সিদ্দিকা কবীর
সিদ্দিকা কবীর (জন্ম: ৭ মে ১৯৩১, ঢাকা; মৃত্যু: ৩১ জানুয়ারি ২০১২, ঢাকা ) একজন বাংলাদেশী পুষ্টিবিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদ। তিনি তার লেখা রন্ধনবিষয়ক বইগুলির জন্য বিখ্যাত।
সিদ্দিকা কবীর | |
---|---|
জন্ম | ৭ মে, ১৯৩১ |
মৃত্যু | ৩১ জানুয়ারি ২০১২ | (বয়স ৮০)
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
পেশা | পুষ্টিবিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদ |
পরিচিতির কারণ | রন্ধনবিষয়ক বইয়ের লেখক |
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাসিদ্দিকা কবীরের জন্ম পুরান ঢাকার মকিম বাজারে, ১৯৩১ সালের ৭ মে। তার পিতা মৌলভি আহমেদুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ও পরবর্তীতে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। সিদ্দিকা কবীরের মাতা সৈয়দা হাসিনা খাতুন ছিলেন গৃহিনী। ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসে সিদ্দিকা কবীর ব্যাংকার সৈয়দ আলী কবীরকে বিয়ে করেন।
শিক্ষা
সম্পাদনাসিদ্দিকা কবীর পড়াশোনা করেন প্রথমে ইডেন কলেজে। সেখান থেকে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে ভর্তি হন ও সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পর তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটি হতে ১৯৬৩ সালে খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি পান।
চাকরি-জীবন
সম্পাদনাঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় সিদ্দিকা কবীর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধপূর্ব তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওতে ঘোষক হিসাবে খণ্ডকালীন চাকরিতে যোগ দেন। স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পরে প্রথমে ভিকারুন্নিসা নুন স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে কাজ করেন। এর পর তিনি ইডেন কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন।
যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, আজিমপুর, ঢাকা এর সহকারী অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
রান্নার অনুষ্ঠান
সম্পাদনা১৯৬৫ সালে সরকারি প্রতিষ্ঠান হতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রান্না শেখা শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি তদানিন্তন পাকিস্তান টেলিভিশনে "ঘরে বাইরে" নামে রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা শুরু করেন। সিদ্দিকা কবীর তার "রান্না খাদ্য পুষ্টি" বইটির জন্য ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত বইগুলির মধ্যে এখন পর্যন্ত বইটি অন্যতম। বইটি প্রথম প্রকাশের সময় মুক্তধারা, বাংলা একাডেমী সহ অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থা এটি প্রকাশ করতে রাজী হয় নাই। পরে এটি নিজ খরচে প্রকাশ করা হয়। প্রকাশের পর এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৮৪ সালে ইংরেজি ভাষায় একটি কারি রান্নার বই লিখেন। ১৯৮০ সালে লিখেন পাঠ্যবই খাদ্যপুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থা, যা স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো হয়। এছাড়া তিনি ১৯৯৭ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে রসনা নামে কলাম লিখেন, যা পরবর্তীতে খাবার দাবারের কড়চা নামে প্রকাশিত হয়। প্রাইভেট টেলিভিশন এনটিভিতে তিনি সিদ্দিকা কবীরস্ রেসিপি নামের রান্নার অনুষ্ঠান নির্মানে জড়িত ছিলেন।
পুরস্কার
সম্পাদনা- অনন্যা শীর্ষ দশ পুরস্কার (২০০৪)
মৃত্যু
সম্পাদনাঅধ্যাপক সিদ্দিকা কবীর ৩১ জানুয়ারি ২০১২-তে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার স্কয়্যার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[১] মৃত্যুর আগে তিনি হৃদরোগসহ বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুপূর্ব বেশ কিছুদিন সিআরপি-তে চিকিৎসারত থাকার পর, উন্নত চিকিৎসার জন্য স্কয়্যার হাসপাতালে স্থানান্তরের পর সেখানে চিকিৎসারত থাকাকালীন তিনি স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন।
আরো দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ চলে গেলেন রন্ধনশিল্পী সিদ্দিকা কবীর, খবর২৪.কম।
বহি:সংযোগ
সম্পাদনা- আত্মজৈবনিক রচনা, প্রথম আলো ঈদ সংখ্যা, ২০০৬।