আব্বাসীয় খিলাফত

তৃতীয় ইসলামী খিলাফত

আব্বাসীয় খিলাফত (আরবি: الخلافة العباسية / ALA-LC: আল-খিলাফাহ আল-'আব্বাসিয়্যাহ) ইসলামি খিলাফতগুলোর মধ্যে তৃতীয় খিলাফত। এটি আব্বাসীয় বংশ কর্তৃক শাসিত হয়। বাগদাদ এই খিলাফতের রাজধানী ছিল। উমাইয়া খিলাফতকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর আব্বাসীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে আন্দালুসে উমাইয়া খিলাফত উৎখাত করা যায়নি।

আব্বাসীয় খিলাফত

الخلافة العباسية
আল-খিলাফাহ আল-'আব্বাসিয়্যাহ
৭৫০–১২৫৮
১২৬১–১৫১৭
(মামলুক সালতানাতের অধীন)
আব্বাসীয় খিলাফতের জাতীয় পতাকা
আব্বাসীয় বংশের পতাকা
আব্বাসীয় খিলাফতের সর্বোচ্চ সীমা (৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ)।
আব্বাসীয় খিলাফতের সর্বোচ্চ সীমা (৮৫০ খ্রিষ্টাব্দ)।
অবস্থাসাম্রাজ্য
রাজধানীকুফা
(৭৫০–৭৬২)
রাকা
(৭৯৬–৮০৯)
সামারা
(৮৩৬–৮৯২)
বাগদাদ
(৭৬২–৭৯৬)
(৮০৯–৮৩৬)
(৮৯২–১২৫৮)
প্রচলিত ভাষাদাপ্তরিক ভাষা:
আরবি
আঞ্চলিক ভাষা:
আরামায়িক, আর্মেনীয়, বার্বার, কপ্টিক, জর্জিয়ান, গ্রিক, কুর্দি, ফার্সি, অঘুজ তুর্কি,[][]
ধর্ম
সুন্নি ইসলাম
সরকারখিলাফত
খলিফা 
• ৭৫০–৭৫৪
আস সাফা (প্রথম)
• ১২৪২–১২৫৮
আল মুসতাসিম (শেষ)
ইতিহাস 
• প্রতিষ্ঠা
৭৫০
• বিলুপ্ত
১৫১৭
মুদ্রাদিনার (স্বর্ণ মুদ্রা)
দিরহাম (রৌপ্য মুদ্রা)
ফালস (তাম্র মুদ্রা)
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
উমাইয়া খিলাফত
মঙ্গোল সাম্রাজ্য
মামলুক সালতানাত (কায়রো)
বর্তমানে যার অংশ

আব্বাসীয় খিলাফত নবি মুহাম্মাদ (সা.) এর চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের বংশধরদের কর্তৃক ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে কুফায় প্রতিষ্ঠিত হয়।[] ৭৬২ খ্রিস্টাব্দে বাগদাদে রাজধানী স্থানান্তরিত করা হয়। পারস্যে ১৫০ বছর ধরে নিয়ন্ত্রণ করার পর খলিফাকে প্রধান কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়ে স্থানীয় আমিরদের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চাপ দেয়া হয়। খিলাফতকে তার পশ্চিমাঞ্চলের প্রদেশ আন্দালুস, মাগরেবইফ্রিকিয়া যথাক্রমে একজন উমাইয়া যুবরাজ, আগলাবিফাতেমীয় খিলাফতের কাছে হারাতে হয়।

মঙ্গোল নেতা হালাকু খানের বাগদাদ দখলের পর ১২৫৮ খ্রিস্টাব্দে আব্বাসীয় খিলাফত বিলুপ্ত হয়। মামলুক শাসিত মিশরে অবস্থান করে তারা ১৫১৭ সাল পর্যন্ত ধর্মীয় ব্যাপারে কর্তৃত্ব দাবি করতে থাকেন। যদিও রাজনৈতিক ক্ষমতার অভাব (কায়রোর খলিফা আল-মুস্তাইনের সংক্ষিপ্ত ব্যতিক্রম ছাড়া), রাজবংশটি ১৫১৭ সালে মিশরের উসমানীয় বিজয়ের আগ পর্যন্ত ধর্মীয় কর্তৃত্ব দাবি করতে থাকে।[]

ইতিহাস

সম্পাদনা

আব্বাসীয় বিপ্লব (৭৫০-৭৫১)

সম্পাদনা

আব্বাসীয় খলিফারা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের বংশধর ছিলেন। তিনি ছিলেন হযরত মুহাম্মদ (স) এর সর্বকনিষ্ঠ চাচাদের অন্যতম। হযরত মুহাম্মদ(সা) এর সাথে নিকটাত্মীয়তার কারণে তারা উমাইয়াদের হটিয়ে নিজেদের রাসুলের প্রকৃত উত্তরসুরি হিসেবে দাবি করে।

 
আব্বাসীয় আমলের মুদ্রা, বাগদাদ, ইরাক, ৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দ।

নৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে আক্রমণ করে আব্বাসীয়রা নিজেদেরকে তাদের চেয়ে আলাদা হিসেবে তুলে ধরে। ইরা লেপিডাসের মতে, “আব্বাসীয় বিদ্রোহ ব্যাপকভাবে আরবদের দ্বারা সমর্থিত ছিল, যারা ছিল মূলত মারুর বসতি স্থাপনকারী, সেসাথে ইয়েমেনি গ্রুপ ও তাদের মাওয়ালি।"[] মাওয়ালি তথা অনারব মুসলিমরা কাছে আব্বাসীয়দের পক্ষে ছিল।[] আব্বাসের প্রপৌত্র মুহাম্মদ ইবনে আলি আব্বাসি মুহাম্মদ(সা) এর পরিবারের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য দ্বিতীয় উমরের সময় পারস্যে প্রচারণা শুরু করেন।

দ্বিতীয় মারওয়ানের সময় আব্বাসের চতুর্থ বংশধর ইবরাহিম বিরোধিতা শুরু করেন। খোরাসান প্রদেশ ও শিয়া আরবদের[][][] কাছ থেকে সমর্থন লাভের মাধ্যমে তিনি বেশ সাফল্য অর্জন করলেও ৭৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ধরা পড়েন এবং কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। কারো মতে তাকে হত্যা করা হয়। এরপর তার ভাই আবদুল্লাহ প্রতিবাদ এগিয়ে নেন। তিনি আবুল আব্বাস আস সাফাহ নামে পরিচিত হন। ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উমাইয়াদের জাবের যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং নিজেকে খলিফা ঘোষণা করেন।

বিজয়ের পর তিনি মধ্য এশিয়ায় সেনা পাঠান। তার সেনারা তালাসের যুদ্ধে ট্যাং রাজবংশের সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে লড়াই করে।[] বাগদাদকে গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখা বারমাকিরা বাগদাদে পৃথিবীর প্রথম কাগজ কলের প্রচলন ঘটায়। এভাবে আব্বাসীয় শাসনামলে নতুন বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্জাগরণ ঘটে। দশ বছরের মধ্য আব্বাসীয়রা স্পেনে উমাইয়া রাজধানী কর্ডোবাতে আরেকটি নামকরা কাগজ কল নির্মাণ করে।

ক্ষমতা

সম্পাদনা

আব্বাসীয়দের প্রথম পরিবর্তন ছিল সাম্রাজ্যের রাজধানী দামেস্ক থেকে বাগদাদে সরিয়ে আনা। এর উদ্দেশ্য ছিল যাতে পারসিয়ান মাওয়ালিদের অধিক কাছে টানা যায়। ৭৬২ খ্রিষ্টাব্দে টাইগ্রিস নদীর তীরে বাগদাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় দায়িত্বপালনের জন্য উজির নামক নতুন পদ সৃষ্টি করা হয় এবং স্থানীয় আমিরদের উপর বড় দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। উজিররা ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করাতে আব্বাসীয় খলিফারা অধিক মাত্রায় আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। প্রাচীন আরব অভিজাততন্ত্র পারস্যের আমলাতন্ত্রের কারণে প্রতিস্থাপিত হয়ে পড়ে।[১০]

উমাইয়াদের ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য আব্বাসীয়রা পারসিয়ানদের সাহায্যের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে।[] আবুল আব্বাসের উত্তরসুরি আল মনসুর অনারব মুসলিমদেরকে তার দরবারে স্বাগতম জানান। এর ফলে আরব ও পারস্যের সংস্কৃতি মিলিত হওয়ার সুযোগ পায়। তবে অনেক আরব সমর্থক বিশেষ করে খোরাসানের আরব যারা উমাইয়াদের বিরুদ্ধে তাদের সহায়তা করেছিল, তারা বিরূপ হয়।

সমর্থকদের মধ্যের এই ফাটল সমস্যার জন্ম দেয়। উমাইয়া ক্ষমতার বাইরে থাকলেও ধ্বংস হয়ে যায়নি। উমাইয়া রাজপরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য স্পেন চলে যান এবং সেখানে নিজেকে একজন স্বাধীন আমির হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন (প্রথম আবদুর রহমান, ৭৫৬ খ্রিষ্টাব্দ)। ৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে তৃতীয় আবদুর রহমান নিজেকে খলিফা ঘোষণা করেন এবং আল আন্দালুসে বাগদাদের প্রতিদ্বন্দ্ব্বী খিলাফত প্রতিষ্ঠা করেন।

৭৫৬ খ্রিষ্টাব্দে আব্বাসীয় খলিফা আল মনসুর আন লুশানের বিরুদ্ধে ট্যাং রাজবংশকে সহায়তার জন্য ৪,০০০ আরব সৈনিক পাঠান। যুদ্ধের পর সৈনিকরা চীনে থেকে যায়।[১১][১২][১৩][১৪][১৫] আরব খলিফা হারুনুর রশিদ চীনের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেন।[১৬] ট্যাং বিবরণীতে আব্বাসীয়দের সাথে চীনের দরবারের সম্পর্ক লিপিবদ্ধ পাওয়া যায়। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলেন রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা আবুল আব্বাস, বাগদাদের প্রতিষ্ঠাতা আল মনসুর, ও আরব্য রজনীতে অধিক উল্লেখিত হারুনুর রশিদ। ট্যাং রাজবংশের বিবরণীতে আব্বাসীয়দের ēiyī Dàshí, বা " The Black-robed Arabs." বলে উল্লেখ করা হয়।[১৭][১৮][১৯][২০][২১][২২][২৩][২৪][২৫]

ইসলামি স্বর্ণযুগ

সম্পাদনা
 
আব্বাসীয় যুগে লিখিত একটি পান্ডুলিপি

এসময় জ্যোতির্বিজ্ঞান, আলকেমি, গণিত, চিকিৎসা বিজ্ঞান, আলোকবিজ্ঞানসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে আরব বিজ্ঞানীরা এগিয়ে ছিলেন।[২৬]

বাগদাদে মোঙ্গল আক্রমণের আগ পর্যন্ত অতিক্রান্ত সময়কে ইসলামি স্বর্ণযুগ বলে গণ্য করা হয়।[২৭] আব্বাসীয়দের ক্ষমতায় আগমন ও রাজধানী দামেস্ক থেকে বাগদাদে স্থানন্তরের পর থেকে স্বর্ণযুগ শুরু হয়।[২৮] আব্বাসীয়রা কুরআন ও হাদিসের জ্ঞানের প্রতি উৎসাহমূলক বাণীতে অণুপ্রাণিত হয়। বাগদাদে বাইতুল হিকমাহ প্রতিষ্ঠা ও আব্বাসীয়দের জ্ঞানের প্রতি আগ্রহের কারণে এসময় মুসলিম বিশ্ব বিজ্ঞান, দর্শন, চিকিৎসা, শিক্ষার বুদ্ধিবৃত্তিক কেন্দ্র হয়ে উঠে। মুসলিম ও অমুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের পণ্ডিত ব্যক্তিরা বিশ্বের জ্ঞানকে আরবিতে অনুবাদ করার কাজে নিয়োজিত হন।[২৮] হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল এমন অনেক ধ্রুপদি কাজ আরবি ও ফারসিতে এবং পরবর্তীতে তুর্কি, হিব্রু, ও ল্যাটিনে অনুবাদ করা হয়।[২৮] মুসলিম বিশ্ব বিভিন্ন সংস্কৃতির মিথস্ক্রিয়ার স্থলে পরিণত হয় এবং প্রাচীন রোম, চীন, ভারত, পারস্য, মিশর, উত্তর আফ্রিকা, গ্রিকবাইজেন্টাইন সভ্যতা থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে যায়।[২৮]

বিজ্ঞান

সম্পাদনা
 
মুসতানসিরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বাগদাদ
 
জাবির ইবনে হাইয়ান, "রসায়নের জনক".[২৯][৩০][৩১][৩২]

হারুনুর রশিদ ও তার উত্তরসুরিদের শাসনকালে ব্যাপকভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক অর্জন সম্পন্ন হয়। আব্বাসীয় খলিফারা সাসানীয় সাম্রাজ্যের আদলে নিজেদের প্রশাসনকে সাজান।[৩৩] হারুনুর রশিদের পুত্র আল মামুন এমনকি একথা বলেন:

পারসিয়ানরা হাজার বছর শাসন করেছে এবং একদিনের জন্যও তাদের আরবদের সাহায্য প্রয়োজন হয়নি। আমরা তাদের এক বা দুই শতাব্দী শাসন করছি এবং এক ঘণ্টাও তাদের ছাড়া করতে পারিনি।

[৩৪]

মধ্যযুগের বেশ কিছু সংখ্যক চিন্তাবিদ ও বিজ্ঞানী ইসলামি বিজ্ঞানকে খ্রিষ্টান পাশ্চাত্যে পৌছানোয় ভূমিকা রাখেন। এই ব্যক্তিরা এরিস্টোটলকে খ্রিষ্টান ইউরোপে পরিচিত করান।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] অধিকন্তু এ যুগে ইউক্লিডটলেমির আলেক্সান্ড্রিয়ান গণিত, জ্যামিতি ও জ্যোতির্বিদ্যার জ্ঞান পুনরায় ফিরে আসে। ফিরে পাওয়া গাণিতিক প্রক্রিয়াগুলো পরবর্তীতে মুসলিম পণ্ডিত, বিশেষ করে আল বিরুনিআবু নাসর মনসুরের মাধ্যমে বর্ধিত ও আরো উন্নত হয়।

খ্রিষ্টানরা (বিশেষ করে নেস্টোরিয়ান খ্রিষ্টান) উমাইয়া ও আব্বাসীয় আমলে আরব ইসলামি সভ্যতার বিকাশে অবদান রাখে। তারা গ্রিক দার্শনিকদের রচনা সিরিয়াক ও পরবর্তীতে আরবিতে অনুবাদ করে।[৩৫][৩৬] নেস্টোরিয়ানরা আরব সংস্কৃতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।[৩৭] জুন্দশাপুরের শিক্ষালয় সাসানীয়, উমাইয়া ও আব্বাসীয় আমলে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।[৩৮] প্রায় আট প্রজন্ম ধরে নেস্টোরিয়ান বুখতিশু পরিবার খলিফা ও অষ্টম থেকে একাদশ শতকের সুলতানদের ব্যক্তিগত চিকিৎসক হিসেবে কাজ করে।[৩৯][৪০]

বিজ্ঞানী আল খোয়ারিজমি তার গ্রন্থ কিতাব আল জাবর ওয়াল মুকাবালাতে বীজগণিত নিয়ে আলোচনা করেন। এই গ্রন্থ থেকে ইংরেজি এলজেব্রা শব্দটি উৎপত্তি হয়েছে। তাই তাকে বীজগণিতের জনক বলা হয়।[৪১] তবে অনেকে গ্রিক গণিতবিদ ডিওফেনটাসকে এই উপাধি দেয়। এলগোরিজমএলগরিদম পদদুটিও তার নাম থেকেই উদ্ভব হয়। তিনি ভারত উপমহাদেশের বাইরে আরবি সংখ্যা পদ্ধতিহিন্দু-আরবি সংখ্যা পদ্ধতি সূচনা করেন।

ইবনে আল হাইসাম (পাশ্চাত্যে আলহাজেন নামে পরিচিত) ১০২১ খ্রিষ্টাব্দে তার গ্রন্থ কিতাব আল মানাজিরে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বিকাশ ঘটান। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল তত্ত্বের সাথে পরীক্ষালব্ধ উপাত্তের সমন্বয়ের জন্য পরীক্ষণের ব্যবস্থা করা, যা মুসলিম বিজ্ঞানীদের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। ইবনে আল হাইসাম বস্তু দেখার ক্ষেত্রে আলোর চোখের ভেতর প্রবেশের প্রমাণ দেন যা একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে ধরা হয়। ব্রেডলি স্টেফেনস ইবনে আল হাইসামকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বিকাশ ঘটানোর জন্য “প্রথম বিজ্ঞানী” হিসেবে উল্লেখ করেন।[৪২][৪৩][৪৪]

আব্বাসীয় আমলে মুসলিম জগৎে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নয়ন ঘটে। ৯ম শতকে বাগদাদে ৮০০ জন চিকিৎসক ছিল এবং এনাটমি ও রোগের উপর ব্যাপক আবিষ্কার সম্পন্ন হয়। হাম ও গুটিবসন্তের মধ্যে পার্থক্য এসময় বর্ণিত হয়। খ্যাতনামা পারসিয়ান বিজ্ঞানী ইবনে সিনা (পাশ্চাত্যে আভিসেনা নামে পরিচিত) বিজ্ঞানীদের অর্জিত বিশাল পরিমাণ জ্ঞানকে লিপিবদ্ধ করেন এবং তার বিশ্বকোষ কানুন ফিততিবকিতাবুশ শিফার মাধ্যমে তা বেশ প্রভাববিস্তারকারী ছিল। তিনি ও আরো অনেকের গবেষণাকর্ম রেনেসার সময় ইউরোপীয় বিজ্ঞানীদের সরাসরি প্রভাবিত করে।

মধ্যযুগে মুসলিম বিশ্বে জ্যোতির্বিজ্ঞান আল বাত্তানির মাধ্যমে বিকাশ লাভ করে। তিনি পৃথিবীর অক্ষের ঘূর্ণনের উপর গবেষণা করেন। আল বাত্তানি, ইবনে রুশদ, নাসিরুদ্দিন তুসি, মুয়ায়েদুদ্দিন উরদিইবনে আল শাতির কর্তৃক ভূকেন্দ্রিক মডেলের সংশোধন পরবর্তীতে কোপারনিকাসের সৌরকেন্দ্রিক মডেলে ব্যবহৃত হয়।[৪৫] গ্রীকরা এস্ট্রোলেব নির্মাণ করলেও মুসলিম জ্যোতির্বিদ ও প্রকৌশলীরা এর বিকাশ ঘটান এবং এরপর তা মধ্যযুগের ইউরোপে পৌছায়।

আল-কেমিস্টরা (মুসলিম রসায়নবিদ) মধ্যযুগের ইউরোপীয় আলকেমিস্টদের প্রভাবিত করেন, বিশেষত জাবির ইবনে হাইয়ানের রচনার মাধ্যমে। পাতনসহ বেশ কিছু রাসায়নিক প্রক্রিয়া মুসলিম বিশ্বে উদ্ভব হয় এবং এরপর ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।

সাহিত্য

সম্পাদনা
 
পেরিশ, ম্যাক্সফিল্ড, আলি বাবা 

ইসলামি বিশ্বে জন্ম নেয়া সবচেয়ে পরিচিত সাহিত্য হল সহস্র এক রজনীর গ্রন্থ যা আরব্য রজনী নামে পরিচিত। মূল ধারণা ইসলাম পূর্ব ইরানি উপাদান থেকে আসে। এর সাথে ভারতীয় উপাদানও যুক্ত হয়। এতে বাকি মধ্যপ্রাচ্যীয় ও উত্তর আফ্রিকান গল্পও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ১০ শতকে এটি রূপ লাভ করে এবং ১৪ শতকে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছায়। পান্ডুলিপি ভেদে গল্পের সংখ্যা ও প্রকারে ভিন্নতা রয়েছে।[৪৬] আরব রূপকথাগুলোকে প্রায় অনুবাদে "আরব্য রজনী" বলা হয়।[৪৬] ১৮ শতকে এন্টইন গালান্ড কর্তৃক অনূদিত হওয়ার পর থেকে এই গ্রন্থ পাশ্চাত্যে প্রভাব বিস্তার করেছে।[৪৭] এর অনেক প্রতিরূপ, বিশেষত ফ্রান্সে, লেখা হয়েছে।[৪৮] গল্পগুলোর অনেক চরিত্র পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে সাংস্কৃতিক আইকন হয়ে উঠে, যেমন আলাদিন, সিনবাদআলি বাবা

মুসলিম কাব্যের অন্যতম প্রণয়াশ্রিত উদাহরণ হল লায়লা ও মজনু। এটি ইরানি, আজারবাইজানি ও অন্যান্য ফারসি, আজারবাইজানি, তুর্কি ও অন্যান্য তুর্কি ভাষার কবিদের হাতে রূপলাভ করে।[৪৯] এর উতপত্তিকাল ৭ম শতকে উমাইয়া আমলকে ধরা হয়। পরবর্তী সময়ের রোমিও জুলিয়েটের মত এটিও একটি ট্র্যাজিক গল্প।[৫০]

আব্বাসীয় আমলে আরবি কাব্য তার শীর্ষ স্থানে পৌছায়, বিশেষত কেন্দ্রীয় কর্তৃত্ব দুর্বল হয়ে পড়া ও পারস্যীয় রাজবংশগুলোর উত্থানের আগে। নবম শতকে আবু তামামআবু নুয়াসের মত লেখকরা বাগদাদের খলিফার দরবারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ছিলেন। অন্যদিকে আল মুতানাব্বি আঞ্চলিক দরবার থেকে পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেন।

ইসলামি দর্শন” বলতে ইসলামি সংস্কৃতিতে গড়ে উঠা দর্শনের ধারাকে বোঝায়।[৫১] এটা শুধুমাত্র ধর্মীয় ব্যাপার হয় এবং শুধু মুসলিমরাই এতে অবদান রাখেনি।[৫১] এতে এরিস্টটলের কর্মের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ইজতিহাদের ধারণা থেকে অণুপ্রাণিত হয়ে দার্শনিকদের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। মুসলিম দার্শনিকরা মৌলিক দার্শনিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। মধ্য যুগে খ্রিষ্টান দর্শনে তাদের চিন্তাগুলো আত্মীকৃত হয়েছে, বিশেষত টমাস আকুইনাস কর্তৃক।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

তিনজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ আল কিন্দি, আল ফারাবিইবনে সিনা এরিস্টটেলিয়ানিজমনিওপ্লাটোনিজমকে অন্যান্য মতের সাথে সমন্বিত করেন। এর ফলে আভিসিনিজম প্রতিষ্ঠিত হয়। মুসলিম খিলাফতের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিকরা ছিলেন আল জাহিজআল হাসান

প্রযুক্তি

সম্পাদনা
 
আব্বাসীয় আমলের মুদ্রা, বাগদাদ, ইরাক, ১২৪৪

প্রযুক্তিগত দিক থেকে মুসলিম বিশ্ব চীনের কাছ থেকে কাগজ উৎপাদনের কৌশল গ্রহণ করে। কাগজের ব্যবহার চীন থেকে অষ্টম শতকে মুসলিম বিশ্বে ও দশম শতকে স্পেন ও বাকি ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। এটি নির্মাণ করা পার্চমেন্ট থেকে সহজ ছিল এবং প্যাপিরাসের মত ভেঙে যেত না। লিখিত বিবরণ ও কুরআনের কপি করার জন্য এর উপযোগীতা ছিল। লিনেন থেকে কাগজ প্রস্তুত করার প্রক্রিয়া মুসলিম বিশ্ব থেকে বাকি পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে।[৫২] বারুদ তৈরীর প্রক্রিয়াও চীন থেকে মুসলিম বিশ্বের মাধ্যমে বিস্তৃত হয়।[৫৩][৫৪]

বায়ুকলের ব্যবহারের ফলে সেচ ও কৃষিতে এসময় অগ্রগতি সাধিত হয়। আন্দালুসের মাধ্যমে শস্য, বিশেষত এলমন্ড ও সাইট্রাস ইউরোপে আসত। এসময় ইউরোপীয়রা চিনি উৎপাদন ধীরে ধীরে গ্রহণ করে। নীল নদ, টাইগ্রিসইউফ্রেটিস ছাড়া নৌবহনের অণুকূল বৃহৎ নদী ছিল না বিধায় সমুদ্রপথে পরিবহন খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেক্সটেন্টের (কামাল বলে পরিচিত ছিল) ব্যবহারের মাধ্যমে নৌচালনাবিদ্যা উৎকর্ষ লাভ করে। এসময়ের মানচিত্রের সাথে তুলনা করলে নাবিকরা উপকূলের কিনারা ধরে যাতায়াতের পরিবর্তে সমুদ্রের মধ্য দিয়ে চলাচলে বেশি সক্ষম ছিলেন। ভূমধ্যসাগরে বৃহৎ তিন মাস্তুলবিশিষ্ঠ বাণিজ্যিক জাহাজ পুনরায় চালু করায় মুসলিম নাবিকদের অবদান রয়েছে। আরবি নৌকা কারিব থেকে ক্যারাভেল নামটি এসেছে বলে ধারণা করা হয়।[৫৫] ১৬ শতাব্দীতে পর্তুগিজদের আগমনের আগ পর্যন্ত ভারত মহাসাগরে আরব বণিকরা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করত। এই বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল হরমুজভূমধ্যসাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের জটিল নেটওয়ার্ক ছিল। এর মাধ্যমে মুসলিম দেশগুলো একে অন্যের সাথে ও ইউরোপীয় শক্তিসমূহ যেমন ভেনিস, জেনোয়াকাটালোনিয়ার সাথে বাণিজ্যে অংশ নিত। সিল্ক রোড মধ্য এশিয়া পার হয়ে চীন ও ইউরোপের মধ্যবর্তী মুসলিম দেশগুলোর মধ্য দিয়ে যেত।

মুসলিম প্রকৌশলীরা শিল্পক্ষেত্রে জলশক্তিকে ব্যবহার করেন। প্রথমদিকে স্রোতশক্তি, বায়ুশক্তি ও পেট্রোলিয়াম (বিশেষত কেরোসিনে পাতনের মাধ্যমে) ব্যবহার করা হত। মুসলিম বিশ্বে পানিকল ব্যবহার সপ্তম শতকে শুরু হয়। আনুভূমিক চাকা ও উলম্ব চাকার পানিকল নবম শতকে বেশ মাত্রায় ব্যবহৃত হত। ক্রুসেডের সময় আন্দালুসউত্তর আফ্রিকা থেকে মধ্য প্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি প্রদেশে এসব কলের ব্যবহার প্রচলিত ছিল। এসব কল বেশ মাত্রায় কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত।[৫৬] মুসলিম প্রকৌশলীরা পাম্পের মত যন্ত্রও উদ্ভাবন করেন। এসবে ক্র্যাঙ্কশ্যাফট ব্যবহার করা হয়।[৫৭] কল ও পানি উত্তোলনকারী যন্ত্রগুলোতে গিয়ারের ব্যবহার হয়। পানিকলে অতিরিক্ত শক্তি সরবরাহ করার জন্য বাধ নির্মাণ করা হয়। এসব অগ্রগতির ফলে পূর্বে দৈহিক শ্রমে করা কাজগুলো সহজে করা সম্ভব হয়। শিল্পক্ষেত্রে জলশক্তির ব্যবহার মুসলিম বিশ্ব থেকে খ্রিষ্টান স্পেনে এসেছে এ নিয়ে আলোচনা হয় থাকে।[৫৮]

আরব কৃষি বিপ্লবের সময় বেশ কিছু শিল্প বিকাশ লাভ করে। এর মধ্যে রয়েছে বয়নশিল্প, দড়ি প্রস্তুত, গালিচা, রেশম ও কাগজ। রসায়ন ও যন্ত্র নির্মাণের জ্ঞানের মাধ্যমে ১২শ শতকে ল্যাটিন অনুবাদ বিস্তার লাভ করে।[৫৯] এযুগে কৃষি ও হস্তশিল্প উচ্চ মাত্রায় বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।[৬০]

ইসলামি পরিচয়ের সমৃদ্ধি

সম্পাদনা

আব্বাসীয়রা উমাইয়া আমলে অনারবদের প্রতি সামাজিক অসাম্যের ফলে সৃষ্ট অসন্তোষের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলেও সাম্রাজ্য দ্রুত আরব পরিচয় ধারণ করে। জ্ঞান আরবি ভাষায় সাম্রাজ্য জুড়ে আদানপ্রদান করা হত। বিভিন্ন জাতির লোকেরা তাদের দৈনন্দিক জীবনে আরবি বলা শুরু করে। অন্য ভাষা থেকে রচনা আরবিতে অনুবাদ করা হয়। এক নতুন ইসলামি পরিচয় জন্মলাভ করে যাতে পূর্ব সময়ের আরব সংস্কৃতির সাথে মিথস্ক্রিয়া করে। এ সংস্কৃতি ইউরোপে বিস্ময়কর ছিল।[৬১]

সাম্রাজ্যের অবনতি

সম্পাদনা
  • শিয়াদের সাথে বিভেদ

আব্বাসীয়রা শিয়াদের সাথে পাল্টা অবস্থানে ছিল। উমাইয়াদের সাথে লড়াইয়ে শিয়ারা সমর্থন দিয়েছিল। আব্বাসীয় ও শিয়া উভয়েই মুহাম্মদ (সা) এর সাথে পারিবারিক সম্পর্কের কারণে আইনগত বৈধতা দাবি করেছিল। ক্ষমতায় থাকাকালে আব্বাসীয়রা সুন্নি মতাদর্শকে ধারণ করে এবং শিয়াদের সমর্থন দান থেকে বিরত থাকে। এরপর অল্প সময় পর বার্বা‌র খারিজিরা ৮০১ সালে উত্তর আফ্রিকায় একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। ৫০ বছরের মধ্যে মাগরেবের ইদ্রিসিইফ্রিকিয়ার আগলাবি ও এর অল্পকাল পর মিশরের ইকশিদিতুলিনিরা কার্যকরীভাবে আফ্রিকার স্বাধীনতা লাভ করে।

  • সেনাপতিদের সংঘাত

আল রাদির সময় আব্বাসীয় কর্তৃত্ব ভেঙে যেতে থাকে। এসময় তাদের তুর্কি বংশোদ্ভূত সেনাপতিরা খিলাফতকে অর্থ প্রদান বন্ধ করে দেয়। এসব সেনাপতিরা কার্যত স্বাধীন ছিল। এমনকি বাগদাদের কাছের প্রদেশগুলোও আঞ্চলিক রাজবংশের শাসন দাবি করতে থাকে।

এছাড়াও আব্বাসীয়দের প্রায় স্পেনের উমাইয়াদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে হত।

স্বায়ত্ত্বশাসিত রাজবংশের ভাঙন

সম্পাদনা

৮ম শতাব্দীর শেষার্ধে বেশ কয়েকজন প্রতিযোগী খলিফা ও তাদের উজিরদের মাধ্যমে আব্বাসীয় নেতৃত্বকে কঠোর চেষ্টা করতে হয় যাতে সাম্রাজ্যের দূর বিস্তৃতির ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ সমাধান করা যায়। বিস্তৃত সাম্রাজ্য জুড়ে সীমাবদ্ধ যোগাযোগ যোগাযোগ ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য প্রশাসনিক পরিবর্তনও বিবেচনায় ছিল।[৬২] বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সাথে আব্বাসীয়রা সিরিয়া ও আনাতোলিয়ায় লড়াইয়ে লিপ্ত থাকার সময় সামরিক অভিযান কম করা হত। খিলাফত অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ডে বেশি মনোযোগ দিয়েছিল। আঞ্চলিক শাসনকর্তারা বেশি স্বায়ত্তশাসন লাভ করে নিজেদের অবস্থান বংশগত করে ফেলা খলিফার কাছে সমস্যার কারণ ছিল।[১০]

একই সময়ে আব্বাসীয়রা অভ্যন্তরীণ আরেকটি সমস্যার মুখোমুখি হয়। প্রাক্তন আব্বাসীয় সমর্থকরা সম্পর্কছেদ করে খোরাসানের আশেপাশে পৃথক রাজ্য স্থাপন করে। হারুনুর রশিদ বারমাকিদের হটিয়ে দেন।[৬৩] একই সময়কালে বেশ কিছু ভাঙন দেখা দেয়। এসবে জড়িতরা অন্যান্য ভূমির জন্য সাম্রাজ্য ত্যাগ বা সাম্রাজ্যের দূরবর্তী স্থানে অধিকার নিতে সচেষ্ট ছিল।

 
তাজিকিস্তানের মুদ্রায় খোরাসানের আমির ইসমাইল সামানির ছবি। তিনি আব্বাসীয়দের থেকে স্বাধীনভাবে শাসন পরিচালনা করেন।

৮২০ সাল নাগাদ সামানিরা মাওয়ারাননহরবৃহত্তর খোরাসানে স্বাধীন কর্তৃত্ব অর্জন করে। শিয়া হামদানিরা উত্তর সিরিয়ায় এবং ইরানের তাহিরিসাফারি রাজবংশের উত্তরসুরি হয়। বিশেষত সামারার নৈরাজ্যের পর আব্বাসীয় কেন্দ্রীয় সরকার দুর্বল হয়ে পড়ে প্রদেশগুলোতে কেন্দ্রবিমুখী প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ১০ম শতাব্দীর প্রথম নাগাদ আব্বাসীয়রা ইরাকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং তা বিভিন্ন আমিরদের হাতে চলে যায়। খলিফা আল রাদি আমিরুল উমারা পদ সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের ক্ষমতা মেনে নিতে বাধ্য হন। এর অল্পকাল পর দায়লাম থেকে বুইয়িরা উত্থান লাভ করে এবং বাগদাদের আমলাতন্ত্রে স্থান করে নেয়। ইবনে মিশকায়িয়ার মতানুযায়ী তারা তাদের সমর্থকদের ইকতা (কর খামার গঠনের জন্য জায়গির) বণ্টন করতে থাকে।

অষ্টম শতকের শেষ নাগাদ আব্বাসীয়রা যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষমতা হারায়। ৭৯৩ সালে ইদ্রিসি রাজবংশ ফেজ থেকে মরক্কো পর্যন্ত একটি রাষ্ট্র স্থাপন করে। একই সময় আব্বাসীয় গভর্নরদের একটি পরিবারের ক্ষমতা বৃদ্ধি লাভ করতে থাকে এবং ৮৩০ এর দশকে তারা আগলাবি আমিরাত স্থাপন করে। ৮৬০ এর দশক নাগাদ মিশরের গভর্নররা তাদের নিজস্ব তুলুনি আমিরাত গঠন করে। প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ ইবনে তুলুনের নামে এর নাম করণ করা হয়। এরপর থেকে মিশর খলিফা থেকে পৃথক হয়ে রাজবংশের হাতে শাসিত হতে থাকে। পূর্বাঞ্চলেও গভর্নররা কেন্দ্র থেকে নিজেদের পৃথক করে নেয়। হেরাতের সাফারি ও বুখারার সামানিরা ৮৭০ এর দশকে সম্পর্কচ্ছেদ করে এবং পারস্যায়িত সংস্কৃতি ও রাষ্ট্র গড়ে তোলে। এসময় শুধু মেসোপটেমিয়ার কেন্দ্রীয় অঞ্চল সরাসরি আব্বাসীয় নিয়ন্ত্রণে ছিল। ফিলিস্তিনহেজাজ প্রায় তুলুনিরা নিয়ন্ত্রণ করত। আনাতোলিয়ায় বাইজেন্টাইনরা আরব মুসলিমদের আরও পূর্বদিকে ঠেলে দেয়।

৯২০ এর দশক নাগাদ অবস্থা আরো বদলে যায়। প্রথম পাঁচ ইমামকে মান্য করা শিয়াদের একটি গোষ্ঠী যারা মুহাম্মদ (সা) এর কন্যা ফাতিমার সাথে নিজেদের রক্তসম্পর্ক দাবি করত তারা ইদ্রিসি ও আগলাবিদের কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এই নতুন রাজবংশ ফাতেমীয় নামে পরিচিত হয়। ৯৬৯ সালে তারা মিশরের দিকে অগ্রসর হয় এবং মিশরের ফুসতাতে রাজধানী স্থাপন করে। একে তারা শিয়া শিক্ষা ও রাজনীতির মূল কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে। ১০০০ সাল নাগাদ ফাতেমীয়রা সুন্নিদের আব্বাসীয়দের কাছে একটি আদর্শগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। এসময় আব্বাসীয় শাসন বেশ কিছু গভর্নরদের মধ্যে বিভক্ত ছিল এবং বাগদাদের খলিফার কর্তৃত্ব আগের মত শক্ত ছিল না। এসকল শাসনকর্তারা নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ে লিপ্ত থাকতেন। খলিফা নিজে বুইয়ি আমিরের নিরাপত্তায় ছিলেন। বুইয়ি আমির সমগ্র ইরাক ও পশ্চিম ইরানের নিয়ন্ত্রণে ছিলেন।

ইরাকের বাইরের স্বাধীন প্রদেশগুলো ধীরে ধীরে বংশগত শাসকদের আওতায় চলে আসে। এসব স্থানে খলিফার অবস্থান ছিল আনুষ্ঠানিক। মাহমুদ গজনভি বহুল প্রচলিত “আমির” পদবীর স্থলে “সুলতান” পদবী ধারণ করেন। ১১ শতকে খলিফার অবস্থান আরো হ্রাস পায় যখন কিছু মুসলিম শাসক জুমার খুতবায় তার নাম উল্লেখ করার প্রথা থেকে সরে আসেন ও নিজেদের নামে মুদ্রা জারি করেন।[৬২]

কায়রোর ফাতেমীয়রা মুসলিম বিশ্বের কর্তৃত্বের ব্যাপারে আব্বাসীয়দের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। বাগদাদ আব্বাসীয় খলিফাদের কেন্দ্র হলেও সেখানকার শিয়াদের মধ্যে ফাতেমীয়রা কিছু সমর্থন লাভ করে। ফাতেমীয়দের পতাকা ছিল সবুজ ও আব্বাসীয়দের পতাকা ছিল কালো। ফাতেমীয়দের সাথে এই প্রতিদ্বন্দ্ব্বীতা ১২ শতকে সমাপ্তি ঘটে।

বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজবংশ ও তাদের উত্তরাধিকারী

সম্পাদনা

এই তালিকায় আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের ভাঙনের পর জন্ম নেয়া মুসলিম রাজবংশসমূহের উল্লেখ রয়েছে। এসব রাজবংশ কখনো তাদের অধীনস্থ কোনো আমিরের বিদ্রোহের ফলে সমাপ্ত হত। মিশরের ফাতেমীয় খিলাফত, স্পেনের কর্ডোবা খিলাফতআলমোহাদ খিলাফত ছাড়া প্রত্যেক মুসলিম রাজবংশ আব্বাসীয় খলিফার আনুষ্ঠানিক সার্বভৌমত্ব মেনে চলত ও তাকে বিশ্বাসীদের নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিত।

বুইয়ি ও সেলজুক সামরিক নিয়ন্ত্রণ (৯৭৮-১১১৮)

সম্পাদনা

বুইয়ি আমিরদের ক্ষমতা সত্ত্বেও বাগদাদে আব্বাসীয়দের হাতে একটি কার্যকর দরবার ছিল। বুইয়ি আমলা হিলালুল সাবির বর্ণনায় এমন কথা পাওয়া যায়। বাগদাদ ও ধর্মীয় জীবনে তাদের প্রভাব ছিল। বাহাউদ্দৌলার মৃত্যুর পর বুইয়িদের ক্ষমতা হ্রাস পেলে খিলাফত কিছু সামর্থ পুনরুদ্ধারে সমর্থ হয়। উদাহরণস্বরূপ খলিফা আল কাদির বাগদাদ মেনিফেস্টোর মত রচনা দ্বারা শিয়াদের বিরুদ্ধে আদর্শগত লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। খলিফা নিজে বাগদাদের আইনশৃংখলা বজায় রাখেন এবং রাজধানীতে ফিতনা ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে সচেষ্ট হন।

বুইয়ি রাজবংশের অবনতির পর তাদের ফাকা স্থলে অঘুজ তুর্কিসেলজুকরা জায়গা করে নেয়। আমির ও প্রাক্তন দাস বাসিরি ১০৫৮ সালে শিয়া ফাতেমীয় পতাকা নিয়ে বাগদাদে আসলে খলিফা আল কাইম বাইরের সাহায্য ছাড়া তাকে প্রতিরোধে অসমর্থ ছিলেন। সেলজুক সুলতান তুগরিল বেগ বাগদাদে সুন্নি শাসন পুনপ্রতিষ্ঠিত করেন এবং ইরাককে তার রাজবংশের জন্য নিয়ে নেন। আরেকবার আব্বাসীয়দেরকে অন্য একটি সামরিক শক্তির সাথে ভারসাম্য স্থাপন করতে হয়। এসময় খলিফা ইসলামি বিশ্বের প্রধান ছিলেন। পরবর্তী সুলতান আল্প আরসালানপ্রথম মালিকশাহ ও উজির নিজামুল মুলক পারস্য অবস্থান করতেন কিন্তু বাগদাদের আব্বাসীয়দের উপরও তাদের প্রভাব ছিল। ১২ শতকে এই রাজবংশ দুর্বল হতে থাকলে আব্বাসীয়রা পুনরায় অধিক ক্ষমতা লাভ করতে থাকে।

সামরিক শক্তির পুনরুত্থান (১১১৮-১২০৬)

সম্পাদনা

যুদ্ধে সেলজুকদের সাথে লড়াই করতে সক্ষম সেনাবাহিনী প্রথমবার খলিফা আল মুসতারসিদ গড়ে তুলেন। তবে ১১৩৫ সালে তিনি পরাজিত ও নিহত হন। খলিফা আল মুকতাফি উজির ইবনে হুবায়রার সহায়তায় খিলাফতের সামরিক স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হন। বাইরের রাজবংশগুলোর প্রভাবাধীন অবস্থার প্রায় ২৫০ বছর পর বাগদাদ অবরোধের সময় সেলজুকদের বিরুদ্ধে বাগদাদকে তিনি সফলভাবে প্রতিরক্ষা করতে সক্ষম হন। এর ফলে ইরাক আব্বাসীয়দের জন্য সুরক্ষিত হয়। আল নাসিরের শাসনামলে খিলাফত ইরাকজুড়ে শক্ত অবস্থান লাভ করে।

মঙ্গোল আক্রমণ (১২০৬-১২৫৮)

সম্পাদনা
 
১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দে হালাকু খান কর্তৃক বাগদাদ অবরোধ

১২০৬ সালে চেঙ্গিস খান মধ্য এশিয়ার মঙ্গোলদের মধ্যে শক্তিশালী রাজ্য গড়ে তোলেন। ১৩ শতাব্দীতে এই মঙ্গোল সাম্রাজ্য অধিকাংশ ইউরেশিয়ান অঞ্চল জয় করে ফেলে। ১২৫৮ সালে হালাকু খানের বাগদাদ ধ্বংস করার ঘটনা ইসলামি স্বর্ণযুগের সমাপ্তি হিসেবে দেখা হয়।[৬৪] মঙ্গোলদের আশঙ্কা ছিল যে মুহাম্মদ(সা) এর চাচার বংশধর আল মুসতাসিমকে হত্যা করা হলে অলৌকিক দুর্যোগ হানা দেবে।[৬৫] পারস্যের শিয়ারা বলে যে শিয়া ইমাম হুসাইন বিন আলির মৃত্যুর পর এমন কোনো দুর্যোগ হয়নি। রাজকীয় রক্ত না ঝরানোর মঙ্গোল রীতি তাই অগুরুত্বপূর্ণ ঠেকে। হালাকু খান ১২৫৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আল মুসতাসিমকে কার্পেটে মুড়ে ঘোড়ার সাহায্যে পদদলিত করে হত্যা করেন। খলিফার পরিবারকেও হত্যা করা হয়। তার কনিষ্ঠ পুত্রকে বাচিয়ে রাখা হয় ও মঙ্গোলিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। এক কন্যাকে হালাকু খানের হারেমে দাসি হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়।[৬৬] মঙ্গোলিয়ান ইতিহাসবিদদের মতে বেঁচে যাওয়া পুত্রটি বিয়ে করে ও তার সন্তানসন্ততি হয়।[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন]

কায়রোর আব্বাসীয় খিলাফত (১২৬১-১৫১৭)

সম্পাদনা

নবম শতাব্দীতে আব্বাসীয়রা খলিফার প্রতি অণুগত সেনাবাহিনী গঠন করে। এতে অনারবদের থেকে লোক নেয়া হয়েছিল যাদের মামলুক বলা হত।[৬৭][৬৮][৬৯][৭০][৭১] আল মামুন ও তার ভাই আল মুতাসিমের শাসনকালে গঠিত এই সেনাবাহিনী সাম্রাজ্যের পরবর্তী ভাঙন রোধ করে। প্রথমদিকে এরা সরকারকে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সমস্যা বিষয়ে সাহায্য করত। আল মুতাসিম কর্তৃক বাগদাদ থেকে সামারায় রাজধানী স্থানান্তর খিলাফতের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে। অধিকন্তু আল রাদি মুহাম্মদ বিন রাইকের হাতে অধিকাংশ রাজকীয় কর্ম তুলে দেয়ার আগ পর্যন্ত মামলুকদের ক্ষমতা বৃদ্ধি থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

মামলুকরা মিশরের ক্ষমতায় চলে আসে। মঙ্গোলদের হাতে বাগদাদের পতনের পর ১২৬১ সালে মামলুকরা কায়রোতে আব্বাসীয় খিলাফত পুনপ্রতিষ্ঠা করে। কায়রোর প্রথম আব্বাসীয় খলিফা ছিলেন আল মুসতানসিরতৃতীয় আল মুতাওয়াক্কিলের সময় পর্যন্ত কায়রোর আব্বাসীয় খিলাফত টিকে ছিল। প্রথম সেলিম তাকে কনস্টান্টিনোপলে বন্দী হিসেবে নিয়ে যান। কায়রো ফিরে আসার পর ১৫৪৩ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

বাসতাকের আব্বাসীয় খানাত

সম্পাদনা

১২৫৮ সালে বাগদাদের পতনের পর আব্বাসীয় রাজবংশের কিছু বেঁচে যাওয়া সদস্য তাদের জ্যেষ্ঠ দ্বিতীয় ইসমাইল বিন হামজা বিন আহমেদ বিন মুহাম্মদের নেতৃত্ব দক্ষিণ পারস্যের ফারস অঞ্চলে চলে যায়।[৭২][৭৩] তারা খোনজ শহরে অবস্থান নেয়। এটি এসময় জ্ঞান অর্জনের একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল। শেখ আবদুস সালাম খোনজি বিন আব্বাস বিন দ্বিতীয় ইসমাইল বাগদাদের পতনের পাঁচ বছর পর খোনজে জন্ম লাভ করেন।[৭৪][৭৫] তিনি একজন বড় ধর্মীয় পণ্ডিত ও সুফি হন। স্থানীয় জনতা তাকে শ্রদ্ধা করত। তার মাজার খোনজে রয়েছে।

শেখ আবদুস সালামের বংশধররা ধর্মীয় পণ্ডিত ছিলেন এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে সম্মানিত হতেন। তেমন একজন শেখ মুহাম্মদ (মৃত্যু আনুমানিক ৯০৫ হিজরি) বাসতাক চলে আসেন।[৭৬][পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন] তার নাতি শেখ মুহাম্মদ বিন শেখ নাসিরউদ্দিন আহমেদ বিন শেখ মুহাম্মদ খোনজে কিছু সময়ের জন্য বসতি করেছিলেন। কিন্তু ৯৩৮ হিজরি বর্ধমান সাফাভি শক্তির কারণে তিনি স্থায়ীভাবে তার দাদার মত বাসতাকে চলে আসেন।[৭৭] তার নিজের নাতি শেখ হাসান (মৃত্যু ১০৮৪ হিজরি) (মোল্লা হাসান বলেও পরিচিত) বাসতাকের আব্বাসীয়দের সাধারণ বংশধর।[৭৮]

শেখ হাসানের নাতি শেখ মুহাম্মদ সাইদ (জন্ম ১০৯৬ হিজরি-মৃত্যু ১১৫২ হিজরি) ও শেখ মুহাম্মদ খান (জন্ম ১১১৩ হিজরি-মৃত্যু ১১৯৭ হিজরি) এই অঞ্চলের প্রথম আব্বাসীয় শাসক। ১১৩৭ হিজরি শেখ মুহাম্মদদ সাইদ সশস্ত্র বাহিনীর জন্য সমর্থন জড়ো করতে থাকেন। লার দখলের পর তিনি মৃত্যুর ১১৫২ হিজরিতে মৃত্যূর আগ পর্যন্ত ১২ বা ১৪ বছর এই শহর ও এর উপর নির্ভরশীল অঞ্চলগুলো শাসন করতেন।[৭৯]

তার ভাই শেখ মুহাম্মদ খান বাসতাকি এরপর বাসতাক ও জাহানগিরিয়া অঞ্চলের শাসক হন। ১১৬১ হিজরিতে শেখ মুহাম্মদ খান বাসতাকি দিদেহবান দুর্গের উদ্দেশ্যে বের হন এবং বাস্তাক ও এর অঞ্চলসমূহ তার বড় ভাইয়ের পুত্র শেখ মুহাম্মদ সাদিক ও তার চাচাত ভাই আগা হাসান খানের হাতে অর্পণ করেন।[৮০] শেখ মুহাম্মদ খান প্রায় ২০ থেকে ২৪ বছর দিদেহবান দুর্গ থেকে জাহানগিরিয়া শাসন করেন। একারণে তাকে শেখ মুহাম্মদ "দিদেহবান" বলা হয়।[৮১] এরপর তিনি বাসতাক ফিরে আসেন এবং আমৃত্যু সেখান থেকে শাসন করে যান। তার শাসনের সর্বোচ্চ সীমায় বাসতাক খানাতে শুধু জাহানগিরিয়া ছাড়াও লারবন্দর আব্বাস ও এসবের উপর নির্ভরশীল এলাকাগুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।[৮২][৮৩][৮৪][৮৫][৮৬]

শেখ মুহাম্মদ খান বাসতাকি “খান” উপাধিধারী বাসতাকের প্রথম আব্বাসীয় শাসক। এরপর সকল আব্বাসীয় শাসকের ক্ষেত্রে “খান” উপাধিটি ব্যবহার হতে থাকে।

বাসতাক ও জাহানগিরিয়ার সর্বশেষ আব্বাসীয় শাসক ছিলেন মুহাম্মদ আজম খান বানিআব্বাসিয়ান। তিনি তারিখে জাহানগিরিয়া ওয়া বনিআব্বাসিয়ানে বাসতাক গ্রন্থ রচনা করেছেন।[৮৭] এতে এই অঞ্চলের ইতিহাস ও এর শাসনকর্তা আব্বাসীয় পরিবারের বর্ণনা রয়েছে। মুহাম্মদ আজম খান বনিআব্বাসিয়ান ১৯৬৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এ বছরকে বাসতাকের আব্বাসীয় শাসনের সমাপ্তি হিসেবে গণ্য করা হয়।

আব্বাসীয় খলিফাদের তালিকা

সম্পাদনা
 
আব্বাসীয় পরিবারের বংশলতিকা। সবুজ রং দ্বারা বাগদাদের আব্বাসীয় খলিফা ও হলুদ রং দ্বারা কায়রোর আব্বাসীয় খলিফা চিহ্নিত। আব্বাসীয়দের সাথে আত্মীয়তা দেখানোর জন্য মুহাম্মদ এর নামও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
# খলিফা হিজরি খ্রিষ্টাব্দ
আব্বাসীয় খিলাফতের খলিফা
আস সাফাহ ১৩১–১৩৬ ৭৫০–৭৫৪
আল মনসুর ১৩৬–১৫৮ ৭৫৪–৭৭৫
আল মাহদি ১৫৮–১৬৯ ৭৭৫–৭৮৫
আল হাদি ১৬৯–১৭০ ৭৮৫–৭৮৬
হারুনুর রশিদ ১৭০–১৯৩ ৭৮৬–৮০৯
আল আমিন ১৯৩–১৯৮ ৮০৯–৮১৩
আল মামুন ১৯৮–২১৮ ৮১৩–৮৩৩
আল মুতাসিম ২১৮–২২৭ ৮৩৩–৮৪২
আল ওয়াসিক ২২৭–২৩২ ৮৪২–৮৪৭
১০ আল মুতাওয়াক্কিল ২৩২–২৪৭ ৮৪৭–৮৬১
১১ আল মুনতাসির ২৪৭–২৪৮ ৮৬১–৮৬২
১২ আল মুসতাইন ২৪৮–২৫২ ৮৬২–৮৬৬
১৩ আল মুতাজ ২৫২–২৫৫ ৮৬৬–৮৬৯
১৪ আল মুহতাদি ২৫৫–২৫৬ ৮৬৯–৮৭০
১৫ আল মুতামিদ ২৫৭–২৭৯ ৮৭০–৮৯২
১৬ আল মুতাদিদ ২৭৯–২৮৯ ৮৯২–৯০২
১৭ আল মুকতাফি ২৮৯–২৯৫ ৯০২–৯০৮
১৮ আল মুকতাদির ২৯৫–৩২০ ৯০৮–৯৩২
১৯ আল কাহির ৩২০–৩২২ ৯৩২–৯৩৪
২০ আল রাদি ৩২২–৩২৯ ৯৩৪–৯৪০
২১ আল মুত্তাকি ৩২৯–৩৩৪ ৯৪০–৯৪৪
২২ আল মুসতাকফি ৩৩৪–৩৩৬ ৯৪৪–৯৪৬
২৩ আল মুতি ৩৩৬–৩৬৩ ৯৪৬–৯৭৪
২৪ আল তাই ৩৬৩–৩৮১ ৯৭৪–৯৯১
২৫ আল কাদির ৩৮২–৪২২ ৯৯১–১০৩১
২৬ আল কাইম ৪২২–৪৬৮ ১০৩১–১০৭৫
২৭ আল মুকতাদি ৪৬৮–৪৮৭ ১০৭৫–১০৯৪
২৮ আল মুসতাজির ৪৮৭–৫১২ ১০৯৪–১১১৮
২৯ আল মুসতারশিদ ৫১২-৫৩০ ১১১৮–১১৩৫
৩০ আর রশিদ ৫৩০–৫৩১ ১১৩৫–১১৩৬
৩১ আল মুকতাফি ৫৩১–৫৫৫ ১১৩৬–১১৬০
৩২ আল মুসতানজিদ ৫৫৫–৫৬৬ ১১৬০–১১৭০
৩৩ আল মুসতাদি ৫৬৬–৫৭৬ ১১৭০–১১৮০
৩৪ আন নাসির ৫৭৬–৬২২ ১১৮০–১২২৫
৩৫ আজ জহির ৬২২–৬২৩ ১২২৫–১২২৬
৩৬ আল মুসতানসির ৬২৩–৬৪০ ১২২৬–১২৪২
৩৭ আল মুসতাসিম বিল্লাহ ৬৪০–৬৫৬ ১২৪২–১২৫৮
কায়রোর খলিফা
৩৯ দ্বিতীয় আল মুসতানসির ৬৫৯–৬৬০ ১২৬১–১২৬২
৪০ প্রথম আল হাকিম ৬৬০–৭০২ ১২৬২–১৩০২
৪১ প্রথম আল মুসতাকফি ৭০২–৭৪১ ১৩০৩–১৩৪০
৪২ প্রথম আল ওয়াসিক ৭৪১–৭৪২ ১৩৪০–১৩৪১
৪৩ দ্বিতীয় আল হাকিম ৭৪২–৭৫৩ ১৩৪১–১৩৫২
৪৪ প্রথম আল মুতাদিদ ৭৫৩–৭৬৪ ১৩৫২–১৩৬২
৪৫ প্রথম আল মুতাওয়াক্কিল ৭৬৪–৭৮৫ ১৩৬২–১৩৮৩
৪৬ দ্বিতীয় আল ওয়াসিক ৭৮৫–৭৮৮ ১৩৮৩–১৩৮৬
৪৭ আল মুতাসিম ৭৮৮–৭৯১ ১৩৮৬–১৩৮৯
৪৮ প্রথম আল মুতাওয়াক্কিল (পুনরায় ক্ষমতালাভ) ৭৯১–৮০৯ ১৩৮৯–১৪০৬
৪৯ আল মুসতাইন ৮০৯–৮১৭ ১৪০৬–১৪১৪
৫০ দ্বিতীয় আল মুতাদিদ ৮১৭–৮৪৫ ১৪১৪–১৪৪১
৫১ দ্বিতীয় আল মুসতাকফি ৮৪৫–৮৫৫ ১৪৪১–১৪৫১
৫২ আল কাইম ৮৫৫–৮৫৯ ১৪৫১–১৪৫৫
৫৩ আল মুসতানজিদ ৮৫৯-৮৮৪ ১৪৫৫–১৪৭৯
৫৪ দ্বিতীয় আল মুতাওয়াক্কিল ৮৮৪–৯০২ ১৪৭৯–১৪৯৭
৫৫ আল মুসতামসিক ৯০২–৯১৪ ১৪৯৭–১৫০৮
৫৬ তৃতীয় আল মুতাওয়াক্কিল ৯১৪–৯২৩ ১৫০৮–১৫১৭

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. http://www.tarihimiz.net/v3/Haberler/Tarih/Abbasiler-devrinde-turklerin-etkinligi-ve-hizmetleri.html ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ এপ্রিল ২০১২ তারিখে (তুর্কি) Abbasiler devrinde türklerin etkinliği ve hizmetleri
  2. http://www.genbilim.com/content/view/4930/190/ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ আগস্ট ২০১৩ তারিখে (তুর্কি) Abbasiler
  3. Hoiberg 2010, পৃ. 10।
  4. Holt 1984
  5. Lapidus, Ira (২০০২), A History of Islamic Societies, Cambridge University Press, পৃষ্ঠা 54, আইএসবিএন 0-521-77056-4 .
  6. Lapidus 2002, পৃ. 54।
  7. "Abbasid"। Encyclopedia Britannica। I: A-Ak – Bayes (15th সংস্করণ)। Chicago, IL। ২০১০। পৃষ্ঠা 10। আইএসবিএন 978-1-59339-837-8 
  8. Dupuy ও Dupuy 1986, পৃ. 233।
  9. Wade, Geoffrey (২০১২), Wade, Geoff; Tana, Li, সম্পাদকগণ, Anthony Reid and the Study of the Southeast Asian Past, Singapore: Institute of Southeast Asian Studies, পৃষ্ঠা 138 n. 4, Tazi in Persian sources referred to a people in that land, but was later extended to cover Arab lands. The Persian term was adopted by Tang China (Dàshí :大食) to refer to the Arabs until the 12th century .
  10. The Islamic World to 1600, Applied History Research Group, University of Calgary, ৫ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০০৮ .
  11. Chapuis, Oscar (১৯৯৫)। A History of Vietnam: From Hong Bang to Tu Duc। Greenwood। পৃষ্ঠা 92। আইএসবিএন 0-313-29622-7। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১০ 
  12. Kitagawa, Joseph Mitsuo (২০০২)। The Religious Traditions of Asia: Religion, History, and Culture। Routledge। পৃষ্ঠা 283। আইএসবিএন 0-7007-1762-5। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১০ 
  13. Smith, Bradley; Weng, Wango HC (১৯৭২)। China: a history in art। Harper & Row। পৃষ্ঠা 129। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১০ 
  14. Baker (১৯৯০)। Hong Kong Images: People and Animals। Hong Kong University Press। পৃষ্ঠা 53। আইএসবিএন 962-209-255-1। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১০  Authors list-এ |প্রথমাংশ1= এর |শেষাংশ1= নেই (সাহায্য)
  15. Fitzgerald, Charles Patrick (১৯৬১)। China: A Short Cultural History। Praeger। পৃষ্ঠা 332। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১০ 
  16. Bloodworth, Dennis; Bloodworth, Ching Ping (২০০৪)। The Chinese Machiavelli: 3000 Years of Chinese Statecraft। Transaction। পৃষ্ঠা 214। আইএসবিএন 0-7658-0568-5। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুন ২০১০ 
  17. Broomhall, Marshall (১৯১০)। "II. China & the Arabs From the Rise of the Abbaside Caliphate"। Islam in China: a neglected problem। London 12 Paternoster Buildings, EC: Morgan & Scott। পৃষ্ঠা 25, 26। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১১ 
  18. Brinkley, Frank (১৯০২)। Trübner, সম্পাদক। China: Its History, Arts and Literature। Oriental। 2। Boston & Tokyo: JB Millet। পৃষ্ঠা 149, 150, 151, 152। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১১ 
  19. Moule, Arthur Evans। The Chinese people: a handbook on China...। সংগ্রহের তারিখ 14 December 201  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  20. Confucianism and its Rivals। Forgotten Books। পৃষ্ঠা 223। আইএসবিএন 1-4510-0849-X। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১১ 
  21. Jenkins, Everett (১৯৯৯)। The Muslim Diaspora: A Comprehensive Reference to the Spread of Islam in Asia, Africa, Europe, and the Americas1 (illustrated সংস্করণ)। McFarland। পৃষ্ঠা 61। আইএসবিএন 0-7864-0431-0। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১১Arab troops were dispatched by Abu Giafar to China. 
  22. Travels in Indo-China। পৃষ্ঠা 295। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১১ 
  23. Ghosh, Stanley (১৯৬১)। Embers in Cathay। Doubleday। পৃষ্ঠা 60। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১১During the reign of Abbassid Caliph Abu Giafar in the middle of the eighth century, many Arab soldiers evidently settled near the garrisons on the Chinese frontier. 
  24. Hermann, Heinrich (১৯১২)। Chinesische Geschichte (German ভাষায়)। D Gundert। পৃষ্ঠা 77। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১১ 
  25. Deutsche Literaturzeitung für Kritik der Internationalen Wissenschaft, 49 (27–52), Weidmannsche Buchhandlung, ১৯২৮, পৃষ্ঠা 1617, সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১১ .
  26. Huff, Toby E (২০০৩), The Rise of Early Modern Science: Islam, China, and the West, Cambridge University Press, পৃষ্ঠা 48 .
  27. Islamic Radicalism and Multicultural Politics। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 9। আইএসবিএন 978-1-136-95960-8। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১২ 
  28. Gregorian, Vartan (২০০৩), Islam: A Mosaic, Not a Monolith, Brookings Institution Press, পৃষ্ঠা 26–38, আইএসবিএন 0-8157-3283-X .
  29. Derewenda, Zygmunt S. (২০০৭), "On wine, chirality and crystallography", Acta Crystallographica A, 64: 247 
  30. Warren, John (২০০৫), "War and the Cultural Heritage of Iraq: a sadly mismanaged affair", Third World Quarterly, 26 (4, 5): 815–30 .
  31. Zahoor, A (১৯৯৭), Jabir ibn Haiyan (Geber), University of Indonesia, ৩০ জুন ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১৪ .
  32. Vallely, Paul, "How Islamic inventors changed the world", The Independent, UK, ১৭ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১৪ .
  33. Gibb, Hamilton (১৯৮২), Studies on the civilization of Islam, Princeton University Press, পৃষ্ঠা 66, আইএসবিএন 0-691-05354-5 .
  34. Spuler, Bertold (১৯৬০), The Muslim World, I. The Age of the Caliphs, Leiden: EJ Brill, পৃষ্ঠা 29, আইএসবিএন 0-685-23328-6 .
  35. Hill, Donald. Islamic Science and Engineering. 1993. Edinburgh Univ. Press. আইএসবিএন ০-৭৪৮৬-০৪৫৫-৩, p.4
  36. Brague, Rémi। The Legend of the Middle Ages। পৃষ্ঠা 164। আইএসবিএন 9780226070803। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 
  37. Britannica, Nestorian
  38. The American Journal of Islamic Social Sciences 22:2 Mehmet Mahfuz Söylemez, The Jundishapur School: Its History, Structure, and Functions, p.3.
  39. Bonner, Bonner; Ener, Mine; Singer, Amy (২০০৩)। Poverty and charity in Middle Eastern contexts। SUNY Press। পৃষ্ঠা 97। আইএসবিএন 978-0-7914-5737-5 
  40. Ruano, Eloy Benito; Burgos, Manuel Espadas (১৯৯২)। 17e Congrès international des sciences historiques: Madrid, du 26 août au 2 septembre 1990। Comité international des sciences historiques। পৃষ্ঠা 527। আইএসবিএন 978-84-600-8154-8 
  41. Eglash, Ron (১৯৯৯), পৃষ্ঠা 61  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য).
  42. Steffens, Bradley (২০০৬), Ibn al-Haytham: First Scientist, Morgan Reynolds, আইএসবিএন 1-59935-024-6 .
  43. Gorini, Rosanna (অক্টোবর ২০০৩)। "Al-Haytham, the man of experience. First steps in the science of vision" (PDF)Journal of the International Society for the History of Islamic Medicine2 (4): 53–55। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৮According to the majority of the historians al-Haytham was the pioneer of the modern scientific method. With his book he changed the meaning of the term optics and established experiments as the norm of proof in the field. His investigations are based not on abstract theories, but on experimental evidences and his experiments were systematic and repeatable. 
  44. Briffault, Robert (১৯২৮), The Making of Humanity, G Allen & Unwin, পৃষ্ঠা 190–202, What we call science arose as a result of new methods of experiment, observation, and measurement, which were introduced into Europe by the Arabs. [...] Science is the most momentous contribution of Arab civilization to the modern world, but its fruits were slow in ripening. [...] The debt of our science to that of the Arabs does not consist in startling discoveries or revolutionary theories; science owes a great deal more to Arab culture, it owes its existence...The ancient world was, as we saw, pre-scientific. [...] The Greeks systematized, generalized and theorized, but the patient ways of investigations, the accumulation of positive knowledge, the minute methods of science, detailed and prolonged observation and experimental inquiry were altogether alien to the Greek temperament. 
  45. Rabin, Sheila, "Copernicus", Encyclopedia of Science, Stanford .
  46. Grant ও Clute 1999, পৃ. 51.
  47. de Camp, L Sprague, Literary Swordsmen and Sorcerers: The Makers of Heroic Fantasy, পৃষ্ঠা 10, আইএসবিএন 0-87054-076-9 
  48. Grant ও Clute 1999, পৃ. 52.
  49. Talattof, Kamran; Clinton, Jerome W; Luther, K Allin (২০০০), The poetry of Nizami Ganjavi: knowledge, love, and rhetoric, Palgrave Macmillan, পৃষ্ঠা 15–16 
  50. Smith, Paul, trans, Nizami: Layla & Majnun, Shiraz, ৬ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ .
  51. "Islamic Philosophy", Encyclopedia of Philosophy, Routledge, ১৯৯৮ 
  52. Dunn, Kevin M (২০০৩), Caveman chemistry: 28 projects, from the creation of fire to the production of plastics, Universal, পৃষ্ঠা 166, আইএসবিএন 9781581125665 
  53. Hassan, Ahmad Y, "Potassium Nitrate in Arabic and Latin Sources", History of Science and Technology in Islam, ১৯ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ 
  54. Hassan, Ahmad Y, "Gunpowder Composition for Rockets and Cannon in Arabic Military Treatises In Thirteenth and Fourteenth Centuries", History of Science and Technology in Islam, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ 
  55. "History of the caravel"। Tamu। ৬ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ এপ্রিল ২০১১ 
  56. Lucas, Adam Robert (২০০৫), "Industrial Milling in the Ancient and Medieval Worlds: A Survey of the Evidence for an Industrial Revolution in Medieval Europe", Technology and Culture, 46 (1): 10 
  57. Hassan, Ahmad Y, "Part II: Transmission of Islamic Engineering", Transfer of Islamic Technology To The West, History of Science and Technology in Islam, ৮ মার্চ ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ 
  58. Lucas, Adam Robert (২০০৫), "Industrial Milling in the Ancient and Medieval Worlds: A Survey of the Evidence for an Industrial Revolution in Medieval Europe", Technology and Culture, 46 (1): 1–30, ডিওআই:10.1353/tech.2005.0026 
  59. Hassan, Ahmad Y, "Part 1: Avenues of Technology Transfer", Transfer of Islamic Technology to The West, History of Science and Technology in Islam, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ 
  60. Labib, Subhi Y (১৯৬৯), "Capitalism in Medieval Islam", The Journal of Economic History, 29 (1): 79–96 
  61. Ochsenwald, William (২০০৪)। The Middle East, a History। Boston: McGraw Hill। পৃষ্ঠা 69আইএসবিএন 0-07-244233-6 
  62. Brauer, Ralph W (১ ডিসেম্বর ১৯৯৫), Boundaries and Frontiers in Medieval Muslim Geography, Diane, পৃষ্ঠা 7–10, আইএসবিএন 0-87169-856-0 
  63. Meisami, Julie Scott (১৯৯৯), Persian Historiography to the End of the Twelfth Century, আইএসবিএন 9780748612765 
  64. Cooper, William Wager; Yue, Piyu (২০০৮), Challenges of the muslim world: present, future and past, Emerald, পৃষ্ঠা 215, আইএসবিএন 9780444532435 
  65. Glasse, Cyril; Smith, Huston (২০০২)। The new encyclopedia of Islam। Walnut Creek, CA: AltaMira Press। আইএসবিএন 0-7591-0190-6 
  66. Frazier, Ian (২৫ এপ্রিল ২০০৫), "Invaders: Destroying Baghdad", The New Yorker, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৫ 
  67. Vásáry, István (২০০৫), Cuman and Tatars, Cambridge University Press 
  68. Isichei, Elizabeth (১৯৯৭)। A History of African Societies to 1870Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 192। আইএসবিএন 9780521455992। সংগ্রহের তারিখ ৮ নভেম্বর ২০০৮ 
  69. Pavlidis, T (২০১১), "11: Turks and Byzantine Decline", A Concise History of the Middle East 
  70. Mikaberidze, Alexander। "The Georgian Mameluks in Egypt"। ২৬ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৫ 
  71. Visser, Reidar, Basra, the Failed Gulf State: Separatism and Nationalism in Southern Iraq, পৃষ্ঠা 19 .
  72. For his full genealogy all the way back to Al-Abbas bin Abdulmuttalib, the paternal uncle of the Prophet Mohamed, please see: Al-Abbasi, A.M.M. (1986) Nader al-Bayan fi Dhikr Ansab Baniabbassian. Doha.
  73. Baniabbassian 1960, পৃ. 8–9।
  74. Baniabbassian 1960, পৃ. 14।
  75. Bosworth এবং অন্যান্য 1983, পৃ. 671।
  76. Al-Abbasi 1986
  77. Baniabbassian 1960, পৃ. 25–26।
  78. Baniabbassian 1960, পৃ. 27।
  79. Baniabbassian 1960, পৃ. 112–15।
  80. Baniabbassian 1960, পৃ. 118।
  81. Baniabbassian 1960, পৃ. 142, 149।
  82. Baniabbassian 1960, পৃ. 152–53।
  83. Bosworth এবং অন্যান্য 1983, পৃ. 674।
  84. Floor 2010, পৃ. 35।
  85. Floor 2011, পৃ. 58।
  86. Perry 1979, পৃ. 160, Table 1।
  87. Baniabbassian 1960
  •   এই নিবন্ধটি একটি প্রকাশন থেকে অন্তর্ভুক্ত পাঠ্য যা বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনেচিসাম, হিউ, সম্পাদক (১৯১১)। "Abbasids"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ (১১তম সংস্করণ)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। 

গ্রন্থপঞ্জি

সম্পাদনা

ইংরেজিতে

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা