মুরাদনগর উপজেলা
মুরাদনগর উপজেলা বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা। ২টি থানা ও তাদের অন্তর্ভুক্ত ২২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলাটি কুমিল্লা জেলার সর্ববৃহৎ উপজেলা।[১]
মুরাদনগর | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে মুরাদনগর উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৩৮′৩২″ উত্তর ৯০°৫৫′৫০″ পূর্ব / ২৩.৬৪২২২° উত্তর ৯০.৯৩০৫৬° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | কুমিল্লা জেলা |
জাতীয় সংসদ | ২৫১ কুমিল্লা-৩ |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | পদশূন্য |
• উপজেলা চেয়ারম্যান | পদ শূন্য |
আয়তন | |
• মোট | ৩৪০.৯৩ বর্গকিমি (১৩১.৬৩ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৬,৬৭,৩২০জন[১] |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪৬% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ১৯ ৮১ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনামুরাদনগর উপজেলার আয়তন ৩৪০.৭৩ বর্গ কিলোমিটার। এটি আয়তনের দিক থেকে কুমিল্লার সবচেয়ে বড় উপজেলা।[২] কুমিল্লা জেলা সদর থেকে সড়ক পথে ৩৫.৪২ কিলোমিটার দূরে গোমতী নদীর তীরে মুরাদনগর উপজেলা অবস্থিত। এ উপজেলার উত্তরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা, দক্ষিণে চান্দিনা উপজেলা, পূর্বে দেবিদ্বার উপজেলা, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা, পশ্চিমে দাউদকান্দি উপজেলা, তিতাস উপজেলা, হোমনা উপজেলা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনামুরাদনগর উপজেলায় বর্তমানে ২টি থানার অধীনে মোট ২২টি ইউনিয়ন রয়েছে।
- বাঙ্গরাবাজার থানার আওতাধীন ১০টি ইউনিয়ন
- ১নং শ্রীকাইল
- ২নং আকুবপুর
- ৩নং আন্দিকোট
- ৪নং পূর্বধইর পূর্ব
- ৫নং পূর্বধইর পশ্চিম
- ৬নং বাঙ্গরা পূর্ব
- ৭নং বাঙ্গরা পশ্চিম
- ৮নং চাপিতলা
- ১২নং রামচন্দ্রপুর উত্তর
- ২২নং টনকী
- মুরাদনগর থানার আওতাধীন ১২টি ইউনিয়ন
ইতিহাস
সম্পাদনাএক সময়ের শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিল্প ও সাহিত্যের পাদপীঠ মুরাদনগর একটি প্রাচীন ঐতিহ্য সমৃদ্ধ জনপদ হিসেবে বহুল পরিচিত। মুরাদনগর উপজেলা ১৮৫৮ সালে প্রথম থানা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। সে সময়ে এ থানার নাম ছিল থোল্লা। ১৮৭৮ সালে এর পুনঃ নামকরণ করা হয় মুরাদনগর। মুরাদনগর উপজেলার নামকরণ সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে জনশ্রুতি আছে যে, মোগল সম্রাট শাহ জাহানের কনিষ্ঠ পুত্র মুরাদ কোন এক সময়ে এই এলাকায় এসেছিলেন। সে অনুসারে এই এলাকার নামকরণ মুরাদনগর করা হয়েছে। এছাড়া অনেকের মতে, মুরাদনগর মূলত মীর মুরাদ আলীর নামানুসারে হয়, যিনি ছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনের একজন রাজস্ব আদায়কারী। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতি বিজড়িত মুরাদনগর উপজেলার পরিচয় পাওয়া যায় কবি রচিত নিচের গানে- উপল নুড়ি কাঁকন চুড়ি বাজে বাজ ঘুমতি নদীর জলে।
বিবরণ
সম্পাদনা- আয়তন: ৩৪০.৯৩ বর্গ কিলোমিটার
- ইউনিয়নের সংখ্যা: ২২টি
- মৌজার সংখ্যা: ১৫৩টি
- গ্রামের সংখ্যা: ৩০৮টি
- পরিবার সংখ্যা: ৮২,৭০০টি
- পুলিশ স্টেশন: ০২টি
- পুলিশ ক্যাম্প: ০২টি
- পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকের সংখ্যা: ০১টি
- সক্ষম দম্পতির সংখ্যা: ৯৯,৮৫৪ জন
- পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের সংখ্যা: ১২টি
- কমিউনিটি ক্লিনিক: ৪৪টি
- উপজেলা স্বাস্থ্য ভবন: ০১টি
- উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংখ্যা: ০৭টি
- পশু হাসপাতাল: ০১টি
- কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের সংখ্যা: ০২টি
- আশ্রয়ন প্রকল্পের সংখ্যা: ০২টি
- আদর্শ গ্রাম প্রকল্প: ০৫টি
- ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন: ০১টি
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনা- জনসংখ্যা (২০১১ সনের আদমশুমারী অনুযায়ী): ৬,৬৭,৩২০ জন
- পুরুষ: ৩,৩১,৩৬০ জন
- মহিলা: ৩,৩৫,৩৬০ জন
- বৃদ্ধির হার: ১.১৬% (২০১১ সনের আদমশুমারী অনুযায়ী)।
খাল ও নদী
সম্পাদনাএই উপজেলার নদীগুলো হলঃ গোমতী, বুড়ি, পুরনো তিতাস ও আর্সি। আর উল্লেখযোগ্য খালের মধ্যে রয়েছে অদের খাল, কার্জন খাল, মরিচা খাল ইত্যাদি।
শিক্ষা
সম্পাদনা- সাক্ষরতার হার (২০১১ সনের আদমশুমারী অনুযায়ী): ৪৬%।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
সম্পাদনা- কলেজ
- সরকারি কলেজ : শ্রীকাইল সরকারি কলেজ
- বেসরকারি কলেজ : ২২টি
- বেসরকারি মহিলা কলেজ: ০১টি
- মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় : ০১টি
- বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (৬টি জুনিয়রসহ): ৫১টি
- মাধ্যমিক মহিলা বিদ্যালয় : ১১টি
- বেসরকারি মাদ্রাসা
- দাখিল, আলিম, ফাজিল ও ১টি কামিল মাদ্রাসাসহ: ৩৪টি
- বেসরকারী মহিলা দাখিল মাদ্রাসা : ০১টি
- কওমি মাদ্রাসা : ১৪৩টি
- প্রাথমিক বিদ্যালয়
- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ১৪৯টি
- বেসরকারি রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়: ২৬টি
- স্বল্পব্যয়ী কমিউনিটি বিদ্যালয়: ২৯টি
অর্থনীতি
সম্পাদনা- ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা: ০১ টি
- গ্যাস ক্ষেত্র চালু: ০২ টি
- গ্যাস ক্ষেত্র (পরিত্যক্ত): ০১ টি
- বিদ্যুৎ সাবস্টেশন: ২টি
- বিদ্যুৎ চাহিদা: ২৮ মেগাওয়াট(ঘাটতি নেই)
- বিদ্যুতায়িত গ্রামের সংখ্যা : ৩০৫ টি (শতভাগ)
- ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়: ২১ টি
- হাট-বাজারের সংখ্যা: ৩৫ টি
- বার্ষিক খাদ্য উৎপাদন: ৭৯,৮৫৯ মে: টন
- খাদ্যের চাহিদা: ৮৯,৪৭৬.১৪ মে: টন
- খাদ্য ঘাটতি: ৯,৬১,৭১৪ মে: টন
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
সম্পাদনা- কামিনী কুমার দত্ত - পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য, পাকিস্তানের সাবেক আইন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
- মিজানুর রহমান আজহারী - ইসলামি বক্তা, ধর্ম প্রচারক ও লেখক।
- ফরিদ উদ্দিন খাঁ (১৮৯৩-১৯৫৭) - সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও প্রকাশক।
- ক্যাপ্টেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত - শিক্ষাবেত্তা।
- নার্গিস আসার খানম - কবি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্ত্রী।
- আসিফ মাহমুদ - সমন্বয়ক,বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং উপদেষ্টা,অন্তর্বর্তী কালীন সরকার ।
- গোলাম কিবরিয়া - সাবেক অর্থসচিব।
- ডা. ওয়ালী আহমেদ - সাবেক রাজনীতিবিদ।
- ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন - রাজনীতিবিদ ও শিল্পপতি। এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি।
- ফরিদা রউফ আশা - এমপি (১৯৫২-২০০৭), রাজনীতিবিদ।
- হারুন-অর-রশিদ - রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল মনোনীত প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
- কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ - সাবেক ধর্ম উপমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য।
- মোহাম্মদ আবুল হাশেম - প্রাক্তন রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযুদ্ধ সংগঠক।
- রফিকুল ইসলাম মিয়া - সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য।
- জাহাঙ্গীর আলম - সাবেক সংসদ সদস্য কুমিল্লা-৩।
ঐতিহাসিক নিদর্শন ও ঐতিহ্য
সম্পাদনা- জাহাপুর জমিদার বাড়ি
- কবি নজরুল স্মৃতি (দৌলতপুর)
- শ্রীকাইল কলেজ
সংসদীয় আসন
সম্পাদনা- সংসদ সদস্যগণের তালিকা
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে মুরাদনগর"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০১৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ https://web.archive.org/web/20151208044832/http://www.bbs.gov.bd/WebTestApplication/userfiles/Image/National%20Reports/Union%20Statistics.pdf
- ↑ "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd। ২ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।