চার্লস ব্যানারম্যান
চার্লস ব্যানারম্যান (ইংরেজি: Charles Bannerman; জন্ম: ৩ জুলাই, ১৮৫১ - মৃত্যু: ২০ আগস্ট, ১৯৩০) ইংল্যান্ডের কেন্ট এলাকার ওউলিচ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত টেস্ট ক্রিকেটার ছিলেন। ১৮৭৭ থেকে ১৮৭৯ সময়কালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | চার্লস ব্যানারম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ওউলিচ, কেন্ট, ইংল্যান্ড | ৩ জুলাই ১৮৫১|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২০ আগস্ট ১৯৩০ সারে হিলস, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া | (বয়স ৭৯)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি লেগ স্পিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান, আম্পায়ার, কোচ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১) | ১৫ মার্চ ১৮৭৭ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৪ জানুয়ারি ১৮৭৯ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৮৭০ - ১৮৮৮ | নিউ সাউথ ওয়েলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আম্পায়ারিং তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট আম্পায়ার | ১২ (১৮৮৭–১৯০২) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ৬ মার্চ ২০১৭ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট দলের পক্ষ হয়ে খেলেছেন।[১] ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি মাঠে নামতেন।
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাউইলিয়াম ব্যানারম্যান ও তার স্ত্রী মার্গারেট (বিবাহ-পূর্ব মার্ফি) দম্পতির সন্তান চার্লস ব্যানারম্যান ইংল্যান্ডের কেন্ট শহরের ওউলিচ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। অল্পকিছুদিন পরই এ দম্পতি অভিবাসিত হয়ে নিউ সাউথ ওয়েলসে চলে আসেন। সিডনি শহরের ওয়ারউইক ক্রিকেট ক্লাবে যোগ দেন চার্লস।[২] ঐ ক্লাবে নিউ সাউথ ওয়েলস ক্লাবের প্রতিনিধিত্বকারী ও সারে দলের সাবেক ক্রিকেটার উইলিয়াম কাফিন তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। ১৮৭০-৭১ মৌসুমে পেশাদারী পর্যায়ে প্রথমবারের মতো খেলার পর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে তার অভিষেক হয়। ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তিনি ৩২ ও ৩ রান তুলেছিলেন।[৩] ১৮৭৪ সালে ভিক্টোরিয়ান বুশর্যাঞ্জার্সের বিপক্ষে ৮১ ও অপরাজিত ৩২* রান করে সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন তিনি।
খেলোয়াড়ী জীবন
সম্পাদনাটেস্ট ক্রিকেট খেলা প্রবর্তনের প্রথম তিনটি খেলাতেই তিনি অংশগ্রহণ করেন। মার্চ, ১৮৭৭ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে মাত্র শতাধিক দর্শকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম খেলায় ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে তিনি প্রথম বল মোকাবেলা করার বিরল সৌভাগ্য অর্জন করেন। প্রথম বোলার হিসেবে ছিলেন ইংল্যান্ডের আলফ্রেড শ। তিনি টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম রান সংগ্রহ করেন। দুই অঙ্কের সংখ্যায় পৌঁছানোর পূর্বেই আউট হবার সুযোগ সৃষ্টি করেও শেষ পর্যন্ত ১৬৫ রান করে তাকে জর্জ ইউলিটের বলে আঙ্গুলে আঘাত পাবার জন্য রিটায়ার্ড হার্ট নিতে হয়েছে। এরফলে তিনি টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম সেঞ্চুরি করার গৌরব লাভ করেন।[৪][৫] অদ্যাবধি অভিষেক টেস্টে অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রানরূপে চিহ্নিত হয়ে আছে। অস্ট্রেলিয়া দলের ২৪৫ রানের মধ্যে তার অংশগ্রহণ ছিল ৬৭.৩৫%। অস্ট্রেলিয়ার কোন ব্যাটসম্যানই ২০ রানের বেশি করতে পারেননি।[৬] অস্ট্রেলিয়া খেলায় ৪৫ রানে জয়লাভ করে। তার এ অর্জনে অভিভূত হয়ে দর্শকেরা খেলায় সংগৃহীত অর্থ প্রদান করে। ১৮৭৭ ও ১৮৭৯ সালে তিনি আরও দুই টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি সর্বমোট ২৩৯ রান সংগ্রহ করেন ৫৯.৭৫ রান গড়ে।
১৮৭৮ সালে অস্ট্রেলিয়া দল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম ইংল্যান্ড সফরে যায়। সফরে ব্যানারম্যান রান গড়ে শীর্ষস্থানে ছিলেন ও ইংল্যান্ডে প্রথম অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি করেন। কিন্তু সফরের কোন ক্রিকেট খেলাই টেস্ট ম্যাচের মর্যাদা পায়নি। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনি ২১.৬২ রান গড়ে ১,৬৮৭ রান করেন। এরপর তিনি আর কখনও অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেননি। শারীরিক স্বাস্থ্যের অবনতি, তারকাখ্যাতি অর্জনে বিমুখতাসহ জুয়াখেলায় ঋণগ্রস্ত ও অত্যধিক মদ্যপানই এর কারণ। তবে ১৮৮৮ সাল পর্যন্ত নিউ সাউথ ওয়েলস ক্রিকেট দলের হয়ে খেলতে থাকেন।
আম্পায়ারিত্ব
সম্পাদনা১৮৮৭ সাল থেকে ১৯০২ সালের সময়কালে ব্যানারম্যান অস্ট্রেলিয়ায় ১২ টেস্ট ম্যাচে আম্পায়ারিত্ব করেন। ২৮ থেকে ৩১ জানুয়ারি, ১৮৮৭ তারিখে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মধ্যকার টেস্ট খেলায় আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন। তার সাথে ছিলেন একমাত্র টেস্ট ম্যাচে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালনকারী হেনরি রলিনসন। ১৯০১-০২ মৌসুমে ব্যানারম্যান তার সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচে আম্পায়ারের দায়িত্বে ছিলেন। মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত নিচু স্কোরের ঐ খেলায় অস্ট্রেলিয়া ৩২ রানে জয়ী হয়েছিল। একই সাথে তার সঙ্গী ছিলেন প্রথম আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্বপালনরত বব ক্রোকেট। দুই খেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব পালন করলেও খেলোয়াড় হিসেবে তার ভাই ছিলেন আলিক। চার ইনিংসে আলিক করেছিলেন মাত্র ২৩ রান।
১৮৯৭-৯৮ মৌসুমে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম টেস্টে ব্যানারম্যান অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান জো ডার্লিংয়ের বিপক্ষে একটি জোড়ালো এলবিডব্লিউ’র আবেদন নাকচ করেন। এ সময় খেলা নাটকীয় অবস্থানে ছিল। এলবিডব্লিউ’র আবেদন যথার্থ থাকলেও আম্পায়ারের সম্মুখ দিয়ে দৌঁড়ানোয় তা অদৃশ্যমান ছিল ও আবেদনটি নাকচ হয়ে যায়। তখন ডার্লিং ৫০ রানে ছিলেন ও পরবর্তীকালে নিজ সংগ্রহশালাকে ১৬০ রানে রূপান্তরিত করেন। অস্ট্রেলিয়া দল বিজয়লাভে সক্ষম হয়। খেলার পর ব্যানারম্যান আনুষ্ঠানিকভাবে ইংরেজ উইকেট-রক্ষকের বিপক্ষে ছল-চাতুরীর অভিযোগ উত্থাপন করেন।
অবসর-পরবর্তী জীবন
সম্পাদনা১৯২২-২৩ মৌসুমে বিশ্বে প্রথমবারের মতো রেডিওতে ক্রিকেট খেলার সরাসরি সম্প্রচার কার্য শুরু হয় যা চার্লস ব্যানারম্যানের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত বিষয়ে। সম্প্রচার কার্য থেকে তিনি £৪৯০ পাউন্ড-স্টার্লিং লাভ করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। সিডনিতে ব্যানারম্যানের দেহাবসান ঘটে। এসময় তিনি মেরি অ্যান (বিবাহ-পূর্ব কিং), দুই পুত্র ও তিন কন্যা রেখে যান। তন্মধ্যে এলেন (বিবাহ-পূর্ব নিল) নাম্নী প্রথম পত্নীর সন্তান ছিল তিনজন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "List of Players who have played for New South Wales". www.cricketarchive.com. Retrieved 20 March, 2017
- ↑ M. Z. Forbes (১৯৬৯)। "Bannerman, Charles (1851–1930)"। Australian Dictionary of Biography, Volume 3। MUP। পৃষ্ঠা 86–87। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-০২।
- ↑ "New South Wales v Victoria"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০১৫।
- ↑ Test #1
- ↑ "Records / Test matches / Batting records / Hundred on debut"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ Forbes, M.Z. (১৯৬৯)। "Bannerman, Charles (1851–1930)"। Australian Dictionary of Biography। Australian National University। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫।
আরও দেখুন
সম্পাদনাগ্রন্থপঞ্জী
সম্পাদনা- Harte, Chris (১৯৯৩)। A History of Australian Cricket। London: Andre Deutsch। আইএসবিএন 0-233-98825-4।
- Pollard, Jack, Australian Cricket: 1803-1893, The Formative Years. Sydney, The Book Company, 1995. (আইএসবিএন ০-২০৭-১৫৪৯০-২)
- Pollard, Jack, Australian Cricket: 1893-1917, The Turbulent Years. Sydney, The Book Company, 1995. (আইএসবিএন ০-২০৭-১৫৪৬৮-৬)
- Pollard, Jack, Australian Cricket: The Game and the Players. Sydney, Hodder & Stoughton, 1982. (আইএসবিএন ০-৩৪০-২৮৭৯৬-৯)
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে চার্লস ব্যানারম্যান (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে চার্লস ব্যানারম্যান (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- The breakup of Bannerman's hundred
রেকর্ড | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী প্রথম ধারক |
বিশ্বরেকর্ড - টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান সংগ্রহকারী ১৬৫* বনাম ইংল্যান্ড, ১৮৭৬-৭৭, মেলবোর্ন |
উত্তরসূরী বিলি মারডক |
অস্ট্রেলীয় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট মৌসুমে শীর্ষস্থানীয় রানসংগ্রহকারী (১৮৫০-৫১ থেকে ১৮৯৯-০০) | |
---|---|
| |
|