জেনিসারি বাহিনী
জেনিসারি (উসমানীয় তুর্কি: يڭيچرى yeñiçeri) ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্যের অভিজাত পদাতিক বাহিনী। জেনিসারি বাহিনী উসমানীয় সুলতানের দেহরক্ষী এবং ইউরোপের প্রথম আধুনিক বাহিনী।[৪][৫] সম্ভবত এই বাহিনী প্রথম মুরাদের শাসনামলে গঠিত হয়েছিল।[৬] শুরুর দিকে দাসদের সমন্বয়ে এই অভিজাত বাহিনী গড়ে তোলা হতো। এই সকল দাসদের খুব অল্প বয়সে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হতো। এছাড়াও এই খ্রিস্টান শিশুদের তাদের মা-বাবা ভবিষ্যতে একটা ভালো জীবনযাপন ও খ্যাতি সম্মানের জন্য তাদেরকে এই বাহিনীর জন্য দিয়ে দিত। পরে ইচ্ছা অনুযায়ী মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হতো।[৭] কঠোর প্রশিক্ষণ এবং নিয়মানুবর্তিতার জন্য এই বাহিনীর সুখ্যাতি ছিল। এই বাহিনীর সদস্যরা ক্রীতদাস হলেও তাদেরকে উচ্চ হারে বেতন প্রদান করা হতো। তাদের জন্য বিবাহ করা, কোনো পেশা বা ব্যবসায় সম্পৃক্ত হওয়া ছিল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই বাহিনী উসমানীয় সুলতানের প্রতি অত্যন্ত অনুগত ছিল।[৮] ১৭শ শতাব্দীতে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সর্বোচ্চ বিস্তারের কারণে এই বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়ার কঠোর নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হয়। বেসামরিক নাগরিকরাও তাদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতির অভিপ্রায় এই বাহিনীতে স্থান করে নিয়েছিল। ফলে ধীরে ধীরে এই বাহিনী তার সামরিক বৈশিষ্ট্য হারাতে থাকে এবং এক পর্যায়ে বেসামরিকীকরণ এর মুখোমুখি হয়।[৯] ১৮২৬ সালে সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ এই বাহিনীর অবলুপ্ত করেন। তখন ৬০০০ সেনার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।[১০]
জেনিসারি | |
---|---|
সক্রিয় | ১৩৬৩–১৮২৬ (আলজিয়ার্সের জন্য ১৮৩০) |
আনুগত্য | উসমানীয় সাম্রাজ্য |
ধরন | পদাতিক বাহিনী |
ভূমিকা | স্থায়ী পেশাদার সামরিক বাহিনী |
আকার | ১,০০০ (১৪০০)[১] ৭,৮৪১ (১৪৮৪)[২] ১৩,৫৯৯ (১৫৭৪)[২] ৩৭,৬২৭ (১৬০৯)[২] ১৩৫,০০০ (১৮২৬)[৩] |
অংশীদার | উসমানীয় সেনাবাহিনী |
সদরদপ্তর | এদির্নে ইস্তাম্বুল |
রং | নীল, লাল এবং সবুজ |
সরঞ্জামাদি | বিভিন্ন |
যুদ্ধসমূহ | কসোভোর যুদ্ধ, নিকোপোলিসের যুদ্ধ, আঙ্কারার লড়াই, ভার্নার যুদ্ধ, কনস্টান্টিনোপল বিজয়, চালদিরানের যুদ্ধ, মোহাকের যুদ্ধ, ভিয়েনা অবরোধ, মাল্টার মহাঅবরোধ এবং অনান্য |
কমান্ডার | |
আগা | জেনিসারিদের আগা |
উৎপত্তি
সম্পাদনাউসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান দ্বিতীয় মুরাদ এর শাসনামলে (১৩৬২-১৩৮৯) জেনিসারি বাহিনী গঠন করা হয়। যুদ্ধে নিয়োজিত সকল ক্রীতদাসের উপর এক-পঞ্চমাংশ সুলতান এর অংশ হিসেবে গ্রহণ করে এই বাহিনীর জন্য প্রথম সৈন্য সংগ্রহ করা হয়। তখন জেনিসারিরা ছিল সুলতানের ব্যক্তিগত সেনাবাহিনী। তারা শুধুমাত্র সুলতানের প্রতি অনুগত ছিল।[৬] ১৩৮০ থেকে ১৬৪৮ সাল পর্যন্ত 'blood tax' বা 'রক্তের কর' ব্যবস্থার মাধ্যমে জেনিসারি বাহিনীতে লোক নিয়োগ দেওয়া হতো।[১১] এই ব্যবস্থায় বিশেষ করে খ্রিস্টান পরিবার থেকে অল্প বয়সী ছেলেদের জোর পূর্বক ধরে নিয়ে এসে এই বাহিনীর সদস্য করা হতো।[১২] মূলত বলকান এবং আনাতোলিয়া এলাকার খ্রিস্টান পরিবার থেকেই শিশু পুত্রদের ধরে নিয়ে আসা হতো। ইহুদি কিংবা তুর্কি পরিবারের সন্তানদের এই বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করা হতো না। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা এর মতে প্রথম দিকে সমস্ত খ্রিস্টানদের এই বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও পরে শুধুমাত্র আলবেনীয়, বসনীয় এবং বুলগেরীয় বালকদের অগ্রাধিকার দেয়া হতো।[১৩] জেনিসারিরা সাধারণ ক্রীতদাসও ছিল না আবার মুক্ত মানুষও ছিল না।[১৪] জেনিসারিরা সর্বদা কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে থাকত। তাদের অত্যন্ত উচ্চ ভাতা প্রদান করা হতো এবং অবসরের পর তাদের পেনশন দেয়া হতো। সমাজে তারা একটি অভিজাত শ্রেণী হিসেবে গড়ে উঠেছিল[১৫] এভাবে তারা উসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্যতম মূল চালিকাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তারা এতটাই ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিল যে, তাদের প্রবল আপত্তির কারণে সেনাবাহিনীতে কোনো রকম সংস্কার করা সম্ভব হয়নি।[১১]
এসকল বালকদের বয়স ৬ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে ছিল। খ্রিস্টান পরিবার থেকে তাদের ধরে নিয়ে এসে তুর্কি পরিবারে রাখা হতো যাতে করে তারা তুর্কি ভাষা এবং ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি শিখতে পারে। এসকল বালকদের ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হতো এবং জোরপূর্বক খতনা করানো হতো। এছাড়াও ২৪ ঘণ্টা খোজাদের তত্ত্বাবধানে রাখা হতো। এ সকল ছেলেদের অত্যন্ত কঠোর নিয়মানুসারে চলতে হতো। তারা কখনো বিয়ে করতে পারতো না ও দাঁড়ি রাখতে পারত না। এমনকি যুদ্ধবিদ্যা ছাড়া অন্য কোনো কিছু শিখতে পারত না। এসব কারণে তারা ছিল অত্যন্ত সুশৃংখল। তারা উসমানীয় সেনাবাহিনীর প্রথম শ্রেণীর সদস্য হিসেবে গণ্য হতো। এ ব্যবস্থা অনেকটা পারস্য দেশীয় সাফাবিদ এবং আফসারিদ এবং কাজার রাজবংশের গিলমান বা ক্রীতদাস সৈনিক সংগ্রহের অনুরূপ ছিল। সেই ব্যবস্থাতেও জর্জিয়া ও আর্মেনীয় খ্রিস্টান পরিবার থেকে সদস্য সংগ্রহ করে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করা হতো। প্রাথমিকভাবে এই বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল বিভিন্ন উপজাতি নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ভারসাম্য বজায় জন্য।[১৬][১৭] ১৬শ শতাব্দীর শেষভাগের আগে সুলতান জেনিসারি সৈন্যদের সন্তানদের এই বাহিনীতে ভর্তি হওয়াকে অনুমোদন দেয়। এর আগে তিনশত বছর ধরে এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। সে সময়ের অঙ্কিত চিত্র সমূহে দেখা যায়, তাদের তখন দাড়ি রাখার অনুমতিও ছিল। কিছু ঐতিহাসিকদের মতে, এই বাহিনী ইস্তাম্বুলের রাজনীতিতেও হস্তক্ষেপ করত।[১১]
এই বাহিনীর একজন সামান্য সৈনিক এক সময় কর্নেল পদে পদোন্নতি পেতে পারত। এমনকি অনেক সময় যে স্থান থেকে তাকে জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বহুদিন পরে সে সেখানকার গভর্নর বা আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত হতেও দেখা গেছে।
এরকম কিছু উদাহরণ হলো জর্জ ক্যাস্টরেট ইস্কান্দার বেগ নামের এক আলবেনীয় সেনাপতি। যিনি ২৫ বছরে ধরে উসমানীয় সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে চলা আলবেনীয় বিদ্রোহ কে দমন করেছিলেন। আর একটি উদাহরণ হলো, মুহাম্মাদ পাশা নামে একজন উজিরে আজম তিনজন সুলতানের আমলে প্রধান উজির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রায় ১৪ বছর তিনিই ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রকৃত শাসক।[১৮]
বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনাঅনেক ভাবে জেনিসারি সৈন্যরা অন্যান্যদের চাইতে আলাদা ছিল। তাদের জন্য পৃথক পোশাক ছিল, তাদেরকে যথেষ্ট ভালো বেতন ও বোনাস দেয়া হতো।[১৯] এই বাহিনী বাদ্যের তালে তালে কুচকাওয়াজ করতো। তারা প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] প্রথা অনুসারে, সম্রাট জেনিসারি সৈনিকদের বেতন অনুমোদন করার পরে নিজে এই বাহিনীর পোশাকে সৈন্যদের ব্যারাকে হাজির হতেন এবং প্রথম ডিভিশনের অন্যান্য সদস্যদের সাথে একই সারিতে দাঁড়িয়ে তার নিজের বেতন গ্রহণ করতেন।[২০] জেনিসরিরা শান্তিকালীন সময়ে পুলিশ, রাজকীয় প্রাসাদে রক্ষী এবং দমকল কর্মী হিসেবে কাজ করত।[২১] উপকরণ সরবরাহ অন্যান্য বাহিনীর চেয়ে জেনেসারি বাহিনীকে উন্নত মানের উপকরণ সরবরাহ করা হতো এবং তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ অভিযান গুলোতে প্রেরণ করা হতো। এই বাহিনীর নিজস্ব সরবরাহ ও প্রকৌশলী শাখা ছিল। মুসলিম এবং ইহুদি চিকিৎসক দ্বারা গঠিত নিজস্ব চিকিৎসক দল ছিল। যুদ্ধক্ষেত্রে অস্থায়ী হাসপাতালে ব্যবস্থা ছিল যেখানে আহত এবং অসুস্থ সৈন্যদের চিকিৎসা দেয়া হতো।[২০]
এসকল বৈশিষ্ট্যের কারণে এবং যুদ্ধে তাদের অসামান্য সাফল্যের কারণে বিদেশিদের কাছে তারা পর্যবেক্ষণের বিষয় ছিল। আঠারোো শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে তারা বিবাহ করার অনুমতি পেল, তাদের সন্তানরা জেনিসারি বাহিনী তে অন্তর্ভুক্ত হবার অধিকার পেল এবং অন্যান্য বেসামরিক কাজে সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়ল। এরপর খুব অল্পসংখ্যক সৈনিক ব্যারাকে অবস্থান করত।[২১]
নিয়োগ, প্রশিক্ষণ এবং মর্যাদা
সম্পাদনাপ্রথম জেনিসারি সেনাবাহিনীর ইউনিটটি তৈরি হয়েছিল যুদ্ধের বিজয়ের ফলে প্রাপ্ত দাসদের নিয়ে। সম্ভবত তখনকার প্রচলিত রীতি অনুসারে, সুলতান যুদ্ধে প্রাপ্ত সম্পদের তার নিজের অংশ এক পঞ্চমাংশ ব্যবহার করে এই বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। প্রথমদিকে গ্রীক এবং আলবেনীয় বালকদের মধ্য থেকে এই বাহিনীর জন্য ক্রীতদাস সংগ্রহ করা হতো। উসমানীয় সাম্রাজ্যের সীমানা সম্প্রসারণ এর সাথে সাথে ক্রমেই বসনিয়া, বুলগেরিয়া, আর্মেনিয়া, হাঙ্গেরীয়া এবং পরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোমানিয়া, জর্জিয়া, ইউক্রেন এবং দক্ষিণ রাশিয়া থেকেও ক্রীতদাস সংগ্রহ করা হয়েছিল।
১৫৭০ সালের পর ব্যাপক বৈদেশিক আক্রমণের হুমকির পরিপেক্ষিতে উসমানীয় সরকার জেনিসারি বাহিনীর ব্যাপক সম্প্রসারণে সচেষ্ট হয়। সৈনিকদের প্রশিক্ষণের সময় কমিয়ে আনা হয়। নতুন সৈনিকদের গর বয়স যেখানে ১৪৯০ সালে ছিল সাড়ে ১৩ বছর সেখানে ১৬০৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬.৬ বছর। এর কারণ শুধুমাত্র 0 সংখ্যা বৃদ্ধি নয়। একজন তীরন্দাজের প্রশিক্ষণ শেষ হতে যে সময় লাগতো তার চাইতে একজন বন্দুকধারীর প্রশিক্ষণে সময় স্বভাবতই অনেক কম লাগত। মুক্ত মুসলিমরাও এসময় জেনিসারি বাহিনী তে ভর্তি হতে পারতো। এমন কি সে সময় কর্তব্যরত সৈন্যদের ছেলেরাও এই বাহিনীর সদস্য হতে কোনো বাধা ছিলনা। ১৭ শতকের মাঝামাঝি সময়ে জোর করে জেনিসারি বাহিনীতে সেনা ভর্তি বন্ধ হয়ে যায়। নতুন নিয়োগ প্রাপ্ত একজন জেনিসারি সৈন্যের প্রতিদিনের বেতন ছিল তিন আঁকশি। সুলতান প্রথম মেহমেদের আমলে, একজন অভিজ্ঞ গোলন্দাজ বাহিনীর সদস্যের প্রতিদিনের বেতন ছিল ১০ আঁকশি।[২৩]
প্রশিক্ষণ
সম্পাদনাখ্রিষ্টান অথবা অন্যান্য ধর্মালম্বীদের যখন জোরপূর্বক এই বাহিনীতে ভর্তি করা হতো তখন প্রথমেই তাকে কোন একটি তুর্কি পরিবারের সাথে থাকতে দেওয়া হত। যেন সে তুর্কি ভাষা এবং ইসলাম ধর্মের রীতিনীতি সম্পর্কে জানতে পারে। এরপর তাকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হতো। এরপর তাকে রাজধানীতে একটি সামরিক স্কুলে ভর্তি করা হতো। নতুন ক্যাডেটের পারদর্শিতা বিচার করে তাকে পদাতিক, প্রকৌশলী, গোলন্দাজ অথবা তীরন্দাজ বাহিনীতে ভর্তি করে নেয়া হতো। তখন ক্যাডেটদের অত্যন্ত কঠোর নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে থাকতে হতো। এমন কি তাদের বিয়ে করার অনুমতিও ছিল না। অন্যান্য মুসলিমদের মত তাদেরকে দাড়ি রাখতে দেয়া হতো না। জেনিসারি সেনারা সর্বতোভাবে সুলতানের এবং তার সাম্রাজ্যের প্রতিরক্ষার কাজে নিয়োজিত ছিল। সেনানিবাস কে তারা তাদের আপন গৃহ হিসেবে জানতো এবং সম্রাটকে তাদের পিতা হিসেবে মনে করত।[১১]
জেনিসারিরা দরবেশ হাজী বেকতাস ভেলি এর উপদেশ মেনে চলত। তার অনুসারীরা প্রথম সেনাদের আশীর্বাদ করতো। বেকতাসিরা অনেকটা বাহিনীর ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করত। নিষ্ঠার প্রতীক হিসেবে জেনিসারি সৈন্যরা এক ধরনের বিশেষ শিরস্ত্রাণ পরিধান করত। যার নাম ছিল "börk"। এই শিরস্ত্রাণের সম্মুখভাগে একটি চামচ রাখার ব্যবস্থা ছিল। যাকে বলা হত "kaşıklık"। যার অর্থ, ভ্রাতৃত্বের চামচ বা "brotherhood of the spoon"। যার মাধ্যমে যে সকল জেনিসারিরা একসাথে খেয়েছে, ঘুমিয়েছে, যুদ্ধ করেছে এবং মারা গেছে তাদের মধ্যে এক ধরনের ভাতৃত্বের বন্ধন প্রকাশ পেত।
জেনিসারি বাহিনীর দ্রুত কলেবর বৃদ্ধির পরও এই বাহিনীতে কঠোর প্রশিক্ষণ এবং নিয়মানুবর্তীতার চর্চা ছিল। তারা যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন নতুন কৌশল এর পরীক্ষা করত। ১৬০৫ সালে তারা ইউরোপের সেনাবাহিনী গুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম যুদ্ধক্ষেত্রে ঘূর্ণায়মান গুলিবর্ষণ প্রচলন করে।[২৫]
সংগঠন
সম্পাদনাজেনিসারি বাহিনী কতগুলো ওরটায় (orta) বিভক্ত ছিল। এক একটি ওরটায় এক ব্যাটালিয়ান সমপরিমাণ সৈন্য থাকতো। প্রথম সুলেমান এর ১৬৫ ওরটা সৈন্য ছিল পরে তা ১৯৬ ওরটায় বৃদ্ধি করা হয়। সুলতান ছিলেন জেনিসারি বাহিনীর সর্বাধিনায়ক। তবে একজন সেনাপতি, 'আগা' তারা দারা এই বাহিনী পরিচালিত হতো। জেনিসারি বাহিনীর তিনটি উপ বাহিনীতে বিভক্ত ছিল।
- cemaat বা সিমাট বা জেমত ১০১ টি ব্যাটালিয়ন নিয়ে গঠিত।
- beylik বা বেইলিক সম্রাট সুলেমান এর দেহরক্ষী বাহিনী। ৬১ ব্যাটালিয়ন নিয়ে গঠিত।
- sekban বা সেখান ৩৪ টি ব্যাটালিয়ন নিয়ে গঠিত।
এছাড়াও ৩৪ টি ব্যাটালিয়ন নিয়ে গঠিত আরো একটি শিক্ষানবিশি সৈনিকদের বাহিনী ছিল। তারা মূলত আলজিয়ার্সে অবস্থান করত।
সাধারণত জেনিসারিরা তার নিজ ব্যাটেলিয়ানের ভিতরে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতি পেত। শুধুমাত্র অন্য ব্যাটেলিয়ানের নেতৃত্ব দেবার ক্ষেত্রেই তারা ব্যাটেলিয়ান ত্যাগ করতে পারতো। শুধুমাত্র জেনিসারি দের নিজস্ব অধিনায়করাই এই বাহিনীর সৈন্যদের শাস্তি প্রদান করতে পারত।[২৬]
বাহিনীর শক্তি
সম্পাদনাযদিও জেনিসারি বাহিনী সম্রাটের দেহরক্ষী এবং উসমানীয় রাজকীয় বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হতো। তথাপি তারা উসমানীয় সেনাবাহিনীর মূল শক্তি ছিল না। প্রথম দিকে জেনিসারি বাহিনী সংখ্যায় মূল সেনাবাহিনীর দশ ভাগের এক ভাগ ছিল। তখন অশ্বারোহী বাহিনী ছিল উসমানীয় সেনাবাহিনীর মূল সমর শক্তি। ডেভিড নিকোলের মতে ১৪ শতাব্দীতে জেনিসারি বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিল মাত্র ১০০ এবং ১৪৭৫ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬০০০। একই সূত্র থেকে পাওয়া যায় যে তখন সেনাবাহিনীর মূল চালিকাশক্তি এই বাহিনীর সৈন্যসংখ্যা ছিল ৪০ হাজার।[২৭]
১৫৩০ সালের শুরুতে উসমানীয়দের যুদ্ধ বিজয়ের সাথে সাথে জেনিসারি বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সময়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কৌশল দুর্গ অবরোধ এ জেনিসারি সৈন্যদের ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হতো। ১৫৯৩ সালে সাফাবিদ সাম্রাজ্যের সাথে পরপর কয়েকটি যুদ্ধে জেনিসারি বাহিনী কে ব্যবহার করা হয়। ১৬০৯ সালের মধ্যে এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৪০ হাজারে নেমে আসে। এই শতাব্দীর শেষভাগে ক্রিতন যুদ্ধের সময় (১৬৪৫-৬৯) এর সদস্য সংখ্যা পুনরায় বৃদ্ধি পায়। ১৬৮৩-৯৯ সালে পার্ট অফ হলি লীগের সময় এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পায়।[২৮]
যুদ্ধ সরঞ্জাম
সম্পাদনাযখন গঠন করা হয় তখন জেনিসারি বাহিনীতে তীরন্দাজরা অত্যন্ত দক্ষ ছিল। ১৪৪০ সালে আগ্নেয়াস্ত্র আবিষ্কারের পর তারা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে পারদর্শী হয়।
১৫২৬ সালে হাঙ্গেরির যুদ্ধে ও ভিয়েনা যুদ্ধে জেনিসারি বাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা ব্যাপক সাফল্য প্রদর্শন করে। একটি বিশেষ ধরনের তরবারী ছিল জেনিসারিদের চিহ্নিত অস্ত্র। ১৬ শতকে জেনিসারি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে মাস্কাট এর ব্যবহার শুরু করে। ৮০ মিলিমিটার মাপের বিশাল আকার ট্রেঞ্চ গান তারা ব্যবহার করত। জেনিসারিরা প্রচুর পরিমাণে হ্যান্ড গ্রেনেড এবং হ্যান্ড কামান ব্যবহার করত। ক্রিতানের যুদ্ধের পরে জেনিসারি বাহিনী তে পিস্তল জনপ্রিয় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো।[২৯]
যুদ্ধ
সম্পাদনাউসমানীয়রা তাদের সব কয়টি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধে জেনেসারি বাহিনীকে ব্যবহার করেছিল। বিশেষ করে ১৪৫৩ সালে কনস্টান্টিনোপল বিজয়, মিশরের মামলুকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে, হাঙ্গেরি এবং অস্ট্রিয়ার যুদ্ধে তাদের ব্যবহার করা হয়। এসব যুদ্ধে সুলতান নিজে এই বাহিনীর নেতৃত্ব দিতেন। জেনিসারি বাহিনী ছিল উসমানীয় সেনাবাহিনীর একমাত্র পদাতিক বাহিনী। তাদের মূল দায়িত্ব ছিল ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এর মাধ্যমে সুলতানকে রক্ষা করা। বিশেষ করে যখন অশ্বারোহী বাহিনী কৌশলগত ভাবে যুদ্ধক্ষেত্রে ও থেকে পশ্চাৎপসরণ করত তখন যুদ্ধক্ষেত্রের মধ্যভাগের প্রতিরক্ষাকে নিশ্চিত করা। জেনিসারি বাহিনীতে বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ, প্রকৌশলী এবং শার্প শুটারদের নিয়ে গঠিত ছোট ছোট বিশেষজ্ঞ সৈন্যদল ছিল। প্রকৌশলীরা দুর্গের প্রাচীরের নিচ দিয়ে সুরঙ্গ খনন করে দুর্গ দখল করতে অন্যদের সাহায্য করতো।
বিদ্রোহ ও অবলুপ্তি
সম্পাদনাজেনিসারিরা তাদের গুরুত্ব বুঝতে পেরে আরো অধিক সুযোগ সুবিধা দাবি করতে থাকে। ১৭ শতাব্দীতে জেনিসারিরা এতই প্রভাবশালী হয়ে পড়ে যে তারা রাজকীয় সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। তাদের মধ্যে বিদ্রোহ দানা বাঁধতে থাকে, সরকারের নীতিকে প্রভাবিত করতে শুরু করে এবং সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে বাধা দেয়। প্রাসাদের মধ্যে দ্রোহ তৈরি করে তারা সম্রাটকে তাদের ইচ্ছায় সিংহাসন থেকে অপসারণ করতে পারতো। তারা ব্যবসা করতে শুরু করে এবং নিজেদের জমিদারি গড়ে তোলে। এই বাহিনীতে প্রাক্তন জেনিসারি সৈনিকদের পুত্রদের অন্তর্ভুক্তি করন শুরু হয়, যারা সামরিক স্কুলের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করত না। ফলে ক্রমেই এই বাহিনী তার সামরিক বৈশিষ্ট্য হারায়। সে সময় জেনিসারিরা জোরপূর্বক, চাপ প্রয়োগ করে সুলতানের কাছ থেকে অর্থ আদায় করত। পারিবারিক ভাবে জীবন যাপনের মাধ্যমে তারা সামরিক বৈশিষ্ট্য বিলুপ্ত হবার ফলে যুদ্ধে তাদের উপযোগিতা ক্রমেই কমতে থাকে। ১৬৮৩ সাল থেকে ভিয়েনা যুদ্ধের পর উসমানীয় সাম্রাজ্যের উত্তর সীমান্ত ক্রমেই দক্ষিণ দিকে সংকচিত হতে থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
১৪৪৯ সালে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে তারা প্রথম বিদ্রোহ সংঘটিত করে। সেই দাবি তারা আদায় করেছিল। ১৪৫১ সাল থেকে প্রত্যেক সুলতান সিংহাসনে আরোহণের পর জেনিসারি বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে উপঢৌকন প্রদান করতে হয়। ১৫৬৬ সালে সুলতান দ্বিতীয় সেলিম জেনিসারিদের বিবাহের অনুমতি প্রদান করেন। ১৬৬২ সাল থেকে জেনেসারিরা সাম্রাজ্যের প্রতি এক বিরাট হুমকি হিসেবে দেখা দিতে শুরু করে। ১৬২২ সালে পোল্যান্ড যুদ্ধের পর তরুণ সম্রাট দ্বিতীয় উসমান জেনিসারিদের সুযোগ সুবিধা হ্রাস করতে সচেষ্ট হন।[৩২][অনির্ভরযোগ্য উৎস?] একই বছর বসন্তকালে একটি গুজব শোনা যায় যে সুলতান জেনিসারিদের বিরুদ্ধে অভিযান প্রেরণ করবেন। এই গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে তারা বিদ্রোহ করে। সুলতানকে কুখ্যাত সপ্ত মিনারে বন্দী অবস্থায় হত্যা করা হয়।[৩২][অনির্ভরযোগ্য উৎস?]
১৮০৪ সালে দাহিআজ নামে সার্বিয়ার একজন সামরিক শাসক সুলতানের অবাধ্য হয়ে ক্ষমতা দখল করে। তারা ভয় পাচ্ছিল যে সুলতান সার্বীয়দের ব্যবহার করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এ সময় জেনিসারিরা সার্বিয়ার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কে হত্যা করে তাদের কর্তিত মস্তক শহরের কেন্দ্রে দর্শনার্থীদের জন্য রেখেছিল যাতে করে জেনেসারিদের শাসনের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে ভয় পায়। এই ঘটনা সার্বিয়া বিদ্রোহের জন্ম দেয় এবং সার্বিয়ায় ৩০০ বছরের উসমানীয় শাসনের অবসান ঘটায়।[৩৩]
১৮০৭ সালে জেনিসারি বিদ্রোহ সুলতান তৃতীয় সেলিম কে ক্ষমতাচ্যুত করে। সেলিম পশ্চিম ইউরোপে একটি আধুনিক সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সেলিমের অনুসারীরা চতুর্থ মোস্তফা কর্তৃক তাকে হত্যা করার পূর্বে তাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। যদিও পরে তারা দ্বিতীয় মাহমুদকে ১৮০৮ সালে ক্ষমতায় বহাল করে।[৩৩] জেনেসারিরা দ্বিতীয় মাহমুদকে ক্ষমতাচ্যুত করার হুমকি দিলে তিনি বন্দী মুস্তাফা কে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন এবং পরে জেনিসারিদের সাথে একটি সমঝোতায় আসেন।[৩৪] জেনিসারিদের হুমকি সত্ত্বেও তিনি ধীরে ধীরে গোপনে তার অবস্থান সুদৃঢ় করতে থাকেন। তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার, সেনাবাহিনী পুনর্গঠনে বাধা প্রদান এবং ১ লক্ষ ৩৫ হাজার সদস্যের বিশাল খরচ ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠতে থাকে।[৩৫] ১৮২৬ সালে সুলতান জেনিসারি বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য যথেষ্ট শক্তি অর্জন করেন। তিনি একটি অধিকতর আধুনিক সেনাবাহিনী গঠন করার ঘোষণা দেন।[১০] যেমনটি ধারণা করা হয়েছিল জেনিসারিরা বিদ্রোহ করে এবং সুলতানের প্রাসাদ এর দিকে অগ্রসর হতে থাকে।[১০] অবশ্যম্ভাবী সংঘর্ষে সম্রাটের অনুগত গোলন্দাজ বাহিনী জেনিসারি বাহিনীর ব্যারাক এর উপর গোলাবর্ষণ করে ধ্বংস করে দেয়। প্রায় ৪ হাজার জেনিসারি সৈন্য হতাহত হয়।[১০] এই অভিযানের পর বেঁচে যাওয়া জেনেসারি সৈনিকদের হয় হত্যা করা হয় না হয় তাদের নির্বাসনে পাঠানো হয়। তাদের সমস্ত সম্পত্তি সম্রাট বাজেয়াপ্ত করেন।[১০]
জেনিসারি বাহিনীর অবলুপ্তির পর ১২ হাজার নতুন সৈনিক নিয়ে একটি নতুন বাহিনী গঠন করা হয়। যে বাহিনীর সংক্ষিপ্ত নাম ছিল মন্সুর বাহিনী। ১৮৩০ সালে এই বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা ২৭ হাজারে উন্নতি হয় এবং একটি অশ্বারোহী বাহিনী এতে সংযোজন করা হয়। এরপর উসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্যান্য বাহিনীগুলোকে একত্রিত করে একটি সুশৃংখল সেনাবাহিনীতে রূপান্তর করা হয়। এই সেনাবাহিনী উসমানীয় সাম্রাজ্যের বিলুপ্তি পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল।[৩৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Nicolle 1983, পৃ. 9–10।
- ↑ ক খ গ Ágoston 2014, পৃ. 113।
- ↑ George F. Nafziger (২০০১)। Historical Dictionary of the Napoleonic Era। Lanham, Maryland: Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 153–54। আইএসবিএন 9780810866171।
- ↑ Balfour ও Kinross 1977, পৃ. 52।
- ↑ Goodwin, Jason (1998). Lords of the Horizons: A History of the Ottoman Empire. New York: H. Holt, 59,179–181. আইএসবিএন ০-৮০৫০-৪০৮১-১.
- ↑ ক খ Kafadar, Cemal (১৯৯৫)। Between Two Worlds: The Construction of the Ottoman State। University of California Press। পৃষ্ঠা 111–3। আইএসবিএন 978-0-520-20600-7।
- ↑ The New Encyclopedia of Islam, ed. Cyril Glassé, Rowman & Littlefield, 2008, p.129
- ↑ Cleveland, Bunton, William, Martin (২০১৩)। A History of the Modern Middle East। Westview Press। পৃষ্ঠা 43। আইএসবিএন 978-0-8133-4833-9।
- ↑ Ágoston, Gábor (২০১৪)। "Firearms and Military Adaptation: The Ottomans and the European Military Revolution, 1450–1800"। Journal of World History। 25: 119–20।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Balfour ও Kinross 1977, পৃ. 456-457।
- ↑ ক খ গ ঘ Hubbard, Glenn and Tim Kane. (2013) (২০১৩)। Balance: The Economics of Great Powers From Ancient Rome to Modern America। Simon & Schuster। পৃষ্ঠা 152–154। আইএসবিএন 978-1-4767-0025-0।
- ↑ Perry Anderson। Lineages of the Absolutist State (Verso, 1974), p. 366।
- ↑ Encyclopædia Britannica. Eleventh Edition, vol. 15, p 151.
- ↑ Shaw, Stanford; Ezel Kural Shaw (1976). History of the Ottoman Empire and Modern Turkey, Volume I. Cambridge: Cambridge University Press. p. 27. আইএসবিএন ০-৫২১-২১২৮০-৪.
- ↑ Zürcher, Erik (1999). Arming the State. United States of America: LB Tauris and Co Ltd. pp. 5. আইএসবিএন ১-৮৬০৬৪-৪০৪-X.
- ↑ "BARDA and BARDA-DĀRI v. Military slavery in Islamic Iran"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৪।
- ↑ McCabe, Ina Baghdiantz; Harlaftis, Gelina (২০০৫)। Diaspora Entrepreneurial Networks: Four Centuries of History। Berg। পৃষ্ঠা 36। আইএসবিএন 9781859738757। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১৫।
- ↑ Imamović, Mustafa (1996). Historija Bošnjaka. Sarajevo: BZK Preporod. আইএসবিএন ৯৯৫৮-৮১৫-০০-১
- ↑ Mark L. Stein, Guarding the Frontier: Ottoman Border Forts and Garrisons in Europe, (I.B. Tauris, 2007), 67.
- ↑ ক খ Uzunçarşılı, pp 66–67, 376–377, 405–406, 411–463, 482–483
- ↑ ক খ Goodwin. J, pp. 59, 179–181
- ↑ Nasuh, Matrakci (১৫৮৮)। "Janissary Recruitment in the Balkans"। Süleymanname, Topkapi Sarai Museum, Ms Hazine 1517। ৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Ottoman Warfare 1500–1700, Rhoads Murphey, 1999, p. 225
- ↑ The Janissaries and the Ottoman Armed forces
- ↑ Börekçi, Günhan (২০০৬)। "A Contribution to the Military Revolution Debate: The Janissaries' Use of Volley Fire During the Long Ottoman-Habsburg War of 1593–1606 and the Problem of Origins"। Acta Orientalia Academiae Scientiarum Hungaricae। 59: 407–438।
- ↑ Nicolle, pp. 17.
- ↑ Nicolle, pp. 9–10.
- ↑ Ágoston, Gábor (২০১৪)। "Firearms and Military Adaptation: The Ottomans and the European Military Revolution, 1450–1800"। Journal of World History। 25: 112–6।
- ↑ Nicolle, p. 36.
- ↑ Lokman (১৫৮৮)। "Battle of Mohács (1526)"। Hünernâme। ৪ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Osman, Nakkas (১৫৯৭)। "Expedition to Revan"। Shahin-Shah-nama, Topkapi Sarai Museum, Ms B.200, folio 102a। ৪ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ Balfour ও Kinross 1977, পৃ. 292-295।
- ↑ ক খ History of Servia and the Servian Revolution-Leopold von Ranke,tran:Louisa Hay Ker p 119–20
- ↑ Balfour ও Kinross 1977, পৃ. 431-434।
- ↑ Levy, Avigdor. "The Ottoman Ulama and the Military Reforms of Sultan Mahmud II." Asian and African Studies 7 (1971): 13–39.
- ↑ "Mansure Army." Encyclopedia of the Modern Middle East and North Africa. Encyclopedia.com, n.d. Web. http://www.encyclopedia.com/humanities/encyclopedias-almanacs-transcripts-and-maps/mansure-army