হৃদয়ের কথা
হৃদয়ের কথা এটি ২০০৬ সালের ১৮ই অক্টোবর মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী চলচ্চিত্র।[১] ছবিটি পরিচালনা করেন এস এ হক অলিক। “হৃদয়ের কথা” প্রযোজনার মধ্যে দিয়ে রিয়াজ প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।[২] হৃদয়ের কথা এই সিনেমার সহযোগী প্রযোজক কাজী রিটন। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন রিয়াজ এবং পূর্ণিমা।
হৃদয়ের কথা | |
---|---|
পরিচালক | এস এ হক অলিক |
প্রযোজক | রিয়াজ তুহিন বড়ুয়া কাজী রিটন |
রচয়িতা | এস এ শহিদ |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | আলাউদ্দিন আলী হাবিব ওয়াহিদ এস আই টুটুল |
চিত্রগ্রাহক | আলমগীর খসরু |
সম্পাদক | ফজলে হক |
পরিবেশক | পথিক প্রোডাকশন |
মুক্তি | ১৮ই অক্টোবর, ২০০৬ |
স্থিতিকাল | ১৩৮ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
নির্মাণব্যয় | ২ কোটি টাকা প্রায় |
আয় | ৪.৫ কোটি টাকা প্রায় |
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনাএকজন মানুষ শিশুকাল থেকে হাটি হাটি পা পা করে পরিনত বয়সে এসে তার হৃদয়ের কথাগুলোর প্রকাশ ঘটায়-যা বাস্তবের সাথে সঙ্গতি রেখে সুস্থ মানসিকতা ও শৈল্পিকভাবে উপস্থাপিত হয় আমাদের সমাজে। এই “হৃদয়ের কথা” পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটিতে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে আপনার, আমার এবং আমাদের সকলের হৃদয়ের কথাকে। আমাদের সমাজের বিভিন্ন চরিত্রের মানুষগুলো তাদের ভালোবাসা, চাওয়া-পাওয়ার আকূতিগুলো বাস্তব সম্মত করতে কীভাবে মরিয়া হয়ে ওঠে, কীভাবে একজন আরেকজনকে ভালোবেসে নিজের মনের মনিকোঠায় ঘর বাঁধে-তার ঝকঝকে চিত্রায়ন এই ছবির দর্শক দেখতে পাবে। আর উপলব্ধি করবে তাদের প্রিয় মানুষটিকে।
এই গল্পে, বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী “অনিক চৌধুরী” (রিয়াজ) যখন সুর সাধনায় মত্ত, তার ধ্যানে, তার জ্ঞানে, সে যখন গান গায় ও ভায়োলিনের সুরে নিজেকে মগ্ন করে রেখেছে, ঠিক সেই মুহুর্তে তার জীবনে আসে একটি সুন্দর নাম “অধরা” (পূর্ণিমা)। যেমনটি আসে প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে ব্যতিক্রম হয়ে। ক্রমান্বয়ে ঘটনা দুজনকে ভালোবাসার স্বর্গের স্বপ্ন দেখায়, তখনই প্রকাশ পায় অনিকের ভালোবাসা একটি মিথ্যের জালে জড়িয়েছে। অনিক এর সমাধান খুঁজতে খুঁজতে অনেক চড়াই উতরাই যখন আবার আবেগঘন পা এগিয়ে দেয়, তখন মিথ্যের পূনর্বৃত্তি না ঘটলেও অধরার মানসিক ভারসাম্যহীনতা ঠেলে দেয় সম্পর্ক ভাঙ্গনের প্রেক্ষাপটে। দুজনই দুজনের দিক থেকে যখন ভালোবাসার আকূতি ও না পাওয়ার বেদনায় ছটফট করছিল, তখনই অনিক সিদ্ধান্ত নেয় আর গান না গাওয়ার, আর অনিকের প্রান প্রিয় অধরা তার সকল কর্মকাণ্ডকে ঘোর পাপ ভেবে সিদ্ধান্ত- নেয় হারিয়ে যাবে এই পৃথিবী থেকে।
কিন্তু ভালোবাসা তাদের এই সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে একে অপরের কাছে নিয়ে আসে গভীর সংকটের মধ্যে দিয়েও। হাসপাতালের কোমা সেন্টারে অধরা যখন তার জন্মদিনে বিদায় নেবে এই পৃথিবী থেকে, তখন অনিক ছোট্ট একটা ভালোবাসা মিশ্রিত কেক কেটে জন্মদিন পালন করে, অধরার শেষ আবদার অনিকের ভায়োলিন শোনার, তাই অনিক হাতে তুলে নেয় ভায়োলিন। ভায়োলিনের করুন সুর হাসপাতালের দেয়ালে দেয়ালে প্রকম্পিত হচ্ছিল, মুর্ছে পড়ছিল বেদনায় হাজারও মানুষ, ঠিক তখনই থেমে যায় অধরার হৃৎস্পন্দন। মরিয়া হয়ে চিৎকার করে উঠে অনিক। এক অলৌকিকতায় ভালোবাসার যে মরন হয়না তাকে প্রমাণ করার জন্য বিধাতার ইচ্ছায় অধরার হৃৎস্পন্দন ফিরে আসে, জয় হয় ভালোবাসার।
---পরিশেষে প্রকাশ পায় এটিই ছিল অনিক অধরার “হৃদয়ের কথা”।
শ্রেষ্ঠাংশে
সম্পাদনা- রিয়াজ - অনিক
- পূর্ণিমা - অধরা
- তুষার খান -
- ডলি জহুর - অধরা'র মা
- এজাজুল ইসলাম - দারোয়ান
- গুলশান আরা
- নাসরিন -
- মান্নান শফিক -
- মৌসুমী - বিশেষ চরিত্রে
- আজহারুল ইসলাম খান
- জামিলুর রহমান শাখা
- পীরজাদা শহীদুল হারুন
সংগীত
সম্পাদনাহৃদয়ের কথা | |
---|---|
কর্তৃক অ্যালবাম | |
মুক্তির তারিখ | ২০০৬ বাংলাদেশ |
ঘরানা | চলচ্চিত্রের সাউন্ডট্র্যাক |
প্রযোজক | লেজার ভিশন[৩] (অডিও) অনুপম (ভিডিও) |
হৃদয়ের কথা ছবির সংগীত পরিচালনা করেন আলাউদ্দিন আলী ও বাংলাদেশের দুই তরুন সংগীত শিল্পী ও সংগীত পরিচালক হাবিব এবং এস আই টুটুল। ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পূর্বেই এর গানের অডিও অ্যালবাম বাজারে ছাড়া হয়। ছবিতে হাবিবের কণ্ঠে গাওয়া ভালোবাসবো বাসবোরে বন্ধু ও এস আই টুটুলের কণ্ঠে যায় দিন যায় একাকী শিরোনামের গান অভাবনীয় জনপ্রিয়তা লাভ করে। ছবিতে মোট ছয়টি গান রয়েছে এবং সব গুলো গানই বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে।[৪]
গানের তালিকা
সম্পাদনাট্র্যাক | গান | কণ্ঠশিল্পী | নোট |
---|---|---|---|
১ | ভালোবাসবো বাসবো রে বন্ধু তোমায় যতনে | হাবিব ওয়াহিদ | |
২ | কতটা বছর এই সুখ রবেগো | মনির খান ও কনক চাঁপা | |
৩ | তোমাকে ছেড়ে আমি কি নিয়ে বাচবো | মনির খান ও ইভা রহমান | শিরোনাম গান |
৪ | যায় দিন যায় একাকী | এস আই টুটুল | |
৫ | তোমার কারণে আমি উচ্ছল | এন্ড্রু কিশোর ও সামিনা চৌধুরী | |
৬ | আমি জামান পুরের পোলা | মমতাজ ও আগুন | |
৭ | ভালোবাসবো বাসবোরে বন্ধু | বেহালা (যন্ত্র সঙ্গীত) | |
৮ | রাগ | বেহালা (যন্ত্র সঙ্গীত) |
পুরস্কার
সম্পাদনা- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র অভিনেতা - রিয়াজ
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ গায়ক - হাবিব ওয়াহিদ, (গান "ভালোবাসবো বাসবোরে বন্ধু")
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Voila! The "deceased" Adhora is revived., Mainstream film Hridoyer Kotha is a contemporary love story, showcasing its ups and downs. (সেপ্টেম্বর ১৫, ২০০৬)। "Hridoyer Kotha: A quintessential love story"। দি ডেইলি স্টার। খালিদ বিন হাবিব। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১১।
- ↑ "The sacrifices, the hurt, the blood, sweat and tears -- at times I wonder whether it's all worth it," concludes Riaz., DASHING, charming, sporty, charismatic, academically brilliant -- several adjectives can be dedicated to Riaz, who has been one of the leading actors in Bangladeshi cinema for 10 years now. (আগস্ট ৪, ২০০৬)। ""There is no ingenuity in our current films"-- Riaz"। দি ডেইলি স্টার। মাহমুদা আফরোজ। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০১১।
- ↑ "হৃদয়ের কথা ছবির- গানের এ্যালবাম"। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১১।
- ↑ From the next episode onwards, the director of the show Mrinal Kanti Das has plans to provide viewers news and information about actors, directors, musicians, make-up artistes, and cameramen of the silver screen., Ebong Cinemar Gaan, a musical show based on Bangladeshi cinema, is currently running on Channel i daily at 1:05pm (except Fridays). The programme will observe its milestone 1000th episode today. (১২ মার্চ ২০০৭)। "'Ebong Cinemar Gaan' set to score 1000"। দি ডেইলি স্টার। Cultural Correspondent। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১১।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে হৃদয়ের কথা (ইংরেজি)
- বাংলা মুভি ডেটাবেজে হৃদয়ের কথা