সাথী (২০০২-এর চলচ্চিত্র)
সাথী ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র। যার পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী ও প্রযোজক শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস। প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জিৎ এবং প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী আর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন রঞ্জিত মল্লিক এবং অনামিকা সাহা, রাজেশ শর্মা, কাঞ্চন মল্লিক এবং সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়। এই ছবিটি দিয়ে জিৎ সিনেমা জগতে অভিষেক করেছিলেন। ছবিটি তামিল ছবি "থুল্লাদ মনামুম থুলুম" এর পুনর্নিমাণ। এটি ২০০২ সালের ১৪ জুন মুক্তি পায়[২] এবং সেই বছরের সর্বোচ্চ আয়কারী বাংলা চলচ্চিত্র হয়ে ওঠে।[৩]
সাথী | |
---|---|
পরিচালক | হরনাথ চক্রবর্তী |
রচয়িতা | মনতোষ চক্রবর্তী |
চিত্রনাট্যকার | মনতোষ চক্রবর্তী |
কাহিনিকার | ইজিল |
উৎস | থুল্লাদ মনামুম থুলুম (তামিল) |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | এস. পি. ভেঙ্কটেশ |
চিত্রগ্রাহক | ভি. প্রভাকর |
সম্পাদক | স্বপন গুহ |
পরিবেশক | শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৩৬ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | বাংলা |
আয় | ₹ ৯.৮০ কোটি[১] |
অভিনেতা জিৎ এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ক্যারিয়ারের একটি বড় সাফল্য অর্জন করেছিলেন। হরনাথ চক্রবর্তী ছবিটি পরিচালনার পাশাপাশি মনোতোষ চক্রবর্তীর সাথে চিত্রনাট্যও লিখেছেন। ভি. প্রভাকর সিনেমাটোগ্রাফি পরিচালনা করেন এবং সম্পাদনা শেষ করেন স্বপন গুহ । এসপি ভেঙ্কটেশ ছবিটির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন।
২০০২ সালের ১৪ জুন মুক্তি পাওয়ার পর, সাথী একটি বাণিজ্যিক এবং সমালোচনামূলকভাবে সফল উদ্যোগের আবির্ভাব ঘটে, অবশেষে বছরের সর্বোচ্চ আয়কারী বাংলা চলচ্চিত্রে পরিণত হয় এবং পরবর্তীকালে, বাংলা চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে একটি হয়ে ওঠে।[৪] জিৎ তার অভিনয়ের জন্য মূল্যায়ন পান এবং বিএফজিএ পুরস্কারে ভূষিত হন।
কাহিনি
সম্পাদনাবিজয় (জিৎ)এক প্রতিভাশালী সহ এক উচ্চাকাঙ্ক্ষী গায়ক, সে বর্ধমান জেলার একটি গ্রামে তার মা এবং ভাইয়ের সাথে থাকে। এক মিউজিকাল টাইকুনের ডাকে সে কলকাতায় আসে তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর বাড়িতে পৌঁছে বিজয় তার পরামর্শদাতার মৃত দেখে হতবাক হয়ে যায়। সে মদ্যপ কেস্ষ্টদা (রঞ্জিত মল্লিক) এক ভালো মানুষের কাছে থাকতে শুরু করে। তারপর একদল সমবয়সীদের নিয়ে একটি বীমা সংস্থার জন্য কাজ শুরু করে। এর মধ্যে বিজয় সোনালীকে (প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী) দেখে যে তাঁর ঠাকুমার সাথে একই এলাকায় থাকে। সোনালী বিজয়কে এক অদ্ভুত উপায়ে চিনতো। সে তাকে কখনও দেখেন নি, তবে বিজয় যখন গান করত, তখন সে অত্যন্ত আগ্রহে গান শুনত এবং তাঁর প্রশংসক যায়। কিন্তু বিজয় এবং সোনালী যখনই শারীরিকভাবে একে অপরের সাথে দেখা করে তখনই কোনও দুর্ঘটনা ঘটে এবং সোনালী বিজয়কে ভুল বুঝত। ফলে সোনালীর মনে বিজয়ের প্রতি আলাদা একটা ধারণা তৈরি হল। সে বুঝতে পারল না যে বিজয়ই তার প্রশংসিত একই ব্যক্তি যাকে সে ঘৃণা করে। এমন সময় একদিন বিজয় ঘটনাক্রমে সোনালিকে কলেজের সিঁড়ি থেকে ধাক্কা দেয় এবং সে পরে গিয়ে অন্ধ হয়ে যায়। বিজয় এই বিষয়টি জানতে পেরে খুবই লজ্জিত হয় এবং হতাশায় ভেঙ্গে পড়ে। তারপরে শুরু হয় তার ত্যাগ ও ভালবাসার পর্ব, সে সোনালী এবং তার ঠাকুমাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে শুরু করে, এমনকি সে দুজনকে তার মেসে থাকবার জন্য নিয়ে আসে যখন তাদের বাড়িওয়ালা তারা আর ভারা দিতে পারছিল না। অবশেষে সোনালির চোখের চিকিত্সার জন্য প্রয়োজনীয় টাকার জন্য বিজয় তার মূল্যবান আংটি (তার মায়ের উপহার) বিক্রি করে। এমনকি তার মা মারা গেলেও এটিকে সবার কাছে গোপন রাখে এবং সোনালিকে চোখের সার্জনের কাছে নিয়ে যান। সেখানে তিনি জানতেঁ পারে যে এক জটিল অপারেশন করা হলে সোনালী তার দৃষ্টি ফিরে পেতে পারে। তার জন্য ৫০,০০০ টাকা লাগবে, বিজয় ঠিক করে সে তার একটা কিডনি বিক্রি করবে এবং তার লক্ষ্য নিয়ে গোপনে বিশাখাপত্তনমে যাত্রা শুরু করে। বিজয় নিজে কণ্ঠশিল্পী হওয়ার জন্য তার আবেগকে ত্যাগ করে এবং গায়ক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে গোপনে সোনালিকে সমর্থন করে, সোনালী তার রেকর্ডিং স্টুডিওতে প্রথম স্তরে সাফল্য অর্জন করে, বিজয় স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে সন্ত্রাসী হিসাবে গ্রেপ্তার হয়। এইভাবে বিজয়ের অর্থ দিয়ে সোনালী আবার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়ে এবং একটি বিখ্যাত গায়িকা হয়ে ওঠে ওদিকে বিজয়ের পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ডে দণ্ডিত করা হয়। বিজয় তার সাজা শেষ করে যে দিন ফিরে আসে সেদিনেই সোনালী এক সংগীত অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছিল। হাওড়া স্টেশন পৌঁছে বিজয় সোনালির বিশাল কাটআউট হোর্ডিংয়ের দেখতে পায়। সে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কিন্তু তিনি যখন সোনালির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে এবং তাকে বোঝায় যে তাঁর বিজয়, তখন তাকে নিরাপত্তার দ্বারা নির্মমভাবে আঘাত করা হয়। কেষ্টদা এবং বিজয়ের বন্ধু এসে পৌঁছায়। তারা সোনালীকে পুরো সত্য ঘটনাটা ব্যাখ্যা করে। সোনালী বুঝতে পারে যে সব সময় যাকে অবহেলা করেছে সেই তার দীর্ঘদিনের হারিয়ে যাওয়া ভালবাসা। উচ্ছ্বসিত জনতার মাঝে তারা আবার মিলিত হয়।
অভিনয়শিল্পী
সম্পাদনা- জিৎ - বিজয়
- প্রিয়াঙ্কা ত্রিবেদী - সোনালি
- রঞ্জিত মল্লিক - কেষ্টদা
- অনামিকা সাহা - সোনালীর ঠাকুমা
- রাজেশ শর্মা - বাড়িওয়ালা
- কাঞ্চন মল্লিক - বিজয়ের বন্ধু
- সুমিত্রা মুখোপাধ্যায় - বিজয়ের মা
- পুষ্পিতা মুখোপাধ্যায় - সোনালীর বন্ধু
সঙ্গীত
সম্পাদনাসাথী | ||||
---|---|---|---|---|
কর্তৃক সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবাম | ||||
মুক্তির তারিখ | ২০০২ | |||
শব্দধারণের সময় | ২০০১ | |||
স্টুডিও | শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস | |||
ঘরানা | ফিচার ফিল্ম সাউন্ডট্র্যাক | |||
ভাষা | বাংলা | |||
সঙ্গীত প্রকাশনী | এসভিএফ | |||
প্রযোজক | শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস | |||
এসপি ভেঙ্কটেশ কালক্রম | ||||
| ||||
সাথী থেকে একক গান | ||||
|
সব গানের কথা লিখেছেন গৌতম সুস্মিত এবং সমস্ত সঙ্গীত এসপি ভেঙ্কটেশের দ্বারা গঠিত।
না. | শিরোনাম | গানের কথা | গায়ক | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|---|
১. | "ও বন্ধু" | গৌতম সুস্মিত | মনু | ০৬:০৯ |
২. | "বলবো তোমায়" | গৌতম সুস্মিত | মনু, অনুরাধা শ্রীরাম | ০৫:৩৩ |
৩. | "আলাপ" | স্বর্ণলতা | ||
৪. | "এই ভালোবাসা" | গৌতম সুস্মিত | মনু | ০৫:৩৩ |
৬. | "ও বন্ধু (পুনরায়)" | মনু | ||
৭. | "পোড়াবাসী ডাক দিয়ে যায়" | গৌতম সুস্মিত | স্বর্ণলতা, প্রভাকর | ০৩:৪৮ |
৮. | "এই গান" | গৌতম সুস্মিত | মনু | ০৫:৩৮ |
৯. | "ও বন্ধু (মহিলা সংস্করণ)" | গৌতম সুস্মিত | অনুরাধা শ্রীরাম | ০৬:১২ |
১০. | "যুগে যুগে সব বদলায়" | মনু | ০১:৪৫ | |
১১. | "জানিনা কোথায় আছো" | মনু | ০৪:০০ |
মুক্তি
সম্পাদনাচলচ্চিত্রটি ২০০২ সালের ১৪ জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Top 5 Bengali films with good numbers at box office"। Thestatesman.com। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০২২।
- ↑ "সাথী (২০০২)"।
- ↑ "Saathi (Rs.9.80 crore)"। The Times of India। আইএসএসএন 0971-8257। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-০২।
- ↑ SNS (২০১৭-১২-১৫)। "Top 5 Bengali films with good numbers at box office"। The Statesman (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-০২।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে সাথী (ইংরেজি)