রুবিডিয়াম

একটি নরম ধাতব মৌলিক পদার্থ

রুবিডিয়াম (রাসায়নিক সংকেত:Rb পারমাণবিক সংখ্যা ৩৭) একটি মৌলিক পদার্থ। রুবিডিয়াম একটি ক্ষারধর্মী ধাতু; নরম এবং রুপালী-সাদা বর্ণের। এর পারমাণবিক ভর ৮৫.৪৬৭৮। অন্যান্য ক্ষারধর্মী ধাতুর মত ধাতব রুবিডিয়াম খুবই সক্রিয়। বাতাসে খুব দ্রুত এটি জারণ হয়।প্রকৃতিতে এর দুইটি আইসোটোপ রয়েছে। এর মধ্যে 85Rb এর পরিমাণ প্রায় ৭২% এবং এটি স্থায়ী। বাকী আইসোটোপটি, 87Rb, কিঞ্চিৎ তেজস্ক্রিয় যার অর্ধ-জীবন ৪৯০০ কোটি বছর।

রুবিডিয়াম   ৩৭Rb
উচ্চারণ/rˈbɪdiəm/ (roo-BID-ee-əm)
উপস্থিতিgrey white
আদর্শ পারমাণবিক ভরAr°(Rb)
পর্যায় সারণিতে রুবিডিয়াম
হাইড্রোজেন হিলিয়াম
লিথিয়াম বেরিলিয়াম বোরন কার্বন নাইট্রোজেন অক্সিজেন ফ্লোরিন নিয়ন
সোডিয়াম ম্যাগনেসিয়াম অ্যালুমিনিয়াম সিলিকন ফসফরাস সালফার ক্লোরিন আর্গন
পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম স্ক্যান্ডিয়াম টাইটেনিয়াম ভ্যানাডিয়াম ক্রোমিয়াম ম্যাঙ্গানিজ আয়রন Cobalt Nickel Copper Zinc Gallium Germanium Arsenic Selenium Bromine Krypton
Rubidium Strontium Yttrium Zirconium Niobium Molybdenum Technetium Ruthenium Rhodium Palladium Silver Cadmium Indium Tin Antimony Tellurium Iodine Xenon
Caesium Barium Lanthanum Cerium Praseodymium Neodymium Promethium Samarium Europium Gadolinium Terbium Dysprosium Holmium Erbium Thulium Ytterbium Lutetium Hafnium Tantalum Tungsten Rhenium Osmium Iridium Platinum Gold Mercury (element) Thallium Lead Bismuth Polonium Astatine Radon
Francium Radium Actinium Thorium Protactinium Uranium Neptunium Plutonium Americium Curium Berkelium Californium Einsteinium Fermium Mendelevium Nobelium Lawrencium Rutherfordium Dubnium Seaborgium Bohrium Hassium Meitnerium Darmstadtium Roentgenium Copernicium Nihonium Flerovium Moscovium Livermorium Tennessine Oganesson
K

Rb

Cs
ক্রিপ্টনরুবিডিয়ামস্ট্রনটিয়াম
পারমাণবিক সংখ্যা৩৭
মৌলের শ্রেণীalkali metal
গ্রুপগ্রুপ ১: হাইড্রোজেন এবং ক্ষার ধাতু
পর্যায়পর্যায় ৫
ব্লক  এস-ব্লক
ইলেকট্রন বিন্যাস[Kr] ৫s
প্রতিটি কক্ষপথে ইলেকট্রন সংখ্যা2, 8, 18, 8, 1
ভৌত বৈশিষ্ট্য
দশাকঠিন
গলনাঙ্ক312.46 কে ​(39.31 °সে, ​102.76 °ফা)
স্ফুটনাঙ্ক961 K ​(688 °সে, ​1270 °ফা)
ঘনত্ব (ক.তা.-র কাছে)1.532 g·cm−৩ (০ °সে-এ, ১০১.৩২৫ kPa)
তরলের ঘনত্বm.p.: 1.46 g·cm−৩
পরম বিন্দু(extrapolated) 2093 কে, 16 MPa
ফিউশনের এনথালপি2.19 kJ·mol−১
বাষ্পীভবনের এনথালপি75.77 kJ·mol−১
তাপ ধারকত্ব31.060 J·mol−১·K−১
বাষ্প চাপ
P (Pa) ১০ ১০০ ১ k ১০ k ১০ k
at T (K) 434 486 552 641 769 958
পারমাণবিক বৈশিষ্ট্য
জারণ অবস্থা1
(strongly basic oxide)
তড়িৎ-চুম্বকত্ব0.82 (পলিং স্কেল)
পারমাণবিক ব্যাসার্ধempirical: 248 pm
সমযোজী ব্যাসার্ধ220±9 pm
ভ্যান ডার ওয়ালস ব্যাসার্ধ303 pm
বিবিধ
কেলাসের গঠনbody-centered cubic (bcc)
Body-centered cubic জন্য কেলাসের গঠন{{{name}}}
শব্দের দ্রুতিপাতলা রডে: 1300 m·s−১ (at 20 °সে)
তাপীয় পরিবাহিতা58.2 W·m−১·K−১
তড়িৎ রোধকত্ব ও পরিবাহিতা২০ °সে-এ: 128 n Ω·m
চুম্বকত্বparamagnetic[]
ইয়ংয়ের গুণাঙ্ক2.4 GPa
আয়তন গুণাঙ্ক2.5 GPa
(মোজ) কাঠিন্য0.3
ব্রিনেল কাঠিন্য0.216 MPa
ক্যাস নিবন্ধন সংখ্যা7440-17-7
রুবিডিয়ামের আইসোটোপ
প্রধান আইসোটোপ[] ক্ষয়
প্রাচুর্যতা অর্ধায়ু (t১/২) মোড পণ্য
৮২Rb সিন্থ ১.২৫৭৫ মি β+ ৮২Kr
৮৩Rb সিন্থ ৮৬.২ d ε ৮৩Kr
γ
৮৪Rb সিন্থ ৩২.৯ d ε ৮৪Kr
β+ ৮৪Kr
γ
β 84Sr
৮৫Rb 72.2% স্থিতিশীল
৮৬Rb সিন্থ ১৮.৭ d β ৮৬Sr
γ
৮৭Rb 27.8% ৪.৯২৩×১০১০ y β ৮৭Sr
বিষয়শ্রেণী বিষয়শ্রেণী: রুবিডিয়াম
| তথ্যসূত্র

জার্মানির রসায়নবিদ রবার্ট বুনসেন ও গুস্তাভ কির্চকভ ১৮৬১ সালে রুবিডিয়াম আবিষ্কার করেন।

রুবিডিয়ামের বিভিন্ন যৌগের রাসায়নিক ও ইলেকট্রনিক প্রচুর ব্যবহার রয়েছে। ধাতব রুবিডিয়ামকে সহজে বাষ্পে পরিণত করা যায়। এই কারণে পরমাণুর লেজার সংক্রান্ত কাজে এটিকে প্রায়শ লক্ষ্যবস্তু করা হয়। কোন জীবিত প্রাণীর জন্য রুবিডিয়ামের কোন প্রয়োজনীয়তার কথা এখনো জানা যায় নি। তবে, উদ্ভিদ ও প্রাণীকোষ যেভাবে পটাশিয়াম আয়নকে ব্যবহার করে রুবিডিয়াম আয়নকেও অনুরুপভাবে ব্যবহার করতে পারে।

আবিষ্কার

সম্পাদনা

১৮৬১ সালে জার্মানীর হাইডেলবার্গ শহরে রবার্ট বুনসেন আর গুস্তাফ কিরচকভ রুবিডিয়াম আবিষ্কার করেন।

বৈশিষ্ট্য

সম্পাদনা
 
রুবিডিয়াম এবং সিজিয়ামের ক্রিস্টাল

রুবিডিয়াম একটি খুব নরম, নমনীয়, রূপালি সাদা ধাতু। অতেজস্ক্রিয় ক্ষারধাতুর মধ্যে রুবিডিয়ামের তড়িৎ-ধনাত্মকতায় দ্বিতীয় এবং ৩৯.৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস (১০২.৭ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় গলে যায়। অন্যান্য ক্ষার ধাতুর মত রুবিডিয়াম পানির সঙ্গে তীব্রভাবে বিক্রিয়া করে। রুবিডিয়াম পারদের সঙ্গে পারদ-সংকর বা এমালগাম এবং সোনা, লোহা, সিজিয়াম,সোডিয়ামপটাশিয়ামের সঙ্গে সংকর-ধাতু সৃষ্টি করে তবে লিথিয়ামের সঙ্গে করে না। যদিও পর্যায়সারণীতে লিথিয়াম ও রুবিডিয়াম একই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। [] পানির মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম সক্রিয় পটাশিয়ামসিজিয়ামের সঙ্গে রুবিডিয়ামের বিক্রিয়ায় এত তাপ উৎপন্ন হয় যে, তা বিক্রিয়ায় মুক্ত হাইপ্রোজেনকে জ্বালাতে পারে। বাতাসে স্বত:স্পূর্তভাবে রুবিডিয়াম জ্বলে উঠে বলেও বিভিন্ন রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। [] রুবিডিয়ামের আয়নায়ন শক্তি খুবই কম, মাত্র 406 kJ/mol.[] আগুনের শিখা পরীক্ষায় রুবিডিয়াম ও পটাশিয়াম উভয়েই একই রকম বেগুনি রঙের শিখা সৃষ্টি করে ফলে দুই ধাতুতে পৃথকভাবে চিহ্নিত করার জন্য স্পেকট্রোসকোপি পদ্ধতির প্রয়োজন হয়।

ব্যবহার

সম্পাদনা

রুবিডিয়ামের বিভিন্ন যৌগের রাসায়নিক ও ইলেকট্রনিক প্রচুর ব্যবহার রয়েছে। ধাতব রুবিডিয়ামকে সহজে বাস্পে পরিণতক করা যায়। এই কারণে পরমাণুর লেজার সংক্রান্ত কাজে এটিকে প্রায়শ লক্ষ্যবস্তু করা হয়। কোন জীবিত প্রাণীর জন্য রুবিডিয়ামের কোন প্রয়োজনীয়তার কথা এখনো জানা যায় নি। তবে, উদ্ভিদ ও প্রাণীকোষ যেভাবে পটাশিয়াম আয়নকে ব্যবহার করে রুবিডিয়াম আয়নকেও অনুরুপভাবে ব্যবহার করতে পারে।

যৌগসমূহ

সম্পাদনা
 
Rb
9
O
2
cluster
 
রুবিডিয়াম এর ইলেক্ট্রন বিন্যাস

রুবিডিয়ামের যৌগের মধ্যে সম্ভবত রুবিডিয়াম ক্লোরাইডের (RbCl) ব্যবহারই সবচেয়ে বেশি। জৈবরসায়নে কোন সেলে ডিএনএ প্রবৃষ্ট করানো এবং জৈব-নির্দেশক হিসাবে এর ব্যবহার দেখা যায়। জীবিত কোষে পটাশিয়ামকে প্রতিস্থাপিত করার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য রুবিডিয়াম যৌগের মধ্যে ক্ষয়কারক রুবিডিয়াম হাইড্র অক্সাইড (RbOH) বেশিরভাগ রুবিডিয়াম ভিত্তিক রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়; রুবিডিয়াম কার্বনেট (Rb2CO3), অপটিক্যাল কাচে, এবং রুবিডিয়াম কপার সালফেট (Rb2SO4•CuSO4•6H2O. জানা আয়নিক কেলাস সমূহের মধ্যে রুবিডিয়াম সিলভার আয়োডাইডের তাপগ্রহীতা কক্ষ তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ। এই বৈশিষ্ট্যের কারণে পাতলা ফিল্ম ব্যাটারি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে এর উপযোগিতা যাচাই করা হচ্ছে। [][] রুবিডিয়ামের বেশ কটি অক্সাইড রয়েছে। বাতাসে রেখে দিলে এটি রুবিডয়াম মনোক্সাইডে (Rb2O), Rb6O ও Rb9O2, পরিণত হয়। বাড়তি অক্সিজেন পেলে রুবিডিয়ামের সুপার অক্সাইড RbO2 পাওয়া যায়। হ্যালোজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে রুবিডিয়াম হ্যালাইড লবণ যথাক্রমে রুবিডিয়াম ফ্লোরাইড, রুবিডিয়াম ক্লোরাইড, রুবিডিয়াম ব্রোমাইড ও রুবিডিয়াম আয়োডাইড সৃষ্টি করে।

প্রাপ্যতা

সম্পাদনা

ভূ-ত্বকে প্রাপ্যতার হিসাবে রুবিডিয়াম ২৩তম। প্রকৃতিতে এর প্রাচুর্য দস্তার মত, এমনকী তামার চেয়ে বেশি। [১০]

রাসায়নিক বিক্রিয়া

সম্পাদনা
  • ব্রিটানিকা বিশ্বকোষ (Encyclopedia Britannica)

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Standard Atomic Weights: রুবিডিয়াম"CIAAW। ১৯৬৯। 
  2. Prohaska, Thomas; Irrgeher, Johanna; Benefield, Jacqueline; Böhlke, John K.; Chesson, Lesley A.; Coplen, Tyler B.; Ding, Tiping; Dunn, Philip J. H.; Gröning, Manfred; Holden, Norman E.; Meijer, Harro A. J. (২০২২-০৫-০৪)। "Standard atomic weights of the elements 2021 (IUPAC Technical Report)"Pure and Applied Chemistry (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 1365-3075ডিওআই:10.1515/pac-2019-0603 
  3. Magnetic susceptibility of the elements and inorganic compounds, in Handbook of Chemistry and Physics 81st edition, CRC press.
  4. কনদেব, এফ.জি.; ওয়াং, এম.; হুয়াং, ডব্লিউ.জে.; নাইমি, এস.; আউডি, জি. (২০২১)। "The NUBASE2020 evaluation of nuclear properties" [পারমাণবিক বৈশিষ্ট্যের নুবেস২০২০ মূল্যায়ন] (পিডিএফ)চাইনিজ ফিজিক্স সি (ইংরেজি ভাষায়)। ৪৫ (৩): ০৩০০০১। ডিওআই:10.1088/1674-1137/abddae 
  5. Holleman, Arnold F.; Wiberg, Egon; Wiberg, Nils (১৯৮৫)। "Vergleichende Übersicht über die Gruppe der Alkalimetalle"। Lehrbuch der Anorganischen Chemie (German ভাষায়) (91–100 সংস্করণ)। Walter de Gruyter। পৃষ্ঠা 953–955। আইএসবিএন 3-11-007511-3 
  6. Ohly, Julius (১৯১০)। "Rubidium"। Analysis, detection and commercial value of the rare metals। Mining Science Pub. Co.। 
  7. Moore, John W; Stanitski, Conrad L; Jurs, Peter C (২০০৯)। Principles of Chemistry: The Molecular Science। পৃষ্ঠা 259। আইএসবিএন 978-0-495-39079-4 
  8. Lesley smart, Moore, Elaine (১৯৯৫)। "RbAg4I5"। Solid state chemistry: an introduction। CRC Press। পৃষ্ঠা 176–177। আইএসবিএন 978-0-7487-4068-0 
  9. J. N. Bradley Greene, P. D. (১৯৬৭)। "Relationship of structure and ionic mobility in solid MAg4I5"। Trans. Faraday Soc.63: 2516। ডিওআই:10.1039/TF9676302516 
  10. Butterman, William C.; Brooks, William E.; Reese, Jr., Robert G. (২০০৩)। "Mineral Commodity Profile: Rubidium" (PDF)। United States Geological Survey। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১২-০৪ 

আরও দেখুন

সম্পাদনা