০] যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৪.৪%।[১১][১২] ইসলাম ধর্মের অনুসারী এবং স্বীকৃতিদানকারীরা মুসলিম এবং মুসলমান নামে পরিচিত।[১৩][১৪][১৫] মুসলমানরা বিশ্বের ৫০ এর অধিক দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি গঠন করেছে।[৭] ইসলামের মৌলিক শিক্ষা হলো আল্লাহ দয়ালু, করুনাময়, এক ও অদ্বিতীয় এবং একমাত্র ইবাদতযোগ্য প্রভু।[১৬]
ইসলাম | |
---|---|
الاسلام আল ’ইসলা-ম | |
ধরন | সার্বজনীন ও বিশ্বজনীন ধর্ম |
প্রকারভেদ | ইব্রাহিমীয় |
ধর্মগ্রন্থ | কুরআন |
ধর্মতত্ত্ব | একেশ্বরবাদ |
ভাষা | মূল ভাষা: ধ্রুপদি আরবি অন্যান্য ভাষা: বিশ্বের সমস্ত ভাষা[১] |
অঞ্চল | সমগ্র বিশ্ব[২] |
প্রবর্তক | মুহাম্মাদ[৩] |
উৎপত্তি | খ্রিষ্টীয় ৭ম শতাব্দী মক্কার নিকটে জাবালে নুর পর্বত, হেজাজ, আরব |
অনুসারীর সংখ্যা | আনু. ২০০ কোটি (উম্মাহর অংশ, মুসলিম নামে অভিহিত) |
মানবজাতিকে পথ প্রদর্শনের জন্য তিনি যুগে-যুগে অনেক নবী-রাসূল, আসমানী কিতাব এবং নিদর্শন পাঠিয়েছেন।[১৭] ইসলাম ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হলো পবিত্র আল-কুরআন, যা স্বয়ং আল্লাহর বাণী; আর সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (২৯ আগস্ট ৫৭০- ৮ জুন ৬৩২) এর কথা, কাজ ও মৌনসম্মতিকে সুন্নাহ বলা হয় যা হাদিস নামে লিপিবদ্ধ রয়েছে। তবে সমস্ত সুন্নাহই হাদিস, কিন্তু সমস্ত হাদিস সুন্নাহ নয়।
ইসলামী ধর্মগ্রন্থানুযায়ী, এটি আল্লাহর নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। ইসলাম সর্বজনীন ধর্ম। ইসলাম শুধুমাত্র মক্কা-মদিনা বা আরব দেশ ও জাতির জন্য নয় বরং ইসলাম বিশ্বের সকল বর্ণ, গোত্র, জাতি এবং ধনী-গরিব, সাদা-কালো ও আরব-অনারব সকল মানুষের জন্যই প্রেরিত ও একমাত্র মনোনীত ধর্ম।
ইসলামী ধর্মমত অনুযায়ী, যুগে যুগে আদম, ইব্রাহিম, মুসা, ইসা সহ সকল রাসূলগণের উপর যেসব আসমানী কিতাব অবতীর্ণ হয়েছিল, মূল আরবি ভাষার কুরআন হলো তারই সর্বশেষ, পূর্ণাঙ্গ, অপরিবর্তিত ও চূড়ান্ত সংস্করণ।[১৮][১৯][২০][২১] ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে বিদায় হজ্বের দিন এই জীবন ব্যবস্থাটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে স্বয়ং স্রষ্টার কাছ থেকে।
অন্যান্য ইব্রাহিমীয় ধর্মের মতো ইসলামও শেষবিচারের শিক্ষা দেয় যেখানে সৎকর্মশীলরা পুরস্কারস্বরূপ জান্নাত পাবে আর পাপীরা জাহান্নামের শাস্তি পাবে।[২২][২৩] ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের মধ্যে অন্যতম হলো ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ, যা পালন করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অত্যাবশকীয় কর্তব্য। তাদেরকে ইসলামি আইন বা শরিয়াহ্ মেনে চলতে হয়, যা প্রকৃতপক্ষে সমাজ ও জীবনের সকল ক্ষেত্র ও যাবতীয় কার্যকলাপকে নির্ধারণ করে দেয়। ব্যাংক খাত থেকে দান-ছদকাহ্, নারী থেকে পরিবেশ সবই এর অন্তর্গত।[২৪][২৫][২৬] মক্কা, মদিনা ও জেরুজালেম ইসলামে সবচেয়ে সম্মানিত ও পবিত্রতম তিন শহর।[২৭]
ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী ইসলাম শুধুমাত্র কোন নতুন ধর্মই নয়, বরং সৃষ্টির শুরু থেকেই ইসলামের উৎপত্তি। আদম ছিলেন এই পৃথিবীর প্রথম মানব এবং মানবজাতির মধ্যে ইসলামের প্রথম নবি। আর সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবি হলেন মুহাম্মাদ, যিনি সমগ্র সৃষ্টি জগতের জন্য সর্বেশষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ চূড়ান্ত নবী ও রাসুল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন স্রষ্টার পক্ষ থেকে।[২৮][২৯][৩০]
ইতিহাসগতভাবে এর উৎপত্তি ধরা হয় ৭ম শতকের শুরুর দিকে মক্কায় নবী মুহাম্মাদের নবুয়াতের পরবর্তী সময় থেকে।[৩১] ৮ম শতক নাগাদ উমাইয়া খিলাফত পশ্চিমে ইবেরিয়া (স্পেন) থেকে পূর্বে সিন্ধু নদ পর্যন্ত বিরাট অঞ্চল জুড়ে সম্প্রসারিত হয়। ৮ম থেকে ১৩ শতককে ঐতিহ্যগতভাবে ইসলামি স্বর্ণযুগ বলা হয়।
ঐতিহাসিকভাবে আব্বাসীয় খিলাফতের আমলে মুসলিম বিশ্ব বৈজ্ঞানিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে উন্নতির শীর্ষে ছিল।[৩২][৩৩][৩৪] ইসলামের প্রসার ঘটেছে মূলত ধর্মপ্রচার এবং রাজ্যজয়ের মাধ্যমে। রাজ্যজয়গুলো ঘটেছিল আলাদা আলাদা সম্রাজ্যের দ্বারা যেমন উসমানীয় সম্রাজ্য, আর ধর্মান্তরিতকরণ ঘটেছিল ইসলামি ধর্মপ্রচার কার্যক্রমের[৩৫] সাথে এবং নতুন নতুন রাজ্যজয়ের প্রভাবে।
মুসলিমরা দুইটি প্রধান সম্প্রদায়ের অন্তর্গত, সুন্নি (৮০-৯০%) এবং শিয়া (১০-২০%)।[৩৬] মূলত যারা শিয়া নয় তাদের সবাইকেই সুন্নি (মুসলিম) হিসেবে গণনা করা হয়। সুন্নি ইসলাম মূলত অনেকগুলো ইসলামী মতাদর্শের সমষ্টি। এছাড়াও কিছু মুসলিম নিজেদেরকে শিয়া সুন্নি কোনো দলেই ফেলেন না, তারা ইসলাম ধর্মের মধ্যে বিভাজনে বিশ্বাসী না। তারা কুরআন এবং হাদিসকে মূল ধরে এগুলোর আলোকে (ইজমা ও কিয়াস) ইসলাম পালন করে এবং নিজেকে বিশুদ্ধ মুসলিম হিসেবে গড়ার চেষ্টা করে। তবে কুরআন এবং হাদিসের স্পষ্ট নির্দেশনার ক্ষেত্রে ইজমা এবং কিয়াস গ্রহণযোগ্য নয় বলে তারা বিশ্বাস করে। আর তারা মনে করে সকল মুসলিমের উচিত ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের দ্বীন (মাযহাব) হিসেবে ইসলামকে স্বীকার করা এবং নিজেদেরকে মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেওয়া।
সর্ববৃহৎ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়া, বিশ্বের সমগ্র মুসলিম জনসংখ্যার ১৩%-ই এখানে বাস করে।[৩৭] বিশ্বের সমগ্র মুসলিম জনসংখ্যার ৩১%-ই বাস করেন দক্ষিণ এশিয়ায়,[৩৮] মুসলিম জনগোষ্ঠীর বড় অংশটাই এই অঞ্চলে বসবাস করে।[৩৯] মধ্যপ্রাচ্য-উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলে বাস করেন ২০%[৪০] এবং এটি এ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান ধর্ম।[৪১] ১৫% বাস করেন সাহারা-নিম্ন আফ্রিকাতে।[৪২] এছাড়াও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মুসলিম সম্প্রদায় দেখা যায় আমেরিকা, ককেসাস, মধ্য এশিয়া, চীন, ইউরোপ, ইন্দোচীন, ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়াতে।[৮][৪৩] ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা আমেরিকা, চীন এবং ইউরোপেও বসবাস করেন।[৪৪][৪৫] অন্যান্য ধর্মের তুলনায় ধর্মান্তর ও উচ্চ জন্মহারের কারণে ইসলাম বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল ধর্মীয় গোষ্ঠী। বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে, ২১শতাব্দীর শেষের দিকে ইসলাম খ্রিস্টধর্মকে ছাড়িয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মে পরিণত হতে পারে।[৪৬]
ব্যুৎপত্তি
আরবি ভাষায়, ইসলাম (আরবি: إسلام, lit. 'submission [to God]') হলো সক্রিয় কর্মধারক, যা স-ল-ম (S-L-M-[س۔ل۔م]) ত্রিশব্দী মূল থেকে উদ্ভূত, যা বেশিরভাগই জমা, নিরাপত্তা এবং শান্তির ধারণার সাথে সম্পর্কিত পদ গঠন করে।[৪৭] ধর্মীয় প্রসঙ্গে, এটি আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণকে বোঝায়।[৪৮] ইসলামের অনুসারী মুসলমান (مُسْلمٌ) হলো একই ক্রিয়াপদ রূপের সক্রিয় কণা এবং এর অর্থ "আত্মসমর্পণকারী (আল্লাহর প্রতি)" বা "যে আত্মসমর্পণ করে (আল্লাহর প্রতি)"। হাদিসে জিব্রাইলে, ইসলামকে ত্রৈধের একটি অংশ হিসাবে উপস্থাপন করা হয় যার মধ্যে রয়েছে ঈমান (বিশ্বাস) এবং ইহসান (সম্পূর্ণতা)।[৪৯][৫০]
"মুসলিম" শব্দটি আরবি "মুসলিম" (مسلم) শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ "আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণকারী"। "মুসলিম" শব্দের সাথে ফারসি "ان" (আন্) প্রত্যয় যুক্ত করে "মুসলমান" (مسلمان) শব্দটি গঠিত হয়েছে। যা একটি বহুবচন প্রত্যয়। অর্থাৎ, "মুসলমান" শব্দটি মূলত বহুবচন শব্দ। তবে বাংলায় এটি একবচনের মতো ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, বাংলা ভাষায় "মুসলমান" শব্দটি দ্বারা একজন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়। আর, বহুবচনের জন্য "মুসলমানরা" (مسلمانانএটি ফারসী বহুবচন, مُسْلِمُوْنَ -এটি আরবী বহুবচন ) শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
ইংরেজি ভাষী বিশ্বে, ইসলামকে ঐতিহাসিকভাবে মুহাম্মাদবাদ বলে অভিহিত করা হত। তবে, এই শব্দটি এখন আর ব্যবহার করা হয় না, কারণ এই নামটি মুহাম্মাদকে ইসলামের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে চিত্রিত করে যা অনেক মুসলিম অস্বস্তিকর বলে মনে করে। এই শব্দটি দাবি করে যে মুসলিমদের ধর্মে মানুষের ভূমিকা ঈশ্বরের চেয়ে বেশি, যা ইসলামের মূল বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক।[৫১]
ধর্মীয় বিশ্বাস
মুসলিমদের ধর্ম বিশ্বাসের মূল ভিত্তি আল্লাহর একত্ববাদ। তারা আরও বিশ্বাস করেন, তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন নিখুঁত ও অবিকৃত এবং মানব ও জ্বীন জাতির উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ আল্লাহর সর্বশেষ বাণী, যা পুনরুত্থান দিবস বা কিয়ামত পর্যন্ত বহাল ও কার্যকর থাকবে। তবে কিছু সম্প্রদায়, যেমনঃ আহ্মদি বা কাদিয়ানী নামক সম্প্রদায় মনে করে মুহাম্মাদ শেষ নবী নন; বরং যুগের চাহিদা মোতাবেক নবুওয়াতের ধারা অব্যহত থাকবে।[৫২] এবং শিয়াদের একটি বিরাট অংশ ইসমাঈলীয়দের মধ্যে প্রচলিত বিশ্বাস যে, ইমাম ইসমাঈল আখেরী নবী ছিলেন।[৫৩] কিন্তু অধিকাংশ ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে অবশ্যই নবি মুহাম্মাদ এর মাধ্যমে নবুয়তের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। তারা বিশ্বাস করেন যে তিনি খাতামুন নাবিয়্যিন বা সর্বশেষ নবী। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, আদম হতে শুরু করে আল্লাহ্ প্রেরিত সকল নবী-রাসুল ইসলামের বাণীই প্রচার করে গেছেন।[৫৪] কুরআনের সূরা ফাতিরে বলা হয়েছে,
“ | আমি আপনাকে (মুহাম্মাদ) সত্যসহ পাঠিয়েছি সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে; আর এমন কোন জাতি নেই যার কাছে সতর্ককারী আসেনি। | ” |
— সূরা ফাতির, আয়াত ২৪ |
ইসলামের দৃষ্টিতে ইহুদি ও খ্রিস্টান উভয় ধর্মাবলম্বীরাই হযরত ইব্রাহিম (আ.)এর শিক্ষার ঐতিহ্য পরম্পরা। উভয় ধর্মাবলম্বীকে কুরআনে "আহলে কিতাব" বলে সম্বোধন করা হয়েছে । কুরআনের সূরা আলে ইমরানে তাদেরকে ইসলামের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে,
“ | বলুন (মুহাম্মাদ), ‘হে আহলে কিতাব! এমন এক কথার দিকে আসো, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই, তা এই যে, আমরা আল্লাহ ভিন্ন অন্য কারো ‘ইবাদাত করব না এবং কোন কিছুকে তাঁর শরীক করব না এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমাদের মধ্যে কেউ কাউকে রব হিসেবে গ্রহণ করব না। তারপরও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বলে দাও, তোমরা এ বিষয়ে সাক্ষী থাক যে, আমরা আত্মসমর্পণকারী। | ” |
— সূরা আল-ইমরান, আয়াত ৬৪ |
এই ধর্ম দুটির গ্রন্থসমূহের বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয়ের উল্লেখ কুরআনেও রয়েছে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে। ইসলামি বিশ্বাসানুসারে এই দুই ধর্মের পন্ডিতগণ তাদের নিকট প্রদত্ত আল্লাহ্-এর বাণীর অর্থগত ও নানাবিধ বিকৃতসাধন করেছেন। মুসলিমরা বিশ্বাস করে, ইহুদিরা তাওরাতকে (তোরাহ) ও খ্রিষ্টানরা ইনজিলকে বিকৃতকরে আল্লাহর বাণীকে অস্বীকার করেছে।[৫৫]
ঈমান শব্দের অর্থ বিশ্বাস।ইসলামের মূল ও প্রধান বিষয়গুলোর প্রতি বিশ্বাসকেই ঈমান বলা হয়।ঈমান বা বিশ্বাসের মৌলিক বিষয় মোট ছয়টি (মতান্তরে সাতটি)।[৫৬][৫৭] পরিপূর্ণ মুসলিম হওয়ার জন্য এই সাতটি বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। ঈমানের এই সাতটি বিষয় হলো আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, ফেরেশতাগণের প্রতি বিশ্বাস, আসমানি কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস, নবি-রাসুলগণের প্রতি বিশ্বাস, আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস, তাকদিরের প্রতি বিশ্বাস। মতান্তরে সাতটি বিষয়ের বাকি একটি হলো কিয়ামত বা পুনরুথ্থান দিবসের প্রতি বিশ্বাস। এটিকে মূলত আখিরাতের প্রতি বিশ্বাসের সাথেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সৃষ্টিকর্তা
মুসলিমরা বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তাকে 'আল্লাহ' বলে সম্বোধন করেন। ইসলামের মূল বিশ্বাস হলো আল্লাহর একত্ববাদ বা তৌহিদ।[৫৮] আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দেওয়া ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের মধ্যে প্রথম, যাকে বলা হয় শাহাদাহ।[৫৯] এটি পাঠের মাধ্যমে একজন স্বীকার করেন যে, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নাই এবং মুহাম্মাদ তার প্রেরিত সর্বশেষ নবী ও রাসূল। সুরা ইখলাসে আল্লাহর বর্ণনা দেয়া হয়েছে এভাবে,
“ | বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাঁকে জন্ম দেয়নি এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। | ” |
— সূরা ইখলাস |
আল্লাহ্ শব্দটি আল এবং ইলাহ যোগে গঠিত। আল অর্থ সুনির্দিষ্ট এবং ইলাহ অর্থ উপাস্য, যার অর্থ সুনির্দিষ্ট উপাস্য। Edward William Lane এর অভিধানে আল্লাহ শব্দের অর্থ ও প্রয়োগ এভাবে উল্লেখ করা হয়েছেঃ- “ الله [Witten with the disjunctive alif الله, meaning God, i.e the only true god]”।[৬০] খ্রিষ্টানরা খৃস্টধর্মকে একেশ্বরবাদী বলে দাবী করলেও মুসলিমরা খৃষ্টধর্মের ত্রিত্ববাদ (trinity) বা এক ঈশ্বরের মধ্যে পিতা, পুত্র ও পবিত্র আত্মার মিলন, এই বিশ্বাসের জন্য তাদের দাবিকে অস্বীকার করে।[৬১] ইসলামি ধারণায় আল্লাহ সম্পূর্ণ অতুলনীয় ও পৌত্তলিকতার অসমতুল্য, যার কোনো প্রকার আবয়বিক বর্ণনা অসম্ভব। মুসলিমরা তাদের সৃষ্টিকর্তাকে বর্ণনা করেন তার বিভিন্ন গুণবাচক নাম ও গুণাবলীর মাধ্যমে।[৬২]
ইসলামে ঈমানের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি হলো আল্লাহর উপর ঈমান (বিশ্বাস) আনা। আল্লাহর উপর ঈমান আনার অর্থ হলো আল্লাহর অস্তিত্বের উপর বিশ্বাস করা, আল্লাহকে এক এবং অদ্বিতীয় সৃষ্টিকর্তা হিসেবে মেনে নেয়া, তিনি সৃষ্টিকর্তা এবং তিনিই একমাত্র উপাস্য,এই ধারণায় মনেপ্রাণে বিশ্বাসী হওয়া এবং তাঁর বাইরে অন্য যেকোনো কিছুর উপাসনা করা বা বিশ্বাস করা মহাপাপ, এই বিশ্বাস অন্তরে লালন করা।
ইসলাম ধর্ম মতে, আল্লাহ হলেন সমগ্র মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা। তিনি জন্মগ্রহণ করেননি এবং কাউকে জন্ম দেননি। তিনি চিরস্থায়ী এবং সর্বশক্তিমান। আল্লাহর অস্তিত্ব চিরস্থায়ী এবং তিনি সর্বকালের জন্য। তিনি সবকিছু করতে সক্ষম।
ইসলামপূর্ব যুগে আরব সমাজে, দেবতাদের অনেক নাম এবং উপাসনার পদ্ধতি ছিল। এই দেবতাগুলোর মধ্যে একটি ছিল হুবাল। অনেকের মতে, হুবালকে মক্কার প্রধান দেবতা হিসেবে বিশ্বাস করা হত।[৬৩] কেও কেও বলেন, হুবালের জন্য ব্যবহৃত একটি নাম ছিল "আল্লাহ", যা আরবিতে "ঈশ্বর" অর্থে একটি সাধারণ বিশেষণ।[৬৪] কিন্তু ইসলামের প্রাথমিক সূত্রগুলোর তথ্যের সঙ্গে এটি মোটেও সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ড্যানিশ-আমেরিকান প্রাচ্যবিদ Patricia Crone বলেছেন, "If Hubal and Allah had been one and the same deity, Hubal ought to have survived as an epithet of Allah, which he did not.”[৬৫] অর্থাৎ, হুবাল এবং আল্লাহ যদি একই উপাস্য হতো, তাহলে হুবাল আল্লাহর একটা গুণবাচক বিশেষণ হিসাবে টিকে থাকতো, যা ঘটেনি। বেশিরভাগেরই মত হলো, আরবের পৌত্তলিকরা কখনো আল্লাহর মূর্তি বানায়নি।[৬৬]
ইসলামে, আল্লাহর জন্য ব্যবহৃত, অনেকগুলো নাম রয়েছে। এই নামগুলো আল্লাহর বিভিন্ন গুণাবলী এবং বৈশিষ্ট্যগুলোকে প্রতিফলিত করে। আসমাউল হুসনার মধ্যে ৯৯ টি নাম বিশেষভাবে বিবেচিত হয়। এই নামগুলো কুরআনে আল্লাহর জন্য ব্যবহৃত অভিব্যক্তি থেকে উদ্ভূত। উদাহরণস্বরূপ, "আর-রহমান" (পরম করুণাময়) এবং "আর-রাহিম" (অতিশয় করুণাময়) নামগুলো আল্লাহর করুণা এবং দয়াকে প্রতিফলিত করে। "আল-আলিম" (সর্বজ্ঞ) এবং "আল-হাকিম" (বিজ্ঞ) নামগুলো আল্লাহর জ্ঞান এবং প্রজ্ঞাকে প্রতিফলিত করে। ইসলামে, আল্লাহর নামগুলো স্মরণ করা এবং জপ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুশীলন। এটি বিশ্বাস করা হয় যে আল্লাহর নামগুলোর জপ মানুষের আত্মার উপর প্রশান্তি নিয়ে আসে।[৬৭]
ইসলামে তাওহীদ এবং শিরকের মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাওহীদ হলো আল্লাহর একত্ববাদের শিক্ষা, যা ইসলামের মূল ভিত্তি। শিরক হলো আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরিক করা, যা ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় পাপ। তাওহীদ ছাড়া ইসলামের কোনো অস্তিত্ব নেই এবং শিরক ইসলামের মূল ভিত্তিকে ধ্বংস করে দেয়। তাওহীদ ছাড়া কোনো ইবাদতই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আর আল্লাহর সাথে শিরক করলে তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়ে যাবে। শিরকের কিছু উদাহরণ হলো, অন্য দেব-দেবীর উপাসনা করা, ভাগ্য গণনা করা, কবর পূজা করা, যাদু-টোনা করা, অন্যের ক্ষমতা বা সাহায্যের উপর নির্ভর করা ইত্যাদি।
ইসলাম ধর্ম অনুসারে, আল্লাহ একজন অসীম ও সর্বশক্তিমান সত্তা। তিনি মানুষের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা ও একমাত্র উপাস্য। আল্লাহর অস্তিত্ব ও গুণাবলীর উপর বিশ্বাস ইসলামের একটি মৌলিক বিশ্বাস।
কালাম হলো ইসলামের ঈমানী দর্শনের শাখা। এটি ঈশ্বরের অস্তিত্ব, গুণাবলী, প্রকৃতি এবং মানুষ ও ঈশ্বরের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। ঈশ্বরকে মানুষের মতো তুলনা করা সম্পর্কে ইহুদি, খ্রিস্টান এবং ইসলামের চিন্তাধারায় ব্যাপক বিতর্ক হয়েছে। একদল দাবি করে যে ঈশ্বরকে মানুষের মতো তুলনা করা ঠিক নয়, কারণ তিনি অসীম এবং অপার। অন্য দল দাবি করে যে ঈশ্বরকে মানুষের মতো তুলনা করা যেতে পারে, তবে সীমিতভাবে। পবিত্র গ্রন্থগুলোতে ঈশ্বরকে উপমা দেওয়া (তুলনা করা) এবং নিষ্পেক্ষ করা, উভয়ই পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, কুরআনে ঈশ্বরকে "আকাশের ও পৃথিবীর আলো" বলা হয়েছে, যা একটি উপমা। আবার, কুরআনে বলা হয়েছে যে ঈশ্বরকে কোন কিছুর সাথে তুলনা করা যায় না, যা একটি নিষ্পেক্ষতা। তিনটি ইব্রাহিমী ধর্মের এই বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি পর্যালোচনা করলে, এটি দেখা যায় যে পবিত্র গ্রন্থগুলোতে অর্থবাচক বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি অর্থহীন বৈশিষ্ট্যগুলোও অনেক বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ, ওহীতে তুলনার চেয়ে উপমা বেশি।[৬৮]
মুসলিমরা বিশ্বাস করে, মানুষের কল্পনা, বিজ্ঞান ও দর্শন দ্বারা কখনই আল্লাহর বর্ণনা করা সম্ভব নয়।[৬৯]
ফেরেশতা
ফেরেশতা (আরবি: ملك, মালক)হলো এমন সত্তা যা ইসলামের দুটি প্রধান ধর্মীয় গ্রন্থ, কুরআন[৭০] এবং হাদিসে[৭১] বর্ণিত হয়েছে। কুরআনে ফেরেশতাদের সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে এবং হাদিসেও তাদের সম্পর্কে অনেক বাণী রয়েছে। ‘ফেরেশতা’ মূলত একটি ফার্সি শব্দ। আরবির ‘মালাকুন’ (একবচন) ও ‘মালাইকা’ (বহুবচন)-এর প্রতিশব্দ এটি। কুরআন ও হাদিসে ‘মালাইকা’ শব্দটিই ব্যবহৃত হয়েছে। এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে বার্তাবাহক। ইসলামি পরিভাষায় ফেরেশতা এমন ‘নুরানি’ (আলোকিত) সৃষ্টির নাম, যারা যেকোনো সময় বিভিন্ন রূপ-আকৃতি ধারণ করতে পারেন। ফেরেশতাদের প্রধান কাজ হলো সর্বদা আল্লাহর ইবাদত করা। তবে তারা অন্যান্য নির্দিষ্ট দায়িত্বও পালন করে, যেমন আল্লাহর কাছ থেকে নবি-রাসুলগণের নিকট ঐশী বাণী পৌঁছানো, মানুষের কর্মকাণ্ড লিপিবদ্ধ করা এবং মৃত্যুর সময় মানুষের রূহ (আত্মা) কবজ করা। ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, ফেরেশতাদের বিভিন্ন উপাদান থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। কিছু ফেরেশতাকে আলো (নূর) থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে,[৭২][৭৩][৭৪] আবার অন্যদেরকে আগুন (নার) থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।[৭৫][৭৬][৭৭][৭৮] ইসলামী শিল্প এবং সাহিত্যে ফেরেশতাদের প্রায়ই মানব আকারে চিত্রিত করা হয়। তবে তাদের সাথে অতিপ্রাকৃত বৈশিষ্ট্যও থাকে, যেমন ডানা, বিশাল আকারের হওয়া বা স্বর্গীয় পোশাক পরিধান করা ইত্যাদি।[৭৯][৮০][৮১][৮২] ফেরেশতারা পানাহার, বৈবাহিক ও জৈবিক চাহিদা থেকে তারা পুরোপুরি মুক্ত থাকেন। তারা পুরুষও নন, নারীও নন। মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে, সৃষ্টিগতভাবে ফেরেশতাদের আল্লাহর অবাধ্যতার শক্তি দেওয়া হয়নি। সর্বদা তারা আল্লাহর হুকুম পালন করেন।[৮৩] ফেরেশতাদের অস্তিত্ব বিশ্বাস করা ঈমানের অন্যতম স্তম্ভ।
“ | ...কেউ আল্লাহ, তার ফেরেশতা, তার কিতাবসমূহ, তার রাসুলগণ ও পরকালে বিশ্বাস না করলে সে তো মারাত্মকভাবে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়বে। | ” |
— সূরা নিসা, আয়াত ১৩৬ |
তাদের মধ্যে কিছু, যেমন জিবরাইল (জিব্রীল) এবং মিকাইল (মিকা'ইল), ইসরাফিল, আজরাইল কুরআনে বিভিন্ন নামে উল্লিখিত হয়েছে। জিবরাইল হলেন আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় ও শ্রেষ্ঠ ফেরেশতা। তিনি আল্লাহর নির্দেশে নবি-রাসূলদের নিকট ওহী নিয়ে আসতেন। ওহী ছাড়াও জিবরাইল অন্যান্য দায়িত্বও পালন করেন। মিকাঈল হলেন আল্লাহর অন্যতম প্রধান ফেরেশতা। তিনি প্রকৃতির ঘটনাবলী পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত। তিনি বৃষ্টি, ঝড়, তুষারপাত, বাতাস প্রবাহিত করা ইত্যাদি দায়িত্ব পালন করেন। ইসরাফিল হলেন কিয়ামত ও পুনরুত্থান দিবসে শিঙ্গায় ফুঁ দেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা। তিনি প্রথমে শিঙ্গায় একবার ফুঁ দেবেন, যার ফলে কিয়ামত সংঘটিত হবে। এরপর তিনি দ্বিতীয়বার ফুঁ দেবেন, যাতে সকল প্রাণী হাশরের ময়দানে পুনর্জীবিত হবে। আজরাইল হলেন প্রাণীদের জীবনাবসান ঘটানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা। তিনি প্রত্যেক প্রাণীর মৃত্যুর সময় তার কাছে গিয়ে তার প্রাণ কবজ করেন। কিরামান কাতেবীন হলেন মানুষের নেক ও মন্দ আমলগুলো লিখে রাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা। তারা মানুষের ডান ও বাম কাঁধে বসে থাকেন এবং তাদের সব কাজকর্ম লিখে রাখেন। মুনকার ও নাকির হলেন মানুষকে কবরস্থানে জিজ্ঞাসাবাদ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা। তারা কবরস্থানে গিয়ে মৃত ব্যক্তিকে তার ঈমান ও আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। হামালাত আল-আরশ হলেন আল্লাহর আরশ বহনকারী ফেরেশতা। তারা আল্লাহর আরশ বহন করার জন্য বিশেষভাবে সৃষ্টি হয়েছেন। ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, এর বাইরেও অসংখ্য ফেরেশতা রয়েছেন, যাঁদের সংখ্যা ও কাজ আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর বর্ণিত জিব্রাইলের হাদিসে, ফেরেশতা জিব্রাইল, নবী মুহাম্মাদ এবং তাঁর বন্ধুদের সাথে একজন সাহাবীর ছদ্মবেশে দেখা করেন এবং নবীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করতেন:[৮৪]
তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (মুহাম্মাদ) এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় একজন লোক আমাদের সামনে এলেন। লোকটির পোশাক-পরিচ্ছদ ছিল খুবই ধবধবে সাদা, তার চুলগুলো ছিল গাঢ় কালো এবং তার ওপর সফরের কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল না। আর আমাদের কেউ তাকে চিনতেও পারছিল না। সে সোজা রাসূল এর কাছে গিয়ে বসল। তারপর তার হাঁটু রাসূল এর হাঁটুর সঙ্গে লাগিয়ে দিয়ে নিজের হাত দুখানা তার ঊরুর ওপর রেখে বলল, হে মুহাম্মাদ! ইসলামের পরিচয় আমাকে বলে দিন। রাসূল বলেন, ইসলাম এই যে, তুমি সাক্ষ্য দেবে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। আর তুমি নামাজ কায়েম করবে, যাকাত দেবে, রমজানের রোজা রাখবে এবং সামর্থ্য থাকলে হজ করবে। সে বলল, আপনি সত্য বলেছেন। আমরা তার এমন আচরণে বিস্ময় বোধ করলাম যে, সে তাকে জিজ্ঞেসও করছে আবার তার কথা সত্য বলে মন্তব্য করছে। সে আবার জিজ্ঞেস করল, আপনি আমাকে ঈমানের পরিচয় বলে দিন। তিনি বলেন, ঈমান এই যে, তুমি আল্লাহ, তার ফেরেশতা, তার কিতাবসমূহ, তার রাসূলদের, কিয়ামতের দিন এবং তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ইমান রাখবে। সে বলল, আপনি সত্য বলেছেন। সে আবার জিজ্ঞেস করল, আপনি আমাকে ইহসান সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বলেন, তা এই যে, তুমি আল্লাহর ইবাদাত এমনভাবে করবে যেন তুমি তাকে দেখছ। যদি তুমি তাকে না দেখ, তবে নিশ্চয় তিনি তোমাকে দেখছে। সে বলল, কিয়ামতের বিষয়ে আমাকে বলুন। তিনি বলেন, যাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলো সে প্রশ্নকারী থেকে বেশি কিছু জানে না। সে বলল, তাহলে তার আলামতগুলো অবহিত করুন। তিনি বলেন, দাসী তার মনিবকে প্রসব করবে। আর (এক কালে) খালি পা ও উ' ল'ঙ্গ শরীরবিশিষ্ট গরিব মেষের রাখালরা (পরবর্তীকালে) সুউচ্চ দালান-কোঠা নিয়ে পরস্পর গর্ব করতে দেখবে। তারপর লোকটি চলে গেল। বেশ কিছুক্ষণ পর রাসূল বলেন, হে উমার! তুমি কি জান প্রশ্নকারী কে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বলেন, তিনি হচ্ছেন জিবরাইল। তিনি তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শেখাতে এসেছিলেন।
ফেরেশতারা "মিরাজ" সম্পর্কিত সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। "মিরাজ" হলো মুহাম্মাদের একটি যাত্রা, যেখানে তিনি জান্নাতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এই যাত্রাকালীন সময়ে, মুহাম্মাদ বেশ কয়েকজন ফেরেশতার সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে জিবরাঈল এবং মিকাইল।[৭১] অন্যান্য ফেরেশতারা প্রায়ই ইসলামী শেষবিচার, ধর্মতত্ত্ব এবং দর্শনে বৈশিষ্ট্যযুক্ত হয়। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, ফেরেশতারা শেষবিচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তারা মানুষের কর্মকাণ্ড লিপিবদ্ধ করবে এবং ভালো লোকদের জান্নাতে ও মন্দ লোকদের জাহান্নামে নিয়ে যাবে। ফেরেশতারা ইসলামী ধর্মতত্ত্বেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা আল্লাহর সৃষ্টি এবং তার ইচ্ছার প্রতীক। ফেরেশতারা ইসলামী দর্শনেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতির প্রতীক।[৮৫]
ধর্মগ্রন্থ
ইসলামের প্রাথমিক সপ্ত বিশ্বাসের অন্যতম প্রধান বিশ্বাস হলো আসমানি কিতাবে বিশ্বাস। মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে আল্লাহ মানুষের হিদায়াত বা পথনির্দেশের জন্য কিতাব নাজিল করেছেন।[৮৬] আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রধান ফেরেশতা জিবরাইল এর মাধ্যমে বিশেষ বিশেষ নবী ও রাসুলদের কাছে পাঠানো বাণী হলো আসমানি কিতাব। এর মধ্যে ১০৪টি আসমানী কিতাব বিখ্যাত।[৮৭] এগুলোর মধ্যে ৪টি কিতাব অর্থাৎ বড় গ্রন্থ, আর ১০০টি রিসালা বা সহিফা অর্থাৎ পুস্তিকা বা ছোট বই।
বড় চারটি কিতাব হলো তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল ও কুরআন।[৮৮] এই চার বড় গ্রন্থ নাজিল হয়েছে বিশিষ্ট চারজন নবী ও রাসুলের প্রতি। যথা: তাওরাত হজরত মুসা এর প্রতি ইবরানি বা হিব্রু ভাষায়,[৮৮] যাবুর হজরত দাউদ এর প্রতি ইউনানি বা আরমাইক ভাষায়,[৮৮] ইঞ্জিল হজরত ঈসা এর প্রতি সুরিয়ানি ভাষায়[৮৮] এবং কুরআন মুহাম্মাদ এর প্রতি আরবি ভাষায়[৮৮] অবতীর্ণ করা হয়। সহিফাগুলো অবতীর্ণ হয়েছে হজরত আদম এর প্রতি ১০টি, হজরত শিশ এর প্রতি ৫০টি, হজরত ইদরিস এর প্রতি ৩০টি ও হজরত ইব্রাহিম এর প্রতি ১০টি। সহিফা ও কিতাবের মধ্যে কুরআন হলো সর্বশেষ আসমানি কিতাব।[৮৬] এরপর আর কোনো কিতাব বা সহিফা নাজিল করা হয়নি এবং হবে না। কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে ইসলামের আখেরি পয়গাম্বর তথা সর্বশেষ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মাদ এর প্রতি। এরপর আর কোনো নবী ও রাসুল আসবেন না।[৮৬]
কুরআন
কুরআন হলো ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ। এটি আল্লাহর দ্বারা প্রেরিত একটি ঐশ্বরিক বাণী যা মুহাম্মাদকে ফেরেশতা জিবরাইলের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছিল।[৯১] কুরআন আরবি ভাষায় নাযিলকৃত এবং এটি ইসলামের বিশ্বাস, আইন ও নৈতিকতার ভিত্তি। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ নিজেই ঘোষণা করেছেন যে তিনিই কুরআন অবতীর্ণ করেছেন এবং তিনিই এর সংরক্ষক।[৯২] তিনি বলেন-
“ | নিশ্চয়ই আমিই এই কিতাব অবতীর্ণ করেছি এবং অবশ্যই আমিই এর সংরক্ষণকারী। | ” |
— সূরা হিজর, আয়াত ৯ |
মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে কুরআন আল্লাহর বাণী এবং এটি মানুষের দ্বারা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এই আয়াতটি সেই বিশ্বাসের ভিত্তি প্রদান করে।[৯২]
মুহাম্মাদ হলেন আল্লাহর শেষ বার্তাবাহক, যিনি তাঁর বাণীগুলোকে মানবজাতির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। আল্লাহ ২২ বছর ধরে মুহাম্মাদকে বাণী পাঠিয়েছিলেন। এই বাণীগুলোকে একত্রে কুরআন বলা হয়। ফেরেশতা জিবরাইল আল্লাহর বাণীগুলোকে মুহাম্মাদের কাছে নিয়ে এসেছিলেন। মুহাম্মাদ এই বাণীগুলোকে মনে (মুখস্থ) রাখতেন এবং অন্যান্য লোকদের কাছে পৌঁছে দিতেন। মুহাম্মাদের মৃত্যুর পর, তাঁর সাহাবারা এই বাণীগুলোকে একত্রিত করে একটি কিতাব তৈরি করেছিলেন।[৯৫] কুরআন হলো আল্লাহর সর্বশেষ বাণী, যা তাঁর ইচ্ছার প্রতিফলন। কুরআনে আল্লাহর আদেশ এবং নিষেধ রয়েছে, যা মুসলমানদের অনুসরণ করতে হবে। কুরআন আরবি ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে, যা ইসলামের ধর্মীয় ভাষা হিসেবে বিবেচিত। মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে, কুরআন আল্লাহর নিকট হতে মানুষের প্রতি পাঠানো হয়েছে এবং কুরআন আল্লাহর সরাসরি বাণী, তাই এর কোনো ভুল বা বিকৃতি নেই।[৯৬]
মুহাম্মাদ ৪০ বছর বয়সে, এক রাতে মক্কার কাছে অবস্থিত হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় ছিলেন। এই গুহাটি মক্কার উপরে একটি পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত। মুহাম্মাদ প্রায়ই এই গুহায় ধ্যান মগ্ন থাকতেন। জিব্রাইল, ইসলামের একজন ফেরেশতা, মুহাম্মাদের কাছে এসে তাকে নবুয়ত গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান। নবুয়ত হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বিশেষ বার্তা প্রদান করার ক্ষমতা। জিব্রাইল মুহাম্মাদকে "পড়ুন!" বলেছিলেন। জিবরাইলের আহ্বানের পরে, কুরআনের প্রথম আয়াত, সূরা আলাক্ব এর প্রথম পাঁচ আয়াত অবতীর্ণ হয়। এই আয়াতগুলোতে, আল্লাহ মুহাম্মাদকে বলছেন যে তিনি আল্লাহর রাসূল এবং তাকে মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকতে হবে। কুরআনের সমগ্র অংশ মুহাম্মাদের কাছে দীর্ঘ সময় প্রায় ২৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে অবতীর্ণ হয়েছিল। এই কারণে, মুহাম্মাদ ধীরে ধীরে অন্যদের কাছে কুরআনের বাণী পৌছতে পারতেন। বেশিরভাগ ওহি (আয়াত), মুহাম্মাদ যখন ধ্যান মগ্ন থাকতেন, তখন নাযিল হত। এই আয়াত নাযিল প্রক্রিয়া ৬১০ সালে শুরু হয়েছিল এবং ২২ বছর যাবৎ স্থায়ী হয়েছিল।[৯৭]
“ | পড়ুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের মাধ্যমে শিক্ষা দিয়েছে। তিনি শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না। | ” |
— সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত |
ইসলামপূর্ব আরবরা ছিল পৌত্তলিক। তারা বিশ্বাস করত যে প্রকৃতি দেবতাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তারা এই দেবতাদের আরাধনা করত এবং অনুগ্রহ লাভের জন্য তাদের কাছে প্রার্থনা করত। এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে, তারা গাছ, কূপ এবং পাহাড়কে পবিত্র মনে করত। তারা বিশ্বাস করত যে এই স্থানগুলোতে দেবতারা বাস করে। ইসলামপূর্ব আরবরা নির্দিষ্ট পাহাড় এবং পর্বতগুলোকে তাদের ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্বের কারণে বিশেষভাবে পবিত্র মনে করত। উদাহরণস্বরূপ, তারা সাফা এবং মারওয়া পাহাড়দ্বয়কে হজযাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করত। তারা বিশ্বাস করত যে এই পাহাড়গুলোর মধ্যে দিয়ে হাঁটার মাধ্যমে তারা তাদের পূর্বপুরুষদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারত। কুরআন, ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ, কিছু বহুঈশ্বরবাদী উপাসনালয়কে বাতিল করে দিয়েছে। এই উপাসনালয়গুলোতে, আরবরা বিভিন্ন দেবতাদের পূজা করত। কুরআন এই দেবতাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে এবং একমাত্র আল্লাহর উপাসনা করার আহ্বান জানায়। যাইহোক, কুরআন আরবদের ঐতিহ্যবাহী পবিত্রতাকে পুরোপুরিভাবে অস্বীকার করেনি। বরং, ইসলাম এই রীতিনীতিগুলোকে অনেকাংশে অব্যাহত রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ, কুরআন হজযাত্রাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং সাফা ও মারওয়া পাহাড়দ্বয়ে মধ্য দিয়ে হাঁটার আদেশ দিয়েছে। কুরআনে ধর্মীয় বিধিবিধান, সামাজিক বিধিনিষেধ, উপদেশ, উৎসাহ ও ভয়ভীতি এবং পূর্ববর্তী নবীগণের জীবনী গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে। এই বিষয়গুলো কুরআনের মূল বার্তাগুলোর মধ্যে রয়েছে। ইসলামের বিশ্বাস এবং শরিয়াতের মূল উৎস হলো কুরআন। কুরআন হলো ইসলামের প্রাথমিক উৎস, যা ইসলামের বিশ্বাস, অনুশীলন এবং আইনগুলোকে নির্ধারণ করে। কুরআনের শিক্ষাগুলো ইসলামের অনুসারীদের জীবনের প্রতিটি দিককে প্রভাবিত করে।
কুরআন ২৩ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে অবতীর্ণ হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে, হযরত মুহাম্মাদ বিভিন্ন ঘটনাবলির প্রেক্ষিতে কুরআনের আয়াতগুলো পাঠ করেছিলেন। এই আয়াতগুলো একত্রিত হয়ে সূরা নামক বিভাগগুলো গঠন করে। কুরআনের প্রতিটি সূরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। যেমন, ইবাদত, রাজনীতি, বিবাহ, পারিবারিক জীবন, অসহায়দের সাহায্য, স্বাস্থ্যবিধি, অর্থনীতি ইত্যাদি। কুরআনে মোট ১১৪টি সুরা রয়েছে। এই সূরাগুলোর দৈর্ঘ্য বিভিন্ন রকম। সবচেয়ে ছোট সূরা হলো সূরা কাওসার, যার মাত্র ৩টি আয়াত রয়েছে। সবচেয়ে বড় সূরা হলো সূরা বাকারা, যার ২৮৬টি আয়াত রয়েছে। কুরআনের প্রথম আয়াত হলো সূরা আলাক্বের প্রথম আয়াত। এই আয়াতটি হযরত মুহাম্মাদ এর কাছে ৬১০ খ্রিস্টাব্দে মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছিল। সূরা আলাক্ব এর প্রথম আয়াতটি হলো-
“ | اقرأ باسم ربك الذي خلق
পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। |
” |
কুরআনের শেষ আয়াত হলো সূরা মায়িদাহ এর তৃতীয় আয়াত। এই আয়াতটি হযরত মুহাম্মাদ এর কাছে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছিল। সূরা মায়িদাহ এর তৃতীয় আয়াত হলো-
“ | اليوم أكملت لكم دينكم وأتممت عليكم نعمتي ورضيت لكم الإسلام دينا
আজ আমি (আল্লাহ) তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের উপর আমার নেয়ামতকে পূর্ণ করলাম। আর আমি তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম। |
” |
এই আয়াতটি ইসলামের পরিপূর্ণতা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির ঘোষণা।
কুরআনের সূরা ও আয়াতগুলো ক্রমানুসারে বা বিষয় অনুসারে সাজানো হয়নি, বরং সাধারণভাবে দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে সাজানো হয়েছে। কুরআনের শুরুতে দীর্ঘ সূরাগুলো রয়েছে, আর শেষের দিকে ছোট সূরাগুলো রয়েছে। কুরআনের সবচেয়ে দীর্ঘ সূরাগুলো প্রথম দিকে রয়েছে, যেমন আল-বাকারা, আল-আ'রাফ এবং আল-ইমরান এর মত সূরাগুলো। আর সবচেয়ে ছোট সূরাগুলো শেষের দিকে রয়েছে, যেমন আল-কাউসার এবং আল-ইখলাস এর মত সূরাগুলো।
পয়গম্বর
ইসলাম ধর্মে, নবি ও রাসুল হলো সেইসব ব্যক্তিত্ব যাদেরকে আল্লাহ কর্তৃক মানুষের দিক-নির্দেশনা প্রদানের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। ইসলামী পরিভাষায় তাদেরকে বলা হয় নবি (বহুবচনঃ أَنْبِيَاء, আনবিয়া, অর্থঃ প্রতিনিধি, সতর্ককারী) ও রাসুল (বহুবচনঃ رُسُل , রুসুল অর্থঃ বার্তাবাহক) বা মুরসাল (مُرْسَل, বহুবচনঃ مُرْسَلُون, মুরসালুন, অর্থঃ বার্তাবাহক)।[৯৯] নবি হলো সেই ব্যক্তি যিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের কাছে কোনো ঐশ্বরিক বাণী পেয়েছেন, কিন্তু তিনি সকল মানুষের কাছে তা প্রচার করার দায়িত্ব পাননি।[১০০] অন্যদিকে, রাসুল হলো সেই ব্যক্তি যিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের জন্য কোনো ঐশী বাণী পেয়েছেন এবং তিনি সকল মানুষের কাছে তা প্রচার করার দায়িত্ব পেয়েছেন।[১০০]
আদম থেকে মুহাম্মাদ পর্যন্ত বহু নবি-রাসুল পৃথিবীতে এসেছেন। তাঁরা সকলেই আল্লাহর তাওহিদের কথা বলেছেন। তাঁর বিধানসমূহ মেনে চলতে আহ্বান জানিয়েছেন। কথায়, কাজে এবং আচার-ব্যবহারে তাঁরা ছিলেন আদর্শ ও চরিত্রবান। ইসলামি বিশ্বাসানুসারে, যারা তাঁদের আদর্শ গ্রহণ করেছে তারা নাজাত (মুক্তি) পেয়েছে এবং আল্লাহর রহমত লাভ করেছে। আর যারা তাঁদের বিরোধিতা ও অবিশ্বাস করেছে, তাঁদের কথা মানেনি, তারা হয়েছে ধ্বংস।[১০১]
ইসলামি বর্ণনামতে, হযরত মুহাম্মাদ হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ নবি।[১০২] তাঁর পরে আর কোনো নবি আসেন নি, আর আসবেনও না। এজন্য তাকে বলা হয় খাতামান্নাবিয়্যীন। খাতামান্নাবিয়্যীন অর্থ সর্বশেষ নবি।[১০৩]
ইসলাম ধর্মে, নবি ও রাসুলের সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে, অধিকাংশ মুসলিম বিশ্বাস করেন যে, নবি ও রাসুলের সংখ্যা প্রায় ১২৪,০০০।[১০৪]
নবিগণকে আল্লাহ কিছু বিশেষ গুণাবলী দিয়েছিলেন। এই গুণাবলীগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্ঞান, বোঝাপড়া, সত্যবাদিতা, পাপহীনতা ইত্যাদি। পূর্ববর্তী নবিগণ শেষ নবী মুহাম্মাদ এর আগমন ও কিয়ামতের সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করেছিলেন। ইসলামে কয়েকজন বিশেষ নবিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই নবিদের মধ্যে রয়েছে আদম, নূহ, ইব্রাহিম, ইউসুফ, মূসা, দাউদ, ঈসা এবং মুহাম্মাদ। এই নবিগণকে আল্লাহ বিশেষ ধর্মগ্রন্থ ও বিধান দিয়েছিলেন। এই ধর্মগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল ও কুরআন।
ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহ প্রত্যেক জাতির জন্য একজন বা একাধিক নবী পাঠিয়েছেন। এই নবীদের মাধ্যমে আল্লাহ মানুষকে সৎ ও ন্যায়ের পথে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। কুরআনে ২৫ জন নবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তবে এর বাইরেও আরও অনেক নবী এসেছেন বলে বিশ্বাস করা হয়। ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস অনুসারে, কুরআনে নাম উল্লেখ করা হোক বা না হোক, এর আগে যে সমস্ত নবী এসেছেন তাদের সকলের প্রতি বিশ্বাস করা আবশ্যক। যদি কোনো ব্যক্তি এই নবীগণের একজনের প্রতিও অবিশ্বাস স্থাপন করে, তাহলে সে প্রকৃত অর্থে মুসলমান নয়।[১০৫]
মুহাম্মাদ
ইসলাম ধর্ম অনুসারে, আল্লাহ বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন। প্রত্যেক নবীই আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের কাছে ঈমান ও সত্যের বাণী পৌঁছে দিয়েছেন। মুহাম্মাদ হলেন এই প্রেরিত নবীদের মধ্যে সর্বশেষ নবী। তাঁর পর আর কোনো নবী আসবেন না। মুহাম্মাদ ছিলেন একজন রাসূল। রাসূল হলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের কাছে ওহী বা ঈশ্বরের নির্দেশাবলী পেয়ে আসা ব্যক্তি। মুহাম্মাদ এর নিকট কুরআন নাযিল হয়েছিল। কুরআন হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষের কাছে প্রেরিত সর্বশেষ ওহী। মুহাম্মাদ ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন।[১০৬] ৬১০ সালে, তিনি হেরা গুহায় প্রথম ওহী লাভ করেন।[১০৭] মক্কার লোকেরা তার ধর্ম প্রচারকে মেনে নেয়নি এবং তাকে অপমান ও নির্যাতন করে। এর ফলে তিনি ৬২২ সালে মদিনায় হিজরত করেন। মদিনায়, তিনি ইসলামের একটি সমৃদ্ধ সম্প্রদায় গড়ে তোলেন। তিনি মাঝে মাঝে মক্কার পৌত্তলিকদের সাথে যুদ্ধ করেন এবং ৬৩০ সালে মক্কা বিজয় করেন। ৬৩২ সালে, বিদায়ী ভাষণের পর তিনি মদিনায় মৃত্যুবরণ করেন।[১০৭]
ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, মুহাম্মাদ হলেন শেষ নবী এবং তাঁর মাধ্যমে আসা ধর্ম, ইসলাম, হলো একমাত্র সত্য ধর্ম। পূর্ববর্তী নবীগণও একই বার্তা নিয়ে এসেছিলেন, তবে তাদের অনুসারীরা তা বিকৃত করেছে ফেলেছে। এই কারণে, মুহাম্মাদকে আল্লাহ দ্বারা একই বার্তা পুনরায় পাঠানো হয়েছিল, তবে কিছু পরিবর্তন সহ যা এটিকে একটি নিখুঁত ধর্ম করে তোলে। কুরআনে মুহাম্মাদকে শেষ সময়ের শেষ নবী হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে:[১০৮]
“ | বরং সে আল্লাহর রসূল ও শেষ নবী। | ” |
— সূরা আহযাব, আয়াত ৪০ |
হাদিস ও সুন্নাহ ইসলামি আইনের দুটি মূল উৎসের মধ্যে একটি। কুরআন হলো ইসলামি আইনের প্রথম এবং প্রধান উৎস। কুরআন হলো আল্লাহর বাণী এবং এটি ইসলামি আইনের ভিত্তি। হাদিস ও সুন্নাহ হলো কুরআনের ব্যাখ্যা এবং বিস্তার। এসব মুহাম্মাদ এর জীবনযাপনের উদাহরণ প্রদান করে, যা মুসলমানদের জন্য একটি আদর্শ।[১০৯][১১০]
মুহাম্মাদ ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে যখন মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন,[১০৬] সেই সময় মক্কা ছিল একটি পিছিয়ে পড়া নগরী। এটি ছিল একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র, কিন্তু এটি শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং বিজ্ঞানের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল। মুহাম্মাদ তার শৈশবের প্রথম দিকেই এতিম হয়ে পড়েন। তার বাবা আব্দুল্লাহ তার জন্মের আগেই মারা যান এবং তার মা আমিনা তার ছয় বছর বয়সে মারা যান। তারপর তার চাচা আবু তালিব তাকে লালন-পালন করেন। ২৫ বছর বয়সে, মুহাম্মাদ মক্কার একজন ধনী ও বিধবা নারী খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ এর সাথে বিবাহ করেন। এই বিবাহটি মুহাম্মাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল। খাদিজার সমর্থন এবং ভালোবাসা তাকে একজন নেতা এবং ধর্মীয় নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল। ৪০ বছর বয়সে, মুহাম্মাদ হেরা গুহায় ধ্যানরত ছিলেন। তখন জিবরাঈল তার কাছে আল্লাহর প্রথম ওহী নিয়ে আসেন। এই ওহী ছিল কুরআনের প্রথম আয়াত। প্রথম দিকে, মুহাম্মাদ এই আল্লাহর বাণী গোপনে প্রচার করতে। কিন্তু, তিন বছর পর, মুহাম্মাদ প্রকাশ্যে "একত্ববাদের" বিশ্বাস ঘোষণা করেন। তিনি মানুষকে ইসলাম ধর্মের প্রতি আহ্বান জানান, যা ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে অন্যান্য নবীরাও আগে থেকেই শিক্ষা দিয়েছিলেন। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, মুহাম্মাদের পড়াশোনা বা লেখালেখির দক্ষতা ছিল না। তিনি মৌখিকভাবে কুরআন শিখেছিলেন এবং তার অনুসারীদের কাছে তা প্রচার করেছিলেন।
মুহাম্মাদ মক্কায় ইসলাম প্রচার শুরু করার পর, তিনি কিছু লোকের সমর্থন পেয়েছিলেন, কিন্তু অনেকে তার প্রচার ও মতবাদের বিরোধিতা করেছিল। মক্কার কুরাইশ গোত্রের নেতারা মুসলিমদের উপর নির্যাতন শুরু করেছিল। এই নির্যাতন থেকে বাঁচতে, মুহাম্মাদ প্রথমে কিছু মুসলিমকে ৬১৫ সালে আবিসিনিয়ায় পাঠিয়েছিলেন, যা অধুনা ইথিওপিয়ার অন্তর্গত। আবিসিনিয়ার খ্রিস্টান রাজা মুসলিমদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। ৬২২ সালে, মুহাম্মাদ এবং তার সমর্থকরা মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেছিলেন। এই ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, কারণ এটি ইসলামের বিস্তারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। মদিনায়, মুহাম্মাদ মুসলিমদের একটি সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ইসলামের প্রচার শুরু করেছিলেন। হিজরি বর্ষপঞ্জি বা ইসলামি বর্ষপঞ্জি, যা মুহাম্মাদ এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের তারিখ থেকে শুরু হয়। হিজরি বর্ষপঞ্জি একটি চান্দ্র বর্ষপঞ্জি, যার অর্থ এটি চাঁদের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে। হিজরি বর্ষপঞ্জি বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশে ব্যবহৃত হয়।
মদিনায় মুহাম্মাদ এর আগমনের পর, তিনি বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যা মদিনার সনদ নামে পরিচিত। এই চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে শান্তি ও সম্প্রীতির সম্পর্ক স্থাপিত হয় এবং একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এই রাষ্ট্র ব্যবস্থার অধীনে মুহাম্মাদ ছিলেন প্রধান নেতা এবং ধর্মীয় নেতা। মদিনায় ইসলাম প্রচার ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলার পর, মুহাম্মাদ মক্কার দিকে মনোনিবেশ করেন। মক্কা ছিল মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান, কারণ সেখানেই ইসলামের প্রথম দিকের ইতিহাস ঘটেছিল।[১১১] ৬৩০ সালে মুহাম্মাদ একটি বৃহৎ মুসলিম সেনাবাহিনী গঠন করে মক্কা আক্রমণ করেন। মক্কার গোত্রগুলো মুহাম্মাদ এর শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং রক্তপাত ছাড়াই মক্কা বিজয় করা হয়। মুহাম্মাদ এর জীবনের লক্ষ্য ছিল ইসলামকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া। তিনি তার জীবনের শেষের দিকে বিভিন্ন রাজ্যের শাসকদের কাছে ইসলাম গ্রহণের আমন্ত্রণপত্র পাঠান। এই আমন্ত্রণপত্রগুলোর মাধ্যমে মুহাম্মাদ ইসলামের বার্তা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।[১১২]
পুনরুত্থান এবং বিচার
ইসলাম ধর্মে, পুনরুত্থান ও বিচার দিবস হলো একটি বিশ্বাস যে একদিন সকল মানুষকে তাদের কর্মের বিচারের জন্য পুনরুজ্জীবিত করা হবে। এই বিশ্বাসটি কুরআন এবং হাদিসে ব্যাপকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।[১১৩]
“ | মাটি থেকেই আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি, মাটিতেই আমি তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেব এবং মাটি থেকেই তোমাদেরকে পুনরায় বের করে আনব। | ” |
— সূরা ত্বোয়া-হা, আয়াত ৫৫ |
হাদিসে, নবী মুহাম্মাদ বলেন,
“ | যেদিন আল্লাহ সকল মানুষকে পুনরুজ্জীবিত করবেন, সেদিন তাদের পায়ের তলায় মাটি গরম হবে। | ” |
— সহীহ মুসলিম |
ইসরাফিল (আরবি: إسرافيل) হলেন ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে চারজন প্রধান ফেরেশতার একজন, যিনি কিয়ামতের শুরুতে শিঙ্গায় ফুঁক দিবেন। এর অর্থ হলো ইসরাফিলের প্রথম বাঁশিতে কিয়ামত সংঘটিত হবে এবং দ্বিতীয় বাঁশিতে পুনরুত্থান ও পরকালের জীবন শুরু হবে।
ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, কিয়ামতের সময় সম্পর্কে অবগত শুধুমাত্র আল্লাহ। এই অর্থে, কিয়ামতের সময় নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে, মুহাম্মাদকে শেষ যুগের নবী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। ইসলামে শেষ যুগের লক্ষণ হিসেবে অনেক কিছু বর্ণনা করা হয়েছে। এই লক্ষণগুলোর অনেকগুলোই বর্তমান বিশ্বে দেখা যাচ্ছে। তাই, অনেক মুসলিম মনে করেন যে, কিয়ামত খুবই নিকটবর্তী। কুরআনের অনেক সূরাতে কিয়ামতের দিনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, সূরা কিয়ামত, সূরা আল-আহকাফ, সূরা আল-আম্বিয়া ইত্যাদি। এই আয়াতগুলোতে কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা ও বিপর্যয়ের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা ও বিপর্যয় মানুষের কল্পনাতীত। সেদিন এমন কিছু ঘটবে যা মানুষের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হবে। যেমন, সূর্য ঠান্ডা হয়ে যাবে, চন্দ্র আলো হারিয়ে ফেলবে, নক্ষত্রগুলো ঝরে পড়বে, মানুষ কবরের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসবে ইত্যাদি। কুরআনের এই আয়াতর গুলোর মাধ্যমে মানুষকে কিয়ামতের দিনের ভয়াবহতা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। এগুলো থেকে মানুষ বুঝতে পারে যে, কিয়ামতের দিন একটি বাস্তব ঘটনা এবং সেদিন প্রত্যেককে তার কর্মের জন্য হিসাব দিতে হবে।
পৃথিবীর শেষ, কিয়ামত, পুনরুত্থান ও হিসাব-নিকাশের দিন, যাকে আখিরাত বলে, তা ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের মধ্যে একটি। অর্থাৎ, একজন মুসলমানের বিশ্বাসে এই চারটি বিষয় অবশ্যই থাকতে হবে। আখিরাতের দিন, আল্লাহ মানুষকে পুনরায় জীবিত করে একত্রিত করবেন। সেদিন কিছু মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে, যেখানে নেয়ামতের অভাব হবে না। আবার কিছু মানুষ জাহান্নামে প্রবেশ করবে, যেখানে ভয়াবহতম শাস্তি রয়েছে। কুরআনে আখিরাতের বিশ্বাসের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। সূরা বাকারার ৬২ নং আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহর প্রতি ঈমান (বিশ্বাস) আনার সাথে সাথে মানুষের মুক্তি লাভ হবে। অর্থাৎ, একজন মানুষ যদি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, তাহলে সে আখিরাতে মুক্তি লাভ করবে।
“ | নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে, যারা ইয়াহূদী হয়েছে এবং নাসারা ও সাবিঈরা* -(তাদের মধ্যে) যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি এবং নেক কাজ করেছে - তবে তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের নিকট তাদের প্রতিদান। আর তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। | ” |
— সূরা বাকারা, আয়াত ৬২ |
মুসলিমদের দৃষ্টিতে, ইসলাম হলো আল্লাহর দ্বীন বা ধর্ম। ইসলামের আগে যেসব ধর্ম ছিল, সেগুলোর বিধান ইসলাম দ্বারা বাতিল হয়ে গেছে। তাই, পৃথিবীর সকল মানুষকে ইসলামের অনুসারী হতে হবে। ইসলামের আগের ধর্মগুলোর অনুসারীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী ছিল এবং ভালো কাজ করত, তারাও মুক্তি পাবে। তবে, ইসলাম আসার পরও যদি কেউ ইসলাম গ্রহণ না করে এবং নিজের মতো করে আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস করে, তাহলে সে মুক্তি পাবে না। ইসলামে মুক্তি লাভের প্রধান উপায় হলো আল্লাহ ও তাঁর শেষ নবী মুহাম্মাদ এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। এই বিশ্বাসের প্রকাশ হলো "আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর প্রেরিত রাসূল" এই বাক্যাংশটি, যাকে বলা হয় "শাহাদত"। কুরআনের কিছু আয়াতে বলা হয়েছে যে, ইহুদি ও খ্রিস্টানরা ইসলাম গ্রহণ না করলে তারা মুক্তি পাবে না। এটিকে ব্যাখ্যা করে ইসলামের পণ্ডিতরা বলেন যে, এই আয়াতগুলোতে মূলত ইসলামের প্রতি তাদের অবহেলা ও অনীহার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ, তারা যদি ইসলামের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইসলাম গ্রহণ করে, তাহলে তারা মুক্তি পাবে। এভাবে, ইসলামের দৃষ্টিতে মুক্তি লাভের জন্য দুটি স্তর রয়েছে। প্রথম স্তর হলো আল্লাহ ও তাঁর শেষ নবী মুহাম্মাদ এর প্রতি বিশ্বাস করা। দ্বিতীয় স্তর হলো ইসলামের বিধানাবলী মেনে চলা।[১১৬][১১৭]
“ | কিতাবীদের মধ্যে যারা কুফরী করে তারা ও মুশরিকরা, তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ না আসা পর্যন্ত (নিজদের অবিশ্বাসে) অটল থাকবে। | ” |
— সূরা বাইয়্যিনাহ, আয়াত ০১ |
ইসলামে, পুনরুত্থান হলো একটি শারীরিক এবং আধ্যাত্মিক প্রক্রিয়া। শারীরিকভাবে, সকল মানুষকে তাদের মৃত্যুর আগের অবস্থায় পুনরুজ্জীবিত করা হবে। আধ্যাত্মিকভাবে, সকল মানুষকে তাদের কর্মের জন্য বিচারের জন্য দায়ী করা হবে।[১১৮] বিচার দিবস হলো একটি মহান দিন যখন আল্লাহ সকল মানুষের কর্মের জন্য তাদের বিচার করবেন।[১১৮] এই দিনটিতে, সকল মানুষকে তাদের কর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। যারা ভালো কাজ করেছে তারা জান্নাতে যাবে এবং যারা খারাপ কাজ করেছে তারা জাহান্নামে যাবে।[১১৮] ইসলামে, পুনরুত্থান ও বিচার দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাস। এই বিশ্বাসটি মানুষকে তাদের কর্মের জন্য দায়ী হতে এবং ভালো কাজ করার জন্য উৎসাহিত করে।[১১৮]
সৃষ্টিকর্তার পূর্বনির্ধারণ
তকদির বা ভাগ্যে বিশ্বাস ইসলামের প্রাথমিক সপ্ত বিশ্বাসের অন্যতম।[১১৯] তকদির শব্দের আভিধানিক অর্থ মুকাদ্দার বা নির্ধারিত। তকদির শব্দটি কখনো কখনো সিদ্ধান্ত অর্থে ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি বস্তুতে সৃষ্টিগতভাবে আল্লাহ নির্ধারিত প্রকৃতি প্রদত্ত তার নিজস্ব কিছু গুণ, ক্ষমতা ও সম্ভাবনা বিদ্যমান থাকে। বস্তুর অন্তর্নিহিত গুণাগুণকে ‘কদর’ বলা হয়। কদর অর্থ ভাগ্য, অর্থাৎ যা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। কদর মানে নির্ধারিত অর্থাৎ যা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এটি মূলত কোনো বস্তুর সম্ভাবনাকে বোঝায়। যাকে ‘পদার্থের ধর্ম’ বলা যায়। ‘কদর’ বা সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো হলো ‘আমল’ বা কর্ম এবং কর্মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকে ‘নিয়ত’ বা ইচ্ছা। মানবসমাজে কর্ম অনুযায়ী ফল লাভ হয়। আল্লাহ নিয়ত বা ইচ্ছা অনুযায়ী ফল বা প্রতিদান দিয়ে থাকেন।[১২০]
তকদীর বা ভাগ্যের উপর বিশ্বাস বা তকদীরে বিশ্বাস হলো ইসলামের একটি মৌলিক বিশ্বাস। এই বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহ সবকিছুর স্রষ্টা এবং তিনিই সবকিছুর ভাগ্য নির্ধারণ করেন। ভালো বা খারাপ হোক, সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছা এবং নিয়ন্ত্রণের অধীনে ঘটে থাকে। সুন্নি ইসলামে, ভাগ্যের বিশ্বাসকে ঈমানের একটি শর্ত হিসাবে দেখা হয়। সুন্নি পণ্ডিতদের মতে, ভাগ্যের বিশ্বাস ছাড়া একজন ব্যক্তি মুমিন (পরিপূর্ণ মুসলিম) হতে পারে না। ভাগ্য বা তকদীর কুরআনে একটি সরাসরি বিষয় হিসাবে উল্লেখ করা হয়নি। তবে, কিছু হাদিসে ভাগ্যের উল্লেখ রয়েছে। জিবরাঈলের হাদীসে, মুহাম্মাদ ঈমানকে সংজ্ঞায়িত করার সময় ভাগ্যের উল্লেখ করেছেন। মুসলিম বিশ্বাসের মধ্যে, তকদীর বা ভাগ্যে বিশ্বাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বিশ্বাস মুসলিমদেরকে তাদের জীবনে ঘটে যাওয়া সবকিছুকে আল্লাহর ইচ্ছা হিসাবে মেনে নিতে উদ্বুদ্ধ করে।[১২১]
তকদির বা ভাগ্যকে মুসলিম দার্শনিকেরা দুভাবে ব্যাখ্যা করেছেন: মুবরাম ও মুআল্লাক। মুবরাম অর্থ স্থিরকৃত, মুআল্লাক অর্থ পরিবর্তনীয়। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন, আল্লাহ ভাগ্য নির্ধারণ করেছেন, আর তিনি তা পরিবর্তন করারও ক্ষমতা রাখেন।[১২২] তারা আরও বিশ্বাস করেন, তকদির বা ভাগ্য নেক আমল (ভালো কাজ) দ্বারা, পিতা-মাতার দোয়া ও সদকা ইত্যাদির মাধ্যমে পরিবর্তন হয়। ইসলামি বর্ণনামতে তকদির বা ভাগ্য মানুষের অজানা, অজ্ঞেয় এবং অজেয়; অর্থাৎ কোনো মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব নয় যে তা স্থির নাকি পরিবর্তনীয়।[১২৩]
ইবাদত
ইসলামে পাঁচটি ইবাদতকে ফরজ (অত্যাবশকীয় পালনীয়) মনে করা হয় - শাহাদাহ (বিশ্বাসের ঘোষণা), পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, যাকাত (দান-সদকা), রমজান মাসে রোজা রাখা এবং জ্বিলহজ্জ মাসে হজ্ব যাত্রা - যা সমষ্টিগতভাবে "ইসলামের রুকন" (আরকান আল-ইসলাম) নামে পরিচিত।[১২৪] এছাড়াও, মুসলিমরা অন্যান্য সুন্নত ও ঐচ্ছিক নফল ইবাদতও পালন করে যা পালন করতে উৎসাহিত করা হয় কিন্তু ফরজ ইবাদতের মত অত্যাবশকীয় হিসাবে বিবেচিত হয় না।[১২৫]
সুন্নি মতবাদ
ইসলাম ধর্মে এটা বিশ্বাস করা হয় যে ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য বিশ্বাসীদের কিছু ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এই বাধ্যবাধকতা বিভিন্ন সম্প্রদায় থেকে ভিন্ন। প্রাক-ইসলামী আরব বা অন্যান্য সমাজে কিছু উপাসনা যেমন প্রার্থনা, রোজা, তীর্থযাত্রা এবং বলিদানও (কুরবানি) বিদ্যমান ছিল। ইসলাম ধর্মে এসব উপাসনার অধিকাংশ সংরক্ষণ, কিছু পুনর্বিন্যাস এবং কিছু বাতিল করা হয়েছে।
ইসলামের সুন্নি মতবাদ অনুসারে ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে এবং সেগুলো পালন করা বিশ্বাসীদের জন্য বাধ্যতামূলক। যারা এসব বাধ্যবাধকতা পরিত্যাগ করে তারা ইসলাম ধর্ম অনুসারে মহাপাপ করে এবং এর জন্য কিছু ক্ষেত্রে শাস্তিও পায়। উদাহরণস্বরূপ, সুন্নি ইসলামের চারটি ফিকহ মাযহাব অনুসারে, যে সমস্ত মুসলিম নামাজ ত্যাগ করে তাদের শাস্তি দেওয়া উচিত। সুন্নি বিশ্বাস অনুসারে এই বাধ্যবাধকতাগুলো বয়ঃসন্ধি বা বয়সের একটি নির্দিষ্ট পর্যায় থেকে শুরু হয়।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর বর্ণিত জিব্রাইলের হাদিসে, ফেরেশতা জিব্রাইল, নবী মুহাম্মাদ এবং তাঁর বন্ধুদের সাথে একজন সাহাবীর ছদ্মবেশে দেখা করেন এবং নবীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করতেন:[৮৪]
তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ (মুহাম্মাদ) এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় একজন লোক আমাদের সামনে এলেন। লোকটির পোশাক-পরিচ্ছদ ছিল খুবই ধবধবে সাদা, তার চুলগুলো ছিল গাঢ় কালো এবং তার ওপর সফরের কোনো চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল না। আর আমাদের কেউ তাকে চিনতেও পারছিল না। সে সোজা রাসূল এর কাছে গিয়ে বসল। তারপর তার হাঁটু রাসূল এর হাঁটুর সঙ্গে লাগিয়ে দিয়ে নিজের হাত দুখানা তার ঊরুর ওপর রেখে বলল, হে মুহাম্মাদ! ইসলামের পরিচয় আমাকে বলে দিন। রাসূল বলেন, ইসলাম এই যে, তুমি সাক্ষ্য দেবে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল। আর তুমি নামাজ কায়েম করবে, যাকাত দেবে, রমজানের রোজা রাখবে এবং সামর্থ্য থাকলে হজ করবে। সে বলল, আপনি সত্য বলেছেন। আমরা তার এমন আচরণে বিস্ময় বোধ করলাম যে, সে তাকে জিজ্ঞেসও করছে আবার তার কথা সত্য বলে মন্তব্য করছে। সে আবার জিজ্ঞেস করল, আপনি আমাকে ঈমানের পরিচয় বলে দিন। তিনি বলেন, ঈমান এই যে, তুমি আল্লাহ, তার ফেরেশতা, তার কিতাবসমূহ, তার রাসূলদের, কিয়ামতের দিন এবং তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ইমান রাখবে। সে বলল, আপনি সত্য বলেছেন। সে আবার জিজ্ঞেস করল, আপনি আমাকে ইহসান সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বলেন, তা এই যে, তুমি আল্লাহর ইবাদাত এমনভাবে করবে যেন তুমি তাকে দেখছ। যদি তুমি তাকে না দেখ, তবে নিশ্চয় তিনি তোমাকে দেখছে। সে বলল, কিয়ামতের বিষয়ে আমাকে বলুন। তিনি বলেন, যাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলো সে প্রশ্নকারী থেকে বেশি কিছু জানে না। সে বলল, তাহলে তার আলামতগুলো অবহিত করুন। তিনি বলেন, দাসী তার মনিবকে প্রসব করবে। আর (এক কালে) খালি পা ও উ' ল'ঙ্গ শরীরবিশিষ্ট গরিব মেষের রাখালরা (পরবর্তীকালে) সুউচ্চ দালান-কোঠা নিয়ে পরস্পর গর্ব করতে দেখবে। তারপর লোকটি চলে গেল। বেশ কিছুক্ষণ পর রাসূল বলেন, হে উমার! তুমি কি জান প্রশ্নকারী কে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বলেন, তিনি হচ্ছেন জিবরাইল। তিনি তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শেখাতে এসেছিলেন।
সালাত, রোজা, হজ্ব ও যাকাতের মতো উপাসনার সময় এবং পরিমাণ ইসলামী সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। একজন ব্যক্তি তার করা প্রতিটি ইবাদতের জন্য সওয়াব লাভ করে এবং সে ইবাদত পালনের মাধ্যমে পাপ কাজ করা থেকে বিরত থাকে। [১২৬]
এই মূল্যায়নের বাস্তবিক প্রভাবও থাকতে পারে। ইসলামে নামাজ, রোজা বা যাকাতের মতো উপাসনা পরিত্যাগের ক্ষেত্রে শরিয়াভিত্তিক শাস্তি রয়েছে। এছাড়া, যদি কেউ কোনো ব্যক্তিকে বিনাকারণে ও অবৈধভাবে হত্যা করে তাহলে এই হত্যাকারীদের জন্য ভিন্ন ধরনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পদ্ধতির বিধানও করা হয়েছে। যেমন, যদি এই লোকদের ধর্মত্যাগী (কাফির) বলে গণ্য করা হয়, তাহলে তাদের জানাজা করানো হয় না, তাদের মুসলিম কবরস্থানে দাফন করা হয় না এবং তাদের উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারেই থেকে যায়। ফিকাহ পন্ডিত এবং ইসলামী পন্ডিতরা বলেছেন যে মুসলিমরা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ মেনে নেওয়া সত্ত্বেও যদি আর্থিক অসুবিধার কারণে যাকাত বা হজ্জের দায়িত্ব পালন করতে না পারে, তাহলে তারা গুনাহগার (পাপী) হিসেবে গণ্য হবে না।
হানাফীদের মতে, ইসলাম পালনে অবহেলা বা প্রত্যাখ্যানের সাথে জড়িত কর্মের জন্য শাস্তি হওয়া উচিত, যার মধ্যে রয়েছে কোনো ব্যক্তিকে রক্তপাত না হওয়া পর্যন্ত প্রহার করা বা মৃত্যু পর্যন্ত তাকে বন্দী রাখা। উপরন্তু, যখন তারা মারা যায়, তাদের দেহাবশেষকে মুসলিম অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুসারে শেষকৃত্য করা হয়।
শাফেঈ ও মালেকী মাযহাবের মতে, নামায পরিত্যাগ করা এমন একটি অপরাধ যার শাস্তির পরিমাণ ও রূপ কুরআন এবং সুন্নাহ দ্বারা নির্ধারিত এবং যে ব্যক্তি তা পরিত্যাগ করে তাকে হুদুদ প্রয়োগ করে হত্যা করা উচিৎ। এবং এক্ষেত্রে তাদের দেহাবশেষকে মুসলিম অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় দাফন করা হয় এবং যদি তারা কোনো উত্তরাধিসূত্রে পাওয়া সম্পদ-সম্পত্তি রেখে যায় তবে সেগুলো তাদের উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
হাম্বলী সম্প্রদায়ের মধ্যে, যারা নামায ত্যাগ করে, তাদের ধর্মত্যাগী (কাফির) বলে গণ্য করা হয় এবং তাদের মতে, এদের তরবারি দিয়ে হত্যা করা উচিৎ। এক্ষেত্রে, এদের জানাজা করানো হয় না এবং লাশ মুসলিম কবরস্থানে দাফন করা হয় না।
বিশ্বাসের ঘোষণা
শাহাদাহ[১২৭] হলো ইসলামে বিশ্বাস ঘোষণার একটি শপথ। এর পূর্নাঙ্গ রূপ হলো "আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রাসূলুল্লাহ" (أشهد أن لا إله إلا الله وأشهد أن محمداً رسول الله), যার অর্থ "আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল।"[১২৮] শাহাদাহই ইসলাম ধর্মের বাকি সব মৌলিক বিষয়ের ভিত্তি ও পূর্বশর্ত। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে ইচ্ছুক এমন অমুসলিমদেরকে সাক্ষীদের সামনে শাহাদাহ পাঠ করানো ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচিত।[১২৯][১৩০]
উপাসনা
ইসলামে নামাজ, যা আস-সালাহ বা আস-সালাত (আরবি: الصلاة) নামে পরিচিত, তাকে আল্লাহর সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ফিকহের ভাষায় ফরজকে বলা হয় কুরআনের নির্দেশ যা স্পষ্ট এবং ব্যাখ্যার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। দৈনিক পাঁচবার নামাজ আদায় বাধ্যতামূলক (ফরজ)। এই বিশ্বাসটি সুন্নি ইসলামি সমাজের দ্বারা গৃহীত একটি অনুশীলন, যা কুরআনের আয়াত এবং হাদিসের ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।[১৩১] তদনুসারে, সুন্নিরা, যারা ইসলামী বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ, তারা দিনে ৫ বার প্রার্থনা করে: সকাল, দুপুর, বিকাল, সন্ধ্যা এবং রাতের নামাজ। নামাজে রাকাত নামের একক পুনরাবৃত্তি থাকে, যার মধ্যে রুকু করা এবং আল্লাহর সামনে মাথা নত করা (সিজদাহ করা) অন্তর্ভুক্ত থাকে। নামাজের সূরা ও অন্যান্য দোয়া আরবি ভাষায় পাঠ করা হয় এবং কাবার দিকে মুখ করে আদায় করা হয়। এই ইবাদত আদায় করার জন্য পবিত্রতা অর্জনের প্রয়োজন হয়, যা অযু বা গোসলের মাধ্যমে অর্জন করার বিধান আছে।[১৩২][১৩৩][১৩৪][১৩৫]
মসজিদ মুসলিমদের উপাসনালয়। মসজিদ একটি আরবি শব্দ। যদিও মসজিদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো একটি নামাজের স্থান হিসাবে ব্যবহার করা, তবে এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক কেন্দ্রও। উদাহরণস্বরূপ, সৌদি আরবের মদিনায় মসজিদ আন-নববী ("নবীদের মসজিদ") একসময় মুসলিম গরিবদের আশ্রয়স্থল হিসাবেও কাজ করত।[১৩৬] নামাজের সময় আযান দেওয়ার জন্য মসজিদে সাধারণত দুটি মিনার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।[১৩৭][১৩৮]
“ | তোমরা নামাজ কায়েম করো। | ” |
— সূরা বাকারা, আয়াত ৪৩ |
সুন্নি সম্প্রদায়ের মতে, মিরাজের সময় আল্লাহ নিজেই মুহাম্মাদ এবং তার উম্মতকে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। অতএব, এই গোষ্ঠীর মুসলিমরা প্রার্থনাকে (নামাজ) অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় কারণ তারা বিশ্বাস করে যে দৈনিক পাঁচবার নামাজ আদায়ের বিধান আল্লাহর নিকট হতেই সরাসরি নাজিল হয়েছিল।
শিয়া এবং কুরআনবাদীরা (যে দলটি ধর্মীয় তথ্যসূত্র হিসাবে হাদিসকে প্রত্যাখ্যান করে) দিনে তিনবার নামাজ আদায় করে।[১৩৯] এখানে তিনটি সময়ের নামাজের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কোন তিনটি সময়ের নামাজ তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা নেই।[১৪০][১৪১][১৪২] এই মতবাদে, নামাজের সময়ের দুটি আলাদা রীতিনীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম রীতিনীতি অনুসারে, নামাজের সময়গুলো হলো দুপুর-বিকাল, সন্ধ্যা-রাত এবং সকাল। দ্বিতীয় রীতিনীতি অনুসারে, নামাজের সময়গুলো হলো সন্ধ্যা, রাত এবং সকাল।[১৪৩] প্রফেসর ডক্টর সুলাইমান আতেশের মতে, কুরআনে উল্লিখিত নামাজ হলো সকাল, সন্ধ্যা এবং রাতের নামাজ (তাহাজ্জুদ)।[১৪৪] আলেভি ধর্মে, নামাজকে একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং অনুশীলনের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিশ্বাস অনুসারে, নামাজের কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম বা প্রবিধান নেই যা অনুসরণ করতে হবে।[১৪৫]
প্রথমত, মসজিদে আযান দেওয়ার মাধ্যমে মুসলিমদের নামাজের আহ্বান জানানো হয়। মুসলিমরা ইচ্ছা করলে নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে জমায়েত হয় অথবা তারা ইচ্ছা করলে একা বা দলবদ্ধভাবে যেকোনো পরিচ্ছন্ন স্থানে তা আদায় করতে পারে। নামাজের আগে অযু করার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা হয়। অযু না করে নামায আদায় করা যায় না। অজুর মাধ্যমে হাত, মুখ, নাক, মুখমণ্ডল, কনুই পর্যন্ত বাহু, মাথার একটি নির্দিষ্ট অংশ (বা চুল), পা ও গোড়ালি ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়। এই আচারের রূপ এবং বাস্তবায়ন সম্প্রদায়ের উপর নির্ভর করে ভিন্ন ও পরিবর্তিত হতে পারে। [১৪৬] নামাজ পড়ার সময়, মুসলমানদের অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট দিকে মুখ করে দাঁড়াতে হয়, যাকে কিবলা বলা হয়। কিবলা হলো মক্কার কাবা শরিফের দিকে। মসজিদগুলোতে, কিবলার দিক নির্দেশ করতে মিহরাব নামে একটি সুসজ্জিত কাঠামো থাকে। মিহরাব হলো একটি অর্ধবৃত্তাকার গম্বুজ যা কাবা শরিফের দিকে নির্দেশ করে নির্মিত হয়। মসজিদের বাইরে, মুসলিমরা সাধারণত একটি সীজাদায় নামাজ পড়েন, যা একটি ছোট কাপড়ের টুকরো এবং এটি নামাজের সময় মাটিতে বিছিয়ে দেওয়া হয়। [১৪৭]
দান
যাকাত (আরবি: زكاة, zakāh) ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। এটি একটি অর্থনৈতিক ইবাদত যার মাধ্যমে ধনী ব্যক্তিরা তাদের সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ (প্রতি বছর মোট সঞ্চিত সম্পদের ২.৫%)[১৪৮] গরীব ও অভাবীদের সাহায্যের জন্য দান করেন।[১৪৯] যাকাতের অর্থ হলো ‘পরিশুদ্ধ করা’। ধনীদের সম্পদকে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি আমানত মনে করা হয় এবং যাকাত প্রদানের মাধ্যমে সেই সম্পদকে পরিশুদ্ধ করা হয়।
“ | নিশ্চয়ই সদকাহ্ (যাকাত) হলো- ফকীর, মিসকীন, তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্যে, যাদের চিত্তাকর্ষণ করা হয় তাদের জন্যে, আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরদের জন্যে-এটা আল্লাহর বিধান। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। | ” |
— সূরা তওবা, আয়াত ৬০ |
যাকাত কেউ ইচ্ছা করে দান করেন না, বরং এটি প্রতিটি স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নারীর জন্য বাধ্যতামূলক (ফরজ)। যাকাত দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কিছু শর্ত আছে। যেমন, যাকাত দেওয়ার জন্য একজন ব্যক্তির নিকট নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকতে হবে। নিসাবের পরিমাণ হলো সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ (৮৫ গ্রাম) বা সাড়ে বায়ান্নো তোলা (৬১২.৩৫ গ্রাম) রূপার মূল্যের সমপরিমাণ সম্পদ।[১৫০] এছাড়াও, যাকাতযোগ্য সম্পদ হিজরি সনের হিসাবে এক বছরের বেশি সময় অতিক্রম করতে হবে।এছাড়াও, সদকা, যাকাতের বিপরীতে, একটি অত্যন্ত উৎসাহিত ঐচ্ছিক দান।[১৫১]
“ | এমন অভাবী লোক, যারা আল্লাহর পথে নিজেদের নিয়োজিত রাখার কারণে (উপার্জনের জন্য) দুনিয়া চষে বেড়াতে পারে না। সম্ভ্রান্ততার কারণে অনভিজ্ঞ লোকেরা তাদের অভাবহীন মনে করে। আপনি তাদের চিহ্ন দেখে চিনতে পারবেন। তারা মানুষের কাছে নির্লজ্জভাবে ভিক্ষা করে না। আর তোমরা যেকোনো উত্তম জিনিস ব্যয় করো, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা সে বিষয়ে অবগত আছেন। | ” |
— সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৩ |
যাকাতের অর্থ গরীব-দুঃস্থদের সাহায্য, মুসাফির, দাসমুক্তি, ঋণগ্রস্তদের ঋণমুক্তিতে সহায়তা, ইসলামের প্রচার ও পৃষ্ঠপোষকতা ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা হয়।[১৫২]
মুসলিমদের মধ্যে বিতর্ক আছে যে, 'যাকাত' একটি কর নাকি একটি ইবাদত।[১৫৩][১৫৪][১৫৫][১৫৬] যারা 'যাকাত'কে একটি কর হিসেবে বিবেচনা করেন, তাদের মতে, যেসকল মুসলিম শরিয়াহ-শাসিত দেশে বসবাস করেন না, তারা তাদের দেশের আইন অনুসারে কর প্রদান করেন, তাই ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের অতিরিক্তভাবে 'যাকাত' প্রদানের প্রয়োজন নেই। তবে, যদি 'যাকাত'কে একটি ইবাদত হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তাহলে তাদের অবশ্যই তা প্রদান করতে হবে।
উপবাস
ইসলামে রোজা (আরবি: صوم, ṣawm) হলো খাদ্য, পানীয় এবং ধূমপানের মতো অন্যান্য সকল ধরনের ভোগ্যপণ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকা, যা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পালন করা হয়। রমজান মাসে মুসলিমদের জন্য রোজা রাখা ফরজ।[১৫৭] রোজা হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বৈধ জিনিস থেকে নিজেকে বিরত রাখার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা এবং দরিদ্রদের কথা চিন্তা করা। এছাড়াও আরও কিছু দিন আছে, যেমন আরাফাহর দিন, যখন রোজা রাখা مستحب (সুন্নত)।[১৫৮]
“ | সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম (রোজা) পালন করে। | ” |
— সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৫ |
রমজান হলো ইসলামের পবিত্রতম মাস, যেখানে মুসলিমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও অনুগ্রহের জন্য রোজা রাখে। সুস্থ এবং প্রাপ্তবয়স্ক সকল মুসলিমদের জন্য রোজা রাখা ফরজ। তবে, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে, যেমন অসুস্থতা, ভ্রমণ বা স্তন্যদান, মুসলিমদের রোজা রাখার প্রয়োজন হয় না। রোজা সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পালন করা হয়। সুবহে সাদিক হলো ভোরের আলোর প্রথম সূক্ষ্ম রেখা এবং সূর্যাস্ত হলো সূর্যের সম্পূর্ণ অস্তমিত হওয়া। সেহরি হলো সুবহে সাদিকের পূর্বের খাবার যেটা গ্রহণের মাধ্যমে রোজা শুরু করা হয় এবং ইফতার হলো রোজা ভঙ্গের জন্য গ্রহণ করা সন্ধ্যার খাবার। সেহরি করা বাধ্যতামূলক (ফরজ) নয়, তবে এটি মুহাম্মাদ এর একটি সুন্নাত। তবে, ইফতার করা বাধ্যতামূলক।
“ | আর যারা রোজা রাখার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও রোজা রাখতে চায় না (যারা রোজা রাখতে অক্ষম), তারা এর পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্য দান করবে। পরন্তু যে ব্যক্তি খুশীর সঙ্গে সৎকর্ম করে, তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি তোমরা রোজা রাখ, তাহলে তা তোমাদের জন্য বিশেষ কল্যাণের; যদি তোমরা উপলব্ধি করতে পারো। | ” |
— সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৪ |
মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে রমজান মাস হলো আল্লাহর কাছ থেকে প্রাপ্ত এক বিশেষ রহমত ও অনুগ্রহের মাস। এই মাসে, মুসলিমরা আল্লাহর কাছে আরও বেশি নিকটবর্তী হওয়ার এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বিশেষ প্রচেষ্টা করে। রোজা রাখা হলো এই প্রচেষ্টারই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।[১৫৯] মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে রোজা শুধুমাত্র শারীরিক আত্মার জন্যই নয়, আধ্যাত্মিক আত্মার জন্যও উপকারী। রোজা রাখার মাধ্যমে, মুসলমানরা তাদের ইচ্ছা শক্তিকে পরীক্ষা করে এবং তাদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে। এটি তাদের আরও বেশি ধৈর্যশীল এবং সহনশীল হতে সাহায্য করে। ইসলামি বিশ্বাসানুসারে, রমজান মাসে রোজাদার ব্যক্তি সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার পরিহার করার ফলে গরিব-দুঃখীদের অপরিমেয় দুঃখ-কষ্ট উপলব্ধি করতে শেখেন। এভাবে ধনী লোকেরা অতি সহজেই সমাজের অসহায় গরিব-দুঃখী, এতিম-মিসকিন ও নিরন্ন মানুষের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল হয়ে তাদের জন্য সেহরি ও ইফতারের ব্যবস্থা করেন এবং তাদের দান-খয়রাত, যাকাত-সদকা প্রদানসহ বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেন।
ইউনেস্কো ২০২৩ সালে মুসলিমদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় রীতি ইফতারকে অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের আওতাভুক্ত করে।[১৬০] ইউনেস্কোর ভাষায়, ইফতার (ইফতারি কিংবা ইফতর হিসেবেও পরিচিত) রমজান মাসে সব ধরনের ধর্মীয় বিধান মানার পর সূর্যাস্তের সময় মুসলিমদের পালনীয় রীতি। সংস্থাটি মনে করে, এই ধর্মীয় রীতি পরিবার ও সমাজিক বন্ধন দৃঢ় করে এবং দান, সৌহার্দ্যের মতো বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসে।[১৬১]
মুসলিমরা রমজান মাসকে অনেক গুরুত্ব দেয় কারণ তারা বিশ্বাস করে যে এই মাসে কুরআন নাযিল (অবতীর্ণ) হয়েছিল। কুরআন হলো ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ এবং মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে এটি আল্লাহর কাছ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। তাই রমজান মাসে কুরআন নাযিল হওয়ার কারণে এই মাসটি মুসলিমদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।[১৬২] রমজান মাসে অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানও পালন করা হয়। এই অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে তারাবির নামাজ পড়া, যা হলো একটি বিশেষ নামাজ যা রমজান মাসে পড়া হয় এবং কুরআন সম্পূর্ণ পড়া (খতম দেওয়া)।
রমজান মাস শেষ হয় একটি বিশেষ ঈদের (উৎসব) মধ্য দিয়ে, যাকে ঈদুল ফিতর বলা হয়। এই ঈদ হলো এক মাস ধরে পালিত রোজা রাখার ইবাদতের সমাপ্তি। ঈদের দিন রোজা রাখা নিষিদ্ধ, এমনকি কেউ যদি ভুলেও রোজা রাখে, তাহলে তাকে কাফফারা দিতে হবে। ঈদ হলো একটি পুরস্কারের মতো, যা আল্লাহ তার বান্দাদেরকে রোজা রাখার জন্য দিয়ে থাকেন।[১৬৩]
তীর্থযাত্রা
ইসলামী তীর্থযাত্র হজ্জ হলো মুসলমানদের জন্য পবিত্রতম শহর সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিত একটি বার্ষিক ইসলামি তীর্থযাত্রা।[১৬৪] হজ্জ মুসলমানদের জন্য একটি বাধ্যতামূলক ধর্মীয় ইবাদত। শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম এবং তীর্থযাত্রীর অনুপস্থিতিতে তার পরিবার নিজেদের ভরণপোষণ করতে সক্ষম হলে সকল প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের জীবনে অন্তত একবার হজ্জ পালন করা ফরজ।[১৬৫][১৬৬][১৬৭] ইসলামি পরিভাষায়, হজ্জ হলো সৌদি আরবের ইসলামের পবিত্র শহর মক্কায় অবস্থিত "আল্লাহর ঘর" কাবার উদ্দেশ্যে করা একটি তীর্থযাত্রা। এটি শাহাদাহ (আল্লাহর কাছে শপথ), সালাত (প্রার্থনা), যাকাত (দান) এবং সাওম (রমজানের রোজা) এর পাশাপাশি ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি স্তম্ভ। হজ্জ হলো মুসলিম জনগণের সংহতি এবং সৃষ্টিকর্তার (আল্লাহর) কাছে তাদের আত্মসমর্পণের একটি বাহ্যিক প্রকাশ।[১৬৮][১৬৯]
“ | আর লোকদের মধ্যে হজের ঘোষণা করে দাও, তারা তোমার কাছে সব দূরবর্তী স্থান থেকে হেঁটে ও উটের ওপর সওয়ার হয়ে আসবে। যাতে তারা তাদের কল্যাণ ও নির্দিষ্ট দিনগুলোয় আল্লাহর নাম স্মরণ করে তাঁর দেওয়া জীবিকা হিসেবে চতুষ্পদ জন্তু জবাই করতে পারে। অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং অভাবগ্রস্থকে আহার করাও। | ” |
— সূরা হজ্জ, আয়াত ২৭-২৮ |
হজ্জ শব্দের অর্থ হলো "যাত্রায় যোগদান করা", যা যাত্রার বাহ্যিক কাজ এবং উদ্দেশ্যের অভ্যন্তরীণ কাজ উভয়কেই বোঝায়।[১৭০] তীর্থযাত্রাটির নিয়মগুলো পাঁচ থেকে ছয় দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়, যা ইসলামি বর্ষপঞ্জির শেষ মাস জিলহজ্জের ৮তারিখ থেকে ১২ বা ১৩তারিখ[১৭১] পর্যন্ত বিস্তৃত।[১৭২] যেহেতু ইসলামি বর্ষপঞ্জি একটি চন্দ্র পঞ্জিকা এবং ইসলামি বছর গ্রেগরীয় বছরের তুলনায় প্রায় এগারো দিন ছোট, তাই হজ্জের গ্রেগরীয় তারিখ প্রতি বছর পরিবর্তিত হয়। হজ্জ ৭ম শতাব্দীর ইসলামের নবি মুহাম্মাদের জীবনের সাথে জড়িত, তবে মক্কায় তীর্থযাত্রার এই অনুষ্ঠানটি ইব্রাহিমের সময়কাল পর্যন্ত হাজার হাজার বছর পুরনো বলে মুসলিমরা মনে করে থাকেন। হজের সময়, হজযাত্রী বা হাজিগণ লক্ষাধিক মানুষের পদযাত্রায় যোগ দেন, যারা একই সাথে হজের সপ্তাহের জন্য মক্কায় একত্রিত হন এবং একটি ধারাবাহিক অনুষ্ঠান সম্পাদন করেন: প্রত্যেক ব্যক্তি কাবার(একটি ঘনক আকৃতির ভবন এবং মুসলিমদের জন্য প্রার্থনার জন্য ক্বিবলা) চারপাশে সাতবার ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে হাঁটেন, সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝখানে সাতবার দ্রুত পায়ে হেঁটে যান, তারপর জমজম কূপ থেকে পানি পান করেন, আরাফাতের পাহাড়ের ময়দানে গিয়ে অবস্থান করেন, মুজদালিফার ময়দানে একটি রাত কাটান এবং তিনটি স্তম্ভে পাথর নিক্ষেপ করার মাধ্যমে শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপ করেন। একটি পশু কুরবানি করার পরে (যা একটি ভাউচার ব্যবহার করে সম্পন্ন করা যেতে পারে), হজযাত্রীদের তাদের মাথা ন্যাড়া করতে হয় বা চুল ছাঁটাই করতে হয় (পুরুষ হলে) বা চুলের প্রান্ত ছাঁটাই করতে হয় (মহিলা হলে)। এর পরে ঈদুল আযহার চারদিনব্যাপী বৈশ্বিক উৎসবের উদযাপন শুরু হয়।[১৭৩][১৭৪][১৭৫] মুসলিমরা বছরের অন্য সময়ে মক্কায় ওমরাহ (আরবি: عُمرَة) বা "সংক্ষিপ্ত হজযাত্রা" করতে পারেন। তবে, ওমরাহ পালন করা হজের বিকল্প নয় এবং মুসলিমরা ওমরাহ করার পরেও তাদের জীবদ্দশায় অন্য কোনো সময়ে হজ পালন করতে বাধ্য যদি তাদের তা করার সামর্থ্য থাকে।[১৭৬]
“ | বাইতুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার শক্তি ও সামর্থ্য যে রাখে, সে যেন হজ করে এবং যে এ নির্দেশ অমান্য করবে সে কুফুরির আচরণ করবে, তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ বিশ্ব প্রকৃতির ওপর অবস্থানকারীদের মুখাপেক্ষী নন। | ” |
— সূরা আল ইমরান, আয়াত ৯৭ |
অতিরিক্ত ধর্মীয় অনুশীলন
নফল অর্থ অতিরিক্ত। অর্থাৎ তা ফরজ এবং ওয়াজিবের অতিরিক্ত। একে ফরজ ও ওয়াজিবের পরিপূরক হিসাবেও গণ্য করা হয়। নফল ইবাদতের মধ্যে রয়েছে, সাধ্যমতো নফল নামাজ পড়া, জিকির করা, তাসবিহ পড়া, দুরুদ শরিফ পড়া, কুরআন তিলাওয়াত করা, কবর জিয়ারত করা, মাসনুন দোয়াগুলো প্রয়োজনের সময় পড়া, ভালো কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া, দান সদকা করা, আল্লাহর সাহায্য ও অনুগ্রহ প্রার্থনা করা, যে কোনো কাজে নিয়তকে পরিশুদ্ধ করা, সর্বদা ওজু করা অবস্থায় থাকা ইত্যাদি। এমনকি একজন মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলাতেও নফল ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যায়।[১৭৭] অনেক হাদিসে নফল ইবাদত পালনের জন্য অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। একবার রাবিয়া ইবনে কাব আসলামি, নবী মুহাম্মাদকে আরজ করলেন,
“ | ইয়া রসূলাল্লাহ (মুহাম্মাদ)! আমি জান্নাতে আপনার প্রতিবেশী হয়ে থাকতে চাই। রাসূল তাকে বললেন, বেশি বেশি নফল ইবাদত কর। | ” |
— সহীহ মুসলিম |
মুসলিমরা কুরআন তিলাওয়াত (পাঠ) করা এবং মুখস্থ করাকে একটি পুণ্যের (সওয়াবের) কাজ হিসেবে মনে করে। কুরআন ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ এবং এটিকে সঠিকভাবে পাঠ করা ও মুখস্থ করাকে মুসলিমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য মনে করে। কুরআনকে সঠিকভাবে উচ্চারণ করার জন্য তাজবিদ অনুসরণ করা হয়। তাজবিদ হলো কুরআনকে সঠিকভাবে উচ্চারণ করার একটি পদ্ধতি। তাজবিদের নিয়মগুলো কুরআনের শব্দগুলোর উচ্চারণ, স্বর, এবং দীর্ঘতা নির্ধারণ করে।[১৭৮] রমজান মাসে অনেক মুসলিম পুরো কুরআন পাঠ করার চেষ্টা করে। রমজান একটি পবিত্র মাস যখন মুসলিমরা রোজা রাখে, বেশি বেশি নামাজ পড়ে এবং অন্যান্য ধর্মীয় কাজ করে। যে ব্যক্তি পুরো কুরআন মুখস্থ করেন তাকে হাফেজ বলা হয় এবং হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, এই ব্যক্তিরা বিচারের দিন অন্যদের জন্য সুপারিশ করতে পারবেন।[১৭৯]
আল্লাহর কাছে প্রার্থনা (আরবিতে যাকে আল-দু'আ বলা হয়) করার জন্য একজন মুসলিমের নিজস্ব শিষ্টাচার রয়েছে যেমন ভিক্ষা করার মতো দু হাত উঁচু করে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা।[১৮০]
আল্লাহকে স্মরণ (ذكر, যিকর') বলতে আল্লাহকে উল্লেখ করে প্রশংসা করা বাক্যাংশকে বোঝায়। সাধারণত, এটিতে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতক প্রকাশ করার সময় করা হয়। আল্লাহর প্রশংসা করা (الحمد لله, আল-হামদু লিল্লাহ), নামাজের সময় বা কোন কিছুর প্রতি বিস্ময় বোধ করার সময় আল্লাহর মাহাত্ম্য ঘোষণা করা (سبحان الله, সুবহানাল্লাহ) এবং যেকোনো হালাল কাজ শুরুর আগে 'আল্লাহর নামে' (بِسْـــــــــمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِـيْمِ, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম) শুরু করা এর অন্তর্ভুক্ত।[১৮১]
শরিয়ত
শারিয়াহ বা শরিয়ত (আরবি: شريعة) হলো "ইসলামের আইন"। এটি ইসলাম ধর্মের প্রার্থনা, লেনদেন এবং শাস্তি সহ ধর্মীয় আইনের সমস্ত ধারণা এবং নিয়মগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে।
শরিয়ত ইসলামের ধর্মীয় আইন। এটি আল্লাহর নির্দেশাবলীর উপর ভিত্তি করে তৈরি। সাধারণ ধারণায়, শরিয়তের মূল উৎস হলো কুরআন।[৯১] কুরআনে আল্লাহর নির্দেশাবলী ও নিষেধাজ্ঞাগুলো সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। তাই, কুরআনে যা বর্ণিত হয়েছে তাই শরিয়তের আইন। শরিয়তের দ্বিতীয় উৎস হলো হাদিস। হাদিস হলো নবী মুহাম্মাদ এর বাণী, কর্ম ও মৌন সম্মতি। হাদিসগুলো কুরআনের বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করে। তাই, হাদিসগুলোও শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। কিয়াস হলো এক ধরনের যুক্তি প্রয়োগের পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে, দুটি বিষয়ের মধ্যে একই কারণ (ইল্লত) থাকলে, সেই দুই বিষয়ের জন্য একই বিধান প্রযোজ্য হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ, কুরআনে বলা হয়েছে যে, শূকর খাওয়া হারাম। কারণ হলো, শূকর একটি অপবিত্র প্রাণী। এখন, যদি কোনো নতুন বিষয়ের সাথে শূকরের একই কারণ (অপবিত্রতা) থাকে, তাহলে সেই নতুন বিষয়টিও হারাম বলে বিবেচিত হবে। শাফিঈ এবং ইবনে কুদামাহর মতো কিছু ফকিহ মনে করেন যে, হারাম এবং হালাল খাবার নির্ধারণের জন্য আরবদের প্রকৃতি একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড। এই মানদণ্ড অনুযায়ী, এমন খাবার যা আরবদের প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা হালাল এবং যা অসঙ্গতিপূর্ণ তা হারাম।[১৮২]
শরিয়াহ একটি আইন ব্যবস্থা, কিন্তু এটি আধুনিক আইন ব্যবস্থার মতো নয়। আধুনিক আইন ব্যবস্থায় আইনগুলো স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত এবং সুরক্ষিত। আইনের ক্ষেত্র, নিয়ম এবং সীমানাগুলো স্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আইন ব্যক্তিগত অধিকারের ভিত্তিতে রচিত। অন্যদিকে, শরিয়াহ একটি ধর্মীয় আইন ব্যবস্থা। এটি ইসলাম ধর্মের নীতি ও মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে রচিত।[১৮৩] শরিয়াহ আইনগুলোর ক্ষেত্র, নিয়ম এবং সীমানাগুলো ধর্মীয় গ্রন্থগুলোতে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। শরিয়াহ আইনগুলো ব্যক্তিগত অধিকারের ভিত্তিতে রচিত নয়, বরং ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা নির্ধারিত নীতি ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে রচিত। আধুনিক বিশ্বে আইন, নীতি, রীতিনীতি, বিশ্বাস এবং উপাসনা হলো আলাদা আলাদা একক ধারণা। আইনের ক্ষেত্রটি নীতি, রীতিনীতি, বিশ্বাস এবং উপাসনার ক্ষেত্র থেকে আলাদা। তবে, শরিয়তে এই ধারণাগুলো একে অপরের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। শরিয়ত আইন, নীতিশাস্ত্র, রীতিনীতি, বিশ্বাস এবং উপাসনার মধ্যে পার্থক্য করে না।[১৮৪] উদাহরণস্বরূপ, মদ্যপান বা অবৈধ যৌন ক্রিয়াকলাপের জন্য গুরুতর শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে। শরিয়তের শাস্তিগুলো অপরাধের গুরুতরতার উপর ভিত্তি করে শ্রেণিবিন্যাস করা হয় না। উদাহরণস্বরূপ, মদ্য পান করার জন্য শাস্তি হত্যার শাস্তির মতোই হতে পারে। এছাড়াও, শরিয়ত অপরাধী-ভুক্তভোগী বা ইচ্ছাকৃত-অনিচ্ছাকৃত পার্থক্য করে না। উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্যক্তি যদি একজন অমুসলিমকে হত্যা করে, তাহলে শাস্তি একজন মুসলিমকে হত্যা করার শাস্তির মতোই হবে। শরিয়া আইনের অধীনে, অপরাধের প্রমাণ প্রমাণিত হওয়ার বা অপরাধীদের জন্য একই অপরাধের জন্য একই শাস্তি দেওয়ার মতো বাধ্যতামূলক প্রয়োজনীয়তা নেই। এর অর্থ হলো যে অপরাধীদের দোষী সাব্যস্ত করা এবং তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য সরকার বা বিচারকদের ব্যাপক ক্ষমতা রয়েছে।[১৮৫]
প্যাট্রিসিয়া ক্রোন, একজন ইংরেজ ঐতিহাসিক এবং ইসলামী আইনের বিশেষজ্ঞ। তিনি দাবি করেন যে শরিয়াহ আইনের মূল উৎস হলো নিকট প্রাচ্যের আইন, যা আলেকজান্ডারের সময়ে গ্রিক এবং রোমান আইনের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল।[১৮৬] তিনি আরও দাবি করেন যে মুসলিমরা এই আইনকে গ্রহণ করে এবং এটিকে তাদের নিজস্ব ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলেছে। ক্রোন দাবি করেন যে মুসলিমরা এই আইনকে "আল্লাহর আইন" হিসেবে উপস্থাপন করেছে, যা তাদের শাসনকে ন্যায্যতা প্রদান করেছে। তারা এটিকে একটি সুশৃঙ্খল ব্যবস্থায় সংগঠিত করেছে, যাতে এটি সহজে বোঝা এবং প্রয়োগ করা যায়। তারা এটিকে তাদের নিজস্ব ধর্মীয় চিন্তাধারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলেছে, যাতে এটি ইসলামের মূল্যবোধের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়।[১৮৬] ক্রোন আরও, দাবি করেন যে এই আইনটি উমাইয়া খিলাফতের সময় সাধারণত ব্যবহৃত হত, বিশেষ করে দ্বিতীয় খলিফা মুয়াবিয়ার সময়।[১৮৬] উলামা, ইসলামী আইনবিদরা, এই আইনটিকে একটি নতুন রূপ দিয়েছে যা এখন শরিয়াহ নামে ডাকা হয়।[১৮৭]
ওআইসি হলো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করে। এই সংস্থার সদস্য দেশগুলোর মধ্যে শরিয়া আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য রয়েছে। কিছু দেশ শরিয়া আইনকে সম্পূর্ণরূপে প্রয়োগ করে, কিছু দেশ আংশিকভাবে প্রয়োগ করে এবং কিছু দেশ শরিয়া আইনের আঞ্চলিক পার্থক্যগুলোকে স্বীকৃতি দেয়। শরিয়া আইন প্রয়োগকারী দেশগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে মানবাধিকার, সমতা, নারী অধিকার, শিশুদের সুরক্ষা, ব্যক্তিগত পছন্দ এবং ব্যক্তিগত অধিকার ও স্বাধীনতার সুরক্ষা না করার মতো বিষয়ে সমালোচনার সম্মুখীন হয়।[১৮৮] এই সমালোচকরা যুক্তি দেন যে শরিয়া আইন এই বিষয়গুলোকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় না এবং এর ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। শরিয়া আইন এবং পশ্চিমা আইনের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বন্দ্বের উৎস হলো ইসলামের ব্যক্তিগত অধিকার ও স্বাধীনতার ধারণার অন্তর্ভুক্তি না করা। পশ্চিমা আইন ব্যক্তিগত অধিকার ও স্বাধীনতার উপর জোর দেয়, যেখানে শরিয়া আইন ধর্মীয় কর্তৃত্বের উপর জোর দেয়। এই পার্থক্যটি শরিয়া আইন প্রয়োগকারী দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্বের দিকে পরিচালিত করে।[১৮৩]
শরিয়াহ ইসলামের একটি প্রাচীন আইনি ব্যবস্থা যা নবী মুহাম্মাদের জীবন এবং তাঁর শিক্ষা দ্বারা অনুপ্রাণিত। এই ব্যবস্থাটি মানবাধিকারের অনেক নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, তবে কিছু অনুশীলন রয়েছে যা বস্তুবাদী ও নারীবাদীরা মানবাধিকারের বিরুদ্ধে গুরুতর লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে।[১৮৯] ইলহাদ শব্দের অর্থ ইসলাম থেকে বিচ্যুতি, ইরতিদাদ অর্থ ইসলাম ত্যাগী, ফাসিক অর্থ পাপী। এই শব্দগুলো প্রায়শই রাজনৈতিক মতবিরোধ বা ধর্মীয় স্বাধীনতার অনুশীলনকে দমন করার জন্য ব্যবহৃত হয়।[১৯০] বস্তুবাদী ও নারীবাদীরা দ্বারা এই অনুশীলনগুলোকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করে। তেহরাত-হিজাব হলো ইসলামী আইনের একটি অনুশীলন যা মহিলাদের পোশাকের একটি নির্দিষ্ট ধারার প্রয়োগ করে। এই ধারাটি প্রায়শই মহিলাদের মুখ এবং শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে রাখতে নির্দেশ করে। নারীবাদীরা প্রায়ই এই অনুশীলনটিকে নারীর অধিকারের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে।[১৯১]
ইসলামের আইন ব্যবস্থায়, ফরজ ইবাদত বলতে এমন ইবাদতকে বোঝানো হয় যা পালন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক। এই ইবাদতগুলো হলো কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত। ইসলামের আইন ব্যবস্থায়, এই ইবাদতগুলো ছেড়ে দেওয়াকে ধর্মত্যাগ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। ধর্মত্যাগ একটি গুরুতর অপরাধ এবং এর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। বিংশ শতাব্দীতে, মানুষের মৌলিক অধিকারের ধারণা বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে বিকাশ লাভ করে। এই ধারণার মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় স্বাধীনতা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং আইনের অধীনে সমতা। মানুষের মৌলিক অধিকারের ধারণার বিকাশের ফলে, ইসলামি দেশগুলোতেও শরিয়া আইনের প্রয়োগে পরিবর্তন এসেছে। ইসলামের প্রাচীন আইন ব্যবস্থায়, ইবাদত পালনের পুরস্কার বা শাস্তি দুনিয়াতেই দেওয়া হবে বলে বিশ্বাস করা হতো। তবে, আজকাল মুসলিম দেশগুলোতে, অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, ইবাদত পালনের পুরস্কার বা শাস্তি পরকালে দেওয়া হবে। মানুষের মৌলিক অধিকারের ধারণার বিকাশ এবং ইবাদত পালনের পুরস্কার বা শাস্তি পরকালে দেওয়া হবে বলে বিশ্বাসের ফলে, মুসলিম দেশগুলোতে ধর্মনিরপেক্ষতা বা আংশিকভাবে শরিয়া আইন অনুসরণ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ধর্মীয় বিধিবিধান
ধর্মীয় বিষয়গুলোর সংজ্ঞা নির্ভর করে যে কোন উৎস থেকে সংজ্ঞাটি এসেছে এবং সেই উৎসের অর্থ ও ব্যাপকতা কীভাবে ব্যাখ্যা করা হয় তার উপর। উদাহরণস্বরূপ, মাছের বাইরে সামুদ্রিক খাবার[১৯২], মুতাহ বিবাহ এবং পোশাকের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার মতো বিষয়গুলোর সংজ্ঞা বিভিন্ন ইসলামী সম্প্রদায় এবং মতবাদের মধ্যে ভিন্ন হতে পারে। ফকিহ পন্ডিতদের ইসলামী আইন এবং রীতিনীতির ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে শরিয়ায় তা নির্ধারিত হয়। ফিকহ হলো কুরআন এবং হাদীসের উপর ভিত্তি করে ইসলামী আইন এবং রীতিনীতির ব্যাখ্যা। ফকিহ পন্ডিতরা কুরআন এবং হাদীসের আক্ষরিক অর্থ, সেইসাথে বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী ইসলামী আইনি পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে তাদের সিদ্ধান্ত নেন। উলামাদের ইসলামী আইন, নিষেধাজ্ঞা এবং বিধিবিধান নির্ধারণ করার, কিয়াস (সদৃশতার মাধ্যমে) নতুন নিয়ম তৈরি করার বা বিভিন্ন বিষয়কে শ্রেণীবদ্ধ করার ক্ষমতা রয়েছে। উলামারা ইসলামী আইনের বিশেষজ্ঞ এবং তাদের সিদ্ধান্তগুলো মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য প্রায়শই বাধ্যতামূলক বলে মনে করা হয়।
ফরজ হলো এমন কাজ বা ইবাদত যা অবশ্যই অত্যাবশকীয়ভাবে করা উচিত। এগুলো আল্লাহর নির্দেশাবলীর উপর ভিত্তি করে এবং সেগুলো না করলে মহাপাপ হয় বলে বিশ্বাস করা হয়।[১৯৩] উদাহরণস্বরূপ, নামাজ পড়া, রোজা রাখা এবং হজ করা ফরজ।[১৯৪] ওয়াজিব হলো এমন কাজ বা ইবাদত যা করা উচিত, তবে ফরজের মতো অত্যাবশকীয় নয়। এগুলোও আল্লাহর নির্দেশাবলীর উপর ভিত্তি করে, তবে সেগুলো কেউ না করলে মহাপাপ হবে না। উদাহরণস্বরূপ, জানাজার নামাজ পড়া এবং ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব। সুন্নত হলো এমন কাজ বা আচরণ যা নবী মুহাম্মাদ তাঁর প্রাত্যহিক জীবনে করতেন। এগুলো ফরজ বা ওয়াজিব নয়, তবে এগুলো পালন করার জন্য উৎসাহিত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, পাঁচ ওয়াক্তের নামাজের আগে সুন্নত নামাজ পড়া সুন্নত। মুস্তাহাব হলো এমন কাজ বা আচরণ যা করা ভালো, তবে বাধ্যতামূলক নয়। এগুলো করলে পুরস্কার (সওয়াব) পাওয়া যায়, তবে না করলে কোনো পাপ বা শাস্তি হবে না। উদাহরণস্বরূপ, দান করা এবং রমজান মাসের বাইরে রোজা রাখা মুস্তাহাব।[১৯৫] নফল হলো আরও একপ্রকার ইবাদত যা সম্পূর্ণ ব্যক্তির ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। ব্যক্তি ইচ্ছা করলে তা করতেও পারে, আবার ইচ্ছা না করলে করতে নাও পারে। কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যেমন, নফল নামাজ আদায়, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি। নফল ইবাদতের মধ্যে কুরআন তিলাওয়াতকে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হালাল হলো এমন কাজ বা বস্তু যা করা বা গ্রহণ বা ভক্ষণ করা বৈধ। এগুলো ইসলামের বিধান অনুসারে অনুমোদিত। উদাহরণস্বরূপ, হালাল মাংস খাওয়া এবং বিবাহ করা হালাল। মাকরুহ হলো এমন কাজ বা বস্তু যা করা বা গ্রহণ বা ভক্ষণ করা ইসলামী বিধানে অনুমোদিত, তবে সেগুলো এড়িয়ে চলা ভালো। এগুলো করলে পাপ হবে না, তবে এড়ানোর মাধ্যমে পুরস্কার (সওয়াব) পাওয়া যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কাঁচা মাংস খাওয়া মাকরূহ। হারাম হলো এমন কাজ বা বস্তু যা করা বা গ্রহণ বা ভক্ষণ করা নিষিদ্ধ। এগুলো ইসলামের বিধান অনুসারে অনুমোদিত নয়। উদাহরণস্বরূপ, সুদ গ্রহণ এবং ব্যভিচার করা হারাম। ইসলামি আইনে হারাম কাজ করা এবং হারাম জিনিস গ্রহণ ও ভক্ষণ করা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এর শাস্তি ইসলামি আইনে ভয়াবহ হতে পারে।
ইসলামী আইনের দৃষ্টিতে এইসব কাজের শারীরিক বা আধ্যাত্মিক ফল রয়েছে। ফরজ, ওয়াজিব এবং সুন্নত কাজগুলোর পরিত্যাগ এবং মাকরূহ ও হারাম কাজগুলির সম্পাদন শাস্তিমূলক প্রতিক্রিয়া পায়। এই শাস্তিগুলোকে হুদুদ বা তাজির শাস্তি বলা হয়। হুদুদ শাস্তিগুলো হলো নির্দিষ্ট, আইন দ্বারা নির্ধারিত শাস্তি। উদাহরণস্বরূপ, ব্যভিচারের শাস্তি পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা। তাজির শাস্তিগুলো হলো বিচারকের বিবেচনার উপর নির্ভর করা প্রদত্ত শাস্তি। উদাহরণস্বরূপ, নামাজ না পড়ার জন্য কারাদণ্ড দেওয়া। তাজির শাস্তিগুলোতে অপরাধের সাক্ষ্য বা অনুরূপ প্রক্রিয়া দ্বারা প্রমাণ বাধ্যতামূলক নয়। বিচারক অপরাধের অস্তিত্ব সম্পর্কে সন্তুষ্ট হলেই শাস্তি দেওয়া যেতে পারে।
কালেমবাদীরা দুটি ভাগে বিভক্ত: যুক্তিবাদী এবং ঐতিহ্যবাদী। যুক্তিবাদীরা বিশ্বাস করেন যে কোন কিছু নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ থাকতে হবে, যেখানে ঐতিহ্যবাদীরা বিশ্বাস করেন যে কোন কিছু নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ হলো এটি আল্লাহর দ্বারা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যুক্তিবাদীদের যুক্তি হলো যে ধর্মশাস্ত্র একটি যুক্তিসঙ্গত শাস্ত্র এবং তাই এটি যুক্তির উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। তাদের মতে, কোন কিছু নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ থাকতে হবে এবং এই কারণগুলো ব্যবহার করে নতুন জিনিসগুলোকে নিষিদ্ধ বা অনুমোদিত হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। অন্যদিকে, ঐতিহ্যবাদীদের যুক্তি হলো যে ধর্মশাস্ত্র একটি ঐতিহ্যবাহী শাস্ত্র এবং তাই এটি ঐতিহ্যের উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। তাদের মতে, কোন কিছু নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ হলো এটি আল্লাহর দ্বারা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং এই নিষেধাজ্ঞাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করা অনুচিত।
নারী এবং বিবাহ
ইসলামে বিবাহ একটি পবিত্র বিষয়। বিবাহের মাধ্যমে বৈধভাবে যৌনতা উপভোগ করাকে ইসলামে প্রশংসিত করা হয়েছে। বিবাহের বাইরে যৌনতা ব্যভিচার হিসেবে গণ্য করা হয় এবং এর জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিধান করা হয়েছে। ইসলামে বিবাহ একটি আইনি চুক্তি। এই চুক্তিতে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সম্মতি এবং সাক্ষীদের উপস্থিতি অপরিহার্য। স্বামীর-স্ত্রীর উভয়কে মুসলিম হওয়া, মহর নির্ধারণ এবং চুক্তির ঘোষণা করাও বিবাহের বৈধতার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত। শিয়া এবং সুন্নি মতবাদে মুতাহ বিবাহের বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। শিয়া মতবাদে মুতাহ বিবাহ একটি বৈধ সম্পর্ক। সুন্নি মতবাদ অনুযায়ী, মুতাহ বিবাহ আগে অবাধ ছিল, কিন্তু পরে তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কুরআনের আয়াত রহিত করা হয়েছে। মুতাহ বিবাহ সুন্নি মতবাদে ব্যভিচার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয় এবং হারাম বলে বিবেচিত হয়। ইসলামে ব্যভিচার এবং সমকামিতা সম্পর্কে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। পুরুষদের ক্ষেত্রে ব্যভিচারের শাস্তি ৮০টি বেত্রাঘাত এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৪০টি বেত্রাঘাত। সমকামিতার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।[১৯৬]
ইসলামী বিধান অনুসারে, বিবাহ চুক্তি সম্পাদনের জন্য সাক্ষী থাকা আবশ্যক। বিবাহের সাক্ষীদের অবশ্যই মুসলিম হতে হবে এবং বিয়ের বৈধতার জন্য ২ জন পুরুষ বা ১ জন পুরুষ এবং ২ জন মহিলাকে অবশ্যই সাক্ষ্য দিতে হবে।[১৯৭]
ইসলাম এবং কুরআনে নারীর স্থান বিষয়ে মুসলিমদের মধ্যে দুটি সম্পূর্ণ বিপরীত ধারণা রয়েছে। একটি ধারণা হলো, ইসলাম নারীকে সর্বোচ্চ মর্যাদার আসনে বসায় এবং নারীদেরকে তাদের সমস্ত অধিকার প্রদান করে। অন্য ধারণা হলো, কুরআনকে পিতৃতান্ত্রিক আরব সমাজের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হয়, যা নারীদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে। প্রথম ধারণার সমর্থকরা যুক্তি দেন যে, কুরআন নারীদেরকে পুরুষদের সমতুল্য অধিকার প্রদান করে। তারা কুরআনের আয়াতগুলোর উল্লেখ করে যেগুলো নারীদেরকে শিক্ষা, সম্পত্তি এবং বিবাহের অধিকার প্রদান করে।[১৯৮] তারা আরও যুক্তি দেন যে, ইসলাম নারীদেরকে পরিবার এবং সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য উৎসাহিত করে। দ্বিতীয় ধারণার সমর্থকরা যুক্তি দেন যে, কুরআন নারীদেরকে পুরুষদের অধীনস্থ অবস্থানে রাখে। তারা কুরআনের আয়াতগুলোর উল্লেখ করে যেগুলো নারীদেরকে পুরুষদের আনুগত্য করতে বলে। তারা আরও যুক্তি দেন যে, ইসলাম নারীদেরকে পর্দা করার এবং পুরুষদের সাথে নির্দিষ্টভাবে আচরণ করার নির্দেশ দেয়। এই দুটি ধারণার মধ্যে কোনটি সঠিক তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিছু মুসলিম মনে করেন যে, কুরআন নারীদেরকে পুরুষদের সমতুল্য অধিকার প্রদান করলেও অধিকারগুলোকে প্রায়শই ইসলামী সমাজে উপেক্ষা করা হয়। অন্য মুসলিমরা মনে করেন যে, কুরআন নারীদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখায় এবং এই ধারণাটি ইসলামী আইন ও রীতিনীতিতে প্রতিফলিত হয়।[১৯৮]
ইসলামী সমাজে নারীর অবস্থান ইসলাম ধর্মের নিয়মকানুনের পাশাপাশি অন্যান্য কারণের দ্বারাও নির্ধারিত হয়। ইসলাম ধর্ম নারীর অধিকার ও মর্যাদাকে গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলামী আইনে নারীদের শিক্ষা, সম্পত্তি, বিবাহ এবং কর্মক্ষেত্রে অধিকার রয়েছে। তবে, সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ, জাতিগত গঠন এবং ইসলামপূর্ব সংস্কৃতির উত্তরাধিকারও নারীর অবস্থানকে প্রভাবিত করে। উদাহরণস্বরূপ, মধ্যপ্রাচ্যে নারীদের অবস্থান সাধারণত দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের অবস্থানের চেয়ে আলাদা।[১৯৯] ইসলামী বিশ্বে নারীর অবস্থান সর্বত্র এবং সর্বদা একই নয়। বিভিন্ন সময় এবং বিভিন্ন স্থানে নারীদের অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ইসলামী স্বর্ণযুগে নারীদের অবস্থান ছিল অনেকটা উন্নতির দিকে। তবে, পরবর্তীকালে নারীদের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। ইসলামী আইনে দাসী বা কারিয়ার নারীদের অবস্থান স্বাধীন নারীদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। দাসী বা কারিয়ার নারীরা স্বাধীন নয় এবং তাদের উপর তাদের মালিকদের কর্তৃত্ব রয়েছে। তাই তাদের জন্য ভিন্ন পোশাকের নিয়ম, ধর্মীয় এবং সামাজিক অধিকার ও দায়িত্ব রয়েছে।[২০০]
কুরআনে নারীর পোশাক বিষয়ে বেশ কয়েকটি আয়াত রয়েছে, তবে এই আয়াতগুলোতে নারীর পোশাকের জন্য একটি স্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট নীতিমালা দেওয়া হয়নি। এই অস্পষ্টতা নারীর পোশাকের বিষয়ে বিভিন্ন ব্যাখ্যার জন্ম দিয়েছে, যা ইসলামের ইতিহাসে দীর্ঘকাল ধরে বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।[২০১] বিতর্কের এক প্রান্তে শুধুমাত্র আভারত হিসাবে সংজ্ঞায়িত নৈতিক স্থানগুলোর (যৌনাঙ্গ) আচ্ছাদন যথেষ্ট বলে মনে করা হয়। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, নারীর অন্যান্য অংশ, যেমন হাত, পা এবং মুখ আবৃত করা আবশ্যক নয়।[২০২] বিতর্কের অন্য প্রান্তে নারীর হাত এবং মুখ সহ পুরো শরীরকে আবৃত করার জন্য বাধ্য করা হয়। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, নারীর শরীর পুরুষের দৃষ্টি থেকে সম্পূর্ণরূপে আড়াল করা উচিত।[২০২] ইসলামী মাযহাবগুলো নারীর পোশাক বিষয়ে বিভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে, তবে তারা সকলেই নারীর শরীরকে আবৃত করার ধারণাকে সমর্থন করে। এই ধারণাটিকে পর্দা বলা হয়। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে, নির্দিষ্ট অঞ্চলগুলো নিজস্ব আত্মীয়দের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, হানাফি এবং মালিকি মাযহাবগুলোতে নারীর হাত এবং মুখকে "ফিতনার অবকাশ না রেখে" খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই অনুমতির অর্থ হলো নারীর হাত এবং মুখ শুধুমাত্র নিজের স্বামী, ছেলে, পিতা, ভাই এবং অন্যান্য নির্দিষ্ট আত্মীয়দের সামনে খোলা থাকতে পারে। অন্যদের সামনে, এই অঞ্চলগুলো আবৃত করা উচিত।[২০৩]
ইতিহাস
ইসলাম-পূর্ব আরব
ইসলামপূর্ব আরব উপদ্বীপ ছিল বহুদেববাদী। প্রতিটি গোত্র তাদের নিজস্ব দেবতা ও দেবীদের বিশ্বাস ও উপাসনা করত। এই দেবতা ও দেবীরা বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং ক্ষমতা সহ বিভিন্ন বিষয়ের সাথে যুক্ত ছিল। উদাহরণস্বরূপ, ইসলামপূর্ব আরবদের বিশ্বাসানুযায়ী, লাত ছিল পাতালের দেবী, উজ্জা ছিল উর্বরতার দেবী এবং মানাত ছিল ভাগ্যের দেবী। এই দেবতা ও দেবীদের আত্মা গাছ, পাথর, জলাশয় এবং কুয়োগুলোর সাথে সম্পর্কিত ছিল। এই স্থানগুলোকে পবিত্র বলে মনে করা হত এবং সেখানে প্রায়ই তাদের উপাসনা করা হত। আরব পুরাণে, মূর্তিগুলোকে দেবতা ও দেবীদের প্রতীক হিসাবে দেখা হত। এই মূর্তিগুলো প্রায়ই পাথর বা কাঠ দিয়ে তৈরি করা হত। মূর্তিগুলোকে পূজা করা হত এবং তাদের কাছে প্রার্থনা করা হত। ইসলামপূর্ব আরব উপদ্বীপে উপসনার জন্য অনেকগুলো পবিত্র স্থান ছিল। এই স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে কাবা, যা মক্কায় অবস্থিত একটি পবিত্র ঘনআকৃতির কাঠামো। কাবাকে ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র স্থান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আরবরা নিষিদ্ধ মাসগুলোতে পবিত্র স্থানগুলো পরিদর্শন করত। এই মাসগুলোতে যুদ্ধ এবং সহিংসতা নিষিদ্ধ ছিল। পবিত্র স্থানগুলোতে পরিদর্শনকারীরা বিভিন্ন উপাসনা করত, যেমন প্রার্থনা, উপবাস এবং পশু জবাই।[২০৫]
মক্কার কাবা প্রাচীনকালে বিভিন্ন আরব উপজাতিদের পৃষ্ঠপোষক দেবতাদের ১৬০টি মূর্তির আবাসস্থল ছিল। এই মূর্তিগুলো বিভিন্ন আকৃতি ও আকারের ছিল এবং সেগুলোকে বিভিন্ন নিয়মে পূজা করা হতো। কাবায় অবস্থিত তিনটি দেবী, মানাত, লাত এবং উজ্জাকে আল্লাহর কন্যা বলে মনে করা হতো। এই দেবীদেরকেও বিভিন্ন উপায়ে পূজা করা হতো। অন্যদিকে আরব সমাজে খ্রিস্টান, ইহুদিসহ বিভিন্ন একত্ববাদী সম্প্রদায়ও ছিল। এই সম্প্রদায়গুলো একমাত্র আল্লাহর উপাসনা করত এবং মূর্তিপূজা করত না। স্থানীয় আরবদের মধ্যে হানিফরাও ছিল। হানিফরা একত্ববাদী ছিল এবং তারা একমাত্র আল্লাহর উপাসনা করত।[২০৬] তবে তাদেরকে কখনও কখনও ভুল করে খ্রিস্টান বা ইহুদিদের মধ্যে শ্রেণীবদ্ধ করা হতো।[২০৭][২০৮] মুসলিম বিশ্বাস অনুসারে, মুহাম্মাদও একজন হানিফ ছিলেন এবং তিনি ইব্রাহিমের পুত্র ইসমাইলের বংশধর ছিলেন।[২০৯]
ইসলামী সাহিত্যে, ইসলামের আগের আরব সমাজের যুগকে "আইয়ামে জাহেলিয়া" বা "অজ্ঞতার যুগ" বলা হয়। এই শব্দটি কুরআন ও হাদীসে আরবদের ইসলামের আগের বিশ্বাস ও আচরণকে ইসলামী যুগ থেকে আলাদা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই যুগের বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে ব্যভিচার, চুরি, মূর্তিপূজা, অবিচার এবং দাসত্বের স্বাভাবিকতা। আইয়ামে জাহেলিয়ার সময় আরবরা ইসলামি শিক্ষার সাথে পরিচিত ছিল না। এই সময়ের মধ্যে, তারা প্রায়শই অজ্ঞতা, অন্ধবিশ্বাস এবং বর্বর আচরণে লিপ্ত ছিল। তারা প্রায়শই ব্যভিচার, চুরি, মূর্তি পূজা, অবিচার এবং দাসত্বে লিপ্ত হত।[২১০]
ইসলামী ইতিহাসবিদদের মতে, জাহিলী যুগে নারীদের নিম্নশ্রেণির মানুষ হিসেবে দেখা হত। বহুবিবাহ খুবই সাধারণ বিষয় ছিল। পতিতাবৃত্তি একটি সাধারণ পেশা ছিল এবং দাস মালিকরা তাদের দাসীদের এই কাজে বাধ্য করত। নারীরা তাদের বাবা বা স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকার পেত না। সন্তানরা চাইলে তাদের বাবার মৃত্যুর পরে তাদের সৎমায়ের সাথে বিবাহ করতে পারত। বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার শুধুমাত্র পুরুষের ছিল এবং তা ছিল সীমাহীন।[২১১] অভিজাতরা কন্যা সন্তান হলে তাকে একটি লজ্জার উৎস হিসেবে দেখত এবং তাদের হত্যা করত। এই সময়ে মেয়েদের জীবন্ত কবর দেওয়ার মতো জঘন্যতম কাজও করা হত। আরবরা অন্যান্য জাতি থেকে খুব বেশি আলাদা ছিল না শিশু হত্যার ক্ষেত্রে, যা উৎসর্গ বা অন্যান্য কারণে করা হত।[২১২]
মুহাম্মাদের জন্ম এবং ইসলামের প্রবর্তন (৫৭০-৬৩২)
ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, মুহাম্মাদ ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন এবং জীবনের প্রথম দিকেই পিতৃমাতৃহীন হন। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি বেড়ে ওঠেন এবং 'আমিন' (বিশ্বস্ত) নামে পরিচিত হন। পরে তিনি তার মনিব, ব্যবসায়ী খাদিজাকে বিয়ে করেন।[২১৩] ৬১০ খ্রিস্টাব্দে, মক্কায় বিদ্যমান নৈতিক অবক্ষয় ও মূর্তিপূজা দ্বারা বিরক্ত হয়ে এবং নির্জনতা ও আধ্যাত্মিক চিন্তা-ভাবনার জন্য, মুহাম্মাদ মক্কার কাছে জাবালে নূর পর্বতের হেরা গুহায় আশ্রয় নেন। গুহায় থাকাকালীন সময়েই আল্লাহর নিকট হতে ফেরেশতা জিব্রাইলের মাধ্যমে তাঁর উপর কুরআনের প্রথম আয়াত নাযিল হয়।[২১৪] মুহাম্মাদের গুহায় থাকাকালীন অবস্থায় যে রাতে এই আয়াত অবতীর্ণ হয় তাকে 'লায়লাতুল কদর' (শবে কদর) বলা হয় এবং এই ঘটনাটিকে ইসলামী ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলে বিবেচনা করা হয়। ৪০ বছর বয়স থেকে, জীবনের পরবর্তী ২২ বছর ধরে, মুহাম্মাদের নিকট আল্লাহর কাছ থেকে আয়াত অবতীর্ণ হতে থাকে এবং তিনি মানবতার কাছে প্রেরিত সর্বশেষ নবী হয়ে ওঠেন।[২১৫][২১৬][২১৭]
মুহাম্মাদ প্রথম তিন বছর ধরে শুধুমাত্র তার পরিবার এবং আত্মীয়দের ইসলামের প্রতি আহ্বান জানান। এই সময়ে, তিনি তাদেরকে ইসলামের মূল বিষয়গুলো শিখিয়েছিলেন, যেমন আল্লাহর একত্ববাদ, তাঁর নবুওয়াত প্রাপ্তি, এবং ইসলামের মূল পাঁচ স্তম্ভ।
মক্কায় থাকাকালীন সময়ে মুহাম্মাদ প্রথমে গোপনে ও তারপর প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার শুরু করেন এবং তার শ্রোতাদের বহুঈশ্বরবাদ ত্যাগ করে এক আল্লাহর উপাসনা করার আহ্বান জানান। ইসলামের প্রথম দিকের অনেক গ্রহণকারী ছিল নারী, গরীব, বিদেশী এবং দাসেরা যেমন প্রথম মুয়াজ্জিন বিলাল ইবনে রাবাহ আল-হাবাশি।[২১৮] মক্কার অভিজাতরা মনে করতেন যে এক আল্লাহর প্রচার করার মাধ্যমে মুহাম্মাদ তাদের সামাজিক ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তুলছেন কারণ তারা কাবার মূর্তিগুলোর জন্য তীর্থ করতে আসা তীর্থযাত্রীদের কাছ থেকে মুনাফা অর্জন করতো।[২১৯][২২০] মুহাম্মাদ যখন আরও বেশি মানুষকে ইসলামের প্রতি আহ্বান করতে শুরু করলেন, তখন মক্কার অনেক গোত্র তার বিরুদ্ধে বিরূপ হয়ে ওঠে। তারা তাকে এবং তার অনুসারীদের উপর নির্যাতন চালায়। এই নির্যাতনের মধ্যে রয়েছে শারীরিক আঘাত, সম্পত্তি ধ্বংস করা এবং সামাজিক বয়কট। মক্কার নির্যাতন থেকে বাঁচতে, মুহাম্মাদ ৬১৫ খ্রিষ্টাব্দে কিছু মুসলিমকে আবিসিনিয়ায় পাঠিয়েছিলেন। আবিসিনিয়া ছিল একটি খ্রিস্টান রাজ্য, কিন্তু তারা মুসলিমদেরকে নির্যাতন থেকে রক্ষা করার জন্য আশ্রয় দিয়েছিল।
মুসলিমদের উপর মক্কার অধিবাসীদের ১২ বছরের নির্যাতনের পর, ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মাদ এবং তার সাহাবীরা ইয়াসরিব (বর্তমান মদিনা) শহরে হিজরত (অভিবাসন) করেন। সেখানে, মদিনার গ্রহীতাদের (আনসার) এবং মক্কার প্রবাসীদের (মুহাজির) সঙ্গে মুহাম্মাদ মদিনায় তার রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত করেন। মদিনার সকল উপজাতি মদিনার সনদে স্বাক্ষর করে। এই সনদটি ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মুসলিম ও অমুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের নিজস্ব আইন ব্যবহারের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত করে এবং সকল প্রকার বাহ্যিক হুমকি থেকে মদিনাকে রক্ষা করার জন্য সকল গোত্রের মাঝে একটি চুক্তি স্থাপন করে।[২২১]
৬২২ সালে মদিনায় হিজরত করার পর, মুহাম্মাদ তাঁর অনুসারীদের সাথে মক্কার পৌত্তলিকদের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মক্কার পৌত্তলিকরা তাদের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পর্ক স্থাপন করতে রাজি হননি। তাই, মুহাম্মাদ মুসলিম বাহিনী গঠন করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা করেন। এই যুদ্ধগুলোতে, মুসলিম বাহিনী বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিজয় লাভ করে।
মক্কার বাহিনী ও তাদের মিত্ররা ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে বদরের যুদ্ধে মুসলিমদের কাছে পরাজিত হয় এবং তারপর উহুদের যুদ্ধে[২২২] পরাজয়ের মধ্য দিয়ে মদিনাকে অবরোধ করতে ব্যর্থ হয় (মার্চ-এপ্রিল ৬২৭)। ৬২৮ খ্রিস্টাব্দে, মক্কা এবং মুসলিমদের মধ্যে হুদায়বিয়ার সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়, কিন্তু দুই বছর পর মক্কার অধিবাসীরা এটিকে ভঙ্গ করে। আরও উপজাতি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ায়, মক্কার বাণিজ্যপথগুলো মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।[২২৩][২২৪] ৬৩০ সালে, মুহাম্মাদ একটি বড় মুসলিম বাহিনী গঠন করে মক্কায় অভিযান চালায়। এই অভিযানে, মুসলিম বাহিনী মক্কায় বিজয় অর্জন করে এবং কাবা থেকে সকল প্রকার মূর্তি অপসারণ করে। এই বিজয় আরব উপদ্বীপে ইসলামের বিস্তারকে আরও ত্বরান্বিত করেছিল। ৬৩২ সালে, মুহাম্মাদ বিদায় হজ্জ সম্পন্ন করেন এবং আরাফাত পাহাড়ে প্রায় ১২৪,০০০ মুসলিমের উদ্দেশ্যে বিদায়ী ভাষণ প্রদান করেন। এই ভাষণে তিনি মুসলিমদেরকে পরস্পরের সাথে ভালোবাসা, সহানুভূতি এবং সহযোগিতার বন্ধন গড়ার আহ্বান জানান। উক্ত ভাষণের কয়েক মাস পরে, মদিনায় থাকাকালীন অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মুহাম্মাদ এর মৃত্যুর আগে, আরব উপদ্বীপের বৃহৎ অংশের ইসলাম গ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল। তাঁর প্রচেষ্টার ফলে, আরব উপদ্বীপের মানুষরা ইসলাম গ্রহণ করে এবং একটি নতুন সমাজ গড়ে তোলে। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর সময় (৬২ বছর বয়সে) মুহাম্মাদ আরব উপদ্বীপের উপজাতিগুলোকে একটি একক ধর্মীয় রাষ্ট্রের অধীনে একত্রিত করেন।[২২৫]
মুহাম্মাদ ছিলেন একজন মহান ধর্মীয় নেতা এবং তিনি বিশ্বের সকল মানুষকে ইসলামের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি তাঁর সময়ে পৃথিবীর অনেক বৃহৎ রাষ্ট্রের শাসকদের কাছে চিঠি প্রেরণ করেছিলেন এবং তাদের ইসলাম গ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইসলামের প্রাথমিক যুগ (৬৩২–৭৫০)
মুহাম্মাদের প্রথম উত্তরাধিকারী, যাদের খলিফা বলা হয় - আবু বকর, উমর, উসমান ইবনে আফফান, আলী ইবনে আবু তালিব এবং কখনও কখনও হাসান ইবনে আলী[২২৬] - সুন্নি ইসলামে তাঁরা আল-খুলাফা আল-রাশিদুন ("খুলাফায়ে রাশেদীন")[২২৭] হিসাবে পরিচিত। মুহাম্মাদ এর মৃত্যুর পর আবু বকর, ওমর, উসমান এবং আলী ইসলামী রাষ্ট্রের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন। আবু বকর ছিলেন মুহাম্মাদ এর একজন ঘনিষ্ঠ সাহাবী এবং তাঁর মৃত্যুর পর তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের প্রথম খলিফা হিসেবে নির্বাচিত হন। ওমর ছিলেন আবু বকর এর পরবর্তী খলিফা। তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। উসমান ছিলেন তৃতীয় খলিফা। তিনি একজন ধনী এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের প্রশাসনকে আরও শক্তিশালী করেছিলেন। আলী ছিলেন মুহাম্মাদ এর চাচাতো ভাই এবং তাঁর জামাই। তিনি চতুর্থ এবং শেষ খলিফা ছিলেন। আলী এর মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে হাসান খলিফা হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু হাসান কিছুদিন পরই মুয়াবিয়ার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। মুয়াবিয়া ইসলামী রাষ্ট্রের প্রথম উমাইয়া খলিফা ছিলেন। সুন্নি মুসলিমরা আবু বকর, ওমর, উসমান এবং আলীকে খোলাফায়ে রাশেদীন হিসেবে বিবেচনা করেন। এদের মধ্যে আলীকে তাঁর নৈতিকতা এবং ধর্মীয় জ্ঞানের জন্য বিশেষভাবে সম্মান করা হয়। অন্যদিকে, শিয়া মুসলমানরা শুধুমাত্র আলী এবং তাঁর বংশধরদেরকেই খলিফা হিসেবে বিবেচনা করে। তারা আবু বকর, ওমর এবং উসমানকে খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। ইবাদি মুসলিমরা শুধুমাত্র আবু বকর এবং ওমরকে খলিফা হিসেবে বিবেচনা করে। তারা আলী এবং উসমানকে খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না।[২২৮] আবু বকর-এর নেতৃত্বে কুরআন সংকলনের কাজ শুরু হয়েছিল। খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজ-এর সময় সাত ফকীহের[২২৯][২৩০] কমিটি গঠিত হয় এবং সেই ফকীহদের মতামতকে সমন্বয় করে মালিক ইবনে আনাস ইসলামী আইনশাস্ত্রের অন্যতম প্রাচীন গ্রন্থ মুওয়াত্তা রচনা করেন।[২৩১][২৩২][২৩৩] খারিজিরা বিশ্বাস করত যে ভালো ও মন্দের মধ্যে কোনো আপোসযোগ্য মধ্যবর্তী অবস্থান নেই এবং যেকোনো মুসলিম গুরুতর পাপ করলে সে অবিশ্বাসী হয়ে যায়।[২৩৪] তবে মুরজিয়ারা শিক্ষা দিয়েছিল যে মানুষের ন্যায়পরায়ণতা শুধুমাত্র আল্লাহর দ্বারা বিচার করা সম্ভব। অতএব, অপরাধীরা ভুল পথে পরিচালিত বলে বিবেচিত হতে পারে, কিন্তু তাদের অবিশ্বাসী বলে নিন্দা করা উচিত নয়।[২৩৫] এই মনোভাবটি মূলধারার ইসলামী বিশ্বাসে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাব বিস্তার করে।[২৩৬]
কিছু উপজাতি ইসলাম ছেড়ে দেয় এবং কিছু লোক নতুন নবী হিসাবে নিজেদের ঘোষণা দেওয়ার মাধ্যমে নেতাদের অধীনে বিদ্রোহ সৃষ্টি করে কিন্তু আবু বকর তাদের রিদ্দা যুদ্ধে পরাজিত করেন।[২৩৭][২৩৮][২৩৯][২৪০][২৪১] ইহুদি এবং আদিবাসী খ্রিস্টানদের স্থানীয় জনগোষ্ঠী জিজিয়া কর প্রদান করত এবং মুসলিমরা দ্রুতই নতুন নতুন এলাকা জয় করতে থাকে,[২৪২] যার ফলে পারস্য এবং বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যে খিলাফতের দ্রুত প্রসার ঘটে।[২৪৩][২৪৪] ৬৪৪ সালে উসমানের হত্যার পর, আলী মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় খলিফা নির্বাচিত হন। তবে, উসমানের হত্যার প্রতিশোধ নিতে চাওয়া আয়িশা, মুয়াবিয়া এবং অন্যান্যরা আলীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। ৬৫৬ সালে উটের যুদ্ধে আয়িশার সেনাবাহিনী আলীর কাছে পরাজিত হয়। ৬৫৭ সালে সিফফিনের যুদ্ধে আলী এবং মুয়াবিয়ার বাহিনী মুখোমুখি অবস্থান নেয়। যুদ্ধ সমাপ্তির জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেওয়া হয়। আলী এই প্রস্তাব গ্রহণ করলেও মুয়াবিয়া তা প্রত্যাখ্যান করে। ৬৬১ সালে নাহরওয়ানের যুদ্ধে আলী এবং মুয়াবিয়ার বাহিনী আবারও মুখোমুখি অবস্থান নেয়। যুদ্ধে আলী পরাজিত হন এবং মুয়াবিয়াকে খলিফা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।[২৪৫] মুয়াবিয়ার নেতৃত্বে উমাইয়া রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। উমাইয়ারা একটি কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে এবং খিলাফতকে একটি সামরিক শক্তিতে পরিণত করে। তারা পারস্য, মিশর এবং উত্তর আফ্রিকা সহ বিস্তৃত অঞ্চল জয় করে। ৬৮০ সালে কারবালার যুদ্ধে আলী এবং ফাতিমার (মুহাম্মাদের কন্যা) পুত্র হোসেন ইবনে আলীকে মুয়াবিয়ার পুত্র ইয়াজিদের বাহিনী হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ড মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।[২৪৬]
উমাইয়া রাজবংশ উত্তর আফ্রিকা, ইবেরীয় উপদ্বীপ, নারবোনীয় গল এবং সিন্ধু জয় করে।[২৪৭] উমাইয়াদের বৈধতার অভাব ছিল এবং তারা ব্যাপকভাবে পৃষ্ঠপোষিত সামরিক বাহিনীর উপর নির্ভরশীল ছিল।[২৪৮] যেহেতু জিজিয়া কর ছিল অমুসলিমদের দ্বারা প্রদত্ত একটি কর এবং এই করের উপরই সামরিক বাহিনীর অর্থায়ন নির্ভর করত, তাই উমাইয়ার প্রশাসকগন অনারবদের ধর্মপরিবর্তন অনুৎসাহিত করত, কারণ তারা মনে করত যে এই ধর্মান্তরকরণ প্রক্রিয়া তাদের রাজস্ব কমিয়ে দিতে পারে।[২৩৬] যেখানে রাশিদুন খিলাফতে কঠোরতার প্রতি জোর দেয়া হয়েছিল, এমনকি উমর প্রতিটি কর্মকর্তার সম্পদের বিস্তারিত তালিকা চেয়েছিলেন,[২৪৯] সেখানে উমাইয়া রাজবংশের এই বিলাসিতা ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দেয়।[২৩৬] ফলে খারেজীরা বার্বার বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেয়, যা খিলাফতকে প্রথম স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের দিকে নিয়ে যায়। আব্বাসীয় বিপ্লবে, অনারব ধর্মপরিবর্তনকারীরা (মাওলা), উমাইয়া গোত্রের দ্বারা সরিয়ে দেওয়া আরব গোত্রগুলো এবং কিছু শিয়া একসঙ্গে একত্রিত হয়ে উমাইয়াদের উৎখাত করে এবং ৭৫০ সালে আব্বাসীয় রাজবংশের সূচনা হয়।[২৫০][২৫১] আব্বাসীয়রা উমাইয়াদের পরাজিত করে খিলাফতকে ইরাকের বাগদাদে স্থানান্তরিত করে।[২৫২]
ইসলামের প্রাথমিক যুগ ছিল রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামরিক বিজয় এবং ধর্মীয় বিভাজনের একটি সময়। এই যুগের ঘটনাগুলো ইসলামের বিকাশকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। ইসলামের প্রাথমিক যুগের শেষে, ইসলাম একটি শক্তিশালী ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠে। খিলাফত উত্তর আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং মধ্য এশিয়ার বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃতি লাভ করে যা এই অঞ্চলে ইসলামের বিস্তার ইসলামী সংস্কৃতি, আইন এবং শিক্ষার বিকাশকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে।
ইসলামের স্বর্ণযুগ (৭৫০-১২৫৮)
আব্বাসীয়রা ছিলেন মুহাম্মাদ এর চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের বংশধর। তারা উমাইয়াদের আরব-কেন্দ্রিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। ৭৫০ সালে আব্বাসীয়রা কুফায় একটি বিপ্লব ঘোষণা করে। এই বিপ্লবে উমাইয়া খলিফা মালিক ইবনে আনাসের পরাজিত হয় এবং আব্বাসীয়রা ক্ষমতায় আসে। আব্বাসীয়রা উমাইয়াদের কাছ থেকে ইবেরীয় উপদ্বীপ ব্যতীত সমস্ত ভূখণ্ড দখল করে নেয়। ইবেরীয় উপদ্বীপের অংশ তখন উমাইয়াদের অধীনে একটি স্বাধীন খিলাফত হিসেবে পরিচিত ছিল, যাকে আন্দালুসীয় খিলাফত বলা হয়।[২৫৩] আব্বাসীয়দের ৭৫০ সালে উমাইয়া খিলাফতকে উৎখাত করে ক্ষমতায় আসার ফলে মুসলিম বিশ্বে নতুন এক যুগের সূচনা হয়, যা আব্বাসীয় যুগ নামে পরিচিত। আব্বাসীয় খিলাফত ৭৫০ সাল থেকে ১২৫৮ সাল পর্যন্ত, অর্থাৎ ৫০৮ বছর স্থায়ী ছিল। এই সময়ের মধ্যে আব্বাসীয়রা মুসলিম বিশ্বের একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। তবে ১২৫৮ সালে মঙ্গোলদের বাগদাদ আক্রমণের ফলে আব্বাসীয় খিলাফত ভেঙে পড়ে। আব্বাসীয় যুগে আব্বাসীয়রা মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। সাহিত্য, বিজ্ঞান, শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে আব্বাসীয় যুগ ছিল ইসলামের জন্য এক স্বর্ণযুগ।[২৫৪] আব্বাসীয়রা ক্ষমতায় আসার পর খিলাফতের রাজধানী পরিবর্তন করা হয়। দামেস্ক থেকে রাজধানী সরিয়ে আনা হয় বাগদাদে। [২৫৪]
আব্বাসীয় খিলাফতের সময়, ৮ম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বাগদাদে বাইতুল হিকমত নামে একটি বৈজ্ঞানিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এই কেন্দ্রটি বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির পণ্ডিতদের একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়। তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়ন করেছিলেন। এই সময়টিকে ইসলামের স্বর্ণযুগ বলা হয় কারণ এই সময়ে বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত, সাংস্কৃতিক ও শিল্পকলা বিষয়ে মুসলিমরা ব্যাপক উন্নতি লাভ করে।[২৫৫] আল-কিন্দি, আল ফারাবী, আল খারেজমি, ইবনে সিনা, হাসান ইবনুল হায়সাম, আল বিরুনি, ইবনে রুশদ, আল-জাজারি, আল-গাজ্জালি, ইবনে বতুতা, ইবনে খালদুন, উলুঘ বেগ এবং আরও অনেক বিখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত এই সময়ে অবদান রেখেছিলেন।[২৫৬] তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ও উন্নয়ন করেছিলেন। তাদের কাজ মধ্যযুগীয় ইউরোপকে প্রভাবিত করেছিল।
ইসলামের স্বর্ণযুগে, ভারত থেকে আন্দালুস পর্যন্ত বিস্তৃত ভূখণ্ডে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করা হতো। এছাড়াও ঔষধ, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, ইসলামি আইন ইত্যাদির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রেও গবেষণা করা হতো। এই সময়কালে, মুসলিম পণ্ডিতরা গ্রিক, লাতিন এবং অন্যান্য প্রাচীন ভাষাগুলো অনুবাদ করেন, যার ফলে এই সভ্যতাগুলোর জ্ঞান এবং চিন্তাভাবনাগুলো আরব এবং পারস্য বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এই অনুবাদগুলো ইউরোপেও প্রভাব ফেলেছিল এবং রেনেসাঁর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। চীনাদের সাথে যুদ্ধ এবং অন্যান্য সম্পর্কগুলোর সময় আরবরা কাগজের উৎপাদন কৌশল শিখেছিল। কাগজের ব্যবহারের ফলে পাণ্ডুলিপিগুলো আরও সহজে ছড়িয়ে পড়ে। আরবরা ভারত থেকে শূন্য এবং দশমিক পদ্ধতির আবিষ্কার গ্রহণ করেছিল। এর ফলে গণিতের প্রতি আগ্রহ ও চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং সাধারণ মানুষও পাটিগণিত বুঝতে ও ব্যবহার করতে সক্ষম হয়। গণিত ও পাটিগণিতের পাশাপাশি ত্রিকোণমিতিও বিকাশ লাভ করে। এই সময়ে উল্লেখযোগ্যভাবে পর্যবেক্ষণালয় নির্মিত হয় এবং আলোকবিজ্ঞান ও রসায়ন বিজ্ঞানও বিকশিত হতে থাকে।
আল-শাফেয়ী হাদীসের সনদের সত্যতা নির্ধারণের একটি পদ্ধতি প্রণয়ন করেন।[২৫৭] প্রাথমিক আব্বাসীয় যুগে, মুহাম্মদ আল-বুখারী এবং মুসলিম ইবনে আল-হাজ্জাজের মতো পণ্ডিতগণ সুন্নি হাদীসের প্রধান সংকলনগুলোকে সংকলিত করেন, অন্যদিকে আল-কুলায়নী এবং ইবন বাবুয়াহের মতো পণ্ডিতগণ শিয়া হাদীসের প্রধান সংকলনগুলো সংকলিত করেন। চারটি সুন্নি মাজহাব, হানাফি, হাম্বলি, মালিকি ও শাফিঈ, যথাক্রমে আবু হানিফা, আহমদ ইবনে হাম্বল, মালিক ইবনে আনাস এবং আল-শাফেয়ীদের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিপরীতে, জাফর আস-সাদিকের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে জাফরি আইনশাস্ত্র গঠিত হয়। নবম শতাব্দীতে, আল-তাবারী কুরআনের প্রথম তাফসীর (অর্থ ও বর্ণনা) তাফসীর আল-তাবারী সম্পন্ন করেন, যা সুন্নি ইসলামে সর্বাধিক উদ্ধৃত তাফসীরগুলোর মধ্যে অন্যতম হয়ে ওঠে। হাসান আল-বসরির মতো তপস্বীরা একটি আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করে যা তাসাউফ বা সুফিবাদে পরিণত হয়।[২৫৮][২৫৯]
এই সময়ে, ধর্মতাত্ত্বিক সমস্যাগুলো, বিশেষত মুক্ত ইচ্ছার বিষয়ে, বিশিষ্টভাবে আলোচনা করা হয়। হাসান আল-বসরি মনে করতেন, যদিও আল্লাহ মানুষের কর্ম সম্পর্কে জানেন, কিন্তু ভালো এবং মন্দ কাজের আকাঙ্ক্ষা আসে মুক্ত ইচ্ছার অপব্যবহার এবং শয়তানের কুপ্ররোচনা থেকে।[২৬০] গ্রীক যুক্তিবাদী দর্শন মু'তাজিলা নামে পরিচিত এক ধরনের চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করেছিল, যারা বিখ্যাত ওয়াসিল ইবনে আতার উদ্ভাবিত মুক্ত ইচ্ছার ধারণাকে সমর্থন করেছিল।[২৬১] আল-ফারাবি, ইবনে সিনা এবং ইবনে রুশদ এর মত দার্শনিকরা ইসলামের শিক্ষার সাথে অ্যারিস্টটলের ধারণাগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ করার চেষ্টা করেন, যা ইউরোপের খ্রিস্টান ধর্মের স্কোলাসিজম এবং ইহুদি ধর্মের মুসা বিন মৈমুনের কাজের অনুরূপ, অন্যদিকে আল-গাজালির মত অন্যরা এ ধরনের সমন্বয়বাদের বিরুদ্ধে যুক্তি দেখান এবং অবশেষে জয়লাভ করেন।[২৬২][২৬৩]
ইসলামের স্বর্ণযুগ হিসেবে পরিচিত এই সময়ে, ইসলামী বিজ্ঞানে বিশাল অগ্রগতি সাধিত হয়।[২৪৪][২৬৪][২৬৫][২৬৬][২৬৭] ঔষধ, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, কৃষি, পদার্থবিজ্ঞান, অর্থনীতি, প্রকৌশল এবং দৃষ্টিবিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ে মুসলিম বিজ্ঞানীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।[২৬৮][২৬৯][২৭০][২৭১] আবূ আলী ইবনে সিনা (অ্যাভিসেনা) পরীক্ষামূলক ঔষধের একজন অগ্রগামী ছিলেন[২৭২][২৭৩] এবং তার রচিত 'ক্যানন অফ মেডিসিন' শতাব্দী ধরে ইসলামী বিশ্ব এবং ইউরোপে ঔষধের একটি প্রামাণিক পাঠ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। আর-রাজি (রাযেস) চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রথম হাম এবং গুটিবসন্ত রোগকে আলাদাভাবে শনাক্ত করেন।[২৭৪] সেই সময়ের সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রথম চিকিৎসকদের লাইসেন্স (অনুমতি) প্রদানের জন্য মেডিকেল ডিপ্লোমা প্রদান করা হতো।[২৭৫][২৭৬] হাসান ইবনুল হায়সামকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির জনক এবং প্রায়শই "বিশ্বের প্রথম প্রকৃত বিজ্ঞানী" হিসেবে অভিহিত করা হয়।[২৭৭][২৭৮][২৭৯] প্রকৌশলে, বানু মুসা ভাইদের নির্মিত স্বয়ংক্রিয় বাঁশি বাজানো যন্ত্রটিকে প্রথম প্রোগ্রামযোগ্য যন্ত্র বলে মনে করা হয়।[২৮০] গণিতে, আলগোরিদম শব্দটির উৎপত্তি মুহাম্মদ ইবনে মূসা আল-খারিজমির নাম থেকে, যিনি বীজগণিতের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচিত।[২৮১] তখনকার সময়ে সরকার বিজ্ঞানীদের বেতন আজকের পেশাদার ক্রীড়াবিদদের বেতনের সমান প্রদান করত।[২৮২] গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ৮৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত আল কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের প্রাচীনতম ডিগ্রি-প্রদানকারী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।[২৮৩] খ্রিস্টান, ইহুদি এবং সাবিয়ানদের[২৮৪] মতো অনেক অমুসলিমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইসলামী সভ্যতায় অবদান রেখেছেন[২৮৫][২৮৬]। বাইতুল হিকমাহ (হাউস অফ উইজডম) নামে পরিচিত প্রতিষ্ঠানে গ্রিক ও অন্যান্য সভ্যতার বইয়ের আরবি অনুবাদ এবং নতুন জ্ঞান উন্নয়নের জন্য খ্রিস্টান ও পার্সিয়ান পণ্ডিতদের নিয়োগ করা হয়েছিল।[২৮৪][২৮৭]
আব্বাসীয় খিলাফত থেকে সৈন্যরা বিদ্রোহ করে ৮৬৮ সালে মিশরে তুলুনি রাজবংশ[২৮৮] এবং ৯৭৭ সালে মধ্য এশিয়ায় গজনভি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে।[২৮৯] এই বিভাজনের সময়েই ৯৪৫ থেকে ১০৫৫ সালের মধ্যে শিয়া সতাব্দী আসে, যা হাজারবছরবাদী ইসমাইলি শিয়া মিশনারি আন্দোলনের উত্থান ঘটায়। একটি ইসমাইলি গোষ্ঠী, ফাতেমীয় রাজবংশ, ১০ম শতাব্দীতে উত্তর আফ্রিকা দখল করে নেয়[২৯০] এবং আরেকটি ইসমাইলি গোষ্ঠী, কারামাতিয়ানরা, মক্কা আক্রমণ করে এবং কাবাঘরে স্থাপিত হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর) চুরি করে নেয়।[২৯১] অন্য আরেকটি ইসমাইলি গোষ্ঠী, বুইদ রাজবংশ, বাগদাদ জয় করে এবং আব্বাসীয়দেরকে একটি নামমাত্র রাজতন্ত্রে পরিণত করে। সুন্নি সেলজুক রাজবংশ সময়ের ধর্মীয় পণ্ডিতদের মতামত প্রচার করে, বিশেষ করে নেজামিয়া নামে পরিচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের মাধ্যমে সুন্নি ইসলামকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রচারণা চালায়। এই নেজামিয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আল-গাজ্জালী এবং শেখ সাদির সাথে সম্পর্কিত।[২৯২]
১২৫৮ সালে মঙ্গোলদের বাগদাদ আক্রমণ ও অবরোধ এবং আব্বাসীয় খিলাফতের পতন ইসলামী স্বর্ণযুগের সমাপ্তি ঘটায়। তবে কিছু কিছু সূত্র মতে এই সময় ১৪শ শতাব্দী পর্যন্ত, আবার কিছু সূত্র মতে ১৫শ শতাব্দী বা এমনকি ১৬শ শতাব্দী পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল।[২৯৩]
মুসলিম বিশ্বের বিস্তার ধর্মীয় মিশনের মাধ্যমে চলতে থাকে, যা ভলগা বুলগেরিয়াকে ইসলামে রূপান্তরিত করে। দিল্লি সুলতানাত ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং অনেকে ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়,[২৯৪] বিশেষ করে নিম্ন-বর্ণের হিন্দুরা, যাদের বংশধররা ভারতীয় মুসলিমদের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা গঠন করে।[২৯৫] বাণিজ্যিক সুবাধে অনেক আগেই মুসলিমরা চীনে পৌঁছে, যেখানে তারা সংগং রাজবংশের আমদানি-রপ্তানি শিল্পে আধিপত্য বিস্তার করেছিল।[২৯৬] ইউয়ান রাজবংশে মুসলিমদেরকে শাসক সংখ্যালঘু শ্রেণী হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল।[২৯৭]
প্রাক-আধুনিক যুগ (১২৫৮-১৮শ শতক)
মুসলিম ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসার সুবাধে বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করতেন এবং ইসলাম ধর্ম প্রচার করতেন। সুফি তরিকার দরবেশরাও বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করতেন এবং মানুষকে ইসলামের শিক্ষায় দীক্ষা দিতেন। এইভাবে, ইসলাম বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।[২৯৮]
উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে ইসলাম দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।[২৯৯] এই ধর্মান্তর প্রায়ই বিভিন্ন ধর্মের বিশ্বাসের মধ্যে এক ধরনের সমন্বয়ের মাধ্যমে ঘটত।[৩০০] উদাহরণস্বরূপ, হিন্দু লোককাহিনীতে মুহাম্মাদের উপস্থিতি দেখায় যে ইসলামে ধর্মান্তরিত ব্যক্তিরা কিভাবে তাদের পূর্ববর্তী ধর্মের কিছু বিশ্বাস ধরে রেখেছিল।[৩০১] এছাড়াও, মুসলিম তুর্করা তাদের নিজস্ব তুর্কি টেংরিবাদের বিশ্বাসের উপাদানগুলোকে ইসলামে অন্তর্ভুক্ত করেছিল।[৩০২] মিং রাজবংশের সময়কার চীনে, মুসলিমরা যারা আগের অভিবাসীদের বংশধর ছিল তারা চীনা সমাজে আত্মীকৃত হয়ে গিয়েছিল। কখনও কখনও, এই আত্মীকরণ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে জোর করে করা হয়েছিল,[৩০৩] যেমন চীনা নাম গ্রহণ এবং চীনা সংস্কৃতি মেনে চলা। তবে অনেক মুসলিম চীনারাও তাদের ইসলামী বিশ্বাস ও সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছিল। নানজিং সেই সময় চীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী শিক্ষার কেন্দ্র ছিল।[৩০৪][৩০৫]
মঙ্গোলরা ১২৫৮ সালে বাগদাদ দখল করে এবং আব্বাসীয় খিলাফতকে ধ্বংস করে দেয়। আব্বাসীয় খিলাফত আরব সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু ছিল এবং এর পতনের ফলে আরব সংস্কৃতির উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ে।[৩০৬] ইরান ও মধ্য এশিয়ায় অবস্থিত মুসলিম মঙ্গোল খানাতিরা ছিল মঙ্গোল সাম্রাজ্যের অংশ। মঙ্গোল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা চেঙ্গিস খান ছিলেন একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত মঙ্গোল নেতা। তিনি ১২শ শতাব্দীতে মধ্য এশিয়ায় মঙ্গোল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। মঙ্গোল সাম্রাজ্য তার শাসনামলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্য ছিল। এটি ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার বিশাল অংশ জুড়ে বিস্তৃত ছিল। ১৩শ শতাব্দীতে, মঙ্গোলরা ইরান ও মধ্য এশিয়ায় আক্রমণ করে এবং এই অঞ্চলগুলোকে তাদের সাম্রাজ্যের অংশ করে নেয়। মঙ্গোলরা এই অঞ্চলগুলোতে তাদের শাসন প্রতিষ্ঠা করে। মঙ্গোল শাসনাধীনে, ইরান ও মধ্য এশিয়ায় অবস্থিত মুসলিম খানাতিরা পূর্ব এশিয়ায় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত আন্তঃসংস্কৃতিক প্রবেশাধিকার থেকে উপকৃত হয়েছিল। পূর্ব এশিয়ায় তখন চীনা ও মঙ্গোল সাম্রাজ্য বিদ্যমান ছিল। এই দুটি সাম্রাজ্যের মধ্যে সংস্কৃতির আদান-প্রদান ছিল। ইরান ও মধ্য এশিয়ায় অবস্থিত মুসলিম খানাতিরা সংস্কৃতির এই আদান-প্রদান থেকে উপকৃত হয়েছিল।[৩০৭] নাসিরুদ্দিন আল-তুসি ছিলেন এই সময়কার একজন বিশিষ্ট পারস্য-তুর্কি পণ্ডিত। তিনি গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, দর্শন, ধর্ম ও চিকিৎসাবিদ্যায় অবদান রেখেছিলেন। তিনি তার গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যায় অবদানের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। নাসিরুদ্দিন আল-তুসির একটি গাণিতিক মডেল ছিল যা পরে নিকোলাস কোপার্নিকাস দ্বারা গৃহীত হয় বলে দাবি করা হয়। কোপার্নিকান সূর্যকেন্দ্রিক মহাবিশ্বের তত্ত্ব প্রণয়ন করেছিলেন ।[৩০৮] জমশিদ আল-কাশি ছিলেন নাসিরুদ্দিন আল-তুসির ছাত্র। তিনি পাইয়ের একটি অনুমান প্রস্তাব করেছিলেন যা ১৮০ বছর ধরে অপেক্ষাকৃত সঠিক ছিল। পাই হলো একটি গাণিতিক ধ্রুবক যা একটি বৃত্তের পরিধিকে তার ব্যাসের দ্বারা ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়। পাইয়ের মান প্রায় ৩.১৪। জমশিদ আল-কাশির অনুমানটি ছিল ৩.১৪১৫৯২।[৩০৯]
বারুদ অস্ত্রের উদ্ভব মুসলিম বিশ্বের রাজনৈতিক কাঠামোতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছিল। বারুদ অস্ত্রগুলো তাদেরকে তাদের প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে একটি উল্লেখযোগ্য সামরিক সুবিধা দিয়েছিল, যা তাদেরকে তাদের কর্তৃত্বের প্রসার ঘটাতে সহায়তা করেছিল। এর ফলে, মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল একত্রিত হয়ে বৃহৎ এবং কেন্দ্রীয় রাষ্ট্র গঠন করেছিল। এই নতুন রাষ্ট্রকে "বারুদ সাম্রাজ্য" বলা হয় কারণ তাদের শক্তির উৎস ছিল বারুদ অস্ত্র। অটোমান সাম্রাজ্য ১৫১৭ খ্রিষ্টাব্দে হিজাজ অঞ্চল জয় করার পর, তারা নিজেদেরকে মুসলিম বিশ্বের নেতা হিসাবে ঘোষণা করেছিল।[৩১০] এই দাবিটিকে সমর্থন করার জন্য, তারা নিজেদেরকে খলিফা হিসাবে ঘোষণা করেছিল, যা মুসলিম বিশ্বের নেতার একটি ধর্মীয় উপাধি। সাফাভি রাজবংশ ১৫০১ খ্রিষ্টাব্দে ইরানে ক্ষমতায় এসেছিল।[৩১১] তারা ছিল একটি শিয়া মুসলিম রাজবংশ এবং তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে মুসলিম বিশ্বে একটি নতুন ধরনের রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি হয়েছিল। বাবর, একজন তুর্কি মুসলিম শাসক, ১৫২৬ সালে ভারতে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[৩১২] এই সাম্রাজ্যটি দক্ষিণ এশিয়ায় মুসলিম শাসনের একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিল।
বারুদ সাম্রাজ্য বলতে বোঝায় সেই সাম্রাজ্যগুলো যেগুলো বারুদ ব্যবহার করে যুদ্ধ করতে পেরেছিল। এই সাম্রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে উসমানীয় সাম্রাজ্য, সাফাভি সাম্রাজ্য এবং মুঘল সাম্রাজ্য। এই সাম্রাজ্যগুলোর কেন্দ্রীয় সরকারগুলোর ধর্ম ছিল ইসলাম। এই ধর্ম সাম্রাজ্যের জনসংখ্যার ধর্মীয় অনুশীলনকে প্রভাবিত করেছিল। উসমানীয় সাম্রাজ্যের শাসকগণ সুফিবাদে বিশ্বাস করতেন। সুফিবাদ হলো ইসলামের একটি আধ্যাত্মিক শাখা যা ব্যক্তিগত আধ্যাত্মিক অনুশীলনের উপর জোর দেয়। উসমানীয় শাসকগণ সুফিবাদের প্রচার করেছিলেন এবং সুফি দরগাহগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। এই কারণে, সুফিবাদ উসমানীয় সাম্রাজ্যের জনসাধারণের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মৌলভি তরিকা এবং বেকতাশি তরিকা হলো সুফিবাদের দুটি প্রধান শাখা। এই তরিকাগুলোর সুফিদের উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতানদের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।[৩১৩] এই সম্পর্ক উসমানীয় সাম্রাজ্য এবং সুফিবাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রতীক ছিল।[৩১৪] সাফাভি সাম্রাজ্য ছিল একটি শিয়া ইসলামী সাম্রাজ্য। সাফাভি শাসকগণ দ্বাদশ ইমামবাদী শিয়া ইসলামকে প্রচার করেছিলেন। এই কারণে, দ্বাদশ ইমামবাদী শিয়া ইসলাম ইরান এবং এর আশেপাশের অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ইরানি অভিবাসীরা দক্ষিণ এশিয়ায় শিয়া ইসলামের বিস্তারে সহায়তা করেছে। এই অভিবাসীরা দক্ষ আমলা এবং জমিদার হিসাবে কাজ করত। তারা শিয়া ইসলামের শিক্ষা এবং অনুশীলনকে দক্ষিণ এশিয়ায় ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছিল।[৩১৫] নাদির শাহ ছিলেন একজন শিয়া মুসলিম যিনি সাফাভি সাম্রাজ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি সুন্নিদের সাথে সম্পর্ক উন্নত করার জন্য কাজ করেছিলেন। তিনি বারো ইমামবাদকে সুন্নি ইসলামের পঞ্চম মতবাদ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছিলেন, যাকে জাফারিবাদ বলা হয়।[৩১৬] কিন্তু, এই প্রস্তাবটি উসমানীয় সাম্রাজ্য দ্বারা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।[৩১৭]
আধুনিক যুগ (১৮শ-২০শতক)
ইবনে তাইমিয়া ছিলেন একজন বিখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত যিনি রক্ষণশীল ইসলামের প্রবক্তা ছিলেন। ১৪ শতকের গোড়ার দিকে, তিনি দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন যে তারা ইসলামের মূল শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।[৩১৮] তিনি আলেমদের অন্ধ অনুকরণ করার পরিবর্তে তাদের নিজস্ব যুক্তি এবং বিবেচনা ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।[৩১৯] ইবনে তাইমিয়া কাফির বলে মনে করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জিহাদের আহ্বান জানিয়েছিলেন।[৩২০] তবে, তার রচিত রচনাগুলো তার জীবদ্দশায় কেবলমাত্র একটি মার্জিনাল ভূমিকা পালন করেছিল। কারণ তিনি তখনকার সময়ের প্রধান ইসলামী পণ্ডিতদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন।[৩২১] মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাব ছিলেন একজন আরব ইসলামী পণ্ডিত যিনি ১৮শতকে আরবদেশে, ইবন তাইমিয়ার ও ইবনে কাইয়িমের রচনাবলী দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ওয়াহাবি আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন। ইবনে তাইমিয়া ও ইবনে কাইয়িম ছিলেন দুজন ইসলামি পণ্ডিত যারা ইসলামের একটি রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করেছিলেন। তারা বিশ্বাস করতেন যে ইসলামের মূল নীতিগুলোকে বিকৃত করা হয়েছে এবং এটিকে তার খাঁটি রূপে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। ওয়াহাবি আন্দোলন বিশুদ্ধ ইসলামের পুনরুজ্জীবনের আহ্বান করেছিল।[৩২২][৩২৩] মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহাব বিশ্বাস করতেন যে অনেক স্থানীয় ইসলামি রীতিনীতি, যেমন মুহাম্মাদের বা ঐশী ব্যক্তিদের সমাধিতে যাওয়া, পরবর্তীকালের নতুনত্ব এবং পাপ। তিনি এই রীতিনীতিগুলোকে ধ্বংস করার আহ্বান জানান। তিনি পবিত্র পাথর ও গাছ, সুফি মাজার, মুহাম্মাদ ও তাঁর সঙ্গীদের সমাধি এবং শিয়াদের বৃহত্তম হজস্থল কারবালার হোসেনের সমাধিও ধ্বংস করেন।[৩২৪] ১৯শতকে মক্কা থেকে ফিরে আসার পর, মা ওয়ানফু ও মা দেবাও চীনে সালাফি আন্দোলনগুলোকে সমর্থন করেছিলেন। তারা বিশ্বাস করতেন যে চীনের ইসলামকে খাঁটি রূপে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, সুফি গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা নিপীড়িত হয়ে, তারা আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।[৩২৫][৩২৬] ১৯ শতকে, লিবিয়ার সানুসি আন্দোলন এবং সুদানের মুহাম্মদ আহমদ আল-মাহদীর আন্দোলন, দুটি সুফি আন্দোলন ছিল যা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করে। সানুসি আন্দোলন লিবিয়ার একটি বিস্তৃত অঞ্চলকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল এবং মুহাম্মদ আহমদ আল-মাহদীর আন্দোলন সুদানে একটি নতুন ইসলামী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে।[৩২৭] এই সাফল্যগুলো দেখায় যে সুফিবাদ এখনও অনেক মুসলিমের জন্য একটি জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য রূপ ছিল। ভারতের শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী ছিলেন একজন ইসলামি পণ্ডিত যিনি ১৮ শতকে বাস করতেন। তিনি সুফিবাদের একজন সমর্থক ছিলেন, তবে তিনি এটিকে আরও বেশি যুক্তিবাদী এবং বৈজ্ঞানিক করে তুলতে চেয়েছিলেন। তিনি সুফিবাদের কিছু রীতিনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, যেমন কবরের উপর ভক্তি এবং মৃতদের কাছে প্রার্থনা করা। শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভীর এই দৃষ্টিভঙ্গি দেওবন্দি আন্দোলনের উপর প্রভাব ফেলেছিল।[৩২৮] দেওবন্দি আন্দোলন হলো একটি ইসলামি আন্দোলন যা ভারতে গড়ে উঠেছিল। আন্দোলনটি সুফিবাদের কিছু রীতিনীতিকে প্রত্যাখ্যান করে, যা তারা অযৌক্তিক এবং বিদ্বেষপূর্ণ বলে মনে করে। দেওবন্দি আন্দোলনের কিছু রীতিনীতিকে প্রত্যাখ্যান করার মাধ্যমে রেজভী আন্দোলন গড়ে ওঠে। রেজভী আন্দোলন সুফিবাদের জনপ্রিয় রূপকে সমর্থন করে, যা দেওবন্দি আন্দোলন প্রত্যাখ্যান করে। রেজভী আন্দোলন সুফিবাদের অনুশীলনগুলোকেও পুনর্গঠিত করেছে, যাতে এগুলো আরও বেশি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে।[৩২৯][৩৩০]
১৮০০ সাল থেকে মুসলিম বিশ্ব, বিশেষ করে অমুসলিম ইউরোপীয় শক্তির সাথে তুলনা করলে, সাধারণভাবে রাজনৈতিকভাবে পিছিয়ে ছিল। এর আগে, ১৫ শতকে, রিকনকোয়েস্টা ইবেরিয়ায় মুসলিম উপস্থিতির অবসান ঘটাতে সক্ষম হয়েছিল। রিকনকোয়েস্টা হলো একটি শতাব্দীব্যাপী প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে খ্রিস্টানরা ইবেরীয় উপদ্বীপ থেকে মুসলিমদের বহিষ্কার করেছিল। ১৯ শতকে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যকে আনুষ্ঠানিকভাবে অধিগ্রহণ করেছিল। মুঘল সাম্রাজ্য ১৫২৬ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত ভারতে শাসন করেছিল।[৩৩১] পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের প্রতিক্রিয়ায়, অনেক বুদ্ধিজীবী ইসলামকে সংস্কার করার চেষ্টা করেন।[৩৩২] ইসলামি আধুনিকতা, যা প্রাথমিকভাবে পশ্চিমা পণ্ডিতদের দ্বারা সালাফিবাদ নামে অভিহিত করা হয়েছিল, আধুনিক মূল্যবোধ এবং নীতি যেমন গণতন্ত্রকে গ্রহণ করেছিল। ইসলামী আধুনিকতার উল্লেখযোগ্য অগ্রগামীদের মধ্যে রয়েছে মুহাম্মদ আবদুহ এবং জামাল উদ্দিন আফগানি। মুহাম্মদ আবদুহ ছিলেন একজন মিশরীয় ধর্মীয় নেতা এবং লেখক যিনি ইসলামকে আধুনিক বিশ্বের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করেছিলেন। জামাল উদ্দিন আফগানি ছিলেন একজন আফগান ধর্মীয় নেতা এবং রাজনৈতিক কর্মী যিনি ইসলামী বিশ্বের পুনর্জাগরণের জন্য কাজ করেছিলেন।[৩৩৩] আবুল আ'লা মওদুদী আধুনিক রাজনৈতিকভাবে ইসলামকে প্রভাবিত করতে সাহায্য করেছিলেন। আবুল আ'লা মওদুদী ছিলেন একজন পাকিস্তানি ইসলামী পণ্ডিত যিনি একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে ছিলেন।[৩৩৪] আধুনিক ন্যায়সংহিতার অনুরূপে, শরিয়াহর সাথে প্রথমবারের মতো ১৮৬৯ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের মেজেলে নীতি আংশিকভাবে আইনে রূপান্তরিত হয়।[৩৩৫]
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানীয় সাম্রাজ্য মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে পরাজিত হয়। এরপর, ১৯১৮ সালে ভার্সাই চুক্তির মাধ্যমে উসমানীয় সাম্রাজ্যকে ভেঙে ভাগ করে দেওয়া হয়। ১৯২৪ সালে, তুরস্কের নতুন সরকার খিলাফতকে বিলুপ্ত করে দেয়।[৩৩৬] সর্ব-ইসলামবাদীরা মুসলিমদের একত্রিত করার চেষ্টা করেছিল এবং সর্ব-আরববাদীদের মতো ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী শক্তির সাথে প্রতিযোগিতা করেছিল। ১৯৬৯ সালে, জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে দুজন ইহুদি ধর্মীয় নেতা দ্বারা আগুন দেওয়া হয়। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায়, ১৯৬৯ সালে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) প্রতিষ্ঠিত হয়। ওআইসি একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা এবং সমন্বয়ের লক্ষ্যে কাজ করে।[৩৩৭]
শিল্পোন্নত দেশগুলোর সাথে যোগাযোগের ফলে অর্থনৈতিক অভিবাসনের মাধ্যমে মুসলিম জনগোষ্ঠী নতুন এলাকায় আসে। অনেক মুসলিম চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক হিসেবে (বেশিরভাগ দক্ষিণ এশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে) ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে অভিবাসিত হয়, যা আমেরিকা অঞ্চলে শতাংশের হিসাবে বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠী গঠন করে।[৩৩৮] সিরিয়া এবং লেবানন থেকে অভিবাসনের মাধ্যমে লাতিন আমেরিকায় মুসলিম জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়।[৩৩৯] ফলস্বরূপ, সাহারা-নিম্ন আফ্রিকায় শহরাঞ্চলের বৃদ্ধি এবং বাণিজ্যের বৃদ্ধি মুসলিমদের নতুন এলাকায় বসতি স্থাপন এবং তাদের বিশ্বাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সুযোগ বৃদ্ধি করে দেয়, যার ফলে ১৮৬৯ থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা সম্ভবত দ্বিগুণ হয়ে যায়।[৩৪০]
সমসাময়িক যুগ (২০ শতক-বর্তমান)
ইসলামী আধুনিকতাবাদীরা আরব বসন্তের পর আরব বিশ্বে ইসলামী রাজনৈতিক আন্দোলনের উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। মুসলিম ব্রাদারহুড, জামায়াতে ইসলামী এবং একে পার্টি সহ এই আন্দোলনগুলো ইসলামী আধুনিকতাবাদের নীতিগুলোকে তাদের আদর্শের ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করেছিল।[৩৪১][৩৪২][৩৪৩] একে পার্টি, যা তুরস্কের বর্তমান শাসক দল, ইসলামী আধুনিকতাবাদের নীতিগুলোকে অনুসরণ করে। একে পার্টি একটি গণতান্ত্রিক দল যা ইসলামী মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লব একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাজতন্ত্রকে উৎখাত করে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। এই বিপ্লব ইসলামী আধুনিকতাবাদের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল, যা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি নতুন ধারা প্রদান করেছিল। সৈয়দ রশিদ রেজা সহ কিছু লোক ইসলামী আধুনিকতাবাদীদেরকে ইসলামের মূল্যবোধের উপর পশ্চিমা প্রভাবের জন্য দায়ী করেছিল। তারা এমন একটি ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছিল যা পশ্চিমা প্রভাব থেকে মুক্ত ছিল।[৩৪৪][৩৪৫] ইসলামী আধুনিকতার কিছু বিরোধীরা এমন একটি ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করেছিল যা ইসলামের প্রাথমিক যুগের অনুরূপ ছিল। ইরাক ও সিরিয়ার ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই ধরনের একটি দল ছিল। আইএস একটি কঠোর ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেছিল যা আধুনিক বিশ্বের সমস্ত প্রভাবকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। ইসলামী আধুনিকতাবাদের বিরোধীদের মধ্যে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। কিছু লোক নীরব হয়ে পড়েছিল, অন্যরা সহিংসতা সৃষ্টির দিকে পরিচালিত হয়েছিল।[৩৪৬]
২০ শতকে, মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামী রাজনৈতিক আন্দোলনগুলোর উত্থান ঘটে। এই আন্দোলনগুলো ধর্মীয় কর্তৃত্বের উপর জোর দেয় এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের আহ্বান জানায়। সরকারগুলো এই আন্দোলনগুলোকে বিভিন্ন উপায়ে প্রতিক্রিয়া জানায়। তুরস্কে, সেনাবাহিনী ইসলামী সরকারকে উৎখাত করার জন্য অভ্যুত্থান চালায়। আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে কাজ করেছিলেন। তিনি ইসলামী রীতিনীতি ও সংস্কৃতির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেন এবং ধর্মীয় নেতাদের থেকে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে নেন। এই নীতিগুলোর ফলে ইসলামী রাজনৈতিক আন্দোলনগুলোর উত্থান হয়। ১৯৮০ সালে, তুর্কি সেনাবাহিনীর একটি অভ্যুত্থান ইসলামী সরকারকে উৎখাত করে এবং ধর্মনিরপেক্ষ নীতিগুলো পুনরুদ্ধার করে।[৩৪৭] শ্যাফসরাব, যা মুসলিম মহিলাদের দ্বারা পরিধান করা একটি মাথার কাপড়, আইন দ্বারা সীমাবদ্ধ করা হয়েছিল, যেটা তিউনিসিয়াতেও ঘটেছিল।[৩৪৮] অন্যান্য দেশে, সরকারগুলো ইসলামী কর্তৃত্বকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করে। উদাহরণস্বরূপ, সৌদি আরবে, সরকার ধর্মীয় শিক্ষা এবং প্রচার নিয়ন্ত্রণ করে।[৩৪৯] মিশরে, সরকার আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।[৩৫০] এই সরকারগুলো ইসলামী কর্তৃত্বকে ব্যবহার করে জনগণের সমর্থন অর্জন এবং ইসলামী বিপ্লবী আন্দোলনগুলোকে দমন করার চেষ্টা করেছিল। সৌদি আরব এবং অন্যান্য মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ইসলামী বিপ্লবী আন্দোলনগুলোর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছিল। তারা এমন ইসলামী গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়ন করেছিল যা তাদের পছন্দসই ঐতিহ্যবাহী ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করে বলে মনে করে। এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি হলো সালাফিবাদ, যা ধর্মীয় কর্তৃত্ত্বকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।[৩৫১][৩৫২]
বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মুসলিমরা তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে নিপীড়নের শিকার হয়। এই নিপীড়নগুলো রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে হয়।[৩৫৩] লাল খেমার, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি এবং বসনিয়ার জাতীয়তাবাদী শক্তিগুলো মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন চালিয়েছিল। এই শক্তিগুলো মুসলিমদের ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে তাদেরকে জনসংখ্যার বাকি অংশ থেকে আলাদা হিসাবে দেখেছিল এবং তাদেরকে দমন করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিল।[৩৫৪][৩৫৫][৩৫৬] মায়ানমার সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর নির্যাতনকে যখন ওএইচসিআর ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন গণহত্যা, জাতিগত নির্মূল এবং অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে শনাক্ত করে[৩৫৭] তখন জাতিসংঘ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই গণহত্যাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করে।[৩৫৮][৩৫৯]
ইন্টারনেট, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন ইত্যাদির মতো আধুনিক প্রযুক্তির উত্থানের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এখন ধর্মীয় জ্ঞানকে আরও সহজে জানতে পারে। এর ফলে ধর্মীয় বিশ্বাস এবং অনুশীলনের মধ্যে নতুন নতুন প্রবণতা দেখা দিয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলমানদের সাথে যোগাযোগের সুযোগ বেড়েছে। এর ফলে মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় অনুশীলনের মধ্যে কিছু পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। যেমন, হিজাব পরা, যা একসময় মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার মুসলিম মহিলাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, এখন বিশ্বের অন্যান্য অংশের মুসলিম মহিলাদের মধ্যেও এটি সাধারণ হয়ে উঠছে।[৩৬০] এছাড়াও, কিছু মুসলিম বুদ্ধিজীবী পবিত্র গ্রন্থের উপর ভিত্তি করে ইসলামী বিশ্বাসকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য থেকে আলাদা করার চেষ্টা করছেন। এর ফলে ইসলামের একটি আরও "নির্ভুল" এবং "আধুনিক" ব্যাখ্যার বিকাশ হতে পারে।[৩৬১] আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে মুসলমানরা এখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ধর্মীয় নেতাদের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে। এর ফলে স্থানীয় ও ঐতিহ্যবাহী উলামাদের প্রভাব হ্রাস পেতে পারে এবং নতুন ধর্মীয় নেতাদের উত্থান হতে পারে।[৩৬২][৩৬৩] কিছু মুসলমান ইসলামের একটি আরও "ব্যক্তিগতকৃত" ব্যাখ্যা গ্রহণ করছেন।[৩৬৪] তারা বিশ্বাস করেন যে প্রত্যেক ব্যক্তির নিজের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং অনুশীলনকে নির্ধারণ করার অধিকার রয়েছে। এই ধরনের ব্যাখ্যাগুলোকে অনেকে "অসামঞ্জস্যপূর্ণ" বলে সমালোচনা করেন, কারণ তারা ইসলামের ঐতিহ্যবাহী ব্যাখ্যা থেকে সরে যায়।[৩৬৫][৩৬৬] অনেক মুসলমান ধর্মনিরপেক্ষতাকে একটি বিদেশী আদর্শ হিসাবে দেখেন যা বৈদেশিক উপনিবেশকালীন শাসকদের দ্বারা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল।[৩৬৭] তারা বিশ্বাস করেন যে ধর্মনিরপেক্ষতা ইসলামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।[৩৬৮]
জনসংখ্যা ও বিস্তার
২০১৫ সালের হিসাবে, বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ২৪%, বা প্রায় ১.৮ বিলিয়ন (প্রায় ১৮০কোটি) মানুষ মুসলিম।[৩৭০][৩৭১] ১৯০০ সালে, এই অনুমান ছিল ১২.৩%,[৩৭২] ১৯৯০ সালে এটি ছিল ১৯.৯%[৩৭৩] এবং ২০৫০ সালের মধ্যে অনুপাত ২৯.৭%[৩৭৪] হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। পিউ রিসার্চ সেন্টার অনুমান করেছে যে বিশ্বের ৮৭-৯০% মুসলিম সুন্নি এবং ১০-১৩% মুসলিম শিয়া মতাদর্শে বিশ্বাসী।[৩৭৫] প্রায় ৪৯টি দেশ মুসলিম-প্রধান,[৩৭৬][৩৭৭] বিশ্বের মুসলিমদের ৬২% এশিয়ায় বাস করে এবং ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশে এককভাবে প্রায় ৮০কোটি অনুসারী রয়েছে।[৩৭৮][৩৭৯] আরব মুসলিমরা বিশ্বের মুসলিমদের মধ্যে বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী গঠন করে,[৩৮০] তারপরে বাঙালি মুসলিম[৩৮১][৩৮২] এবং পাঞ্জাবী মুসলিমরা[৩৮৩]। বেশিরভাগ অনুমানই ইঙ্গিত দেয় যে চীনে প্রায় ২ থেকে ৩ কোটি মুসলিম বসবাস করে (চীনের মোট জনসংখ্যার ১.৫% থেকে ২%)।[৩৮৪][৩৮৫] ইউরোপের অনেক দেশে খ্রিস্টধর্মের পরেই ইসলাম দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। ২০০৫ সালে ইউরোপের মোট জনসংখ্যার ৪.৯% ইসলাম ধর্মের অনুসারী ছিল, যার মূল কারণ হিসেবে মূলত অভিবাসন এবং ২০০৫ সাল থেকে মুসলিমদের উচ্চ জন্মহার উল্লেখ করা হয়।[৩৮৬][৩৮৭]
ধর্মীয় ধর্মান্তর মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে কোনো বিশেষ প্রভাব ফেলে না কারণ "মুসলিম হওয়ার জন্য ধর্মান্তরিত হওয়া লোকের সংখ্যা আনুমানিকভাবে ইসলামি বিশ্বাস থেকে বিদায়ী হওয়া মুসলিমদের সংখ্যার সমান"।[৩৮৮] যদিও, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রধানত সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা থেকে (২৯ লক্ষ) ধর্মীয় ধর্মান্তরের মাধ্যমে প্রায় ৩০ লক্ষ নতুন মুসলিম হওয়ার আশা করা হচ্ছে।[৩৮৯][৩৯০]
সিএনএন-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, "ইসলাম বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো আফ্রিকান-আমেরিকান জনগোষ্ঠী"।[৩৯১] ব্রিটেনে, প্রতি বছর প্রায় ৬,০০০ লোক ইসলামে ধর্মান্তরিত হয় এবং ব্রিটিশ মুসলিম মাসিক জরিপের একটি নিবন্ধ অনুসারে, ব্রিটেনে নতুন মুসলিম ধর্মান্তরিতদের বেশিরভাগই ছিল নারী।[৩৯২] দ্য হাফিংটন পোস্টের মতে, "পর্যবেক্ষকরা অনুমান করেন যে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার আমেরিকান ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়", যাদের বেশিরভাগই নারী এবং আফ্রিকান-আমেরিকান।[৩৯৩][৩৯৪]
শতাংশ এবং মোট সংখ্যা উভয় ক্ষেত্রেই, ইসলাম বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান প্রধান ধর্মীয় জনগোষ্ঠী এবং ২১ শতাব্দীর শেষের দিকে খ্রিস্টধর্মকে ছাড়িয়ে বিশ্বের বৃহত্তম ধর্ম হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।[৩৯৫] অনুমান করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে মুসলিমদের সংখ্যা বিশ্বজুড়ে খ্রিস্টানদের সংখ্যার প্রায় সমান হবে।[৩৯৬]
প্রধান শাখা বা সম্প্রদায়
সম্প্রদায় বা ধর্মীয় শাখা হলো ধর্মীয় নেতাদের বা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপলব্ধি। অর্থাৎ, ধর্মীয় বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট মতবাদ বা বিশ্বাস যা একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠী দ্বারা অনুসরণ করা হয়। ইসলামের ইতিহাসে, ধর্মীয় বিষয় ছাড়াও রাজনৈতিক কারণেও বিভিন্ন মতভেদ ও বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে। এসব বিভাজনের ফলে ইসলামের মধ্যে বিভিন্ন সম্প্রদায় বা শাখার উদ্ভব হয়েছে। এই বিভাজনের মধ্যে কিছু সম্প্রদায়, যেমন বাবিবাদ ও বাহা'ইবাদ, এমন গভীর বিশ্বাসগত পার্থক্য দেখায় যে, সেগুলোকে ইসলামের থেকে আলাদা স্বাধীন ধর্ম হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। অর্থাৎ, এই সম্প্রদায় ইসলামের মূল বিশ্বাস থেকে এতটাই বিচ্যুত যে, সেগুলোকে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত নাও বলা যেতে পারে। এই বিভাজনের বাইরেও ধর্মীয় নেতাদের বিভিন্ন ব্যাখ্যা ও উপস্থাপনা থেকে উদ্ভূত কিছু সম্প্রদায়ও রয়েছে। অর্থাৎ, ধর্মীয় নেতাদের বিভিন্ন ব্যাখ্যা ও উপস্থাপনা থেকেও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিভাজনের সৃষ্টি হতে পারে।
মুসলিম বিশ্বে সুন্নি-শিয়া মতবাদের বাইরে যেসব প্রধান সম্প্রদায় সক্রিয় রয়েছে সেগুলো হলো: বাতিনী-সুফি প্রবণতা, সালাফি-ওয়াহাবি আন্দোলন, আহমদিয়া, কুরআনবাদ, ইয়াযদানিবাদ ইত্যাদি।
ইসলামের পণ্ডিত মুহাম্মদ ইবনে আবু জাহরা তাঁর "মাজহাব আত-তারিখ" (ইসলামের ধর্মীয় মতবাদের ইতিহাস) নামক বইয়ে ইসলামের ধর্মীয় মতবাদগুলোকে তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন: রাজনৈতিক মতবাদ, ধর্মীয় মতবাদ এবং ধর্মীয় আইনের মতবাদ।
রাজনৈতিক মতবাদ
ইসলামের রাজনৈতিক মতবাদের মধ্যে তিনটি প্রধান মতবাদ রয়েছে: সুন্নি, শিয়া এবং খারিজি। এই তিনটি মতবাদের উদ্ভব এবং বিভাজন ইসলামের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই তিনটি মতবাদের রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়াও অন্যান্য বিভিন্ন প্রভাবও হয়েছে।
ইসলামের নবী মুহাম্মাদের মৃত্যুর পর, রাষ্ট্রের নেতৃত্বের প্রশ্নে একটি বিভক্তি দেখা দেয়। কিছু লোক রাষ্ট্রের নেতা হিসেবে ইমাম আলীর নেতৃত্বকে সমর্থন করে। শিয়া বিশ্বাস অনুসারে, ইমামত আলীর অধিকার এবং নবী তাঁর জীবদ্দশায় তা ইঙ্গিত করেছিলেন। সুন্নিরা আলীর ইমামতের বৈধতা স্বীকার করে, তবে নবী তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর পরবর্তী ইমাম (খালিফা) হিসাবে আলীর ইঙ্গিত করেছেন বলে তারা বিশ্বাস করে না। শিয়াদের বেশিরভাগই আলীর আগের তিন খলিফা (আবু বকর, ওমর, ওসমান)-কে স্বীকার করে না, যখন সুন্নিরা তাদের স্বীকার করে। শিয়া এবং সুন্নিদের মধ্যে বিতর্ক এইভাবে রাজনৈতিক বিতর্কের সাথে (কে ইমাম হওয়া উচিত) শুরু হয়েছিল, সময়ের সাথে সাথে দুটি দল ইবাদত এবং বিভিন্ন আকিদা বিষয়ের ক্ষেত্রেও বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। তৃতীয় রাজনৈতিক দল খারিজিরা, শুরুতে আলীর সমর্থক ছিলেন। যাইহোক, সিফফিন যুদ্ধের পরে বিচারক নিযুক্ত করার ঘটনায় তারা পরে বিরোধিতা করেছিল, তারা এই বিচারকত্বকে কুফরি বলে দাবি করেছিল এবং একটি পৃথক দল হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল।
সুন্নি
সুন্নি ইসলাম বা সুন্নবাদ ইসলামের বৃহত্তম সম্প্রদায়ের নাম।[৩৯৭][৩৯৮] এই শব্দটি আহল আস-সুন্না ওয়াল জামাআত শব্দগুচ্ছের সংক্ষিপ্ত রূপ, যার অর্থ "সুন্নাহ (নবী মুহাম্মাদ এর আদর্শ) এবং সম্প্রদায়ের লোক"।[৩৯৯] সুন্নিরা বিশ্বাস করেন যে প্রথম চারজন খলিফা ছিলেন মুহাম্মাদ এর সঠিক উত্তরাধিকারী। তারা ইসলামের আইনগত বিষয়ের জন্য প্রধানত ছয়টি হাদিস গ্রন্থের উল্লেখ করেন, পাশাপাশি চারটি প্রচলিত ফিকহ মতবাদের একটি অনুসরণ করেন: হানাফি, হাম্বলি, মালিকি এবং শাফেয়ি।[৪০০][৪০১]
বিশ্বের সবচেয়ে সাধারণ মুসলিম সম্প্রদায় হল সুন্নিবাদ এবং বর্তমান মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় ৮০-৮৫% সুন্নি।[৪০২] বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম সম্প্রদায় হলো সুন্নিরা। তাদের সংখ্যা প্রায় ১৮০কোটি। সুন্নিরা, শিয়াদের থেকে আলাদাভাবে, মুহাম্মাদের মৃত্যুর পর খলিফা হওয়া প্রথম চার খলিফার (খুলাফায়ে রাশেদীন) সকলকে স্বীকৃতি দেয় এবং চার খলিফাকে "সত্যের উপর অটুট থাকা খলিফা" হিসাবে শ্রদ্ধা এবং ভালবাসায় স্মরণ করে।[৪০৩] সুন্নিরা বিশ্বাস করে যে মুহাম্মাদের মৃত্যুর পর খলিফা হওয়ার জন্য প্রথম চারজন ব্যক্তি সবচেয়ে যোগ্য ছিলেন। সুন্নিবাদে বিভিন্ন আলেম বিভিন্ন ইমামত/খিলাফতের সংজ্ঞা দেন, তবে সাধারণ বিষয় হলো যে কারও বংশ ইমামতের অধিকারী হওয়ার ধারণা নেই এবং এটি সাধারণভাবে শিয়াদের সাথে এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্যগুলোর মধ্যে একটি। সুন্নিরা বিশ্বাস করে যে ইমাম হওয়ার জন্য কারও উত্তরাধিকার থাকার প্রয়োজন নেই। প্রকৃতপক্ষে, ইমাম এবং খলিফা পদটি সুন্নিবাদে গুরুত্বপূর্ণ। সুন্নিরা বিশ্বাস করে যে ইমাম এবং খলিফা গুরুত্বপূর্ণ পদ, তবে তারা এটাও বিশ্বাস করে যে তারা ঈমানের একটি অপরিহার্য অংশ নয়। একইভাবে, মুহাম্মাদের নাতি হুসাইনকে কারবালার যুদ্ধে হত্যার ঘটনাটি সাধারণভাবে একটি দুঃখজনক ঘটনা হিসাবে বিবেচিত হয়[৪০৪] এবং ঘটনার জন্য দায়ী ইয়াজিদ, সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্রভাবে নিন্দিত হয় এবং সুন্নিবাদে এটি নাম হিসাবে ইয়াজিদ প্রায় কখনই ব্যবহৃত হয় না।[৪০৫] সুন্নিরা কারবালার ঘটনাকে হৃদয়বিদারক ঘটনা হিসাবে স্মরণ করে, তবে তারা শিয়াদের মতো করে এটিকে প্রতি বছর অনুষ্ঠানের সাথে পালন করে না। শিয়াদের অনেক সম্প্রদায়ের দ্বারা স্বীকৃত যে ইমামদের অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা রয়েছে, তারা পাপমুক্ত এবং ভুলহীন, কিন্তু এই ধারণাগুলো সুন্নিবাদে নেই।[৪০৬] সুন্নিরা বিশ্বাস করে না যে ইমামরা অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা, জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা সম্পন্ন, তারা পাপমুক্ত এবং ভুলহীন। এছাড়াও, শিয়া মতবাদে বেশিরভাগ ইমামদের কথা ও কর্ম হাদিস সংকলনে গণনা করা হয়, কিন্তু সুন্নিবাদে হাদিস সংকলনে শুধুমাত্র মুহাম্মাদের কথা এবং কর্মকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সুন্নিরা হাদিস সংকলনে ইমামদের কথা ও কর্ম অন্তর্ভুক্ত করে না।
ঐতিহ্যবাহী ধর্মতত্ত্ব হলো সুন্নি মতবাদের একটি ধারা যার প্রবক্তা মূলত আহমদ ইবনে হাম্বল (৭৮০-৮৫৫ খ্রিস্টাব্দ)। এই ধারার অনুসারীরা কুরআন ও সুন্নাহর আক্ষরিক অর্থে বিশ্বাস করেন এবং মনে করেন যে কুরআন অকৃত্রিম ও চিরন্তন। তারা ধর্মীয় ও নৈতিক বিষয়ে কালাম নামে যুক্তিবাদী ধর্মতত্ত্বের বিরোধিতা করেন।[৪০৭] মুতাজিলাহ হলো সুন্নি মতবাদের আরেকটি ধারা যা প্রাচীন গ্রিক দর্শনের দ্বারা অনুপ্রাণিত। মাতুরিদি মতবাদের প্রবক্তা আবু মনসুর আল-মাতুরিদি (৮৫৩-৯৪৪ খ্রিস্টাব্দ)। এই মতবাদ অনুসারে, মৌলিক নৈতিকতার জন্য ধর্মগ্রন্থের প্রয়োজন নেই এবং ভালো ও মন্দ বুঝতে মানুষের বিবেকই যথেষ্ট।[৪০৮] তবে মানুষের বোধগম্যতার বাইরের বিষয়গুলোর জন্য তারা ধর্মীয় প্রত্যাদেশের ওপর নির্ভর করে।আশআরি মতবাদের প্রবক্তা আল-আশআরি (আনু. ৮৭৪-৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ)। এই মতবাদ অনুসারে, নৈতিকতা কেবল ঐশী প্রত্যাদেশ থেকে উদ্ভূত হতে পারে, তবে ব্যাখ্যা সংক্রান্ত বিষয়ে তারা বিবেককে গ্রহণ করে। এই মতবাদ মুতাজিলাহর পদ্ধতি এবং ঐতিহ্যবাহী ধর্মতত্ত্বের ধারণাগুলোকে একত্র করে।[৪০৯]
সালাফিবাদ হলো একটি পুনর্জাগরণ আন্দোলন যা মুসলিমদের প্রথম প্রজন্মের অনুশীলনগুলোতে ফিরে আসার আহ্বান জানায়। ১৮শ শতাব্দীতে, মুহাম্মদ ইবনে আবদুল ওয়াহহাব আধুনিক সৌদি আরবে স'লাফি আন্দোলন শুরু করেন, যাকে বহিরাগতরা ওয়াহাববাদ বলে অভিহিত করা হয়।[৪১০] আহলে হাদীস নামে একটি অনুরূপ আন্দোলনও শতাব্দী-জোড়া সুন্নি আইনি ঐতিহ্যের প্রতি গুরুত্ব কমিয়ে দিয়ে কুরআন ও হাদীসকে সরাসরি অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত করে। নূরচু সুন্নি আন্দোলন শুরু করেন সাইদ নুরসী (১৮৭৭-১৯৬০);[৪১১] এটি তাসাউফ এবং বিজ্ঞানের দর্শনকে একত্রিত করে।[৪১১][৪১২]
শিয়া
শিয়া ইসলাম হলো ইসলামের দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্প্রদায়। বিশ্বব্যাপী শিয়া মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় ২০ কোটি, যা মোট মুসলিম জনসংখ্যার প্রায় ১০%। শিয়া ইসলামের মূল বিশ্বাস হলো যে মুহাম্মাদ এর পর, ইসলামের নেতৃত্ব তার আত্মীয়দের মধ্যে থাকা উচিত। তারা বিশ্বাস করে যে মুহাম্মাদ তাঁর জীবনের শেষদিকে আলী ইবনে আবি তালিবকে তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করেছিলেন। আলী ইবনে আবি তালিব মুহাম্মাদ এর চাচাতো ভাই, জামাই এবং একজন ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ছিলেন। তিনি ইসলামের চতুর্থ খলিফা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[৪১৩] শিয়া মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে আলী ইবনে আবি তালিব এবং তার বংশধররা বিশেষ আধ্যাত্মিক এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন। তারা এই নেতাদেরকে ইমাম বলে অভিহিত করে। শিয়ারা বিশ্বাস করে যে ইমামরা মুহাম্মাদ এর নির্দেশাবলী এবং শিক্ষা অনুসরণ করে ইসলামী সম্প্রদায়কে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
শিয়া ইসলামের ইতিহাস মুহাম্মাদ এর মৃত্যুর পর শুরু হয়। মুহাম্মাদ এর মৃত্যুর পর, আলী ইবনে আবি তালিব খলিফার পদে নির্বাচিত হন। তবে, আলী ইবনে আবি তালিব এবং তার বংশধরদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলো মুসলমানদেরকে শিয়া-সুন্নি বিভাজনের দিকে পরিচালিত করে।
গদীর-এ-খুমের ঘটনা সুন্নি ও শিয়া মুসলমানদের উভয়ের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ ঘটনাটি ঘটেছিল মুহাম্মাদের মক্কা থেকে তার শেষ হজ্জ পালন করে ফেরার পথে। গদীর-এ-খুমে মুহাম্মাদ তার চাচাতো ভাই আলীকে তার শেষ ইচ্ছাপত্রের কার্যকরকারী এবং তার ওলি (অধিকারী) হিসাবে মনোনীত করেন।[৪১৪][৪১৫] শিয়া মুসলমানরা বিশ্বাস করেন যে, মুহাম্মাদ আলীকে তার পরে তার উত্তরসূরি (খলিফা) এবং ইমাম (আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক নেতা) হিসাবে মনোনীত করেছিলেন।[৪১৬] আলীর মতো প্রথম কয়েকজন ইমামকে সব শিয়া গোষ্ঠী এবং সুন্নি মুসলমানরা সম্মান করেন। বৃহত্তম শিয়া সম্প্রদায় ত্বালাশিয়া, দ্বাদশ ইমামে বিশ্বাস করে এবং আরও বিশ্বাস করে যে তাদের শেষ ইমাম আত্নগোপনে চলে গেছেন এবং একদিন ফিরে আসবেন। তারা বিশ্বাস করে যে দ্বাদশ ইমামের ভবিষ্যদ্বাণীটি দ্বাদশ খলিফার হাদিসে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, যা সুন্নি এবং শিয়া উভয় উৎসেই লিপিবদ্ধ রয়েছে।[৪১৭]
দ্বিতীয় প্রাচীনতম শাখা, জায়েদীরা, ইমামদের বিশেষ ক্ষমতা প্রত্যাখ্যান করে এবং কখনও কখনও এটি শিয়া মতবাদ হিসাবে নয় বরং সুন্নি ইসলামের "পঞ্চম বিদ্যালয়" হিসাবে বিবেচিত হয়।[৪১৮][৪১৯] ইসমাইলিরা দ্বাদশীর সাথে সাতম ইমামের পরিচয় নিয়ে বিভক্ত হয়েছে এবং পরবর্তী ইমামদের অবস্থান নিয়ে আরও গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়েছে, যার মধ্যে বৃহত্তম গোষ্ঠী হলো নিজারি।[৪২০]
শিয়ারা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ মেনে চলে। তারা বিশ্বাস করে যে আল্লাহ এক, মুহাম্মাদ তার রাসুল, কুরআন আল্লাহর বাণী, সালাত বা নামাজ, যাকাত বা দান, রোজা বা সিয়াম এবং হজ বা মক্কায় তীর্থযাত্রা করা ফরজ।
শিয়া মুসলমানরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাস করে, তবে তাদের প্রধান কেন্দ্রগুলো হলো ইরান, ইরাক, লেবানন, ইয়েমেন এবং ভারত। শিয়া ইসলাম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক শক্তি। শিয়া মুসলমানদের নিজস্ব বিশ্বাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য রয়েছে। তারা ইসলামের ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মুহাক্কিমা
ইবাদি ইসলাম (বা ইবাদিবাদ) হচ্ছে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১.৪৫ মিলিয়ন মুসলমান (সকল মুসলমানের প্রায় ০.০৮%) দ্বারা অনুশীলিত ইসলামের একটি শাখা, যাদের অধিকাংশই ওমানে বাস করেন।[৪২১] ইবাদিবাদকে প্রায়শই খারিজিদের একটি মধ্যপন্থী রূপভেদ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যদিও ইবাদিবাদীরা নিজেরাই এই শ্রেণিবিভাগের বিরোধিতা করেন। খারিজিরা ছিল এমন গোষ্ঠী যারা খলিফা আলীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল কারণ তিনি এমন কারো সাথে মধ্যস্থতা গ্রহণ করেছিলেন যাকে তারা পাপী হিসাবে বিবেচনা করেছিল। অধিকাংশ খারেজী গোষ্ঠীর বিপরীতে, ইবাদিবাদ পাপী মুসলমানদের কাফের হিসেবে গণ্য করে না। ইবাদি হাদিস, যেমন জামে সহীহ সংকলন, প্রাথমিক ইসলামী ইতিহাস থেকে এমন বর্ণনাকারীদের তথ্যসূত্র ব্যবহার করে যাদেরকে তারা বিশ্বস্ত বলে মনে করে। কিন্তু অধিকাংশ ইবাদি হাদিসও মানক সুন্নি সংকলনগুলোতে পাওয়া যায় এবং সমসাময়িক ইবাদিগণ প্রায়শই মানক সুন্নি সংকলনগুলোকে অনুমোদন করে।[৪২২]
অন্যান্য সম্প্রদায়
- আহমদিয়া আন্দোলন একটি ধর্মীয় আন্দোলন যা ১৮৮৯ সালে ভারতে মির্জা গোলাম আহমদ প্রতিষ্ঠা করেন।[৪২৩][৪২৪][৪২৫][৪২৬] আহমদ দাবি করেন যে তিনি ইসলামের নবী মুহাম্মাদ এর পরে আল্লাহর সর্বশেষ নবী এবং নবুয়তের "ওয়াদা করা মসিহ" বা "ইমাম মাহদি"। আহমদিয়াদের সংখ্যা ১ থেকে ২ কোটি, যারা বিশ্বের ১৯২টি দেশে বসবাস করেন। আহমদিয়া মুসলিমদের বৃহত্তম জনসংখ্যা পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া এবং নাইজেরিয়ায় রয়েছে। আহমদিয়ারা পৃথিবীর অনেক দেশে ধর্মীয় নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। পাকিস্তানে আহমদিয়াদের বিরুদ্ধে সংবিধানে আইন রয়েছে এবং তাদেরকে মুসলিম হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। ইরানে আহমদিয়াদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। অন্যান্য দেশ যেমন সৌদি আরব, ইয়েমেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতেও আহমদিয়াদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে।[৪২৭][৪২৮]
- বেকতাশি আলেভিবাদ একটি সমন্বয়ী এবং অসাধারণ স্থানীয় ইসলামী ঐতিহ্য, যার অনুগামীরা আলী এবং হাজী বেকতাশ ভেলির রহস্যময় (বাতেনী) শিক্ষা অনুসরণ করেন।[৪২৯] আলেভিবাদ হলো ১৪তম শতাব্দীর প্রথাগত তুর্কি বিশ্বাসের একটি মিশ্রণ।[৪৩০] এটি সম্ভবত শিয়া এবং সুফি বিশ্বাসের পাশাপাশি টেংরিবাদ এবং সর্বপ্রাণবাদের সমন্বয়ে গঠিত। অনুমান করা হয় যে বিশ্বব্যাপী ১ থেকে ২ কোটিরও বেশি (~০.৫%–১% সমগ্র মুসলিমের) আলেভি রয়েছে।[৪৩১]
- কুরআনবাদ ইসলামের একটি ধর্মীয় আন্দোলন যা এই বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে যে ইসলামী আইন এবং নির্দেশিকা শুধুমাত্র কুরআনের উপর ভিত্তি করা উচিত, সুন্নাহ বা হাদিসের উপর নয়।[৪৩২] কুরআনবাদীরা উল্লেখযোগ্যভাবে ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের সকল বিশ্বাসের জন্য শুধুমাত্র কুরআনের বাণীর উপর নির্ভরশীল।[৪৩৩] কুরআনবাদ আন্দোলন ১৯ শতক থেকে বিকশিত হয়েছে। ভারতে সৈয়দ আহমদ খান, আবদুল্লাহ চক্রালাভী এবং গোলাম আহমদ পারওয়েজের মত চিন্তাবিদরা এই আন্দোলনের পথিকৃৎ ছিলেন। তারা হাদিস ঐতিহ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন। তারা বিশ্বাস করতেন যে হাদিসগুলো নবী মুহাম্মাদ এর কথা এবং কাজের সঠিক দলিল নয়।[৪৩৪] মিশরের মুহাম্মদ তওফিক সিদ্দিকী আল-মানার পত্রিকায় "ইসলাম কেবল কুরআন" শিরোনামে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন। এই নিবন্ধে তিনি কুরআনের একমাত্র কর্তৃত্বের পক্ষে যুক্তি দিয়েছিলেন।[৪৩৫] বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে একজন বিশিষ্ট কুরআনবাদী ছিলেন রাশাদ খলিফা, মিশরীয়-আমেরিকান জৈবরসায়নবিদ যিনি কুরআনে একটি সংখ্যাগত ভিত্তি আবিষ্কার করার দাবি করেছিলেন এবং কুরআনবাদী সংগঠন "ইউনাইটেড সাবমিটারস ইন্টারন্যাশনাল" প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।[৪৩৬]
অসাম্প্রদায়িক মুসলিম
অ-মাজহাবী মুসলিম বা অসাম্প্রদায়িক মুসলিম এমন একটি শব্দ যা এমন মুসলিমদের জন্য ব্যবহার করা হয় যারা কোনো নির্দিষ্ট ইসলামী মাজহাব বা দলের অন্তর্ভুক্ত নন বা নিজেকে তাদের সাথে চিহ্নিত করেন না।[৪৩৭][৪৩৮] সাম্প্রতিক জরিপে বলা হয়েছে যে বিশ্বের কিছু অংশে মুসলিমদের একটি বড় অংশ নিজেকে "শুধু মুসলিম" হিসাবে চিহ্নিত করে, যদিও এই প্রতিক্রিয়ার অন্তর্নিহিত প্রেরণা নিয়ে খুব কম প্রকাশিত বিশ্লেষণ পাওয়া যায়।[৪৩৯][৪৪০][৪৪১] পিউ রিসার্চ সেন্টারের রিপোর্ট অনুযায়ী, "শুধু মুসলিম" হিসাবে নিজেকে চিহ্নিত করা জরিপে অংশগ্রহণকারীরা সাতটি দেশে মুসলিম জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ গঠন করে (এবং তিনটি দেশে উল্লেখযোগ্য হারে), যেখানে কাজাখস্তানে সর্বোচ্চ ৭৪ শতাংশ। অন্তত ২২টি দেশে প্রতি পাঁচজন মুসলিমের মধ্যে একজন এভাবে নিজেকে চিহ্নিত করেন। [৪৪২]
আধ্যাত্মিকতা
সুফিবাদ (আরবি: تصوف, তাসাউফ) বা তাসাউফ হলো একটি ইসলামী আধ্যাত্মিক অনুশীলন যা আল্লাহর সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপর জোর দেয়। এটিকে প্রায়শই "ইসলামের অভ্যন্তরীণ দিক" হিসাবে বর্ণনা করা হয়। তাসাউফের লক্ষ্য হলো আল্লাহর সাথে একাত্মতা অর্জন করা, যাকে "ফানা" বা "নিঃশেষতা" বলা হয়। তাসাউফের অনুশীলনগুলো সাধারণত আধ্যাত্মিক নির্দেশনা, ধ্যানের অনুশীলন এবং আত্ম-শুদ্ধির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। তাসাউফের অনুসারীরা বিশ্বাস করেন যে এই অনুশীলনগুলো তাদের আল্লাহর সাথে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে এবং আধ্যাত্মিকভাবে বিকশিত হতে সাহায্য করবে।[৪৪৩][৪৪৪][৪৪৫][৪৪৬] তাসাউফ একটি আধ্যাত্মিক অনুশীলন যা ইসলামের মধ্যে বিকাশ লাভ করেছে, তবে এটি কোনো নির্দিষ্ট সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর সাথে সংযুক্ত নয়। তাসাউফের অনুসারীরা বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্য, যার মধ্যে রয়েছে সুন্নি, শিয়া এর মতো অন্যান্য মুসলিম সম্প্রদায়। তাসাউফের শিক্ষাগুলো ইসলামের অন্যান্য দিকগুলোর সাথেও সংযুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, তাসাউফের অনুশীলনগুলো প্রায়শই ইসলামী আইন এবং নৈতিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।[৪৪৭][৪৪৮] হাসান আল-বসরি (৬৪২-৭২৮) একজন বিখ্যাত সুফি পণ্ডিত ছিলেন। তিনি তাসাউফের একটি প্রাথমিক রূপের প্রচার করেছিলেন যা আল্লাহর প্রতি আনুগত্য এবং আল্লাহ ভীতির উপর জোর দেয়।[৪৪৯] মানসুর আল-হল্লাজ (৮৫৮-৯২২) এবং জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি (১২৯১-১৩২৭) দুজনেই বিখ্যাত সুফি পণ্ডিত ছিলেন। তারা তাসাউফের একটি রূপের প্রচার করেছিলেন যা আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার উপর জোর দেয়। জালালুদ্দিন রুমির কবিতা এবং সাহিত্য তাসাউফের শিক্ষাগুলোকে প্রভাবিত করেছে। তাঁর কবিতাগুলো বিশ্বজুড়ে পাঠকদের কাছে জনপ্রিয় এবং তিনি আমেরিকার সর্বাধিক পঠিত কবিদের একজন।[৪৫০][৪৫১]
সুফিরা তাসাউফকে ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করেন। তাসাউফ ইসলামের একটি অভ্যন্তরীণ আধ্যাত্মিক মাত্রা, যা আল্লাহর সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপন এবং আধ্যাত্মিক পরিপূর্ণতা অর্জনের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। সুফিরা বিশ্বাস করেন যে তাসাউফ হলো ইসলামের প্রকৃত মূল।[৪৫২] ঐতিহ্যবাহী সুফিগণ, যেমন বায়েজিদ বোস্তামি, জালালউদ্দিন রুমি, হাজী বেকতাশ ওয়ালী, জুনাইদ বাগদাদী এবং আবু হামিদ আল-গাজ্জালি, সুফিবাদ ইসলামের মূলনীতি এবং মুহাম্মাদের শিক্ষার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত বলে দাবি করেন। তারা যুক্তি দেখান যে সুফিবাদ ইসলামের ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এটি ইসলামের মূল উদ্দেশ্যগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।[৪৫৩][৪৫২] ইতিহাসবিদ নিল গ্রিন যুক্তি দেখান যে মধ্যযুগে ইসলাম ছিল কমবেশি সুফিবাদ। তিনি যুক্তি দেখান যে সুফিবাদ ছিল মধ্যযুগে ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় আন্দোলন এবং এটি ইসলামী বিশ্বের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।[৪৫৪] সুফি সাধকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মতো জনপ্রিয় ধর্মীয় অনুশীলনগুলোকে সুন্নি পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলন সালাফিবাদের অনুসারীরা মূল ধর্ম থেকে বিচ্যুতি হিসেবে বিবেচনা করেন। তারা বিশ্বাস করেন যে সুফিরা ইসলামের মূলনীতি থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তারা ইসলামের মধ্যে বিদ'আত (নতুন উদ্ভাবন) প্রবর্তন করেছে। সালাফিরা কখনও কখনও সুফিদের ওপর শারীরিক আক্রমণ চালায়, যার ফলে সুফি-সালাফি সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সালাফিরা মনে করে যে সুফিরা ইসলামের জন্য হুমকি এবং তাদেরকে দমন করা প্রয়োজন।[৪৫৫]
সুফিদের ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলো একজন শিক্ষক (ওয়ালি) কে ঘিরে গড়ে ওঠে। ওয়ালি হলেন একজন সুফি ব্যক্তিত্ব যিনি আধ্যাত্মিক জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার উচ্চতর অবস্থায় পৌঁছেছেন। ওয়ালির আধ্যাত্মিক শিক্ষার সিলসিলা নবী মুহাম্মাদের সাথে যুক্ত হয়, যার অর্থ হলো ওয়ালি নবী মুহাম্মাদের আধ্যাত্মিক উত্তরসূরি।[৪৫৬] সুফিরা তাদের ধর্মপ্রচার ও শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে মুসলিম সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সুফিরা ইসলামের শিক্ষা এবং মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধর্মপ্রচার কার্যক্রম ব্যবহার করেছে। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও প্রতিষ্ঠা করেছেন যেখানে মুসলিমদের ইসলামের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।[২৫৮] সুফিবাদ আহলে সুন্নাত আন্দোলনকে প্রভাবিত করেছে। আহলে সুন্নাত আন্দোলন একটি সুন্নি ইসলামী আন্দোলন যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রচলিত। সুফিবাদ আন্দোলনের শিক্ষা এবং অনুশীলনগুলো আহলে সুন্নাত আন্দোলনের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে।[৪৫৭][৪৫৮][৪৫৯] সুফিবাদ মধ্য এশিয়ার[৪৬০][৪৬১] পাশাপাশি তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া, মরক্কো, সেনেগাল, চাদ এবং নাইজারের মতো আফ্রিকান দেশগুলোতেও প্রচলিত।[৪৬২][৪৬৩] মধ্য এশিয়ায়, সুফিবাদ ইসলামের প্রাথমিক বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। আফ্রিকায়, সুফিবাদ ইসলামের প্রচার এবং বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
আইন ও বিচারবিদ্যা
শরিয়াহ ইসলামী ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে গঠিত একপ্রকার ধর্মীয় আইন।[৪০০] এটি ইসলামের ধর্মীয় বিধান, বিশেষ করে কুরআন ও হাদিস থেকে উদ্ভূত। আরবিতে, শরীয়াহ শব্দটি আল্লাহর ঐশ্বরিক আইনকে বোঝায় এবং এটি ফিকহ (পণ্ডিতগণের ব্যাখ্যা) থেকে পৃথক।[৪৬৪][৪৬৫] আধুনিক সময়ে এর প্রয়োগের পদ্ধতি মুসলিম প্রথাগতবাদী এবং সংস্কারকদের মধ্যে বিরোধের বিষয় হয়ে উঠেছে।[৪০০]
ইসলামী ফিকহের প্রথাগত তত্ত্ব শরিয়ার চারটি উৎসকে স্বীকৃতি দেয়: কুরআন, সুন্নাহ (হাদিস ও সীরাত), কিয়াস (সাদৃশ্যমূলক যুক্তি) এবং ইজমা (বিচারকদের ঐকমত্য)।[৪৬৬] এই চারটি উৎস থেকে শরীয়ার আইন,বিধান ও দাবী নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন আইনি মতবাদ পদ্ধতি বিকশিত হয়েছে, যাকে ইজতিহাদ বলা হয়।[৪৬৭] প্রথাগত ফিকহ আইনি শাখাকে দুটি প্রধান শাখায় পৃথক করে: ইবাদত (আনুষ্ঠানিক উপাসনা) এবং মু'আমালাত (সামাজিক সম্পর্ক), যা একসঙ্গে বিস্তৃত বিষয় নিয়ে গঠিত। ইবাদত শাখাটি নামাজ, রোজা, হজ, এবং যাকাত সহ ইসলামের মৌলিক উপাসনাগুলো নিয়ে আলোচনা করে। মু'আমালাত শাখাটি বিবাহ, সম্পত্তি, চুক্তি, এবং অপরাধ সহ বিস্তৃত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে। শরিয়তের বিধানগুলো জীবনের সকল কাজগুলোকে একটি শ্রেণীতি বিন্যস্ত করে, যাকে আহকাম বলা হয়। আহকামকে আবার পাঁচটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়: বাধ্যতামূলক (ফরজ), সুন্নত (মুস্তাহাব), অনুমোদিত (মুবাহ), ঘৃণ্য (মাকরুহ) এবং নিষিদ্ধ (হারাম)।[৪৬৫][৪৬৭] ইসলামে কাউকে ক্ষমা করাকে অনুপ্রানিত করা হয়েছে[৪৬৮] এবং ইসলামি ফৌজদারী আইনে, অপরাধীর প্রতি তার অপরাধের অনুপাতে শাস্তি প্রদান যখন বৈধ বলে বিবেচিত হয়, তখন অপরাধীকে ক্ষমা করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অপরাধীকে কোনো সুপকার করার মাধ্যমে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাওয়াকে উৎকর্ষের শীর্ষ বলে গণ্য করা হয়।[৪৬৯] শরিয়ার কিছু কিছু ক্ষেত্র পশ্চিমা আইনের ধারণার সঙ্গে মিলে যায়, আবার অন্যগুলো আল্লাহর ইচ্ছার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীবনযাপনের সঙ্গে আরও ব্যাপকভাবে মিলে যায়।[৪৬৫]
ঐতিহাসিকভাবে, শরিয়তের ব্যাখ্যা করতেন স্বাধীন আইনজ্ঞ (মুফতি)। তাদের আইনী মতামত (ফতোয়া) বিবেচনা করতেন শাসক-নিযুক্ত বিচারকরা, যারা কাজী আদালতের প্রধান বিচারক ছিলেন ও মাজালিম আদালতের বিচারকরা, যারা শাসক পরিষদের নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং ইসলামি ফৌজদারি আইনে প্রয়োগ করতেন।[৪৬৫][৪৬৭] আধুনিক যুগে, শরিয়ত-ভিত্তিক ফৌজদারি আইনগুলো ব্যাপকভাবে ইউরোপীয় ধারায় অনুপ্রাণিত আইন দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।[৪৬৫] উসমানীয় সাম্রাজ্যের ১৯শ শতাব্দীর তানজিমাত সংস্কারের ফলে মজল্লা দেওয়ানি ধারা প্রণীত হয়, যা শরিয়াকে সংস্কার করার প্রথম প্রচেষ্টা ছিল।[৩৩৫] যদিও অধিকাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রের সংবিধানে শরিয়তের উল্লেখ রয়েছে। এর শাস্ত্রীয় নিয়মগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত অবস্থা ও পারিবারিক আইনে বহাল রাখা হয়েছে।[৪৬৫] এই আইনগুলো সংস্কার করা আইন পরিষদগুলি তাদের ঐতিহ্যবাহী আইনগত জ্ঞানের ভিত্তি ছাড়াই আধুনিকায়নের চেষ্টা করেছে।[৪৬৫][৪৭০] ২০শ শতাব্দীর শেষের দিকে ইসলামী পুনর্জাগরণ ইসলামী আন্দোলনগুলোকে শরিয়ার সম্পূর্ণ বাস্তবায়নের আহ্বান জানায়।[৪৬৫][৪৭০] শরিয়ত ধর্মনিরপেক্ষ সরকার, মানবাধিকার, চিন্তার স্বাধীনতা এবং নারীর অধিকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা নিয়ে বর্তমানে বিতর্ক চলছে।[৪৭১][৪৭২]
আইনশাস্ত্রীয় পদ্ধতি
ফিকহের একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিকে মাজহাব (আরবি: مذهب) বলা হয়। ফিকহ হলো ইসলামী আইনের শাখা যা ধর্মীয় আইনের উৎসগুলো থেকে ইসলামী আইনের অনুশীলন এবং প্রয়োগকে ব্যাখ্যা করে। মাজহাব হলো এমন পদ্ধতি যা এই ব্যাখ্যা এবং প্রয়োগকে পরিচালনা করে। ইসলামের সুন্নি শাখায় চারটি প্রধান মাজহাব রয়েছে। তারা হলো: হানাফি, মালিকি, শাফিঈ এবং হাম্বলি। ইসলামের শিয়া শাখায় তিনটি প্রধান মাজহাব রয়েছে। তারা হলো: জাফরি, জায়েদি এবং ইসমাইলি। প্রতিটি মাজহাব তার নিজস্ব পদ্ধতিগত ভিত্তির উপর ভিত্তি করে ইসলামী আইন ব্যাখ্যা করে। এই পদ্ধতিগত ভিত্তিকে উসুল আল-ফিকহ বলা হয়। উসুলে ফিকহ হলো ইসলামী আইনের উৎসগুলোর ব্যাখ্যা এবং প্রয়োগের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলোর একটি শ্রেণী। একজন মুসলিম ব্যক্তি একজন ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ বা মাজহাবের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে পারে। এটিকে 'অনুসরণ' বলা হয়। অনুসরণ করার অর্থ হলো একজন ব্যক্তি মাজহাবের পদ্ধতিগত ভিত্তির উপর নির্ভর করে আইন ব্যাখ্যা এবং প্রয়োগ করে। একজন ব্যক্তি যদি অনুসরণ ব্যবহার না করে তবে তাকে 'গায়র মুকাল্লিদ' বলা হয়। গায়র মুকাল্লিদরা তাদের নিজস্ব যুক্তি এবং বিবেচনার উপর ভিত্তি করে ইসলামী আইন ব্যাখ্যা এবং প্রয়োগ করে।[৪৭৩] একজন ব্যক্তি আইনকে স্বাধীন যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারে। এটিকে 'ইজতিহাদ' বলা হয়। ইজতিহাদ হলো ইসলামী আইন ব্যাখ্যা করার আরও একটি পদ্ধতি যা মাজহাবগুলোর পদ্ধতিগত ভিত্তির উপর নির্ভর করে না।[৪৭৪]
ইসলামি সংস্কৃতি
শিল্প
ইসলামী শিল্পসমূহ ইসলামী সংস্কৃতির একটি বড় অংশ গঠন করে।[৪৭৫] ইসলামী শিল্প(সমূহ) শব্দটি একটি অপেক্ষাকৃত নতুন শব্দ। এই শব্দটি প্রথম আধুনিক যুগে ব্যবহৃত হয়েছিল।[৪৭৫] এর আগে, ইসলামী শিল্পকর্মগুলোকে সাধারণত তাদের নির্দিষ্ট ধরন বা শৈলীর দ্বারা উল্লেখ করা হত। তাই, সাধারণভাবে এটিকে একটি আধুনিক ধারণা হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এই শব্দের দ্বারা বোঝানো হয় ইসলামী ভূখণ্ডে উৎপাদিত, ইসলামী সংস্কৃতির ছাপ বহনকারী শিল্পকর্মকে। ইসলামী শিল্পের মধ্যে রয়েছে স্থাপত্য, ভাস্কর্য, চিত্রকলা, অলংকার, কারুশিল্প, এবং অন্যান্য শিল্পকলার বিভিন্ন শাখা। ইসলামী শিল্পসমূহ ইসলামী বিশ্বাস, ঐতিহ্য, এবং সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটায়। এসব শিল্পকর্ম অবশ্যই মুসলমানদের জন্য বা মুসলমানদের দ্বারা তৈরি হওয়ার প্রয়োজন নেই। ইসলামী শিল্প বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধর্মীয় এবং জাতিগত গোষ্ঠীর মানুষের দ্বারা তৈরি হয়েছে।[৪৭৫] ঐতিহাসিক মুসলিম শিল্পীদের দ্বারা আধুনিক যুগে ইসলামী শিল্পকে ধর্মীয় নয় বরং জাতীয় শিল্পের দিক থেকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। কিছু লোক বিশ্বাস করে যে, ইসলামী শিল্পকে তার ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে বোঝা উচিত, অন্যরা বিশ্বাস করে যে, এটিকে তার জাতিগত বা সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে বোঝা উচিত।[৪৭৫] এই ধারণাটি সাধারণত ভুল বলে মনে করা হয়। কেননা, ইসলামিক শিল্প সাধারণত ইসলামী বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটায়।[৪৭৫] শিল্পগুলো অনেক জাতিগত গোষ্ঠীর অবদানের ফলাফল হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। ইসলামী শিল্পের বিকাশে বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর অবদান রয়েছে। সেই সময়গুলোতে ইসলামী ভূখণ্ডে বসবাসকারী নাগরিকদের আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। এই কারণে, আজ অনেক ঐতিহাসিক ইসলামী শিল্পীর বাসস্থান ও অঞ্চল দেখে তাদের জাতিগত উৎপত্তি জানা খুব কঠিন।[৪৭৫]
ইসলাম ধর্মে, আল্লাহকে মানুষের মতো কল্পনা করা নিষিদ্ধ। ইসলামে আল্লাহকে "লা শারিকা লাহু" বলা হয়, যার অর্থ "তার কোনো শরিক নেই"। অর্থাৎ, আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়। তিনি মানুষের মতো নন। তাই তাঁর কোনো রূপ বা ছবি বা মূর্তি বা প্রতিকৃতি তৈরি করাও নিষিদ্ধ (হারাম)। এই কারণে ইসলাম ধর্মে খ্রিস্টধর্মের মতো কোনো ধর্মীয় চিত্রকলার ঐতিহ্য গড়ে ওঠেনি।[৪৭৫] খ্রিস্টধর্মে, যীশুখ্রিস্টকে মানুষের মতো কল্পনা করা হয়। তাই খ্রিস্টধর্মে, যীশুখ্রিস্টের ছবি এবং মূর্তি তৈরি করা হয়। ইসলাম ধর্মে নবী-রাসূলদের দেবত্ব দেওয়া নিষিদ্ধ।[৪৭৫] তাই নবী-রাসূলদের ছবিও ধর্মীয় দিক থেকে অপ্রয়োজনীয়। ইসলামি বিশ্বাসানুসারে, নবী-রাসূলরা হলেন আল্লাহর প্রেরিত মানুষ। তারা মানুষ ছিলেন, দেবতা নয়। তাই তাদের ছবি তৈরি করার কোনো প্রয়োজন নেই। ইসলাম ধর্মে পৌত্তলিকতাকে ঘৃণার চোখে দেখা হয়। পৌত্তলিকতায় মানুষের তৈরি মূর্তি বা ছবিকে পূজা করা হয়। তাই ইসলাম ধর্মে, বিশেষ করে ৭ম শতাব্দীর প্রথম দিকে, শিল্পের প্রতি মুসলমানদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল নেতিবাচক।[৪৭৬] এই সময়ে, ইসলাম ধর্ম খুবই নতুন ছিল। মুসলমানরা পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে লড়াই করছিল। তাই তারা শিল্পকে পৌত্তলিকতার সাথে যুক্ত করত। তবে, কুরআনে শিল্পের বিরুদ্ধে কোনো সরাসরি নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই পরবর্তী শতাব্দীতে, বিশেষ করে নতুন করে জয় করা অঞ্চলে, ইসলামিক ধারণা এবং প্রতীকগুলোর সাথে স্থানীয় শিল্প ঐতিহ্যগুলো সংমিশ্রণের ফলে, বিশেষ করে ইরানের অঞ্চলে, মুহাম্মাদসহ অন্যান্য নবী-রাসূলদের ছবি তৈরি করা হয়েছে।[৪৭৫][৪৭৭] তবে, এই ছবিগুলো ধর্মীয় উদ্দেশ্যে নয়, বরং ঐতিহাসিক উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ, এই ছবিগুলো মুহাম্মাদ এবং অন্যান্য নবী-রাসূলদের জীবন এবং কর্ম সম্পর্কে তথ্য প্রদান করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।[৪৭৫]
পশ্চিমা বিশ্বে, চিত্রকলা এবং ভাস্কর্য, শিল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রূপগুলোর মধ্যে রয়েছে। তবে ইসলামে, এই রূপগুলোকে প্রায়ই শিরক বা ঈশ্বরের প্রতিনিধিত্ব করার মতো বিবেচনা করা হয়। এই কারণে, ইসলামি শিল্পে এই রূপগুলোর পরিবর্তে অন্যান্য রূপগুলোর উপর জোর দেওয়া হয়েছে।[৪৭৫] উদাহরণস্বরূপ, ইসলামি শিল্পে কাঠ, ধাতবশিল্প, আলংকারিক শিল্প, পোড়ামাটির শিল্প এবং কাচের শিল্প খুব জনপ্রিয়। এই শিল্পগুলো প্রায়শই জ্যামিতিক এবং প্রতিসম নকশাগুলো ব্যবহার করে তৈরি করা হয়। এই নকশাগুলো আল্লাহর সৃষ্টির জটিলতা এবং সৌন্দর্যকে প্রতিফলিত করে। ইসলামি শিল্পে ক্যালিগ্রাফিও একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপ। কুরআন এবং অন্যান্য ইসলামিক পাঠ্যগুলো প্রায়শই ক্যালিগ্রাফিতে লেখা হয়।[৪৭৫] ক্যালিগ্রাফি শিল্পীরা কুরআনের শব্দগুলোকে সুন্দর এবং বর্ণময় উপায়ে লিখতে এসব ব্যবহার করে।[৪৭৬] এই লাইনগুলো ইসলামি শিল্পের বৈচিত্র্য এবং সৌন্দর্যের উপর জোর দেয়। ইসলামি শিল্প শুধুমাত্র চিত্রকলা এবং ভাস্কর্য থেকে বিরত নয়, এটি একটি অনন্য শৈলী যা বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।[৪৭৫][৪৭৮]
ইসলামী শিল্পে বাস্তবধর্মী চিত্রকর্মকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তাই শিল্পীরা কল্পনাপ্রসূত শৈলীর মিনিয়েচার শিল্পকে বিকশিত করেছিলেন। মিনিয়েচার শিল্প হলো ছোট ছোট ছবির শিল্প, যা প্রায়ই পাতায় আঁকা হয়। ইসলামী মিনিয়েচার শিল্পে প্রায়ই উদ্ভিদ, প্রাণী এবং মানুষের চিত্রকর্ম দেখা যায়।[৪৭৭] হস্তলিপি (চারুলিপি) ইসলামী শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। হস্তলিপিতে সুন্দর করে লেখা হয় এবং এটি প্রায়ই ধর্মীয় পাঠ্য বা কবিতার জন্য ব্যবহার করা হয়। ইসলামী সমাজে, চিত্রকর্ম নিষিদ্ধ ছিল, তাই হস্তলিপি আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।[৪৭৯] তৈজস শিল্প হলো হস্তলিপির সাথে সম্পর্কিত একটি আলংকারিক শিল্প। তৈজস শিল্পে প্রায়ই সোনা, রূপা এবং অন্যান্য মূল্যবান পাথরের ব্যবহার করা হয়। তৈজস শিল্প প্রায়ই কুরআনের নুসখাগুলোকে সজ্জিত করতে ব্যবহৃত হয়।[৪৭৫][৪৭৬]
ইসলামিক শিল্পের মধ্যে স্থাপত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। ইসলামের শুরুর দিকে, মক্কা এবং মদিনা, যেখানে ইসলামের বিকাশ ঘটেছিল, সেখানকার স্থাপত্য খুব উন্নয়নশীল ছিল না। ইসলামী রাষ্ট্রের শাসন সালতানাতের রূপ নেওয়ার পর স্থাপত্যের বিকাশ ঘটে।[৪৮০] বিশেষ করে, এই সময়ের মধ্যে মসজিদ, মাদ্রাসা, প্রাসাদ, সেতু ও ক্যারাভানসরাই নির্মাণের মাধ্যমে স্থাপত্যের বিকাশ ঘটে। ইসলামের নিজস্ব উপাসনালয় মসজিদের স্থাপত্য, বিশেষ করে ইসলামী স্থাপত্যের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রথম বিজিত ভূখণ্ডে, বিশেষ করে সিরিয়ার মতো জায়গায়, গির্জাগুলোকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছিল।[৪৮০] তবে, পরে নতুন বিজিত ভূখণ্ডে এবং নতুন প্রতিষ্ঠিত শহরগুলোকে মুসলমানরা মসজিদ নির্মাণ শুরু করে। বিভিন্ন জলবায়ু এবং জাতিগত সংস্কৃতির প্রভাবের কারণে মসজিদের স্থাপত্য অঞ্চল থেকে অঞ্চলে ভিন্ন হয়।[৪৭৬] এই ধরনের ধর্মীয় স্থানের স্থাপত্যতে চিত্র বর্ণনায় খুব একটা স্থান দেওয়া হয় না। এর পরিবর্তে, সেখানে আলংকারিক, প্রায়ই জ্যামিতিক ও আরবিস্ক ধরনের সজ্জা রয়েছে। ধর্মীয় নয় এমন স্থানের স্থাপত্যতে চিত্র বর্ণনায় স্থান দেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বিশেষ করে পুরানো হামামে এবং প্রাসাদে এটি দেখা যায়। তবে, ধর্মীয় স্থানের তুলনায় ধর্মীয় নয় এমন স্থানগুলো সময়ের সাথে সাথে ততটা ভালভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি।[৪৮১] ইসলামী স্থাপত্যে জ্যামিতিক সজ্জা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই সজ্জাটি প্রায়ই মসজিদের দেয়ালে, মেঝেতে এবং ছাদে দেখা যায়। জ্যামিতিক সজ্জা প্রায়ই ইসলামিক ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে যুক্ত। উদাহরণস্বরূপ, অনেক মুসলমান বিশ্বাস করেন যে মহাবিশ্ব একটি সুন্দর এবং পরিকল্পিত ব্যবস্থা এবং জ্যামিতিক সজ্জা এই ধারণাকে প্রতিফলিত করে। আরবিস্ক হলো একটি জটিল সজ্জামূলক শৈলী যা আরবি লিপির উপর ভিত্তি করে। আরবিস্ক ইসলামী স্থাপত্যে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।[৪৭৬] আরবিস্ক প্রায়ই মসজিদের দেয়ালে, মেঝেতে এবং ছাদে দেখা যায়। এটি প্রায়ই অন্যান্য সজ্জা উপাদানের সাথে একত্রিত হয়। ইসলামী স্থাপত্যে আরেকটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো এর মিনার। মিনার হলো ইসলামী স্থাপত্যের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য। মিনারগুলো মসজিদের একটি উঁচু কাঠামো যা মুয়াজ্জিনরা নামাজের জন্য আহ্বান জানানোর জন্য ব্যবহার করেন। মিনারগুলো প্রায়ই মসজিদের মিহরাব বা নামাজের দিকে নির্দেশ করে নির্মিত হয়। গম্বুজ, কলাম এবং গেটওয়ে হল ইসলামী স্থাপত্যে ব্যবহৃত অন্যান্য সাধারণ উপাদান। গম্বুজগুলো প্রায়ই মসজিদের ছাদে দেখা যায়। কলামগুলো প্রায়ই মসজিদের ভিতরে এবং বাইরে পাওয়া যায়। গেটওয়েগুলো প্রায়ই মসজিদ এবং অন্যান্য ইসলামী ভবনগুলোতে দেখা যায়। ইসলামী স্থাপত্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির উপর প্রভাব ফেলেছে। ইসলামী স্থাপত্য আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ এবং আমেরিকা জুড়ে পাওয়া যায়। ইসলামী স্থাপত্য অন্যান্য সংস্কৃতির স্থাপত্যের উপরও প্রভাব ফেলেছে। উদাহরণস্বরূপ, ইসলামী স্থাপত্যের জ্যামিতিক সজ্জা এবং আরবিস্ক পশ্চিমা স্থাপত্যে প্রভাব ফেলেছে।[৪৭৫]
ইসলামি শিল্পকলার ক্ষেত্রে বস্ত্র-ভিত্তিক শিল্পগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[৪৭৫][৪৭৬] ইসলামী শিল্পকলায়, বস্ত্র শিল্পের মধ্যে রয়েছে কার্পেট, কাপড়, রুমাল এবং অন্যান্য বস্ত্র পণ্য। এই দ্রব্যগুলো বিভিন্ন ধরনের নকশা এবং কৌশল দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল, যা ইসলামী শিল্পের বৈচিত্র্য এবং সৌন্দর্যের একটি অনন্য উদাহরণ প্রদর্শন করে। বস্ত্র উৎপাদন বাণিজ্যিকভাবেও একটি বড় আয়ের উৎস ছিল।[৪৭৫][৪৭৬] ইসলামী বিশ্বে, বস্ত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানি পণ্য ছিল। বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল ব্যবহার করে বস্ত্র উৎপাদন করা হত, যার মধ্যে ছিল তুলা, রেশম, এবং উল। ইসলামী বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের বস্ত্র পণ্য তৈরি করা হত। এই পণ্যগুলো বিভিন্ন শৈলী এবং কৌশল দ্বারা তৈরি করা হত, যার মধ্যে রয়েছে বুনন, সেলাই এবং খোদাই।[৪৭৬] মধ্যযুগে গির্জায় পোপদের হাড় রাখার জন্য ব্যবহৃত বেশিরভাগ খোদাই করা কাপড়গুলো ইসলামী অঞ্চল থেকে এসেছিল। এই কাপড়গুলো তাদের সুন্দর নকশা এবং উচ্চমানের জন্য বিখ্যাত ছিল। আজও মধ্যযুগীয় ইসলামী কাপড়গুলো তাদের সৌন্দর্য এবং শিল্পমানের জন্য প্রশংসিত হয়।[৪৭৫]
বিজ্ঞান
ইসলাম এবং বিজ্ঞান ইতিহাসে দীর্ঘ সময় ধরে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ছিল। ইসলামের প্রথম দিকের যুগে, মুসলমানরা বিজ্ঞানকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে বিবেচনা করত। তারা বিশ্বাস করত যে জ্ঞান অর্জন করা আল্লাহর ইচ্ছা এবং এটি এক ধরনের ইবাদত। এই কারণে, তারা বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিল।[৪৮২] ইসলামের স্বর্ণযুগে, ইসলামী ভূখণ্ডে অনেক বিজ্ঞানী গড়ে উঠেছিল এবং বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম খুবই বৃহৎ পরিসরে বিস্তার লাভ করেছিল। এই সময়ের মধ্যে, মুসলমান বিজ্ঞানীরা গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিল। তাদের কাজ পশ্চিমা বিশ্বের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। "ইলম" শব্দটি ইসলামী সংস্কৃতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ।[৪৮২][৪৮৩] এই শব্দটি বিজ্ঞানের পাশাপাশি জ্ঞানকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। উভয় অর্থই ইসলামের সাথে একীভূত হয়েছে।[৪৮৪]
মধ্যযুগে ইসলাম ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। এই সময়কালটি সাধারণত ৮ থেকে ১৫ শতক পর্যন্ত বিস্তৃত বলে মনে করা হয়। এই সময়কালে, ইসলামী বিশ্বে অনেক বিজ্ঞানী গড়ে উঠেছিল এবং অনেক বৈজ্ঞানিক কাজ করা হয়েছিল। এই কাজগুলো গণিত, চিকিৎসা বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, রসায়ন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ছিল। এই সময়কালে, ইসলামী বিশ্ব বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি এবং শিল্পের মতো অনেক ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য রাজ্য এবং অঞ্চলগুলোকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এই সাফল্য ইসলামী বিশ্বের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং সাংস্কৃতিক উত্থানের প্রমাণ। এই সময়কালকে ইসলামের স্বর্ণযুগ বলা হয় কারণ এই সময়কালে ইসলামী বিশ্ব বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছিল। এই অগ্রগতিগুলো ইসলামী বিশ্বকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী অঞ্চলে পরিণত করেছিল।
ইসলামী বিশ্বে উদ্ভূত বৈজ্ঞানিক ধারণা, ফলাফল এবং বিজ্ঞানীদের সমষ্টিকে কখনও কখনও "ইসলামী বিজ্ঞান" বলা হয়। এটি একটি বিস্তৃত ধারণা যা বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং সময়কালকে অন্তর্ভুক্ত করে। ইসলামী বিজ্ঞানের মধ্যে রয়েছে গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাবিজ্ঞান, দর্শন, ইতিহাস এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর কাজ। "ইসলামী বিজ্ঞান" এর মাধ্যমে ঠিক কী বোঝানো হয়েছে তা বিতর্কের বিষয়। কিছু লোক বিশ্বাস করে যে এটি শুধুমাত্র মুসলিম বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত গবেষণাকে বোঝায়, অন্যরা বিশ্বাস করে যে এটি আরও ব্যাপকভাবে ইসলামী বিশ্বে পরিচালিত সমস্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে বোঝায়।[৪৮৩] ইসলামী বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং বিজ্ঞানীদেরকে আরব বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং বিজ্ঞানীদের সাথে একই নয় বলে বিবেচনা করা উচিত নয়। এর কারণ হলো যে এই সময়ের বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনাকারী ব্যক্তিরা বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠীর থেকে এসেছিলেন। তাদের সাধারণ বিষয় ছিল জাতিসত্তার চেয়ে ইসলামী রাজ্যে বসবাসকারী মুসলমান হওয়া। উদাহরণস্বরূপ, আবু রায়হান আল-বেরুনি একজন পারস্য বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানী ছিলেন যিনি মধ্যযুগীয় ইসলামী বিশ্বে কাজ করেছিলেন। তিনি গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোল এবং অন্যান্য বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। তিনিকে প্রায়ই "ইসলামী বিজ্ঞানের জনক" বলা হয়। অন্যদিকে, ইবনে সিনা একজন পারস্য বংশোদ্ভূত দার্শনিক, চিকিৎসক এবং বিজ্ঞানী ছিলেন যিনি মধ্যযুগীয় ইসলামী বিশ্বে কাজ করেছিলেন। তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। তাকে প্রায়ই "ইসলামী চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক" বলা হয়।[৪৮৫]
আব্বাসীয় যুগে, হারুনুর রশিদ দ্বারা বাগদাদে "বাইতুল হিকমাহ" (জ্ঞানের ঘর) নামে একটি বিজ্ঞান কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে "ইসলামের স্বর্ণযুগ" শুরু হয়েছিল। "বাইতুল হিকমাহ" ছিল একটি বইয়ের ভাণ্ডার, একটি অনুবাদ কেন্দ্র এবং একটি গবেষণা ইনস্টিটিউট। এই প্রতিষ্ঠানটি ইসলামী বিশ্বে বিজ্ঞান ও শিক্ষার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। কিছু সূত্র অনুসারে এই সময়কাল ১৪ শতক পর্যন্ত, কিছু সূত্র অনুসারে ১৫ শতক, এমনকি ১৬ শতক পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। তবে, বেশিরভাগ ঐতিহাসিকের মতে, এই সময়কাল ১২৫৮ সালে মঙ্গোলদের দ্বারা বাগদাদের পতন এবং আব্বাসীয় খিলাফতের পতনের সাথে শেষ হয়েছিল। এই সময়ে আল-কিন্দি, আল ফারাবী, আল-খারেজমি, জাবির ইবনে হাইয়ান, ইবনে সিনা, ইবনে হাইসাম, আল বিরুনী, ইবনে রুশদ, আল-জাজারী, আল গাজ্জালী, ইবনে খলদুন, ইবনে বতুতা, উলুঘ বেগ এবং আরও অনেক বিখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন। এই যুগে, ভারত থেকে আন্দালুস পর্যন্ত বিস্তৃত ভূখণ্ডে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করা হচ্ছিল। ঔষধ, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, গণিত, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিদ্যা, ইসলামী আইন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা করা হচ্ছিল। এই সময়ে, প্রাচীন গ্রীস সহ অতীত সভ্যতার উৎপাদিত জ্ঞান ও চিন্তাভাবনা, অনুবাদের মাধ্যমে ইসলামী বিশ্বে এবং আন্দালুসের মাধ্যমে ইউরোপে স্থানান্তরিত হয়েছিল। এই অনুবাদগুলো ইউরোপীয় রেনেসাঁর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি প্রদান করেছিল। চীনাদের সাথে যুদ্ধ এবং অন্যান্য সম্পর্ক চলাকালীন আরবরা কাগজ উৎপাদন কৌশল শিখেছিল এবং পাণ্ডুলিপির পরিবর্তে কাগজের ব্যবহারের মাধ্যমে লিখিত রচনাগুলো আরও সহজে ছড়িয়ে পড়েছে। কাগজের আবিষ্কার ইসলামী বিশ্বে শিক্ষা ও জ্ঞান বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। গণিত ক্ষেত্রে, ভারত থেকে প্রাপ্ত শূন্য এবং দশমিক পদ্ধতির আবিষ্কারের ফলে গণিতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং পাটিগণিত সাধারণ মানুষও বুঝতে পারে এমন একটি অবস্থায় এসেছিল এবং তা তারা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করতে পারত। গণিত ও পাটিগণিতের পাশাপাশি ত্রিকোণমিতিও এই সময়ে বিকশিত হয়েছে। এই সময়ে মানমন্দির নির্মিত হয়েছিল; আলোকবিজ্ঞান এবং রসায়ন বিপুলভাবে বিকশিত হয়।
ইসলামী বিশ্বে বিজ্ঞানের উন্নয়নে প্রাচীন গ্রিক দার্শনিকদের রচনাগুলোর অনুবাদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এই রচনাগুলোর মধ্যে ছিল গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসা, দর্শন এবং অন্যান্য বিজ্ঞানের উপর কাজ। ইসলামী বিজ্ঞানীরা এই রচনাগুলো থেকে শিখেছিলেন এবং তাদের উপর ভিত্তি করে নতুন আবিষ্কার এবং উদ্ভাবন করেছিলেন। প্রাচীন গ্রিক দার্শনিকদের রচনাগুলোর অনুবাদ অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে ঘটেছিল।[৪৮৬][৪৮৭][৪৮৮][৪৮৯] এই সময়ে, ইসলামী বিশ্বে শিক্ষা এবং বিজ্ঞানের একটি নতুন যুগ শুরু হয়েছিল। পরবর্তীকালে, পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা ইসলামী বিশ্বে হারিয়ে যাওয়া বা ভুলে যাওয়া অনেক প্রাচীন গ্রিক রচনা আবিষ্কার করেছিলেন। এই রচনাগুলো পশ্চিমা বিজ্ঞানের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ইসলামী বিশ্বে একটি নতুন দর্শন এবং বিজ্ঞান ঐতিহ্য গড়ে উঠেছিল যা প্রাচীন গ্রিক দার্শনিকদের রচনাগুলো থেকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত ছিল। এই ঐতিহ্যটি অন্যান্য কিছু বাহ্যিক কারণের দ্বারাও পুষ্ট ছিল, যেমন ইসলাম ধর্ম এবং ইসলামী সংস্কৃতি। আল ফারাবী,[৪৯০] ইবনে সিনা[৪৯১] এবং ইবনে[৪৯১] রুশদ ছিলেন ইসলামী বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক। তারা প্রাচীন গ্রিক দর্শন এবং বিজ্ঞানের উপর তাদের কাজের জন্য পরিচিত। তাদের কাজ পশ্চিমা বিশ্বে দার্শনিক এবং বৈজ্ঞানিক চিন্তার বিকাশকে প্রভাবিত করেছিল।[৪৮৭]
ইসলামী দর্শনের মধ্যে অনেক ধারার উদ্ভব ঘটে। এই ধারাগুলোকে সাধারণত আস্তিক ও নাস্তিক এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। আস্তিক ধারার চিন্তা ইসলামের মূল বিষয়বস্তুকে স্বীকার করে, যেমন আল্লাহর অস্তিত্ব, নবীগণের প্রামাণ্যতা, পরকাল ইত্যাদি। অন্যদিকে নাস্তিক ধারার চিন্তা ইসলামের মূল বিষয়বস্তুকে অস্বীকার করে। এটিকে বস্তুবাদও বলা হয়। বস্তুবাদী দর্শন হলো এমন একটি দর্শন যা মনে করে যে সবকিছুই বস্তুগত। বস্তুবাদীরা বিশ্বাস করেন যে ঈশ্বর বা আত্মা এই ধরনের বস্তুগত জিনিস নয়, তাই তাদের অস্তিত্ব নেই।[৪৯২] ইসলামের দর্শনের মধ্যে দুইটি প্রধান ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। একটি ধারা হলো ইসলামী মূলনীতিগুলোকে প্রাধান্য দেয় এবং অন্য ধারাটি ইসলাম ও গ্রীক দর্শনের মধ্যে সমন্বয় করার চেষ্টা করে। প্রথম ধারার দার্শনিকরা বিশ্বাস করেন যে পরকাল শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক হবে, মহাবিশ্ব চিরন্তন নয় এবং ঈশ্বর শূন্য থেকে সব সৃষ্টি করেননি। তারা মনে করেন যে ঈশ্বর সর্বদা ছিলেন এবং সবকিছু তাঁর থেকে উদ্ভূত হয়েছে। দ্বিতীয় ধারার দার্শনিকরা বিশ্বাস করেন যে পরকাল শারীরিকও হতে পারে, মহাবিশ্ব চিরন্তন হতে পারে এবং ঈশ্বর শূন্য থেকে সৃষ্টি করতে পারেন। তারা মনে করেন যে গ্রীক দর্শনের কিছু ধারণা ইসলামের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এই ধারণাগুলোকে ইসলামী দর্শনে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। ইসলামি তত্ত্বশাস্ত্র হলো যুক্তিবাদী এবং বহিরাগত প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত আরেকটি ধারা।[৪৯৩] এটি ইসলামি বিশ্বাস এবং ধর্মীয় রীতিনীতির একটি যুক্তিবাদী ব্যাখ্যা। এটি গ্রিক দার্শনিকদের রচনা এবং দৃষ্টিভঙ্গি থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত। সময়ের সাথে সাথে ইসলামি দার্শনিক এবং তত্ত্ববিদরা বিভক্ত হয়ে গেছে এবং প্রায়শই বিতর্কের ক্ষেত্রে বিরোধী দলে অবস্থান নিয়েছে। এই বিভক্তির কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন দর্শনের উপর তাদের জোর, বিভিন্ন ধর্মীয় রীতিনীতিতে তাদের বিশ্বাস এবং বিভিন্ন দর্শনের উপর তাদের ব্যাখ্যা। ইসলামি দার্শনিকরা গ্রিক দার্শনিকদের রচনা এবং দৃষ্টিভঙ্গিগুলোকে ইসলামী ভিত্তিতে বিবেচনা করে এবং বিভিন্ন নীতিগুলো ব্যাখ্যা করেছিলেন। তারা যুক্তি এবং প্রমাণের উপর জোর দিয়েছিলেন। অন্যদিকে, তত্ত্ববিদরা আরও ঐতিহ্যবাহী পথ গ্রহণ করেছিলেন এবং গ্রিক দার্শনিকদের দৃষ্টিভঙ্গিগুলোকে দ্বিতীয় সারিতে রেখেছিলেন। তারা ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং কর্তৃত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন। বিশেষ করে আশ'আরী তত্ত্ববিদরা এই বিষয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন এবং বৈজ্ঞানিক কার্যকারণকে অস্বীকার করেছিলেন। আশ'আরীরা বিশ্বাস করতেন যে, আল্লাহ সবকিছুর কারণ এবং তিনিই সরাসরি বিশ্বের ঘটনাগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা বিশ্বাস করতেন যে, বৈজ্ঞানিক কার্যকারণ শুধুমাত্র একটি অনুমান এবং এটি বাস্তবতার একটি সঠিক প্রতিফলন নয়।[৪৯৩]
ইসলাম ধর্ম বিজ্ঞান চর্চার পক্ষে এবং তা উৎসাহিত করে। কুরআনে বিজ্ঞান সম্পর্কিত অনেক আয়াত রয়েছে যেগুলো মানুষকে চিন্তাভাবনা এবং জিজ্ঞাসা করতে উৎসাহিত করে। এছাড়াও, ইসলামে জ্ঞানকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং বলা হয় যে, জ্ঞান অর্জনের জন্য পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে যেতে হবে। এই কারণে, মধ্যযুগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে ইসলামী বিশ্বে উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞানীরা জন্মগ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন হলেন: হাসান ইবনুল হায়সাম, আবু রায়হান আল-বেরুনি, ইবনুন নাফিস, ইবনে বাজা, ইবনে তুফায়েল, মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আল-খারেজমি, জাবির ইবনে হায়য়ান, আল-বাত্তানী, ওমর খৈয়াম, ইসমাইল আল-জাযারি, ইবনে খালদুন, নাসিরুদ্দীন তুসী, তাক্বী আদ দীন।[৪৯৪][৪৯৫] এই বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। হাসান ইবনুল হায়সাম আলোর প্রতিফলন এবং প্রতিসরণ সম্পর্কে তার কাজের জন্য বিখ্যাত। আবু রায়হান আল-বেরুনি জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোল এবং গণিতে তার কাজের জন্য বিখ্যাত। ইবনুন নাফিস রক্ত সঞ্চালন এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের তত্ত্বের জন্য বিখ্যাত। ইবনে বাজা জ্যোতির্বিদ্যা এবং গণিতে তার কাজের জন্য বিখ্যাত। ইবনে তুফায়েল দার্শনিক গল্পের জন্য বিখ্যাত। মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আল-খারেজমি গণিতে তার কাজের জন্য বিখ্যাত। জাবির ইবনে হায়য়ান রসায়নে তার কাজের জন্য বিখ্যাত। আল বাত্তানী জ্যোতির্বিদ্যা এবং গণিতে তার কাজের জন্য বিখ্যাত। ওমর খৈয়াম জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত এবং কবিতার জন্য বিখ্যাত। ইসমাইল আল-জাযারি যন্ত্র-প্রকৌশলে তার কাজের জন্য বিখ্যাত। ইবনে খালদুন সমাজবিজ্ঞানে তার কাজের জন্য বিখ্যাত। নাসিরুদ্দীন তুসী জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত এবং প্রকৌশলে তার কাজের জন্য বিখ্যাত। তাক্বী আদ দীন জ্যোতির্বিদ্যা এবং গণিতে তার কাজের জন্য বিখ্যাত। এই বিজ্ঞানীদের অনেকের আবিষ্কার এবং কাজ পশ্চিমা বিজ্ঞানের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাঁদের আবিষ্কার এবং কাজ পশ্চিমা বিজ্ঞানীদের অনুপ্রাণিত করেছে। এই মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার এবং কাজ অত্যন্ত ব্যাপক ছিল। তারা দর্শন, গণিত, চিকিৎসা, আইন, জ্যোতির্বিদ্যা এবং সমাজবিজ্ঞান সহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।[৪৯৬][৪৯৭]
সাহিত্য
ইসলামে ভাষা ও সাহিত্য প্রধানত আরবী, ফার্সি, ভারতীয়, কুর্দি, তুর্কি ও বাংলা সাহিত্যের দ্বারা গঠিত এবং বিকশিত হয়েছে।
ইসলামী সাহিত্যে সবচেয়ে বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম হলো আরব্য রজনীর গল্প। এই গল্পগুলো মধ্যযুগে মধ্যপ্রাচ্যে ফ্রেম গল্পের কৌশল ব্যবহার করে রচিত হয়েছিল। গল্পের মূল চরিত্র হল শেরজাদ, যিনি তার স্বামী, রাজা শাহরিয়ারকে তার গল্পের সাথে বিনোদন দিয়ে তার জীবন বাঁচায়। আরব্য রজনীর গল্পগুলো ১০ শতকের দিকে রচিত হওয়া শুরু হয় এবং ১৪ শতক পর্যন্ত তার চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। এই সময়ের মধ্যে, গল্পগুলোতে অনেকগুলো নতুন গল্প যোগ করা হয়েছিল এবং তারা বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। আরব্য রজনীর গল্পগুলো ১৮ শতকে পশ্চিমা সাহিত্যে বেশ প্রভাবশালী হয়ে ওঠে, যখন ফরাসি অনুবাদক অ্যান্টোইন গ্যাল্যান্ড এই গল্পগুলোকে অনুবাদ করেছিলেন। গ্যাল্যান্ডের অনুবাদটি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়েছিল এবং এটি পশ্চিমা সংস্কৃতিতে আরব্য রজনীর গল্পগুলোর প্রচার করতে সাহায্য করেছিল। আরব্য রজনীর গল্পগুলোর অনেকগুলো অনুকরণ লেখা হয়েছে, বিশেষ করে ফ্রান্সে। এই অনুকরণ গল্পগুলোর বিভিন্ন দিককে অন্বেষণ করেছে এবং তারা পশ্চিমা সংস্কৃতিতে আরব্য রজনীর গল্পগুলোর প্রভাবকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।[৪৯৮] আলাদীনের জাদুর প্রদীপ, আলিবাবা ও চল্লিশ চোর এবং নাবিক সিন্দাবাদ আরব্য রজনীর সবচেয়ে বিখ্যাত গল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই গল্পগুলো বিশ্বজুড়ে পাঠকদের কাছে জনপ্রিয়।
আরবি সাহিত্য হলো আরবি ভাষায় রচিত সাহিত্য, যার মধ্যে গদ্য এবং কবিতা উভয়ই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আরবি সাহিত্যের মধ্যে রয়েছে উপন্যাস, গল্প, কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ ইত্যাদি। আরবি ভাষায় সাহিত্যের জন্য ব্যবহৃত শব্দটি হলো "আদব", যা আরবি ভাষার "আদব" থেকে এসেছে। "আদব" শব্দের অর্থ নৈতিকতা, সংস্কৃতি এবং সমৃদ্ধি। তাই, আরবি সাহিত্যকে "আদব" বলা হয় কারণ এটি আরব সংস্কৃতির এবং আরবি ভাষার সমৃদ্ধির একটি প্রতিফলন। আরবি সাহিত্য পঞ্চম শতাব্দীতে উদ্ভূত হয়েছিল। এর আগে, আরবি ভাষা লিখিত ভাষা ছিল না। পঞ্চম শতাব্দীতে, আরবরা আরবি ভাষাকে একটি লিখিত ভাষায় রূপান্তরিত করে এবং আরবি সাহিত্যের বিকাশ শুরু করে। কুরআন হলো আরবি ভাষা ও সাহিত্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রচনা। এটি আরবি ভাষা সাহিত্যের একটি অসামান্য উদাহরণ এবং এটি আরব সংস্কৃতি ও ধর্মের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। কুরআন আরবি সাহিত্যের বিকাশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুপ্রেরণা ছিল। আরবি সাহিত্য ইসলামের স্বর্ণযুগে বিকাশ লাভ করেছিল। এই সময়ে, আরব কবি এবং লেখকরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ রচনা করেছিলেন, যা আজও আরবি সাহিত্যের অতুলনীয় সম্পদ। আরবি সাহিত্য আজও জীবিত রয়েছে এবং আরব বিশ্বের পাশাপাশি বিশ্বের অন্যান্য অংশের কবি ও গদ্য লেখকদের দ্বারা অনুশীলন করা হয়।
ফার্সি সাহিত্য হলো ফার্সি ভাষায় রচিত মৌখিক রচনা এবং লিখিত পাঠ্যগুলোর সমষ্টি। এটি একটি বিস্তৃত ধারণা যা কবিতা, গদ্য, নাটক, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম এবং বিজ্ঞানের মতো বিভিন্ন ধরণের সাহিত্যিক কাজকে অন্তর্ভুক্ত করে। ফার্সি সাহিত্যের ইতিহাস ২৫০০ বছরেরও বেশি পুরনো।[৪৯৯][৫০০][৫০১] ফারসি ভাষার উৎপত্তি প্রাচীন ইরানে, যা বর্তমানের ইরান, ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, ককেসাস এবং তুরস্ক নিয়ে গঠিত। এছাড়াও, ফারসি ভাষা মধ্য এশিয়ার কিছু অঞ্চলে এবং দক্ষিণ এশিয়ায়, যেখানে এটি ঐতিহাসিকভাবে প্রধান বা সরকারী ভাষা ছিল, সেখানে ছড়িয়ে পড়েছে। জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি ছিলেন একজন বিখ্যাত ফারসি কবি যিনি ১৩ শতকে বাল্খ (বর্তমান আফগানিস্তান) এ জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি তার রচনাগুলো ফারসি ভাষায় লিখেছিলেন, যা তিনি মধ্য এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। গজনভি সাম্রাজ্যের উত্থান, যা মধ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বিস্তীর্ণ অঞ্চল জয় করেছিল এবং দরবারের ভাষা হিসাবে ফারসি ভাষাকে গ্রহণ করেছিল। অন্যদিকে, বৃহৎ সেলজুক সাম্রাজ্যের উত্থান, যা যদিও তুর্কি উপজাতি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তবুও তারা তাদের মধ্যে তুর্কি-ফারসি ঐতিহ্যকে ধারণ করেছিল এবং সময়ের সাথে সাথে ইরানি হয়ে উঠেছিল। কিছু লোক মনে করেন যে, অন্যান্য ভাষা থেকে ফার্সিতে অনুবাদ করা কাজগুলোও ফারসি সাহিত্যের অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়। এই কারণে, সমস্ত ফারসি সাহিত্য ফারসি ভাষায় লেখা হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, খোরাসনের শাসক নাসির খসরু (৯৭৬-১০১০) গ্রিক দার্শনিক প্লেটোর "রিপাবলিক" গ্রন্থটি ফারসি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন। এই অনুবাদটি ফারসি সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে বিবেচিত হয়, যদিও এটি ফারসি ভাষায় লেখা হয়নি। সমস্ত ফারসি ভাষায় লেখা কাজগুলো ফারসি বা ইরানি লেখকদের দ্বারা লেখা হয়নি। কারণ, তুর্কি, ককেশীয় এবং ভারতীয় কবি এবং লেখকরাও ফারসি সংস্কৃতির পরিবেশে ফারসি ভাষা ব্যবহার করেছেন।[৫০২] উদাহরণস্বরূপ, তুর্কি কবি ওমর খৈয়াম (১০৪৮-১১৩১) তার বিখ্যাত রুবাইয়াৎ কাব্য ফারসি ভাষায় লিখেছিলেন। তিনি একজন তুর্কি ছিলেন না, তবে তিনি ফারসি সংস্কৃতির মধ্যে বড় হয়েছেন এবং ফারসি ভাষায় দক্ষ ছিলেন। ফেরদৌসি, শেখ সাদি, হাফেজ শিরাজি, ফরিদ উদ্দিন আত্তার, নিজামী গঞ্জেভী, জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি এবং ওমর খৈয়াম সহ ফারসি কবিরা পশ্চিমা সাহিত্যেও পরিচিত এবং অনেক দেশের সাহিত্যকে প্রভাবিত করেছেন। এই কবিরা তাদের কাব্যিক প্রতিভা এবং দর্শনের জন্য বিখ্যাত। তাদের কাজগুলো বিশ্বজুড়ে পাঠকদের অনুপ্রাণিত করেছে।
কুর্দি সাহিত্য হলো কুর্দি ভাষায় রচিত মৌখিক এবং লিখিত সাহিত্যকর্মের সমষ্টি। কুর্দি ভাষা একটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা যা মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমে বসবাসকারী কুর্দি জনগোষ্ঠী দ্বারা কথিত হয়। কুর্দি সাহিত্যের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে, যা কয়েক শতাব্দী ধরে রয়েছে। ইসলামের আগ পর্যন্ত, কুর্দিরা একটি মৌখিক সংস্কৃতি ছিল। তাদের কোনো লিখিত সাহিত্য ছিল না। তাই, ইসলামপূর্ব কুর্দি সাহিত্যের কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ বা তথ্য নেই। কুর্দি কাহিনীর একটি বড় অংশ মৌখিকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এই মৌখিক সাহিত্য আজও চলমান। কুর্দি কাহিনীর একটি বড় অংশ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে মুখে মুখে বলা হয়েছে। এই কাহিনীগুলো কুর্দি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তারা কুর্দিদের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। ২০ শতকের গোড়ার দিক পর্যন্ত লিখিত সাহিত্য ছিল কবিতা আকারে। গদ্যের বিকাশ মূলত রাজনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের কারণে হয়েছে। এই উন্নয়নগুলো কুর্দিদের মধ্যে শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে, যা গদ্যের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল। কুর্দি সাহিত্য ২০ শতকে দশক ধরে সীমাবদ্ধতা এবং নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে। কুর্দিরা একটি বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী এবং তাদের উপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকার দ্বারা নিপীড়ন চালানো হয়েছে। এই নিপীড়নগুলো কুর্দি সাহিত্যের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করেছে। পরিচিত প্রথম কুর্দি কবিরা হলেন আবদুসসামেদ বাবেক, আলী হারিরী, মেলায়ে বাতে, মোল্লা আহমেদ-ই জিজারী, ফকি তেইরান এবং আহমেদ-ই হানি। এই কবিরা ১০ম থেকে ১৭শ শতাব্দীর মধ্যে বাস করতেন এবং কুর্দি ভাষার বিভিন্ন উপভাষায় লিখেছেন।[৫০৩] বিশেষ করে আহমেদ-ই হানি রচিত মেম ও জিন হলো সবচেয়ে পরিচিত রোমান্টিক কুর্দি রচনা। মেম ও জিন হলো একটি মহাকাব্য যা দুটি প্রেমিকের গল্প তুলে ধরে। এই মহাকাব্যটি কুর্দি সংস্কৃতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে এবং এটি কুর্দি ভাষার একটি জনপ্রিয় রচনা। সবচেয়ে সুপরিচিত এবং ব্যাপকভাবে পরিচিত ঐতিহ্য হলো মেমে আলানের গান এবং মহাকাব্যিক কবিতা এবং সিয়বানদ এবং খেচে ঐতিহ্য। মেমে আলা একজন বিখ্যাত কুর্দি যোদ্ধা এবং তার গান ও মহাকাব্যিক কবিতা কুর্দি সংস্কৃতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। সিয়বানদ এবং খেচে হলো একটি দুঃখজনক প্রেমের গল্প যা কুর্দি সংস্কৃতিতে একটি জনপ্রিয় থিম।
পারস্য-ইসলামী সংস্কৃতি ভারতীয় সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করতে শুরু করে যখন ভারত গজনভি সাম্রাজ্য দ্বারা দখল করা হয়েছিল। গজনভিরা ছিল একটি পারস্য-তুর্কি সাম্রাজ্য যা দশম শতাব্দীতে ভারতের উত্তর-পশ্চিম অংশে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। তাদের শাসনকালে, তারা পারস্য ভাষা, সংস্কৃতি এবং ধর্মকে ভারতীয় সমাজে প্রবর্তন করেছিল। ফারসি ভাষা বেশিরভাগ ভারতীয় সাম্রাজ্যের সরকারী ভাষা হয়ে ওঠে। গজনভি সাম্রাজ্য, দিল্লি সালতানাত, বাংলা সালতানাত, দক্ষিণাত্য সালতানাত এবং মুঘল সাম্রাজ্য সহ অনেক ভারতীয় সাম্রাজ্য ফারসি ভাষাকে তাদের সরকারী ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছিল। ফারসি ভাষার এই ব্যবহার ভারতীয় সংস্কৃতিতে একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। ফারসি শিল্প কর্মগুলো, যেমন সাহিত্য এবং গজলগুলো, উর্দু এবং অন্যান্য ভারতীয় সাহিত্যকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছিল।
বাংলা মুসলমি সাহিত্য হলো বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্য যা বাঙালি মুসলিমদের দ্বারা রচিত বা তাদের জীবন ও সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করে। এই সাহিত্যের ইতিহাস মধ্যযুগে শুরু হয় এবং আধুনিক যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে ইসলাম ধর্মের প্রভাব ছিল সবচেয়ে বেশি।[৫০৪] তুর্কি মুসলিম সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজি কর্তৃক বঙ্গদেশে মুসলিম রাজত্ব কায়েমের ফলে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের নবজন্ম ঘটে। ১৩৫২ খ্রিস্টাব্দে সুলতান শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্ঠা করেন। এই সময়কালে বাংলা মুসলিম সাহিত্যের সর্বাধিক বিস্তার ঘটে। ওই সময়কার মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রাচীনতম হচ্ছেন- শাহ মুহম্মদ সগীর। তার কাব্য ইউসুফ-জুলেখা' সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালে (১৩৮৯-১৪১০) রচিত বলে মনে করা হয়। এটি নবী ইউসুফ এর সংক্ষিপ্ত কাহিনী। কবি জৈনুদ্দীন রসুলবিজয় কাব্য রচনা করেছিলেন। তিনি গৌড় সুলতান ইউসুফ শাহের (১৪৭৪-৮১) সভাকবি ছিলেন। মুজাম্মিল ১৫শ' শতকের মধ্যবর্তী সময়ের কবি ছিলেন। তিনি প্রধানত তিনটি উল্লেখযোগ্য কাব্য রচনা করেন, নীতিশাস্ত্রবার্তা, সায়াৎনামা' ও 'খঞ্জনচরিত'। এর গল্পাংশ ফারসি থেকে নেওয়া। দোনাগাজীর বিখ্যাত কাব্য সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল'। তিনি সম্ভবত ১৬শ' শতকের মধ্যভাগের বাঙালি মুসলিম কবি। শেখ ফয়জুল্লাহ মধ্যযুগের একজন বিশিষ্ট বাঙালি মুসলিম সাহিত্যিক। তিনি পাঁচটি গ্রন্থ রচনা করেন, গোরক্ষবিজয়', 'গাজীবিজয়', 'সত্যপীর (১৫৭৫)', জয়নবের চৌতিশা' এবং রাগনামা'। দৌলত উজীর বাহরাম খাঁর রচনা করেন লায়লী-মজনু'; এটি ফারসি কবি জামীর 'লাইলী-মজনু' কাব্যের ভাবানুবাদ। এ ছাড়া মধ্যযুগে অন্যান্য মুসলমান কবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- সৈয়দ সুলতান (আনু. ১৫৫০-১৬৪৮, কাব্য: নবীবংশ, শব-ই-মিরাজ, রসুলবিজয়, ওফাৎ-ই-রসুল, জয়কুম রাজার লড়াই, ইবলিসনামা, জ্ঞানচৌতিশা, জ্ঞানপ্রদীপ, মারফতি গান, পদাবলি), নসরুল্লাহ্ খাঁ (আনু. ১৫৬০-১৬২৫, কাব্য: জঙ্গনামা, মুসার সওয়াল, শরীয়ৎনাম), শাহ মুহম্মদ সগীর, সৈয়দ হামজা, শাহ গরীবুল্লাহ, শেখ চান্দ, সৈয়দ আলাওল, নওয়াজিস খান, সৈয়দ মোহাম্মদ আকবর, আলি রজা, দৌলত কাজী, মুহম্মদ কবির, দোনাগাজী চৌধুরী, দৌলত উজির বাহরাম খান প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।[৫০৪] বাঙালি মুসলমানদের সাহিত্যচর্চা অনেক আগে থেকে শুরু হলেও মূলত ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি এবং বিংশ শতকের শুরুতে মুসলমানদের সাহিত্য সাধনার নতুন ধারার সূচনা হয়। আধুনিক যুগে শেখ আবদুর রহিম হজরত মহাম্মদ (সা.)'র জীবনচরিত ও ধর্মনীতি (১৮৮৭) রচনা করেন।[৫০৪] গোলাম মোস্তফা রচিত বিশ্বনবী (১৯৪২) মুহাম্মাদ এর শ্রেষ্ঠ জীবনী গ্রন্থগুলোর অন্যতম। এ সময়ে মুসলিম সাহিত্যিকদের মধ্যে যারা অনবদ্য অবদান রেখেছেন, তাদের আরও কয়েকজন হলেন- দীন মোহাম্মদ, এয়াকুব আলী চৌধুরী (১৮৮৮-১৯৪০), কাজী আকরম হোসেন (১৮৯৬-১৯৬৩), গোলাম মোস্তফা (১৮৯৭-১৯৬৪ খ্রি.), শেখ ফজলল করিম (১৮৮২-১৯৩৬ খ্রি.), আব্বাসউদ্দীন (১৯০১-১৯৫৯ খ্রি.), সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী (১৮৮০-১৯৩১ খ্রি.), কবি কায়কোবাদ (১৮৫৭-১৯৫১ খ্রি.), মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ (১৮৬১-১৯০৭ খ্রি.), মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী (১৮৭৫-১৯৫০ খ্রি.) ও মোহাম্মদ আকরম খাঁ (১৮৬৮-১৯৬৯ খ্রি.), মোহাম্মদ আকরাম খাঁ, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ (১৮৮৫-১৯৬৯), এস ওয়াজেদ আলী (১৮৯০-১৯৫১), কাজী মোতাহার হোসেন (১৮৯৭-১৯৮১), আবুল মনসুর আহমদ (১৮৯৮-১৯৭৯), আবুল ফজল (১৯০৩-১৯৮৩), মোতাহের হোসেন চৌধুরী (১৯০৩-১৯৫৬), আবদুল কাদির (১৯০৬-১৯৮৪), কবি বন্দে আলী মিয়া (১৯০৭-১৯৭৫) ও বেগম সুফিয়া কামাল (১৯১১-১৯৯৯) প্রমুখ।[৫০৪] বাংলা ভাষায় সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ বাংলা তাফসির রচনা করেন শামসুল হক ফরিদপুরী (১৮৯৬-১৯৬৯)। বাংলা মুসলিম সাহিত্যের ইসলামি কবিতা ও গানের (গজল) ক্ষেত্রে সবচেয়ে অগ্রগামি ও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। যিনি কিনা বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে বিবেচিত। নজরুল প্রচুর ইসলামী ভাবধারার কবিতা ও গান রচনা করেছেন। তার হাত ধরেই বাংলায় ইসলামী গান জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তাঁর রচিত ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ বাঙালি মুসলিম সমাজে এক প্রকার আলোড়ন এবং নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছিল। এই গানটি ছাড়া বর্তমানে বাঙালি মুসলিমের ঈদ এক প্রকার অসম্পূর্ণই থেকে যায়।[৫০৫] নজরুলের ইতিহাস সৃষ্টিকারী আত্মচারিত্রিক কালজয়ী কবিতা‘বিদ্রোহী’'তেও রয়েছে ইসলামী ভাবধারার প্রভাব। নবী মুহাম্মাদ এর এর শানে তিনি অসংখ্য নাত রচনা করেছেন। যার মধ্যে ‘ত্রিভূবনের প্রিয় মুহাম্মাদ’, ‘তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে’, ‘আমি যদি আরব হতাম’, ‘তৌহিদেরই মুর্শিদ আমার’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও তিনি একের পর এক কালজয়ী ইসলামি কবিতা ও গজল রচনার মাধ্যমে বাংলা মুসলিম সাহিত্যকে এক অনন্য পর্যায়ে নিয়ে যান।[৫০৬] বাঙালি মুসলিম কবি-সাহিত্যিকদের রচিত সাহিত্যে সমাজ সংস্কারের চিন্তা-চেতনা, জাতীয় ঐতিহ্যের ধ্যান-ধারণা, আত্মচেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রতিফলিত হয়।
১১ শতকে, তুর্কিরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর, তুর্কি ভাষায় সাহিত্য রচনা শুরু হয়েছিল। এই সাহিত্যটি ইসলামি বিষয়বস্তুতে ভিত্তি করে ছিল এবং ফার্সি, আরবি এবং তুর্কি ভাষায় রচিত হয়েছিল। ১১ শতকে, সেলজুকদের আগমনের সাথে সাথে ফারসি ভাষার প্রয়োগ এবং ব্যবহার আনাতোলিয়ার অঞ্চলে শক্তিশালীভাবে পুনরুজ্জীবিত হয়েছিল। সেলজুকরা ফারসি ভাষা, শিল্প এবং সাহিত্যের প্রবক্তা ছিলেন এবং তারা ফারসি ভাষাকে তাদের সরকারি ভাষা হিসাবে গ্রহণ করেছিল। এই ঐতিহ্যটি উসমানীয় সাম্রাজ্য দ্বারাও অনুসরণ করা হয়েছিল। উসমানীয়দেরকে সেলজুকদের উত্তরসূরি হিসাবে দেখা হতো এবং তারা সেলজুকদের ঐতিহ্যকে অনুসরণ করেছিল। উসমানীয় সাম্রাজ্য ফারসি ভাষাকে তাদের সাহিত্য ভাষা হিসাবে ব্যবহার করেছিল এবং ফারসি ভাষায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য রচনা করেছিল। ফারসি ভাষা উসমানীয় সাম্রাজ্যের সাহিত্য ভাষা ছিল। উসমানীয় সাম্রাজ্যের লেখকরা ফারসি ভাষায় সাহিত্য রচনা করেছিলেন এবং ফারসি ভাষা আনাতোলিয়ার ইসলামি সাহিত্যের বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিল।[৫০৭] তুর্কি ভাষা ও সাহিত্যের প্রথম রচনাগুলো ১৩ শতকের শেষ এবং ১৪ শতকের শুরুর দিকে তুরস্কের মাটিতে রচিত হয়েছিল। এই রচনাগুলো ছিল মৌখিক এবং লিখিত উভয়ই।[৫০৮] ১৯ শতক পর্যন্ত তুর্কি সাহিত্য ফারসি-ইসলামি ঐতিহ্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিকাশ লাভ করেছিল। এই সময়কালে, তুর্কি সাহিত্য দুটি প্রধান ধারায় বিভক্ত ছিল: লোক সাহিত্য এবং দেওয়ানি সাহিত্য। লোক সাহিত্য ছিল মৌখিক সাহিত্য যা জনসাধারণের মধ্যে প্রচলিত ছিল। এটি গল্প, কবিতা, গান এবং লোককাহিনী সহ বিভিন্ন রূপের সমষ্টি ছিল।[৫০৯] দেওয়ানি সাহিত্য ছিল উচ্চতর সাহিত্য যা উসমানীয় দরবারের চারপাশে বিকাশ লাভ করেছিল। এটি ফারসি সাহিত্যের প্রভাবের অধীনে ছিল এবং কবিতা, গদ্য ও নাটক সহ বিভিন্ন রূপে বিভক্ত ছিল। উসমানীয় দরবারের চারপাশে, দেওয়ানী সাহিত্য প্রাধান্য পেয়েছিল। এর কারণ ছিল ফারসি সাহিত্যের প্রভাব, যা উসমানীয় দরবারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। জনসাধারণের মধ্যে মৌখিক ঐতিহ্য দীর্ঘ সময় ধরে অব্যাহত ছিল। এর কারণ ছিল লোক সাহিত্যের জনপ্রিয়তা, যা জনসাধারণের মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ ছিল। ১৯ শতকে, তানযিমাত যুগের সাথে সাথে তুর্কি সাহিত্যে পূর্বের প্রভাব হ্রাস পেতে শুরু করে। এর কারণ ছিল পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব, যা তানযিমাত যুগের লেখকদের উপর একটি শক্তিশালী প্রভাব ফেলেছিল।[৫০৯] এই সময়ে, তুর্কি সাহিত্যিকরা বিশেষ করে ফরাসি সাহিত্য থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। এর কারণ ছিল ফরাসি সাহিত্যের সাফল্য এবং এর আধুনিকতার ধারণা।
থিয়েটার, সিনেমা ও সঙ্গীত
ইসলাম থিয়েটারকে অনুমতি দেয়। যদিও ইসলামে থিয়েটারকে অনুমতি দেওয়া হয়, তবে এটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। থিয়েটার প্রযোজনার ক্ষেত্রে, আল্লাহ, মুহাম্মাদ, অন্যান্য নবী-রাসূল, সাহাবী এবং ফেরেশতাদের চিত্রায়ন করা নিষিদ্ধ। এছাড়াও, থিয়েটার প্রযোজনাগুলো ইসলামী মূল্যবোধ এবং শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।[৫১০]
মধ্যযুগীয় ইসলামী বিশ্বে পুতুল নাটক এবং তাজিয়া নামে পরিচিত জীবন্ত নাটক ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় নাট্য রূপ। পুতুল নাটকগুলো সাধারণত ইসলামপূর্ব কিংবদন্তি বা ইসলামী মহাকাব্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। তাজিয়াগুলো ছিল ধর্মীয় নাটক যা আলী এবং তার পরিবারের শহীদ হওয়ার ইতিহাসকে স্মরণ করে। শিয়া ইসলামী নাটকগুলো বিশেষভাবে হাসান এবং হোসাইনের শহীদ হওয়ার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। হাসান এবং হোসাইন ছিলেন মুহাম্মাদ-এর নাতি এবং আলী-এর পুত্র। তারা তাদের চাচা মুয়াবিয়া-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরাজিত এবং নিহত হন। শিয়া মুসলমানরা তাদের শহীদদের জন্য গভীর শ্রদ্ধাশীল এবং তাজিয়াগুলো তাদের স্মরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ইন্দোনেশিয়ার ওয়ায়াং হলো পুতুল নাটকের সবচেয়ে প্রাচীন এবং স্থায়ী রূপগুলোর মধ্যে একটি। ওয়ায়াং সাধারণত কাঠের তৈরি হয় এবং একটি সুতির পর্দার পিছনে নিয়ন্ত্রিত হয়। ওয়ায়াং মূলত ইসলামপূর্ব কিংবদন্তি ঘটনাকে মঞ্চস্থ করে, তবে এটি আমির হামজা-এর মতো ইসলামী মহাকাব্যগুলোর জন্যও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। আমির হামজা ছিলেন মুহাম্মাদ-এর চাচাতো ভাই এবং একজন বীরযোদ্ধা। তার জীবন এবং কাজগুলো ওয়াং নাটকগুলোতে প্রায়শই চিত্রিত করা হয়। তুর্কি ছায়া নাটক কারাগোজ এবং হাজিভাত, অঞ্চলে পুতুল নাটককে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। এই নাটকগুলোতে, কারাগোজ এবং হাজিভাত নামক দুটি চরিত্র একটি হাস্যরসাত্মক এবং সমালোচনামূলক উপায়ে সমাজের বিভিন্ন দিকগুলোকে চিত্রিত করে।[৫১১]
ইসলাম একটি বিশ্বব্যাপী ধর্ম যা বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ভাষার লোকেদের একত্রিত করে। এই বৈচিত্র্য ইসলামী সংগীতেও প্রতিফলিত হয়। বিভিন্ন অঞ্চল এবং সংস্কৃতির মুসলমানরা তাদের নিজস্ব অনন্য বাদ্যযন্ত্রের ঐতিহ্য তৈরি করেছে। সেলজুক তুর্কিরা ইসলামী সংগীতের বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তারা আনাতোলিয়ায় আসার পর, তারা তাদের নিজস্ব বাদ্যযন্ত্রের ঐতিহ্যকে স্থানীয় ঐতিহ্যগুলোর সাথে মিশিয়ে দিয়েছিল। এই মিশ্রণ থেকে নতুন বাদ্যযন্ত্রের শৈলীর উদ্ভব হয়েছিল যা সারা মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং মালয় দ্বীপপুঞ্জে বিশাল মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে। এই অঞ্চলগুলোতে নিজস্ব অনন্য বাদ্যযন্ত্রের ঐতিহ্য রয়েছে যা ইসলামী সংগীতের উপর প্রভাব ফেলেছে। তবে, এই অঞ্চলগুলোর বাদ্যযন্ত্রের ঐতিহ্যগুলো আনাতোলিয়া বা মধ্যপ্রাচ্যের মতো কেন্দ্র থেকে প্রভাবিত হয়নি। সুফিরা ইসলামের একটি আধ্যাত্মিক শাখা যা সঙ্গীতকে আধ্যাত্মিক অনুশীলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে দেখে। সুফিরা তাদের সংগীতকে ব্যবহার করে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের (দিদার) অনুভূতি অর্জনের জন্য। সুফিদের সংগীত সারা মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এটি ইসলামী সংগীতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।
সমাজ
ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব
ইসলাম ধর্মে পুরোহিতের মতো কোনো ধর্মীয় নেতা নেই, যারা আল্লাহ ও মানুষের মধ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করেন। ইসলামী ধর্মীয় নেতৃত্বের পদবী বোঝাতে ইমাম (إمام) শব্দটি ব্যবহার করা হয়, যা প্রায়শই ইসলামী ইবাদত পরিচালনা করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।[৫১২] ধর্মীয় ব্যাখ্যা তত্ত্বাবধান করেন আলেম (علماء), যা ইসলামী শিক্ষায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুসলিম পণ্ডিতদের দ্বারা গঠিত গোষ্ঠীকে বোঝাতে ব্যবহৃত একটি শব্দ। হাদিসের পণ্ডিতকে মুহাদ্দিস বলা হয়, আইনশাস্ত্রের পণ্ডিতকে ফকীহ (فقيه) বলা হয়, যিনি আইনগত মতামত বা ফতোয়া জারি করার যোগ্য তাকে মুফতি বলা হয় এবং কাজী হলেন একজন ইসলামী বিচারক। পণ্ডিতদের দেওয়া সম্মানসূচক উপাধির মধ্যে রয়েছে শেখ, মৌলভী এবং মওলানা। কিছু মুসলিমরা অলৌকিক ঘটনা (كرامات, karāmāt) এর সাথে সম্পর্কিত সাধকদেরও সম্মান করেন।[৫১৩]
শাসনকার্য
ইসলামী অর্থনৈতিক আইনশাস্ত্রে ধনসম্পদ জমা করে রাখা এবং একচেটিয়া ব্যবসায়কে ঘৃণার চোখে দেখা হয়।[৫১৪] শরিয়াহ মেনে চলার প্রচেষ্টায় ইসলামী ব্যাংকিং এর উদ্ভব হয়েছে। ইসলাম সুদকে নিষেধ করে, যা সাধারণত ব্যবসায়ে অধিক লাভ করাকে বোঝায়।[৫১৫] পরিবর্তে, ইসলামী ব্যাংকগুলো ঋণগ্রহীতার সাথে অংশীদারিত্বে যায় এবং উভয়ই লাভ ও ক্ষতি ভাগ করে নেয়। অন্য আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো অনিশ্চয়তা এড়ানো, যা জুয়া হিসাবে বিবেচিত হয়।[৫১৬] ৭২০ সালের আশেপাশে ব্যাপকভাবে ব্যক্তিগত কাজে পরিণত হওয়ার আগে পর্যন্ত রাশিদুন ও উমাইয়া খিলাফত বাইতুল-মাল নামে পরিচিত রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে দান-সদকার বন্টনে জড়িত ছিল। প্রথম খলিফা আবু বকর যাকাত বন্টন করেন, যা নির্ধারিত ন্যূনতম আয়ের প্রথম দিকের একটি উদাহরণ, যেখানে প্রতিটি নাগরিক বার্ষিক ১০ থেকে ২০ দিরহাম পেত।[৫১৭] দ্বিতীয় খলিফা উমরের শাসনামলে শিশু সহায়তা চালু করা হয় এবং বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা ভাতা পেতে সক্ষম হয়,[৫১৮][৫১৯] যখন উমাইয়া খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজ প্রতিটি অন্ধ ব্যক্তির জন্য এবং প্রতি দুইজন দীর্ঘদিন অসুস্থ ব্যক্তির জন্য একজন করে চাকর নিয়োগ করেন।[৫২০]
জিহাদ অর্থ "আল্লাহর পথে সচেষ্ট বা সংগ্রাম করা" এবং এর সর্বব্যাপী অর্থ হলো "অসন্তোষের বিষয়টির সাথে লড়াই করতে নিজের সর্বোচ্চ শক্তি, প্রচেষ্টা, উদ্যোগ বা দক্ষতা প্রয়োগ করা"।[৫২১] শিয়া মুসলমানরা বিশেষভাবে আধ্যাত্মিক আত্ম-পূর্ণতা অর্জনের জন্য "মহান জিহাদ" এর উপর জোর দেন[৫২২][৫২৩][৫২৪] এবং "ছোট জিহাদ" কে যুদ্ধ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।[৫২৫][৫২৬] কোনো বিশেষণ ছাড়া ব্যবহার করা হলে, জিহাদকে প্রায়ই সামরিক অর্থে বর্ণনা করা হয়।[৫২১][৫২২] জিহাদ হলো ইসলামী আইনে অনুমোদিত যুদ্ধের একমাত্র রূপ এবং এটি অবৈধ কাজ, সন্ত্রাসী, অপরাধী গোষ্ঠী, বিদ্রোহী, ধর্মত্যাগী এবং মুসলমানদের নিপীড়নকারী নেতা বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঘোষণা করা যেতে পারে।[৫২৫][৫২৬] বর্তমানে বেশিরভাগ মুসলিমই জিহাদকে কেবল প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধের এক রূপ হিসাবে ব্যাখ্যা করেন।[৫২৭] জিহাদ কেবলমাত্র কর্তৃপক্ষের সাথে জড়িতদের জন্যই ব্যক্তিগত কর্তব্য হয়ে ওঠে। বাকি জনগণের জন্য, এটি শুধুমাত্র সাধারণ সংগঠনের ক্ষেত্রে ঘটে।[৫২৬] অধিকাংশ দ্বাদশবাদী শিয়া মুসলমান বিশ্বাস করেন যে, আক্রমণাত্মক জিহাদ কেবল মুসলিম সম্প্রদায়ের ঐশ্বরিকভাবে নিযুক্ত নেতা ঘোষণা করতে পারেন এবং সেইজন্য মুহম্মদ আল-মাহদীর আত্মগোপনের পর ৮৬৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে এটিকে স্থগিত করা হয়েছে।[৫২৮][৫২৯]
দৈনন্দিন ও পারিবারিক জীবন
ইসলামী আদর্শে প্রতিটি দৈনন্দিন আমলই আদবের অন্তর্ভুক্ত, যেমন- শূকরের মাংস, রক্ত এবং মৃত পশুর মাংস গ্রহণ নিষিদ্ধ। স্বাস্থ্যকে আল্লাহর দানকৃত আমানত হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং মদ জাতীয় মাদকদ্রব্য পান ও গ্রহণ নিষিদ্ধ (হারাম)।[৫৩০] মাংস অবশ্যই হতে হবে শাকাশী প্রাণী থেকে যা মুসলিম, ইহুদি বা খ্রীষ্টান কর্তৃক আল্লাহর নামে জবাই করা হয়েছে।[৫৩১][৫৩২] ইসলামে নারী-পুরুষের পোশাকের ক্ষেত্রে শালীনতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। ইসলামে পুরুষদের জন্য সিল্ক এবং সোনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[৫৩৩] হায়া, যা প্রায়শই "লজ্জা" বা "নম্রতা" অর্থে ব্যবহৃত হয়, কখনও কখনও ইসলামের সহজাত চরিত্র হিসাবে বর্ণনা করা হয়[৫৩৪] এবং মুসলিমদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক কিছুকে অবহিত করে। উদাহরণস্বরূপ, ইসলামে পোশাকের নম্রতার একটি মানদণ্ডের উপর জোর দেওয়া হয়, উদাহরণস্বরূপ মহিলাদের জন্য হিজাব পরিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতাও জরুরি।[৫৩৫]
ইসলামী বিবাহে, বরকে মহর প্রদান করতে হয়।[৫৩৬][৫৩৭][৫৩৮] ইসলামী বিশ্বের বেশিরভাগ পরিবারই এক সময়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহিত জীবনযাপনের প্রথার অনুসারি।[৫৩৯][৫৪০] ইসলামে মুসলিম পুরুষদের বহুবিবাহের অনুমতি দেওয়া হয় এবং একই সাথে চারজন স্ত্রী থাকতে পারে। ইসলামী শিক্ষা ও আইনশাস্ত্র দৃঢ়ভাবে স্বীকৃতি দেয় যে, যদি কোনও পুরুষ তার প্রতিটি স্ত্রীকে সমান আর্থিক এবং মানসিক সমর্থন দিতে না পারেন, তবে তার একজন মহিলাকে বিবাহ করা উচিত। বহুবিবাহের জন্য উল্লিখিত একটি কারণ হলো যে এটি একজন পুরুষকে একাধিক মহিলাকে আর্থিক সুরক্ষা দিতে দেয়, যাদের অন্যথায় কোন সমর্থন থাকবে না (যেমন বিধবা)। প্রথম স্ত্রী বিবাহের চুক্তিতে একটি শর্ত রাখতে পারেন যে, স্বামী তাদের বিবাহের সময় অন্য কোন মহিলাকে বিয়ে করতে পারবেন না।[৫৪১][৫৪২] বিবাহের ক্ষেত্রেও সাংস্কৃতিক পার্থক্য রয়েছে।[৫৪৩] বহুস্বামীত্ব, এমন একটি অনুশীলন যেখানে একজন মহিলা দু'জন বা ততোধিক স্বামী গ্রহণ করেন, যা ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।[৫৪৪]
সন্তানের জন্মের পর তার ডান কানে আযান দেওয়া হয়।[৫৪৫] সপ্তম দিনে, আকিকা অনুষ্ঠান করা হয়, যেখানে একটি পশু কোরবানি করা হয় এবং এর মাংস গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।[৫৪৬] শিশুর মাথার চুল কর্তন করা হয় এবং তার চুলের ওজনের সমান পরিমাণ অর্থ গরীবদের দান করা হয়।[৫৪৬] পুরুষদের খৎনা, যাকে খিতান বলা হয়,[৫৪৭] মুসলিম বিশ্বে প্রচলিত।[৫৪৮][৫৪৯] পিতা-মাতাকে সম্মান করা ও তার আনুগত্য করা এবং বিশেষ করে বৃদ্ধ বয়সে তাদের যত্ন নেওয়া ইসলামের ধর্মীয় দায়িত্ব।[৫৫০]
একজন মৃত মুসলমানকে তাদের শেষ শব্দ হিসেবে শাহাদাহ্ উচ্চারণ করতে উৎসাহিত করা হয়।[৫৫১] মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং সম্প্রদায়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেওয়া পুণ্যের কাজগুলোর মধ্যে বিবেচিত হয়। ইসলামি দাফনের রীতিতে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব (সাধারণত ২৪ ঘন্টার মধ্যে) দাফন করতে উৎসাহিত করা হয়। একই লিঙ্গের সদস্যদের দ্বারা মৃতদেহ গোসল করানো হয় এবং একটি পোশাকে আবৃত করা হয় যাকে কাফন বলা হয়।[৫৫২] সালাত আল-জানাযা নামক একটি "জানাজার নামাজ" করা হয়। মৃতদের জন্য হাহাকার বা উচ্চস্বরে, শোকপূর্ণ চিৎকার করে শোকপালনকে নিরুৎসাহিত করা হয়। মৃতদেহ কবরে দাফন করা হয় এবং কবরগুলো প্রায়শই অচিহ্নিত থাকে, এমনকি শাসকদের জন্যও।[৫৫৩]
শিল্প ও সংস্কৃতি
"ইসলামী সংস্কৃতি" শব্দটি ধর্মের সাথে সম্পর্কিত সংস্কৃতির দিকগুলো বোঝাতে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন উৎসব এবং পোশাকের রীতিনীতি। এটি ঐতিহ্যগতভাবে মুসলিম সংস্কৃতির দিকগুলোকে বোঝাতেও বিতর্কিতভাবে ব্যবহৃত হয়।[৫৫৪] "ইসলামী সভ্যতা" প্রাথমিক খিলাফতের সংশ্লেষিত সংস্কৃতির দিকগুলোকেও বোঝাতে পারে, যার মধ্যে অমুসলিমদের সংস্কৃতিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে,[৫৫৫] যাকে কখনও কখনও "ইসলামী" হিসাবে উল্লেখ করা হয়।[৫৫৬]
ইসলামী শিল্পে স্থাপত্য, ক্যালিগ্রাফি, দৃশ্যকলা এবং সিরামিকের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত।[৫৫৭][৫৫৮] যদিও মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে আইনের সাথে সম্পর্কিত কারণে প্রায়শই জীবন্ত প্রাণীদের চিত্র তৈরি করতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে, এই নিয়মটি বিভিন্ন পণ্ডিত এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক সময়কালে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছে। এই বিধিনিষেধকে ইসলামী শৈল্পিক সংস্কৃতির মূল দিক হিসাবে ক্যালিগ্রাফি, টালিকরণ এবং নকশার প্রাধান্য ব্যাখ্যা করতে ব্যবহার করা হয়েছে।[৫৫৯] উপরন্তু, মুহাম্মাদের চিত্রায়ন মুসলমানদের মধ্যে একটি বিতর্কিত বিষয়।[৫৬০] ইসলামী স্থাপত্যে, বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রভাব রয়েছে যেমন উত্তর আফ্রিকান এবং স্প্যানিশ ইসলামী স্থাপত্য যেমন কাইরুয়ান জামে মসজিদ রোমান এবং বাইজেন্টাইন ভবন থেকে মার্বেল এবং পোরফিরি স্তম্ভ রয়েছে।[৫৬১] ইন্দোনেশিয়ার মসজিদগুলোতো প্রায়শই স্থানীয় জাভানীজ শৈলী থেকে বহু-স্তরের ছাদ থাকে।[৫৬২]
ইসলামী ক্যালেন্ডার একটি চান্দ্র পঞ্জিকা যা ৬২২ খ্রিস্টাব্দে হিজরতের দিন থেকে শুরু হয়। এই দিনটি খলিফা উমর নির্বাচন করেছিলেন, কারণ এটি মুহাম্মাদ এর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল।[৫৬৩] ইসলামী ধর্মীয় ছুটির দিনগুলো চন্দ্র ক্যালেন্ডারের নির্দিষ্ট তারিখে পড়ে, যার অর্থ হলো যে সেগুলো গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডারের বিভিন্ন বছরে বিভিন্ন ঋতুতে ঘটে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী উৎসবগুলো হলো রমজান মাসের শেষ হওয়ার দিনে শাওয়াল মাসের ১ তারিখে ঈদুল ফিতর এবং হজ্জ (তীর্থযাত্রা) শেষ হওয়ার সাথে সাথে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা।[৫৬৪]
সাংস্কৃতিক মুসলিমরা ধর্মীয়ভাবে অনুশীলনকারী ব্যক্তি নন অর্থাৎ, তারা ইসলামের ধর্মীয় অনুশাসনগুলো অনুসরণ করে না, যেমন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, রোজা রাখা, হজ পালন করা ইত্যাদি। তবে, তারা এখনও নিজেদেরকে মুসলিম হিসাবে পরিচয় দেয় কারণ তারা ইসলামকে তাদের সংস্কৃতি এবং পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে বিবেচনা করে।[৫৬৫][৫৬৬]
-
১৪ শতকে নির্মিত চীনের জি'আনের বড় মসজিদ
-
ইন্দোনেশিয়ার ১৬শ শতকের মেনারা কুদুস মসজিদে ভারতীয় প্রভাব
-
১৮শ শতাব্দীর উসমানী অঞ্চলের একটি ইসলামিক ক্যালিগ্রাফিতে "বিসমিল্লাহ" শব্দ
উৎসব ও অনুষ্ঠান
ইসলাম ধর্মে দুটি প্রধান উৎসব রয়েছে: ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা। এছাড়াও, কিছু ছোটখাটো উৎসব রয়েছে যা বিভিন্ন দেশে উদযাপিত হয়, যেমন ইসলামি নববর্ষ, ঈদে মিলাদুন্নবী।
ঈদুল ফিতর
ঈদুল ফিতর মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে একটি। আরবিতে "ঈদ" শব্দের অর্থ উৎসব বা আনন্দ, আর "ফিতর" শব্দের অর্থ বিদীর্ণ করা, উপবাস ভঙ্গ করা, স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়া। সুতরাং, ঈদুল ফিতর হলো রমজান মাসের এক মাস সিয়াম সাধনার পর রোজা ভাঙার আনন্দের উৎসব।
ঈদুল ফিতর হলো ইসলামের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। এটি রমজান মাসের রোজার শেষে পালিত হয়। ঈদের দিন সকালে মুসলিমরা ঈদগাহ বা মসজিদে একত্রিত হয়ে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করে। নামাজের পর তারা একে অপরের সাথে কুশলাদি বিনিময় করে, মিষ্টি বিতরণ করে এবং আনন্দ-উৎসব করে। ঈদুল ফিতরের দিন ধনী মুসলমানরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী গরীবদের মাঝে ফিতরা প্রদান করে। ফিতরা হলো একটি সামাজিক দায়িত্ব যা মুসলমানদেরকে তাদের সম্পদের একটি অংশ গরীবদের সাথে ভাগ করে নিতে নির্দেশ দেয়। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুসলমানরা নতুন পোশাক পরে। ঈদের দিন মুসলমানরা একে অপরের সাথে মিষ্টি বিতরণ করে। ঈদের দিন মুসলমানরা আনন্দ-উৎসব করে, খেলাধুলা করে এবং পরিবার-পরিজনের সাথে সময় কাটায়। এদিন মুসলমানরা পরস্পরের সাথে কোলাকুলি, সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করে তাদের সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে তোলে।
ঈদুল আজহা
ঈদুল আযহা বা কুরবানির ঈদ হলো ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। ইসলামি চান্দ্র পঞ্জিকায়, ঈদুল আযহা জ্বিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে পড়ে। আন্তর্জাতিক (গ্রেগরীয়) পঞ্জিকায় তারিখ প্রতি বছর ভিন্ন হয়, সাধারণত এক বছর থেকে আরেক বছর ১০ বা ১১ দিন করে কমতে থাকে। ঈদের তারিখ স্থানীয়ভাবে জ্বিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে।
ঈদুল আযহার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ত্যাগ। এই দিনটিতে মুসলমানেরা ফজরের নামাযের পর ঈদগাহে গিয়ে দুই রাকআত ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করে ও অব্যবহিত পরে স্ব-স্ব আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ বা উট আল্লাহর নামে কুরবানী করে। কুরবানী হলো ঈদুল আযহার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করা হয়। কুরবানির পশুকে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী জবাই করা হয়। জবাইকৃত পশুর মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম ভাগ গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা হয়, দ্বিতীয় ভাগ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে বিতরণ করা হয় এবং তৃতীয় ভাগ নিজের জন্য রাখা হয়।
অন্যান্য অনুষ্ঠান
ইসলামী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিছু ছোটখাটো উৎসব রয়েছে। এই উৎসবগুলো বিভিন্ন স্থানীয় ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত। কিছু জনপ্রিয় উৎসবের মধ্যে রয়েছে:
- ইসলামি নববর্ষ: ইসলামি বর্ষপঞ্জির নতুন বছরকে ইসলামি নববর্ষ বলা হয়। নববর্ষ উপলক্ষে অনেক মুসলমান নতুন পোশাক পরে, মিষ্টি বিতরণ করে, এবং আনন্দ-উৎসব করে।
- মাহে রমজান: রমজান মাস হলো ইসলামের পবিত্র মাস। রমজান মাসে মুসলমানরা রোজা পালন করে। রোজা হলো একটি ধর্মীয় রীতি যা মুসলমানদেরকে আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য অর্জনের জন্য নির্দেশ দেয়।
- ঈদে মিলাদুন্নবী: ঈদে মিলাদুন্নবী হলো নবী মুহাম্মাদ এর জন্মদিন। ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে অনেক মুসলমান মসজিদে নামাজ আদায় করে, নবী মুহাম্মাদ এর জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে আলোচনা করে, এবং আনন্দ-উৎসব করে।
- আশুরা: আশুরা বা মহররম হলো ইসলামী বর্ষপঞ্জির প্রথম মাসের দশম দিন। এই দিনটিকে মুসলিমরা বিশেষভাবে স্মরণ করে, কারণ এই দিনে ইমাম হোসাইন ও তাঁর সহযোদ্ধাদের কারবালার ময়দানে শহীদ হতে হয়েছিল। আশুরার দিনটিকে মুসলিমরা শোক ও আত্ম-শুদ্ধির দিন হিসেবে পালন করে। এদিন তারা রোজা রাখে, নামাজ পড়ে, পবিত্র কুরআন পাঠ করে এবং আশুরার ঘটনার উপর আলোচনা করে। আশুরার দিনটিকে শিয়া মুসলিমরা বিশেষভাবে স্মরণ করে। এই দিনটিকে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে শোক ও আত্ম-শুদ্ধির দিন হিসেবে পালন করে। তারা আশুরার দিনটিতে কালো পোশাক পরে, মাথায় টুপি পরে এবং আশুরার ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করে। এছাড়াও, তারা আশুরার দিনটিতে খাবার দান করে, বিশেষ করে দুঃস্থ ও দরিদ্রদের। সুন্নি মুসলিমরাও আশুরার দিনটিকে স্মরণ করে, তবে তারা এটিকে শোক ও আত্ম-শুদ্ধির দিন হিসেবে পালন করে না। তারা আশুরার দিনটিতে রোজা রাখে এবং আশুরার ঘটনার উপর আলোচনা করে। আশুরার দিনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসের সাক্ষী। এটি একটি দিন, যখন সত্যের পক্ষে লড়াই করার জন্য একজন মহান ব্যক্তিকে শহীদ হতে হয়েছিল। আশুরার দিনটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যের পক্ষে লড়াই করা কখনই সহজ নয়, কিন্তু এটিই হল একমাত্র পথ যা মহানতার দিকে নিয়ে যাবে।
- শবে বরাত: শবে বরাত হলো ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এটি আরবি মাস শাবানের ১৪ তারিখে পালিত হয়। শবে বরাত শব্দের অর্থ "রাত্রি মুক্তি"। মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে, এই রাতে আল্লাহ মানবজাতির জন্য রহমতের দরজা খুলে দেন এবং তাদের পাপ ক্ষমা করেন। শবে বরাতের রাতে, মুসলিমরা বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে। তারা মসজিদে গিয়ে বিশেষ নামাজ পড়ে, পবিত্র কুরআন পাঠ করে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। তারা এই রাতে দান-খয়রাতও করে। শবে বরাতের রাতে, মুসলিমরা তাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে বিশ্বাস করে। তারা এই রাতে তাদের ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করে এবং আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। শবে বরাত একটি সুন্দর এবং পবিত্র রাত্রি। এটি একটি রাত্রি যখন মুসলিমরা আল্লাহর কাছে তাদের পাপ ক্ষমা করার জন্য প্রার্থনা করে।
- শবে মেরাজ: শবে মেরাজ বা লাইলাতুল মেরাজ হলো ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এটি আরবি মাস রজব মাসের ২৭ তারিখে পালিত হয়। শবে মেরাজ শব্দের অর্থ "ঊর্ধ্বগমনের রাত"। মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে, এই রাতে মুহাম্মাদ আল্লাহর নির্দেশে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করেছিলেন। এরপর তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় পৌঁছান, যেখানে তিনি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করেন। শবে মেরাজের রাতে, মুহাম্মাদ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শিক্ষা পেয়েছিলেন। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান পেয়েছিলেন, যা মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। তিনি জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখেছিলেন, যা মুসলিমদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। শবে মেরাজ মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি তাদেরকে আল্লাহর কাছে নিকটবর্তী হওয়ার এবং তাঁর নির্দেশাবলী অনুসরণ করার জন্য অনুপ্রাণিত করে। শবে মেরাজের রাতে, মুসলিমরা বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে। তারা মসজিদে গিয়ে বিশেষ নামাজ আদায় করে, পবিত্র কুরআন পাঠ করে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। তারা এই রাতে দান-খয়রাতও করে।
- শবে কদর: শবে কদর বা লাইলাতুল কদর হলো ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিবস। এটি রমজান মাসের শেষ দশকের কোনও বিজোড় রাতে পালিত হয়। শবে কদর শব্দের অর্থ "মর্যাদাপূর্ণ রাত"। মুসলিমরা বিশ্বাস করে যে, এই রাতে আল্লাহ কুরআন নাযিল করেছিলেন। পবিত্র কুরআনের সুরা কদরে বলা হয়েছে:
“ | নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ) কদরের রজনীতে কুরআন নাজিল করেছি। আপনি কি জানেন মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ অবতীর্ণ হন, জিব্রাঈল সহ তাদের রবের নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সকল বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে উষার উদয় পর্যন্ত। | ” |
— সূরা ক্বদর, আয়াত ১-৫ |
ইসলামী উৎসবগুলো মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই উৎসবগুলো মুসলমানদেরকে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং ঐতিহ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এগুলি মুসলমানদেরকে তাদের পরিবার-পরিজনের সাথে একত্রিত হওয়ার এবং আনন্দ-উৎসব করার একটি সুযোগ প্রদান করে।
অন্যান্য ধর্মের উপর প্রভাব
কিছু ধর্মীয় আন্দোলন, যেমন দ্রুজ,[৫৬৭][৫৬৮][৫৬৯] বারঘোয়াটা, ইয়েজদীবাদ, হা-মীম ইত্যাদি, ইসলাম থেকে উদ্ভূত হয়েছে বা ইসলামের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। এই আন্দোলনগুলোর মধ্যে কোনটি পৃথক ধর্ম এবং কোনটি ইসলামের একটি সম্প্রদায় তা প্রায়ই বিতর্কের বিষয় হয়ে দাড়ায়।[৫৭০] এই আন্দোলনগুলোর মধ্যে কিছু, যেমন দ্রুজ, ইসলাম থেকে সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে গেছে। অন্যরা, যেমন ইয়েজদীবাদ, ইসলামের সাথে কিছু মিল বজায় রেখেছে।
দ্রুজরা একটি গোপন ধর্মীয় গোষ্ঠী যারা লেবানন, সিরিয়া এবং ইসরায়েলে বাস করে। তারা বিশ্বাস করে যে ইমাম আল-হাকিম বি-আমর আল্লাহ, একজন ইসমাইলি ধর্মীয় নেতা, ঈশ্বরের অবতার ছিলেন। দ্রুজ বিশ্বাস ইসলামের সাথে অনেক মিল ভাগ করে নেয়, তবে এর কিছু অনন্য মতবাদও রয়েছে, যেমন ইমাম আল-হাকিমের ঈশ্বরের অবতার হওয়ার বিশ্বাস।[৫৭১][৫৭২]
ইয়েজদীরা একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী যারা মূলত কুর্দিস্তানে বাস করে। তারা বিশ্বাস করে যে ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয়, এবং তিনি ৭,০০০ বছর আগে আদমকে প্রেরণ করেছিলেন। ইয়েজদীরা ইসলামের সাথে কিছু মিল ভাগ করে নেয়, তবে তারা ইসলামের মৌলিক নীতিগুলোর কিছুকে অস্বীকার করে, যেমন নবী মুহাম্মাদের নবুওয়াত।[৫৭৩]
বাবিবাদ একটি ধর্মীয় আন্দোলন যা ১৯ শতকে ইরানে উত্থিত হয়েছিল। এটি সৈয়দ আলী মুহাম্মদ ই-শিরাজী আল-বাব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যিনি দাবি করেছিলেন যে তিনি ঈশ্বরের একজন নবী ছিলেন। বাবিবাদ ইসলামের সাথে কিছু মিল ভাগ করে নেয়, তবে এটি ইসলামের মৌলিক নীতিগুলোর কিছুকে অস্বীকার করে, যেমন নবী মুহাম্মাদের নবুওয়াত।[৫৭৪]
শিখধর্ম একটি ধর্মীয় আন্দোলন যা ১৫ শতকে ভারতে উত্থিত হয়েছিল। এটি গুরু নানক দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যিনি দাবি করেছিলেন যে তিনি ঈশ্বরের একজন অবতর ছিলেন। শিখধর্ম ইসলাম এবং হিন্দুধর্মের কিছু দিককে অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[৫৭৫]
সমালোচনা
ইসলামের সমালোচনা এর প্রাথমিক পর্যায় থেকেই বিদ্যমান রয়েছে। প্রাথমিক সমালোচনা এসেছে ইহুদি লেখক, যেমন ইবনে কামমুনা এবং খ্রিস্টান লেখকদের কাছ থেকে, যাদের অনেকে ইসলামকে খ্রিস্টান ধর্মত্যাগ বা মূর্তিপূজার একরূপ হিসাবে দেখেছেন, প্রায়শই এটিকে ধ্বংসাত্মক শর্তে ব্যাখ্যা করেছেন।[৫৭৭]
খ্রিস্টান লেখকরা ইসলামের জান্নাতের কামোত্তেজক বিবরণের সমালোচনা করেছেন। আলী ইবনে সাহল রাব্বান আল-তাবারি কুরআনের জান্নাতের বর্ণনাকে এই বলে রক্ষা করেন যে, বাইবেলও এই ধরনের ধারণা বোঝায়, যেমন ম্যাথিয়ু সুসমাচারে মদ পান করা। ক্যাথলিক ধর্মতাত্ত্বিক অগাস্টিন অফ হিপ্পোর মতবাদ অনুসারে এটি জীবন ও মৃত্যু উভয় ক্ষেত্রেই শারীরিক সুখের বিস্তৃত প্রত্যাখ্যানের দিকে নিয়ে যায়।[৫৭৮]
মুহাম্মাদের অবমাননাকর ছবিগুলো ১৪শ শতকের মহাকাব্য ডিভাইন কমেডিতে দান্তে আলিগেরি দ্বারা চিত্রিত করা হয়েছে,[৫৭৯] যা ৭ম শতাব্দীর প্রথম দিকে বাইজেন্টাইন চার্চের চিত্রগুলো থেকে নেওয়া হয়েছে।[৫৮০] এখানে মুহাম্মাদকে আলী এর সাথে নরকের অষ্টম বৃত্তে চিত্রিত করা হয়েছে। দান্তে ইসলাম ধর্মকে সামগ্রিকভাবে দোষারোপ করেন না, বরং খ্রিস্টান ধর্মের পরে আরেকটি ধর্ম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিচ্ছিন্নতাবাদ (schism) এর জন্য মুহাম্মাদকে অভিযুক্ত করে।[৫৮১]
আধুনিক মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে ব্যক্তিদের প্রতি আচরণ, বিশেষ করে ইসলামী আইনের প্রয়োগের সাথে সম্পর্কিত মানবাধিকারের বিষয়গুলো নিয়েও সমালোচনা করা হয়।[৫৮২] উপরন্তু, সাম্প্রতিক বহুসংস্কৃতিবাদী প্রবণতার জেরে, পশ্চিমে মুসলিম অভিবাসীদের আত্মীকরণের ক্ষেত্রে ইসলামের প্রভাব সম্পর্কে সমালোচনা করা হয়েছে।[৫৮৩]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- ↑ সূরা ইব্রাহীম এর ৪ নাম্বার আয়াত অনুযায়ী ধ্রুপদী আরবি হচ্ছে ইসলামের মূল ভাষা। সূরা রুমের ২২ নম্বর আয়াত অনুযায়ী পৃথিবীর সমস্ত ভাষা আল্লাহ প্রদত্ত। এছাড়াও ইসলাম পৃথিবীর প্রায় সমস্ত ভাষায় চর্চা, ব্যাখ্যা ও গবেষণা করা হচ্ছে। ইসলামের মূল ধর্মগ্রন্থ গুলোসহ অন্যান্য বিভিন্ন ইসলামিক বই-পুস্তক পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় রচনা করা হচ্ছে। এবং সমস্ত ভাষাভাষীদের মধ্যেও মুসলিম অথবা মুসলমানরা রয়েছেন।
- ↑ ইসলাম (কুরআন ও হাদিস) অনুযায়ী ইসলাম শুধুমাত্র কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য অবতীর্ণ হয়নি। এছাড়া মুসলিমরা শুধুমাত্র মুসলিম বিশ্বে বসবাস করে না। সমগ্র বিশ্বে মুসলিম বা মুসলমানরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
- ↑ সাধারণ ইতিহাসের ভিত্তিতে ইসলামের প্রবর্তক নবী মুহাম্মদ (সা.)। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে ইসলামের সূচনা সৃষ্টি লগ্ন থেকেই। আর মানবজাতির মধ্যে ইসলামের প্রথম নবী হচ্ছেন পৃথিবীর প্রথম পুরুষ হযরত আদম (আ.) এবং শেষনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। কুরআন মতে স্রষ্টা প্রদত্ত এই ধর্মের নাম ইসলাম রাখা হয়েছে ইব্রাহিমের (আ.) মাধ্যমে, সুতরাং তাঁকে মুসলিম জাতির পিতা বলা হয়। এর পূর্বে এই ধর্মটি মহাবিশ্বে বহাল থাকলেও এর নাম ইসলাম হিসেবে পরিচিত ছিল না, বরং ফিতরত বা প্রকৃতি হিসেবে সম্বোধন করা হতো, যা আল্লাহ তথা সুমহান স্রষ্টা নির্ধারণ কিংবা পছন্দ করেন। তবে এই ধর্মের নাম ভাষাগতভাবে পরিবর্তিত হয়। কিন্তু নবী মুহাম্মদের (সা.) সময় থেকে এই ধর্মটির নাম আরবি ‘ইসলাম’ শব্দ দ্বারা পরিচিত, যার অর্থ হচ্ছে ‘সুমহান স্রষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ এর মাধ্যমে শান্তি অর্জন করা’। বর্তমান পৃথিবীতে এই জীবন ব্যবস্থার বিভিন্ন সম্প্রদায় প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্যে উম্মাতু মূসা (ইয়াহুদী), উম্মাতু ঈসা (নাছারা বা খ্রিস্টান) এবং উম্মাতু মোহাম্মদ (মুসলমান) বর্তমান পৃথিবীতে পরিচিত, যাদেরকে ইব্রাহিমি ধর্ম হিসেবেও সম্বোধন করা হয়ে থাকে। ইব্রাহিম (আ.) এই ধর্মের নাম রেখেছিলেন ‘সুমহান ঈশ্বরের কাছে আত্মসমর্পণ এর মাধ্যমে শান্তি অর্জন’, যার আরবি প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘ইসলাম’।
- ↑ আল-হক্কানী, শায়েখ মুহাম্মদ নাজিম আদিল; কাব্বানি, শায়েখ মুহাম্মদ হিশাম (২০০২)। মুহাম্মদ, ইসলামের বার্তাবাহক: তাঁর জীবন ও ভবিষ্যতবানী (ইংরেজি ভাষায়)। আই এস সি এ। পৃষ্ঠা x। আইএসবিএন 978-1-930409-11-8। ২০২১-০৩-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৮।
- ↑ জন এল. স্পোছিতো (২০০৯)। "ইসলাম।রূপরেখা"। জন এল. স্পোছিতো। দ্য অক্সফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অব দ্য ইসলামিক ওয়ার্ল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 9780195305135। ডিওআই:10.1093/acref/9780195305135.001.0001।
- ↑ এফ. ই পিটার্স (২০০৯)। "আল্লাহ্"। জন এল. স্পোছিতো। দ্য অক্সফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অব দ্য ইসলামিক ওয়ার্ল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 9780195305135। ডিওআই:10.1093/acref/9780195305135.001.0001।
- ↑ ক খ "বিশ্ব ধর্ম" (ইংরেজি ভাষায়)। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২৩ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ ক খ "দেশ অনুসারে মুসলিম জনসংখ্যা"। বৈশ্বিক মুসলিম জনসংখ্যার ভবিষ্যৎ (ইংরেজি ভাষায়)। পিউ রিসার্চ সেন্টার। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "দেশ অনুযায়ী মুসলিম জনসংখ্যা ২০২১"। বিশ্ব জনসংখ্যা পর্যালোচনা। ৬ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০২১।
- ↑ লিপকা, মাইকেল এবং কনরাড হ্যাকেট। [২০১৫] ৬ এপ্রিল ২০১৭। "কেন মুসলিমরা বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্মীয় গোষ্ঠী ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে" (তথ্য বিশ্লেষণ)। ফ্যাক্ট ট্যাঙ্ক. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: পিউ রিসার্চ সেন্টার.
- ↑ "দেশ অনুযায়ী মুসলিম জনসংখ্যা ২০২১"। বিশ্ব জনসংখ্যা পর্যালোচনা। ৬ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০২১।
- ↑ "দেশ অনুসারে ধর্মীয় জনসংখ্যা, ২০১০-২০৫০"। পিউ রিসার্চ সেন্টার। ২ এপ্রিল ২০১৫। ১৫ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০২০।
- ↑ যারা মুসলমান নামে পরিচিত।
- ↑ ইসলাম ধর্মের অনুসারী বোঝানোর জন্য মুসলিম শব্দটিই সবচেয়ে প্রচলিত। যাদেরকে দক্ষিণ এশীয় ভাষায় মুসলমান হিসেবে সম্বোধন করা হয়। ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জুলাই ২০১৬ তারিখে
- ↑ মুসলমান শব্দটা মুসলিম শব্দের সমার্থক নয়। বরং এটা বিশ্বের ওই সমস্ত মানুষদেরকে বোঝায় যারা ইসলাম ধর্মকে সঠিক বলে স্বীকৃতি প্রদান করে, কিন্তু তারা সকলে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ইসলামকে অনুসরণ করে না। সূরা আল ইমরানের ১০২ নাম্বার আয়াত অনুযায়ী ইসলামের স্বীকৃতিদানকারী সমস্ত মানুষ মুসলিম নয়। মুসলিম হচ্ছে তারা, যারা ইসলামকে সত্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি ইসলামকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করে।
- ↑ ক্যাম্পো, জুয়ান এডোয়ার্ডো (২০০৯)। "আল্লাহ"। এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলাম (ইংরেজি ভাষায়)। ইনফোবেস পাবলিশিং। পৃষ্ঠা 34। আইএসবিএন 978-1-4381-2696-8। ১৪ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ İbrahim Özdemir (২০১৪)। "পরিবেশ"। ইব্রাহীম কালিন। অক্সফোর্ড বিশ্বকোষ, ইসলামে দর্শন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 9780199812578। ডিওআই:10.1093/acref:oiso/9780199812578.001.0001।
- ↑ "পিপল অব দ্য বুক"। ইসলাম: এম্পায়ার অব ফেইথ (ইংরেজি ভাষায়)। পি বি এস। ২০১১-০৬-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-১৮।
- ↑ রিভস্, জে.সি. (২০০৪)। বাইবেল অ্যান্ড কুরআন:এছেই'স ইন স্ক্রিপ্টুয়্যাল ইন্টারটেক্সুয়্যালিটি (ইংরেজি ভাষায়)। লেইডেন: ব্রিল। পৃষ্ঠা ১৭৭। আইএসবিএন 9-0041-2726-7। ২২ মার্চ ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ মঘুল, হারুন। "একটা ইহুদী ছুটির দিনকে কেন মুসলমানরা পালন করে" (ইংরেজি ভাষায়)। সি এন এন। ২০১৮-০২-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৮।
- ↑ বেনেট (২০১০, p. ১০১)
- ↑ "পরকালবিদ্যা-অক্সফোর্ড ইসলামি শিক্ষা অনলাইন"। www.oxfordislamicstudies.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০৭-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৮।
- ↑ "স্বর্গ (জান্নাত)"। Al-Islam.org (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৪-২৬। ২০১৮-১১-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৮।
- ↑ এস্পোসিটো (২০০২বি, pp. ১৭)
- ↑ Esposito (2002b, pp. ১১১–১১২, ১১৮)
- "শরিয়াহ্"। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা অনলাইন (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ "ব্রিটিশ ও বিশ্ব ইংরেজি: শরিয়াহ"। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস (ইংরেজি ভাষায়)। ৮ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ট্রপিমভ্, ইয়ারোস্লাভ (২০০৮), দ্য সিজ অব মক্কা:দ্য ১৯৭৯ আপরাইজিং অ্যাট ইসলাম'স হোলিয়েস্ট শ্রাইন (ইংরেজি ভাষায়), নিউ ইয়র্ক, পৃষ্ঠা 79, আইএসবিএন 978-0-307-47290-8
- ↑ স্পোছিতো, জন এল (১৯৯৮)। ইসলাম:সরল পথ (৩য় সংস্করণ) (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৯,১২। আইএসবিএন 978-0-19-511234-4।
- ↑ এস্পোসিটো (২০০২বি, pp. ৪–৫)
- ↑ পিটার্স, এফ.ই (২০০৩)। ইসলাম:ইহুদী ও খ্রিষ্টানদের জন্য একটি নির্দেশিকা (ইংরেজি ভাষায়)। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 9। আইএসবিএন 978-0-691-11553-5।
- ↑ ওয়াট, উইলিয়াম মন্টোগোমারি (২০০৩)। ইসলাম অ্যান্ড দ্য ইন্টিগ্রেশন অব সোসাইটি (ইংরেজি ভাষায়)। সাইকোলজি প্রেস। পৃষ্ঠা 5। আইএসবিএন 9780415175876। ২০ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ জর্জ সাবিলা (১৯৯৪), আরবিয় জ্যোতির্বিদ্যার ইতিহাস:ইসলামী স্বর্নযুগে গ্রহতত্ব, পৃষ্ঠা . ২৪৫, ২৫০, ২৫৬–২৫৭. নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস , আইএসবিএন ০-৮১৪৭-৮০২৩-৭.
- ↑ কিং, ডেভিড এ. (১৯৮৩)। "মামলুক আমলে জ্যোতির্বিদ্যা"। আইসিস (ইংরেজি ভাষায়)। 74 (4): 531–555। ডিওআই:10.1086/353360।
- ↑ আল-হাসান, আহমেদ ওয়াই. (১৯৯৬)। "ষোড়শ শতকের পর ইসলামী বিজ্ঞানের পতনের কারণসমূহ"। শরিফা শিফা আল-আত্তাস। ইসলাম এবং আধুনিকতার চ্যালেঞ্জ, ইসলাম এবং আধুনিকতার চ্যালেঞ্জ: ঐতিহাসিক ও সমসাময়ীক প্রেক্ষিতঃ আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রারম্ভিকা, কুয়ালালামপুর, ১-৫ আগস্ট, ১৯৯৪ (ইংরেজি ভাষায়)। ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ইসলামিক থট অ্যান্ড সিভিলাইজেশ্যন (আই এস টি এ সি)। পৃষ্ঠা 351–399। ২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ দ্য প্রিচিং অব ইসলাম:আ হিস্ট্রি অব দ্য প্রোপাগেশন অব দ্য মুসলিম ফেইথ বাই স্যর থমাস ওয়াকার আর্নল্ড,পৃষ্ঠা ১২৫-২৫৮
- ↑ "ম্যাপিং দ্য গ্লোবাল মুসলিম পপুলেশন: অ্যা রিপোর্ট অন দ্য সাইজ ডিস্ট্রিবিউশন অব দ্য ওয়ার্ল্ড'স মুসলিম পপুলেশন"। Pew Research Center (ইংরেজি ভাষায়)। অক্টোবর ৭, ২০০৯। ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যার ১০ দেশ, ২০১০ থেকে ২০৫০"। পিউ রিসার্চ সেন্টার্স রিলিজিয়ন অ্যান্ড পাবলিক লাইফ প্রোজেক্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৪-০২। ২০১৭-০২-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৭।
- ↑ পিচিলিস, কারেন; রাজ, সিলভা জে. (২০১৩)। দক্ষিণ এশিয়ার ধর্মগুলো:ঐতিহ্য এবং বর্তমান (ইংরেজি ভাষায়)। রুটলেজ। পৃষ্ঠা 193। আইএসবিএন 9780415448512। ১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ দ্য ডিপ্লোম্যাট, আখিলেশ পাল্লিলিমারি। "যেভাবে দক্ষিণ এশিয়া বৈশ্বিক ইসলামকে বাঁচাবে"। দ্য ডিপ্লোম্যাট (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৭।
- ↑ "মধ্যপ্রাচ্য-উত্তর আফ্রিকা"। পিউ রিসার্চ সেন্টার'স রিলিজিয়ন অ্যান্ড পাবলিক লাইফ প্রযেক্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-১০-০৭। ২০১৭-০১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-১৮।
- ↑ "অঞ্চল:মধ্যপ্রাচ্য-উত্তর আফ্রিকা"। বৈশ্বিক মুসলিম জনসংখ্যার ভবিষ্যৎ (ইংরেজি ভাষায়)। পিউ রিসার্চ সেন্টার। ২০১১-০১-২৭। ২০১৩-০৪-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "অঞ্চল: সাহারা নিম্ন আফ্রিকা"। বৈশ্বিক মুসলিম জনসংখ্যার ভবিষ্যৎ (ইংরেজি ভাষায়)। পিউ রিসার্চ সেন্টার। ২০১১-০১-২৭। ২০১৩-০৪-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "রাশিয়ায় ইসলাম"। www.aljazeera.com (ইংরেজি ভাষায়)। ১১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Islam in Russia"। Al Jazeera। Anadolu News Agency। ৭ মার্চ ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০২১।
- ↑ "Book review: Russia's Muslim Heartlands reveals diverse population", The National (Abu Dhabi), ২১ এপ্রিল ২০১৮, সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১৯
- ↑ ধর্ম ও জনজীবনের জন্য পিউ ফোরাম। এপ্রিল ২০১৫। "বিশ্ব ধর্মের ভবিষ্যত: জনসংখ্যা বৃদ্ধি অনুমান, ২০১০-২০৫০." পিউ রিসার্চ সেন্টার. পি.৭০ নিবন্ধ.
- ↑ "সিন." লেনের লেক্সিকন ৪. – StudyQuran এর মাধ্যমে।
- ↑ লুইস, বার্নার্ড; চার্চিল, বান্টজি এলিস (২০০৯)। ইসলাম: ধর্ম এবং মানুষ। ওয়ার্টন স্কুল পাবলিশিং। পৃষ্ঠা 8। আইএসবিএন 978-0-13-223085-8।
- ↑ এস্পোসিটো (২০০০), pp. 76–77.
- ↑ মহম্মদ চেহাজিচ, রুশমির (২০০৬)। মসজিদ: আত্মসমর্পণের হৃদয় । ফোর্ডহ্যাম ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 84। আইএসবিএন 978-0-8232-2584-2।
- ↑ গিব, স্যার হ্যামিল্টন (১৯৬৯)। মুহাম্মাদানিজম: একটি ঐতিহাসিক পর্যালোচনা। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ১। আইএসবিএন 9780195002454।
আধুনিক মুসলমানরা 'মুহাম্মদান' এবং 'মুহাম্মদানিজম' শব্দগুলো পছন্দ করেন না, কারণ মনে হয় এগুলোর মধ্যে মুহাম্মাদকে পূজার ইঙ্গিত রয়েছে, যেমন 'খ্রিস্টান' এবং 'খ্রিস্টানিজম' শব্দগুলো খ্রিস্টকে পূজার ইঙ্গিত বহন করে।
- ↑ কাদিয়ানী মতবাদ এবং খতমে নবুওয়াত ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৪।
- ↑ লেখা (২০২৩-০৮-২৩)। "আদি মানব ও আদি নবী আদম (আ.)"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "ইহুদি-খ্রিস্টানদের প্রচলিত ধর্মবিশ্বাস"। www.kalerkantho.com। ২০১৫-১১-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "মুমিন হতে হলে যে ৬টি বিষয়ে পূর্ণ বিশ্বাস জরুরি"। জাগোনিউজ২৪।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০১৭-০৪-১৪)। "ইমানে মুফাসসাল বিশ্বাসের বিস্তার ও বিস্তৃতি"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২১।
- ↑ "তাওহিদ : পরিচিতি, গুরুত্ব ও তাৎপর্য"। অধিকার। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "ইসলামের প্রথম স্তম্ভ: শাহাদা – ICD"। www.icdbd.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ Lane, Edward William। An Arabic-English Lexicon। আইএসবিএন 9789351288145।
- ↑ "কুরআনে কি আসলেই খ্রিষ্টানদের ত্রিত্ববাদ (Trinity) নিয়ে ভুল তথ্য আছে?"। As-Sirat Mission। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "আল্লাহর পরিচয়"। www.kalerkantho.com। ২০২০-০৭-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ জনসন, স্কট ফিটজেরাল্ড (২০১২-১১-০৭)। অক্সফোর্ড হ্যান্ডবুক অফ লেট অ্যান্টিকুইটি (ইংরেজি ভাষায়)। OUP USA। আইএসবিএন 978-0-19-533693-1।
- ↑ "হুবেলের কন্যা | ইকতিবাস ম্যাগাজিন"। web.archive.org। ২০১৭-০২-১৫। ২০২২-০৯-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৮।
- ↑ Crone, Patricia (১৯৮৭)। Meccan Trade And The Rise Of Islam। পৃষ্ঠা 193–194।
- ↑ "Allah - Oxford Islamic Studies"। Oxford Islamic Studies। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ বোকার, জন (২০০৩-০১-০১)। বিশ্বের ধর্মের সংক্ষিপ্ত অক্সফোর্ড অভিধান (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-280094-7।
- ↑ "Wayback Machine" (পিডিএফ)। web.archive.org। ২০১৭-০৪-১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৮।
- ↑ "আল্লাহর পরিচয়"। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ বার্গ (২০১৫), p. ২৩.
- ↑ ক খ বার্গ (২০১৫), p. ৭৯.
- ↑ "নার | Encyclopedia.com"। www.encyclopedia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২৩।
- ↑ হার্টনার, ডব্লিউ.; টিজে বোয়ের। "নূর"। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম (২য় সংস্করণ) (২০১২)। ডিওআই:10.1163/1573-3912_islam_COM_0874
- ↑ ইলিয়াস, জামাল জে.। "লাইট"। ম্যাকঅলিফ (২০০৩)। Harvc ত্রুটি: no target: CITEREFম্যাকঅলিফ২০০৩ (সাহায্য) ডিওআই:10.1163/1875-3922_q3_EQSIM_00261
- ↑ ক্যাম্পো, জুয়ান ই.। "নার"। মার্টিন (২০০৪)। Harvc ত্রুটি: no target: CITEREFমার্টিন২০০৪ (সাহায্য). -Encyclopedia.com এর মাধ্যমে।
- ↑ ফাহাদ, টি।। "নার"। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম (২য় সংস্করণ) (২০১২)। ডিওআই:10.1163/1573-3912_islam_COM_0846
- ↑ টোয়েল, হেইডি। "ফায়ার"। ম্যাকঅলিফ (২০০২)। Harvc ত্রুটি: no target: CITEREFম্যাকঅলিফ২০০২ (সাহায্য) ডিওআই:10.1163/1875-3922_q3_EQSIM_00156
- ↑ ম্যাকঅলিফ (২০০৩), পৃ. ৪৫
- ↑ বার্জ (২০১৫), pp. ৯৭–৯৯.
- ↑ এস্পোসিটো (২০০২বি), পৃ. ২৬–২৮
- ↑ ওয়েব, জিসেলা। "অ্যান্জেল"। ম্যাকঅলিফ (এন.ডি)। harvc: invalid
|year=
. (সাহায্য) Harvc ত্রুটি: no target: CITEREFম্যাকঅলিফএন.ডি (সাহায্য) - ↑ ম্যাকডোনাল্ড, ডি.বি.; মাডেলুং, ডব্লিউ।। "মালাইকা"। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম (২য় সংস্করণ) (২০১২)।ডিওআই:10.1163/1573-3912_islam_COM_0642
- ↑ চাকমাক (২০১৭), p. ১৪০.
- ↑ ক খ "ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ"। RelS ২০১ ক্লাস নোটস অন ইসলাম। ক্যালগারি বিশ্ববিদ্যালয়। ("ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ।" RelS২০১ লেকচার নোট অন ইসলাম। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালগারি) ইউআরএল অ্যাক্সেসের তারিখ: ৩০ এপ্রিল ২০০৮।
- ↑ বার্গ (২০১৫), p. ২২.
- ↑ ক খ গ মুন্শী, এ কে এম ফজলুর রহমান। "আল কোরআন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব-১"। DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "আসমানি কিতাব কাকে বলে? আসমানি কিতাব কি? কয়টি ও কি কি?"। Eduwatchbd (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৪-১৫। ২০২৩-১০-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "চার আসমানি কিতাব যেসব ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছিল"। www.kalerkantho.com। ২০২৩-১০-১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "কুরআন কি? - টবি লেস্টার - আটলান্টিক"। web.archive.org। ২০১২-০৮-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ কনরাড, লরেন্স আই. (১৯৮৭-০৬-০৯)। "আবরাহা এবং মুহাম্মাদ: কালানুক্রমিক এবং সাহিত্যের অনুরূপ কিছু পর্যবেক্ষণ"। স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের বুলেটিন (ইংরেজি ভাষায়)। ৫০ (২): ২২৫–২৪০। আইএসএসএন 1474-0699। ডিওআই:10.1017/S0041977X00049016।
- ↑ ক খ এস্পোসিটো, জন এল., সম্পাদক (২০০৩-০১-০১)। ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-512558-0।
- ↑ ক খ "সূরা হিজর | বিজ্ঞান কর্নার"। web.archive.org। ২০১৮-০১-২৫। Archived from the original on ২০১৮-০১-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "25 Kasim 2021 tarihinde kaynagindan arsivlendi"। sssjournal.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "25 Kasim 2021 tarihinde kaynagindan arsivlendi L. Erisim tarihi: 22 Ocak 2021."।
- ↑ "তুর্কি তথ্য: পবিত্র কুরআন"। তুর্কি তথ্য (তুর্কি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ দিনলার তারিহি (ধর্মের বই)। আলফা পাবলিকেশন্স। ২০১৯।
- ↑ "কুরআনের ইতিহাস"। উইকিপিডিয়া। ২০২৩-০৬-২৭।
- ↑ "BnF. Département des Manuscrits. Supplément turc 190"। Bibliothèque nationale de France। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩।
- ↑ "৪. ৪. ২. নবী ও রাসূল"। www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ ক খ "নবী ও রসূলের মধ্যে পার্থক্য কী?"। www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "নবী-রাসুল কারা, তাঁদের কাজ কী?"। www.kalerkantho.com। ২০১৯-১১-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "মুহাম্মদ সা: সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী"। Daily Nayadiganta (নয়া দিগন্ত)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ মালেক, মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল। "খাতামুন নাবিয়্যীন (সা.) শ্রেষ্ঠত্ব ও কিছু বৈশিষ্ট্য-১"। DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "৪. নবী-রাসূলগণের সংখ্যা: ১ বা ২ লক্ষ ২৪ হাজার"। www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করে কিন্তু নবীদেরকে বিশ্বাস করে না তাদের ঈমানের অবস্থা কী? নবীদের বিশ্বাস করা কি জরুরী? | প্রশ্ন সহ ইসলাম"। web.archive.org। ২০২২-০৩-০৬। Archived from the original on ২০২২-০৩-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ ক খ এস্পোসিটো, জন এল. (সম্পাদনা) (২০০৩)। ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ১৯৮। আইএসবিএন 978-0-19-512558-0। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১২।
- ↑ ক খ এস্পোসিটো, জন এল., সম্পাদক (২০০৩-০১-০১)। ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-512558-0।
- ↑ "তাফসীর সূরা Al-Ahzab - ৪০"। Quran.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "জুইনবোল; ব্রাউন, D.W. "সুন্না।" ইসলাম এনসাইক্লোপিডিয়া। দ্বারা সম্পাদিত: পি. বিয়ারম্যান, ম. বিয়ানকুইস, সিই বসওয়ার্থ, ই. ভ্যান ডনজেল এবং হেনরিক্স। Brill, 2008. Brill Online."।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ এস্পোসিটো, জন এল., সম্পাদক (২০০৩-০১-০১)। ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-512558-0।
- ↑ Muhammad: Islam’s First Great General, by Richard A. Gabriel, p176.
- ↑ "গ্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি"। web.archive.org। ২০১৩-১২-১৪। Archived from the original on ২০১৩-১২-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "হাশর বিষয়ক আয়াতসমূহ - Bangla Hadith (বাংলা হাদিস)"। www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "তাফসীর সূরা Taha - ৫৫"। Quran.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "İslam"। Vikipedi (তুর্কি ভাষায়)। ২০২৩-০৭-২৮।
- ↑ "'খ্রিস্টান এবং ইহুদিরাও কি স্বর্গে যাবে?'"। web.archive.org। ২০২১-০১-১৫। Archived from the original on ২০২১-০১-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "কালিমা শাহাদাহ কি? কালিমা পড়ুন - ই শাহাদাহ - শুনুন (তুর্কি / আরবি)"। web.archive.org। ২০২১-০২-২৮। Archived from the original on ২০২১-০২-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ "হাশরের ময়দান যেমন হবে"। banglanews24.com। ২০১৯-০২-২৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "তকদিরে বিশ্বাস ঈমানের অঙ্গ"। banglanews24.com। ২০১৪-০২-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "তকদিরের ওপর বিশ্বাস রাখা ফরজ"। দৈনিক ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "ধারণার এনসাইক্লোপিডিয়া - বিভাগ - পৃষ্ঠা 6 | ihya.org"। samil.ihya.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "তাকদিরে বিশ্বাস কী ও কেন"। www.kalerkantho.com। ২০১৯-০৭-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "তাকদীর"। www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৩।
- ↑ "ইসলামের স্তম্ভ | ইসলামী বিশ্বাস ও অনুশীলন | ব্রিটানিকা"। www.britannica.com। ৩ মে ২০২৩।
- ↑ জারুগ, আবদুল্লাহি হাসান (১৯৮৫)। "অনুমতির ধারণা, সুপাররোগ্যাটরি অ্যাক্টস এবং অ্যাসেটিসিজম [] ইসলামিক আইনশাস্ত্রে"। ইসলামিক স্টাডিজ। ২৪ (২): ১৬৭–১৮০। আইএসএসএন 0578-8072। জেস্টোর 20847307।
- ↑ "সিন" অক্সফোর্ড ইসলামের অভিধান। জন এল এসপোসিটো, এড. অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস ইনক। ২০০৩। অক্সফোর্ড রেফারেন্স অনলাইন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস. <http://www.oxfordreference.com/views/ENTRY.html?subview=Main&entry=t125.e2211> ইউআরএল অ্যাক্সেসের তারিখ: ৩০ এপ্রিল ২০০৮।
- ↑ Nasr (2003), pp. 3, 39, 85, 270–272.
- ↑ মোহাম্মদ, এন. ১৯৮৫। "জিহাদের মতবাদ: একটি ভূমিকা।" জার্নাল অফ ল অ্যান্ড রিলিজিয়ন ৩(২):৩৮১–৯৭।
- ↑ Kasim, Husain। "Islam"। Salamone (2004), পৃ. 195–197। Harvc ত্রুটি: no target: CITEREFSalamone2004 (সাহায্য)
- ↑ গ্যালোনিয়ার, জুলিয়েট। "অভ্যন্তরে বা অগ্রসর হওয়া? একটি সীমাবদ্ধ প্রক্রিয়া হিসেবে ইসলামে ধর্মান্তরকে পুনর্বিবেচনা করা"। মুভিং ইন অ্যান্ড আউট অফ ইসলাম, কারিন ভ্যান নিউকার্ক, নিউইয়র্ক, ইউএস দ্বারা সম্পাদিত: ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস প্রেস, ২০২১, পৃষ্ঠা ৪৪-৬৬। https://doi.org/10.7560/317471-003
- ↑ "কুরআন, সূরা হুদ ব্যাখ্যা"। web.archive.org। ২০১৩-০৩-০৮। ২০১৩-০৩-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ এস্পোসিটো (২০০২বি), পৃ. ১৮, ১৯
- ↑ হেদায়েতুল্লাহ (২০০৬), পৃ. ৫৩-৫৫
- ↑ কোবেইসি (২০০৪), পৃ. ২২-৩৪
- ↑ মোমেন (১৯৮৭), পৃ. ১৭৮
- ↑ ম্যাটসন, ইনগ্রিড (২০০৬)। "নারী, ইসলাম এবং মসজিদ"। আর এস কেলার; আর.আর. রুথার। উত্তর আমেরিকায় নারী ও ধর্মের এনসাইক্লোপিডিয়া। ভলিউম ২, পার্ট ৭। ইসলাম। ব্লুমিংটন এবং ইন্ডিয়ানাপলিস: ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৬১৫–৬২৯। আইএসবিএন 978-0-253-34687-2।
- ↑ পেডারসেন, জে., আর. হিলেনব্র্যান্ড, জে. বার্টন-পেজ, এবং অন্যান্য। ২০১০। "।" ইসলামের বিশ্বকোষ। লিডেন: ব্রিল। ২৫ মে ২০২০ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
- ↑ "মসজিদ" । এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ "শাহ ওয়ালীউল্লাহ / শাহ ওয়ালী উল্লাহ রচিত হুজ্জাত আল্লাহ আল-বালিগা (আরবি/উর্দু)"। web.archive.org। ২০১৩-০৭-২১। Archived from the original on ২০১৩-০৭-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "ইয়াসার নুরি ওজতুর্কের মন্তব্যের সাথে প্রার্থনা – ধর্মীয় প্রবন্ধ"। web.archive.org। ২০২১-০৮-৩০। Archived from the original on ২০২১-০৮-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "কুরআনের সমালোচনা"। Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-১০-০৯।
- ↑ হ্যাবার্তুর্ক। "দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ আবশ্যক কি?"। হ্যাবার্তুর্ক (তুর্কি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "ইসরা"। web.archive.org। ২০১০-০৩-১২। Archived from the original on ২০১০-০৩-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "ব্রেকিং নিউজ - সর্বশেষ ব্রেকিং নিউজ, মিলিয়াতের আজকের ব্রেকিং নিউজ"। মিলিয়েত (তুর্কি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "১০৮"। web.archive.org। ২০১৫-০৭-০৪। ২০১৫-০৭-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ দিনলার তারিহি (ধর্মের বই), আলফা ইয়ানলারী, সিভিরেন: আহমেত ফেথি ইলদিরিম, ২০১৯। (সাইফা: ২৬৫-২৬৬)
- ↑ দিনলার তারিহি (ধর্মের বই), আলফা ইয়ানলারী, সিভিরেন: আহমেত ফেথি ইলদিরিম, ২০১৯। (সাইফা: ২৬৬)
- ↑ আহমেদ, মেদানি এবং সেবাস্তিয়ান জিয়ান্সি। "যাকাত।" পি. এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ট্যাক্সেশন এবং ট্যাক্স পলিসিতে ৪৭৯।
- ↑ রিজিয়ন, লয়েড (২০০৩)। প্রধান বিশ্ব ধর্ম: তাদের উৎপত্তি থেকে বর্তমান পর্যন্ত। যুক্তরাজ্য: রাউটলেজ কার্জন। পৃষ্ঠা ২৫৮। আইএসবিএন 9780415297967।
বিশ্বাসীদের সম্পদ শুদ্ধ করার কাজ ছাড়াও, যাকাত প্রদান মক্কার মুসলিম সম্প্রদায়ের অর্থনৈতিক কল্যাণে সামান্যতম অবদান রাখতে পারেনি।
- ↑ "মুসলিম বিশ্বে একটি বিশ্বাস ভিত্তিক সাহায্য বিপ্লব"। দ্য নিউ হিউম্যানিটারিয়ান। ১ জুন ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০২৩।
- ↑ Stefon (2010), p. 72.
- ↑ হাডসন, এ. (২০০৩)। ইক্যুইটি এবং ট্রাস্ট (তৃতীয় সংস্করণ)। লন্ডন: ক্যাভেন্ডিশ পাবলিশিং। পৃষ্ঠা ৩২। আইএসবিএন 1-85941-729-9।
- ↑ "অধ্যাপক ড. ডাঃ. ওসমান এসকিসিওগলু"। web.archive.org। ২০১৩-০৯-২৮। Archived from the original on ২০১৩-০৯-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "কর ও যাকাত"। web.archive.org। ২০১৪-০৯-২৪। Archived from the original on ২০১৪-০৯-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "যাকাত কি ট্যাক্স প্রতিস্থাপন করে? কর প্রদানের পরিবর্তে কি দাতব্য করা সম্ভব? - Sorularislamiyet.com"। web.archive.org। ২০১৪-০৯-২৪। ২০১৪-০৯-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যাদেরকে যাকাত দেওয়া হবে এবং ব্যয় করা হবে"। www.halisece.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "রমাদান"। www.britannica.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৬।
- ↑ রমজানলি (২০০৬)। ইসলামে রোজা এবং রমজান মাস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: তুঘরা বুকস্। পৃষ্ঠা ৫১। আইএসবিএন 9781597846110।
- ↑ "সহীহ বুখারী ভলিউম ০০৩, বুক ০৩১, হাদিস নং ১২৫"। web.archive.org। ২০১৩-০১-১৫। ২০১৩-০১-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "ইউনেস্কো - ইফতার এবং এর সামাজিক-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য"। ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-০৭।
- ↑ এএফপি (২০২৩-১২-০৮)। "ইউনেসকোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেল ইফতার"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-০৯।
- ↑ দিনলার তারিহি (ধর্মের বই), আলফা ইয়ানলারী, সিভিরেন: আহমেত ফেথি ইলদিরিম, ২০১৯। (সাইফা: ২৬৭)
- ↑ ঈদের দিন রোজা রাখা কি সম্ভব? (সুপ্রিম কাউন্সিল অফ রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্সের সভাপতি) (অ্যাক্সেসের তারিখ: ৭ মার্চ ২০২২)
- ↑ মোহাম্মদ তাকি আল-মোদাররেসি (২৬ মার্চ ২০১৬)। ইসলামের আইন (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। এনলাইট প্রেস। পৃষ্ঠা ৪৭১। আইএসবিএন 978-0-9942409-8-9। ২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ লং, ম্যাথু (২০১১)। ইসলামী বিশ্বাস, অনুশীলন এবং সংস্কৃতি। মার্শাল ক্যাভেন্ডিশ কর্পোরেশন। পৃষ্ঠা ৮৬। আইএসবিএন 978-0-7614-7926-0। ১৬ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪।
- ↑ নিগোসিয়ান, এস. এ. (২০০৪)। ইসলাম: এর ইতিহাস, শিক্ষা এবং অনুশীলন। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 110। আইএসবিএন 0-253-21627-3।
- ↑ বার্কলে সেন্টার ফর রিলিজিয়ন, পিস অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স - ইসলাম ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ অক্টোবর ২০১১ তারিখে "ইসলামিক অনুশীলন" এর ড্রপ-ডাউন প্রবন্ধ দেখুন
- ↑ নিগোসিয়ান, এস. এ. (২০০৪)। ইসলাম: এর ইতিহাস, শিক্ষা এবং অভ্যাস। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 111। আইএসবিএন 0-253-21627-3।
- ↑ হুকার, এম. বি. (২০০৮)। ইন্দোনেশিয়ান সিরিয়া: ইসলামিক আইনের একটি জাতীয় বিদ্যালয়ের সংজ্ঞা। ইনস্টিটিউট অফ সাউথইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ। পৃষ্ঠা ২২৮। আইএসবিএন 978-981-230-802-3। ১৭ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ ধর্মীয় অধ্যয়নের দৃষ্টিকোণ: তৃতীয় খণ্ড। এইচইবিএন পাবলিশার্স পিএলসি। ২০১৪। পৃষ্ঠা ৩৯৫। আইএসবিএন 978-978-081-447-2। ২৮ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১৫।
- ↑ ১৩ই জিলহজ্জ, heliohost.org, ২৮ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১৫
- ↑ "পবিত্র তীর্থযাত্রা হজ্জ"। Salamislam। ৩ জানুয়ারি ২০২১। ৩১ মে ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০২২।
- ↑ কারেন আর্মস্ট্রং (২০০২)। ইসলাম: একটি সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। আধুনিক লাইব্রেরি ক্রনিকলস (Revised Updated সংস্করণ)। মডার্ন লাইব্রেরী। পৃষ্ঠা ১০–১২। আইএসবিএন 0-8129-6618-X।
- ↑ "ঈদুল আজহা"। বিবিসি। ৭ সেপ্টেম্বর ২০০৯। ৪ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর ২০১২।
- ↑ সহীহ বুখারী-হাদিস নং-৭৩২-৭৩৩
- ↑ ইসলামী আকীদা ও অনুশীলন। ব্রিটানিকা এডুকেশনাল পাবলিশিং। ২০১০। পৃষ্ঠা 73। আইএসবিএন 978-1-61530-060-0।
- ↑ "নফল ইবাদত সম্পর্কে কী বলেছেন নবিজী (সা.)"। জাগো নিউজ। ২৮ ডিসেম্বর ২০২১। ২৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ আবু ইয়াহিয়া (২০১৩)। তাজবীদের ভিত্তি (২য় সংস্করণ)। পৃষ্ঠা ১।
- ↑ Nigosian (2004), p. 70.
- ↑ আর্মস্ট্রং, লায়ল (২০১৬)। প্রারম্ভিক ইসলামের কুশাস। নেদারল্যান্ডস: ব্রিল। পৃষ্ঠা ১৮৪। আইএসবিএন 9789004335523।
- ↑ "আলহামদুলিল্লাহ"। লেক্সিকো। ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ "আর্কাইভ কপি" (পিডিএফ)। web.archive.org। ২০১৭-০৩-২৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২০।
- ↑ ক খ "শরিয়ত ও আইন"।
- ↑ "শরিয়াহ ও আধুনিক আইন" (পিডিএফ)।
- ↑ "ইসলামি আইন ও বিচার" (পিডিএফ)।
- ↑ ক খ গ ক্রোন, প্যাট্রিসিয়া (১৯৮৭)। রোমান, প্রাদেশিক এবং ইসলামিক আইন: ইসলামিক পৃষ্ঠপোষকদের উৎপত্তি [রোমা, ইয়্যালেট ও ইসলাম হুকুকু: ইসলাম হিমায়েসিনিন কোকেনলেরি] (ইনগিলিজ)। কেমব্রিজ।
- ↑ ইবনে ওয়ারাক (২০০০)। ঐতিহাসিক মুহাম্মাদের সন্ধান। ইন্টারনেট আর্কাইভ। আমহার্স্ট, এনওয়াই: প্রমিথিউস বুকস। আইএসবিএন 978-1-57392-787-1।
- ↑ "ইসলাম ও শরিয়ত"।
- ↑ "শরিয়তের বিধান ও সমালোচনা" (পিডিএফ)।
- ↑ "শরিয়তে শাস্তি" (পিডিএফ)। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ "হিজাব ও সমালোচনা" (পিডিএফ)।
- ↑ "হারাম কি, এর প্রকারভেদ কি কি? - ফতোয়া"। web.archive.org। ২০১৭-০৫-১৪। Archived from the original on ২০১৭-০৫-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২২।
- ↑ "ইসলামি বিধান"। ৯ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ "নামাজ না পড়ার শাস্তি | ফতোয়া সমাবেশ"। web.archive.org। ২০১৩-০২-২৬। Archived from the original on ২০১৩-০২-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২২।
- ↑ নেকাতি ইয়েনি এল, হুসেইন কায়াপিনার, সুনেন-ই ইবু দাউদ, অনুবাদ ও তাফসীর খন্ড. ২, পৃ. ১১২
- ↑ "সমকামিতার শাস্তি | কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে ব্যভিচার ও সমকামিতার ভয়াবহ পরিণতি"। www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২২।
- ↑ "ইসলামে বিয়ের নিয়ম ও বিধান-শর্ত"। banglanews24.com। ২০১৮-১২-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২২।
- ↑ ক খ "একজন নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে কুরআন পুনরায় পড়ার প্রয়াস - আমিনা ওদুদ-কুরআন এবং নারী"।
- ↑ ".:: টিডিভি ইসলামিক এনসাইক্লোপিডিয়া - মহিলা ::"। web.archive.org। ২০১৬-০৮-২২। Archived from the original on ২০১৬-০৮-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২২।
- ↑ "টিডিভিআইএ"। TDVIA (ফরাসি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২২।
- ↑ "Avret শব্দের উৎপত্তি, শব্দের অর্থ- ব্যুৎপত্তি"। www.etimolojiturkce.com (তুর্কি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২২।
- ↑ ক খ "হিজাব সম্পর্কে উপাখ্যান এবং ভাষ্য"। www.nurmend.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২২।
- ↑ "ইসলামে নারী ও পোশাক" (তুর্কি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২২।
- ↑ "ইসলাম (অধ্যায় ২০: ৩৯নং বিষয়) - © পরম বিজ্ঞান"। web.archive.org। ২০২০-০৭-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৮।
- ↑ "কোরানে মেনাদের সাথে অজ্ঞতা আরব তীর্থযাত্রার আচার দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক" (পিডিএফ)। ২২ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ উয়েবারওয়েগ, ফ্রেডরিখ। দর্শনের ইতিহাস, খণ্ড. ১: থ্যালেস থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসবিএন 978-1-4400-4322-2।
- ↑ কোচলার (১৯৮২), এস. ২৯
- ↑ cf. উরি রুবিন, হানিফ, কোরানের বিশ্বকোষ।
- ↑ * লুই জ্যাকবস (১৯৯৫), এস. ২৭২
- টার্নার (২০০৫), এস. ১৬
- ↑ Uğurlu, Nur, Hz. মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, নুর পাবলিকেশন্স।
- ↑ আকতান, আলী (মার্চ ২০১৬)। ইসলামের ইতিহাস (উমাইয়াদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত) (৫ম সংস্করণ)। এস ৫৪ আইএসবিএন 9786051331010.
- ↑ অ্যাকারলিওগ্লু, আহমেদ (২০১৯-০৬-১৫)। "ইসলামপূর্ব আরব সমাজে নারী ও শিশুহত্যা: ইসলামিক ইতিহাসের দৃষ্টিকোণ ও মূল্যায়ন"। রিপাবলিক জার্নাল অফ থিওলজি (তুর্কি ভাষায়)। ২৩ (১): ৪৪১–৪৬০। আইএসএসএন 2528-9861। ডিওআই:10.18505/cuid.535105।
- ↑ Esposito (2010), p. 6.
- ↑ Buhl, F.; Welch, A.T.। "Muhammad"। Encyclopaedia of Islam Online (n.d.)।
- ↑ এস্পোসিটো (2002b), পৃ. ৪-৫
- ↑ পিটার্স (২০০৩), পৃ. ৯
- ↑ "মুহাম্মাদ"। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা অনলাইন।
- ↑ রাবাহ, বিলাল বি. ইসলামি এনসাইক্লোপিডিয়া।
- ↑ উনাল, আলি (২০০৬)। আধুনিক ইংরেজিতে টীকাযুক্ত ব্যাখ্যা সহ কোরান। তুঘরন বুকস্। পৃষ্ঠা ১৩২৩। আইএসবিএন 978-1-59784-000-2।
- ↑ হোল্ট, ল্যাম্বটন & লুইস (১৯৭৭), পৃ. ৩৬.
- ↑ Serjeant (1978), p. 4.
- ↑ পিটার ক্রফোর্ড (২০১৩-০৭-১৬), তিন ঈশ্বরের যুদ্ধ: রোমান, পার্সিয়ান এবং ইসলামের উত্থান, পেন অ্যান্ড সোর্ড বুকস লিমিটেড, পৃষ্ঠা ৮৩, আইএসবিএন 9781473828650 .
- ↑ পিটার্স (২০০৩), পৃ. ৭৮–৭৯, ১৯৪
- ↑ ল্যাপিডাস (২০০২), পৃ. ২৩–২৮
- ↑ বুহল, এফ.; ওয়েলচ, এ.টি.। "মুহাম্মাদ"। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম অনলাইন (n.d.)। Harvc ত্রুটি: no target: CITEREFএনসাইক্লোপিডিয়া_অফ_ইসলাম_অনলাইনn.d. (সাহায্য)
- ↑ মেলচার্ট, ক্রিস্টোফার (২০২০)। "সঠিকভাবে পরিচালিত খলিফা: হাদিসে সংরক্ষিত দৃষ্টিভঙ্গির পরিসর"। আল-সারহান, সৌদ। ইসলামে রাজনৈতিক নীরবতা: সুন্নি এবং শিয়া অনুশীলন ও চিন্তাধারা। লন্ডন এবং নিউইয়র্ক: আই.বি. টরিস। পৃষ্ঠা ৭০–৭১। আইএসবিএন 978-1-83860-765-4।
- ↑ Esposito (2010), p. 40.
- ↑ এস্পোসিটো, জন এল., সম্পাদক (২০০৩-০১-০১)। ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-512558-0।
- ↑ Ismāʻīl ibn ʻUmar Ibn Kathīr (2012), p. 505.
- ↑ ইমাম আবু মুহাম্মদ আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল হাকাম রচিত উমর ইবনে আবদুল আজিজ ২১৪ হিজরি ৮২৯ খ্রিষ্টাব্দ। প্রকাশক জম জাম পাবলিশার্স করাচি, পৃষ্ঠা 54-59
- ↑ নোয়েল জেমস কুলসন (১৯৬৪)। ইসলামী আইনের ইতিহাস। কিং আব্দুল আজিজ পাবলিক লাইব্রেরি। পৃষ্ঠা ১০৩। আইএসবিএন 978-0-7486-0514-9। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ হাউটসমা, এম.টি.; ওয়েনসিঙ্ক, এ.জে.; লেভি-প্রোভেনসাল, ই.; গিব, এইচ.এ.আর.; হেফেনিং, ডব্লিউ., সম্পাদকগণ (১৯৯৩)। ই.জে. ব্রিলস ফার্স্ট এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম, ১৯১৩-১৯৩৬। ভলিউম ৫: এল— মরিসকোস (পুনর্মুদ্রণ সংস্করণ)। ব্রিল পাবলিশার্স। পৃষ্ঠা ২০৭। আইএসবিএন 978-90-04-09791-9।
- ↑ মোশে শ্যারন, সম্পাদক (১৯৮৬)। ইসলামিক ইতিহাস ও সভ্যতার অধ্যয়ন: অধ্যাপক ডেভিড আয়লোনের সম্মানে। ব্রিল। পৃষ্ঠা ২৬৪। আইএসবিএন 9789652640147।
- ↑ মামুরি, আলি (৮ জানুয়ারি ২০১৫)। "খারেজী কারা এবং আইএসের সাথে তাদের কি সম্পর্ক?"। আল-মনিটর। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২২।
- ↑ Blankinship (2008), p. 43.
- ↑ ক খ গ Esposito (2010), p. 87.
- ↑ হোল্ট & লুইস (১৯৭৭), পৃ. ৫৭
- ↑ হাউরানি (২০০২), পৃ. ২২
- ↑ ল্যাপিডাস (২০০২), পৃ. ৩২
- ↑ মাদেলুং (১৯৯৬), পৃ. ৪৩
- ↑ তাবতাবাঈ (১৯৭৯), পৃ. ৩০–৫০
- ↑ Esposito (2010), p. 38.
- ↑ হোল্ট & লুইস (১৯৭৭), পৃ. ৭৪
- ↑ ক খ গার্ডেট & জোমিয়ার (২০১২)
- ↑ Holt & Lewis (1977), pp. 67–72.
- ↑ হারনি, জন (৩ জানুয়ারি ২০১৬)। "সুন্নি এবং শিয়া ইসলাম এর পার্থক্য"। নিউ ইয়র্ক টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ পুচালা, ডোনাল্ড (২০০৩)। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মধ্যে তত্ত্ব এবং ইতিহাস। রাউটলেজ। পৃষ্ঠা ১৩৭।
- ↑ Esposito (2010), p. 45.
- ↑ আল-বিলাধুরী, আহমদ ইবনে জাবির; হিট্টি, ফিলিপ (১৯৬৯)। কিতাব ফুতুহুল-বুলদান। এএমএস প্রেস। পৃষ্ঠা ২১৯।
- ↑ Lapidus (2002), p. 56.
- ↑ Lewis (1993), pp. 71–83.
- ↑ Waines (2003), p. 46.
- ↑ "সাফাহ, আবু আল-আব্বাস আল-" ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান। জন এল এস্পোসিটো, এড. অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস ইনক। ২০০৩। অক্সফোর্ড রেফারেন্স অনলাইন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। অক্সফোর্ড রেফারেন্স ইউআরএল অ্যাক্সেসের তারিখ: ২০০৮-০৫-০৪।
- ↑ ক খ লুইস, বি. "আব্বাসিস (বনু'ল-আব্বাস)।" ইসলাম এনসাইক্লোপিডিয়া। দ্বারা সম্পাদিত: পি. বেয়ারম্যান। বিয়ানকুইস, সি.ই. বসওয়ার্থ, ই. ভ্যান ডনজেল এবং ডব্লিউপি. হেনরিক্স। ব্রিল, ২০০৮। ব্রিল অনলাইন। ইউআরএল অ্যাক্সেসের তারিখ: ২০০৮-০৫-০৪।
- ↑ "ইসলামে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ইতিহাস"। web.archive.org। ২০১৫-০৪-০২। Archived from the original on ২০১৫-০৪-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ "বই সূত্র- উইকিপিডিয়া"। tr.wiki.x.io (তুর্কি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ ল্যাপিডাস (২০০২), p. ৮৬.
- ↑ ক খ শিমেল, অ্যান মেরি। "সুফিবাদ" । এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ ল্যাপিডাস (২০০২), pp. ৯০, ৯১.
- ↑ ব্ল্যাঙ্কিনশিপ (২০০৮), pp. ৩৮-৩৯.
- ↑ ব্ল্যাঙ্কিনশিপ (২০০৮), p. ৫০.
- ↑ ল্যাপিডাস (২০০২), পৃ. ১৬০
- ↑ ওয়েইনস (২০০৩), পৃ. ১২৬–১২৭
- ↑ হোল্ট & লুইস (১৯৭৭), পৃ. ৮০, ৯২, ১০৫
- ↑ হোল্ট, ল্যাম্বটন & লুইস (১৯৭৭), পৃ. ৬৬১–৬৬৩
- ↑ ল্যাপিডাস (২০০২), পৃ. ৫৬
- ↑ লুইস (১৯৯৩), পৃ. ৮৪
- ↑ কিং, ডেভিড এ. (১৯৮৩)। "মামলুকদের জ্যোতির্বিদ্যা"। আইসিস (জার্নাল)। ৭৪ (৪): ৫৩১–৫৫৫। এসটুসিআইডি 144315162। ডিওআই:10.1086/353360।
- ↑ হাসান, আহমদ ওয়াই. ১৯৯৬। "ষোড়শ শতাব্দীর পর ইসলামী বিজ্ঞানের পতনের পেছনের কারণ." পৃ. ৩৫১–৩৯৯। ইসলাম এবং আধুনিকতার চ্যালেঞ্জে, এস.এস. আল-আত্তাস দ্বারা সম্পাদিত। কুয়ালালামপুর: ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইসলামিক থট অ্যান্ড সিভিলাইজেশন। মূল থেকে আর্কাইভকৃত, ২ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "বৈজ্ঞানিক উদ্যোগে ইসলামী পণ্ডিতদের অবদান" (পিডিএফ)।
- ↑ "মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি"। TheGuardian.com। ফেব্রুয়ারি ২০১০।
- ↑ জ্যাকোয়ার্ট, ড্যানিয়েল (২০০৮)। "মধ্যযুগে ইসলামিক ফার্মাকোলজি: তত্ত্ব এবং পদার্থ"। ইউরোপিয়ান রিভিউ (কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস) ১৬: পৃ. ২১৯–২২৭।
- ↑ ডেভিড ডব্লিউ শ্যাঞ্জ, এমএসপিএইচ, পিএইচডি (আগস্ট ২০০৩)। "আরব রুটস অফ ইউরোপিয়ান মেডিসিন", হার্ট ভিউ ৪ (২)।
- ↑ "আবু বকর মোহাম্মদ ইবনে জাকারিয়া আল-রাজি (রাজিস) (৮৬৫-৯২৫ খ্রিস্টাব্দ)"। sciencemuseum.org.uk। ৬ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মে ২০১৫।
- ↑ আলতাস, সৈয়দ ফরিদ (২০০৬)। "জামিআহ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত: বহুসংস্কৃতিবাদ এবং খ্রিস্টান-মুসলিম সংলাপ"। কারেন্ট সোসিওলজি। ৫৪ (১): ১১২–১৩২। এসটুসিআইডি 144509355। ডিওআই:10.1177/0011392106058837।
- ↑ ইমামউদ্দিন, এস.এম. (১৯৮১)। মুসলিম স্পেন ৭১১-১৪৯২ খ্রিস্টাব্দ। ব্রিল পাবলিশার্স। পৃষ্ঠা ১৬৯। আইএসবিএন 978-90-04-06131-6।
- ↑ টুমার, জি. জে. (ডিসে ১৯৬৪)। "পর্যালোচনা কাজ: ম্যাথিয়াস শ্রাম (১৯৬৩) ইবন আল-হাইথামস ওয়েগ জুর ফিজিক"। আইসিস। ৫৫ (৪): ৪৬৪। জেস্টোর 228328।
- ↑ আল-খালিলি, জিম (৪ জানুয়ারি ২০০৯)। "প্রথম সত্যিকারের বিজ্ঞানী"। বিবিসি নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ গোরিনী, রোজানা (অক্টোবর ২০০৩)। "আল-হাইথাম অভিজ্ঞ ব্যক্তি। দৃষ্টি বিজ্ঞানের প্রথম ধাপ" (পিডিএফ)। ইসলামিক মেডিসিনের ইতিহাসের জন্য ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটির জার্নাল। ২ (৪): ৫৩–৫৫। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮।
- ↑ কোয়েটসিয়ার, তেউন (মে ২০০১)। "প্রোগ্রামেবল মেশিনের প্রাগৈতিহাসিক: মিউজিক্যাল অটোমেটা, লুমস, ক্যালকুলেটর"। মেকানিজম এবং মেশিন থিওরি। ৩৬ (৫): ৫৮৯–৬০৩। ডিওআই:10.1016/S0094-114X(01)00005-2।
- ↑ কাটজ, ভিক্টর জে.; বারটন, বিল (১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭)। "শিক্ষণের জন্য বীজগণিতের ইতিহাসের পর্যায়গুলো (প্রভাবসহ)"। এজুকেশনাল স্ট্যাডিজ ইন ম্যাথেমেটিক্স। ৬৬ (২): ১৮৫–২০১। এসটুসিআইডি 120363574। ডিওআই:10.1007/s10649-006-9023-7।
- ↑ আহমেদ (২০০৬), পৃ. ২৩, ৪২, ৮৪
- ↑ ইয়ং, মার্ক (১৯৯৮)। গিনেস বুক অফ রেকর্ডস। ব্যান্টাম। পৃষ্ঠা 242। আইএসবিএন 978-0-553-57895-9।
- ↑ ক খ ব্র্যাগ, রেমি (২০০৯)। মধ্যযুগের কিংবদন্তি: মধ্যযুগীয় খ্রিস্টান, ইহুদি ধর্ম এবং ইসলামের দার্শনিক অনুসন্ধান। ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো প্রেস। পৃষ্ঠা ১৬৪। আইএসবিএন 9780226070803।
- ↑ Hill, Donald. Islamic Science and Engineering. 1993. Edinburgh Univ. Press. আইএসবিএন ০-৭৪৮৬-০৪৫৫-৩, p.4
- ↑ Rémi Brague, Assyrians contributions to the Islamic civilization ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৩-০৯-২৭ তারিখে
- ↑ মেরি, জোসেফ ডব্লিউ এবং জেরে এল বাচারচ। "মধ্যযুগীয় ইসলামী সভ্যতা"। ভলিউম ১, সূচক এ–কে ২০০৬, পৃ. ৩০৪।
- ↑ হোল্ট, পিটার ম্যালকম (২০০৪)। ক্রুসেডার রাষ্ট্র এবং তাদের প্রতিবেশী, ১০৯৮-১২৯১। পিয়ারসন লংম্যান। পৃষ্ঠা ৬। আইএসবিএন 978-0-582-36931-3।
- ↑ লেভি, স্কট ক্যামেরন; সেলা, রন, সম্পাদকগণ (২০১০)। ইসলামিক সেন্ট্রাল এশিয়া: ঐতিহাসিক উৎসের একটি সংকলন। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৮৩।
- ↑ নতুন ফিশার বিশ্ব ইতিহাস "মঙ্গোল পিরিয়ড পর্যন্ত মধ্য এশিয়ায় ইসলামকরণ" ভলিউম ১০: মধ্য এশিয়া, ২০১২, পৃ. ১৯১ (জার্মান)
- ↑ গ্লুব, জন ব্যাগট। "মক্কা (সৌদি আরব)" । এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ আন্দ্রেয়াস গ্রেসার জেনন ভন কিশন: অবস্থান এবং সমস্যা ওয়াল্টার ডি গ্রুটার ১৯৭৫ আইএসবিএন ৯৭৮-৩-১১-০০৪৬৭৩-১ পৃ. ২৬০
- ↑ "ইসলামের স্বর্ণযুগ - ইয়ামান তুরুনার - মিলিয়েত"। web.archive.org। ২০১৬-১০-১১। Archived from the original on ২০১৬-১০-১১। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৭।
- ↑ আর্নল্ড (১৮৯৬), pp. ২২৭–২২৮.
- ↑ "কেন অনেক ভারতীয় মুসলমানকে অস্পৃশ্য হিসাবে দেখা হয়?"। বিবিসি নিউজ। ১০ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ "চীনে ইসলাম"। বিবিসি। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১১।
- ↑ লিপম্যান, জনাথন নিউম্যান (১৯৯৭)। পরিচিত অপরিচিত, উত্তর-পশ্চিম চীনের মুসলমানদের ইতিহাস। সিটল, ডব্লিউএ: ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটন প্রেস। পৃষ্ঠা ৩৩। আইএসবিএন 978-0-295-97644-0।
- ↑ "ইসলামের প্রসার" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ "অটোমান সাম্রাজ্য"। অক্সফোর্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনলাইন। ৬ মে ২০০৮। ২৫ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১০।
- ↑ আদাস, মাইকেল, সম্পাদক (১৯৯৩)। ইসলামী ও ইউরোপীয় সম্প্রসারণ। ফিলাডেলফিয়া: টেম্পল ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 25।
- ↑ মেটকাফ, বারবারা (২০০৯)। অনুশীলনে দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলাম। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ১০৪।
- ↑ লাইটার (২০১৭), pp. ১৪২৫–১৪২৯.
- ↑ ফার্মার, এডওয়ার্ড এল., সম্পাদক (১৯৯৫)। ঝু ইউয়ানঝাং এবং প্রাথমিক মিং আইন: মঙ্গোল শাসনের যুগ অনুসরণ করে চীনা সমাজের পুনর্বিন্যাস। ব্রিল। পৃষ্ঠা ৮২। আইএসবিএন 9004103910।
- ↑ ইসরায়েলি, রাফেল (২০০২)। চীনে ইসলাম। পৃষ্ঠা ২৯২। লেক্সিংটন বই। আইএসবিএন ০-৭৩৯১-০৩৭৫-X.
- ↑ ডিলন, মাইকেল (১৯৯৯)। চীনের মুসলিম হুই সম্প্রদায় । কার্জন। পৃষ্ঠা 37। আইএসবিএন 978-0-7007-1026-3।
- ↑ বুলেট (২০০৫), পৃ. ৪৯৭
- ↑ সাবটেলনি, মারিয়া ইভা (নভেম্বর ১৯৮৮)। "পরবর্তী তিমুরিদের অধীনে সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষকতার আর্থ-সামাজিক ভিত্তি"। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ মিডল ইস্ট স্টাডিজ। ২০ (৪): ৪৭৯–৫০৫। এসটুসিআইডি 162411014। ডিওআই:10.1017/S0020743800053861। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "নাসিরুদ্দিন আল তুসি"। সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯৯। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০২৩।
- ↑ "জামশিদ মাসউদ আল-কাশী"। সেন্ট অ্যান্ড্রুজ বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯৯। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০২১।
- ↑ ড্রিউস, রবার্ট (আগস্ট ২০১১)। "ত্রিশ অধ্যায় - "অটোমান সাম্রাজ্য, ইহুদিবাদ, এবং পূর্ব ইউরোপ থেকে ১৬৪৮ পর্যন্ত"" (পিডিএফ)। পাঠ্যপুস্তক: ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টান এবং ইসলাম, আধুনিক সভ্যতার শুরু থেকে। ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়।
- ↑ পিটার বি গোল্ডেন: তুর্কি জনগণের ইতিহাসের একটি ভূমিকা; ওসমান করতায় , আঙ্কারা ২০০২, পৃষ্ঠা. ৩২১
- ↑ গিলবার্ট, মার্ক জেসন (২০১৭), বিশ্ব ইতিহাসে দক্ষিণ এশিয়া, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, পৃষ্ঠা ৭৫, আইএসবিএন 978-0-19-066137-3
- ↑ গা ́বর এ ́গোস্টন, ব্রুস অ্যালান মাস্টার্সঅটোমান সাম্রাজ্যের এনসাইক্লোপিডিয়া ইনফোবেস পাবলিশিং ২০১০ আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪৩৮১-১০২৫-৭ পৃষ্ঠা, ৫৪০
- ↑ আলগার, আয়লা এসেন (১ জানুয়ারি ১৯৯২)। দরবেশ লজ: অটোমান তুরস্কের স্থাপত্য, শিল্প এবং সুফিবাদ। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস। পৃষ্ঠা ১৫। আইএসবিএন 978-0-520-07060-8। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০২০ – গুগল বুকস্-এর মাধ্যমে।
- ↑ "ভারতে ইমামি শিয়া মতবাদে রূপান্তর" (ইংরেজি ভাষায়)। ইরানিকা অনলাইন। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ তাকের, আর্নেস্ট (১৯৯৪)। "নাদির শাহ ও জা'ফরী মাযহাব পুনর্বিবেচনা করেন"। ইরানি স্টাডিজ। ২৭ (১-৪): ১৬৩–১৭৯। জেস্টোর 4310891। ডিওআই:10.1080/00210869408701825।
- ↑ তাকের, আর্নেস্ট (২৯ মার্চ ২০০৬)। "নাদির শাহ্"। এনসাইক্লোপিডিয়া ইরানিকা।
- ↑ মেরি হকসওয়ার্থ, মরিস কোগান এনসাইক্লোপিডিয়া অফ গভর্নমেন্ট অ্যান্ড পলিটিক্স: ২-ভলিউম সেট রাউটলেজ ২০১৩ আইএসবিএন ৯৭৮-১-১৩৬-৯১৩৩২-৭ পৃ. ২৭০–২৭১
- ↑ এস্পোসিটো (২০১০), p. ১৫০.
- ↑ রিচার্ড গাউভেন সালাফি রিচুয়াল পিউরিটি: ইন দ্য প্রেজেন্স অফ গড রাউটলেজ ২০১৩ আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭১০৩-১৩৫৬-০ পৃ. ৬
- ↑ স্পেভ্যাক, আরণ (২০১৪)। প্রত্নতাত্ত্বিক সুন্নি স্কলার: আল-বাজুরির সংশ্লেষণে আইন, ধর্মতত্ত্ব এবং রহস্যবাদ। সানি প্রেস। পৃষ্ঠা ১২৯–১৩০। আইএসবিএন 978-1-4384-5371-2।
- ↑ ডোনাল্ড কোয়াটার্ট অটোমান সাম্রাজ্য, ১৭০০-১৯২২ কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস ২০০৫ আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫২১-৮৩৯১০-৫ পৃ. ৫০
- ↑ গাবোর অ্যাগোস্টন, ব্রুস অ্যালান দ্য মাস্টার্স এনসাইক্লোপিডিয়া অফ দ্য অটোমান এম্পায়ার ইনফোবেস পাবলিশিং ২০১০ আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪৩৮১-১০২৫-৭ পৃ. ২৬০
- ↑ এস্পোসিটো (২০১০), p. ১৪৬.
- ↑ রুবিন, ব্যারি এম. (২০০০)। ইসলামী আন্দোলনের নির্দেশিকা। এম.ই. শার্প। পৃষ্ঠা ৭৯। আইএসবিএন 0-7656-1747-1। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১০।
- ↑ "মিজদাহে কবর অপবিত্র"। লিবিয়া হেরাল্ড। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ এস্পোসিটো (২০১০), p. ১৪৭.
- ↑ এস্পোসিটো (২০১০), p. ১৪৯.
- ↑ রবার্ট এল ক্যানফিল্ড (২০০২)। ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিতে তুর্কো-পারস্য। ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ১৩১। আইএসবিএন 978-0-521-52291-5।
- ↑ সান্যাল, উষা (২৩ জুলাই ১৯৯৮)। "বিংশ শতাব্দীতে উত্তর ভারতে আহলে সুন্নাত আন্দোলনের নেতৃত্বে প্রজন্মগত পরিবর্তন"। মডার্ন এশিয়ান স্ট্যাডিজ। ৩২ (৩): 635–656। আইএসএসএন 0026-749X। ডিওআই:10.1017/S0026749X98003059 – কেমব্রিজ কোর-এর মাধ্যমে।
- ↑ ল্যাপিডাস (২০০২), pp. ৩৫৮, ৩৭৮–৩৮০, ৬২৪.
- ↑ বুজপিনার, শ. তুফান (মার্চ ২০০৭)। "সেলাল নুরির পাশ্চাত্যকরণ এবং ধর্মের ধারণা"। মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজ। ৪৩ (২): ২৪৭–২৫৮। এসটুসিআইডি 144461915। জেস্টোর 4284539। ডিওআই:10.1080/00263200601114091।
- ↑ লাউজিয়ার, হেনরি (২০১৬)। দ্য মেকিং অফ সালাফিজম: বিংশ শতাব্দীতে ইসলামী সংস্কার। নিউ ইয়র্ক, চিচেস্টার, পশ্চিম সাসেক্স: কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ২৩১–২৩২। আইএসবিএন 978-0-231-17550-0।
- ↑ "রাজনৈতিক ইসলাম: গতিশীল একটি আন্দোলন"। ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিন। ৩ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ ক খ এস্পোসিটো, জন এল. (সম্পাদক)। "মেসেলে" । ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান – অক্সফোর্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনলাইন-এর মাধ্যমে।
- ↑ "নিউ তুর্কি"। আল-আহরাম সাপ্তাহিক (৪৮৮)। ২৯ জুন – ৫ জুলাই ২০০০। ৪ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ মে ২০১০।
- ↑ "ইসলামী সম্মেলন সংস্থা"। বিবিসি নিউজ। ২৬ ডিসেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ হাদ্দাদ & স্মিথ (২০০২), p. ২৭১.
- ↑ জাবেল, ডার্সি (২০০৬)। আমেরিকাতে আরব: আরব প্রবাসীদের আন্তঃবিভাগীয় প্রবন্ধ। অস্ট্রিয়া: পিটার ল্যাং। পৃষ্ঠা ৫। আইএসবিএন 9780820481111।
- ↑ বুলেট (২০০৫), পৃ. ৭২২
- ↑ "আরব বসন্ত থেকে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলোকে নিঃশেষ করা হচ্ছে?"। বিবিসি নিউজ। ৯ আগস্ট ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১১।
- ↑ স্ল্যাকম্যান, মাইকেল (২৩ ডিসেম্বর ২০০৮)। "জর্ডানের ছাত্ররা বিদ্রোহী, রক্ষণশীল ইসলাম গ্রহণ করছে"। নিউ ইয়র্ক টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১১।
- ↑ কার্কপ্যাট্রিক, ডেভিড ডি. (৩ ডিসেম্বর ২০১১)। "মিশরের ভোট ধর্মীয় শাসনের উপর বিভক্তির উপর জোর দেয়"। নিউ ইয়র্ক টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ লাউজিয়ার, হেনরি (২০১৬)। দ্য মেকিং অফ সালাফিজম: বিংশ শতাব্দীতে ইসলামী সংস্কার। নিউ ইয়র্ক, চিচেস্টার, পশ্চিম সাসেক্স: কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ২৩৭। আইএসবিএন 978-0-231-17550-0।
- ↑ জি. রাবিল, রবার্ট (২০১৪)। লেবাননে সালাফিবাদ: অপরাজনীতি থেকে ট্রান্সন্যাশনাল জিহাদিবাদ পর্যন্ত। ওয়াশিংটন ডিসি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 32–33। আইএসবিএন 978-1-62616-116-0।
- ↑ "স্বর্ণ, রৌপ্য ও তামার ইসলামিক দিনার মুদ্রার মালিক আইসিস"। দ্য গার্ডিয়ান। ২১ নভেম্বর ২০১৪।
- ↑ "তুর্কি ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য বিশাল সমাবেশ"। বিবিসি নিউজ। ২৯ এপ্রিল ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ সালেহ, হেবা (১৫ অক্টোবর ২০১১)। "তিউনিসিয়া হেডস্কার্ফের বিরুদ্ধে সরে গেছে"। বিবিসি নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ "আইন স্থাপন: ইসলামের কর্তৃত্বের ঘাটতি"। দি ইকোনমিস্ট। ২৮ জুন ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১১।
- ↑ বোয়ারিং, গেরহার্ড; মির্জা, মহন; ক্রোন, প্যাট্রিসিয়া (২০১৩)। প্রিন্সটন এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলামিক পলিটিক্যাল থট। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৫৯। আইএসবিএন 9780691134840।
- ↑ "মধ্যপ্রাচ্যে অতি রক্ষণশীল ইসলামের উত্থান"। এমএসএনবিসি। ১৮ অক্টোবর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ আলমুখতার, সারাহ; পেকানহা, সার্জিও; ওয়ালেস, টিম (৫ জানুয়ারি ২০১৬)। "স্টার্ক রাজনৈতিক বিভাজনের পিছনে, সুন্নি এবং শিয়াদের আরও জটিল মানচিত্র"। নিউ ইয়র্ক টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ টেমস, নক্স (৬ জানুয়ারি ২০২১)। "কেন মুসলমানদের নিপীড়ন বাইডেনের এজেন্ডায় হওয়া উচিত"। ফরেন পলিসি ম্যাগাজিন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ পেরিন, অ্যান্ড্রু (১০ অক্টোবর ২০০৩)। "সংখ্যায় দুর্বলতা" । টাইম। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ বেডাউন, খালেদ এ.। "চীনের জন্য ইসলাম একটি 'মানসিক ব্যাধি' যার 'নিরাময়' প্রয়োজন" (ইংরেজি ভাষায়)। আল জাজিরা। ১০ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ মোজেস, পল (২০১১)। বলকান গণহত্যা: বিংশ শতাব্দীতে হলোকাস্ট এবং জাতিগত নির্মূল। রোম্যান এবং লিটলফিল্ড। পৃষ্ঠা ১৭৮। আইএসবিএন 978-1-4422-0663-2।
- ↑ "মিয়ানমারের উপর স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের রিপোর্ট"। ohchr.org। ২৭ আগস্ট ২০১৮। ১৯ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ অলিভার হোমস (১৯ ডিসেম্বর ২০১৬)। "মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অভিযান 'মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হতে পারে'"। দ্য গার্ডিয়ান। ৬ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "রোহিঙ্গা নির্যাতন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হতে পারে: অ্যামনেস্টি"। আল জাজিরা। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-২১।
- ↑ স্ল্যাকম্যান, মাইকেল (২৮ জানুয়ারি ২০০৭)। "মিশরে পর্দা নিয়ে শুরু হয় নতুন যুদ্ধ"। নিউ ইয়র্ক টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ১৫ আগস্ট ২০১১।
- ↑ নিগোসিয়ান (২০০৪), p. ৪১.
- ↑ "ইসলামিক টেলিভ্যাঞ্জেলিস্ট; পবিত্র ধোঁয়া"। দি ইকোনমিস্ট। সংগ্রহের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ এস্পোসিটো (২০১০), p. ২৬৩.
- ↑ ভি. সিসলার: দ্য ইন্টারনেট অ্যান্ড দ্য কনস্ট্রাকশন অফ ইসলামিক নলেজ ইন ইউরোপ পৃ. ২১২
- ↑ অ্যাডামস, চার্লস জে। (১৯৮৩)। "মওদুদী এবং ইসলামিক স্টেট"। এস্পোসিটো, জন এল.। রিজার্জেন্ট ইসলামের কণ্ঠস্বর । অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 113–4।
- ↑ মেইসামি, সায়েহ (২০১৩)। "আব্দুল করিম সৌরশ"। অক্সফোর্ড গ্রন্থপঞ্জি (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-১১-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১২।
- ↑ আবদুল্লাহ সাঈদ (২০১৭)। "ধর্মনিরপেক্ষতা, রাষ্ট্রীয় নিরপেক্ষতা এবং ইসলাম"। ফিল জুকারম্যান; জন আর. শক। ধর্মনিরপেক্ষতার অক্সফোর্ড হ্যান্ডবুক। পৃষ্ঠা ১৮৮। আইএসবিএন 978-0-19-998845-7। ডিওআই:10.1093/oxfordhb/9780199988457.013.12।(সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
- ↑ নাদের হাশেমি (২০০৯)। "ধর্মনিরপেক্ষতা"। জন এল. এসপোসিটো। ইসলামিক বিশ্বের অক্সফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া। অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-530513-5।(সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
- ↑ "Data taken from various sources, see description in link"। Wikimedia Commons। ২২ আগস্ট ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০২২।
- ↑ "বিশ্বে মুসলিম জনসংখ্যার ভবিষ্যত"। ২৭ জানুয়ারি ২০১১।
- ↑ লিপকা, মাইকেল এবং কনরাড হ্যাকেট। [২০১৫] ৬ এপ্রিল ২০১৭। "কেন মুসলিমরা বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্মীয় গোষ্ঠী" (তথ্য বিশ্লেষণ)। ফ্যাক্ট ট্যাঙ্ক। পিউ রিসার্চ সেন্টার.
- ↑ ডেভিড বি ব্যারেট, জর্জ টি. কুরিয়ান, এবং টড এম জনসন, ওয়ার্ল্ড ক্রিশ্চিয়ান এনসাইক্লোপিডিয়া: আধুনিক বিশ্বের গীর্জা এবং ধর্মের তুলনামূলক সমীক্ষা, ভলিউম। ১: দেশ অনুসারে বিশ্ব: ধর্মবাদী, গীর্জা, মন্ত্রণালয় ২য় সংস্করণ। (নিউ ইয়র্ক: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সাল প্রেস, ২০০১), ৪.
- ↑ বিশ্ব মুসলিম জনসংখ্যার ভবিষ্যত (প্রতিবেদন)। পিউ রিসার্চ সেন্টার। ২৭ জানুয়ারি ২০১১। ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ ধর্ম ও জনজীবনের জন্য পিউ ফোরাম। এপ্রিল ২০১৫। "বিশ্ব ধর্মের ভবিষ্যত: জনসংখ্যা বৃদ্ধি অনুমান, ২০১০-২০৫০." পিউ রিসার্চ সেন্টার. পৃ. ৭০ নিবন্ধ.
- ↑ ধর্ম ও জনজীবনের জন্য পিউ ফোরাম (২০০৯), p. ১. "মোট মুসলিম জনসংখ্যার মধ্যে, ১০-১৩% শিয়া মুসলিম এবং ৮৭-৯০% সুন্নি মুসলিম।"
- ↑ Pew Forum for Religion & Public Life (2009), p. 11.
- ↑ বা-ইউনুস, ইলিয়াস; কোন, কাসিম (২০০৬)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানরা । গ্রীনউড পাবলিশিং গ্রুপ। পৃষ্ঠা 172। আইএসবিএন 978-0-313-32825-1।
- ↑ "ইসলামের রহস্য"। মার্কিন সংবাদ ও বিশ্ব প্রতিবেদন। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩। আন্তর্জাতিক জনসংখ্যা কেন্দ্র, ভূগোল বিভাগ, সান দিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটি (২০০৫) দ্বারা প্রদত্ত তথ্য।
- ↑ Pew Forum for Religion & Public Life (2009), pp. 15, 17.
- ↑ মার্গারেট ক্লেফনার নাইডেল আরবদের বোঝা: আধুনিক সময়ের জন্য একটি গাইড, আন্তঃসাংস্কৃতিক প্রেস, ২০০৫, আইএসবিএন ১৯৩১৯৩০২৫২, পৃষ্ঠা xxiii, ১৪
- ↑ রিচার্ড ইটন (৮ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "ফরেস্ট ক্লিয়ারিং অ্যান্ড দ্য গ্রোথ অব ইসলাম ইন বাংলা"। বারবারা ডি. মেটকাফ। অনুশীলনে দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলাম। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ২৭৫। আইএসবিএন 978-1-4008-3138-8।
- ↑ মেঘনা গুহঠাকুরতা; উইলেম ভ্যান শেন্ডেল (৩০ এপ্রিল ২০১৩)। বাংলাদেশের পাঠক: ইতিহাস, সংস্কৃতি, রাজনীতি। ডিউক ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৫০। আইএসবিএন 978-0822353188। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ গান্ধী, রাজমোহন (২০১৩)। পাঞ্জাব: আওরঙ্গজেব থেকে মাউন্টব্যাটেন পর্যন্ত ইতিহাস। নতুন দিল্লি, ভারত, আরবানা, ইলিনয়: আলেফ বুক কোম্পানি। পৃষ্ঠা ১। আইএসবিএন 978-93-83064-41-0।.
- ↑ "সব দেশ অন্বেষণ করুন - চীন"। ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯।
- ↑ "চীন (হংকং, ম্যাকাও এবং তিব্বত অন্তর্ভুক্ত)"। আর্কাইভ করা বিষয়বস্তু। ইউ এস স্বরাষ্ট্র বিভাগ। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "ইউরোপের মুসলিম: কান্ট্রি গাইড"। বিবিসি নিউজ। ২৩ ডিসেম্বর ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১০।
- ↑ হ্যাকেট, কনরাড (নভেম্বর ২৯, ২০১৭), "ইউরোপের মুসলিম জনসংখ্যা সম্পর্কে ৫টি তথ্য", পিউ রিসার্চ সেন্টার
- ↑ "ধর্মান্তরকরণ"। বিশ্ব মুসলিম জনসংখ্যার ভবিষ্যত (প্রতিবেদন)। পিউ রিসার্চ সেন্টার। ২৭ জানুয়ারি ২০১১।
বিশ্বব্যাপী ধর্মান্তরের মাধ্যমে মুসলমানদের সংখ্যায় কোনো উল্লেখযোগ্য নেট লাভ বা ক্ষতি নেই; ধর্মান্তরের মাধ্যমে মুসলমান হওয়া লোকের সংখ্যা মোটামুটিভাবে বিশ্বাস ত্যাগকারী মুসলমানদের সংখ্যার সমান
- ↑ "ধর্মীয় পরিবর্তনের কারণে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তন, ২০১০-২০৫০, পৃ.৪৩" (পিডিএফ)। ২৯ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৬।
- ↑ "পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক ধর্মীয় ল্যান্ডস্কেপ"। পিউ রিসার্চ সেন্টার। ৫ এপ্রিল ২০১৭। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০২২।
- ↑ "দ্রুত বর্ধনশীল ইসলাম | পশ্চিমা বিশ্ব"। সিএনএন। ১৫ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৬।
- ↑ "জুন ২০০০ এর জন্য ব্রিটিশ মুসলিম মাসিক সার্ভে, ভলিউম। অষ্টম, নং ৬"। নারী ধর্মান্তরিত হয়। ২০০৮-০২-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৮।
- ↑ "৯/১১-পরবর্তী কৌতূহলের এক ফলাফল ইসলামে ধর্মান্তর"। হাফপোস্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১১-০৮-২৪। ২০২১-০১-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৬।
- ↑ "পশ্চিমা নারীরা কেন ধর্মান্তরিত হয়?"। স্ট্যান্ডপয়েন্ট। ২৬ এপ্রিল ২০১০। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১৬।
- ↑ লিপকা, মাইকেল; হ্যাকেট, কনরাড (এপ্রিল ৬, ২০১৭)। "কেন মুসলিমরা বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্মীয় গোষ্ঠী"। পিউ রিসার্চ সেন্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২১।
- ↑ ধর্ম ও জনজীবনের জন্য পিউ ফোরাম। এপ্রিল, ২০১৫। "বিশ্ব ধর্মের ভবিষ্যত: জনসংখ্যা বৃদ্ধি অনুমান, ২০১০-২০৫০." পিউ রিসার্চ সেন্টার. পৃ. ৭০ নিবন্ধ.
- ↑ "সু্ন্নি"। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ এস্পোসিটো, জন এল., সম্পাদক (২০১৪)। "সুন্নি ইসলাম"। ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান। অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। ২৮ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ Yavuz, ইউসুফ সেভকি (১৯৯৪)। "Ahl as-Sunnah"। ইসলামের বিশ্বকোষ (তুর্কি ভাষায়)। ১০। ইস্তাম্বুল: তুর্কি দিয়ানেট ফাউন্ডেশন। পৃষ্ঠা ৫২৫–৫৩০।
- ↑ ক খ গ "শরিয়াহ্"। লেক্সিকো। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। ২২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ এস্পোসিটো (২০০৩), পৃ. ২৭৫, ৩০৬
- ↑ "সুন্নি ইসলাম।" ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের অভিধান। ভলিউম ২। ডেট্রয়েট: ম্যাকমিলান রেফারেন্স ইউএসএ, ২০০৫। ৪৪০। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি। প্রবল বাতাস.
- ↑ এস্পোসিটো, জন এল., সম্পাদক (২০০৩-০১-০১)। ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-512558-0।
- ↑ "অনুসন্ধান » প্রশ্ন সহ ইসলাম"। প্রশ্ন সহ ইসলাম (তুর্কি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৯।
- ↑ "প্রতিকৃতি: ইয়াজিদ"। ২০১১-০৭-২২। ২০১১-০৭-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৯।
- ↑ নাসর, সাইয়্যেদ হোসেন। "শিয়াধর্ম: ইথানা আশরিয়াহ।" এনসাইক্লোপিডিয়া অফ রিলিজিয়ন। এড লিন্ডসে জোন্স। ভলিউম ১২, ২য় সংস্করণ। ডেট্রয়েট: ম্যাকমিলান রেফারেন্স ইউএসএ, ২০০৫। ৮৩৩৭-৮৩৪৬। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি। প্রবল বাতাস.
- ↑ হাদি এনায়েত ইসলাম এবং উত্তর-ঔপনিবেশিক চিন্তাধারায় ধর্মনিরপেক্ষতা: আসাদীয় বংশোদ্ভূত স্প্রিংগার পাবলিশিং এর একটি মানচিত্র, ৩০ জুন ২০১৭ আইএসবিএন ৯৭৮-৩-৩১৯-৫২৬১১-৯ পৃ. ৪৮
- ↑ রিকো আইজ্যাকস, আলেসান্দ্রো ফ্রিজেরিও থিওরাইজিং সেন্ট্রাল এশিয়ান পলিটিক্স: দ্য স্টেট, আইডিওলজি অ্যান্ড পাওয়ার স্প্রিংগার পাবলিশিং ২০১৮ আইএসবিএন ৯৭৮-৩-৩১৯-৯৭৩৫৫-৫ পৃ. ১০৮
- ↑ এস্পোসিটো (১৯৯৯), p. ২৮০.
- ↑ রিচার্ড গাউভেন সালাফি রিচুয়াল পিউরিটি: ইন দ্য প্রেজেন্স অফ গড রাউটলেজ ২০১৩ আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭১০৩-১৩৫৬-০ পৃ. ৮
- ↑ ক খ স্বান্তে ই. কর্নেল | আজারবাইজানের স্বাধীনতার পর থেকে | এম.ই. শার্প আইএসবিএন ৯৭৮০৭৬৫৬৩০০৪৯ পৃ. ২৮৩
- ↑ রবার্ট ডব্লিউ হেফনার শরীয়া রাজনীতি: আধুনিক বিশ্বে ইসলামিক আইন ও সমাজ ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি প্রেস ২০১১ আইএসবিএন ৯৭৮-০-২৫৩-২২৩১০-৪ পৃ. ১৭০
- ↑ নিউম্যান, অ্যান্ড্রু জে।। শী। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০২১।
- ↑ ভেকিয়া ভ্যাগলিয়েরি, এল. (২০১২)। "গহ্দীর খাহউম্ম"। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম। ব্রিল। আইএসবিএন 9789004161214। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৪, ২০২৩।
- ↑ ক্যাম্পো ২০০৯, পৃ. ২৫৭–২৫৮।
- ↑ ফুডি, ক্যাথলিন (সেপ্টেম্বর ২০১৫)। জেইন, আন্দ্রেয়া আর., সম্পাদক। "ইসলামকে অভ্যন্তরীণ করা: ইরানের ইসলামী প্রজাতন্ত্রে ধর্মীয় অভিজ্ঞতা এবং রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধান"। আমেরিকান একাডেমী অফ রিলিজিয়নের জার্নাল। অক্সফোর্ড: আমেরিকান একাডেমি অফ রিলিজিয়নের পক্ষে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। ৮৩ (৩): ৫৯৯–৬২৩। আইএসএসএন 0002-7189। এলসিসিএন sc76000837। ওসিএলসি 1479270। জেস্টোর 24488178। ডিওআই:10.1093/jaarel/lfv029।
- ↑ কোহলবার্গ, ইটান (১৯৭৬)। "ইমামিয়া থেকে ইছনা-আশরিয়া পর্যন্ত"। স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের বুলেটিন। ৩৯ (৩): ৫২১–৫৩৪। এসটুসিআইডি 155070530। ডিওআই:10.1017/S0041977X00050989। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৪, ২০২৩।
- ↑ তাকের, স্পেন্সার সি।; প্রিসিলা মেরি রবার্টস, সম্পাদকগণ (২০০৮)। দ্য এনসাইক্লোপিডিয়া অফ দ্য আরব-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব: একটি রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সামরিক ইতিহাস। এবিসি-সিএলআইও। পৃষ্ঠা ৯১৭। আইএসবিএন 978-1-85109-842-2।
- ↑ ওয়েহরে, ফ্রেডেরিক এম. (২০১০)। ইরাক প্রভাব: ইরাক যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্য। রেন্ড কর্পোরেশন। পৃষ্ঠা ৯১। আইএসবিএন 978-0-8330-4788-5।
- ↑ "ভূমিকা"। টুয়েলভার শিয়াবাদ: ইসলামের জীবনে ঐক্য ও বৈচিত্র্য, ৬৩২ থেকে ১৭২২। এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটি প্রেস। ২০১৩। পৃষ্ঠা ২। আইএসবিএন 978-0-7486-7833-4। ১ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ রবার্ট ব্রেন্টন বেটস (৩১ জুলাই ২০১৩)। সুন্নি-শিয়া বিভাজন: ইসলামের অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং তাদের বৈশ্বিক পরিণতি। পোটোম্যাক বুকস্। পৃষ্ঠা ১৪–১৫। আইএসবিএন 978-1-61234-522-2। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ হফম্যান, ভ্যালেরি জন (২০১২)। ইবাদি ইসলামের প্রয়োজনীয়তা। সিরাকিউস: সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৩–৪। আইএসবিএন 9780815650843।
- ↑ "আহমদী কারা?"। bbc.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ বিশ্বাস ভঙ্গ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। জুন ২০০৫। পৃষ্ঠা ৮। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১৪।
- ↑ ক্যাম্পো (২০০৯), পৃ. ২৪
- ↑ "আহমদীয়া মুসলমান"। ধর্ম ও নীতিশাস্ত্র নিউজ উইকলি। পিবিএস। ২০ জানুয়ারি ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ এস্পোসিটো (২০০৪), p. 11.
- ↑ ধুমে, সদানন্দ (১ ডিসেম্বর ২০১৭)। "পাকিস্তান মুসলিম সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করছে"। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। আইএসএসএন 0099-9660। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জুলাই ২০১৮।
- ↑ "বেক্তাসিয়া - এনসাইক্লোপিডিয়া ইরানিকা"। www.iranicaonline.org।
- ↑ জর্গেন এস নিলসেন ইউরোপে মুসলিম রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটি প্রেস ২০১৩ আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৪৮-৬৭৭৫৩-৫ পৃ. ২৫৫
- ↑ জন শিন্ডেলডেকার: তুর্কি আলেভিস আজ: আলেভি জনসংখ্যার আকার এবং বিস্তুার, পিডিএফ ফাইল, আরও দেখুন প্রাচ্যের এনসাইক্লোপিডিয়া: আলেভি, ৩০ মে ২০১৭ এ পরামর্শ করা হয়েছে।
- ↑ মুসা, আয়েশা (২০১০)। "কুরআনবাদী"। ধর্ম কম্পাস। জন উইলি অ্যান্ড সন্স। ৪ (১): ১২–২১। ডিওআই:10.1111/j.1749-8171.2009.00189.x।
- ↑ মুসা, আয়েশা (২০১০)। "কুরআনবাদী"। ধর্ম কম্পাস (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ (১): ১২–২১। আইএসএসএন 1749-8171। ডিওআই:10.1111/j.1749-8171.2009.00189.x।
- ↑ ব্রাউন, ড্যানিয়েল ডব্লিউ. (১৯৯৯-০৩-০৪)। আধুনিক ইসলামী চিন্তাধারায় ঐতিহ্যের পুনর্বিবেচনা (ইংরেজি ভাষায়)। ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৭–৪৫, ৬৮। আইএসবিএন 978-0-521-65394-7।
- ↑ জুইনবোল, জি. এইচ. এ. (১৯৬৯)। ঐতিহ্য সাহিত্যের প্রামাণিকতা: আধুনিক মিশরের আলোচনা (ইংরেজি ভাষায়)। ব্রিল আর্কাইভ। পৃষ্ঠা ২৩–২৫।
- ↑ "নাম পরিবর্তন কেন?" (পিডিএফ)। জমা পরিপ্রেক্ষিত। ৫৭: ১। সেপ্টেম্বর ১৯৮৯। ৩১ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ বেনাকিস, থিওডোরোস (১৩ জানুয়ারি ২০১৪)। "ইউরোপে ইসলামফোবিয়া!"। নিউ ইউরোপ। ব্রাসেলস। ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০১৫।
মধ্য এশিয়ায় ভ্রমণ করেছেন এমন যে কেউ অ-সাম্প্রদায়িক মুসলমানদের সম্পর্কে জানেন—যারা শিয়া বা সাউনাইট নয়, কিন্তু যারা সাধারণত ইসলামকে ধর্ম হিসেবে গ্রহণ করে।
- ↑ পোলাক, কেনেথ (২০১৪)। ইরান ও আমেরিকার পরিকল্পনা। সাইমন এবং শুস্টার। পৃষ্ঠা ২৯। আইএসবিএন 978-1-4767-3393-7।
যদিও অনেক ইরানি কট্টরপন্থী শিয়া নৃশংসতাবাদী, খোমেনি মতাদর্শ বিপ্লবকে প্যান-ইসলামবাদী হিসাবে দেখেছিল এবং সেইজন্য সুন্নি, শিয়া, সুফি এবং অন্যান্য, আরও অসাম্প্রদায়িক মুসলমানদের গ্রহণ করেছিল।
- ↑ বার্নস্, রবার্ট (২০১১)। খ্রিস্টান, ইসলাম এবং পশ্চিমা বিশ্ব। আমেরিকার ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৫৫। আইএসবিএন 978-0-7618-5560-6।
আমেরিকান-ইসলামিক সম্পর্কের কাউন্সিল অনুসারে ৫০ শতাংশ নিজেদেরকে "শুধু একজন মুসলিম" বলে অভিহিত করেছেন
- ↑ টাটারি, ইরেন (২০১৪)। ব্রিটিশ স্থানীয় সরকারে মুসলমান: হ্যাকনি, নিউহ্যাম এবং টাওয়ার হ্যামলেটে সংখ্যালঘুদের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করা। ব্রিল। পৃষ্ঠা ১১১। আইএসবিএন 978-90-04-27226-2।
উনিশজন বলেছেন যে তারা সুন্নি মুসলমান, ছয়জন বলেছেন যে তারা কোনো সম্প্রদায় উল্লেখ না করেই শুধু মুসলিম, দুজন বলেছেন তারা আহমদী, এবং দুজন বলেছেন তাদের পরিবার আলেভি।
- ↑ লোপেজ, রালফ্ (২০০৮)। বুশিজমের যুগে সত্য। লুলু.কম। পৃষ্ঠা ৬৫। আইএসবিএন 978-1-4348-9615-5।
অনেক ইরাকি সাংবাদিকদের সুন্নি বা শিয়া হিসেবে চিহ্নিত করার প্রচেষ্টায় ক্ষুব্ধ হয়। ২০০৪ সালের ইরাক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ জরিপে দেখা গেছে যে ইরাকিদের সবচেয়ে বড় শ্রেণী নিজেদেরকে "শুধু মুসলিম" হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে।
- ↑ "অধ্যায় ১: ধর্মীয় অনুষঙ্গ"। বিশ্বের মুসলিম: ঐক্য এবং বৈচিত্র্য। পিউ রিসার্চ সেন্টারের ধর্ম ও জনজীবন প্রকল্প। ৯ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ এস্পোসিটো (২০০৩), পৃ. ৩০২
- ↑ মালিক & হিনেলস (২০০৬), পৃ. ৩
- ↑ টার্নার (১৯৯৮), পৃ. ১৪৫
- ↑ ট্রিমিংহাম (১৯৯৮), পৃ. ১
- ↑ আন্দানি, খলিল। "ইসমাইলি স্টাডিজের একটি সমীক্ষা পার্ট ১: প্রারম্ভিক ইসমাইলিজম এবং ফাতিমিদ ইসমাইলিজম।" ধর্ম কম্পাস ১০.৮ (২০১৬): পৃ. ১৯১–২০৬।
- ↑ মানরজেফ, মাহদী। [২০০৯] ২০১৬। "আরবি এবং ইসলামী দর্শনে রহস্যবাদ." স্ট্যানফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ফিলোসফি, ই.এন. জাল্টা দ্বারা সম্পাদিত। ২৫ মে ২০২০ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
- ↑ নিশ, আলেকজান্ডার, ২০১৫।ঐতিহাসিক পরিপ্রেক্ষিতে ইসলাম। রাউটলেজ। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৩১৭-৩৪৭১২-৫. পৃ. ২১৪।
- ↑ হ্যাভিল্যান্ড, চার্লস (৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৭)। "রুমির গর্জন – ৮০০ বছর পর"। বিবিসি নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১১।
- ↑ "ইসলাম: জালালউদ্দিন রুমি"। বিবিসি। ১ সেপ্টেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১১।
- ↑ ক খ চিটিক (২০০৮), pp. ৩–৪, ১১.
- ↑ নাসর, সৈয়দ হোসেন (১৯৯৩)। ইসলামী মহাজাগতিক মতবাদের একটি ভূমিকা। সানি প্রেস। পৃষ্ঠা 192। আইএসবিএন 978-0-7914-1515-3। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ পিকক (২০১৯), p. ২৪,৭৭.
- ↑ কুক, ডেভিড (মে ২০১৫)। "সুফি ইসলামে অতিন্দ্রিবাদ"। অক্সফোর্ড রিসার্চ এনসাইক্লোপিডিয়া অফ রিলিজিয়ন। অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 9780199340378। ডিওআই:10.1093/acrefore/9780199340378.013.51 । ২৮ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "তরিকা | ইসলাম"। Britannica.com। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৫।
- ↑ বুকার, জন (২০০০)। বিশ্ব ধর্মের সংক্ষিপ্ত অক্সফোর্ড অভিধান। আইএসবিএন 978-0-19-280094-7। ডিওআই:10.1093/acref/9780192800947.001.0001।
- ↑ সান্যাল, উশা (১৯৯৮)। "বিংশ শতাব্দীতে উত্তর ভারতে আহলে সুন্নাত আন্দোলনের নেতৃত্বে প্রজন্মগত পরিবর্তন"। মডার্ন এশিয়ান স্টাডিজ। ৩২ (৩): ৬৩৫–৬৫৬। ডিওআই:10.1017/S0026749X98003059। ১৭ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ । "আলসুন্না ও আলগামার অনুসারী"। এস্পোসিটো (২০০৩)। harvc: no authors in contributor list. (সাহায্য) – অক্সফোর্ড রেফারেন্সের মাধ্যমে।
- ↑ আলভি, ফারহাত। "মধ্য এশিয়ায় সুফিবাদের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা" (পিডিএফ)।
- ↑ জনস, অ্যান্টনি এইচ (১৯৯৫)। "দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সুফিবাদ: প্রতিফলন এবং পুনর্বিবেচনা"। জার্নাল অফ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান স্টাডিজ। ২৬ (১): ১৬৯–১৮৩। এসটুসিআইডি 154870820। জেস্টোর 20071709। ডিওআই:10.1017/S0022463400010560।
- ↑ "অধ্যায় ১: ধর্মীয় অনুষঙ্গ"। বিশ্বের মুসলিম: ঐক্য এবং বৈচিত্র্য। পিউ রিসার্চ সেন্টার এর ধর্ম ও জনজীবন প্রকল্প। ৯ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ বাবু, চেখ আন্তা (২০০৭)। "সেনেগালে সুফিবাদ এবং ধর্মীয় ভ্রাতৃত্ব"। আফ্রিকান হিস্টোরিক্যাল স্টাডিজের আন্তর্জাতিক জার্নাল। ৪০ (১): ১৮৪–১৮৬।
- ↑ "ইসলামি আইন"। ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০২৩ – অক্সফোর্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনলাইন-এর মাধ্যমে।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ভিকর, নাট এস. ২০১৪. "শরিয়াহ্." দ্য অক্সফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম অ্যান্ড পলিটিক্সে, ই. শাহিন সম্পাদিত।অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আর্কাইভকৃত মূল ৪ জুন ২০১৪ তারিখে। ২৫ মে ২০২০ তারিখে সংগৃহীত।
- ↑ মুসলিম পারিবারিক আইনে নারী। সিরাকিউজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। ২০০১। পৃষ্ঠা ২। আইএসবিএন 978-0-8156-2908-5।
- ↑ ক খ গ এস্পোসিটো, জন এল. (সম্পাদক)। "ইসলামি আইন"। ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০২৩ – অক্সফোর্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনলাইন-এর মাধ্যমে।
- ↑ লেমান (২০০৬), p. 214.
- ↑ Nigosian (2004), p. 116.
- ↑ ক খ মায়ার, অ্যান এলিজাবেথ। ২০০৯। "আইন, আধুনিক আইনি সংস্কার ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে." ইসলামিক ওয়ার্ল্ডের অক্সফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়াতে, জে এল এসপোসিটো দ্বারা সম্পাদিত। অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস.
- ↑ আন-নাঈম, আবদুল্লাহ এ. (১৯৯৬)। "Islamic Foundations of Religious Human Rights"। উইট্টে, জন; ভ্যান ডের ভাইভার, জোহান ডি.। বিশ্বব্যাপী দৃষ্টিভঙ্গিতে ধর্মীয় মানবাধিকার: ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ। পৃষ্ঠা ৩৩৭–৩৫৯। আইএসবিএন 978-90-411-0179-2।
- ↑ হাজ্জার, লিসা (২০০৪)। "মুসলিম সমাজে ধর্ম, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এবং গার্হস্থ্য সহিংসতা: তুলনামূলক বিশ্লেষণের জন্য একটি কাঠামো"। আইন ও সামাজিক অনুসন্ধান। ২৯ (১): ১–৩৮। এসটুসিআইডি 145681085। জেস্টোর 4092696। ডিওআই:10.1111/j.1747-4469.2004.tb00329.x।
- ↑ Bharathi, K. S. 1998. Encyclopedia of Eminent Thinkers. p. 38.
- ↑ Weiss (2002), pp. 3, 161.
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ব্লেয়ার, শিলা এস. এবং জোনাথন এম. ব্লুম। "শিল্প." ইসলাম এবং মুসলিম বিশ্বের বিশ্বকোষ। এড. রিচার্ড সি মার্টিন। ভলিউম ১। নিউ ইয়র্ক: ম্যাকমিলান রেফারেন্স ইউএসএ, ২০০৪। পৃ. ৭৫-৮২। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ "ইসলামিক আর্টস।" ইসলামী বিশ্বের ঐতিহাসিক এটলাস। ডার্বি, যুক্তরাজ্য: কার্টোগ্রাফিকা, ২০০৪। পৃ. ১৭২-১৭৫। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ ক খ এস্পোসিটো, জন এল., সম্পাদক (২০০৩-০১-০১)। ইসলামের অক্সফোর্ড অভিধান (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-512558-0।
- ↑ "কুহনেল, ই. "আরবেস্ক।" ইসলাম এনসাইক্লোপিডিয়া"।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ এস্পোসিটো, জন এল., সম্পাদক (২০০৩-০১-০১)। "ক্যালিগ্রাফি এন্ড এপিগ্রাফি" (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-512558-0।
- ↑ ক খ "ইসলাম ও শিল্প"।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Esposito, John L., সম্পাদক (২০০৩-০১-০১)। The Oxford Dictionary of Islam (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-512558-0।
- ↑ ক খ এস্পোসিটো, জন এল., সম্পাদক (২০০৩-০১-০১)। ইসলাম ও বিজ্ঞান (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-512558-0।
- ↑ ক খ হিউজ, অ্যারন। "বিজ্ঞান, ইসলাম এবং।" ইসলাম এবং মুসলিম বিশ্বের বিশ্বকোষ। এড. রিচার্ড সি মার্টিন। ভলিউম ২। নিউ ইয়র্ক: ম্যাকমিলান রেফারেন্স ইউএসএ, ২০০৪। পৃ. ৬১১-৬১৪।
- ↑ "ইলম"। ৫ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ গ্রান্ট, ই। "বিজ্ঞান (মধ্যযুগে)।" নিউ ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়া। ভলিউম ১২। ২য় সংস্করণ। ডেট্রয়েট: গেল, ২০০৩. ৮০৭-৮১৫। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ ব্রেন্টজেস, সোনজা। "ইসলামী বিজ্ঞান।" ধারণার ইতিহাসের নতুন অভিধান। এড. মেরিয়ান ক্লাইন হরোভিটজ। ভলিউম ৩। ডেট্রয়েট: চার্লস স্ক্রিবনার্স সন্স, ২০০৫। ১১৫৫-১১৬০। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ ক খ পিটার্স, টেড। "বিজ্ঞান এবং ধর্ম।" এনসাইক্লোপিডিয়া অফ রিলিজিয়ন। এড. লিন্ডসে জোন্স। ভলিউম ১২, ২য় সংস্করণ। ডেট্রয়েট: ম্যাকমিলান রেফারেন্স ইউএসএ, ২০০৫। ৮১৮০-৮১৯২। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ শেফার, বডি। "ইসলামিক চিকিৎসা।" ধারণার ইতিহাসের নতুন অভিধান। এড. মেরিয়ান ক্লাইন হরোভিটজ। ভলিউম ৪। ডেট্রয়েট: চার্লস স্ক্রিবনার্স সন্স, ২০০৫। ১৪১২-১৪১৩। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ তাইলান, নেসিপ। "ইসলামী দর্শন"। পৃ. ১৩৬-১৩৮।
- ↑ তাইলান, নেসিপ। পৃ. ১৬৫-২০১।
- ↑ ক খ তাইলান, নেসিপ। পৃ. ২৪৪-২৫৪।
- ↑ তাইলান, নেসিপ। পৃ. ১৪৩।
- ↑ ক খ পিটার্স, টেড। "বিজ্ঞান এবং ধর্ম।" এনসাইক্লোপিডিয়া অফ রিলিজিয়ন। এড লিন্ডসে জোন্স। ভলিউম ১২, ২য় সংস্করণ। ডেট্রয়েট: ম্যাকমিলান রেফারেন্স ইউএসএ, ২০০৫। পৃ. ৮১৮০-৮১৯২। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ গ্রান্ট, ই। "বিজ্ঞান (মধ্যযুগে)।" নিউ ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়া। ভলিউম ১২। ২য় সংস্করণ। ডেট্রয়েট: গেল, ২০০৩। পৃ. ৮০৭-৮১৫। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ ব্রেন্টজেস, সোনজা। "ইসলামী বিজ্ঞান।" ধারণার ইতিহাসের নতুন অভিধান। এড. মেরিয়ান ক্লাইন হরোভিটজ। ভলিউম ৩। ডেট্রয়েট: চার্লস স্ক্রিবনার্স সন্স, ২০০৫। পৃ. ১১৫৫-১১৬০। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ হিউজ, অ্যারন। "বিজ্ঞান, ইসলাম এবং।" ইসলাম এবং মুসলিম বিশ্বের বিশ্বকোষ। এড. রিচার্ড সি মার্টিন। ভলিউম ২। নিউ ইয়র্ক: ম্যাকমিলান রেফারেন্স ইউএসএ, ২০০৪। পৃ. ৬১১-৬১৪। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ ব্রেন্টজেস, সোনজা। "ইসলামী বিজ্ঞান।" এর নতুন অভিধান, দালিনী কাপসায়াক সেকিল্ডেদি। ধারণার ইতিহাস। এড. মেরিয়ান ক্লাইন হরোভিটজ। ভলিউম ৩। ডেট্রয়েট: চার্লস স্ক্রিবনার্স সন্স, ২০০৫। পৃ. ১১৫৫-১১৬০। গেল ভার্চুয়াল রেফারেন্স লাইব্রেরি।
- ↑ জেমস থার্বার, "দ্য উইজার্ড অফ চিটেন্যাঙ্গো", পৃ. ৬৪। ফ্যান্টাসিস্ট অন ফ্যান্টাসিস্ট সম্পাদিত, রবার্ট এইচ. বোয়ার এবং কেনেথ জে. জাহোর্স্কি,
- ↑ মারাশি, মেহদী (১৯৯৪-০১-০১)। উত্তর আমেরিকায় পার্সিয়ান স্টাডিজ: স্টাডিস ইন অনার অফ মোহাম্মদ আলী জাযায়েরি (ইংরেজি ভাষায়)। ইরানবুকস্। আইএসবিএন 978-0-936347-35-6।
- ↑ শিফম্যান, হ্যারল্ড (২০১১-১২-০৯)। আফগানিস্তান এবং এর প্রতিবেশীদের ভাষা নীতি এবং ভাষার দ্বন্দ্ব: ভাষা পছন্দের পরিবর্তনশীল রাজনীতি (ইংরেজি ভাষায়)। ব্রিল। আইএসবিএন 978-90-04-20145-3।
- ↑ ক্যাম্পবেল, জর্জ এল.; কিং, গ্যারেথ (২০২০-০৭-০১)। বিশ্বের ভাষার সংকলন (ইংরেজি ভাষায়)। রাউটলেজ। আইএসবিএন 978-1-136-25846-6।
- ↑ ফ্রাই, আর.এন., "দারি", দ্য এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম, ব্রিল পাবলিকেশন্স, সিডি সংস্করণ।
- ↑ উজুন, মেহমেদ (২০০৭) [১৯৯২]। দেশপেকা কিতাবা কুর্দি [কুর্দি সাহিত্যের ভূমিকা] (৫ম সংস্করণ)। ইথাকা এস. ২৩।
- ↑ ক খ গ ঘ আলম, মাহবুবুল। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (পঞ্চদশ সংস্করণ)। ৯ বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০: খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি।
- ↑ সোহেল, শাহরিয়ার। "নজরুলের সাহিত্য ও ইসলাম"। DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২১।
- ↑ সোহেল, শাহরিয়ার। "নজরুলের সাহিত্য ও ইসলাম"। DailyInqilabOnline। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২১।
- ↑ ওয়াস্টল-ওয়াল্টার, ডরিস (২০১১)। বর্ডার স্টাডিজের অ্যাশগেট রিসার্চ কম্প্যানিয়ন (ইংরেজি ভাষায়)। অ্যাশগেট পাবলিশিং, লি.। আইএসবিএন 978-0-7546-7406-1।
- ↑ হামিত কামাল, উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য তুর্কি সাহিত্য! ইতিহাস, একটি প্রকাশনা, আঙ্কারা ২০০৭
- ↑ ক খ "নিহাদ সামি বানারলি"। Vikipedi (তুর্কি ভাষায়)। ২০২২-১০-২৮।
- ↑ মেরি, জোসেফ ডব্লিউ. (২০০৬)। মধ্যযুগীয় ইসলামী সভ্যতা: একটি বিশ্বকোষ (ইংরেজি ভাষায়)। সাইকোলজি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-415-96690-0।
- ↑ মোরেহ (১৯৮৬), "মধ্যযুগীয় ইসলামে লাইভ থিয়েটার", ডেভিড আয়লন, মোশে শ্যারন (সম্পাদনা), স্টাডিজ ইন ইসলামিক হিস্ট্রি অ্যান্ড সিভিলাইজেশন, ব্রিল পাবলিশার্স, এসএস। পৃ. ৫৬৫-৬০১, ISBN 965-264-014-X
- ↑ "ইমাম"। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ ওলি (২য় সংস্করণ)। লিডেন: ব্রিল পাবলিশার্স। ২০১২ [১৯৯৩]। আইএসবিএন 978-90-04-16121-4। ডিওআই:10.1163/1573-3912_islam_COM_1335।
- ↑ ইকবাল, জমির, আব্বাস মীরাখোর, নুরউদ্দিন ক্রিচেন এবং হোসেন আসকারি। ইসলামিক ফাইন্যান্সের স্থিতিশীলতা: একটি স্থিতিস্থাপক আর্থিক পরিবেশ তৈরি করা। পৃ. ৭৫।
- ↑ শচ্ট, জোসেফ। "রিবা"। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম অনলাইন (n.d.)। Harvc ত্রুটি: no target: CITEREFএনসাইক্লোপিডিয়া_অফ_ইসলাম_অনলাইনn.d. (সাহায্য)
- ↑ ফোস্টার, জন (১ ডিসেম্বর ২০০৯)। "ইসলামিক ফাইন্যান্স কিভাবে স্বর্গীয় সুযোগ হাতছাড়া করেছে"। বিবিসি। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ মার্চেন্ট, ব্রায়ান (১৪ নভেম্বর ২০১৩)। "একটি ন্যূনতম আয়ের গ্যারান্টি শতাব্দী ধরে একটি ইউটোপিয়ান স্বপ্ন হয়েছে"। ভিআইসিই। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুন ২০১৯।
- ↑ আল-বুরাই, মুহাম্মদ (১৯৮৫)। প্রশাসনিক উন্নয়ন: একটি ইসলামী দৃষ্টিকোণ। কেপিআই। পৃষ্ঠা ২৫২। আইএসবিএন 978-0-7103-0059-1।
- ↑ আকগুন্ডুজ, আহমেদ; ওজতুর্ক, সেইড (২০১১)। অটোমান ইতিহাস: ভুল ধারণা এবং সত্য। আইইউআর প্রেস। পৃষ্ঠা ৫৩৯। আইএসবিএন 978-90-90-26108-9। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ আল-জাওজি, ইবনে (২০০১)। ওমর বিন আবদ আল-আজিজের জীবনী এবং গুণাবলী – দ্য অ্যাসেটিক খলিফা। আইইউআর প্রেস। পৃষ্ঠা ১৩০।
- ↑ ক খ ফায়ারস্টোন (১৯৯৯), pp. ১৭–১৮.
- ↑ ক খ আফসারউদ্দিন, আসমা। "জিহাদ" । এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ ব্রকপপ (২০০৩), পৃ. ৯৯–১০০
- ↑ এস্পোসিটো (২০০৩), পৃ. ৯৩
- ↑ ক খ ফায়ারস্টোন (১৯৯৯), p. ১৭.
- ↑ ক খ গ তিয়ান, ই.। "জিহাদ"। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম (২য় সংস্করণ) (২০১২)। ডিওআই:10.1163/1573-3912_islam_COM_0189
- ↑ হ্যাবেক, মেরি আর. নোয়িং দ্য এনিমি: জিহাদিস্ট আইডিওলজি অ্যান্ড দ্য ওয়ার অন টেরর। ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃ. ১০৮-১০৯, ১১৮।
- ↑ সাচেদিনা (১৯৯৮), pp. ১০৫–১০৬.
- ↑ নাসর (২০০৩), p. ৭২.
- ↑ Fahd Salem Bahammam। Food and Dress in Islam: An explanation of matters relating to food and drink and dress in Islam। Modern Guide। পৃষ্ঠা 1। আইএসবিএন 978-1-909322-99-8।
- ↑ Curtis (2005), পৃ. 164
- ↑ Esposito (2002b), পৃ. 111
- ↑ Glassé, C (২০০১)। The New Encyclopedia of Islam (ইংরেজি ভাষায়)। AltaMira Press। পৃষ্ঠা 158।
- ↑ Zine, Jasmin; Babana-Hampton, Safoi; Mazid, Nergis; Bullock, Katherine; Chishti, Maliha। American Journal of Islamic Social Sciences 19:4 (ইংরেজি ভাষায়)। International Institute of Islamic Thought (IIIT)। পৃষ্ঠা 59। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০২০।
- ↑ Esposito, John। "Oxford Islamic Studies Online"। Oxford University Press। ১৪ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মে ২০১৩।
- ↑ Waines (2003), পৃ. 93–96
- ↑ Esposito (2003), পৃ. 339
- ↑ Esposito (1998), পৃ. 79
- ↑ Newby, Gordon D. (২০০২)। A concise encyclopedia of Islam। Oxford: Oneworld Publications। পৃষ্ঠা 141। আইএসবিএন 978-1-85168-295-9।
- ↑ Nasr, Seyyed Hossein (২০০১)। Islam : religion, history, and civilization। New York: HarperOne। পৃষ্ঠা 68। আইএসবিএন 978-0-06-050714-5।
- ↑ Ratno Lukito। Legal Pluralism in Indonesia: Bridging the Unbridgeable। Routledge। পৃষ্ঠা 81।
- ↑ "IslamWeb"। IslamWeb। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১১।
- ↑ Eaton, Gai (২০০০)। Remembering God: Reflections on Islam। Cambridge: The Islamic Texts Society। পৃষ্ঠা 92–93। আইএসবিএন 978-0-946621-84-2।
- ↑ "Why Can't a Woman have 2 Husbands?"। 14 Publications। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ Campo (2009), p. 106.
- ↑ ক খ Nigosian (2004), p. 120.
- ↑ "Khitān"। Encyclopædia Britannica। Encyclopædia Britannica, Inc.। ২০১৪। ২৭ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২০।
- ↑ Anwer, Abdul Wahid; Samad, Lubna; Baig-Ansari, Naila; Iftikhar, Sundus (জানুয়ারি ২০১৭)। "Reported Male Circumcision Practices in a Muslim-Majority Setting"। BioMed Research International। Hindawi Publishing Corporation। 2017: 1–8। ডিওআই:10.1155/2017/4957348 । পিএমআইডি 28194416। পিএমসি 5282422 ।
- ↑ "Islam: Circumcision of boys"। Religion & ethics—Islam। Bbc.co.uk। ১৩ আগস্ট ২০০৯। ১২ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২০।
- ↑ Campo (2009), p. 136.
- ↑ Mathijssen, Brenda; Venhorst, Claudia; Venbrux, Eric; Quartier, Thomas (২০১৩)। Changing European Death Ways। Austria: Lit। পৃষ্ঠা 265। আইএসবিএন 9783643900678।
- ↑ Stefon (2010), p. 83.
- ↑ Rahman, Rema (২৫ অক্টোবর ২০১১)। "Who, What, Why: What are the burial customs in Islam?"। BBC। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০২২।
- ↑ Melikian, Souren (৪ নভেম্বর ২০১১)। "'Islamic' Culture: A Groundless Myth" । The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ Esposito (2010), p. 56.
- ↑ Lawrence, Bruce (২০২১)। Islamicate Cosmopolitan Spirit। United Kingdom: Wiley। পৃষ্ঠা xii। আইএসবিএন 9781405155144।
- ↑ Ettinghausen, Richard; Grabar, Oleg; Jenkins-Madina, Marilyn (২০০৩)। Islamic Art and Architecture 650-1250 (2nd সংস্করণ)। Yale University Press। পৃষ্ঠা 3। আইএসবিএন 0-300-08869-8।
- ↑ Suarez, Michael F. (২০১০)। "38 The History of the Book in the Muslim World"। The Oxford companion to the book। Oxford and New York: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 331ff। আইএসবিএন 9780198606536। ওসিএলসি 50238944।
- ↑ Salim Ayduz; Ibrahim Kalin; Caner Dagli (২০১৪)। The Oxford Encyclopedia of Philosophy, Science, and Technology in Islam। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 263। আইএসবিএন 978-0-19-981257-8।
Figural representation is virtually unused in Islamic art because of Islam's strong antagonism of idolatry. It was important for Muslim scholars and artists to find a style of art that represented the Islamic ideals of unity (tawhid) and order without figural representation. Geometric patterns perfectly suited this goal.
- ↑ T. W. Arnold (জুন ১৯১৯)। "An Indian Picture of Muhammad and His Companions"। The Burlington Magazine for Connoisseurs। The Burlington Magazine for Connoisseurs, Vol. 34, No. 195.। 34 (195): 249–252। জেস্টোর 860736।
- ↑ Isichei, Elizabeth Allo (১৯৯৭)। A history of African societies to 1870। Cambridge: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 175। আইএসবিএন 978-0-521-45599-2। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১০।
- ↑ Tjahjono, Gunawan (১৯৯৮)। Indonesian Heritage-Architecture। Singapore: Archipelago Press। পৃষ্ঠা 88–89। আইএসবিএন 981-3018-30-5।
- ↑ "Islamic calendar"। www.britannica.com। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২২।
- ↑ Esposito, John (২০০৪)। The Islamic World: Past and Present। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 75–76। আইএসবিএন 9780195165203।
- ↑ Aitchison, Cara; Hopkins, Peter E.; Mei-Po Kwan (২০০৭)। Geographies of Muslim Identities: Diaspora, Gender and Belonging। Ashgate Publishing, Ltd.। পৃষ্ঠা 147। আইএসবিএন 978-1-4094-8747-0। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১৩।
- ↑ Rassool, G. Hussein (২০১৫)। Islamic Counselling: An Introduction to theory and practice। Routledge। পৃষ্ঠা 10। আইএসবিএন 9781317441250।
The label 'Cultural Muslim' is used in the literature to describe those Muslims who are religiously unobservant, secular or irreligious individuals who still identify with the Muslim culture due to family background, personal experiences, or the social and cultural environment in which they grew up... For Cultural Muslim the declaration of faith is superficial and has no effect of their religious practices.
- ↑ ডি ম্যাকলরিন, রোনাল্ড (১৯৭৯)। মধ্যপ্রাচ্যে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর রাজনৈতিক ভূমিকা। মিশিগান ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 114। আইএসবিএন 978-0-03-052596-4।
- ↑ হান্টার, শিরিন (২০১০)। ইসলামিক পুনরুজ্জীবনবাদের রাজনীতি: বৈচিত্র্য এবং ঐক্য: কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক অধ্যয়নের কেন্দ্র (ওয়াশিংটন, ডিসি), জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়। কৌশলগত এবং আন্তর্জাতিক স্টাডিজ কেন্দ্র। ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান প্রেস। পৃষ্ঠা 33। আইএসবিএন 978-0-253-34549-3।
- ↑ আর. উইলিয়ামস, ভিক্টোরিয়া (২০২০)। আদিবাসী জনগণ: সংস্কৃতি, ইতিহাস, এবং বেঁচে থাকার হুমকির একটি বিশ্বকোষ [৪ খণ্ড]। এবিসি-সিএলআইও। পৃষ্ঠা ৩১৮। আইএসবিএন 978-1-4408-6118-5।
- ↑ ডি. গ্রাফটন, ডেভিড (২০০৯)। ধর্মপরায়ণতা, রাজনীতি এবং ক্ষমতা: মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামের মুখোমুখি লুথেরান। উইপিএফ এবং স্টক পাবলিশার্স। পৃষ্ঠা ১৪। আইএসবিএন 978-1-63087-718-7।
- ↑ পুনাওয়ালা, ইসমাইল কে. (জুলাই–সেপ্টেম্বর ১৯৯৯)। "পর্যালোচনা: ফাতিমিদের এবং তাদের শিক্ষার ঐতিহ্য"। আমেরিকান ওরিয়েন্টাল সোসাইটির জার্নাল। আমেরিকান ওরিয়েন্টাল সোসাইটি। ১১৯ (৩): ৫৪২। আইএসএসএন 0003-0279। এলসিসিএন 12032032। ওসিএলসি 47785421। জেস্টোর 605981। ডিওআই:10.2307/605981।
- ↑ ব্রায়ার, ডেভিড আর. ডব্লিউ. (১৯৭৫)। "দ্রুজ ধর্মের উৎপত্তি (ফর্টসেটজুং)"। ডার ইসলাম। ৫২ (২): ২৩৯–২৬২। আইএসএসএন 1613-0928। এসটুসিআইডি 162363556। ডিওআই:10.1515/islm.1975.52.2.239।
- ↑ ফোল্টজ, রিচার্ড (৭ নভেম্বর ২০১৩)। "দুটি কুর্দি সম্প্রদায়: ইয়েজিদি এবং ইয়ারেসান"। ইরানের ধর্ম: প্রাগৈতিহাসিক থেকে বর্তমান পর্যন্ত। ওয়ানওয়ার্ল্ড পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ২১৯। আইএসবিএন 978-1-78074-307-3।
- ↑ হাউস অফ জাস্টিস, ইউনিভার্সাল। "ওয়ান কমন ফেইথ"। reference.bahai.org। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১৭।
- ↑ এলসবার্গ, কনস্ট্যান্স (২০০৩), করুণাময় নারী। ইউনিভার্সিটি অফ টেনেসি প্রেস। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৫৭২৩৩-২১৪-০. পৃ. ২৭–২৮.
- ↑ "St. John of Damascus's Critique of Islam"। Writings by St John of Damascus। The Fathers of the Church। 37। Washington, DC: Catholic University of America Press। ১৯৫৮। পৃষ্ঠা 153–160। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৯।
- ↑ ফাহলবুশ এট আল (২০০১), p. 759.
- ↑ ইসলামিক ঐতিহ্যে খ্রিস্টান ল্যাঙ্গের স্বর্গ এবং নরক কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০১৫ আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫২১-৫০৬৩৭-৩ pp. ১৮–২০
- ↑ স্টোন, জি. ২০০৬. দান্তের বহুত্ববাদ এবং ধর্মের ইসলামিক দর্শন। স্প্রিংগার পাবলিশিং। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪০৩৯-৮৩০৯-১. পৃ. ৫৩-৫৪
- ↑ রিভস, মিনু এবং পি.জে. স্টুয়ার্ট। ২০০৩. ইউরোপে মুহাম্মাদ: ওয়েস্টার্ন মিথ-মেকিং এর হাজার বছর। নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮১৪৭-৭৫৬৪-৬. পৃ. ৯৩–৯৬.
- ↑ স্টোন, জি. ২০০৬. দান্তের বহুত্ববাদ এবং ধর্মের ইসলামিক দর্শন। স্প্রিংগার পাবলিশিং। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪০৩৯-৮৩০৯-১. পৃ. ৫৩-৫৪.
- ↑ ফ্রিডম্যান, ইয়োহানান (২০০৩)। ইসলামে সহনশীলতা এবং জবরদস্তি: মুসলিম ঐতিহ্যে আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ক । ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 18, 35। আইএসবিএন 978-0-521-02699-4।
- ↑ মুডুড, তারিক (৬ এপ্রিল ২০০৬)। বহুসংস্কৃতিবাদ, মুসলিম এবং নাগরিকত্ব: একটি ইউরোপীয় পদ্ধতি (১ম সংস্করণ)। রাউটলেজ। পৃষ্ঠা 29। আইএসবিএন 978-0-415-35515-5।
গ্রন্থপঞ্জি
বিশ্বকোষ
- Encyclopaedia of Islam(EI3) [এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলাম (তৃতীয় সংস্করণ )] (ইংরেজি ভাষায়)। লেইডেন:ই.জে. ব্রিল পাবলিশার্স। ২০০৭। আইএসএসএন 1873-9830
- Encyclopaedia of the Qurʾān [এনসাইক্লোপিডিয়া অব দ্যা কুরআন] (ইংরেজি ভাষায়)। লেইডেন:ব্রিল পাবলিশার্স। ২০০১। আইএসবিএন 90-04-14743-8।
- সৈয়দ, ইকবাল জহির (২০১০)। Islamic Encyclopaedia [ইসলামিক এনসাইক্লোপিডিয়া] (ইংরেজি ভাষায়)। ইকরা প্রকাশনি, ব্যাঙ্গালোর। আইএসবিএন 978-603-90004-40।
- মো:, সিরিল গ্লাস (২০১০)। The New Encyclopedia of Islam [দ্যা নিউ এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলাম(চতুর্থ সংস্করণ)] (ইংরেজি ভাষায়)। রোমান অ্যান্ড লিটলফিল্ড পাবলিশার্স। আইএসবিএন 978-1442223486।
- ইসলামী বিশ্বকোষ, ১-২৬ খণ্ড (দ্বিতীয় সংস্করণ)। অনুবাদক: ইসলামী বিশ্বকোষ বিভাগ ; ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। অক্টোবর ১৯৯৬।
- সীরাত বিশ্বকোষ ১-১৪ খণ্ড। অনুবাদক: ইসলামী বিশ্বকোষ বিভাগ ; ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারি ২০০১।
- জন এল স্পোজিতো্, (এডিটর) (এপ্রিল ৩, ২০০৯)। The Oxford Encyclopedia of the Islamic World (6-Volume Set) [দ্যা অক্সফোর্ড এনসাইক্লোপিডিয়া অব দ্যা মুসলিম ইসলামিক ওয়ার্ল্ড(৬- ভলিয়ুম সেট); রিভাইজ্ড এডিশন্;] (ইংরেজি ভাষায়)। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0195305135।
- ইউসুফ, আল-হাজ্ব আহমদ (২০১০)। Encyclopaedia of Islamic Law - Vol I- II, Islamic Jurisprudence Concerning Muslim Women Book I- II, [এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলামিক ল্য (ভলিয়্যুম ১ -২), ইসলামিক জুরিসপ্রুডেন্স, কন্সার্নিং মুসলিম উইমেন বুক ১-২] (ইংরেজি ভাষায়)। দারুস সালাম পাবলিশার্স। এএসআইএন B00J3T40MS
- মুস্তাফা, এক্যল (১৮ জুলাই ২০১১)। Islam without Extremes: A Muslim Case for Liberty [ইসলাম উইদআউট এক্সট্রিম:অ্যা মুসলিম কেস ফর লিবার্টি] (ইংরেজি ভাষায়)। ডব্লিউ.ডব্লিউ. নর্টন অ্যান্ড কোম্পানি। আইএসবিএন 978-0393070866।
- মাঃ মুহাঃ, সাফি-উর-রহমান মুবারকপুরী (১ জানুয়ারী ২০০২)। Ar-Raheeq Al-Makhtum (The Sealed Nectar): Biography of the Prophet [আর-রাহীক আল-মাকতুম (দ্যা সিলড্ নেক্টার): বায়োগ্রাফী অব দ্যা প্রফেট] (ইংরেজি ভাষায়)। দার উস-সালাম পাবলিকেশন্স,। আইএসবিএন 978-1591440710।
- মাঃ মুহাঃ, সাফি-উর-রহমান মুবারকপুরী। আর রাহীকুল মাখতূম: ( মুহাম্মাদ এর সীরাতগ্রন্থ)। সোলেমানিয়া বুক হাউস, ডা. মুহাম্মাদ আবদুর রহমান খন্দকার (অনুবাদক)।
- মাওলানা আকবার শাহ খান, নাজীবাবাদী (১ এপ্রিল ২০০১)। History of Islam (3 Volumes) [হিস্ট্রি অব ইসলাম(৩ ভলিয়্যুম )] (ইংরেজি ভাষায়)। আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ (সম্পাদক) ; দার উস-সালাম পাবলিকেশন্স। আইএসবিএন 9960-892-86-7।
- মাওলানা আকবার শাহ খান, নাজীবাবাদী (জানুয়ারী ২০০০)। ইসলামের ইতিহাস (১-৩ খণ্ড)। অনুবাদক: মাওলানা আবদুল মতীন জালালাবাদী, মাওলানা আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী ; ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
- ডঃ মুহাম্মদ মুহসিন খান, ডঃ মুহম্মদ তাকী-উদ-দীন আল-হিলালি (১ জানুয়ারি ২০০০)। Interpretation of The Meanings of the Noble Qur'an (9 Books) [ইন্টারপ্রিটেশন অব দ্যা মিনিংস্ অব দ্যি নোবল কোর'আন (৯ বুকস্) (ইংলিশ এন্ড আরাবিক এডিশন), আব্রিগেটেড] (ইংরেজি ভাষায়)। দার উস-সালাম পাবলিকেশন্স। আইএসবিএন 978-1591440000।
- হাফিজ, ইব্ন কাছির (১ সেপ্টেম্বর ২০০০)। Tafsir Ibn Kathir (10 Volumes; Abridged) 2nd Edition [তাফসীর ইবনে কাছির (10 ভলিউম; অ্যাব্রিগেটেড) ২য় সংস্করণ] (ইংরেজি ভাষায়)। দার উস-সালাম পাবলিকেশন্স। আইএসবিএন 978-1591440208।
- হাফিজ, ইব্ন কাছির (মার্চ ২০১৪)। তাফসীর ইবনে কাসীর (১-১৩ খণ্ড)। অনুবাদ: প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ মুজীবুর রাহমান, ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
- ইমাম মুহাম্মদ ইবনে, ইসমাইল বোখারী (র) (অক্টোবর ১৯৯৬)। The English Translation of Sahih Al Bukhari With the Arabic Text (9 volume set) [দ্যা ইংলিশ ট্রান্সলেশন অব সহীহ্ আল-বুখারী উইদ দ্যা অ্যারাবিক টেক্সট(৯ ভলিয়্যুম সেট)] (ইংরেজি ভাষায়)। রূপান্তর:ডঃ মুহাম্মদ মুহসিন খান.আল-সাদাবি পাবলিকেশন্স। আইএসবিএন 978-1591440208।
- ইমাম মুহাম্মদ ইবনে, ইসমাইল বোখারী (র)। সাহিহুল বুখারী (তাহক্বীক্ব) (১ - ১০ খণ্ড), (বঙ্গানুবাদ)। অনুবাদক: আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী ; সম্পাদনা : তাওহীদ পাবলিকেশন্স কমিটি, তাওহীদ পাবলিকেশন্স।
- হাফেয, ইবনে হাজর আল-আসক্বালানী (২০১২)। Fathul-Bari - Sharah Sahih Al-Bukhari (15 Vol. Set) [ফাত্হুল-বারী - শরাহ্ সহীহ আল-বুখারী (১৫ ভলিয়্যুম সেট)] (আরবি ভাষায়)। দার উস-সালাম পাবলিকেশন্স।এএসআইএন B0074N2GU8
- ড. জাকির, নায়েক (ডিসেম্বর ১৫, ২০১৩)। The Quran & Modern Science [দ্যা কুরআন অ্যান্ড মডার্ন সায়েন্স] (ইংরেজি ভাষায়)। দার উস-সালাম পাবলিকেশন্স। এএসআইএন B00GJSZJW6
- দ্যা কমপ্লিট ইডিয়ট'স গাইড তো আন্ডারস্ট্যান্ডিং ইসলাম, ২ন্ড এডিশন; ইয়াহিয়া আমেরিক (অথর); , প্রকাশনি: আলফা; 3rd edition 2011
- হেভেন’স্ ব্যাংকার’স্; হ্যারিস ইরফান; প্রকাশক: পেঙ্গুইন গ্রুপ
- ফাতওয়া ইসলামিয়াঃ (ইসলামিক ভার্ডিক্টস) (8 Volume Set), প্রকাশনি:দার-উস-সালাম পাবলিকেশন্স (2001) এএসআইএন B000IXTSCK
- ইসলামিক ইকোনোমিকস্ : থিওরী এন্ড প্র্যাক্টিস; Prof. Dr. M A Mannan; ; প্রকাশক: Afsar Brothers
- আল কুরআনে বিজ্ঞান। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
- Bearman, P.J.; Bianquis, Th.; Bosworth, C.E.; van Donzel, E.; Heinrichs, W.P., সম্পাদকগণ (n.d.)। Encyclopaedia of Islam Online । ব্রিল একাডেমিক পাবলিশার্স। আইএসএসএন 1573-3912।
- Salamone, Frank, সম্পাদক (২০০৪)। Encyclopedia of Religious Rites, Rituals, and Festivals। Routledge Encyclopedias of Religion and Society। ৬ (১ম সংস্করণ)। Routledge। আইএসবিএন 978-0-415-94180-8। জেস্টোর j.ctt1jd94wq।
- Bearman, P.J.; Bianquis, Th.; Bosworth, C.E.; van Donzel, E.; Heinrichs, W.P., সম্পাদকগণ (২০১২)। এনসাইক্লোপিডিয়া অফ ইসলাম (২য় সংস্করণ)। Leiden: Brill Publishers। আইএসএসএন 1573-3912। আইএসবিএন 978-90-04-16121-4।
অনুবাদ/রূপান্তর গ্রন্থ
- শাইখুল ইসলাম জাস্টিস মুফতী, মুহাম্মদ তাকী উসমানী (জুন ২০১২)। ইসলাম ও আমাদের জীবন (১-১৪ খণ্ড একত্রে)। অনুবাদক:মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মাকতাবাতুল আশরাফ।
- হযরত মাওলানা, মুহাম্মদ ইউসুফ কান্ধলভী রহ। হায়াতুস্ সাহাবাহ্ (১-৫ খণ্ড)। অনুবাদক:মাওলানা মুহাম্মদ যুবায়ের ছাহেব, দারুল কিতাব।
- জাস্টিস মুফতি মুহাম্মদ, তকী উসমানী। ইসলাম ও রাজনীতি। অনুবাদক:মাওঃ মুহাম্মদ আব্দুল আলীম, মাকতাবাতুল হেরা।
- ইসলামী আইন ও আইন বিজ্ঞান ১ম-৩য় খণ্ড; ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ; প্রকাশক: ইসলামিক ফাউন্ডেশন
- আধুনিক লেনদেনের ইসলামী বিধান, মুফতী ইহসানুল্লাহ শায়েক, মাসুম আব্দুল্লাহ (অনুবাদক); প্রকাশক: মাকতাবাতুল আযহার
- যুগান্তকারী দ্বীনি বয়ান (১-৫ খন্ড), মাওলানা তারিক জামিল; প্রকাশক: নাদিয়াতুল কুরআন প্রকাশনী
- মুহাম্মদ স. নিকটতম সূত্রনির্ভর জীবনী ; মার্টিন লিংগস, ড. মোঃ এমতাজ হোসেন (অনুবাদক), ড. মনজুর রহমান (অনুবাদক); প্রকাশক: সৃজনী
- আলোকিত নারী মাওলানা তারিক জামিল, মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন (অনুবাদক); প্রকাশক: এদারায়ে কুরআন
- কাসাসুল আম্বিয়া, আল্লামা ইব্নে কাছীর রহ., মুহাম্মদ রফীকুল্লাহ নেছারাবাদী (অনুবাদক), মুফতী রূহুল আমীন যশোরী (সম্পাদক); প্রকাশক: কোহিনূর লাইব্রেরী
- এহইয়াউ উলুমিদ্দীন (সব খণ্ড একত্রে), হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাযযালী রহ.; প্রকাশক: সোলেমানিয়া বুক হাউস
- বেহেশতী জেওর ১ম-৩য় খণ্ড (বক্স)(হার্ডকভার) (মাওলানা আশরাফ আলী থানভী চিশতী রহ.), মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী রহ. (অনুবাদক); প্রকাশক: এমদাদিয়া লাইব্রেরী
- আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া (ইসলামের ইতিহাস : আদি-অন্ত) ১ম-১০ম খণ্ড, আবুল ফিদা হাফিজ ইব্ন কাসীর আদ-দামেশ্কী রহ. কর্তৃক, প্রকাশনি:ইসলামিক-ফাউন্ডেশন
- বাইবেল কুরআন ও বিজ্ঞান, ড. মরিচ বুকাইলি কর্তৃক, মোহাম্মদ নাছের উদ্দিন (সম্পাদক), ড. খ ম আব্দুর রাজ্জাক (সম্পাদক), প্রকাশনি:দারুস সালাম বাংলাদেশ
- অভিধান
- ডিকশনারী অব ইসলামিক ওয়ার্ডস অ্যান্ড এক্সপ্রেশন্স-রোমানাইজড্, এরাবিক, ইংলিশ, ২০১২, প্রফে. মুহাম্মদ ইসমাঈল সালেহ কর্তৃক, প্রকাশনি:দারুসসালাম ইন্টারন্যাশনাল পাবলিকেশন্স এএসআইএন B0075Y0ONM
- অক্সফোর্ড এরাবিক ডিকশনারী বিলিঙ্গুয়াল এডিশন ; প্রকাশনি: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস; বিলিঙ্গুয়াল এডিশন (আগস্ট ২৮, ২০১৪); আইএসবিএন ৯৭৮-০১৯৯৫৮০৩৩০
- দ্যা অক্সফোর্ড ডিকশনারী অব ইসলাম (অক্সফোর্ড কুইক রেফারেন্স), জন এল. ম্যাকার্থির ১ম সংস্করণ। এস্পোষিত (এডিটর); প্রকাশনি: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস; ২০০৪);
- রোজনামচা