তিরুমুরাই
তিরুমুরাই (Tamil: திருமுறை, অর্থ পবিত্র আদেশ) হলো তামিলনাড়ুর বিভিন্ন কবিদের দ্বারা খ্রিস্টীয় ৬ থেকে ১১ শতকের মধ্যে তামিল ভাষায় রচিত মহাদেবের প্রশংসায় গান বা স্তোত্রগুলোর একটি বারো খণ্ডের সংকলন। এর মধ্যে নাম্বিয়ান্দর নাম্বি দ্বাদশ শতাব্দীতে তেভারাম নাম দিয়ে আপ্পার, সম্বান্দর, এবং সুন্দরার প্রথম সাতটি খণ্ড সংকলন করেন। সময়ের প্রেক্ষাপটে, সে সময়ের পণ্ডিতগণ শৈব সাহিত্য সংকলন করার একটি শক্তিশালী প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন যাতে তিরুমুরাই অন্যান্য রচনাগুলোর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।[১] অষ্টম সংকলনটি করেন মানিকভাসাগর, যার মধ্যে তিরুভাসকাম এবং তিরুকোভায়ারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, নবম তিরুমুরাই হিসেবে নয়টি অংশ সংকলিত হয়েছে যার মধ্যে বেশিরভাগই অজানা। বিখ্যাত সিদ্ধর তিরুমুলার তিরুমন্দিরম নামক দশম খন্ডটি সংকলন করেন।[১] এগারোতম সংকলনটি কারাইকাল আম্মাইয়ার, চেরামন পেরুমল এবং অন্যান্যদের দ্বারা সংকলিত হয়। সমসাময়িক চোল রাজা নাম্বির কাজ দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং নাম্বির কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ একাদশ তিরুমুরাইতে নাম্বির কাজকে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।[১] এর ঠিক এক শতাব্দী পরে সেক্কিজার-এর পেরিয়া পুরাণমে ৬৩জন নয়নমারের জীবনাদর্শ চিত্রিত/অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।[১] শৈব পণ্ডিতগণ এবং কুলোথুঙ্গা চোল দ্বিতীয়ের মধ্যে এই কাজের প্রতিক্রিয়া এতটাই অসাধারণ ছিল যে এটি (পেরিয়া পুরানাম) ১২তম তিরুমুরাই হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।[১] বেদ এবং শৈব অগম সহ এই তিরুমুরাই দক্ষিণ ভারত এবং শ্রীলঙ্কার শৈব সিদ্ধান্ত দর্শনের ব্যাপক ভিত্তি তৈরি করেছিল।[২]
ইতিহাস এবং পটভূমি
সম্পাদনাতামিলভূমির ইতিহাসে পল্লব সময়কাল হলো শৈব নয়নারদের দ্বারা শৈবধর্মের ধর্মীয় পুনরুজ্জীবনের সময়কাল। সে সময়ে তারা তাদের ভক্তি স্তোত্র দ্বারা মানুষের হৃদয় জিতে নিয়েছিল। তারা ভক্তিমূলক স্তোত্রগুলোতে মহাদেবের স্তুতি গেয়ে মানুষের উপর একটি অসাধারণ ছাপ ফেলেছিলো।[৩] সংকলনে তিরুমুরাই সঙ্গম সাহিত্যকে ছাড়িয়ে যায়, যা প্রধানত ধর্মনিরপেক্ষ প্রকৃতির ছিলো।[৪] সম্পূর্ণ তিরুমুরাই হলো বিরুত্তম ছন্দের বা চার লাইনের। হেড-রাইমিংয়ের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি দলমাত্রিক এবং মরিক ছন্দ উভয় দ্বারাই প্রভাবিত হয়েছে।[৪]
কবিগণ
সম্পাদনাতিরুমুরাই | স্তব/স্তুতি/তিরুমুরাই | সময়কাল | লেখক/রচনাকার |
---|---|---|---|
১,২,৩ | তিরুকাদাক্কাপ্পু | খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দী | সম্বান্দর[৫][৬] |
৪,৫,৬ | তেভারম | খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দী | আপ্পার[৫][৬] |
৭ | তিরুপাত্তু | খ্রিস্টীয় ৮ম শতাব্দী | সুন্দরার[৫][৬] |
৮ | তিরুশকাম এবং থিরুকোভাইয়ার | খ্রিস্টীয় ৯ম শতাব্দী | মানিকবচকার |
৯ | তিরুভিসাইপ্পা এবং তিরুপল্লান্তু | খ্রিস্টীয় ৯ম শতাব্দী | তিরুমালিকাইতেভার |
সেন্তানার | |||
করভূর্তওয়ার | |||
নামপিকাটাভ নাম্পি | |||
গন্ডারাদিত্য | |||
ভেনাটিকাল | |||
তিরুভালিয়ামুথানার | |||
পুরোত্তমা নাম্পি | |||
সেতিরায়র | |||
১০ | তিরুমন্দিরম | খ্রিস্টীয় ৮ম শতাব্দী | তিরুমুলার |
১১ | প্রবন্ধম | ||
কারাইক্কল আম্মাইয়ার | |||
চেরামন পেরুমল নয়নার | |||
পট্টিনাথু পিল্লাইয়ার | |||
নক্কীরদেবর নয়না | |||
কপিলতেভা নয়নার | |||
তিরুভালভিউদ্যা | |||
যন্তরনাম্পি | |||
ইয়্যাদিগলকাতাভারকো নয়নার | |||
কল্লাদেব নয়নার | |||
প্রান্তেভা নয়নার | |||
ইলাম পেরুমান আদিগল | |||
অথর্বদিগল | |||
১২ | পেরিয়া পুরাণ | খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দী | সেক্কিঝার |
বন্দনা বা স্তব বা স্তোত্র
সম্পাদনাশৈব তিরুমুরাই সংখ্যায় বারোটি। প্রথম সাতটি তিরুমুরাই হলো তিনজন মহান শৈব সাধক রচিত স্তোত্র, রচনাকার হলেন সম্বন্দর, আপ্পার এবং সুন্দরার। এই স্তোত্রগুলো ছিলো তাদের যুগের সেরা সঙ্গীত রচনা। তেভারাম-এর প্রথম তিনটি তিরুমুরাই রচনা করেছেন সম্বন্দর, পরের তিনটি রচনা করেছেন আপ্পার এবং সপ্তমটি রচনা করেছেন সুন্দরার।[৭] এর মধ্যে আপ্পার এবং সম্বন্দর ৭ম শতাব্দীর কাছাকাছি সময়ে বসবাস করতেন, অন্যদিকে সুন্দরার ৮ম শতাব্দীতে বসবাস করতেন। পল্লব যুগে এই তিনজন শৈব সাধক তামিলনাড়ুর আশেপাশে ব্যাপকভাবে ভ্রমণ করেছিলেন এবং মহাদেবের প্রতি আবেগপূর্ণ ভক্তিমূলক বক্তৃতা এবং গান প্রচার করতেন।[৮] তাদের স্তোত্র গুলোর মধ্যে রয়েছে জৈন সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং জৈন ধর্মের সমালোচনা।[৯] সম্বন্দর ছিলেন ৭ম শতাব্দীর একজন শিশু কবি-সাধক যিনি ৬৫৫ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ১৬ বছর বয়সে মারা যান। তার শ্লোকগুলোতে সুর করেছিলেন নীলকান্তপেরুমলানার, যিনি কবির সাথে য়াল বা ল্যুটে (চৌদ্দ থেকে সতেরো শতকের মধ্যে বহুল ব্যবহৃত তারের বাজনা বিশেষ) বাজাতেন। তিরুমুরাইয়ের প্রথম তিনটি খণ্ডে ৩৮৩টি স্তোত্র রয়েছে।[৭]আপ্পার (ওরফে তিরুনাভুক্কারাসার) ৭ম শতাব্দীর মাঝামাঝি তামিলনাড়ুর তিরুভামুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং প্রায় ৮১ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনি যৌবনে জৈন ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, সময়ের পরিক্রমায় তিনি একটি জৈন মঠেরও প্রধান হন, কিন্তু তারপর পুনরায় শৈবধর্মে ফিরে আসেন। তিরুমুরাইয়ের ৪-৭ খণ্ডে আপ্পার-এর ৩১৩টি স্তোত্র রয়েছে। এগুলি অত্যন্ত ভক্তিমূলক, কিছুগুলিতে জৈন ধর্মের সমালোচনা রয়েছে, যেগুলি তার নিজের অভিজ্ঞতা ছিল।[৭] সুন্দরার (ওরফে সুন্দরমূর্তি) ৭ম শতাব্দীর শেষের দিকে জন্মগ্রহণ করেন।[৭] তিনি ৭ম তিরুমুরাই হিসেবে সংকলিত ১০০টি স্তোত্রের লেখক।[৭]
মণিকভাসাগর-এর তিরুভাসকম এবং তিরুকোভায়ার অষ্টম তিরুমুরাই হিসাবে সংকলিত হয়েছে এবং এতে দূরদর্শী অভিজ্ঞতা, ঐশ্বরিক প্রেম এবং তা সত্যের জন্য জরুরি প্রচেষ্টায় পূর্ণ।[১০] মানিকভাসাগর ছিলেন রাজার প্রধানমন্ত্রী এবং দেবত্বের সন্ধানে তিনি এ পদ ত্যাগ করেছিলেন।[১০]
নবম তিরুমুরাই রচনাকারীদের মধ্যে রয়েছেন যথাক্রমে: তিরুমালিকাইত্তেভার, সুন্দরার, কারুভুর্ত্তেভার, নাম্বিয়ানাদার নাম্বি, গন্ডারাদিত্য, ভেনাত্তটিকাল, তিরুভালিয়ামুতানার, পুরুতোত্তমা নাম্বি এবং সেতিরায়র। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন গন্দারাদিত্য (খৃস্টীয়: ৯৫০-৯৫৭), একজন চোল রাজা যিনি পরে একজন শৈব সাধক হয়েছিলেন।
কবি তিরুমুলারের তিরুমন্দিরম (আক্ষরিক অর্থ: পবিত্র মন্ত্র) সিদ্ধান্ত (প্রাপ্তি)র চারটি পথ হিসেবে উন্মোচিত হয়েছে, যেখানে ধার্মিক ও নৈতিক জীবনযাপন, মন্দির পূজা, আত্মিক উপাসনা এবং মহাদেবের সাথে মিলনের কথা বলা হয়েছে। এটি তিরুমুরাইয়ের বারোটি খণ্ডের দশম খন্ড এবং শৈব সিদ্ধান্তের মূল গ্রন্থ।[১০] এককথায় তিরুমুরাই হলো একটি মূল দার্শনিক পদ্ধতি যাতে মহাদেবের নৈকট্য লাভের বিষয়াদি বর্ণিত হয়েছে যা বিশেষ করে শৈব সম্প্রদায়ের লোকেরা বিশ্বাস করে এবং শৈব সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে দক্ষিণের স্কুল কর্তৃপক্ষ তিরুমন্দিরমে বর্ণিত ৩০০০টি শ্লোকের থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে কারণ তিরুমন্দিরম হলো তামিল ভাষায় শৈব আগমের প্রথম পরিচিত প্রকাশ। এটি আধ্যাত্মিকতা, নীতিশাস্ত্র ও শিবের প্রশংসার বিভিন্ন দিক সম্পর্কিত তিন হাজারেরও বেশি শ্লোক নিয়ে গঠিত।[১১] তিরুমন্দিরম অপর একটি চিন্তাধারারও প্রতিনিধিত্ব করে যা আগমিক ঐতিহ্যের বিবরণ তুলে ধরে, যা ভক্তি আন্দোলনের সাথে সমান্তরালভাবে বিবেচিত। যদিও এটি অন্যান্য তিরুমুরাই-এর মতো মন্দির বা দেবতাদের কে মহিমান্বিত করে না।[১১] তবে এটি ধর্মীয় থেকে বেশি আধ্যাত্মিক। তিরুমুলারের মহাবাক্যের ব্যাখ্যা থেকে কেউ কেউ বেদান্ত ও সিদ্ধান্তের মধ্যে পার্থক্য দেখতে পান। দার্শনিক ভেঙ্কটরামনের মতে, শাত্রটি তামিলদের সিদ্ধরের প্রায় প্রতিটি বৈশিষ্ট্যকে বহন করে। অন্যদিকে মাধবনের মতে, শাত্রটি সিদ্ধ ওষুধের মৌলিক বিষয় এবং এর নিরাময় ক্ষমতার উপর জোর দেয়। এটি জ্যোতির্বিদ্যা ও শারীরিক সংস্কৃতি সহ বিষয়গুলোর একটি বিস্তৃত সমাধান সমূহকে তুলে ধরেছে।[১২][১৩][১৪][১৫]
একাদশ তিরুমুরাই রচনা করেছিলেন যথাক্রমে: করাইকাল আম্মায়ার, চেরামান পেরুমাল, প্যাটিনাতু পি-পিলাইয়ার, নাক্কিরতেভার, কাপিলাতেভা, তিরুভালওয়াইদাইয়ার, নাম্বিয়ানাদার নাম্বি,আইয়্যাদিগল কাটভারকন,কলাদতেভা,পরানতেভা, ইলামপেরুমান আদিগাল এবং আথিরাভা আদিগাল। নাম্বির তিরুত্তোত্তনার তিরুবনথাথি অন্ততি ছন্দে তামিল ও সংস্কৃত শ্লোকগুলিকে অর্থ করার একচেটিয়া শৈলী অনুসরণ করেছে, ত্রয়ীর তেভারাম-এর মতো।[১৬] কারাইক্কল আম্মাইয়ার (খৃস্টীয়:৫৫০-৬০০)হলেন মহিলা শৈবদের মধ্যে প্রথম দিকের একজন মহিলা কবি যিনি কাট্টলাই-ক-কালি-ত-তুরাই ছন্দ প্রবর্তন করেছিলেন, যা পুরানো ধ্রুপদী/ক্লাসিক্যাল তামিল ছন্দের একটি জটিল কাঠামোগত বিচ্যুতি বলে বিবেচিত।[১৭] আম্মাইয়ারের ব্যবহৃত অন্য ছন্দটি ছিল একটি পুরানো ভেনবা এবং একটি অন্ততি বিন্যাস যাতে একটি লাইন বা স্তবকের শেষ পরবর্তী লাইন বা স্তবকের শুরুর সাথে অভিন্ন।[১৭]
পেরিয়া পুরাণ (তামিল:பெரியபுராணணம் অর্থাৎ মহান পুরাণ বা মহাকাব্য, যাকে কখনও কখনও তিরু-থন্ডর পুরাণম বা পবিত্র ভক্তদের পুরাণ বলা হয়) হলো একটি তামিল কাব্যিক পৌরাণিক কাহিনী যা তামিল শৈবধর্মের প্রামাণিক কবিদের তেষট্টি নয়নারদের কিংবদন্তি জীবন চিত্রিত করেছে। দ্বাদশ শতাব্দীতে এটি সংকলন করেছিলেন তিরুমুরাই কবি সেক্কিজার। এতে পশ্চিম এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়।[১৮] সেক্কিজার তিরুমুরাইয়ের উপাসনামূলক কবিতা রচনাকারী ঈশ্বরের কবি তেষট্টিজন শৈব নয়নার কবিদের জীবনকাহিনী নিয়ে তামিল ভাষায় পেরিয়া পুরাণম বা মহান পুরাণ সংকলন ও রচনা করেন পরবর্তীকালে সেক্কিজার নিজেই পুণ্যবান হয়ে ওঠেন এবং এই কাজটি পবিত্র ধর্মসম্মত বিধির অংশ হয়ে ওঠে।[১৯] পেরিয়া পুরাণ হলো শৈব প্রামাণিক রচনার অংশ। সেক্কিজার ছিলেন একজন কবি এবং চোল রাজা কুলোথুঙ্গা চোল দ্বিতীয়ের দরবারে মুখ্যমন্ত্রী।[২০] তামিলের সমস্ত হাজিওগ্রাফিক পুরাণের মধ্যে, সেক্কিজারের তিরুত্তোন্ডার (উচ্চারণ:তিরু-থন্ডর পুরাণম) পুরাণম বা পেরিয়া পুরাণ, যেটি কুলোথুঙ্গা চোলা দ্বিতীয় (খৃস্টীয়:১১৩৩) এর শাসনামলে রচিত (খৃস্টীয়:১১৫০), এর মধ্যে প্রথম অবস্থানে রয়েছে।
সংকলন
সম্পাদনারাজারাজা চোল প্রথম (শাসনকাল: ৯৮৫-১০১৩ খৃস্টাব্দ) তাঁর দরবারে তেভারাম-এর সংক্ষিপ্ত উদ্ধৃতি শোনার পর স্তোত্রগুলো পুনরুদ্ধার করার জন্য একটি সংকল্প শুরু করেন।[২১] তিনি তখন নাম্বিয়ান্দর নাম্বির কাছে সাহায্য চান, নাম্বি তখন একটি মন্দিরের পুরোহিত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন।[২২] এটা বিশ্বাস করা হয় যে, ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপে পুরোহিত নাম্বিয়ান্দর নাম্বি ভূর্জপত্রের মধ্যে লিপির অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছিলেন, এটি ছিল চিদাম্বরমের থিলাই নটরাজ মন্দিরের দ্বিতীয় প্রান্তের ভিতরে একটি প্রকোষ্ঠে, সাদা পিঁপড়ারা যার অর্ধেকটা খেয়ে ফেলেছিলো।[২১][২২] মন্দিরের ব্রাহ্মণরা (দীক্ষিতাররা) তখন রাজারাজাকে একটা ঐতিহ্য সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন এই বলে যে, শুধুমাত্র তিনজন কবি একত্রিত হলেই কক্ষটি খোলা যেতে পারে। রাজারাজা একটা উপায় খুঁজে পান চিদাম্বরমের রাস্তায় সাধু-কবিদের মূর্তিগুলোকে পবিত্র করে।[২১][২৩] ধারণা করা হয় যে, রাজারাজা পুনরায় তিরুমুরাই আবিষ্কার করেছিলেন কারণ তিনি তিরুমুরাই কান্দা চোলান নামে পরিচিতি লাভ করেন। তিরুমুরাই কান্দা চোলান অর্থ যিনি (পুনরায়) তিরুমুরাই আবিষ্কার করেছিলেন।[২৩] এই সময়কাল পর্যন্ত শিব মন্দিরগুলোতে শুধুমাত্র ঈশ্বরের মূর্তি ছিলো, কিন্তু রাজারাজার আবির্ভাবের পরে, নয়নার সাধুদের ছবিও মন্দিরের ভিতরে স্থাপন করা হয়।[২৩] পুরোহিত নাম্বিয়ান্দর নাম্বি, প্রথম সাতটি বই হিসেবে তিনজন সাধক কবি সাম্পন্তর, আপ্পার এবং সুন্দরারর স্তোত্র গুলো সাজিয়েছিলেন। অষ্টম গ্রন্থ হিসেবে মানিকভাসাগরের তিরুকোভায়ার এবং তিরুভাসকম, নবম গ্রন্থ হিসেবে আরও নয়জন সাধুর ২৮টি স্তোত্র, দশম বই হিসেবে তিরুমুলারের তিরুমন্দিরম এবং এতে পরবর্তীতে আরো ১২ জন কবির ৪০টি স্তোত্র যোগ করা হয়, তিরুতোতানার তিরুবন্তথি হলো ৬৩ জন নয়নার সাধুর শ্রমের পবিত্র অন্ততি, এবং ১১তম বই হিসেবে তারা এতে তাদের নিজস্ব স্তোত্র যোগ করেছেন।[২৪] প্রথম সাতটি বইকে পরে তেভারাম বলা হয়েছে এবং যাতে শৈব তথা মহাদেবের ধর্ম পালনের নিয়ম-কানুন গুলোকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, আর যা শেষে সেক্কিঝার রচিত দ্বাদশ গ্রন্থ পেরিয়া পুরাণ-এর সাথে যোগ করা হয়েছিলো যেটিকে পুরোপুরিভাবে পবিত্র গ্রন্থ তিরুমুরাই (প্রকাশকাল:খৃস্টীয় ১১৩৫) বলা হয়। এইভাবে শৈব সাহিত্য যা প্রায় ৬০০ বছরের ধর্মীয়, দার্শনিক এবং সাহিত্যিক ধারাকে বিকশিত করে।[২৪]
মন্দিরে পূজা
সম্পাদনাপাডাল পেট্রা স্থালামস হল ২৭৫টি [২৫]
যে মন্দিরগুলোতে তেভারাম-এর শ্লোকগুলোকে শ্রদ্ধা করা হয়েছে এবং যেখানে মহাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ শিব মন্দির রয়েছে। ভাইপ্পু থালাঙ্গল হচ্ছে এমন জায়গা যা তেভারামের গানে আকস্মিকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।[২৬] মূভার-এর (প্রথম তিনজন কবির) দর্শন মতে, স্তোত্রের কেন্দ্রবিন্দু হলো: পূজা (উপাসনা) নৈবেদ্যর মধ্যে দর্শন (ভগবানের দেখা লাভ করা ও ভগবান কর্তৃক দেখা)। স্তোত্রবিদরা জায়গা সমূহকে বিভিন্নভাবে ভাগ করেছেন। তারা কাতু (বনের জন্য), তুরাই (বন্দর বা আশ্রয়), কুলম (জলের ট্যাঙ্ক) এবং কালাম (ক্ষেত্র)-এর মতো স্থানগুলোর শ্রেণিবদ্ধ তালিকা তৈরি করেছিলেন, সুতরাং ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে কাঠামোগত এবং অসংগঠিত উভয় জায়গার উল্লেখই তেভারাম-এ পাওয়া যায়।[২৭] নবম তিরুমুরাই, থিরুভিসাইপ্পা-এর রচনায় উল্লিখিত মন্দিরগুলোকে তিরুভিসাইপা থালাঙ্গল বলা হয়।গঙ্গাইকোন্ডা চোলাপুরমের উপাসনালয় নিম্নরূপ পূজনীয়
তিনি গঙ্গাইকোন্ডা চোলেশ্বরমের মন্দিরের যে রূপ তার পূজার কল্পনা করেন।[২৮]
সংস্কৃতি
সম্পাদনাতিরুমুরাই এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিলো শিব মন্দিরে অনুসৃত বৈদিক আচার-অনুষ্ঠানকে আগমিক পূজায় রূপান্তরিত করা।[২৯] যদিও এই দুটি আচার-ব্যবস্থা একে অপরের সাথে জড়িয়ে রয়েছে, তন্মধ্যে আগমিক ঐতিহ্য বৈদিক ধর্মের আচারের কার্যকারিতার উপর বেশি জোর দেয় এবং একই সাথে তার স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।[২৯] অধুভার, স্থানিকর বা কাট্টলাইয়ার হলো তামিলনাড়ুর শিব মন্দিরে এক প্রকার সঙ্গীত অনুষ্ঠান যাকে তেভারম গানের অনুষ্ঠান বলে। এটি সাধারণত প্রতিদিনের আচার-অনুষ্ঠানের পর গাওয়া হয়।[৩০] এগুলো সাধারণত ঐশ্বরিক নৈবেদ্যর পরেই একটি সমবেত সংগীত হিসেবে করা হয়। এই রেকর্ডটি দক্ষিণ আরকোটের নল্লানিয়ার মন্দিরের কুলোথুঙ্গা চোলা তৃতীয় এর রেকর্ড থেকে নেয়া হয়েছে যা মন্দিরের কোন বিশেষ অনুষ্ঠানে মানিকভাসাগরের তিরুভেম্পাভাই এবং তিরুভালাম গান গাওয়াকে নির্দেশ করে।[২৩] ১৩ শতক থেকে, গ্রন্থগুলো অধীনম বা মঠ নামে অধুভারদের কাছে প্রেরণ করা হয় এবং যার উপর রাজারাজা্র বা ব্রাহ্মণদের আর কোন নিয়ন্ত্রণ ছিলো না।[৩১] অধুভাররা ভেল্লালা সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলো এবং তারা তেভারাম স্কুল থেকে আচার-অনুষ্ঠান গানের প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন।[৩১]
পেরিয়া পুরাণ, নয়নারদের উপর এগারো শতকের একটি তামিল বই যা তিরুমুরাই এর শেষ খণ্ড গঠন করতে সাহায্য করে, প্রাথমিক পর্যায়ে এটিতে শুধুমাত্র তেভারম-এর উল্লেখ ছিলো এবং পরবর্তীতে এটি ১২টি অংশে প্রসারিত হয় এবং এটির প্রথম সংকলন হলো তিরুমুরাই।[৩২] মূভার স্তোত্রগুলোর প্রথম সংকলনগুলোর মধ্যে একটি যাকে তেভারা আরুলমুরাইতিরাত্তু বলা হয়, যেটি নিরানব্বইটি পদকে ১০টি বিভাগে বিভক্ত করে তামিল শৈব/শৈব সিদ্ধান্ত দর্শনের সাথে যুক্ত।[৩২] এই বিভাগের শিরোনামগুলো হলো: ঈশ্বর, আত্মা, বন্ধন, করুণা, গুরু, পদ্ধতি, জ্ঞান, আনন্দ, মন্ত্র এবং মুক্তি- উমাপতির কাজ, যেটি তিরুভারুত্পায়ন-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।[৩৩] তিরুমুরাই কান্দা পুরাণ হলো ' তিরুমুরাই'-এর অন্য একটি সংকলন, তবে এটি প্রাথমিকভাবে তেভারম-এর উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। যার প্রথম কাজ হচ্ছে খণ্ডের সংগ্রহকে তিরুমুরাই হিসেবে চিহ্নিত করা।[৩৩]
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- Swamigal, Thirugnana Sambandar। "Campantar Tevaram -1 part 1, patikams 1-66" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Thirugnana Sambandar। "Campantar Tevaram -1 part 2, patikams 67-136" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Thirugnana Sambandar। "Campantar Tevaram -2 part 1, patikams 1-60" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Thirugnana Sambandar। "Campantar Tevaram -2 part 2, patikams 61-122" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Thirugnana Sambandar। "Campantar Tevaram -3 part 1, patikams 1-66" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Thirugnana Sambandar। "Campantar Tevaram -3 part 2, patikams 67-125 & later additions" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Tirunavukkarasu। "Tevaram of Tirunavukkaracu Cuvamikal Tirumurai 4 part - 1 Poems(1-487)" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Tirunavukkarasu। "Tevaram of Tirunavukkaracu Cuvamikal Tirumurai 4 part - 2 Poems(488-1070)" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Tirunavukkarasu। "Tevaram of Tirunavukkaracu Cuvamikal Tirumurai 5 part - 1 Poems(1-509)" (পিডিএফ)। /projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Tirunavukkarasu। "Tevaram of Tirunavukkaracu Cuvamikal Tirumurai 5 part - 2 Poems(510-1016)" (পিডিএফ)। /projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Tirunavukkarasu। "Tevaram of Tirunavukkaracu Cuvamikal Tirumurai 6 part - 1 Poems(1-508)" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Tirunavukkarasu। "Tevaram of Tirunavukkaracu Cuvamikal Tirumurai 6 part - 2 Poems(509-981)" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Sundaramurthi। "Tevaram of Tirunavukkaracu Cuvamikal Tirumurai 7, part 1 Poems (1-517)" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
- Swamigal, Sundaramurthi। "Tevaram of Tirunavukkaracu Cuvamikal Tirumurai 7, part 2 Poems (518-1026)" (পিডিএফ)। projectmadurai.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৪।
টীকা
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Das 2005, p. 86
- ↑ Subramuniyaswami 2003, p. 551
- ↑ Subramuniyaswami 2003, p. 541
- ↑ ক খ Shackle 1994, pp. 118-119
- ↑ ক খ গ Cutler 1987, p. 4
- ↑ ক খ গ Zvelebil 1974, p. 92
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Zvelebil 1974, pp. 95-96
- ↑ N. Subramaniam (১৯৭৫)। Social and Cultural History of Tamilnad (to AD 1336)। Ennes Publication Udumalpet 642 128। পৃষ্ঠা 277।
- ↑ Peterson 1989, পৃ. 19–27, 276–287।
- ↑ ক খ গ Subramuniyaswami 2003, p. 494
- ↑ ক খ Das 2005, pp. 148-149
- ↑ The Encyclopaedia Of Indian Literature (Volume Two) (Devraj To Jyoti), Volume 2, page 1625
- ↑ Saivism in Philosophical Perspective, page 31
- ↑ A Short Introduction: The Tamil Siddhas and the Siddha Medicine of Tamil Nadu, page 7
- ↑ A dictionary of Indian literature, Volume 1, page 393
- ↑ Prentiss 1992, p. 111
- ↑ ক খ Zvelebil 1974, p. 97
- ↑ "Glimpses of life in 12th century South India"। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ A Dictionary of Indian Literature By Sujit Mukherjee.
- ↑ Criminal Gods and Demon Devotees By Alf Hiltebeitel.
- ↑ ক খ গ Culter 1987, p. 50
- ↑ ক খ Cort 1998, p. 178
- ↑ ক খ গ ঘ Vasudevan 2003, pp. 109-110
- ↑ ক খ Zvelebil 1974, p. 191
- ↑ "A comprehensive description of the 275 Shivastalams glorified by the Tevaram hymns"। templenet.com। ২৫ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১১।
- ↑ International review for the history of religions, Volumes 15-17. International Association for the History of Religions, CatchWord (Online service)
- ↑ Prentiss 1992, pp. 51-52
- ↑ Coward 1987, p. 151
- ↑ ক খ Cort 1998, p. 176
- ↑ Ghose 1996, p. 239
- ↑ ক খ Khanna 2007, p. xxii
- ↑ ক খ Prentiss 1992, p. 140
- ↑ ক খ Prentiss 1992, p. 144
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- Aiyangar, Krishnaswami S. (২০০৪), South India and Her Muhammadan Invaders, New Delhi: Asian Educational Services, আইএসবিএন 81-206-0999-9 .
- Ayyar, P. V. Jagadisa (১৯৯৩)। South Indian shrines: illustrated। Asian Educational Services। আইএসবিএন 81-206-0151-3।
- Bhargava, Gopal K.; Shankarlal C. Bhatt (২০০৬)। Land and people of Indian states and union territories. 25. Tamil Nadu। Delhi: Kalpaz Publications। আইএসবিএন 81-7835-381-4।
- Callewaert, Winand M.; Rupert Snell (১৯৯৪)। According to tradition: hagiographical writing in India। Otto Harrasowitz। আইএসবিএন 3-447-03524-2।
- Coward, Harold G., সম্পাদক (১৯৮৭)। Modern Indian responses to religious pluralism। New York: State University of New York। পৃষ্ঠা 151। আইএসবিএন 0-88706-571-6।
- "Carnatic music"। Encyclopædia Britannica (15 সংস্করণ)। ২০০৫।
- "Classical Notes: Musical people"। The Hindu। Archived from the original on ৬ মার্চ ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০১-১০।
- Cort, John E. (১৯৯৮)। Open boundaries: Jain communities and culture in Indian history। Albany: State University of New York Press। আইএসবিএন 0-7914-3786-8।
- Cutler, Norman (১৯৮৭)। Songs of experience: the poetics of Tamil devotion। USA: Library of Congress Cataloging-in-Publication-Data। আইএসবিএন 0-253-35334-3।
- Das, Sisir Kumar; Sāhitya Akādemī (২০০৫)। A history of Indian literature, 500-1399: from courtly to the popular। chennai: Sāhitya Akādemī। আইএসবিএন 81-260-2171-3।
- Eliot, Charles (২০০৭-০৯-০১)। Hinduism and Buddhism, Vol II. (of 3)। Middlesex: Eco Library। আইএসবিএন 978-1-4068-6296-6।
- Knight, Douglas M. Jr.; Douglas M. Knight (২০০১)। Balasaraswati: her art & life। Middle Town CT: Weslyen University Press। আইএসবিএন 978-0-8195-6906-6।
- Khanna, Meenakshi (২০০৭)। Cultural History of Medieval India। Delhi: Social Science Press। আইএসবিএন 978-81-87358-30-5।
- Harman, William P. (১৯৯২), The sacred marriage of a Hindu goddess, Delhi: Indiana University Press, আইএসবিএন 978-1-59884-655-3 .
- Peterson, Indira Viswanathan (১৯৮৯)। Poems to Siva: The Hymns of the Tamil Saints। Princeton: Princeton University Press। আইএসবিএন 9780691067674। ওসিএলসি 884013180। জেস্টোর j.ctt7zvqbj।
- Prentiss, Karen Pechilis; Karen Pechilis (১৯৯৯), The embodiment of bhakti, New York: Oxford University Press, আইএসবিএন 0-19-512813-3 .
- Sabaratnam, Lakshmanan (২০০১)। Ethnic attachments in Sri Lanka: social change and cultural continuity। Palgrave। আইএসবিএন 0-312-29348-8।
- Schüler, Barbara (২০০৯)। Of death and birth: Icakkiyamman̲, a Tamil goddess, in ritual and story। Otto Harrasowitz। আইএসবিএন 978-3-447-05844-5।
- Subramuniyaswami, Satguru Sivaya (২০০৩), Dancing With Siva : Hinduism's Contemporary Catechism, Himalayan Academy, আইএসবিএন 0-945497-89-X .
- Vasudevan, Geetha (২০০৩), The royal temple of Rajaraja: an instrument of imperial Cola power, New Delhi: Abhinav Publications, আইএসবিএন 81-7017-383-3
- Zvelebil, Kamil (১৯৭৪)। A History of Indian literature Vol.10 (Tamil Literature)। Otto Harrasowitz। আইএসবিএন 3-447-01582-9।