ফরিদা রউফ আশা

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

ফরিদা রউফ আশা (মৃত্যু: ১০ সেপ্টেম্বর ২০০৭) বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা যিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।[][]

ফরিদা রউফ আশা
২ নং সংরক্ষিত মহিলা আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
৫ জুলাই ১৯৯৬ – ১৫ জুলাই ২০০১
পূর্বসূরীরেবেকা মাহমুদ
উত্তরসূরীআবেদা চৌধুরী
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মফরিদা খান আশা
১৯৫২
ঢাকা
মৃত্যু১০ সেপ্টেম্বর ২০০৭
উত্তরা, ঢাকা
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীআবদুর রউফ
সম্পর্ককামাল উদ্দিন খান (ভাই), শফিক খান (ভাই), মহীউদ্দিন খান রবি (ভাই), আব্দুল ওয়াহেদ (ভগ্নিপতি), সিরাজুল হক (ফুফাতো ভাই), আনিসুল হক (ফুফাতো ভ্রাতুষ্পুত্র), আতাউস সামাদ (ফুফাতো ভগ্নিপতি), রতন সিদ্দিকী (মামাতো ভাই)
সন্তানডাক্তার মোস্তফা মঈন, রিফাত ফারহানা শান্তা, রিফাত রুমানা শর্মী
পিতামাতাফরিদ উদ্দিন খাঁ, শামসুন্নাহার
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

ফরিদা রউফ আশা ১৯৫২ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ফরিদ উদ্দিন খাঁ (১৮৯৩-১৯৫৭) পঞ্চাশের দশকের প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও প্রকাশক। মাতা শামসুন্নাহার (১৯০৭-১৯৭৪)। স্বামী আবদুর রউফ (১৯৪১-২০১১) রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা যিনি রংপুর-১নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তার এক ছেলে ডাক্তার মোস্তফা মঈন উদ্দিন সিরাজগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন, এবং দুই মেয়ে রিফাত ফারহানা শান্তা ও রিফাত রুমানা শর্মী।[]

রাজনৈতিক জীবন

সম্পাদনা

ফরিদা রউফ আশা বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠিত ছাত্রী ব্রিগেডের সংগঠক ছিলেন। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন তিনি। ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।[]

তিনি সপ্তম জাতীয় সংসদের মহিলা আসন ০২ থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত সংসদ সদস্য ছিলেন।[]

পরিবার

সম্পাদনা

ফরিদা খান আশার পৈতৃক নিবাস কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার কোড়েরপাড় গ্রামের বিখ্যাত খাঁ বাড়ি। তাঁর পিতা ফরিদ উদ্দিন খাঁ (১৮৯৩-১৯৫৭) ছিলেন একজন স্বনামধন্য সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও প্রকাশক। পিতামহ ইউনুস আলি খাঁ (১৮৬৫-১৯২১) ছিলেন মুরাদনগর অঞ্চলের প্রথম এন্ট্রান্স পাশ (১৮৮৫ সাল) এবং ডাক বিভাগের হেড পোস্টমাস্টার। পিতামহী জওহরেন্নেসা মুরাদনগরের প্রথম বালিকা বিদ্যালয় কোড়েরপাড় বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষয়িত্রী ছিলেন।[]

ফরিদা খান আশার চার ভাই ও এক বোন। প্রথম ভাই শামস উদ্দিন খান মোসলেম (১৯৩৪-১৯৬৬) ছিলেন কবি ও আলোকচিত্রশিল্পী; দ্বিতীয় ভাই প্রকাশক ও ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন খান কানন (১৯৩৭-২০১৬) ছিলেন শাহজাহান লাইব্রেরি এবং শাহজাহান প্রিন্টিং ওয়ার্কস এর স্বত্বাধিকারী; তৃতীয় ভাই শফিক খান (১৯৪০-২০২০) ছিলেন গণস্বাস্থ্যের নির্বাহী পরিচালক[], চতুর্থ ভাই ভূতত্ত্ববিদ মহীউদ্দিন খান রবি (১৯৪৩-২০১৪) ছিলেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান হাইড্রোজিওলজিস্ট ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন, উন্নয়ন ও পরিকল্পনা)। একমাত্র বোন ফয়জুন্নেসা খান মায়া (১৯৩৮-১৯৫৮) এর স্বামী কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াহেদ (১৯২৪-১৯৫৯) ছিলেন কৃষি বিভাগের মাসিক কৃষিকথা পত্রিকার সম্পাদক।[]

১৯৭৩ সালে ছাত্রনেতা আব্দুর রউফের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান[] শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ বান্ধবীদের একজন ছিলেন ফরিদা খান, তাদের সিদ্দিক বাজারের বাসাতে শেখ হাসিনা বহুবার বেড়াতে এসেছিলেন।[]

রাজনীতিবিদ অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক (বাচ্চু মিয়া) তাঁর ফুফাতো ভাই, এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তাঁর ফুফাতো ভাইয়ের পুত্র। সাংবাদিক আতাউস সামাদ তাঁর ফুফাতো ভগ্নিপতি (ফুফাতো বোন কামরুন্নাহার রেণুর স্বামী)।[] নাট্যকার ও গবেষক রতন সিদ্দিকী তাঁর মামাতো ভাই।[]

মৃত্যু

সম্পাদনা

ফরিদা রউফ আশা ১০ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সালে ঢাকার উত্তরায় নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন।[][]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "৭ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০২০ 
  2. নিজস্ব প্রতিবেদক (১০ সেপ্টেম্বর ২০১৩)। "বেগম ফরিদা রউফ"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  3. ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯। "সাবেক সাংসদ ফরিদা রউফ আশার মৃত্যুবার্ষিকী আজ"এনটিভি। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০২০ 
  4. হোসেন, জয়নাল। পুণ্যের ঘরে শুন্য দিয়ে ব্যতিক্রমী আট। অ্যাডর্ন পাবলিকেশন। 
  5. দিগন্ত, Daily Nayadiganta-নয়া। "শফিক খানের মৃত্যুতে ডা: জাফরুল্লাহর শোক"Daily Nayadiganta (নয়া দিগন্ত) : Most Popular Bangla Newspaper। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-১৪ 
  6. খাঁ, ফরিদ উদ্দিন (প্রথম প্রকাশঃ ১৯১৯; প্রথম দ্যু প্রকাশঃ জানুয়ারি, ২০১৭)। হোসেন, জয়নাল, সম্পাদক। জ্বলন্ত প্রেম। বাংলাদেশ: সম্পাদিত সংস্করণ এর প্রকাশকঃ দ্যু প্রকাশন। আইএসবিএন 978-984-93198-4-9  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)