দি ইমপোর্টেন্স অব বিয়িং আর্নেস্ট

অস্কার ওয়াইল্ড রচিত নাটক (প্রহসনমূলক কমেডি)

দি ইমপোর্টেন্স অফ বিয়িং আর্নেস্ট, আ ট্রিভিয়াল কমেডি ফর সিরিয়াস পিপল (ইংরেজি: The Importance of Being Earnest, a Trivial Comedy for Serious People) হল অস্কার ওয়াইল্ডের লেখা একটি নাটক। লেডি উইন্ডারমেয়ার’স ফ্যান (১৮৯২), আ উইম্যান অফ নো ইমপোর্টেন্স (১৮৯৩) ও অ্যান আইডিয়াল হাজব্যান্ড (১৮৯৫) নাটক তিনটির পর এটি ওয়াইল্ডের চতুর্থ তথা শেষ বৈঠকখানা নাটক। ১৮৯৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি লন্ডনের সেন্ট জেমসে’স থিয়েটারে নাটকটি প্রথম অভিনীত হয়েছিল। এই প্রহসনটির উপজীব্য বিষয় অবাঞ্ছিত সামাজিক বাধ্যবাধকতা কৌশলে এড়ানোর জন্য দ্বৈত জীবন যাপনকারী দুই অল্পবয়সী শহুরে বাবুর জটিল সম্পর্ক; এরা দুজনেই তাদের পছন্দের দুই তরুণীর প্রণয়ভিক্ষার সময় একই আর্নেস্ট নাম গ্রহণ করেছিল।

দি ইমপোর্টেন্স অফ বিয়িং আর্নেস্ট
প্রথম প্রযোজনা, ১৮৯৫
অ্যালগারনন চরিত্রে (বাঁদিকে) অ্যালান এনেসওয়ার্থ ও জ্যাক চরিত্রে জর্জ আলেকজান্ডার
রচয়িতাঅস্কার ওয়াইল্ড
উদ্বোধনের তারিখ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৫
উদ্বোধনের স্থানসেন্ট জেমসে’স থিয়েটার,
লন্ডন, ইংল্যান্ড
মূল ভাষাইংরেজি
বর্গকমেডি
প্রেক্ষাপটমেফেয়ার, লন্ডন এবং হার্টফোর্ডশায়ারের একটি কান্ট্রি হাউস

বুদ্ধিদীপ্ত রসিকতা ও শাণিত প্রত্যুক্তির জন্য খ্যাত এই নাটকটিতে সমসাময়িক নাট্যাদর্শগুলিকে ব্যঙ্গ করা হয়েছে, পরবর্তীকালীন ভিক্টোরীয় সামাজিক রীতিনীতিগুলিকে হালকাভাবে বিদ্রূপ করা হয়েছে এবং এক জোড়া তরুণ প্রেমিকপ্রেমিকার সঙ্গে পরিচয় প্রদান করা হয়েছে দুর্দান্ত লেডি ব্র্যাকনেল, খুঁতখুঁতে গভর্নেস মিস প্রিজম এবং সহৃদয় ও পণ্ডিত ক্যানন চসাবেলের। ব্রিটেনে ও বিদেশে সমসাময়িক সমালোচকেরা নাটকটির কৌতুকরসের প্রশংসা করা হলেও কোনো কোনো সমালোচক এই নাটকে সামাজিক বার্তার অভাবের কারণে এটির প্রতি রক্ষণশীল মনোভাব পোষণ করেছিলেন।

নাটকটির সফল প্রথম রজনীর অভিনয় ওয়াইল্ডের কর্মজীবনের চরম পরিণতিটিকে সূচিত করে। কিন্তু তার কয়েক সপ্তাহ পরেই তার পতন ঘটে। কুইনসবেরির মার্কুইস (যার ছেলে লর্ড আলফ্রেড ডগলাস ওয়াইল্ডের প্রেমিক ছিল) অভিনয়ের শেষে নাট্যকারের দিকে পচা সবজির একটি তোড়া ছুঁড়ে মারার পরিকল্পনা করে, কিন্তু ব্যর্থ হয়। এই বিবাদের থেকে একগুচ্ছ আইনি সংঘাত চলে ১৮৯৫ সালের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত। এর ফলেই অস্কার ওয়াইল্ড সমকামী কার্যকলাপের জন্য দোষী সাব্যস্ত ও কারারুদ্ধ হন। নাটকটি প্রথম দিকে সাফল্য অর্জন করলেও ওয়াইল্ডের সম্মানহানির কারণে ৮৬ রজনী অভিনয়ের পর মে মাসে নাটকটি বন্ধ হয়ে যায়। ১৮৯৭ সালে কারামুক্তির পর তিনি নাটকটি প্যারিসে নির্বাসন কালে প্রকাশ করেন। কিন্তু এরপর তিনি আর কোনো হাস্যরসাত্মক লেখা বা নাটক লেখেননি।

বিশ শতকের গোড়া থেকে ইংরেজিভাষী দেশগুলিতে এবং অন্যত্রও এই নাটকটি বারবার পুনরাভিনীত হয়েছে। নাটকটির প্রথম প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জর্জ আলেকজান্ডার, অ্যালান এনেসওয়ার্থআইরিন ভ্যানব্রু প্রমুখ শিল্পীরা। এরপর ম্যাবেল টেরি-লুইস, জন গিলগুড, ইডিথ এভান্স, মার্গারেট রাদারফোর্ড, মার্টিন জার্ভিস, নাইজেল হ্যাভারসজুডি ডেঞ্চ প্রমুখ অন্যান্য অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী এই নাটকটিতে অভিনয় করেছেন। দুর্দান্ত লেডি ব্র্যাকনেলের চরিত্রটি কখনও কখনও পুরুষ অভিনেতারা অভিনয় করেন। ১৯২০-এর দশক থেকে দি ইমপোর্টেন্স অফ বিয়িং আর্নেস্ট নাটকটি বেতারে অভিযোজিত হয় এবং ১৯৩০-এর দশক থেকে টেলিভিশনে অভিযোজিত হয়। তিনবার চলচ্চিত্রায়িতও হয়েছে নাটকটি (১৯৫২ সালে অ্যান্টনি অ্যাসকিথের, ১৯৯২ সালে কার্ট বেকারের এবং ২০০২ সালে অলিভার পার্কারের পরিচালনায়)। এছাড়া এই নাটক অবলম্বনে অপেরা ও মিউজিক্যালও নির্মিত হয়েছে।

চরিত্রাবলি

সম্পাদনা
  • জ্যাক ওয়ার্দিং (আর্নেস্ট) - একজন তরুণ, যে গুয়েন্ডোলেন ফেয়ারফ্যাক্সকে ভালোবাসে।
  • অ্যালগারনন মনক্রিয়েফ - লন্ডনের একজন তরুণ, ল্যাডি ব্র্যাকনেলের ভাইপো, সেসিলি কার্ডিউকে ভালোবাসে।
  • গুয়েন্ডোলেন ফেয়ারফ্যাক্স - একজন তরুণী, যাকে জ্যাক ভালোবাসে।
  • সেসিলি কার্ডিউ - একজন তরুণী, জ্যাক ওয়ার্দিঙের ওয়ার্ড।
  • মিস প্রিজম - সেসিলির গভর্নেস।
  • রেভারেন্ড ক্যানন চেসুবল - জ্যাকের প্যারিশের যাজক।
  • লেন - অ্যালগারননের গৃহপরিচারিকা।
  • মেরিম্যান - জ্যাকের চাকর।

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা