আল-মাহদি
মুহাম্মদ ইবনে মনসুর আল মাহদি (আরবি: محمد بن منصورالمهدى ) (জন্ম: ১২৬ বা ১২৭ হিজরি; মৃত্যু: ১৬৯ হিজরি) (জন্ম: ৭৪৪ বা ৭৪৫ খ্রিষ্টাব্দ; মৃত্যু: ৭৮৫ খ্রিষ্টাব্দ),[১] ছিলেন তৃতীয় আব্বাসীয় খলিফা। তিনি ১৫৮ হিজরি থেকে ১৬৯ হিজরি (৭৭৫-৭৮৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্যন্ত শাসন করেন। তিনি তার পিতা আল মনসুরের উত্তরাধিকারী হন।
মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ (আল মনসুর) আল মাহদি Muhammad ibn Abdullah (al-mansur) al-Mahdi محمد بن عبدالله (المنصور)المهدى | |||||
---|---|---|---|---|---|
আব্বাসীয় খিলাফতের ৩য় খলিফা বাগদাদের আব্বাসীয় খলিফা | |||||
রাজত্ব | ৭৭৫–৭৮৫ | ||||
পূর্বসূরি | আল মনসুর | ||||
উত্তরসূরি | আল হাদি | ||||
জন্ম | ৭৪৪ বা ৭৪৫ | ||||
মৃত্যু | ৪ আগস্ট ৭৮৫ | ||||
আল খায়জুরান | |||||
বংশধর | বানুকা আল হাদি হারুনুর রশিদ আবাসা | ||||
| |||||
রাজবংশ | আব্বাসীয় | ||||
পিতা | আল মনসুর | ||||
ধর্ম | ইসলাম |
শাসন
সম্পাদনাআল মাহদি তার পিতার মৃত্যুশয্যায় থাকার সময় খলিফা হিসেবে ঘোষিত হন। তার শান্তিপূর্ণ শাসনকালে পূর্বসূরিদের নীতিমালা প্রচলিত ছিল।
তার শাসনামলে আলিয়দের সাথে বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। প্রভাবশালী বারমাকি পরিবার এসময় আরও ক্ষমতার অধিকারী হয়। তারা খলিফার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে।
আল মাহদি দশ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত উজির ইয়াকুব ইবনে দাউদকে কারারুদ্ধ করেন। ১৬৭ হিজরি/৭৮৩ খ্রিষ্টাব্দে আল মাহদি কর্তৃক চালু করা এক তদন্তের ফলে অভিযুক্ত জিন্দিকদের মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। তিনি সঙ্গীত ও কবিতার ভক্ত ছিলেন। অনেক শিল্পী ও কবি তার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে। তিনি সঙ্গীত ও কাব্যের বিস্তারে ভূমিকা রাখেন।
৭৭৭ সালে তিনি খোরাসানের ইউসুফ ইবনে ইবরাহিমের বিদ্রোহ দমন করেন। একই বছর তিনি তার উত্তরাধিকারী হিসেবে ঈসা ইবনে মুসাকে সরিয়ে তার পুত্র মুসা আল হাদিকে তার স্থলাভিষিক্ত করেন এবং তার জন্য অভিজাতদের কাছ থেকে বায়াত গ্রহণ করেন। ৭৭৮ সালে সিরিয়ায় উমাইয়া শক্তির নেতৃত্ব দানকারী আবদুল্লাহ ইবনে মারওয়ান ইবনে মুহাম্মদের বিদ্রোহ দমন করেন।
৭৮৫ সালে তাকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়।
সাংস্কৃতিক ও প্রশাসনিক দিক
সম্পাদনাআল মাহদির শাসনামলে বহুজাতিক বাগদাদ নগরী প্রাচুর্যপূর্ণ হয়ে উঠে। আরব উপদ্বীপ। ইরাক, সিরিয়া, পারস্য এবং আফগানিস্তান ও স্পেনের মত দূরবর্তী স্থান থেকেও অভিবাসীরা আসতে থাকে। বাগদাদ মুসলিম খ্রিষ্টান, ইহুদি, হিন্দু ও জরস্ট্রিয়ানদের আবাসস্থল ছিল। এটি বিশ্বের বৃহত্তম শহর হয়ে উঠে।
আল মাহদি আব্বাসীয় প্রশাসনকে বিস্তৃত করার কাজ চালু রাখেন। সেনাবাহিনী, বিচার ও কর সংগ্রহের জন্য নতুন দিওয়ান বা বিভাগ খোলা হয়। বারমাকি পরিবার এ নতুন বিভাগগুলোতে নিয়োগ পায়। বারমাকিরা পারসিয়ান বংশোদ্ভূত ছিল। প্রথমে বৌদ্ধ হলেও আরবদের আগমনের অল্পকাল আগে তারা জরস্ট্রিয়ানিজমে দীক্ষিত হয়। হারুনুর রশিদের সময় তাদের স্বল্পকাল স্থায়ী প্রভাব তাদের বিরুদ্ধে চলে যায়।
৭৫১ সালে চীন থেকে কাগজের প্রচলন (দেখুন তালাসের যুদ্ধ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখন পর্যন্ত পশ্চিমে আরবদের মধ্যে কাগজের প্রচলন ছিল না। পারসিয়ানরা পেপিরাস ও ইউরোপীয়ানরা ভেলাম ব্যবহার করত। কাগজ নির্ভর শিল্প বাগদাদে ব্যাপক হয়ে উঠে। শহরের একটি সড়ক শুধু কাগজ ও বইয়ের বিক্রির জন্য ব্যবহৃত হত। আব্বাসীয় আমলাতন্ত্রের বিস্তৃতিতে কাগজের স্বল্পমূল্য ও স্থায়ীত্ব প্রভাব ফেলেছিল।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Al-Souyouti, Tarikh Al-Kholafa'a (The History of Caliphs)
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- al-Masudi The Meadows of Gold, The Abbasids, transl. Paul Lunde and Caroline Stone, Kegan Paul, London and New York, 1989
আল-মাহদি জন্ম: ? মৃত্যু: ৭৮৫
| ||
সুন্নি ইসলাম পদবীসমূহ | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী আল মনসুর |
ইসলামের খলিফা ৭৭৫–৭৮৫ |
উত্তরসূরী আল হাদি |