যশোর
যশোর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা বিভাগে অবস্থিত একটি প্রশাসনিক ও গুরুত্বপূর্ণ মেগাসিটি। প্রশাসনিকভাবে শহরটি যশোর জেলা এবং যশোর সদর উপজেলার সদরদপ্তর। এটি যশোর জেলার সবচেয়ে বড় মহানগর এবং প্রধান অতি মহানগরী। এটি খুলনা বিভাগ এর অন্যতম বৃহত্তম ও জনবহুল মেগাসিটি এবং প্রতিষ্ঠাকালের দিক থেকে দেশের প্রাচীন পৌরসভার একটি। যশোর খুলনা বিভাগের দ্বিতীয় প্রধান বাণিজ্যিক শহর। [১]যশোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাজধানী ঢাকার সাথে শহরটিকে আকাশপথে সংযুক্ত করেছে। বিভাগীয় শহর খুলনা থেকে যশোর শহরের দূরত্ব ৫২.২ কি.মি.।[২] যশোর শহর ভৈরব নদ এর তীরে অবস্থিত। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মস্থান যশোরকে ফুলের রাজধানী বলা হয় কেননা যশোরের গদখালি থেকে বাংলাদেশের ৮০% ফুল সরবরাহ করা হয়।[৩] বাংলাদেশের সব থেকে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল যশোরে অবস্থিত। দক্ষিণাঞ্চলের দুই বিভাগ খুলনা ও বরিশালের একমাত্র পাঁচ তারকা হোটেল যশোরে অবস্থিত, দেশের অন্যতম বৃহত্তম ও প্রাচীনতম সেনানিবাসের একটি যশোরে অবস্থিত, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমি যশোরের মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটিতে অবস্থিত, রয়েছে প্রাচীনতম রেলব্যবস্থা, মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল আধুনিক সুযোগ সুবিধা। যশোরে বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন ও দর্শনীয় স্থান রয়েছে। ব্রিটিশ সরকার যশোর রোড নির্মাণ করেছিল যা বর্তমানে যশোর শহরকে কলকাতা এবং খুলনার সাথে সংযুক্ত করে রেখেছে। দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে চাঁচড়া জমিদার বাড়ি, গদখালি ও পানিসরা ফুলের বাগান, মধুসূদন দত্তের বাড়ি মধুপল্লী, কালেক্টরেট পার্ক, জেস গার্ডেন, বেনাপোল পোর্ট, বিনোদিয়া ও বোর্ড ক্লাব, আইটি পার্ক, ইমাম বারা, মির্জানগর হাম্মামখানা, এগারো শিব মন্দির ইত্যাদি।
যশোর | |
---|---|
শহর | |
ডাকনাম: খেজুরের গুড়ের শহর, প্রথম ডিজিটাল শহর, দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রবেশদ্বার | |
বাংলাদেশে যশোর শহরের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°১০′১৭″ উত্তর ৮৯°৩০′৩৯″ পূর্ব / ২৩.১৭১৩৪৬° উত্তর ৮৯.৫১০৯৫০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা |
জেলা | যশোর |
উপজেলা | সদর |
শহর প্রতিষ্ঠা | ১৪৫০ |
মহানগর | ১৭৯০ |
পৌরনগর | ১৮৬৪ |
সরকার | |
• ধরন | যশোর পৌরসভা |
• শাসক | যশোর পৌরসভা |
আয়তন | |
• মোট | ২১.১৫ বর্গকিমি (৮.১৭ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা | |
• মোট | ২,৯৮,০০০ |
• জনঘনত্ব | ১৪,০০০/বর্গকিমি (৩৬,০০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+০৬:০০) |
পোস্টকোড | 7400-7409 |
জাতীয় কলিং কোড | +৮৮০ |
কলিং কোড | ০৪১ |
পুলিশ | বাংলাদেশ পুলিশ |
বিমানবন্দর | যশোর বিমানবন্দর |
ভাষা | বাংলা |
নামকরণ
সম্পাদনাযশোর বাংলাদেশের একটি জেলা ও প্রাচীন জনপদ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৭৮১ খ্রিষ্টাব্দে যশোর জেলা প্রতিষ্ঠা করা হয়। গৌড়ের ধন ও যশ হরণের মাধ্যমে এ অঞ্চলের শ্রী বৃদ্ধি ঘটেছিল বলে অনেকের ধারণা। তাই হরণকৃত যশ থেকে যশোর নামের উৎপত্তি। ফারসি শব্দ যশর থেকে যশোর নামের উৎপত্তি বলে অনেকের ধারণা। ফারসি শব্দ যশর অর্থ ব্রীজ বা সাঁকো। যশোরে আসার জন্য অসংখ্য খাল, নদী-নালা পার হতে হতো। এসব খাল, নদী-নালার উপরে ছিল অসংখ্য সাঁকো। কানিংহাম তার গ্রন্থে এবিষয়টি উল্লেখ করেছেন।
আবার অন্য একটি সূত্র হতে জানা যায় যে- মহারাজ প্রতাপাদিত্যের পিতা বিক্রমাদিত্য ও তার এক সহযোগি বসন্ত রায় গৌড়ের এক চরম অরাজকতার সময় সুলতানের অপরিমিত ধনরত্ন নৌকা বোঝাই করে গোপনে এই এলাকায় প্রেরণ করেন। গৌড়ের ধনরত্ন বোঝাই অসংখ্য নৌকা এখানে পৌঁছানোর পর ধীরে ধীরে বন জঙ্গলে আবৃত্ত এলাকাটির খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো। প্রতিষ্ঠিত হলো একটি সমৃদ্ধ রাজ্য। নবপ্রতিষ্ঠিত রাজ্যের নামকরণ হল যশোহর। প্রবাদ আছে, গৌড়ের যশ হরণ করে এই এলাকার শ্রীবৃদ্ধি হওয়ায় নবপ্রতিষ্ঠিত রাজ্যের নাম যশোহর রাখা হয়। স্থানীয় পুরাতন নাম যশোহর পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন নামকরণ হয় যশোর। 'যশোর' শব্দটি 'যশোহর' শব্দের অপভ্রংশ।
জনসংখ্যা
সম্পাদনাযশোর শহরের মোট জনসংখ্যা ২,৯৮,০০০; যার মধ্যে ১৫১০০০ জন পুরুষ এবং ১৪৭০০০ জন নারী। এ শহরের পুরুষ এবং নারীর অনুপাত ১০:৭। শহরে মোট ৬৬,৪৯৬টি পরিবার রয়েছে। যশোর হলো বাংলাদেশের ৫ম বৃহত্তম পৌরসভা জনসংখ্যার দিক দিয়ে। [৪]
ভৌগোলিক উপাত্ত
সম্পাদনাশহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হলো ২৩°১০′৪০″ উত্তর ৮৯°১০′৪৮″ পূর্ব / ২৩.১৭৭৭৬৮২° উত্তর ৮৯.১৮০১২২৫° পূর্ব। সমুদ্র সমতল থেকে শহরটির গড় উচ্চতা ১০.৮৯ মিটার।[৫]
ভৌগোলিক সীমানা
সম্পাদনাউত্তরে ঝিনাইদহ জেলা ও মাগুরা জেলা, দক্ষিণে সাতক্ষীরা জেলা ও খুলনা জেলা, পূর্বে নড়াইল জেলা ও খুলনা জেলা, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ।
প্রশাসনিক এলাকা ও প্রশাসন
সম্পাদনা১৮৮৪ সালে যশোর শহরের নাগরিকদের পৌরসেবা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে যশোর পৌরসভা নামক একটি স্থানীয় সরকার সংস্থা (পৌরসভা) গঠিত হয় যা ৯টি ওয়ার্ড এবং ৭৩টি মহল্লায় বিভক্ত। ২৮.৫৬ বর্গ কি.মি. আয়তনের যশোর শহরের ২১.১৫ বর্গ কি.মি. এলাকা যশোর পৌরসভা দ্বারা পরিচালিত হয়।[৬] আর বাকি শহরতলির বিভিন্ন স্থান যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পরিচালিত করা হয়।
এ জেলায় ৮টি উপজেলা রয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি পুলিশ থানা রয়েছে এবং একটি পোর্ট থানা রয়েছে।
শিক্ষা ব্যবস্থা
সম্পাদনাযশোরের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত। যশোর শহরের সাক্ষরতার হার হলো শতকরা ৮৬.২০ ভাগ। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই শহরের একমাত্র সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও কয়েকটি সরকারি কলেজ আছে। যশোর শিক্ষাবোর্ড শহরের নিউটাউন এলাকাতে অবস্থিত। দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয় (এম এম কলেজ) যশোরে অবস্থিত।
১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দের সময় হতেই যশোর শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠান আছে এ জেলায়। যশোরে নির্মিত হয়েছে দক্ষিণ বঙ্গের সর্ববৃহৎ আইটি প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। এছাড়া উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা নিচে দেয়া হলো:
- যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
- উপশহর মহিলা ডিগ্রী কলেজ ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে
- উপশহর মহাবিদ্যালয়
- ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ, যশোর
- যশোর মেডিকেল কলেজ
- যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ
- ঝিকরগাছা দারুল উলূম কামিল মাদ্রাসা
- সরকারি গঙ্গানন্দপুর কলেজ
- বিএএফ শাহীন কলেজ যশোর
- সরকারি মাইকেল মধুসুদন কলেজ (প্র. ১৯৪১ খ্রি.)
- যশোর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট
- এস এম সুলতান বেঙ্গল চারুকলা মহাবিদ্যালয়
- যশোর জিলা স্কুল-১৮৩৮ খ্রিষ্টাব্দে
- মুনশী মেহেরুল্লাহ একাডেমী (১৯০১), ঝাউদিয়া,যশোর
- পুলিশ লাইন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, যশোর-১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে
- যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- নিউটাউন বালিকা বিদ্যালয়, উপশহর ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে
- সম্মিলনী ইনস্টিটিউশন যশোর-১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে
- দাউদ পাবলিক স্কুল
- যশোর শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল এন্ড কলেজ
- ২৯ নং উপশহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে
- বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমী, বাংলাদেশের একমাত্র বিমান বাহিনী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
- যশোর জামিয়া ইসলামিয়া
- দারুল আরকাম মাদ্রাসা যশোর
- মুনসেফপুর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় -১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে
- গঙ্গানন্দপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়- ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে
- হামিদপুর আল-হেরা কলেজ,যশোর
- আমদাবাদ কলেজ
- যশোর আমিনিয়া কামিল মাদরাসা
- যশোর সরকারি সিটি কলেজ
- মশিয়াহাটী ডিগ্রী কলেজ
- মশিয়াহাটী বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়
- নেহালপুর স্কুল এন্ড কলেজ
- নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- নওয়াপাড়া শংকরপাশা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- নওয়াপাড়া ডিগ্রী কলেজ
- আকিজ কলেজিয়েট স্কুল
- মণিরামপুর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়
- মণিরামপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- জামদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় -১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দ
- চাড়াভিটা মাধ্যমিক বিদ্যালয় -১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে
- মনিরামপুর কারিগরি ভোকেশনাল ইন্সটিটিউ,
- রায়পুর স্কুল এন্ড কলেজ,বাঘারপাড়া
- কয়ালখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিয়ালপাড়া
- মনিরামপুর কলেজ
- মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ,
- বরভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয়,বাঘারপাড়া
- বাঘারপাড়া পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়,বাঘারপাড়া
- বুরুজ বাগান মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- ঝিকরগাছা এম. এল. মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ঝিকরগাছা, যশোর-১৮৮৮ সালে
- ঝিকরগাছা বি. এম. মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- চৌগাছা কামিল মাদ্রাসা
- চৌগাছা শাহাদৎ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়,
- চৌগাছা হাজী সরদার মর্ত্তজ আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়,
- শার্শা পাইলট স্কুল, শার্শা
- চৌগাছা সরকারি কলেজ,
- চৌগাছা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজ,
- সরকারি বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ কলেজ, শার্শা
- ডা. আফিল উদ্দীন ডিগ্রী কলেজ,শার্শা
- এবিসিডি কলেজ,
- এস এম হাবিব কলেজ,
- ভবদহ মহাবিদ্যালয়
- পদ্মবিলা ফাযিল(ডিগ্ৰি) মাদরাসা,১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ
- সেন্ট লুইস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শিমুলিয়া, ঝিকরগাছা
- নতুনহাট পাবলিক কলেজ
- আমবটতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- মিউনিসিপ্যাল প্রিপারেটরী উচ্চ বিদ্যালয়, যশোর
- আমিনী রামচন্দ্রপুর দাখিল মাদরাসা,নাভারন,ঝিকরগাছা
- করিম আলী রঘুনাথপুর আব্দুল খালেক আলীম মাদরাসা,নাভারন,ঝিকরগাছা
- বায়সা চাদপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- টাওরা আজিজুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সম্পাদনাযশোরের সাথে এর কাছাকাছি জেলাগুলির শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। পশ্চিম ও পূর্ব বাংলায় পরিবহণের জন্য এখানে সংযোজক আন্তর্জাতিক মহাসড়ক আছে।
যশোর রেলস্টেশন বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় ব্রডগেজ-ভিত্তিক নেটওয়ার্কের একটি জংশন। নেটওয়ার্কটি ভারত পর্যন্ত প্রসারিত। রাজধানী ঢাকা এবং ভারতের কলকাতাকে সংযুক্ত করে পরিষেবাটি ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে চালু করা হয়েছিল। যশোর জংশন রুটটির মাঝখানে পড়েছে।
নগরীর কাছাকাছি যশোর বিমানবন্দরটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিমানঘাঁটি। এটিই দেশের একমাত্র বিমানবন্দর যেখানে বিমান বাহিনীর সকল বৈমানিকদের বিমান উড্ডয়নের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এটির রানওয়ে দিয়ে সামরিক বিমানসহ অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল করে। দৈনিক চলাচল করা অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যিক বিমানের মধ্যে রয়েছে ইউএস-বাংলা, রিজেন্ট , নভো এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
অর্থনীতি
সম্পাদনাদেশের বৃহত্তম আইটি পার্ক শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।
চিংড়ি চাষ
সম্পাদনাযশোরের অর্থনীতিকে বেগবান করেছে মাছ চাষ। যশোরের অর্থনীতির সিংহভাগই আসে মাছ চাষ তথা চিংড়ি রফতানি করে।
বেনাপোল স্থল বন্দর
সম্পাদনাযশোরের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান নিয়ামক দেশের প্রধান এবং সর্ববৃহৎ বেনাপোল স্থল বন্দর যা শার্শা উপজেলার সীমান্তবর্তী বেনাপোল পৌরশহরে অবস্থিত। ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের সিংহভাগ এর মাধ্যমে সংঘটিত হয়। ওপারে আছে পেট্রাপোল। সরকারি আমদানী শুল্ক আহরণে বেনাপোল স্থল বন্দরটির ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ। এখানকার মানুষের জীবিকার অন্যতম মাধ্যম আমদানি-রপ্তানি বানিজ্য।
নওয়াপাড়া
সম্পাদনাযশোরের ব্যবসা এবং বাণিজ্যর প্রাণ কেন্দ্র বলা যায় নওয়াপাড়াকে। এখানকার আশেপাশের উদ্যোক্তাদের কারণে এখানে বিভিন্ন শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠেছে। এছাড়া নৌপথে আমদানি রপ্তানি হয়ে থাকে। যা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
গদখালি
সম্পাদনাবাংলাদেশের ফুলের রাজধানী যশোর। বাংলাদেশের অধিকাংশ ফুল মূলত যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালিতে চাষ হয়। এখানে উৎপাদিত ফুল সারাদেশে সরবরাহ করা হয়।
বাসাবাড়ি বাজার
বাংলাদেশের কাঁচা সবজি কচুর মুখীর ভান্ডার এই বাসাবাড়ি বাজারে। শার্শা উপজেলার অন্তর্গত নিজামপুর ইউনিয়নের অধীনস্থ কেরালখালী ও পাড়িয়ারঘোপের একটি ব্যবসায়িক বাজার এটি। এই বাজার থেকে কচুর মুখী ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলাতে রপ্তানি হয়ে থাকে। সবচেয়ে বেশি কচুর মুখী চাষ হয়ে থাকে কেরালখালী, পাড়িয়ারঘোপ, বসন্তপুর এবং এর আশেপাশের গ্রামে। শার্শা থানার, ঝিকরগাছা থানার ও চৌগাছা থানার বিভিন্ন গ্রাম থেকে এই বাজারে বড় পরিসরে কচুর মুখী এসে থাকে।
জলবায়ু
সম্পাদনাযশোর-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মাস | জানু | ফেব্রু | মার্চ | এপ্রিল | মে | জুন | জুলাই | আগস্ট | সেপ্টে | অক্টো | নভে | ডিসে | বছর |
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) | ২২.৯
(৭৩.২) |
২৭.০
(৮০.৬) |
৩৩.৪
(৯২.১) |
৪১.০
(১০৫.৮) |
৩৮.১
(১০০.৬) |
৩২.৬
(৯০.৭) |
৩১.৪
(৮৮.৫) |
৩১.৬
(৮৮.৯) |
৩২.১
(৮৯.৮) |
৩১.৫
(৮৮.৭) |
২৯.২
(৮৪.৬) |
২৪.৯
(৭৬.৮) |
৩১.৩
(৮৮.৪) |
দৈনিক গড় °সে (°ফা) | ১৫.৪
(৫৯.৭) |
১৯.৩
(৬৬.৭) |
২৬.১
(৭৯.০) |
৩৪.৬
(৯৪.৩) |
৩৩.০
(৯১.৪) |
২৯.২
(৮৪.৬) |
২৮.৪
(৮৩.১) |
২৮.৬
(৮৩.৫) |
২৮.৭
(৮৩.৭) |
২৭.২
(৮১.০) |
২৩.১
(৭৩.৬) |
১৭.৮
(৬৪.০) |
২৬.০
(৭৮.৭) |
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) | ৯.০
(৪৮.২) |
১১.৭
(৫৩.১) |
১৮.৯
(৬৬.০) |
২৮.৩
(৮২.৯) |
২৭.৯
(৮২.২) |
২৫.৮
(৭৮.৪) |
২৫.৫
(৭৭.৯) |
২৫.৬
(৭৮.১) |
২৫.৪
(৭৭.৭) |
২৩.০
(৭৩.৪) |
১৭.০
(৬২.৬) |
১০.৬
(৫১.১) |
২০.৭
(৬৯.৩) |
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) | ১১
(০.৪) |
১৯
(০.৭) |
৪০
(১.৬) |
৭৭
(৩.০) |
১৬৮
(৬.৬) |
৩১৪
(১২.৪) |
৩০৪
(১২.০) |
২৯৩
(১১.৫) |
২৪৫
(৯.৬) |
১৩৩
(৫.২) |
২৮
(১.১) |
৮
(০.৩) |
১,৬৪০
(৬৪.৪) |
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%) | ৪৬ | ৩৫ | ৩৬ | ৪৪ | ৬০ |
আরো দেখুন
সম্পাদনাবিতর্কিত মতামত
সম্পাদনাযশোর শহর নিয়ে অনেক বিতর্কিত মতামত রয়েছে। যেমন যশোর পৌরসভার আয়তন ২১ বর্গকিলোমিটার। কিন্তু যশোর শহরের আয়তন ৭২ বর্গকিলোমিটারের কাছাকাছি। একারণে খুলনার পর খুলনা বিভাগের বৃহত্তম শহর।
সূত্র তালিকা
সম্পাদনা- ↑ "যশোর-সফটওয়্যার-টেকনোলজি-পার্ক"। www.bhtpa.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৯।
- ↑ "Distance from Khulna to Jessore"। distancesto.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-০৬।
- ↑ "করোনা কেড়ে নিয়েছে লাখো ফুলচাষির স্বস্তি"। দৈনিক প্রথম আলো। ১৯ জুলাই ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০২১।
- ↑ "Urban Centers in Bangladesh"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৫: Urban Area Rport, 2011। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ২৩৫। ২০১৯-০৪-১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০৪।
- ↑ "Latitude and longitude, elevation for Jessore, Bangladesh"। distancesto.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-০৬।
- ↑ "এক নজরে পৌরসভা"। ২০১৯-০১-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-০৬।
- ↑ "Population and Housing Census 2011 - Volume 3: Urban Area Report" [জনসংখ্যা ও গৃহগণনা ২০১১ - খণ্ড ৩: নগর অঞ্চলের প্রতিবেদন] (পিডিএফ)। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। আগস্ট ২০১৪।