যৌন উদ্দেশ্যে মানব পাচার
যৌন উদ্দেশ্যে মানব পাচার হল যৌন দাসত্ব সহ যৌন শোষণের উদ্দেশ্যে মানব পাচার, যার মধ্যেকার একটি রূপ হিসাবে আধুনিক দাসত্বকে বিবেচনা করা হয়। [১] একজন ভিকটিমকে বিভিন্ন উপায়ে তাদের পাচারকারীর উপর নির্ভরশীলতার পরিস্থিতিতে থাকে বাধ্য করা হয় এবং তারপর পাচারকারী (গুলি) গ্রাহকদের যৌন সেবা প্রদানের জন্য ভিকটিমকে ব্যবহার করে। [২] যৌন পাচার অপরাধের অধিগ্রহণ, পরিবহন ও শোষণ জড়িত হতে পারে;[১] যার মধ্যে রয়েছে শিশু যৌন পর্যটন (সিএসটি), গার্হস্থ্য গৌণ যৌন পাচার (ডিএমএসটি) বা শিশুদের অন্য ধরনের বাণিজ্যিক যৌন শোষণ ও পতিতাবৃত্তি। [২]
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ২০১২ সালে ২০.৯ মিলিয়ন মানুষ জোরপূর্বক শ্রমের শিকার হওয়া এবং ২২% (৪.৫ মিলিয়ন) জোরপূর্বক যৌন শোষণের শিকার হওয়ার কথা রিপোর্ট করে। [৩] আইএলও ২০১৬ সালে রিপোর্ট করে, যে আনুমানিক ২৫ মিলিয়ন ব্যক্তির মধ্যে জোরপূর্বক শ্রম, ৫ মিলিয়ন মানুষ যৌন শোষণের শিকার হয়েছিল। [৪][৫] যাইহোক, যৌন পাচারের গোপনীয়তার কারণে গবেষকদের জন্য সঠিক, নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। [৬] আইএলও অনুসারে যৌন দাসত্বের জন্য বৈশ্বিক বাণিজ্যিক লাভ $৯৯ বিলিয়ন বলে অনুমান করা হয়েছে। [৭] মোট মানব পাচারের জন্য ২০০৫ সালে বাণিজ্যিক লাভের পরিমাণ ৯ বিলিয়ন ডলার হিসাব করা হয়েছিল। [৮][৯]
বেশিরভাগ ভুক্তভোগী নিজেদেরকে জোরপূর্বক বা অবমাননাকর পরিস্থিতির মধ্যে খুঁজে পায়, যেখান থেকে পালানো কঠিন ও বিপজ্জনক উভয়ই। এই অনুশীলনটি যে স্থানগুলিতে বিশ্বজুড়ে ব্যপ্ত হয় ও দেশের মধ্যে একটি জটিল তরঙ্গ বা ঢেউ প্রতিফলিত করে, তার মানবাধিকার সমস্যার কার্যকর সমাধানগুলি তৈরি করা খুব কঠিন করে তোলে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
পৃথিবী জুড়ে
সম্পাদনাএশিয়া
সম্পাদনাএশিয়ার উপ-অঞ্চলের পরিবহন ও গন্তব্য উভয়ের মূল কেন্দ্রগুলির মধ্যে ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং থাইল্যান্ড রয়েছে। [১০] পাচারকৃত বাংলাদেশী ও নেপালি নারীদের জন্য ভারত একটি প্রধান কেন্দ্র। [১১] ভারতে আনুমানিক ৩ মিলিয়ন যৌনকর্মী রয়েছে, যাদের ৪০% পাচার হওয়া শিশু, বেশিরভাগই জাতিগত সংখ্যালঘু ও নিম্নবর্ণের মেয়ে। থাইল্যান্ডে, ২০০৪ সালে ১৬ বছরের কম বয়সী ৮,০০,০০০ শিশু পতিতাবৃত্তিতে জড়িত ছিল। [১২] এছাড়াও, ইউনিসেফ ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মতে শ্রীলঙ্কায় ৪০,০০০ শিশু পতিতা রয়েছে। [১২] থাইল্যান্ড ও ভারত শিশু পতিতাবৃত্তির সর্বোচ্চ হারের শীর্ষ পাঁচটি দেশে রয়েছে। [১২] গ্লোবাল স্লেভারি ইনডেক্স (জিএসআই) ২০১৪ সালে বলছে যে বিশ্বে পাচারের শিকার প্রায় ৩৬ মিলিয়ন মানুষ এবং যার মধ্যে এশিয়া থেকে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ রয়েছে। পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, চীন, ভারত ও বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পাচারের শিকার হওয়া দেশগুলির মধ্যে শীর্ষ দশে রয়েছে। ভারত ১৪ মিলিয়ন ভুক্তভোগীর সাথে তালিকার শীর্ষে রয়েছে, চীন ৩.২ মিলিয়ন ভুক্তভোগীর সাথে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে , এবং পাকিস্তান ২.১ মিলিয়ন ভুক্তভোগীর সাথে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। [১৩] কম্বোডিয়া ট্রানজিট, উৎস ও পাচারের জন্য একটি গন্তব্য দেশ। [১৪] এশিয়ায় পাচারের শিকার হওয়া ব্যাক্তিদের মধ্যে ৩৬% শিশু ও ৬৪% প্রাপ্তবয়স্ক। [১৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Kara, Siddharth (২০০৯)। Sex Trafficking: Inside the Business of Modern Slavery। Columbia University Press। আইএসবিএন 9780231139618। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১৫।
- ↑ ক খ Hammond, Gretchen; McGlone, Mandy (২২ মার্চ ২০১৪)। "Entry, Progression, Exit, and Service Provision for Survivors of Sex Trafficking: Implications for Effective Interventions": 157–168। ডিওআই:10.1007/s40609-014-0010-0 ।, citing Maria Beatriz Alvarez, Edward J. Alessi (মে ২০১২)। "Human trafficking is more than sex trafficking and prostitution: implications for social work": 142–152। ডিওআই:10.1177/0886109912443763।
- ↑ "ILO 2012 Global estimate of forced labour – Executive summary" (পিডিএফ)। International Labour Organization। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৫।
- ↑ Odhiambo, Agnes & Barr, Heather. (2 Aug 2019). "Opinion:Trafficking survivors are being failed the world over." Al Jazeera website Retrieved 4 August 2019.
- ↑ International Labour Organization. (19 September 2017). Press Release:40 million in modern slavery and 152 million in child labour around the world. International Labour Organization website Retrieved 4 August 2019.
- ↑ Tiefenbrun, Susan (২০০২)। "The Saga of Susannah A U.S. Remedy for Sex Trafficking in Women: The Victims of Trafficking and Violence Protection Act of 2000"।
- ↑ "Human Trafficking by the Numbers". (7 January 2017). Human Rights First website ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ মে ২০১৯ তারিখে Retrieved 2 December 2018.
- ↑ Daffron, Joshua W. (Dec 2011). "Combating Human Trafficking: Evolution of State Legislation and the Policies of the United Kingdom and France." Thesis, M.A. Monterey, Calif.:Department of National Security Affairs. Naval Postgraduate School. Defense Technical Information Center website ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে Retrieved 2 December 2018.
- ↑ Tiziana Luise. (2005). "Are human rights becoming burdensome for our economies? The role of slavery-like practices in the development of world economics and in the context of modern society," Rivista Internazionale Di Scienze Sociali, 113(3): 473.
- ↑ Gender and Human Rights in the Commonwealth: Some critical issues for action in the decade 2005–2015। Commonwealth Secretariat। ২০০৪। আইএসবিএন 9781848598553। ৪ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১৫।
- ↑ "Gender and Human Rights in the Commonwealth"। Commonwealth Secretariat। ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১।
- ↑ ক খ গ Iaccino, Ludovica (৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "Top Five Countries with Highest Rates of Child Prostitution"। International Business Times। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ Enos, Olivia (২০ নভেম্বর ২০১৪)। "Nearly Two-Thirds of Human Trafficking Victims Are from Asia"। The Daily Signal। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৭।
- ↑ "Facts and Statistics | SHE Rescue Home"। www.sherescuehome.org (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৭।
- ↑ john। "Asian Century Institute – Human trafficking and smuggling in Asia"। asiancenturyinstitute.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০১৭।