পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা পশ্চিমবঙ্গের এককক্ষ রাজ্য আইনসভা। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার বিবাদীবাগ এলাকায় হাইকোর্টের দক্ষিণে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভবনটি অবস্থিত। বিধানসভার সদস্যদের বিধায়ক বলা হয়। তাঁরা পাঁচ বছরের জন্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার মোট আসনসংখ্যা ২৯৫। এর মধ্যে ২৯৪টি আসনের বিধায়করা এক-আসনবিশিষ্ট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে সরাসরি নির্বাচিত হয়ে আসেন এবং এক জন সদস্য অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায় থেকে সরাসরি নির্বাচিত হন। সাধারণত, বিধানসভার মেয়াদ পাঁচ বছরের; তবে তার আগেই বিধানসভা ভেঙে দেওয়া যায়।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা | |
---|---|
সপ্তদশ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা | |
ধরন | |
ধরন | |
কক্ষ | বিধানসভা ও বিধান পরিষদ (বিলুপ্ত) |
মেয়াদসীমা | ৫ বছর |
প্রতিষ্ঠিত | ১৯৩৭ |
নেতৃত্ব | |
উপাধ্যক্ষ | |
পরিষদীয় নেতা (মুখ্যমন্ত্রী) | |
পরিষদীয় উপনেতা | |
বিরোধী উপনেতা | |
গঠন | |
রাজনৈতিক দল | সরকার (২২১)
সমর্থন (১)
বিরোধী (৭৩)
খালি (৩)
|
নির্বাচন | |
সরল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পদ্ধতি | |
সর্বশেষ নির্বাচন | ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল, ২০২১ |
পরবর্তী নির্বাচন | মার্চ-এপ্রিল ২০২৬ |
সভাস্থল | |
বিধানসভা ভবন, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ | |
ওয়েবসাইট | |
www | |
পাদটীকা | |
১৮৬২ সালে বাংলা প্রেসিডেন্সিতে প্রাদেশিক আইনসভা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলা প্রেসিডেন্সির পশ্চিমাংশ ১৯৫০ সালে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের একটি রাজ্যের স্বীকৃতি পায়। পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান ভৌগোলিক সীমা গঠিত হয় ১৯৬০ সালের ১ মে। |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৮৬১ সালের ভারতীয় কাউন্সিল আইন বলে, ১৮৬২ সালের ১৮ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের তদনীন্তন গভর্নর-জেনারেল ব্রিটিশ বঙ্গপ্রদেশের একটি বারো সদস্যবিশিষ্ট আইনসভা প্রতিষ্ঠা করেন। এই আইনসভার সদস্য ছিলেন বাংলার লেফটানেন্ট গভর্নর এবং কয়েকজন মনোনীত সদস্য। কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশনটি বসে ১৮৬২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি।প্রারম্ভিক যুগে এই আইনসভাটিকে বেঙ্গল কাউন্সিল, লেফটেনান্ট গভর্নরের কাউন্সিল, বেঙ্গল অ্যাসেম্বলি ইত্যাদি নামে ডাকা হত।[১] প্রথম দিকে কাউন্সিলের রাজনৈতিক কার্যকলাপ ছিল সীমাবদ্ধ। এই কারণে সঠিকভাবেই এই সভাকে ছোটলাটের দরবার সভা বলে অভিহিত করা হত।[২] তবে ১৮৯২ সালের ভারত শাসন আইন বলে কাউন্সিলের রাজনৈতিক প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই সময় কাউন্সিলের সদস্যসংখ্যা বেড়ে হয় ২০; এঁদের মধ্যে ৭ জন ছিলেন নির্বাচিত।[৩] ১৯০৯ সালের ভারতীয় কাউন্সিল আইন বলে সভার সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৫৩ করা হয়।[৪] ১৯১৯ সালের ভারত শাসন আইন বলে এই সংখ্যা বৃদ্ধি করে ১৩৯ করা হয়।[৫] ১৯১৯ সালের এই আইন বলেই স্থাপিত হয় বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভা বা বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল। ১৯২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, ডিউক অফ কনট আনুষ্ঠানিকভাবে এই সভার উদ্বোধন করেন।[৬]
১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইন বলে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভাকে দুটি কক্ষে বিভক্ত করা হয়: লেজিসলেটিভ কাউন্সিল ও লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি। ২৫০ সদস্যবিশিষ্ট অ্যাসেম্বলির মেয়াদ ছিল সর্বাধিক পাঁচ বছর। অন্যদিকে কাউন্সিল ছিল একটি স্থায়ী সংস্থা। এই সংস্থায় সদস্যসংখ্যা ৬৩ জনের কম ও ৬৫ জনের বেশি হত না। প্রতি তিন বছর অন্তর সভার এক-তৃতীয়াংশ সদস্য অবসর নিতেন।
১৯৪৭ সালের ১৪ অগস্ট ব্রিটিশ বঙ্গপ্রদেশ পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ব পাকিস্তানে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত ৯০টি কেন্দ্রের বিধায়ক ও দুই জন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সদস্য নিয়ে গঠিত হয় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভা বিলুপ্ত হয়ে যায়। ১৯৪৭ সালের ২১ নভেম্বর প্রথম পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধিবেশন বসে। এই সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হন প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ। অন্যান্য নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন বিধানচন্দ্র রায়, জ্যোতি বসু প্রমুখ।[৭]
ভারতীয় সংবিধানে পশ্চিমবঙ্গের দ্বিকক্ষীয় বিধানসভা অনুমোদিত হয়। ১৯৫২ সালে ৫ জুন ৫১ সদস্যবিশিষ্ট পশ্চিমবঙ্গ বিধান পরিষদ গঠিত হয়। দুই জন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সদস্য হয় বিধানসভার সদস্যসংখ্যা হয় ২৪০। ভারতের প্রথম সাধারণ নির্বাচনের পর ১৯৫২ সালের ১৮ জুন প্রথম পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধিবেশন বসে।
১৯৬৯ সালের ২১ মার্চ, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিধান পরিষদ অবলুপ্তির প্রস্তাব গৃহীত হয়। এই অনুসারে, ভারতীয় সংসদে পশ্চিমবঙ্গ বিধান পরিষদ (অবলুপ্তি) আইন পাস হয়। ১৯৬৯ সালের ১ অগস্ট বিধান পরিষদ অবলুপ্ত হয়।
বিধানসভা কেন্দ্রের তালিকা
সম্পাদনা২০০২ সালে গঠিত সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ২০০৮ সালে পুনর্নির্ধারিত সীমানায় পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা কেন্দ্রগুলি হল[৮]:
পাদটীকা
সম্পাদনা- ↑ সত্যব্রত দত্ত, বাংলার বিধানসভা ও সংসদীয় রাজনীতি (১৮৬২–১৯৫১), বুক সিন্ডিকেট প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, পৃ. ২৩
- ↑ সত্যব্রত দত্ত, প্রাগুক্ত, পৃ. ২৯
- ↑ সত্যব্রত দত্ত, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪১
- ↑ সত্যব্রত দত্ত, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৪-৪৫
- ↑ সত্যব্রত দত্ত, প্রাগুক্ত, পৃ. ৬৩
- ↑ সত্যব্রত দত্ত, প্রাগুক্ত, পৃ. ৬৬
- ↑ সত্যব্রত দত্ত, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৭৪-৭৫
- ↑ "Delimitation Commission Notification" (পিডিএফ)। Chief Electoral Officer, West Bengal website। 15 February 2006। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 05 December 2009। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)