উসমানীয় সাম্রাজ্য

দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকার প্রাক্তন সাম্রাজ্য (১২৯৯-১৯২২)
(উসমানীয় থেকে পুনর্নির্দেশিত)

উসমানীয় সাম্রাজ্য (উসমানীয় তুর্কি: دولت عليه عثمانيه Devlet-i ʿAlīye-i ʿOsmānīye, আক্ষ. অনু. মহিমান্বিত উসমানীয় রাষ্ট্র; তুর্কি: Osmanlı İmparatorluğu বা Osmanlı Devleti; ফরাসি: Empire ottoman)[টীকা ৪][১৬] ছিল একটি রাষ্ট্র[টীকা ৫] যা ১৪শ থেকে প্রারম্ভিক ২০শ শতাব্দী পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়াউত্তর আফ্রিকার বেশিরভাগ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করত। এই সাম্রাজ্যের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা উসমান গাজীর পিতা আরতুগ্রুল গাজী। ১২৯৯ সালে অঘুজ তুর্কি বংশোদ্ভূত প্রথম উসমান এর পিতা আরতুগ্রুল গাজী উত্তর-পশ্চিম আনাতোলিয়ার দ্বায়িত্ব পান সেলযুক সাম্রাজ্য কর্তৃক, প্রথম দিকে রোমের সেলযুক সাম্রাজ্যের প্রতি অনুগত থাকলেও রোমের সেলজুক সাম্রাজ্যের ক্রান্তিলগ্নে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এবং ধীরে ধীরে একটি বৃহত সালতানাত প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সেলজুক রাজবংশের জামাতাও ছিলেন [১৭] এবং প্রথম উসমানের মাতা হালিমে সুলতান ছিলেন সেলজুক সাম্রাজ্যের শাহজাদী। প্রথম মুরাদ কর্তৃক বলকান জয়ের মাধ্যমে উসমানীয় সাম্রাজ্য বহুমহাদেশীয় সাম্রাজ্য হয়ে উঠে এবং খিলাফতের দাবিদার হয়। ১৪৫৩ সালে সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদের কনস্টান্টিনোপল জয় করার মাধ্যমে উসমানীয়রা বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য উচ্ছেদ করে। ১৫২৬ সালে হাঙ্গেরি জয়ের পর ইউরোপের বলকান অঞ্চল সমূহ নিয়ে বড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা লাভ করে। [১৮][১৯][২০]

মহিমান্বিত উসমানীয় সাম্রাজ্য

دولت عليه عثمانیه
Devlet-i ʿAlīye-i ʿOsmānīye
Osmanlı İmparatorluğu
১২৯৯–১৯২২
উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতীক (১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দের নকশা)
প্রতীক (১৮৮২ খ্রিষ্টাব্দের নকশা)
নীতিবাক্য: دولت ابد مدت
Devlet-i Ebed-müddet
“চিরন্তন রাজ্য”[]
জাতীয় সঙ্গীত: একাধিক
(১৮০৮–১৯২২ পর্যন্ত)
উসমানীয়া সাম্রাজ্যের সর্বোচ্চ সীমানা, ১৬৮৩ খ্রিষ্টাব্দ
উসমানীয়া সাম্রাজ্যের সর্বোচ্চ সীমানা, ১৬৮৩ খ্রিষ্টাব্দ
অবস্থাসাম্রাজ্য
রাজধানী
প্রচলিত ভাষা
ধর্ম
সুন্নি ইসলাম
জাতীয়তাসূচক বিশেষণউসমানীয়
সরকাররাজতন্ত্র, মজলিসে শুরা, খিলাফত
(১২৯৯–১৮৭৬)
(১৮৭৮–১৯০৮)
(১৯২০–১৯২২)
সাংবিধানিক রাজতন্ত্র
(১৮৭৬–১৮৭৮)
(১৯০৮–১৯২০)
সুলতান 
• ১২৯৯–১৩২৬
প্রথম উসমান (প্রথম)
• ১৯১৮–১৯২২
ষষ্ঠ মুহাম্মদ (সর্বশেষ)
খলিফা 
• ১৫১৭–১৫২০
প্রথম সেলিম (প্রথম)[১২]
• ১৯২২–১৯২২
দ্বিতীয় আবদুল মজিদ (শেষ)
উজিরে আজম 
• ১৩২০–১৩৩১
আলাউদ্দিন পাশা (প্রথম)
• ১৯২০–১৯২২
আহমেদ তৌফিক পাশা (শেষ)
আইন-সভাইসলামি বিচারব্যবস্থা শরিয়াহসংসদ
সেনেট
চেম্বার অব ডেপুটি
ইতিহাস 
১২৯৯
১৪০২–১৪১৩
১৪৫৩
১৮৭৬–১৮৭৮
১৯০৮–১৯২০
২৩ জানুয়ারি ১৯১৩
১ নভেম্বর ১৯২২
২৯ অক্টোবর ১৯২২
৩ মার্চ ১৯২৪
আয়তন
• মোট
১৮,০০,০০০ কিমি (৬,৯০,০০০ মা)
১৬৮৩[১৩]৫২,০০,০০০ বর্গকিলোমিটার (২০,০০,০০০ বর্গমাইল)
১৯১৪[১৪]১৮,০০,০০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৯০,০০০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
• ১৮৫৬
৩৫৩৫০০০০
• ১৯০৬
২০৮৮৪০০০
• ১৯১২[১৫]
২৪০০০০০০
মুদ্রাআকচে, পারা, সুলতানি, কুরুশ, লিরা
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
আনাতোলীয় বেইলিক
রুম সালতানাত
বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য
কারামান বেইলিক
Kingdom of Bosnia
Bulgarian Empire
Serbian Empire
Kingdom of Hungary
Kingdom of Croatia
মিশরের মামলুক সালতানাত
Tunisia
Hospitallers of Tripolitania
Algeria
Empire of Trebizond
Despotate of the Morea
Despotate of Epirus
Despotate of Dobruja
Turkish Provisional Government
First Hellenic Republic
Khedivate of Egypt
Condominium of Bosnia and Herzegovina
Principality of Serbia
Provisional Government of Albania
Kingdom of Romania
Principality of Bulgaria
British Cyprus
ইরাক রাজতন্ত্র (ব্রিটিশ প্রশাসন)
দিরিয়া আমিরাত
French Algeria
Yemen
French Tunisia
Sheikhdom of Kuwait
Provisional National Government of the Southwestern Caucasus
Italian North Africa
হেজাজ রাজতন্ত্র
OETA
বর্তমানে যার অংশ
 

১৬শ ও ১৭শ শতাব্দীতে বিশেষত সুলতান প্রথম সুলাইমানের সময় উসমানীয় সাম্রাজ্য দক্ষিণপূর্ব ইউরোপ, উত্তরে রাশিয়া কৃষ্ণ সাগর, পশ্চিম এশিয়া, ককেসাস, উত্তর আফ্রিকা ও আফ্রিকার শৃঙ্গ জুড়ে , মধ্যপ্রাচ্য ও আরব অঞ্চলসহবিস্তৃত একটি শক্তিশালী বহুজাতিক, বহুভাষিক সাম্রাজ্য ছিল।[২১] ১৭শ শতাব্দীর শুরুতে সাম্রাজ্যে ৩৬টি প্রদেশ ও বেশ কয়েকটি অনুগত রাজ্য ছিল। এসবের কিছু পরে সাম্রাজ্যের সাথে একীভূত করে নেয়া হয় এবং বাকিগুলোকে কিছুমাত্রায় স্বায়ত্তশাসন দেয়া হয়।

উসমানীয় সাম্রাজ্য সুদীর্ঘ ছয়শত বছরেরও বেশি ধরে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছে। তবে দীর্ঘদিনব্যাপী ইউরোপীয়দের তুলনায় সামরিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ে। ধারাবাহিক অবনতির ফলে সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যায়। এরপর আনাতোলিয়ায় নতুন প্রজাতন্ত্র হিসেবে আধুনিক তুরস্কের উদ্ভব হয়। বলকানমধ্যপ্রাচ্যে সাম্রাজ্যের সাবেক অংশগুলো প্রায় ৪৯টি নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।[২২]

সালতানাতের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম উসমানের নাম থেকে উসমানীয় বা উসমানীয় নামটি এসেছে। একইভাবে রাজবংশকে উসমানীয় রাজবংশ বা উসমানীয় রাজবংশ বলা হয়। তুর্কি ভাষায় সাম্রাজ্যকে বলা হত দেভলেতি আলিয়া উসমানিয়া[২৩] বা উসমানলি দেভলেতি[২৪] বলা হত। আধুনিক তুর্কি ভাষায় উসমানলি ইম্পারাতুরলুগু বা উসমানলি দেভলেতি বলা হয়।

পাশ্চাত্যে "উসমানীয় সাম্রাজ্য" ও "টার্কি" তথা তুরস্ক নাম দুইটির একটি অন্যটির বদলে ব্যবহার হত। আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক ক্ষেত্রে "টার্কি" শব্দের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়।[২৫] প্রজাতন্ত্র গঠিত হওয়ার পর আঙ্কারা ভিত্তিক নতুন সরকার টার্কি শব্দকে সরকারি নাম হিসেবে ব্যবহার শুরু করলে এই দ্বৈতপ্রথার অবসান হয়।

ইতিহাস

সম্পাদনা

উত্থান

সম্পাদনা

প্রথম উসমানের বাবা আরতুগরুল গাজি বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে সেলজুকদের সাহায্য করার জন্য ৪০০ ঘোড়সওয়ার নিয়ে মার্ভ‌ থেকে আনাতোলিয়া আসেন।[২৬] তুর্কি বংশোদ্ভূত সেলজুক রোম সালতানাতের পতনের পর আনাতোলিয়া বেশ কিছু স্বাধীন রাজ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে যাদেরকে গাজি আমিরাত বলা হত। এর মধ্যে একটি আমিরাত প্রথম উসমানের অধীন ছিল।[২৭] তার নাম থেকে উসমানীয় নামটি এসেছে। তিনি বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের প্রান্ত পর্যন্ত সীমানা বিস্তৃত করেন। [২৮]

প্রথম উসমানের মৃত্যুর পর উসমানীয় শাসন ভূমধ্যসাগরের পূর্বপ্রান্ত এবং বলকান পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। উসমানের ছেলে প্রথম ওরহান ১৩২৪ সালে বুরসা জয় করেন এবং একে উসমানীয়দের নতুন রাজধানী করা হয়। বুরসার পতনের ফলে বাইজেন্টাইনরা উত্তরপশ্চিম আনাতোলিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারায়। ১৩৮৭ সালে ভেনিসিয়ানদের কাছ থেকে সেলোনিকা জয় করে নেয়া হয়। ১৩৮৯ সালে কসোভো জয় করার পর অত্র অঞ্চলে সার্বিয়ান শক্তির সমাপ্তি ঘটে ফলে ইউরোপের দিকে উসমানীয়দের অগ্রযাত্রা সহজ হয়।[২৯] ১৩৯৬ সালে নিকোপোলিসের যুদ্ধকে মধ্যযুগের শেষ ব্যাপকভিত্তিক ক্রুসেড হিসেবে দেখা হয়। এই যুদ্ধে উসমানীয়রা জয়ী হয়েছিল।[৩০]

বলকানে তুর্কিদের অগ্রযাত্রার সাথে কনস্টান্টিনোপল জয় করা কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। কনস্টান্টিনোপলের চতুর্পাশ্বের সকল এলাকা এসময় উসমানীয়রা নিয়ন্ত্রণ করত। তুর্কি-মঙ্গোলিয়ান সুলতান তৈমুর আনাতোলিয়া আক্রমণ করলে বাইজেন্টাইনরা সাময়িকভাবে উসমানীয়দের হাত থেকে রেহাই পায়। ১৪০২ সালে আঙ্কারার যুদ্ধে পৃথিবীর শাসক তৈমুর লং উসমানীয়দের পরাজিত করেন এবং সুলতান প্রথম বায়েজিদকে বন্দী করা হয়। ফলে সাম্রাজ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। বায়েজিদের সন্তানরা উত্তরাধিকার দাবি করলে ফলশ্রুতিতে সৃষ্ট গৃহযুদ্ধ ১৪০২ থেকে ১৪১৩ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। শেষপর্যন্ত প্রথম মুহাম্মদ সুলতান হন এবং উসমানীয়দের ক্ষমতা পুনপ্রতিষ্ঠিত করেন।[৩১]

১৪০২ সালে বলকানে কিছু এলাকা যেমন সেলোনিকা, মেসিডোনিয়া ও কসোভো উসমানীয়দের হাতছাড়া হয়। তবে সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ ১৪৩০ এর দশক থেকে ১৪৫০ এর দশকের মধ্যে তা পুনরুদ্ধার করেন। ১৪৪৪ সালের ১০ নভেম্বর তিনি পোল্যান্ডের তৃতীয় লাডিস্লো ও জন হানয়াডির অধীন হাঙ্গেরিয়ান, পোলিশ ও ওয়ালিচিয়ান বাহিনীকে ভারনার যুদ্ধে পরাজিত করেন। এটি ভারনার ক্রুসেডের শেষ যুদ্ধ। তবে আলবেনীয়রা স্কেনডারবার্গের অধীনে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখে। চার বছর পর, তুর্কিদের উপর আক্রমণ করার জন্য জন হানয়াডি হাঙ্গেরিয়ান ও ওয়ালাচিয়ানদের আরেকটি বাহিনী প্রস্তুত করেন তবে ১৪৪৮ সালে কসোভোর দ্বিতীয় যুদ্ধে তিনি পরাজিত হন।[৩২]

সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ও সর্বোচ্চ পর্যায়

সম্পাদনা
 
মোহাচের যুদ্ধ[৩৩]
 
নিকোপোলিসের যুদ্ধ, ১৫২৩ খ্রিষ্টাব্দের চিত্রকর্ম।
 
১৫৩৮ সালে প্রিভেজার যুদ্ধে বারবারোসা হায়রেদ্দিন পাশা পঞ্চম চার্লসের হলি লীগকে পরাজিত করেছেন।

দ্বিতীয় মুরাদের ছেলে দ্বিতীয় মুহাম্মদ রাষ্ট্র ও সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন করেন। ১৪৫৩ সালের ২৯ মে দ্বিতীয় মুহাম্মদ কনস্টন্টিনোপল জয় করেন। উসমানীয়দের প্রতি আনুগত্যের বিনিময়ে ইস্টার্ন অর্থোডক্স চার্চকে তার কার্যক্রম চালু রাখার অনুমতি দেয়া হয়।[৩৪] পশ্চিম ইউরোপের রাজ্যগুলোর সাথে বাইজেন্টাইনদের সম্পর্ক খারাপ ছিল বিধায় অধিকাংশ অর্থোডক্স জনগণ ভেনেসিয়ানদের পরিবর্তে উসমানীয়দের অধীনে থাকাকে সুবিধাজনক মনে করে।[৩৪] ইতালীয় উপদ্বীপে বাইজেন্টাইনদের অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা ছিল আলবেনিয়ানদের প্রতিরোধ।[৩৫]

১৫শ ও ১৬শ শতাব্দীতে উসমানীয় সাম্রাজ্য বিস্তৃতির যুগে প্রবেশ করে। নিবেদিত ও দক্ষ সুলতানদের শাসনের ধারাবাহিকতায় সাম্রাজ্য সমৃদ্ধি লাভ করে। ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যকার বাণিজ্য রুটের বিস্তৃত অংশ নিয়ন্ত্রণ করার কারণে সাম্রাজ্য অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করে।[৩৬][৩৭]

সুলতান প্রথম সেলিম পারস্যের সাফাভি সম্রাট প্রথম ইসমাইলকে পরাজিত করে দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে সাম্রাজ্যের সীমানা বিস্তৃত করেন।[৩৮] তিনি মিশরে উসমানীয় শাসন প্রতিষ্ঠা ও লোহিত সাগরে নৌবাহিনী মোতায়েন করেছিলেন। উসমানীয়দের এই সম্প্রসারণের পর পর্তুগিজ সাম্রাজ্য ও উসমানীয় সাম্রাজ্যের মধ্যে এই অঞ্চলের প্রধান পক্ষ হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়।[৩৯]

সুলতান প্রথম সুলাইমান ১৫২১ সালে বেলগ্রেড জয় করেন এবং উসমানীয়-হাঙ্গেরিয়ান যুদ্ধের এক পর্যায়ে হাঙ্গেরি রাজ্যের দক্ষিণ ও মধ্য অংশ জয় করে নেয়া হয়।[৪০][৪১] মোহাচের যুদ্ধে জয়ের পর তিনি বর্তমান হাঙ্গেরির পশ্চিম অংশ ও মধ্য ইউরোপীয় অঞ্চল ছাড়া বাকি অংশে তুর্কি শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৫২৯ সালে তিনি ভিয়েনা অবরোধ করেন তবে শহর জয় করতে ব্যর্থ হন।[৪২] ১৫৩২ সালে তিনি পুনরায় ভিয়েনা আক্রমণ করেন তবে গুনসের অবরোধের পর তিনি ব্যর্থ হন।[৪৩][৪৪][৪৫] ট্রান্সিলভানিয়া, ওয়ালাচিয়া ও মলডোভিয়া উসমানীয়দের অনুগত রাজ্যে পরিণত হয়।। পূর্বে দিকে উসমানীয়রা পারস্যের কাছ থেকে বাগদাদ দখল করে নেয়। ফলে মেসোপটেমিয়াপারস্য উপসাগরে নৌ চলাচলের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ আসে।

উসমানীয় সাম্রাজ্য ও ফ্রান্স হাবসবার্গ শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয় এবং শক্তিশালী মিত্রে পরিণত হয়। ফরাসি ও উসমানীয়রা যৌথ প্রচেষ্টায় ১৫৪৩ সালে নাইস ও ১৫৫৩ সালে করসিকা জয় করে নেয়।[৪৬] নাইস অবরোধের এক মাস আগে এজতেরুগুম জয়ের সময় ফ্রান্স উসমানীয়দেরকে গোলন্দাজ ইউনিট দিয়ে সহায়তা করেছিল। উসমানীয়রা আরো সামনে অগ্রসর হওয়ার পর হাবসবার্গ শাসক ফার্ডিনেন্ড ১৫৪৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উসমানীয়দের বশ্যতা স্বীকার করে নেন।

১৫৫৯ সালে প্রথম আজুরাম পর্তুগিজ যুদ্ধের পর উসমানীয় সাম্রাজ্য দুর্বল আদাল সালতানাতকে সাম্রাজ্যের অংশ করে নেয়। এই সম্প্রসারণ সোমালিয়াআফ্রিকার শৃঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। পর্তুগিজদের সাথে প্রতিযোগিতার জন্য ভারত মহাসাগরে প্রভাব বাড়ানো হয়।[৪৭]

প্রথম সুলাইমানের শাসনের সমাপ্ত হওয়ার সময় সাম্রাজ্যের মোট জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৫,০০০,০০০ এবং তিন মহাদেশব্যপী সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল। উপরন্তু সাম্রাজ্য একটি শক্তিশালী নৌ শক্তি হয়ে উঠে। ভূমধ্যসাগরের অধিকাংশ এলাকা উসমানীয়রা নিয়ন্ত্রণ করত।[৪৮] এই সময় নাগাদ উসমানীয় সাম্রাজ্য ইউরোপের রাজনৈতিক পরিমন্ডলের বৃহৎ অংশ হয়ে উঠে। উসমানীয় সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক ও সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব রোমান সাম্রাজ্যের সাথে তুলনা করা হয়।

অনগ্রসরতা ও সংস্কার (১৫৬৬-১৮২৭)

সম্পাদনা

সাম্রাজ্যের অনগ্রসরতা ও অবনতি বিষয়ে স্টিফেন লি বলেন যে ১৫৬৬ সালের পর থেকে তা বিরতিহীনভাবে চলছিল যার মাঝে কিছু সংস্কার ও পুনরুদ্ধার কার্য সম্পাদন হয়। অনেকের মতে সুলতানের অযোগ্য উজিরে আজম, দুর্বল ও অপ্রতুল অস্ত্রে সজ্জিত সেনাবাহিনী, দুর্নীতি পরায়ণ অফিসার, লোভী শত্রু ও বিশ্বাসঘাতক মিত্রদের কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।[৪৯] কেন্দ্রীভূত সরকার ব্যবস্থায় কেন্দ্রের দুর্বলতা ক্ষতির কারণ ছিল। এর ফলে প্রাদেশিক অভিজাত ব্যক্তিবর্গ ধীরে ধীরে কনস্টান্টিনোপলের শাসনকে উপেক্ষা করতে থাকে। দ্বিতীয়ত ইউরোপীয় শত্রুদের সামরিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি পেয়েছিল কিন্তু সে তুলনায় উসমানীয়দের সেনাবাহিনীতে অগ্রগতি হয়নি।[৫০][৫১] শেষপর্যায়ে যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে সৃষ্ট মুদ্রাস্ফীতি, বিশ্ববাণিজ্য অন্যদিকে মোড় নেয়া ইত্যাদি কারণে উসমানীয় অর্থনীতি বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে।[৫২]

বিদ্রোহ ও পরিবর্তন (১৫৬৬-১৬৮৩)

সম্পাদনা
 
জিগেটভার অবরোধ বিষয়ে উসমানীয় মিনিয়েচার।

পূর্বের শতকগুলোর কার্যকর সামরিক ও প্রশাসনিক কাঠামো পরবর্তী সময়ে দুর্বল নেতৃত্বের হাতে পড়ে। সামরিক প্রযুক্তির দিক থেকে উসমানীয়রা ইউরোপের চেয়ে পিছিয়ে পড়ছিল। কিন্তু এসব সমস্যা সত্ত্বেও উসমানীয় সাম্রাজ্য সম্প্রসারণশীল শক্তি হিসেবে টিকে ছিল। ১৬৮৩ সালে ভারনার যুদ্ধের পর ইউরোপে উসমানীয় সম্প্রসারণ সমাপ্ত হয়।

পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলো কর্তৃক নতুন নৌপথ আবিষ্কার হওয়ার তারা উসমানীয়দের বাণিজ্যিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের বাইরে যেতে সক্ষম হয়। ১৪৮৮ সালে পর্তুগিজরা উত্তমাশা অন্তরীপ আবিষ্কার করে যার ফলে ভারত মহাসাগরে উসমানীয়-পর্তুগিজ নৌযুদ্ধ শুরু হয়। আজুরান সাম্রাজ্য এসময় উসমানীয়দের সাথে যোগ দেয়।[৫৩]

জার চতুর্থ আইভান ভলগা ও কাস্পিয়ান অঞ্চলে রাজ্যবিস্তার করেন। ১৫৭১ সালে ক্রিমিয়ান খান দেভলেত গিরাই উসমানীয়দের সমর্থন প্রাপ্ত হয়ে মস্কো জ্বালিয়ে দেন[৫৪] পরের বছর পুনরায় আক্রমণ করা হয় তবে মুলুডির যুদ্ধে তা প্রতিহত করা হয়। ক্রিমিয়ান খানাত পূর্ব ইউরোপে আক্রমণ অব্যাহত রাখে[৫৫] এবং ১৭শ শতাব্দীর শেষ নাগাদ পূর্ব ইউরোপের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে টিকে ছিল।[৫৬]

দক্ষিণ ইউরোপে স্পেনের দ্বিতীয় ফিলিপের নেতৃত্বাধীন ক্যাথলিক জোট লেপান্টোর যুদ্ধে উসমানীয় নৌবহরের সাথে লড়াইয়ে জয়ী হয়। তবে উসমানীয়রা দ্রুত সেরে উঠে। ১৫৭৩ সালে ভেনিসের সাথে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যা উসমানীয়দেরকে উত্তর আফ্রিকায় তাদের সীমানা বৃদ্ধি ও সংহত করার সুযোগ দেয়।[৫৭]

 
লেপেন্টোর যুদ্ধ, ১৫১৭ খ্রিষ্টাব্দ

অন্যদিকে হাবসবার্গ সীমান্ত কিছুটা অবস্থা পুনরুদ্ধার করে।[৫৮] হাবসবার্গ অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের কারণে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ব্যাপক সংখ্যক পদাতিক সরঞ্জাম প্রয়োজন ছিল। এসবের কারণে সেনাদলে শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনা ঘটে। সেনাবাহিনীতে অনিয়মিত সৈনিক নেয়া হয়েছিল। পরে তাদের অব্যাহতি দেয়া হলে বিদ্রোহ সংঘটিত হয় যার ফলে আনাতোলিয়ায় নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছিল।[৫৯] ১৬০০ সাল নাগাদ সাম্রাজ্যের জনসংখ্যা ৩,০০,০০,০০০ তে পৌছায়। প্রয়োজনীয় ভূমির জন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি হয়।[৬০] এসব সমস্যা সত্ত্বেও উসমানীয় সাম্রাজ্য শক্ত অবস্থানে ছিল এবং সামরিক বাহিনী কোনো ভয়াবহ পরাজয়ের মুখে পড়েনি। শুধুমাত্রা পূর্ব দিকে সাফাভিদের সাথে লড়াইয়ে অনেক উসমানীয় প্রদেশ হাতছাড়া হয়, তার মধ্যে কিছু আর পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

 
১৬৫৪ খ্রিষ্টাব্দের মানচিত্র।
 
দ্বিতীয় ভিয়েনা অবরোধ, ১৬৮৩ খ্রিষ্টাব্দ

সুলতান চতুর্থ মুরাদ তার শাসনামলে কেন্দ্রীয় কর্তৃত্ব জোরদার করেন এবং সাফাভিদের কাছ থেকে ইরাক পুনরুদ্ধার করেন। পরবর্তীতে তরুণ সুলতানদের মায়েরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ব্যবহার করেছিলেন। এই সময়কালকে মহিলা সালতানাত বলা হয়ে থাকে। কোপরুলু যুগে ধারাবাহিক উজিরে আজমরা কার্যকরভাবে সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখেন। কোপরুলু উজিরদের সময় সাম্রাজ্য নতুন সামরিক সাফল্য প্রত্যক্ষ করে। এসময় ট্রান্সিলভানিয়ায় কর্তৃত্ব পুনপ্রতিষ্ঠা করা হয়, ১৬৬৯ সালে ক্রিট জয় সম্পন্ন হয় এবং দক্ষিণ ইউক্রেনে সীমানা বিস্তার করা হয়।

উজিরে আজম কারা মোস্তফা পাশা দ্বিতীয়বার ভিয়েনা অবরোধ করতে গেলে এই যুগের সাফল্য বাধাপ্রাপ্ত হয়। তাদের মিত্র হাবসবার্গ, জার্মান ও পোলিশরা উসমানীয়দের হটিয়ে দেয়। হলি লীগের মৈত্রী ভিয়েনার পরাজয়ের সুবিধা আদায় করে নেয় এবং কার্লোউইতজের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। উসমানীয়রা বেশ কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করে। দ্বিতীয় মোস্তফা ১৬৯৫-১৬৯৬ সালে হাঙ্গেরিতে হাবসবার্গের বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত হানেন। কিন্তু এই অভিযান ব্যর্থ হয়।

রুশ হুমকি বৃদ্ধি

সম্পাদনা

এই সময় রাশিয়ার সীমানা সম্প্রসারণ হুমকি হিসেবে দেখা দেয়।[৬১] ১৭০৯ সালে পোলটাভার যুদ্ধে সুইডেনের রাজা দ্বাদশ চার্লস পরাজিত হলে উসমানীয়রা তাকে মিত্র হিসেবে স্বাগত জানায়।[৬১] তিনি উসমানীয় সুলতান তৃতীয় আহমেদকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অনুরোধ জানান যা ১৭১০-১৭১১ সালে প্রুথ নদীর অভিযানে উসমানীয়দের বিজয় নিয়ে আসে।[৬২]

 
যুবরাজ ইউজেনের নেতৃত্বে অস্ট্রিয়ান সেনাবাহিনীর বেলগ্রেড দখল, ১৭১৭ খ্রিষ্টাব্দ

১৭১৬-১৭১৮ সালের অস্ট্রো-তুর্কি যুদ্ধের পর পাসারোউইতজের চুক্তি অনুযায়ী বানাত, সার্বিয়া ও অল্টেনিয়া অস্ট্রিয়ার হাতে ছেড়ে দিতে হয়। এই চুক্তির ফলে এও প্রতীয়মান হয় যে উসমানীয় সাম্রাজ্য প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে চলে এসেছে এবং ইউরোপে কোনো অভিযানে যাচ্ছে না।[৬৩] অস্ট্রো-রুশ-তুর্কি যুদ্ধ ১৭৩৯ সালে বেলগ্রেড চুক্তির সমাপ্তি ঘটায়। ফলে সার্বিয়া ও অল্টেনিয়া পুনরুদ্ধার হয় কিন্তু আজভ বন্দর রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে হয়। চুক্তির পর রাশিয়াঅস্ট্রিয়া প্রুশিয়ার উত্থান নিয়ে ব্যস্ত হলে উসমানীয়রা তাদের থেকে মুক্ত হয়।[৬৪]

 
অকহাকভ অবরোধের সময় উসমানীয় সেনাদের দ্বারা রুশ বাহিনীকে প্রতিহতের চেষ্টা, ১৭৮৮ খ্রিষ্টাব্দ
 
1853 সালে পালতোলা নৌকার শেষ যুদ্ধ। ভ্লাদিমির কসভের চিত্রকর্মে সিনোপ যুদ্ধ।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সংস্কার সাধন করা হয়। এজন্য ইস্তানবুল টেকনিকাল ইউনিভার্সিটির মত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়।[৬৫] ১৭৩৪ সালে পাশ্চাত্য গোলন্দাজ কৌশলের সাথে পাল্লা দেয়ার জন্য আর্টিলারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়।[৬৬] ১৭২৬ সালে ইবরাহিম মুতেফেরিকা উজিরে আজম নেভশেহিরলি দামাত ইবরাহিম পাশা, উজিরে আজম ও অন্যান্য ধর্মীয় নেতাদেরকে ছাপাখানার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সক্ষম হন এবং সুলতান তৃতীয় আহমেদ ধর্মীয় বিষয় বাদে অন্যান্য বই ছাপানোর অনুমতি দেন।[৬৭] ১৭২৯ সালে মুতেফেরিকার প্রেস প্রথম বই প্রকাশ করে এবং ১৭৪৩ সাল নাগাদ ২৩ খণ্ডে ১৭টি রচনা প্রকাশ করেন যার প্রত্যেক খণ্ডের ৫০০ থেকে ১০০০ এর মত কপি ছিল।[৬৭][৬৮]

১৭৬৮ সালে রুশ সমর্থিত ইউক্রেনিয়ান সেনারা উসমানীয়দের নিয়ন্ত্রিত বাল্টায় প্রবেশ করে এবং এখানকার নাগরিকদের উপর গণহত্যা চালায় ও শহরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এর ঘটনা রুশ-তুর্কি যুদ্ধে অংশ গ্রহণের জন্য উসমানীয়দের প্রভাবিত করেছে। ১৭৭৪ সালে কুচুকের সন্ধি যুদ্ধ সমাপ্ত করে।[৬৯] ১৮শ শতাব্দীর শেষ নাগাদ রাশিয়ার সাথে কিছু লড়াইয়ে পরাজয়ের ফলে কারো কারো মনে ধারণা জন্মায় যে পিটার দ্য গ্রেটের সংস্কার রুশদের শক্তিশালী করেছে এবং উসমানীয়দেরও সামনে আর পরাজয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পাশ্চাত্য প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে।[৬৬]

 
তোপকাপি প্রাসাদে সুলতান তৃতীয় সেলিমের সামনে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

তৃতীয় সেলিম সর্বপ্রথম উসমানীয় সেনাবাহিনীতে ব্যাপক সংস্কারের প্রচেষ্টা শুরু করে। কিন্তু ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও জেনিসারি সদস্যরা সংস্কারে আপত্তি করে। এসবকে কেন্দ্র করে জানিসারিরা বিদ্রোহ করে। সেলিমের প্রচেষ্টায় তাকে শেষপর্যন্ত নিহত হতে হয়। তবে তার উত্তরসূরি সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ সংস্কার বিরোধীদের দমন করে সংস্কার সম্পন্ন করেন।

সার্বিয়ান বিপ্লব (১৮০৪-১৮১৫) বলকান অঞ্চলে উসমানীয় সাম্রাজ্যের ভেতর জাতীয়তাবাদের উত্থানের সূচনা ঘটায়। ১৮২১ সালে উসমানীয় গ্রীসে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। মলডাভিয়ায় সৃষ্ট একটি বিদ্রোহের পর করিন্থ উপসাগরের উত্তর অংশসহ উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রথম কোনো অংশ স্বাধীন হয়। ১৯ শতকের মধ্যভাগ নাগাদ উসমানীয় সাম্রাজ্যকে ইউরোপের রুগ্ন ব্যক্তি বলে ইউরোপীয়রা অবিহিত করতে থাকে।

অবনতি ও আধুনিকায়ন (১৮২৮-১৯০৮)

সম্পাদনা
 
দলমাবাচ প্রাসাদে প্রথম উসমানীয় সংসদ উদ্বোধন, ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দ। প্রথম সাংবিধানিক যুগ শুধু দুই বছর স্থায়ী ছিল।

তানজিমাত যুগে ধারাবাহিক সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে যোগদান, ব্যাংকিং প্রক্রিয়া সংস্কার, সেকুলার আইনের প্রবর্তন[৭০] ও আধুনিক কারখানার প্রবর্তন করা হয়। ১৮৪০ সালের ২৩ অক্টোবর উসমানীয় ডাক মন্ত্রণালয় স্থাপিত হয়।[৭১][৭২]

স্যামুয়েল মোর্স ১৮৪৭ সালে সুলতান প্রথম আবদুল মজিদের কাছ থেকে টেলিগ্রাফ নিয়ে প্যাটেন্ট লাভ করেন। সুলতান এই নতুন আবিষ্কার ব্যক্তিগতভাবে পরীক্ষা করেছিলেন।[৭৩] এই সফল পরীক্ষার পর তুরস্কে প্রথমবারের মত ইস্তানবুল-এডির্ন-শুমনু লাইনে টেলিগ্রাফ স্থাপন করা হয়।[৭৪] ১৮৪৭ সালের ৯ আগস্ট এর কার্যক্রম শুরু হয়।[৭৫] সংস্কারকালীন সময়ে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। এই প্রথম সংবিধান স্বল্পস্থায়ী ছিল। সংসদ চালু থাকার দুই বছর পর সুলতান তা স্থগিত করেন।

সাম্রাজ্যের খ্রিষ্টান নাগরিকরা উচ্চশিক্ষায় মুসলিমদের চেয়ে অগ্রসর হয়ে যায়।[৭৬] ১৮৬১ সালে উসমানীয় খ্রিষ্টানদের জন্য ৫৭১টি প্রাথমিক ও ৯৪টি মাধ্যমিক স্কুল ছিল যার মোট শিক্ষার্থী ছিল ১,৪০,০০০ জন যা সেসময়ে স্কুলে পড়া মুসলিম শিক্ষার্থীদের চেয়ে অনেক বেশি। মুসলিম শিক্ষার্থীরা মূলত আরবি ও ইসলাম বিষয়ে পড়াশোনা করত।[৭৬] ১৯১১ সালে ইস্তানবুলের ৬৫৪টি পাইকারি কোম্পানির মধ্যে ৫২৮টির মালিক ছিল জাতিগত গ্রীকরা।[৭৬]

 
ক্রিমিয়ার যুদ্ধের সময় তুর্কি সেনাদের শেফকেতিল দুর্গে আক্রমণ।

ক্রিমিয়ার যুদ্ধ ছিল দুর্বল হয়ে পড়া উসমানীয় সাম্রাজ্যের অঞ্চলগুলোর উপর প্রভাব নিয়ে প্রধান ইউরোপীয় শক্তিগুলোর মধ্যকার লড়াই। যুদ্ধের আর্থিক বোঝা সাম্রাজ্যকে ৫ মিলিয়ন (৫০ লক্ষ) পাউন্ডের বৈদেশিক ঋণ নিতে বাধ্য করে।[৭৭][৭৮] এই যুদ্ধের ফলে ক্রিমিয়ান তাতাররা দেশত্যাগে বাধ্য হয়, প্রায় ২,০০,০০০ তাতার এসময় উসমানীয় সাম্রাজ্যে চলে আসে।[৭৯] ককেসিয়ান যুদ্ধের শেষ নাগাদ ৯০% সিরকাসিয়ান জাতিগত হত্যার শিকার হয়[৮০] এবং ককেসাসে তাদের আবাসভূমি থেকে উৎখাত হয়ে উসমানীয় সাম্রাজ্যে চলে আসে[৮১] যার ফলে তুরস্কে ৫,০০,০০০ থেকে ৭,০০,০০০ সিরকাসিয়ান বসতি স্থাপন করে।[৮২][পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন][৮৩][৮৪] কিছু সিরকাসিয়ান সংগঠন নিহত বা উৎখাত হওয়ার সংখ্যা ১-১.৫ মিলিয়ন দাবি করে[৮৫]

 
বেলগ্রেড, আনুমানিক ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দ। ১৮৬৭ সালে উসমানীয় সরকার ব্রিটেন ও ফ্রান্সের চাপের মুখে উত্তর উত্তর সার্বিয়া থেকে সামরিক বাহিনী পিছু হটায়।

উসমানীয় অনিয়মিত বাহিনী বাশিবাজাউক ১৮৭৬ সালে বুলগেরিয়ানদের একটি উত্থানকে কঠোরভাবে দমন করে এবং এতে প্রায় ১,০০,০০০ জন নিহত হয়।[৮৬] রুশ-তুর্কি যুদ্ধে রুশরা জয়ী হয়েছিল। ফলে উসমানীয়দের হাতে থাকা ইউরোপীয় এলাকাগুলোর দ্রুত অবনতি হতে থাকে। বুলগেরিয়া রাজ্য উসমানীয় সাম্রাজ্যের ভেতরেই একটি স্বাধীন রাজতন্ত্র গঠন করে। রোমানিয়া স্বাধীন হয়ে যায়। সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রো অল্প এলাকা নিয়ে স্বাধীন রাজ্যে পরিণত হয়। ১৮৭৮ সালে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি উসমানীয় প্রদেশ বসনিয়া ভিলায়েত ও নোভি সানজাক দখল করে নেয়। উসমানীয় সরকার এসকল দখল প্রচেষ্টার বিপক্ষে অগ্রসর হলেও শেষপর্যন্ত পরাজিত হয়।

১৮৭৮ সালে বার্লিন কংগ্রেসের সময় বলকান উপদ্বীপের উসমানীয় অঞ্চলগুলো ফিরিয়ে দেয়ার বিনিময়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন ডিসরায়েল সাইপ্রাসে ব্রিটেনের প্রশাসন লাভ করেন[৮৭] এবং ১৮৮২ সালে মিশরে সেনা প্রেরণ করে উরাবি বিদ্রোহ দমনের জন্য উসমানীয়দের সহায়তা করা হয়।

১৮৯৪ থেকে ১৮৯৬ পর্যন্ত সাম্রাজ্যজুড়ে বসবাসরত ১,০০,০০০ থেকে ৩,০০,০০০ আর্মেনীয় হামিদলান গণহত্যা নামক হত্যাকান্ডে নিহত হয়[৮৮]

উসমানীয় সাম্রাজ্য আয়তনের ছোট হতে থাকলে বলকান মুসলিমরা বলকানে অবশিষ্ট ভূখণ্ড বা আনাতোলিয়ার মূল ভূখণ্ডে আসা শুরু করে।[৮৯] ১৯২৩ সাল নাগাদ শুধু আনাতোলিয়া ও পূর্ব থ্রেস মুসলিম ভূখণ্ড হিসেবে টিকে ছিল।[৯০]

পরাজয় ও বিলুপ্তি (১৯০৮-১৯২২)

সম্পাদনা
 
১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে উসমানীয় মিল্লাত নেতৃবৃন্দ কর্তৃক তরুণ তুর্কি বিপ্লব ঘোষণা। এর পথ ধরে পরবর্তীতে বুলগেরিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা এবং বসনিয়ান সংকট শুরু হয়।

১৯০৮ সালে তরুণ তুর্কি বিপ্লবের পর দ্বিতীয় সাংবিধানিক যুগ শুরু হয়। বিপ্লবের পর ১৮৭৬ সালের সংবিধান এবং উসমানীয় সংসদ পুনরায় চালু করা হয়। বিপ্লব পরবর্তী ছয় বছর ব্যাপক আকারে রাজনৈতিক ও সামরিক সংস্কার শুরু হলেও এই সময়কে উসমানীয় সাম্রাজ্যের বিলুপ্তির সূচনা হিসেবে ধরা হয়। এই সময়টি কমিটি অব ইউনিয়ন এন্ড প্রোগ্রেসের আধিপত্যকাল ছিল।

গৃহবিবাদের সুবিধা নিয়ে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি ১৯০৮ সালে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা দখল করে নেয় তবে যুদ্ধ এড়ানোর জন্য উসমানীয় ও অস্ট্রিয়ানদের মধ্যকার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক অঞ্চল নোভি পাজার সানজাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছিল। ইতালীয়-তুর্কি যুদ্ধের সময় উসমানীয়দের বিরুদ্ধে বলকান লীগ যুদ্ধ ঘোষণা করে। উসমানীয়রা বলকান যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল। পূর্ব থ্রেস ও ঐতিহাসিক উসমানীয় রাজধানী এডির্ন ছাড়া বাকি অঞ্চলগুলো যুদ্ধের সময় হারাতে হয়। ধর্মীয় কারণে নির্যাতনের আশঙ্কায় প্রায় ৪,০০,০০০ মুসলিম বর্তমান তুরস্কে পালিয়ে আসে। একটি কলেরা মহামারীতে অনেকে যাত্রার সময় মারা যায়।[৯১] জাস্টিন ম্যাককার্থির হিসাব অনুযায়ী ১৮২১ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত বলকানে উসমানীয় মুসলিমদের উপর জাতিগত নিধনযজ্ঞের ফলে কয়েক মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করে এবং প্রায় সমসংখ্যক পালিয়ে যায়।[৯২][৯৩][৯৪] ১৯১৪ সাল নাগাদ উসমানীয় সাম্রাজ্য ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকায় তার অধিকাংশ অঞ্চল হারিয়ে ফেলে। এসময় সাম্রাজ্যের অধীনে ২৮ মিলিয়ন জনসংখ্যা ছিল যার ১৫.৫ মিলিয়ন বর্তমান তুরস্কে, ৪.৫ মিলিয়ন সিরিয়া, লেবানন, ফিলিস্তিন ও জর্ডানে এবং ২.৫ মিলিয়ন ইরাকের অধিবাসী ছিল। বাকি ৫.৫ মিলিয়ন বাসিন্দা ছিল উসমানীয়দের অনুগত আরব উপদ্বীপ অঞ্চলের অন্তর্গত।[৯৫]

১৯১৪ সালের নভেম্বরে উসমানীয় সাম্রাজ্য কেন্দ্রীয় শক্তির পক্ষে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেয়। উসমানীয়রা মধ্যপ্রাচ্য রণাঙ্গনে অংশ নিয়েছিল। যুদ্ধের প্রথমদিকে উসমানীয়রা বেশ কিছু বিজয় অর্জন করেছিল। এর মধ্যে গ্যালিপলির যুদ্ধকুত অবরোধ অন্তর্গত। তবে রুশদের বিরুদ্ধে ককেসাস অভিযানে ব্যর্থতার মত উদাহরণও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কখনো উসমানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি।[৯৬]

 
শেষ সুলতান ষষ্ঠ মুহাম্মদের দেশত্যাগ, ১৭ নভেম্বর ১৯২২।

১৯১৫ সালে রুশ ককেসাস সেনাবাহিনী পূর্ব আনাতোলিয়ায় অগ্রসর অব্যাহত রাখে।[৯৭] উসমানীয় সরকার স্থানীয় জাতিগত আর্মেনীয়দের স্থানান্তর শুরু করে। ফলশ্রুতিতে প্রায় ১.৫ মিলিয়নের মত আর্মেনীয় মৃত্যুবরণ করেছিল যা আর্মেনীয় গণহত্যা বলে পরিচিত।[৯৮] এছাড়াও গ্রিক ও এসিরিয়ান সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধেও বড় আকারের হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।[৯৯]

১৯১৬ সালে আরব বিদ্রোহ শুরু হলে তা মধ্যপ্রাচ্য রণাঙ্গনে উসমানীয়দের স্রোতকে উল্টে দেয়। ১৯১৮ সালের ৩০ অক্টোবর মুড্রোসের যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষর হলে তা মধ্যপ্রাচ্যের লড়াইয়ের অবসান ঘটায় এবং এরপর কনস্টান্টিনোপল দখলউসমানীয় সাম্রাজ্যের বিভাজনের ঘটনা ঘটে। ১৯ শতকের শেষ চতুর্থাংশ ও ২০ শতকের প্রথম অংশে প্রায় ৭-৯ মিলিয়ন তুর্কি মুসলিম উদ্বাস্তু হাতছাড়া হওয়া ককেসাস, ক্রিমিয়া, বলকান ও ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপগুলো থেকে আনাতোলিয়া ও পূর্ব থ্রেসে চলে আসে।[১০০]

কনস্টান্টিনোপল ও ইজমির দখলের ঘটনার কারণে তুর্কি জাতীয় আন্দোলনের সূচনা হয়। পরবর্তীতে মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের অধীনে তুর্কিরা স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়ী হয়। ১৯২২ সালের ১ নভেম্বর সালতানাত বিলুপ্ত করা হয় এবং শেষ সুলতান ষষ্ঠ মুহাম্মদ ১৭ নভেম্বর দেশ ছেড়ে চলে যান। সালতানাত বিলুপ্ত হলেও এসময় খিলাফত বিলুপ্ত করা হয়নি। ষষ্ঠ মুহাম্মদের স্থলে দ্বিতীয় আবদুল মজিদ খলিফার পদে বসেন। ১৯২৩ সালের ২৯ অক্টোবর গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি তুরস্ককে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে। ১৯২৪ সালের ৩ মার্চ খিলাফত বিলুপ্ত করা হলে[১০১] সর্বশেষ খলিফা দ্বিতীয় আবদুল মজিদ দেশত্যাগ করেন।

আঞ্চলিক পরিবর্তন

সম্পাদনা
 
তোপকাপি প্রাসাদে রাষ্ট্রদূতগণ

১৯ ও ২০ শতকের সংস্কারের পূর্বে সাম্রাজ্য দুটি প্রধান অংশ সহযোগে গঠিত সরল প্রক্রিয়ায় চলত। এই অংশগুলো ছিল সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসন। সুলতানের অবস্থান ছিল প্রক্রিয়ার সর্বোচ্চ স্থানে। বেসামরিক প্রশাসন আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে স্থানীয় প্রশাসনিক ইউনিট দ্বারা পরিচালিত হত। উসমানীয় সাম্রাজ্যে রাষ্ট্র কর্তৃক ধর্মতাত্ত্বিক বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা হত। ইসলাম পূর্ব যুগের কিছু তুর্কি প্রথা শাসনতান্ত্রিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।[১০২] মুসলিম ভূখণ্ডের রক্ষা ও সম্প্রসারণ এবং ইসলামি রীতি ও রাজবংশের সার্বভৌমত্বের অনুকূলে সীমানার ভেতর নিরাপত্তা ও সম্প্রীতি সালতানাতের প্রাথমিক দায়িত্ব হিসেবে ধরা হত।[১০৩]

মুসলিম বিশ্বে আকার ও সময়সীমার দিক থেকে উসমানীয় রাজবংশ অতুলনীয় ছিল।[১০৪] ইউরোপে হাবসবার্গ পরিবার শুধু অনুরূপ বংশীয় ধারা ধরে রাখতে পেরেছিল। উসমানীয় রাজবংশ ছিল তুর্কি বংশোদ্ভূত। বিভিন্ন সময়ে মোট এগারোবার সুলতানকে ক্ষমতাচ্যুত হয় এবং এসব ক্ষেত্রে সুলতানের ভাই, ছেলে বা ভাইয়ের ছেলেরা সিংহাসন লাভ করতেন। উসমানীয় ইতিহাসে মোট দুইবার রাজবংশের ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা হয়। শেষ উসমানীয় সুলতান ষষ্ঠ মুহাম্মদ ছিলেন প্রথম উসমানের সরাসরি বংশধর। রাজবংশের এই অবিচ্ছিন দীর্ঘ ধারা ব্যতিক্রম। রাজকীয় হারেমের দায়িত্ব ছিল উসমানীয় রাজমুকুটের উত্তরাধিকারীর জন্ম নিশ্চিত করা এবং সুলতানদের সরাসরি পিতৃবংশীয় ধারা অব্যাহত রাখা।

 
বাব ই আলি, উসমানীয় বন্দর

সর্বপ্রথম সুলতান প্রথম মুরাদ মুসলিম বিশ্বের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদ খলিফা দাবি করেন।[১২] এর মাধ্যমে উসমানীয় খিলাফতের সূচনা হয়। উসমানীয় সুলতান সাম্রাজ্যের কেন্দ্রীয় অভিভাবক ছিলেন। তবে সুলতান সব ক্ষেত্রে সরাসরি ক্ষমতা প্রয়োগ করতেন না। উসমানীয় দরবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শক্তি ছিল রাজকীয় হারেম। এটি ভালিদ সুলতান কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভালিদ সুলতান রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপে অংশ নিতেন। এমন একটি সময়কে মহিলা সালতানাত বলা হয়। পূর্ববর্তী সুলতানের সন্তানদের থেকে নতুন সুলতান নির্বাচন করা হত। প্রাসাদের স্কুলের কঠোর শিক্ষাক্রম মেধাবী উত্তরাধিকারীদের শিক্ষাদান করার জন্য তৈরী হয়েছিল। এছাড়াও এখানে ভবিষ্যত প্রশাসকদের শিক্ষাদান করার জন্য প্রাসাদের স্কুল ব্যবহৃত হত। এই স্কুল একটি ধারার উপর সবসময় পরিচালিত হয়নি। মুসলিমদের জন্য মাদ্রাসা স্থাপন করা হয়। এছাড়া ছিল খ্রিষ্টানদের জন্য এন্ডেরুন নামক আবাসিক স্কুল।[১০৫] এতে আট থেকে বিশ বছরের মধ্যবর্তী বার্ষিক ৩,০০০ জন খ্রিষ্টান বালককে শিক্ষাদান করা হত। রুমেলিয়া ও বলকান অঞ্চলের বিভিন্ন তাদের নিয়ে আসা হত।

সুলতান সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হলেও তার রাজনৈতিক ও নির্বাহী ক্ষমতা প্রতিনিধিদের হাতে ন্যস্ত থাকত। দিওয়ান বা পরামর্শ কাউন্সিলে পদে উপদেষ্টা ও মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকতেন। বেইলিক অবস্থায় থাকার সময় উসমানীয় সাম্রাজ্যের দিওয়ান বয়োজ্যেষ্ঠদের নিয়ে গঠিত হত। পরবর্তীতে এর গঠনে পরিবর্তন আনা হয় এবং সামরিক অফিসার এবং স্থানীয় ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অভিজাত ব্যক্তিদের এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আরো পরে সুলতানের কিছু দায়িত্ব সম্পন্ন করার জন্য উজিরে আজম নিয়োগ করা হয়। নিয়োগ, পদচ্যুতি ও তদারকির ক্ষেত্রে উজিরে আজম অনেক স্বাধীনতা ভোগ করতেন।[১০৬]


উসমানীয় শাসনামলে স্থানীয় সরকার অনেক সময় স্বাধীনভাবে পরিচালিত হত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শাসকের বিরুদ্ধাচারণের ঘটনায় ঘটেছে। ১৯০৮ সালের তরুণ তুর্কি বিপ্লবের পর উসমানীয় সাম্রাজ্য সাংবিধানিক রাজতন্ত্রে পরিণত হয়। ফলে সুলতানের হাতে আর নির্বাহী ক্ষমতা ন্যস্ত ছিল না। প্রদেশগুলো থেকে প্রতিনিধি নিয়ে সংসদ গঠন করা হয়েছিল। এসব প্রতিনিধিদের নিয়ে উসমানীয় রাজকীয় সরকার গঠিত হত।

সুলতানের সীলমোহর হিসেবে তুগরা ব্যবহৃত হত। এতে সুলতান ও তার পিতার নাম উল্লেখ করা থাকত। পাশাপাশি দোয়াও লেখা হত। তুগরা থেকে উসমানীয়-তুর্কি ক্যালিগ্রাফির একটি শাখার উদ্ভব হয়েছে।

উসমানীয় আইন ব্যবস্থা ধর্মীয় আইন নিয়ে গড়ে উঠেছিল। পাশাপাশি কানুন নামক সেকুলার আইন শরিয়ার পাশাপাশি বজায় ছিল। সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয় আইনি মতবাদসমূহ প্রচলিত ছিল। আইন প্রশাসনে কেন্দ্র ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ভারসাম্য বজায় রাখা হত। সাম্রাজ্যে তিন ধরনের আদালত চালু ছিল। প্রথমত, মুসলিমদের জন্য আদালত; দ্বিতীয়ত, ইহুদি ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জন্য গঠিত আদালত যাতে ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা নিযুক্ত হত; তৃতীয়ত, বাণিজ্য আদালত। সামগ্রিক ব্যবস্থা কানুন নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালিত হত।

 
উসমানীয় আদালতে বিচার, ১৮৭৭

আদালতের ধরনের পার্থক্য থাকলেও এক আদালতের মামলা অন্য আদালতে নেয়ার প্রচলন ছিল। বাণিজ্য সংক্রান্ত মামলা মুসলিম শরিয়া আদালতেও নিষ্পত্তি করা যেত। এছাড়াও ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের মধ্যকার সমস্যা নিরসনের জন্যও মুসলিম আদালতে মামলা উত্থাপন করা হত। উসমানীয় সাম্রাজ্যে অমুসলিমদের ধর্মীয় আইনের উপর হস্তক্ষেপ করা হত না। কুরআন, হাদিস, ইজমাকিয়াসের ভিত্তিতে মুসলিম আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হত। আইনি বিষয়াদি শিক্ষালয়ে পড়ানো হত।

 
কাজির আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর অভিযোগ, উসমানীয় অণুচিত্র

উসমানীয় আদালতের সাথে ইউরোপীয় আদালতের পার্থক্য ছিল। কাজি বিচারকাজ পরিচালনা করতেন। এসময় ইজতিহাদ চর্চা বহুদিন যাবত স্তিমিত হয়ে পড়ায় অনেক সময় কাজিদেরকে স্থানীয় প্রথার অনুসরণ করতে হত। বিচারের ক্ষেত্রে আপিলের প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা ছিল না।

১৯ শতকে উসমানীয় আইন ব্যবস্থায় অনেক সংস্কার করা হয়। ১৮৩৯ সালে গুলহানের ফরমানের মাধ্যমে আধুনিকীকরণ শুরু হয়। ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আইন প্রণয়ন করা হয়। সংস্কারগুলোতে ফরাসি মডেল অনুসরণ করা হয় এবং তিনস্তর বিশিষ্ট আদালত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

সামরিক বাহিনী

সম্পাদনা
 
দুইজন সিপাহী, উসমানীয় সেনাবাহিনীর অভিজাত ঘোড়সওয়ার নাইট।

১৩শ শতাব্দীতে পশ্চিম আনাতোলিয়ার গোত্রীয় ব্যক্তিদের নিয়ে প্রথম উসমান সর্বপ্রথম সামরিক বাহিনী গড়ে তোলেন। উসমানীয় সেনাবাহিনীতে মূল অংশে ছিল জানিসারি,দেলি,মামলুক,তাতার,সিপাহি, আকিনজিমেহতেরান। যুদ্ধক্ষেত্রে উসমানীয়রা সর্বপ্রথম মাস্কেট ও কামান ব্যবহার করে যা বিশ্বের অন্যান্য সেনাবাহিনী থেকে উসমানীয় সেনাবাহিনীকে অগ্রসর করে তুলেছিল। উসমানীয় তুর্কিরা ফেলকোনেটের ব্যবহার শুরু করে। এগুলো ছিল ছোট ও প্রশস্ত কামান। কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের সময় এগুলো ব্যবহার করা হয়। উসমানীয় ঘোড়সওয়াররা ভারি অস্ত্রের চেয়ে দ্রুত গতি ও চলমানতার উপর বেশি নির্ভর করত। দ্রুতগামী তুর্কমেন ও আরব ঘোড়া ব্যবহার করা হত।[১০৭][১০৮] এছাড়া প্রায় সাবেক মোঙ্গল সাম্রাজ্যের মত কৌশল প্রয়োগ করা হত। এর মধ্যে ছিল পালানোর ভান করে শত্রুকে অর্ধচন্দ্রাকারে ঘিরে ফেলা এবং এরপর চূড়ান্ত আক্রমণ করা। মধ্য ১৭শ শতাব্দীতে বৃহৎ তুর্কি যুদ্ধের পর থেকে সেনাবাহিনীর পারদর্শিতা কমতে থাকে। ১৮শ শতাব্দীতে ভেনিসের বিরুদ্ধে সীমাবদ্ধ সাফল্য দেখা যায়। কিন্তু উত্তরে রুশ সেনাবাহিনী উসমানীয়দের পিছু হটতে বাধ্য করে।

 
দুইজন "সোলাক", সুলতানের জানিসারি তীরন্দাজ দেহরক্ষী।

১৯শ শতাব্দীতে উসমানীয় সাম্রাজ্যের আধুনিকায়ন শুরু হয়। ১৮২৬ সালে সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ জানিসারি দলকে বিলুপ্ত করেন এবং আধুনিক উসমানীয় সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন। তাদেরকে নিজাম-ই জেদিদ নাম দেয়া হয়। সেনাবাহিনীতে দক্ষ বিদেশিদের নিয়োগ দেয়া হয় এবং অফিসারদের প্রশিক্ষণের জন্য পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে পাঠানো হয়। তরুণ তুর্কি আন্দোলন শুরু হওয়ার সময় এসব তরুণ ও নতুন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অফিসাররা তাদের শিক্ষা সমাপ্ত করে ফিরে আসছিলেন।

ইউরোপে সাম্রাজ্যের বিস্তারে উসমানীয় নৌবাহিনী বড় ভূমিকা রেখেছিল। উত্তর আফ্রিকা জয়ের মাধ্যমে এর সূচনা হয়। ১৮২১ সালে গ্রীস ও ১৮৩০ সালে আলজেরিয়া হারানোর মাধ্যমে দূরবর্তী অঞ্চলে নৌবাহিনীর প্রভাব কমা শুরু হয়। সুলতান আবদুল আজিজ শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠনের প্রচেষ্টা চালান। ব্রিটেন ও ফ্রান্সের পর বৃহত্তম নৌবহর গড়ে তোলা হয়। ১৮৮৬ সালে ইংল্যান্ডের বেরোর জাহাজ নির্মাণস্থল উসমানীয় সাম্রাজ্যের জন্য প্রথম সাবমেরিন তৈরি করে।[১০৯]

 
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে একটি জার্মান পোস্টকার্ডে উসমানীয় নৌবাহিনীর চিত্রায়ন। শীর্ষে বামে সুলতান পঞ্চম মুহাম্মদের ছবি।

তবে অবনতিশীল অর্থনীতির কারণে নৌবহরের শক্তি দীর্ঘসময় ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ সংস্কারপন্থি মিদহাত পাশার পক্ষাবলম্বনকারী এডমিরালদের অবিশ্বাস করতেন। তিনি দাবি করেন যে রুশ-তুর্কি যুদ্ধে বড় ও ব্যয়বহুল নৌবাহিনীর কোনো প্রয়োজন নেই। অধিকাংশ জাহাজ গোল্ডেন হর্নের ভেতর আটকে রাখা হয়। পরের ৩০ বছর জাহাজগুলো এখানেই ছিল। ১৯০৮ সালে তরুণ তুর্কি বিপ্লবের পর কমিটি অব ইউনিয়ন এন্ড প্রোগ্রেস শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তুলতে অগ্রসর হয়। ১৯১০ সালে জনসাধারণের দানে নতুন জাহাজ কেনার জন্য উসমানীয় নেভি ফাউন্ডেশন গঠিত হয়।

 
উসমানীয় বিমান বাহিনীর পাইলট, ১৯১২।

১৯০৯ সালের জুন থেকে ১৯১১ সালের জুলাইয়ের মধ্যে উসমানীয় বিমান বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হয়।[১১০][১১১] উসমানীয় সাম্রাজ্য তার নিজস্ব পাইলট ও প্লেন তৈরি শুরু করে। ১৯১২ সালের ৩ জুলাই এভিয়েশন স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানে সাম্রাজ্যের ফ্লাইট অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেয়া হত। এভিয়েশন স্কুল প্রতিষ্ঠার ফলে নতুন অনেকে বাহিনীতে তালিকভুক্ত হয় এবং নৌ ও বিমানবাহিনী নতুন পাইলট লাভ করে। ১৯১৪ সালের জুনে নতুন সামরিক একাডেমি, নেভাল এভিয়েশন স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া থমকে যায়। যুদ্ধে উসমানীয় বিমানবাহিনী পশ্চিমে গালিসিয়া থেকে পূর্বে ককেসাস ও দক্ষিণে ইয়েমেনে অনেক যুদ্ধক্ষেত্রে অংশ নিয়েছে।

প্রশাসনিক বিভাগ

সম্পাদনা
 
১৭৯৫ সালে এলায়েতসমূহ।

উসমানীয় সাম্রাজ্য প্রদেশে বিভক্ত ছিল। এগুলো ছিল নির্দিষ্ট অঞ্চল এবং সুলতান প্রদেশের গভর্নর নিয়োগ দিতেন।[১১২]

এলায়েত ছিল বেলেরবেয়ির অফিসের অঞ্চল। এগুলো সানজাকে বিভক্ত করা হত।[১১৩]

১৮৬৪ সালে ভিলায়েত আইনের মাধ্যমে ভিলায়েত চালু করা হয়।[১১৪] তানজিমাত সংস্কারের অংশ হিসেবে এই পাশ হয়।[১১৫] সাবেক এলায়েত প্রক্রিয়ার মত না হয়ে এই আইনে উপর থেকে নিচের দিকে ভিলায়েত, লিভা/সানজাক, কাজা ও গ্রাম কাউন্সিল এসব প্রশাসনিক ইউনিট গঠন করা হয়। ১৮৭১ সালে ভিলায়েত আইনে নাবিয়ে যুক্ত করা হয়।[১১৬]

অর্থনীতি

সম্পাদনা

বুরসা, এডির্ন ও ইস্তানবুল ধারাবাহিকভাবে উসমানীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী হয়। এসকল শহরের উন্নয়নের জন্য সরকার উদ্যোগ নেয়। এগুলোকে শিল্প ও বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল।[১১৭] সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ ও তার উত্তরসুরি বায়েজিদ ইউরোপের বিভিন্ন স্থান থেকে ইহুদিদের অভিবাসী হিসেবে উৎসাহ দেন ও স্বাগত জানান। তারা ইস্তানবুল ও সেলোনিকার মত অন্যান্য বন্দরনগরীগুলোতে বসতি স্থাপন করে। ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে ইহুদিরা খ্রিষ্টানদের হাতে নির্যাতিত ছিল। তুর্কিদের সহনশীলতা ইহুদি অভিবাসীদের উৎসাহ যোগায়।

 
দ্বিতীয় মুহাম্মদের যুগের একটি ব্রোঞ্জের মুদ্রা, ১৪৮১।

উসমানীয় অর্থনীতি মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র ও সমাজের ধারণার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ছিল। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল শাসকের ক্ষমতাকে সংহত করা এবং উৎপাদনশীল শ্রেণীর উন্নয়নের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধি করা।[১১৮] চূড়ান্তভাবে উদ্দেশ্য ছিল প্রজাদের ক্ষতি না করে ও সামাজিক বৈষম্য রোধ করে রাজস্ব বৃদ্ধি এবং ঐতিহ্যবাহী সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো অক্ষত রাখা।

উসমানীয় সাম্রাজ্যের কোষাগার ও দলিল অফিসের ব্যবস্থাপনা অন্য যেকোন ইসলামি সরকারের চেয়ে অনেক উন্নত ছিল। ১৭শ শতাব্দী পর্যন্ত তারা ছিল সমসাময়িক অন্যান্যদের চেয়ে এ বিষয়ে অনেক বেশি অগ্রসর।[১০৬] প্রতিষ্ঠানে পেশাদার লিপিকার আমলাতন্ত্র গড়ে তোলা হয়।[১০৬] এই পেশাদার অর্থনৈতিক কর্মীদল অনেক উসমানীয় কর্মকর্তার সাফল্যের পেছনে ভূমিকা রেখেছে।[১১৯]

 
ইস্তানবুলে ১৮৫৬ সালে উসমানীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়; ১৮৯৬ সালে আর্মেনিয়ান রেভলুশনারি ফেডারেশন ব্যাংকটি দখল করে নেয়।
 
উসমানীয় ঋণ সনদ, ১৯৩৩

সাম্রাজ্যের ভূরাজনৈতিক কাঠামোর উপর অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে উঠে। উসমানীয় সাম্রাজ্য প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে বিস্তৃত ছিল। ফলে স্প্যানিশ ও পর্তুগীজ নাবিকরা প্রাচ্যের দিকে নতুন পথের সন্ধানে বেশি অগ্রসর হতে পারেনি। মার্কো পোলোর ব্যবহৃত মশলার রুট উসমানীয়দের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১৪৯৮ সালে ভাস্কো দা গামার ভারতের পথ আবিষ্কার ও ১৪৯২ সালে কলম্বাসের বাহামাসে প্রথম যাত্রার সময় উসমানীয় সাম্রাজ্য এর সমৃদ্ধির শীর্ষে ছিল।

আধুনিক উসমানীয় গবেষণায় ধরা হয় যে নতুন সমুদ্রপথের আবিষ্কারের ফলে উসমানীয় তুর্কিদের সাথে মধ্য ইউরোপের সম্পর্ক পরিবর্তন হয়। প্রাচ্যের আসার সমুদ্রপথ আবিষ্কারের ফলে পশ্চিমাদের আর উসমানীয় ভূখণ্ড অতিক্রম করতে হত না। ইঙ্গ-উসমানীয় চুক্তির মাধ্যমে উসমানীয় বাজারে ইংরেজ ও ফরাসি প্রতিযোগীদের সুযোগ দেয়া হয়। বাণিজ্যিক কেন্দ্র ও পথের উন্নয়ন, কৃষিজমির বৃদ্ধিতে উৎসাহ প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে রাষ্ট্র অর্থনৈতিক দায়িত্বপালন করত। এসকল কার্যক্রমে সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ প্রধান ছিল।

জনসংখ্যা

সম্পাদনা

হিসাব অনুযায়ী ১৫২০-১৫৩৫ সময়ে সাম্রাজ্যের জনসংখ্যা ১,১৬,৯২,৪৮০ ছিল। এই সংখ্যা সাম্রাজ্যের খাজনা আদায় সংক্রান্ত হিসাব থেকে পাওয়া যায়।[১২০] অনির্দিষ্ট কারণে ১৮শ শতকের জনসংখ্যা ১৬শ শতকের জনসংখ্যার চেয়ে কম ছিল।[১২১] ১৮৩১ সালের একটি হিসাবে ৭২,৩০,৬৬০ এর হিসাব পাওয়া গেলেও এই হিসাব ছিল অসম্পূর্ণ কারণে এতে শুধু সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য রেজিস্টার করা হয়েছিল।[১২০]

 
গালাটার দৃশ্য এবং গোল্ডেন হর্নে গালাটা সেতু, ১৮৮০-১৮৯৩।

১৯শ শতাব্দীতে আদমশুমারি শুরু হয়। ১৮৩১ এর পর থেকে এ সংক্রান্ত সরকারি দলিল পাওয়া যায় তবে এতে সমগ্র জনসংখ্যার হিসাব পাওয়া যায় না।[১২০] প্রথমদিককার হিসাবগুলো জরিপকৃত জনসংখ্যার গঠনের উপর ভিত্তিতে প্রণীত।[১২২]

১৮০০ সাল জনসংখ্যা নাগাদ ২৫-৩২ মিলিয়নে পৌছায়। এর মধ্যে ইউরোপীয় প্রদেশগুলোতে ছিল প্রায় ১০ মিলিয়ন (প্রাথমিকভাবে বলকানে), এশীয় প্রদেশগুলোতে ১১ মিলিয়ন এবং আফ্রিকান প্রদেশগুলোতে প্রায় ৩ মিলিয়ন। ইউরোপীয় প্রদেশগুলোতে জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল যা ছিল আনাতোলিয়ার দ্বিগুণ। আবার আনাতোলিয়ার জনসংখ্যা ইরাক ও সিরিয়ার তিনগুণ এবং আরবের পাঁচগুণ ছিল।[১২৩]

সাম্রাজ্যের শেষদিকে গড় বয়স ছিল ৪৯ বছর।[১২৪] রোগ ও দুর্ভিক্ষ জনসংখ্যার পরিবর্তনে প্রভাব ফেলেছে। ১৭৮৫ সালে মিশরের এক ষষ্ঠাংশ প্লেগে মারা যায় এবং একই শতাব্দীতে আলেপ্পোতে ২০% জনসংখ্যা হ্রাস পায়। ১৬৮৭ থেকে ১৭৩১ সালের মধ্যে মিশরে ছয়টি দুর্ভিক্ষ আঘাত হানে এবং শেষ দুর্ভিক্ষ চার দশক পর আনাতোলিয়ায় সৃষ্টি হয়।[১২৫]

বাষ্পীয় জাহাজ ও রেলপথের নির্মাণের ফলে বন্দর নগরীগুলোতে অনেক লোক সমাগম ঘটে। ১৭০০ থেকে ১৯২২ সালের মধ্যে নগরায়ন বৃদ্ধি পায়। স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে অনেক লোক কাজের জন্য এসকল স্থানে ভীড় করে। ১৮০০ সাল থেকে ১৯১২ সালের মধ্যে গ্রীসের সেলোনিকা বন্দর নগরীর জনসংখ্যা ৫৫,০০০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১,৬০,০০০ তে এবং ইজমিরে ১৮০০ সাল থেকে ১৯১৪ সালের মধ্যে জনসংখ্যা ১,৫০,০০০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩,০০,০০০ তে পৌছায়।[১২৬][১২৭] তবে কিছু অঞ্চলে জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল। রাজনৈতিক সমস্যার কারণে বেলগ্রেডের জনসংখ্যা ২৫,০০০ থেকে হ্রাস পেয়ে ৮,০০০ তে পৌছায়।[১২৬]

অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অভিবাসন সাম্রাজ্যের উপর প্রভাব ফেলেছে। উদাহরণস্বরূপ রুশ ও অস্ট্রিয়া-হাবসবার্গ কর্তৃক ক্রিমিয়া ও বলকান অঞ্চল একীভূত করে নেয়ার পর উসমানীয় সাম্রাজ্যে ব্যাপক সংখ্যক মুসলিম উদ্বাস্তু আশ্রয় নেয়। প্রায় ২,০০,০০০ ক্রিমিয়ান তাতার দুবরুজায় পালিয়ে আসে।[১২৮] ১৭৮৩ থেকে ১৯১৩ সালের মধ্যে প্রায় ৫ থেকে ৭ মিলিয়ন (৫০ থেকে ৭০ লক্ষ) উদ্বাস্তু উসমানীয় সাম্রাজ্যে আশ্রয় নেয় যাদের মধ্যে ৩.৮ মিলিয়ন ছিল রাশিয়া থেকে আগত। কারিগর, বণিক, নির্মাতা, কৃষিবিদ হ্রাস পাওয়ার ফলে সাম্রাজ্যের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।[১২৯] ১৯শ শতাব্দী থেকে বলকান থেকে ব্যাপক সংখ্যক মুসলিম বর্তমান তুরস্কে আশ্রয় নেয়। তাদের মুহাজির বলা হত।[১৩০] ১৯২২ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সমাপ্তির সময় তুরস্কের অর্ধেক শহুরে নাগরিকরা ছিল রাশিয়া থেকে উদ্বাস্তু হিসেবে আসা মুসলিমদের বংশধর।[৭৬]

উসমানীয় তুর্কি ছিল সাম্রাজ্যের সরকারি ভাষা। এটি ফারসি ও আরবি প্রভাবিত এবং অঘুজ তুর্কি ভাষার একটি শাখা। উসমানীয়দের কয়েকটি প্রভাবশালী ভাষা ছিল। আনাতোলিয়ার অধিকাংশ বাসিন্দা এবং আলবেনিয়াবসনিয়া ছাড়া বলকানের অধিকাংশ মুসলিম উসমানীয় তুর্কি ভাষায় কথা বলত; শিক্ষিত লোকেরা ফারসি ব্যবহার করত;[১৩১] আরবি ভাষা মূলত আরব, উত্তর আফ্রিকা, ইরাক, কুয়েত, লেভান্ট ও আফ্রিকার শৃঙ্গে বলা হত। শেষ দুই শতাব্দী শতাব্দী এগুলোর ব্যবহার সীমিত হয়ে পড়ে তবে ফারসি ভাষা সাহিত্যিক কর্মে শিক্ষার জন্য ব্যবহার হত,[১৩১] অন্যদিকে ধর্মীয় কাজে আরবি ব্যবহার হত।

উসমানীয়দের প্রথম সময় থেকে উসমানীয় তুর্কি ভাষা সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত। ১৮৭৬ সালের উসমানীয় সংবিধানে তুর্কি ভাষাকে সরকারিভাবে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়।[১৩২] নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীগুলো তাদের পরিবার ও মহল্লার প্রতিবেশিদের মধ্যে নিজস্ব ভাষায় কথা বলত। এদের মধ্যে ছিল ইহুদি, গ্রীক, আর্মেনিয়ান ইত্যাদি জাতিগোষ্ঠী। যেসব গ্রামে দুই বা ততোধিক জনগোষ্ঠী থাকত সেখানকার বাসিন্দারা পরস্পরের ভাষা ব্যবহার করত। বহুজাতিক শহরগুলোর নাগরিকরা প্রায় তাদের পারিবারিক ভাষায় কথা বলত। তুর্কি প্রথম ভাষা নয় এমন নাগরিকরা দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে তুর্কি ব্যবহার করত।

 
শেষ খলিফা দ্বিতীয় আবদুল মজিদ

উসমানীয় সাম্রাজ্য ছিল ইসলামি সাম্রাজ্য। অমুসলিম নাগরিকদের ইসলামি প্রথানুযায়ী রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও নিরাপত্তা প্রদান করা হয়।[১৩৩]

১৫শ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের আগ পর্যন্ত সাম্রাজ্যে মুসলিম সংখ্যালঘুদের শাসনের অধীনে খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। ১৯ শতকের শেষের দিকে অমুসলিম জনসংখ্যা কমতে থাকে। অভিবাসন এর অন্যতম কারণ ছিল।[১৩৩] ১৮২০ এর দশকে ৬০% মুসলিম ছিল যা ১৮৭০ এর দশকে ৬৯% এবং পরে ১৮৯০ এর দশকে ৭৬% এ পৌছায়।[১৩৩] ১৯১৪ সাল নাগাদ, ১৯.১% জনসংখ্যা ছিল অমুসলিম। এদের অধিকাংশ ছিল খ্রিষ্টান গ্রীক, এসিরিয়ান, আর্মেনিয়ান ও ইহুদি।[১৩৩]

 
ফ্রিটওয়ার টাইলসে আল্লাহ, মুহাম্মদ ও প্রথম খলিফার নামের ক্যালিগ্রাফিক লিখন, আনুমানিক ১৭২৭ খ্রিষ্টাব্দ, ইসলামিক মিডল ইস্ট গ্যালারি, ভিক্টোরিয়া এন্ড আলবার্ট মিউজিয়াম।[১৩৪]

ইসলাম গ্রহণের পূর্বে তুর্কীয় জাতিসমূহ শামানিবাদের বিভিন্ন ধরন চর্চা করত। মধ্য এশিয়ায় আব্বাসীয় প্রভাবে ইসলাম প্রচার সহজ হয়। সেলজুক ও উসমানীয়দের পূর্বপুরুষ অঘুজ তুর্কিরা অন্যান্য অনেক তুর্কি গোত্রের মত ইসলাম গ্রহণ করে। তারা ১১শ শতাব্দীর শুরুর দিকে আনাতোলিয়ায় ইসলাম নিয়ে আসে।

কিছু গোষ্ঠীকে ইসলাম পরিপন্থি মনে করা হত। এদের মধ্যে ছিল দ্রুজ, ইসমাইলি, আলেভি ও আলাউয়ি সম্প্রদায়। ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের চেয়ে তাদের অবস্থান নিচে ছিল।[১৩৫] ১৫১৪ সালে সুলতান প্রথম সেলিম আনাতোলিয়ায় আলেভিদের হত্যার জন্য "ভয়ানক" নামে পরিচিত হয়ে উঠেন।,[১৩৬] তিনি মধ্যপ্রাচ্যে নজিরবিহীনভাবে ও দ্রুততার সাথে সাম্রাজ্য সম্প্রসারণ করেন এবং মিশরের মামলুক সালতানাতের সমগ্র অঞ্চল জয় করে নেন। উসমানীয়রা ১৪শ শতাব্দী থেকে খিলাফতের দাবি করে আসছিল। এসকল জয়ের মাধ্যমে তিনি উসমানীয়দের খিলাফতের দাবিকে আরও সংহত করেন। [১২] সাম্রাজ্যের বাকি সময় জুড়ে খিলাফত উসমানীয়দের হাতে ছিল এবং ১৯২৪ সালের ৩ মার্চ গ্র্যান্ড ন্যাশনাল এসেম্বলি খিলাফত বিলুপ্ত করে এবং শেষ খলিফা দ্বিতীয় আবদুল মজিদকে ফ্রান্সে নির্বাসনে পাঠায়।

খ্রিষ্ট ও ইহুদি ধর্ম

সম্পাদনা
 
দ্বিতীয় মুহাম্মদ ও পেট্রিয়ার্ক‌ গেনাডিয়াস স্কোলারিয়াস

মুসলিম জিম্মি রীতি অনুযায়ী উসমানীয় সাম্রাজ্যে খ্রিষ্টানদের কিছু সীমাবদ্ধতা সহকারে ধর্মীয় স্বাধীনতা ছিল। তাদের অস্ত্রবহনের অনুমতি ছিল না এবং ধর্মীয় চর্চা মুসলিমদের মতই হতো। এছাড়া আইনি আরো কোন বাধ্যবাধকতা ছিল না।[১৩৭] অনেক খ্রিষ্টান ও কিছু ইহুদি ইসলাম গ্রহণ করে।[১৩৮]

দেভশিরমে নামক প্রথা অনুযায়ী বলকান ও আনাতোলিয়া থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক খ্রিষ্টান বালককে তাদের বয়ঃপ্রাপ্তির আগে সেনাবাহিনীতে ভর্তি করা হত এবং মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলা হত।[১৩৯]

মিল্লাত প্রথা অনুযায়ী অমুসলিম নাগরিকরা সাম্রাজ্যের প্রজা হিসেবে বিবেচিত হত তবে ইসলামি আইন তাদের উপর প্রযোজ্য হত না। অর্থোডক্স মিল্লাত তখনও জাস্টিনিয়ান কোডের অনুসরণ করত যা ৯০০ বছর ধরে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যে প্রচলিত ছিল। সর্ববৃহৎ অমুসলিম সম্প্রদায় হওয়ায় অর্থোডক্স মিল্লাতকে রাজনীতি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়।[১৪০][১৪১]

উসমানীয় ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য অনুরূপ মিল্লাত প্রথা চালু করা হয়। তারা হাখাম বাশি বা উসমানীয় প্রধান রেবাইয়ের নেতৃত্বে থাকত; আর্মেনিয়ান অর্থোডক্স সম্প্রদায় একজন প্রধান বিশপের অধীনে ছিল; এছাড়া কিছু অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায় ছিল। মিল্লাত প্রথা প্রাক আধুনিক সমাজে ধর্মীয় বহুত্ববাদের উদাহরণ।[১৪২]

সংস্কৃতি

সম্পাদনা
 
ইয়েনি জামি মসজিদ ও এমিননু বাজার, কনস্টান্টিনোপল, আনুমানিক ১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দ।

উসমানীয়রা অধিকৃত অঞ্চলের কিছু প্রথা, শিল্প ও প্রতিষ্ঠান আত্মীকরণ করে নিয়ে তাতে নতুন মাত্রা যোগ করে। পূর্ববর্তী সাম্রাজ্যগুলোর বেশ কিছু প্রথা ও সাংস্কৃতিক দিক যেমন স্থাপত্য, রান্না, সঙ্গীত, অবসর ও সরকার উসমানীয় তুর্কিরা গ্রহণ করে এবং এগুলোকে নতুন আকারে সাজায়। ফলে বৈচিত্রময় উসমানীয় সাংস্কৃতিক পরিচয় সৃষ্টি হয়। আন্তসম্প্রদায় বিবাহ উসমানীয় অভিজাত সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ভূমিকা রেখেছে। তুর্কি লোক সংস্কৃতির সাথে তুলনা করলে এই নতুন সংস্কৃতির প্রভাব স্পষ্ট হয়।

দাসপ্রথা উসমানীয় সমাজের অংশ ছিল।[১৪৩] ১৯০৮ সাল পর্যন্ত সাম্রাজ্যে নারী দাস বিক্রি হত।[১৪৪] ১৯শ শতাব্দীতে পশ্চিমা ইউরোপীয় দেশগুলো এই প্রথা উঠিয়ে দেয়ার জন্য সাম্রাজ্যের উপর চাপ প্রয়োগ করে। ১৯ শতক জুড়ে বিভিন্ন সুলতানগণ দাস ব্যবসা হ্রাস করার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালান কিন্তু বহুযুগ ধরে চর্চিত হওয়ায় এই প্রথা তুলে দেয়া সহজ ছিল না।

১৯শ শতাব্দীর কিছু সময় পর্যন্ত প্লেগ উসমানীয় সমাজের একটি বড় ঘটনা ছিল। ১৭০১ থেকে ১৭৫০ সালের মধ্যে ইস্তানবুলে ২৭টি বড় ও ছোট প্লেগ মহামারী এবং ১৭৫১ থেকে ১৮০১ সালের মধ্যে ৩১টি প্লেগ মহামারীর ঘটনা ঘটে।[১৪৫]

উসমানীয় সাহিত্য

সম্পাদনা

উসমানীয় লেখ্য সাহিত্যে গদ্য ও পদ্য ধারা ছিল। কবিতা ছিল প্রধান মাধ্যম। ১৯শ শতাব্দী পর্যন্ত উসমানীয় গদ্যসাহিত্য প্রধান মুখ ছিল।। তুর্কি লোক সাহিত্য ও দিওয়ান কাব্যেও অনুরূপ উদাহরণ দেখা যায়।

উসমানীয় দিওয়ান কবিতা ছিল উচ্চস্তরের ও প্রতীকায়িত শৈল্পিক মাধ্যম। এটি ফারসি কবিতা থেকে অনুপ্রাণিত ছিল। দিওয়ান সদৃশ্য (مراعات نظير mura'ât-i nazîr / تناسب tenâsüb) ও ভিন্নার্থবোধক (تضاد tezâd) প্রতীকে সমৃদ্ধ ছিল। গজল বা কাসিদা উভয় প্রকারের অধিকাংশ দিওয়ান গীতধর্মী। এছাড়াও মসনবি একপ্রকার কাব্য।

[[চিত্র:Nedim (divan edb.şairi).JPG|thumb|আহমেদ নাদিম এফেন্দি, অন্যতম সেরা উসমানীয় কবি।].

ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে ফারসি সাহিত্য ১৯ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে উসমানীয় সাম্রাজ্যে প্রধান প্রভাব সৃষ্টি করে। ফলে এসময় যায়। তানজিমাত যুগে রোমান্টিসিজম উসমানীয় গদ্য সাহিত্যে প্রভাব ফেলেছিল।

তানজিমাত যুগের অনেক লেখক ভিন্ন ধাচের রচনার দিকে অগ্রসর হন। তাদের মধ্যে ছিলেন কবি নামিক কামাল যিনি ১৮৭৬ সালে "ইনতিবাহ" (জাগরণ) রচনা করেন। সাংবাদিক ইবরাহিম শিনাসি লেখালেখির জন্য প্রসিদ্ধ। ১৮৬০ সালে প্রথম আধুনিক তুর্কি নাটক "শাইর এভলেনমেসি" প্রদর্শন হয়। এছাড়াও কিছু নাটক রচিত হয়েছিল। ঔপন্যাসিক আহমেদ মিদহাত এফেন্দি রোমান্টিসিজম, বাস্তববাদ, প্রকৃতিবাদের উপর উপন্যাস করেন। তানজিমাতের পর লেখকরা নতুন ধরনের সাহিত্যের দিকে ঝুকে পড়েন। তাদের ধারণা ছিল এতে উসমানীয় সমাজের কাঠামো পুনরুজ্জীবিত হবে।[১৪৬]

স্থাপত্য

সম্পাদনা

[[চিত্র:Bridge on the Drina July 2009.jpg|থাম্ব|মুহাম্মদ পাশা সোকোলোভিচ সেতু, ১৫৭৭ খ্রিষ্টাব্দে নির্মাণ সমাপ্ত, উসমানীয় স্থাপত্যের ধ্রুপদি যুগের সেরা স্থপতি। মিমার সিনান নির্মিত।]]

উসমানীয় স্থাপত্য পারস্য, বাইজেন্টাইন ও ইসলামি স্থাপত্য দ্বারা প্রভাবিত। উসমানীয় সাম্রাজ্যের উত্থানের সময় উসমানীয় শিল্প নতুন ধারণার সন্ধানে ছিল। সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণের সময় স্থাপত্যের ধ্রুপদি সময় চলছিল।সাম্রাজ্যের অচলাবস্থার সময় উসমানীয় স্থাপত্য তার শৈলী থেকে সরে পড়ে।

টিউলিপ যুগে পশ্চিম ইউরোপের অলংকারপূর্ণ শৈলীর প্রভাব সাম্রাজ্যের উপর পড়ে। উসমানীয় স্থাপত্যের ধারণা মূলত মসজিদের স্থাপত্যকে কেন্দ্র করে ছিল। মসজিদ ছিল সমাজ, নগর পরিকল্পনা ও সম্প্রদায়ের জীবনের সাথে একীভূত। মসজিদ ছাড়াও মাদ্রাসা, হাসপাতাল, হাম্মাম ও মাজারে স্থাপত্যের নিদর্শন দেখা যায়।

ইস্তানবুল ও এডির্ন‌ ছাড়াও মিশর, ইরিত্রিয়া, তিউনিসিয়া, আলজিয়ার্স‌, বলকান, রোমানিয়ায়ও দেখতে পাওয়া যায়। এসব স্থানে মসজিদ, সেতু, ফোয়ারা ও স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সাম্রাজ্যে বৈচিত্র্যময় জাতিগোষ্ঠীর অবস্থানের ফলে অলংকরণেও এসবের প্রভাব পড়ে। দরবারের শিল্পীরা বাইজেন্টাইন শিল্পের সাথে চীনা শিল্পের মিশ্রণের মত ধারায় কাজ করে শিল্পকে সমৃদ্ধ করেছেন।[১৪৭]

হজ পালনে সুবিধার জন্য উসমানীয় সরকার মদিনায় একটি রেল স্টেশন তৈরি করেছিল। যা তৈরি করতে খরচ হয়েছিল ১৬ মিলিয়ন ডলার। সৌদি সরকার বর্তমানে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করেছে।[১৪৮]

শিল্পকলা

সম্পাদনা
 
আবদুল জলিল লেভনির চিত্রকর্ম, ১৮শ শতাব্দীর প্রথমভাগ।

পান্ডুলিপি চিত্রায়নের জন্য ব্যবহৃত উসমানীয় অণুচিত্রশিল্প পারস্যের অণুচিত্রের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। এছাড়াও এতে বাইজেন্টাইন শিল্প, পান্ডুলিপি চিত্রায়নের প্রভাব ছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৫শ শতাব্দীতে তোপকাপি প্রাসাদে চিত্রশিল্পীদের গ্রিক একাডেমি 'নাকাশান-ই-রুম প্রতিষ্ঠিত হয়। পরের শতাব্দীর প্রথমদিকে পারস্য একাডেমি নাকাশান-ই-ইরানি প্রতিষ্ঠিত হয়। সুলতান বা প্রশাসকদের দরবার থেকে শিল্পীদের সহায়তা করা হত। স্বাক্ষর হিসেবে ব্যবহৃত তুগরাও শিল্পকলার অন্তর্গত।

গালিচা তৈরি সাম্রাজ্যের একটি সমৃদ্ধশালী শিল্প ছিল। সৌন্দর্যমন্ডিত অলংকরণ ও ধর্মীয় কাজে গালিচার ব্যবহার ছিল।[১৪৯] এরূপ গালিচা তৈরির প্রণালি মধ্য এশিয়ার যাযাবরদের মধ্যে উৎপত্তি লাভ করে। আনাতোলিয়ার সমাজে এই প্রথা ছড়িয়ে পড়েছিল। মেঝে ছাড়াও দেয়াল ও প্রবেশপথে গালিচা ব্যবহার করা হত।

সঙ্গীত

সম্পাদনা
 
মেহতেরানদের চিত্রায়ন, জানিসারিদের ব্যান্ড, আবদুল জলিল লেভনির অণুচিত্র।

উসমানীয় অভিজাতদের শিক্ষাক্ষেত্রে উসমানীয় ধ্রুপদি সঙ্গীত গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। কয়েকজন সুলতান নিজেরাই শিল্পী ও সুরকার ছিলেন। সুলতান তৃতীয় সেলিম তন্মধ্যে অন্যতম। এখনও তার সুর প্রচলিত রয়েছে। বাইজেন্টাইন, আর্মেনিয়ান, আরবি ও ফারসি সঙ্গীত উসমানীয় সঙ্গীতের উপর প্রভাব ফেলেছে। গঠনগতভাবে এই সঙ্গীত উসুল নামক এককের উপর প্রতিষ্ঠিত যা অনেকটা পশ্চিমা সঙ্গীতের মিটারের মত।

 
ছায়ানাটক কারাগুজ ও হাজিভাত উসমানীয় সাম্রাজ্যব্যপী প্রচলিত ছিল।

আনাতোলিয়া ও মধ্য এশিয়ার বাদ্যযন্ত্র যেমন বাগলামা, ওদ ইত্যাদি সঙ্গীতের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত। পরবর্তীতে পশ্চিমা বাদ্যযন্ত্র যেমন ভায়োলিন, পিয়ানো ব্যবহার শুরু হয়। রাজধানী ও অন্যান্য স্থানের মধ্যে ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য থাকায় সাম্রাজ্যে পৃথক দুইপ্রকার সঙ্গীত জন্মলাভ করে। এগুলো ছিল উসমানীয় ধ্রুপদি সঙ্গীত ও লোক সঙ্গীত। প্রদেশসমূহে বিভিন্নপ্রকার লোক সঙ্গীত সৃষ্টি হয়। ভিন্ন বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সঙ্গীতের অঞ্চলগুলোর মধ্যে প্রধান ছিল, বলকান-থ্রেসিয়ান তুরকু, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় তুরকু, এজিয়ান তুরকু, মধ্য আনাতোলিয়ান তুরকু, পূর্ব আনাতোলিয়ান তুরকু ও ককেসিয়ান তুরকু। কিছু বৈশিষ্ট্যমন্ডিত শৈলী ছিল উসমানীয় সামরিক ব্যান্ড, রোমা সঙ্গীত, বেলি নাচ, তুর্কি লোক সঙ্গীত।

ঐতিহ্যবাহী ছায়া নাটককে বলা হত কারাগুজ ও হাজিভাত যা সাম্রাজ্যজুড়ে বিস্তৃত ছিল। এর চরিত্রগুলো সে সংস্কৃতির সকল নৃতাত্ত্বিক ও সামাজিক গোষ্ঠীগুলোকে উপস্থাপন করত।[১৫০][১৫১] একজন পুতুল পরিচালক এটি পরিচালনা করতেন। তিনি সকল চরিত্রের স্বরে কথা বলতেন। এর উৎপত্তি স্পষ্ট না তবে ধরা হয় যে মিশরীয় বা এশিয়ান প্রথা এর উদ্ভব হয়েছে।

রান্না

সম্পাদনা
 
তুর্কি নারীদের রুটি প্রস্তুতকরণ, ১৭৯০।

উসমানীয় রান্না দ্বারা রাজধানী ইস্তানবুল ও আঞ্চলিক রাজধানী শহরগুলোর রান্নাপ্রণালীকে বোঝানো হয়। এসব স্থান ছিল সাংস্কৃতিক মিলনস্থল ফলে জাতিসত্ত্বা নির্বিশেষে সকলে এসকল খাবার গ্রহণ করত। এসকল বৈচিত্র্যপূর্ণ রান্না রাজপ্রাসাদের বাবুর্চিরা সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে নিয়ে আসত এবং সেখানে তাদের হাতে এগুলো আরো সমৃদ্ধি লাভ করে।

তুর্কি রান্না এবং গ্রীক, বলকান, আর্মে‌নিয়ান ও মধ্যপ্রাচ্যের রান্না সাম্রাজ্যের সাবেক অঞ্চলগুলোতে উৎপত্তি লাভ করে বর্তমানে এসেছে।[১৫২] এসবের মধ্যে রয়েছে দই, ডোনার কাবাব, শর্মা, জাজিক, আয়রান, পিটা রুটি, ফেটা পনির, বাকলাভা, পোলাও, তুর্কি কফি ইত্যাদি।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

সম্পাদনা

উসমানীয় ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে উসমানীয়রা বড় আকারের গ্রন্থাগার গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। এতে মূল পান্ডুলিপির পাশাপাশি অনুবাদ বইও ছিল।[৪৫] ১৫শ শতাব্দিতে স্থানীয় ও বিদেশি পান্ডুলিপির জন্য আগ্রহ সৃষ্টি হয়। সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মদ উসমানীয় শিক্ষাকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য ট্রেবিজনের গ্রিক পণ্ডিত জর্জি‌য়াস আমিরুটজাসকে টলেমির ভূগোল বিষয়ক বইগুলো অনুবাদের দায়িত্ব দেন। ওয়াসিম ইফতেখার নামক সমরকন্দের একজন জ্যোতির্বিদ, গণিতবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী দুটি মাদ্রাসার অধ্যাপক হন। মৃত্যুর পূর্বে মাত্র দুই বা তিন বছর ইস্তানবুলে থাকলেও তার লেখা ও ছাত্রদের কার্যক্রমের কারণে তার প্রভাবশালী উসমানীয় পরিমন্ডল ছিল।[১৫৩]

 
তাকিউদ্দিনের ইস্তানবুল মানমন্দির, ১৫৭৭

১৫৭৭ সালে তাকি উদ্দিন মুহাম্মদ ইবনে মারুফ ইস্তানবুলে একটি মানমন্দির স্থাপন করেছিলেন। ১৫৮০ সাল পর্যন্ত তিনি এখানে তার জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যান। তিনি সূর্যের কক্ষপথ বিষয়ে গবেষণা করেছেন।[১৫৪]

১৬৬০ সালে উসমানীয় পণ্ডিত ইবরাহিম এফেন্দি আল জিগেতভারি তেজকিরেজি নোয়েল ডুরেটের ফরাসি জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক রচনা আরবিতে অনুবাদ করেন।[১৫৫]

শরিফউদ্দন সাবুনজুগলু শল্যচিকিৎসার বই এবং মুসলিমদের মধ্যে শেষ প্রধান চিকিৎসার বিশ্বকোষ রচনা করেছিলেন। তার কর্ম ব্যাপকভাবে আবুল কাসিম আল জাহরাউয়ির আল তাসরিফের উপর নির্ভরশীল হলেও তিনি তার নিজস্ব অনেক আবিষ্কার এতে লিপিবদ্ধ করেছেন। নারী শল্যচিকিৎসকরাও প্রথমবারের মত চিত্রায়িত হয়।[১৫৬]

১৭০২ সালে মিনিটে সময় মাপন মেশুর শাইহ দেদে নামক একজন উসমানীয় ঘড়ি প্রস্তুতকারক নির্মাণ করেন।[১৫৭]

ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে মুহাম্মদ আলীর অধীনে মিশর শিল্প উৎপাদনের জন্য বাষ্পীয় ইঞ্জিন ব্যবহার শুরু করে, যেমন আয়রনওয়ার্কস, টেক্সটাইল উৎপাদন, কাগজ কারখানা এবং হালিং মিল বাষ্প শক্তির দিকে ধাবিত হয়।[১৫৮]

১৯শ শতাব্দীতে ইসহাক এফেন্দি উসমানীয়দের মধ্যে পাশ্চাত্যের বৈজ্ঞানিক ধারণা ও উন্নয়ন সূচনা করেন। এছাড়া পশ্চিমা কর্মের অনুবাদের মাধ্যমে তিনি যথাযথ তুর্কি ও আরবি বৈজ্ঞানিক পরিভাষা সৃষ্টি করেছিলেন।

খেলাধুলা

সম্পাদনা
 
তোপকাপি প্রাসাদের বাগানে উসমানীয় কুস্তিগীরদের লড়াই, ১৯শ শতাব্দী, ভিক্টোরিয়া এন্ড আলবার্ট মিউজিয়াম, লন্ডন, যুক্তরাজ্য

উসমানীয়দের মূল খেলা ছিল কুস্তি, শিকার, তীরনিক্ষেপ, অশ্বারোহণ, বর্শা নিক্ষেপ, সাতার ইত্যাদি। ১৯শ শতাব্দীতে কনস্টান্টিনোপলে ফুটবলের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ার পর ইউরোপীয় রীতির স্পোর্টস ক্লাব গঠিত হয়। এসময়কার শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলোর মধ্যে ছিল ইস্তানবুলের বেশিকতাশ জিমন্যাস্টিকস ক্লাব (১৯০৩), গালাটাসারাই স্পোর্টস ক্লাব (১৯০৫) ও ফেনেরবাহচে স্পোর্টস ক্লাব (১৯০৭)। এছাড়া অন্যান্য প্রদেশেও ফুটবল ক্লাব গঠিত হয় যেমন কারসিয়াকা স্পোর্টস ক্লাব (১৯১২), আলতাই স্পোর্টস ক্লাব (১৯১৪) ও উলকুসপুর।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

পাদটীকা

সম্পাদনা
  1. In Ottoman Turkish, the city was known by various names, among which were Kostantiniyye (قسطنطينيه) (replacing the suffix -polis with the Arabic nisba), Dersaadet (در سعادت) and Istanbul (استانبول). Names other than Istanbul became obsolete in Turkish after the proclamation of the Republic of Turkey in 1923,[] and after Turkey's transition to Latin script in 1928, the Turkish government in 1930 requested that foreign embassies and companies use Istanbul, and that name became widely accepted internationally.[] Eldem Edhem, author of an entry on Istanbul in Encyclopedia of the Ottoman Empire, stated that the majority of the Turkish people circa 2010, including historians, believe using "Constantinople" to refer to the Ottoman-era city is "politically incorrect" despite any historical accuracy.[]
  2. Mehmed VI, the last Sultan, was expelled from Constantinople on 17 November 1922.
  3. সেভ্র চুক্তির (১০শে আগস্ট ১৯২০) ফলে উসমানীয় সাম্রাজ্য বেঁচে যাওয়ার নিভু নিভু আশা বেঁচে ছিল। কিন্তু ১লা নভেম্বর ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে তুরস্কের প্রধান বিধানসভায় স্বাধীনতাকামীরা কনস্টান্টিনোপল দখলের সময় সেভ্র চুক্তি নিয়ে আলাপ হওয়ার সময় (১৬ই মার্চ ১৯২০ খ্রিস্টাব্দ) থেকে ইস্তাম্বুলে উসমানীয় শাসনের সকল আদেশ বাতিল ও অকার্যকর ঘোষণা করে। ২৪শে জুলাই ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে হওয়া লুজান চুক্তির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তুরস্কের প্রধান বিধানসভা ও আঙ্কারা নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়। যার ফলে ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে অক্টোবর তুরস্কের প্রধান জাতীয় বিধানসভা প্রজাতন্ত্রের ঘোষণা দেয়। যার ফলে উসমানীয় সাম্রাজ্য ইতিহাস থেকে চিরতরে হারিয়ে যায়।
  4. "Sublime Ottoman State" was not used in minority languages for Christians and Jews, nor in French,[১৬] the common Western language among the educated in the late Ottoman Empire.[১১] Minority languages, which use the same name in French:[১৬]
    • টেমপ্লেট:Lang-hyw (Osmanean Têrut´iwn, meaning "Ottoman Authority/Governance/Rule"), Օսմանյան պետութիւն (Osmanean Petut‘iwn, meaning "Ottoman State"), and Օսմանյան կայսրություն (Osmanean Kaysrut, meaning "Ottoman Empire")
    • বুলগেরীয়: Османска империя (Otomanskata Imperiya), and Отоманска империя is an archaic version. Definite article forms: Османската империя and Османска империя were synonymous
    • গ্রিক: Оθωμανική Επικράτεια (Othōmanikē Epikrateia) and Оθωμανική Αυτοκρατορία (Othōmanikē Avtokratoria)
    • লাদিনো: Imperio otomano
  5. The Ottoman dynasty also held the title "caliph" from the Ottoman victory over the Mamluk Sultanate of Cairo in the Battle of Ridaniya in 1517 to the abolition of the Caliphate by the Turkish Republic in 1924.

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Ottoman Empire general information"। ২০১৪-০৭-৩০। 
  2. Stanford Shaw, History of the Ottoman Empire and Modern Turkey (Cambridge: University Press, 1976), vol. 1 p. 13
  3. Raby 1989, পৃ. 19–20।
  4. "In 1363 the Ottoman capital moved from Bursa to Edirne, although Bursa retained its spiritual and economic importance." Ottoman Capital Bursa. Official website of Ministry of Culture and Tourism of the Republic of Turkey. Retrieved 26 June 2013.
  5. "In 1363 the Ottoman capital moved from Bursa to Edirne, although Bursa retained its spiritual and economic importance." Ottoman Capital Bursa. Official website of Ministry of Culture and Tourism of the Republic of Turkey. Retrieved 26 June 2013.
  6. Edhem, Eldem. "Istanbul." In: Ágoston, Gábor and Bruce Alan Masters. Encyclopedia of the Ottoman Empire. Infobase Publishing, 21 May 2010. আইএসবিএন ১-৪৩৮১-১০২৫-১, 9781438110257. Start and CITED: p. 286. "With the collapse of the Ottoman Empire and the establishment of the Republic of Turkey, all previous names were abandoned and Istanbul came to designate the entire city."
  7. (Stanford and Ezel Shaw (27 May 1977): History of the Ottoman Empire and Modern Turkey. Cambridge: Cambridge University Press. Vol II, আইএসবিএন ০-৫২১-২৯১৬৬-৬, 9780521291668. p. 386; Robinson (1965), The First Turkish Republic, p. 298 and Society (২০১৪-০৩-০৪)। "Istanbul, not Constantinople"National Geographic Society (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০১-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-২৮ )
  8. Flynn, Thomas O. (২০১৭-০৮-০৭)। The Western Christian Presence in the Russias and Qājār Persia, c.1760–c.1870 (ইংরেজি ভাষায়)। BRILL। আইএসবিএন 978-90-04-31354-5 
    • Learning to Read in the Late Ottoman Empire and the Early Turkish Republic, B. Fortna, page 50;"Although in the late Ottoman period Persian was taught in the state schools...."
    • Persian Historiography and Geography, Bertold Spuler, page 68, "On the whole, the circumstance in Turkey took a similar course: in Anatolia, the Persian language had played a significant role as the carrier of civilization.[..]..where it was at time, to some extent, the language of diplomacy...However Persian maintained its position also during the early Ottoman period in the composition of histories and even Sultan Salim I, a bitter enemy of Iran and the Shi'ites, wrote poetry in Persian. Besides some poetical adaptations, the most important historiographical works are: Idris Bidlisi's flowery "Hasht Bihist", or Seven Paradises, begun in 1502 by the request of Sultan Bayazid II and covering the first eight Ottoman rulers.."
    • Picturing History at the Ottoman Court, Emine Fetvacı, page 31, "Persian literature, and belles-lettres in particular, were part of the curriculum: a Persian dictionary, a manual on prose composition; and Sa'dis "Gulistan", one of the classics of Persian poetry, were borrowed. All these title would be appropriate in the religious and cultural education of the newly converted young men.
    • Persian Historiography: History of Persian Literature A, Volume 10, edited by Ehsan Yarshater, Charles Melville, page 437;"...Persian held a privileged place in Ottoman letters. Persian historical literature was first patronized during the reign of Mehmed II and continued unabated until the end of the 16th century.
  9. Ayşe Gül Sertkaya (২০০২)। "Şeyhzade Abdurrezak Bahşı"। György Hazai। Archivum Ottomanicum20। পৃষ্ঠা 114–115। As a result, we can claim that Şeyhzade Abdürrezak Bahşı was a scribe lived in the palaces of Sultan Mehmed the Conqueror and his son Bayezid-i Veli in the 15th century, wrote letters (bitig) and firmans (yarlığ) sent to Eastern Turks by Mehmed II and Bayezid II in both Uighur and Arabic scripts and in East Turkestan (Chagatai) language. 
  10. Strauss, Johann (২০১০)। "A Constitution for a Multilingual Empire: Translations of the Kanun-ı Esasi and Other Official Texts into Minority Languages"। Herzog, Christoph; Malek Sharif। The First Ottoman Experiment in DemocracyWurzburg: Orient-Institut Istanbul। পৃষ্ঠা 21–51।  (info page on book at Martin Luther University) // CITED: p. 26 (PDF p. 28): "French had become a sort of semi-official language in the Ottoman Empire in the wake of the Tanzimat reforms.[...]It is true that French was not an ethnic language of the Ottoman Empire. But it was the only Western language which would become increasingly widespread among educated persons in all linguistic communities."
  11. Lambton, Ann; Lewis, Bernard (১৯৯৫)। The Cambridge History of Islam: The Indian sub-continent, South-East Asia, Africa and the Muslim west2। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 320। আইএসবিএন 9780521223102 
  12. Turchin, Peter; Adams, Jonathan M.; Hall, Thomas D. (ডিসেম্বর ২০০৬)। "East-West Orientation of Historical Empires and Modern States" (পিডিএফ)Journal of World-Systems ResearchXII (II): 219–229। আইএসএসএন 1076-156X। ২২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  13. Dündar, Orhan; Dündar, Erhan, 1.Dünya Savaşı, Millî Eğitim Bakanlığı Yayınları, 1999, আইএসবিএন ৯৭৫-১১-১৬৪৩-০
  14. Erickson, Edward J.। Defeat in detail: the Ottoman Army in the Balkans, 1912–1913। পৃষ্ঠা 59। 
  15. Strauss, Johann (২০১০)। "A Constitution for a Multilingual Empire: Translations of the Kanun-ı Esasi and Other Official Texts into Minority Languages"। Herzog, Christoph; Malek Sharif। The First Ottoman Experiment in DemocracyWürzburg: Orient-Institut Istanbul। পৃষ্ঠা 21–51।  (info page on book at Martin Luther University) // CITED: p. 36 (PDF p. 38/338).
  16. "Ottoman Empire"। Britannica Online Encyclopedia। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  17. The A to Z of the Ottoman Empire, by Selcuk Aksin Somel, 2010, p.179
  18. The Ottoman Empire, 1700–1922, Donald Quataert, 2005, p.4
  19. The Grove Encyclopedia of Islamic Art and Architecture: Delhi to Mosque, Jonathan M. Bloom, Sheila Blair, 2009. p.82
  20. "Ottoman Empire"। Oxford Islamic Studies Online। ৬ মে ২০০৮। ২৫ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১০ 
  21. Mikhail, Alan (২০১১)। Nature and Empire in Ottoman Egypt। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 7। আইএসবিএন 978-1-139-49955-2। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১৩ 
  22. "Ottoman banknote Arabic script"। ২৮ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১০ 
  23. Starting from the 19th century, the name Osmanlı Devleti (Ottoman State) became popular among the Ottoman citizens and officials. Before the 1800s, the name Osmanlı Devleti was not officially used, but records show this name was used informally by Ottoman citizens.
  24. For instance, in the Treaty of Bern of October 1874 establishing the General Postal Union (soon to become the Universal Postal Union), only the term Turquie (Turkey) is used.
  25. History of the Ottoman Empire and modern Turkey, Volume 1, By Stanford Jay Shaw, Ezel Kural Shaw, pg. 13
  26. "The Sultans: Osman Gazi"। TheOttomans.org। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১০ 
  27. Finkel, Caroline (২০০৭)। Osman's Dream: The History of the Ottoman Empire। Basic Books। পৃষ্ঠা 5। আইএসবিএন 978-0-465-00850-6। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১৩ 
  28. Robert Elsie (২০০৪)। Historical Dictionary of Kosova। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 95–96। আইএসবিএন 9780810853096 
  29. David Nicolle (১৯৯৯)। Nicopolis 1396: The Last Crusade। Osprey Publishing। আইএসবিএন 9781855329188। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৫ 
  30. Gábor Ágoston; Bruce Alan Masters (২০০৯)। Encyclopedia of the Ottoman Empire। Infobase Publishing। পৃষ্ঠা 363। আইএসবিএন 9781438110257 
  31. Mesut Uyar; Edward J. Erickson (২০০৯)। A Military History of the Ottomans: From Osman to Atatürk। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 29। আইএসবিএন 9780275988760 
  32. Lokman (১৫৮৮)। "Battle of Mohács (1526)" 
  33. Stone, Norman (২০০৫)। "Turkey in the Russian Mirror"। Mark Erickson, Ljubica Erickson। Russia War, Peace And Diplomacy: Essays in Honour of John Erickson। Weidenfeld & Nicolson। পৃষ্ঠা 94। আইএসবিএন 978-0-297-84913-1। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  34. Hodgkinson 2005, p. 240
  35. Karpat, Kemal H. (১৯৭৪)। The Ottoman state and its place in world history। Leiden: Brill। পৃষ্ঠা 111। আইএসবিএন 90-04-03945-7 
  36. A lock-hold on trade between western Europe and Asia is often cited as a primary motivation for Isabella I of Castile to fund Christopher Columbus's westward journey to find a sailing route to Asia and, more generally, for European seafaring nations to explore alternative trade routes (e.g. K. D. Madan, Life and travels of Vasco Da Gama (1998), 9; I. Stavans, Imagining Columbus: the literary voyage (2001), 5; W.B. Wheeler and S. Becker, Discovering the American Past. A Look at the Evidence: to 1877 (2006), 105). This traditional viewpoint has been attacked as unfounded in an influential article by A.H. Lybyer ("The Ottoman Turks and the Routes of Oriental Trade", English Historical Review, 120 (1915), 577–588), who sees the rise of Ottoman power and the beginnings of Portuguese and Spanish explorations as unrelated events. His view has not been universally accepted (cf. K.M. Setton, The Papacy and the Levant (1204–1571), Vol. 2: The Fifteenth Century (Memoirs of the American Philosophical Society, Vol. 127) (1978), 335).
  37. Savory, R. M. (১৯৬০)। "The Principal Offices of the Ṣafawid State during the Reign of Ismā'īl I (907-30/1501-24)"। Bulletin of the School of Oriental and African Studies, University of London23 (1): 91–105। জেস্টোর 609888ডিওআই:10.1017/S0041977X00149006 
  38. Hess, Andrew C. (জানুয়ারি ১৯৭৩)। "The Ottoman Conquest of Egypt (1517) and the Beginning of the Sixteenth-Century World War"International Journal of Middle East Studies4 (1): 55–76। জেস্টোর 162225ডিওআই:10.1017/S0020743800027276 
  39. "Origins of the Magyars"Hungary। Britannica Online Encyclopedia। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১০ 
  40. "Encyclopaedia Britannica"। Britannica Online Encyclopedia। ২৫ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১০ 
  41. Imber, Colin (২০০২)। The Ottoman Empire, 1300–1650: The Structure of Power। Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 50আইএসবিএন 0-333-61386-4 
  42. Wheatcroft, Andrew (২০০৯)। The Enemy at the Gate: Habsburgs, Ottomans, and the Battle for Europe। Basic Books। পৃষ্ঠা 59আইএসবিএন 978-0-465-01374-6 
  43. Thompson, Bard (১৯৯৬)। Humanists and Reformers: A History of the Renaissance and Reformation। Wm. B. Eerdmans Publishing। পৃষ্ঠা 442আইএসবিএন 978-0-8028-6348-5 
  44. Ágoston and Alan Masters, Gábor and Bruce (২০০৯)। Encyclopedia of the Ottoman Empire। Infobase Publishing। পৃষ্ঠা 583। আইএসবিএন 978-1-4381-1025-7 
  45. Imber, Colin (২০০২)। The Ottoman Empire, 1300–1650: The Structure of Power। Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 53আইএসবিএন 0-333-61386-4 
  46. E. H. M. Clifford, "The British Somaliland-Ethiopia Boundary", Geographical Journal, 87 (1936), p. 289
  47. Mansel, Philip (১৯৯৭)। Constantinople : city of the world's desire 1453–1924। London: Penguin। পৃষ্ঠা 61। আইএসবিএন 0-14-026246-6 
  48. Joel Shinder, "Career Line Formation in the Ottoman Bureaucracy, 1648–1750: A New Perspective," Journal of the Economic & Social History of the Orient (1973) 16#2 pp 217–237; Shindler is a dissenter.
  49. David Nicolle, Armies of the Ottoman Turks 1300–1774 (Osprey, 1983)
  50. Jonathan Grant, "Rethinking The Ottoman "Decline": Military Technology Diffusion in the Ottoman Empire, Fifteenth to Eighteenth Centuries," Journal of World History (1999) 10#1 pp 179–201.
  51. On the economic troubles see Hakan Berument and Asli Gunay 1. "Inflation Dynamics and its Sources in the Ottoman Empire: 1586–1913." International Review of Applied Economics (2007) 21#2 pp: 207–245. online
  52. COINS FROM MOGADISHU, c. 1300 to c. 1700 by G. S. P. Freeman-Grenville pg 36
  53. Brian L. Davies (২০০৭)। Warfare, State and Society on the Black Sea Steppe: 1500–1700। Routledge। পৃষ্ঠা 16। আইএসবিএন 978-0-415-23986-8। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  54. Orest Subtelny (২০০০)। Ukraine। University of Toronto Press। পৃষ্ঠা 106। আইএসবিএন 978-0-8020-8390-6। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  55. Matsuki, Eizo। "The Crimean Tatars and their Russian-Captive Slaves" (পিডিএফ)। Mediterranean Studies Group at Hitotsubashi University। ১ মে ২০১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ [অকার্যকর সংযোগ]
  56. Itzkowitz 1980, পৃ. 67।
  57. Itzkowitz 1980, পৃ. 71।
  58. Halil İnalcık (১৯৯৭)। An Economic And Social History of the Ottoman Empire, Vol 1 1300–1600। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 24। আইএসবিএন 978-0-521-57456-3। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  59. Kinross 1979, পৃ. 281।
  60. Kinross 1979, পৃ. 371।
  61. Kinross 1979, পৃ. 372।
  62. Kinross 1979, পৃ. 376।
  63. Kinross 1979, পৃ. 392।
  64. "History"। Istanbul Technical University। ১৮ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১১ 
  65. Stone, Norman (২০০৫)। "Turkey in the Russian Mirror"। Mark Erickson, Ljubica Erickson। Russia War, Peace And Diplomacy: Essays in Honour of John Erickson। Weidenfeld & Nicolson। পৃষ্ঠা 97। আইএসবিএন 978-0-297-84913-1। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  66. "Presentation of Katip Çelebi, Kitâb-i Cihân-nümâ li-Kâtib Çelebi"। Utrecht University Library। ৫ মে ২০০৯। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  67. Watson, William J. (১৯৬৮)। "Ibrahim Muteferrika and Turkish Incunabula"। Journal of the American Oriental Society88 (3): 435। জেস্টোর 596868ডিওআই:10.2307/596868 
  68. Kinross 1979, পৃ. 405।
  69. Ishtiaq, Hussain। "The Tanzimat: Secular reforms in the Ottoman Empire" (পিডিএফ)। Faith Matters। 
  70. "PTT Chronology" (Turkish ভাষায়)। PTT Genel Müdürlüğü। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৮। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  71. "History of the Turkish Postal Service"। Ptt.gov.tr। ৪ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১১ 
  72. "Beylerbeyi Palace"। Istanbul City Guide। ১০ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ [অকার্যকর সংযোগ]
  73. "Sultan Abdülmecid: İlklerin Padişahı" (Turkish ভাষায়) (July 2011)। NTV Tarih: 49। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  74. "History"। Türk Telekom। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ [অকার্যকর সংযোগ]
  75. Stone, Norman (২০০৫)। "Turkey in the Russian Mirror"। Mark Erickson, Ljubica Erickson। Russia War, Peace And Diplomacy: Essays in Honour of John Erickson। Weidenfeld & Nicolson। পৃষ্ঠা 95। আইএসবিএন 978-0-297-84913-1। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  76. V. Necla Geyikdagi (১৫ মার্চ ২০১১)। Foreign Investment in the Ottoman Empire: International Trade and Relations 1854–1914। I.B.Tauris। পৃষ্ঠা 32। আইএসবিএন 978-1-84885-461-1। সংগ্রহের তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  77. Douglas Arthur Howard (২০০১)। The History of Turkey। Greenwood Publishing Group। পৃষ্ঠা 71। আইএসবিএন 978-0-313-30708-9। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  78. Williams, Bryan Glynn (২০০০)। "Hijra and forced migration from nineteenth-century Russia to the Ottoman Empire"Cahiers du Monde russe41 (1): 79–108। ডিওআই:10.4000/monderusse.39 
  79. Memoirs of Miliutin, "the plan of action decided upon for 1860 was to cleanse [ochistit'] the mountain zone of its indigenous population", per Richmond, W. The Northwest Caucasus: Past, Present, and Future. Routledge. 2008.
  80. Richmond, Walter (২৯ জুলাই ২০০৮)। The Northwest Caucasus: Past, Present, Future। Taylor & Francis US। পৃষ্ঠা 79। আইএসবিএন 978-0-415-77615-8। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩the plan of action decided upon for 1860 was to cleanse [ochistit'] the mountain zone of its indigenous population 
  81. Amjad M. Jaimoukha (২০০১)। The Circassians: A Handbook। Palgrave Macmillan। আইএসবিএন 978-0-312-23994-7। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৩ 
  82. Charlotte Mathilde Louise Hille (২০১০)। State building and conflict resolution in the Caucasus। BRILL। পৃষ্ঠা 50। আইএসবিএন 978-90-04-17901-1। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৩ 
  83. Daniel Chirot; Clark McCauley (১ জুলাই ২০১০)। Why Not Kill Them All?: The Logic and Prevention of Mass Political Murder (New in Paper)। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 23। আইএসবিএন 978-1-4008-3485-3। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০১৩ 
  84. "145th Anniversary of the Circassian Genocide and the Sochi Olympics Issue"। Reuters। ২২ মে ২০০৯। ২ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০০৯ 
  85. Jelavich, Charles; Jelavich, Barbara (১৯৮৬)। The Establishment of the Balkan National States, 1804–1920। পৃষ্ঠা 139। আইএসবিএন 9780295803609 .
  86. Taylor, A.J.P. (১৯৫৫)। The Struggle for Mastery in Europe, 1848–1918। Oxford: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 228–54। আইএসবিএন 978-0-19-822101-2 
  87. Akçam, Taner (২০০৬)। A Shameful Act: The Armenian Genocide and the Question of Turkish Responsibility। New York: Metropolitan Books। পৃষ্ঠা 42আইএসবিএন 0-8050-7932-7 
  88. Mann, Michael (১ নভেম্বর ২০০৪)। The Dark Side of Democracy: Explaining Ethnic Cleansing। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 118। আইএসবিএন 978-0-521-53854-1। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  89. Matthew J. Gibney; Randall A. Hansen (৩০ জুন ২০০৫)। Immigration and Asylum: From 1900 to the Present। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 437। আইএসবিএন 978-1-57607-796-2। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩Muslims had been the majority in Anatolia, the Crimea, the Balkans and the Caucasus and a plurality in southern Russia and sections of Romania. Most of these lands were within or contiguous with the Ottoman Empire. By 1923, only Anatolia, eastern Thrace and a section of the south-eastern Caucasus remained to the Muslim land. [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  90. "Greek and Turkish refugees and deportees 1912–1924" (পিডিএফ)। NL: Universiteit Leiden: 1। ১৬ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৫ 
  91. Justin McCarthy (১৯৯৫)। Death and exile: the ethnic cleansing of Ottoman Muslims, 1821–1922। Darwin Press। আইএসবিএন 978-0-87850-094-9। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৩ 
  92. Cathie Carmichael (১২ নভেম্বর ২০১২)। Ethnic Cleansing in the Balkans: Nationalism and the Destruction of Tradition। Routledge। আইএসবিএন 978-1-134-47953-5। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৩ 
    "During the period from 1821 to 1922 alone, Justin McCarthy estimates that the ethnic cleansing of Ottoman Muslims led to the death of several million individuals and the expulsion of a similar number."
  93. Oxford University Press (১ মে ২০১০)। Islam in the Balkans: Oxford Bibliographies Online Research Guide। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 9–। আইএসবিএন 978-0-19-980381-1। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৩ 
  94. Şevket Pamuk (২০০৯)। "The Ottoman Economy in World War I"। Broadberry/Harrison। The Economics of World War I। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 112। আইএসবিএন 978-1-139-44835-2। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  95. Spencer C. Tucker, সম্পাদক (২০০৫)। World War I: A – D.। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 1080। আইএসবিএন 978-1-85109-420-2। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  96. Encyclopædia Britannica। "Armenian massacres (Turkish-Armenian history)"। Britannica Online Encyclopedia। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১০ 
  97. Peter Balakian (১৩ অক্টোবর ২০০৯)। The Burning Tigris। HarperCollins। পৃষ্ঠা xvii। আইএসবিএন 978-0-06-186017-1। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১৩ 
  98. Schaller, Dominik J; Zimmerer, Jürgen (২০০৮)। "Late Ottoman genocides: the dissolution of the Ottoman Empire and Young Turkish population and extermination policies – introduction" (পিডিএফ)Journal of Genocide Research10 (1): 7–14। ডিওআই:10.1080/14623520801950820। ৩ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৫The genocidal quality of the murderous campaigns against Greeks and Assyrians is obvious 
  99. Kemal H Karpat (২০০৪)। Studies on Turkish politics and society: selected articles and essays। BRILL। আইএসবিএন 978-90-04-13322-8। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  100. Hakan Ozoglu (২৪ জুন ২০১১)। From Caliphate to Secular State: Power Struggle in the Early Turkish Republic। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 8। আইএসবিএন 978-0-313-37957-4। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১৩ 
  101. Itzkowitz 1980, পৃ. 38।
  102. Naim Kapucu; Hamit Palabiyik (২০০৮)। Turkish Public Administration: From Tradition to the Modern Age। USAK Books। পৃষ্ঠা 77। আইএসবিএন 978-605-4030-01-9। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  103. Antony Black (২০০১)। The History of Islamic Political Thought: From the Prophet to the Present। Psychology Press। পৃষ্ঠা 199। আইএসবিএন 978-0-415-93243-1। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  104. "The Ottoman Palace School Enderun and the Man with Multiple Talents, Matrakçı Nasuh"Journal of the Korea Society of Mathematical Education, Series D। Research in Mathematical Education। 14 (1): 19–31। মার্চ ২০১০। 
  105. Antony Black (২০০১)। The History of Islamic Political Thought: From the Prophet to the Present। Psychology Press। পৃষ্ঠা 197। আইএসবিএন 978-0-415-93243-1। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  106. Milner, Mordaunt (১৯৯০)। The Godolphin Arabian: The Story of the Matchem Line। Robert Hale Limited। পৃষ্ঠা 3–6। আইএসবিএন 978-0-85131-476-1 
  107. Wall, John F। Famous Running Horses: Their Forebears and Descendants। পৃষ্ঠা 8। আইএসবিএন 978-1-163-19167-5 
  108. "Petition created for submarine name"। Ellesmere Port Standard। ২৩ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ [অকার্যকর সংযোগ]
  109. "Story of Turkish Aviation"। Turkey in the First World War। ১২ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১১ [অকার্যকর সংযোগ]
  110. "Founding"। Turkish Air Force। ৭ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১১ 
  111. Imber, Colin (২০০২)। "The Ottoman Empire, 1300–1650: The Structure of Power" (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 177–200। ২৬ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  112. Raymond Detrez; Barbara Segaert (১ জানুয়ারি ২০০৮)। Europe and the historical legacies in the Balkans। Peter Lang। পৃষ্ঠা 167। আইএসবিএন 978-90-5201-374-9। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১৩ 
  113. Naim Kapucu; Hamit Palabiyik (২০০৮)। Turkish Public Administration: From Tradition to the Modern Age। USAK Books। পৃষ্ঠা 164। আইএসবিএন 978-605-4030-01-9। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১৩ 
  114. Maḥmūd Yazbak (১৯৯৮)। Haifa in the Late Ottoman Period 1864–1914: A Muslim Town in Transition। BRILL। পৃষ্ঠা 28। আইএসবিএন 978-90-04-11051-9। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১৩ 
  115. Martha Mundy; Richard Saumarez Smith (১৫ মার্চ ২০০৭)। Governing Property, Making the Modern State: Law, Administration and Production in Ottoman Syria। I.B.Tauris। পৃষ্ঠা 50। আইএসবিএন 978-1-84511-291-2। সংগ্রহের তারিখ ১ জুন ২০১৩ 
  116. Halil İnalcık, Studies in the economic history of the Middle East : from the rise of Islam to the present day / edited by M. A. Cook. London University Press, Oxford U. P. 1970, p. 209 আইএসবিএন ০-১৯-৭১৩৫৬১-৭
  117. Halil İnalcık, Studies in the economic history of the Middle East : from the rise of Islam to the present day / edited by M. A. Cook. London University Press, Oxford U. P. 1970, p. 217 আইএসবিএন ০-১৯-৭১৩৫৬১-৭
  118. İnalcık, Halil; Quataert, Donald (১৯৭১)। An Economic and Social History of the Ottoman Empire, 1300–1914। পৃষ্ঠা 120। 
  119. Kabadayı, M. Erdem (২৮ অক্টোবর ২০১১)। "Inventory for the Ottoman Empire / Turkish Republic" (পিডিএফ)। Istanbul Bilgi University। ২৮ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  120. Leila Erder and Suraiya Faroqhi (অক্টোবর ১৯৭৯)। "Population Rise and Fall in Anatolia 1550–1620"। Middle Eastern Studies15 (3): 322–345। ডিওআই:10.1080/00263207908700415 
  121. Shaw, S J (১৯৭৮)। The Ottoman Census System and Population, 1831–1914International Journal of Middle East Studies। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 325। The Ottomans developed an efficient system for counting the empire's population in 1826, a quarter of a century after such methods were introduced in Britain, France and America 
  122. Quataert 2000, পৃ. 110–111।
  123. Quataert 2000, পৃ. 112।
  124. Quataert 2000, পৃ. 113।
  125. Quataert 2000, পৃ. 114।
  126. Pamuk, S (আগস্ট ১৯৯১)। "The Ottoman Empire and the World Economy: The Nineteenth Century"। International Journal of Middle East Studies। Cambridge University Press। 23 (3)। 
  127. Quataert 2000, পৃ. 115।
  128. Quataert 2000, পৃ. 116।
  129. McCarthy, Justin (১৯৯৫)। Death and exile: the ethnic cleansing of Ottoman Muslims, 1821–1922। Darwin Press। পৃষ্ঠা [পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]আইএসবিএন 978-0-87850-094-9 
  130. Bertold Spuler (২০০৩)। Persian Historiography And Geography। Pustaka Nasional Pte Ltd। পৃষ্ঠা 69। আইএসবিএন 978-9971-77-488-2। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  131. "The Ottoman Constitution, promulgated the 7th Zilbridge, 1293 (11/23 December, 1876)"। The American Journal of International Law2 (4): 376। ১৯০৮। জেস্টোর 2212668 
  132. Içduygu, Ahmet; Toktas, Şule; Ali Soner, B. (১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮)। "The politics of population in a nation-building process: emigration of non-Muslims from Turkey"। Ethnic and Racial Studies31 (2): 358–389। ডিওআই:10.1080/01419870701491937 
  133. "Tile"। Victoria & Albert Museum। ২৫ আগস্ট ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১০ 
  134. "Why there is more to Syria conflict than sectarianism"। BBC News। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০১৩ 
  135. Kohn, George C. (২০০৭)। Dictionary of Wars। Infobase Publishing। পৃষ্ঠা 385। আইএসবিএন 0-8160-6577-2 
  136. Akçam, Taner (২০০৬)। A shameful act: the Armenian genocide and the question of Turkish responsibility। New York: Metropolitan Books। পৃষ্ঠা 24আইএসবিএন 0-8050-7932-7 
  137. "Ottoman Empire | Facts, History, & Map"Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২১ 
  138. Shaw and Shaw। History of the Ottoman Empire। পৃষ্ঠা 112–129। 
  139. Krummerich, Sean (10 June 2009)। "The Divinely-Protected, Well-Flourishing Domain: The Establishment of the Ottoman System in the Balkan Peninsula"The Student Historical Journal। Loyola University New Orleans। 30। ১০ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 11 February 2013  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |year= / |date= mismatch (সাহায্য)
  140. "Turkish Toleration"। The American Forum for Global Education। ২০ মার্চ ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  141. Sachedina, Abdulaziz Abdulhussein (২০০১)। The Islamic Roots of Democratic PluralismOxford University Pressআইএসবিএন 0-19-513991-7 
  142. Halil Inalcik। "Servile Labor in the Ottoman Empire"। Michigan State University। ৪ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১০  |অধ্যায়= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  143. "Islam and slavery: Sexual slavery"। BBC। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১০ 
  144. Université de Strasbourg. Institut de turcologie, Université de Strasbourg. Institut d'études turques, Association pour le développement des études turques. (১৯৯৮)। Turcica। Éditions Klincksieck। পৃষ্ঠা 198। 
  145. Moran, Berna। Türk Romanına Eleştirel Bir Bakış Vol. 1। পৃষ্ঠা 19। আইএসবিএন 975-470-054-0 
  146. Eli Shah। "The Ottoman Artistic Legacy"। Israel Ministry of Foreign Affairs। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১০ 
  147. "মদিনায় উসমানীয় সম্রাজ্যের রেলস্টেশনে"। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১৮ 
  148. Faroqhi, Suraiya (২০০৫)। Subjects of the Sultan: culture and daily life in the Ottoman Empire (New সংস্করণ)। London: I.B. Tauris। পৃষ্ঠা 152আইএসবিএন 1-85043-760-2 
  149. "Karagöz and Hacivat, a Turkish shadow play"। All About Turkey। ২০ নভেম্বর ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০১২ 
  150. Emin Şenyer। "Karagoz, Traditional Turkish Shadow Theatre"। Karagoz.net। ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  151. Bert Fragner, "From the Caucasus to the Roof of the World: a culinary adventure", in Sami Zubaida and Richard Tapper, A Taste of Thyme: Culinary Cultures of the Middle East, London, Prague and New York, p. 52
  152. Ragep, F. J. (২০০৫)। "Ali Qushji and Regiomontanus: eccentric transformations and Copernican Revolutions"। Journal for the History of Astronomy। Science History Publications Ltd.। 36 (125): 359–371। বিবকোড:2005JHA....36..359R 
  153. Sevim Tekeli (১৯৯৭)। "Taqi al-Din"। Encyclopaedia of the history of science, technology and medicine in non-western culturesEncyclopaedia of the History of Science। Kluwer। আইএসবিএন 0-7923-4066-3বিবকোড:2008ehst.book.....S 
  154. Ben-Zaken, Avner (২০০৪)। "The Heavens of the Sky and the Heavens of the Heart: the Ottoman Cultural Context for the Introduction of Post-Copernican Astronomy"The British Journal for the History of ScienceCambridge University Press37: 1–28। ডিওআই:10.1017/S0007087403005302 
  155. Bademci, G. (২০০৬)। "First illustrations of female Neurosurgeons in the fifteenth century by Serefeddin Sabuncuoglu"। Neurocirugía17 (2): 162–5। ডিওআই:10.4321/S1130-14732006000200012 
  156. Horton, Paul (জুলাই–আগস্ট ১৯৭৭)। "Topkapi's Turkish Timepieces"Saudi Aramco World: 10–13। ২২ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০০৮ 
  157. Batou, Jean (১৯৯১)। Between Development and Underdevelopment: The Precocious Attempts at Industrialization of the Periphery, 1800-1870 (ইংরেজি ভাষায়)। Librairie Droz। পৃষ্ঠা ১৯৩। আইএসবিএন 978-2-600-04293-2 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা