রাবেয়া খাতুন
রাবেয়া খাতুন (২৭ ডিসেম্বর ১৯৩৫ — ৩ জানুয়ারি ২০২১[১]) একজন বাংলাদেশী সাহিত্যিক। তার রচিত প্রথম উপন্যাসের নাম নিরাশ্রয়া (অপ্রকাশিত)।
রাবেয়া খাতুন | |
|---|---|
 | |
| জন্ম | ২৭ ডিসেম্বর ১৯৩৫ বিক্রমপুর, ঢাকা বাংলাদেশ |
| মৃত্যু | ৩ জানুয়ারি ২০২১ (বয়স ৮৫) |
| পেশা | কবি, লেখক |
| ভাষা | বাংলা |
| জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
| নাগরিকত্ব | বাংলাদেশী |
| শিক্ষা | প্রবেশিকা(ইন্টারমেডিয়েট) |
| উল্লেখযোগ্য পুরস্কার |
|
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাখাতুন ঢাকার বিক্রমপুরে তার মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তবে, তার পৈতৃক বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় অবস্থিত ষোলঘর গ্রামে৷ তার বাবা মৌলভী মোহাম্মদ মুল্লুক চাঁদ এবং মা হামিদা খাতুন। আরমানিটোলা বিদ্যালয় থেকে প্রবেশিকা (বর্তমানে মাধ্যমিক) পাস করেন ১৯৪৮ সালে। রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়ে হওয়ায় বিদ্যালয়ের গন্ডির পর তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগ্রহন বন্ধ হয়ে যায়।[২]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনা১৯৫২ সালের ২৩ জুলাই সম্পাদক ও চিত্র পরিচালক এটিএম ফজলুল হকের সাথে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের চার সন্তানের মধ্যেে রয়েছে, ফরিদুর রেজা সাগর, কেকা ফেরদৌসী, ফরহাদুর রেজা প্রবাল ও ফারহানা কাকলী।
কর্মজীবন
সম্পাদনারাবেয়া খাতুন রচিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক জনপ্রিয় উপন্যাস মেঘের পর মেঘ অবলম্বনে বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র মেঘের পরে মেঘ।[৩] এবং ২০১১ সালে তার আরেকটি জনপ্রিয় উপন্যাস মধুমতি অবলম্বনে পরিচালক শাহজাহান চৌধুরী একই শিরোনামে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র মধুমতি।[৪] এছাড়াও অভিনেত্রী মৌসুমী ২০০৩ সালে তার লেখা কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি অবলম্বনে একই শিরোনামে নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি।[৫] লেখালেখির পাশাপাশি রাবেয়া খাতুন শিক্ষকতা করেছেন। সাংবাদিকতাও করেছেন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমীর কাউন্সিল মেম্বার ছিলেন। তিনি ছিলেন জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের গঠনতন্ত্র পরিচালনা পরিষদের সদস্য, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরীবোর্ডের বিচারক, শিশু একাডেমীর কাউন্সিল মেম্বার ও টেলিভিশনের 'নতুন কুড়ি'র বিচারক। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জাতীয় বিতর্কের জুরীবোর্ডের বিচারক ও সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। যুক্ত ছিলেন বাংলা একাডেমী, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, ঢাকা লেডিজ ক্লাব, বিজনেস ও প্রফেশনাল উইমেন্স ক্লাব, বাংলাদেশ লেখক শিবির, বাংলাদেশ কথা শিল্পী সংসদ ও মহিলা সমিতির সঙ্গে।
গ্রন্থতালিকা
সম্পাদনা- নিরাশ্রয়া - (অপ্রকাশিত)
- বিদায় - (অপ্রকাশিত)
- অশোক-রেবা - (অপ্রকাশিত)
- মধুমতী (১৯৬৩)
- সাহেব বাজার (১৯৬৫)
- অনন্ত অন্বেষা (১৯৬৯)
- রাজারবাগ শালিমারবাগ (১৯৬৯)
- মন এক শ্বেত কপোতী ()
- ফেরারী সূর্য ( মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক)
- অনেকজনের একজন
- জীবনের আর এক নাম
- দিবস রজনী
- সেই এক বসন্তে
- মোহর আলী (১৯৮৫)
- নীল নিশীথ (মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক)
- বায়ান্ন গলির এক গলি (১৯৮৪)
- পাখি সব করে রব
- নয়না লেকে রূপবান দুপুর
- মিড সামারে
- ই ভরা বাদর মাহ ভাদর (১৯৮৮)
- সে এবং যাবতীয়
- হানিফের ঘোড়া
- হিরণ দাহ (১৯৯৫)মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক
- এই বিরহকাল (১৯৯৫)
- মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস সমগ্র
- হোটেল গ্রীন বাটন (১৯৯৫)
- চাঁদের ফোটা
- নির্বাচিত প্রেমের উপন্যাস
- বাগানের নাম মালনিছড়া মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক
- প্রিয় গুলশানা (১৯৯৭)
- বসন্ত ভীলা (১৯৯৯)
- ছায়া রমণী
- সৌন্দর্যসংবাদ (১৯৯৯)
- হৃদয়ের কাছের বিষয় (১৯৯৯)
- ঘাতক রাত্রি (১৯৯৯)
- শ্রেষ্ঠ উপন্যাস
- মালিনীর দুপুর
- রঙিন কাচের জানালা
- মেঘের পর মেঘ (মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক)
- যা কিছু অপ্রত্যাশিত
- দূরে বৃষ্টি
- সাকিন ও মায়াতরু
- রমনা পার্কের পাঁচবন্ধু
- শুধু তোমার জন্য
- ঠিকানা বি এইচ টাওয়ার
- কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি
- প্রথম বধ্যভূমি
- কমলিকা
- দশটি উপন্যাস
- শঙ্খ সকাল প্রকৃতি
- যা হয়না
- আকাশে এখনো অনেক রাত
- উপন্যাস সমগ্র
- স্বনিবার্চিত উপন্যাস
- জাগতিক
- স্বপ্নে সংক্রামিত
- ও কে ছিল
- মহা প্রলয়ের পর
- নির্বাচিত উপন্যাস
- শহরের শেষ বাড়ি
- নষ্ট জ্যোস্নার আলো
- মাইগো
- সমুদ্রবণ ও প্রণয় পুরুষ
- এই দাহ
- রাইমা
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক
একাত্তরের নয় মাস
একাত্তরের নিশান
উপন্যাস সমূহ
ফেরারী সূর্য, মেঘের পরে মেঘ, হিরণ দাহ , বাগানের নাম মলিন ছড়া।
পুরস্কার
সম্পাদনা- বাংলা একাডেমি পুরস্কার, (১৯৭৩)
- হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮৯)
- একুশে পদক, (১৯৯৩)[৭]
- বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ পুরস্কার, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ (১৯৯৪)
- নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৯৫)
- জসিমউদ্দিন পুরস্কার (১৯৯৬)
- শেরে বাংলা স্বর্ণপদক (১৯৯৬)
- শাপলা দোয়েল পুরস্কার (১৯৯৬)
- টেনাশিনাস পুরস্কার (১৯৯৭)
- ঋষিজ সাহিত্য পদক (১৯৯৮)
- অতীশ দীপঙ্কর পুরস্কার (১৯৯৮)
- লায়লা সামাদ পুরস্কার (১৯৯৯)
- অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৯)
- মিলেনিয়াম এ্যাওয়ার্ড (২০০০)
- টেলিভিশন রিপোটার্স এ্যাওয়ার্ড (২০০১)
- বাংলাদেশ কালচারাল রিপোটার্স এ্যাওয়ার্ড (২০০২)
- শেলটেক পদক (২০০২)
- মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার (২০০৫)
- বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (২০০৫)
- স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৭)
মৃত্যু
সম্পাদনা২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশানে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।[১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "চলে গেলেন রাবেয়া খাতুন"। ডেইলি স্টার। ৩ জানুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ আমার কাছে মানুষই সব দৈনিক সকালের খবর[অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ প্রকাশকঃ দ্য ডেইলি স্টার, এপ্রিল ০২, ২০০৪ মেঘের পরে মেঘ ফাইজুল এ তানিম ও সৈয়দ তাশফিন চৌধুরী, সংগৃহীত হয়েছেঃ এপ্রিল ১২, ২০১১
- ↑ নববর্ষে রাবেয়া খাতুনের মধুমতি[অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Published: The Daily Star, 26 August 2003 New film and film-award coming soon Harun ur Rashid, accessed: 05 June, 2011
- ↑ আলোকিত কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের জন্মদিন আজ, চ্যানেল আই অনলাইন, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬
- ↑ একুশে পদকপ্রাপ্ত সুধীবৃন্দ ও প্রতিষ্ঠান (পিডিএফ)। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পৃষ্ঠা ১১। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০১৪।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে রাবেয়া খাতুন (ইংরেজি)
- রাবেয়া খাতুন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে - গুণীজন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে
