ইসলামি ধর্মতত্ত্ব

(ইসলামী ধর্মতত্ত্ব থেকে পুনর্নির্দেশিত)

আকীদা বা ইসলামি ধর্মতত্ত্ব হলো ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস ব্যবস্থাসমূহকে শেখা, গবেষণা ও চর্চা করার জন্য সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা। পৃথিবীর মোট মুসলিম জনসংখ্যার ৮৭-৮৮% হলো সুন্নি মুসলিম এবং ১১-১২% হলো শিয়া মুসলিম। মোট শিয়া জনসংখ্যার প্রায় ৯০% ইমামত মতাদর্শে বিশ্বাসী।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আবদুল্লাহ মুসাবির দ্বারা অঙ্কিত – ধর্মতাত্ত্বিকদের সভা, ১৬ শতকের মধ্যভাগে।

প্রকরণ

সম্পাদনা

মুসলিম ধর্মতত্ত্বের প্রকরণগুলোর উৎস হলো কুরআন, হাদিসমুহাম্মদের জীবনের বিভিন্ন ঘটনা (সিরাতুর রাসুলুল্লাহ)।

আকিদার মতবাদসমূহ

সম্পাদনা

প্রথাগত সুন্নি মতবাদসমূহ

সম্পাদনা
  1. কালাম (সুন্নি)
    1. আশআরী(সুন্নি)
    2. মাতুরিদি (সুন্নি)
  2. আছারী (সুন্নি)

সুন্নি মুসলমানরা বিশ্বাস করেন যে, আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের (ইসলামে যাকে "ঈমান" বলা হয়) ছয়টি দিক রয়েছে: আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, ফেরেশতাদের উপর বিশ্বাস, ঐশ্বরিক মাধ্যম হতে আগত গ্রন্থসমূহ (ইসলামে যাকে "আসমানী কিতাব" বলা হয়), যেমন- তাওরাত, যাবুর, ইনজিল ও কুরআনের প্রতি বিশ্বাস, নবীরাসুলদের উপর বিশ্বাস, "অন্তিম সময়" বা শেষ যুগের উপর বিশ্বাস (ইসলামে "কিয়ামত" বলা হয়) এবং পূর্বনির্ধারিত সময় বা পুনরুত্থানের উপর বিশ্বাস।

কালাম, অর্থাৎ ইলমুল কালাম (বাচনের প্রজ্ঞা) হচ্ছে ধর্মতত্ত্বের মূলনীতিসমূহকে পারষ্পারিক যুক্তিতর্কের মাধ্যমে অনুসন্ধান করার ইসলামি দর্শনআরবি ভাষায়, কালাম শব্দের অর্থ হলো "কথা"। কালামে পারদর্শী পন্ডিতকে বলা হয় মুতাকাল্লিম (মুসলিম ধর্মতত্ত্ববিদ, বহুবচনে মুতাকাল্লিমীন)।

মনজুর এলাহি তার "সমাজ সংস্কারে সঠিক আকীদার গুরুত্ব" বইতে কালামশাস্ত্র সম্পর্কে বলেন,[]

মুতাকাল্লিমীনগণ আকীদা শাস্ত্রকে ‘‘ইলমুল কালাম’’ এবং দার্শনিকগণ ‘‘আল-ফালসাফা আল-ইসলামিয়্যাহ’’ বা ইসলামী দর্শন, ‘‘আল-ইলাহিয়্যাত’’ ও ‘‘মেটাফিজিক্স’’ (অতিপ্রাকৃতিকতা) নামে অভিহিত করেছেন। শেষোক্ত এ নামগুলো সম্পর্কে ড. নাসের আল-আকলসহ আরো অনেকে বলেন যে, ইসলামী আকীদাকে এসকল নামে অভিহিত করা মোটেই শুদ্ধ নয়। এর কারণ বর্ণনায় মুহাম্মদ ইবরাহীম আল হামাদ বলেন, “কেননা ইলমুল কালামের উৎস হল মানব বুদ্ধি-বিবেক, যা হিন্দু ও গ্রিক দর্শন নির্ভর। পক্ষান্তরে তাওহীদের মূল উৎস হল ওহী। তাছাড়া ইলমুল কালামের মধ্যে রয়েছে অস্থিরতা, ভারসাম্যহীনতা, অজ্ঞতা ও সংশয়-সন্দেহ। এজন্যই সালাফে সালেহীন ইলমুল কালামের নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন। আর তাওহীদ হল জ্ঞান, দৃঢ় বিশ্বাস ও ঈমান নির্ভর,….. আরেকটি কারণ এও বলা যেতে পারে যে, দর্শনের ভিত্তি অনুমান, বাতিল আকীদা, কাল্পনিক চিন্তা ও কুসংস্কারচ্ছন্ন ধারণার উপর স্থাপিত”। ইমাম হারাওয়ী ذم الكلام وأهله নামে ৫ খন্ডের একটি বই এবং ইমাম গাযযালী تهافت الفلاسفة নামে একটি বই রচনা করেছেন। এছাড়া ‘ইলমুল কালাম’ ও ‘ফালসাফা’ যে সঠিক ইসলামী আকীদার প্রতিনিধিত্ব করে না, সে বিষয়ে ইমাম ইবনে তাইমিয়া ও ইবনুল কাইয়েমসহ আরো বহু মুসলিম স্কলার বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

মুতাজিলা
সম্পাদনা
  1. ইবাদি (খারেজি)

মুজাতিলা মতাবলম্বীরা মানুষ ও তাদের স্রষ্টার মধ্যকার সম্পর্কের মধ্যে অদৃষ্টবাদের উপর মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাকে জোড় দেয় এবং ঈশ্বরের অসীম ক্ষমতার উপর ঈশ্বরের ন্যায়বিচারকে অর্পণ করে। মুতাজিলা মতাবলম্বীরাও কুরআনের প্রকৃত অর্থ নির্ধারণের জন্য যুক্তির ব্যবহারে বিশ্বাস করে। এটি এবং ইজতিহাদের মূলনীতি, তাদের গতিশীল ফিকহের প্রতি বিশ্বাসের দিকে পরিচালিত করেছিল।

আশʿআরিবাদ বা আশআরী আকিদা বা আশʿআরি ধর্মতত্ত্ব[][] (আরবি: أشعرية, প্রতিবর্ণীকৃত: al-ʾAšʿarīyah বা ٱلْأَشَاعِرَة) হল সুন্নি ইসলামের প্রধানতম ধর্মতাত্ত্বিক মাজহাব যা শাস্ত্রীয় কর্তৃত্ব, যৌক্তিকতা[][] এবং অর্ধ-যুক্তিবাদের[][][][] ভিত্তিতে সর্বজনগৃহীত আকিদাগত দিকনির্দেশনা প্রদান করে।[] আরব ধর্মতত্ত্ববিদ আবুল হাসান আল-আশআরি এই মতবাদ প্রতিষ্ঠা করেন।[১০] এই মতাবলম্বীদের আশʿআরি[] এবং মতবাদকে আশʿআরি মাজহাব[] নামেও অবিহিত করা হয়। আশʿআরিবাদ সুন্নি ইসলামের সবচেয়ে প্রভাবশালী ধর্মতাত্ত্বিক চিন্তাধারা।[১১] এটিকে মাতুরিদি[১২][১৩]আসারি মাজহাবের পাশাপাশি সুন্নি ইসলামের অন্যতম অর্থোডক্স ধর্মতাত্ত্বিক মাজহাব হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[১৪]

মাতুরিদি
সম্পাদনা

মাতুরিদি (আরবি: الماتريدية) হল সুন্নি ইসলামের অন্তর্গত অন্যতম প্রধান ধর্মতাত্ত্বিক মাজহাব। এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন আবু মনসুর আল-মাতুরিদি যিনি সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নিদের মধ্যে ইতোমধ্যে বিদ্যমান আকিদাগুলোকে একটি সুসংবদ্ধ কালামশাস্ত্রীয় চিন্তাধারায় উপনীত করেন এবং যৌক্তিকতা[১৫]যুক্তিবাদের[১৬][১৭] ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মাতুরিদি মতবাদকে আশআরি মতবাদের পাশাপাশি সর্বজনগৃহীত বা অর্থডক্স সুন্নি আকিদা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[১৮]

মাতুরিদিবাদ পারস্যের সুন্নি মুসলমান, হানাফিআহলে আর রায়ের মাঝে বরাবরই প্রভাবশালী ছিল এবং অটোমান সাম্রাজ্যমোগল সাম্রাজ্যে অগ্রগণ্য মাজহাবের মর্যাদা লাভ করেছিল। এর বাইরে অধিকাংশ তুর্ক, মধ্য এশীয়দক্ষিণ এশীয় সুন্নি মুসলমানরা মাতুরিদি আকিদায় বিশ্বাসী। আরব মুসলিমদের মধ্যেও মাতুরিদিবাদী পণ্ডিত বিদ্যমান।[১৯]

পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, তুর্কিস্তান, আমু দরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাসমূহ, যেমন: উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, বুখারা, সমরকন্দ, তাশখন্দ, তিরমিজ ইত্যাদি অঞ্চলের অধিকাংশ মুসলমান মাতুরিদি মতাবলম্বী।

আসারি (আরবি: الأثرية, "আল-আসারিয়্যাহ"), অন্যান্য নাম: সনাতনবাদী ধর্মতত্ত্ব, প্রথাবাদী ধর্মতত্ত্ব, ঐতিহ্যবাদী ধর্মতত্ত্ব, পরম্পরাবাদী ধর্মতত্ত্ব বা মূলগ্রন্থবাদী ধর্মতত্ত্ব বা ইসলামী অক্ষরবাদী ধর্মতত্ত্ব, হলো একটি ইসলামি পাণ্ডিত্যনির্ভর আন্দোলন, যা ৮ম শতাব্দীর শেষের দিকে উদ্ভূত হয়, যারা কুরআনহাদিসের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে জাহির অর্থবাচকতার সমর্থনের ফলশ্রুতিতে ইলমুল কালামকে প্রত্যাখ্যান করে থাকে। [২০][২১] এই নামটি কৌশলগত দৃষ্টিকোণ হতে আরবি শব্দ "হাদিস"-এর অনুবাদ হিসেবে আছার (প্রথা বা ঐতিহ্য) নামক শব্দ থেকে এসেছে। একে মাঝেমধ্যে অন্যান্য নামেও ডাকা হয়।

ঐতিহ্যবাদী ধর্মতত্ত্বের অনুসারীগণ কুরআনের জাহির (আক্ষরিক, প্রত্যক্ষ) অর্থে বিশ্বাস করে এবং হাদিস হলো তাদের বিশ্বাস ও আইনকানুনের সকল বিষয়ে বিধিবিধানের একমাত্র ভিত্তি এবং তাদের কাছে যৌক্তিক সমালোচনা হল নিষিদ্ধ, এমনকি যদি তা সত্য যাচাই করার জন্য হয় তবুও।[২২] তাঁরা কুরআনকে আক্ষরিক অর্থে পড়ে থাকে এবং তাঁরা কুরআনকে রূপকার্থে ব্যাখ্যা করার (তাউইল) বিরোধিতা করে। তাঁরা কুরআনের অর্থকে যুক্তির ভিত্তিতে ধারণা করার প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকে এবং তারা বিশ্বাস করে যে, তাদের বাস্তবতা শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে সমর্পণ করা উচিত, যাকে তাফউইদ বলা হয়।[২৩] মোটকথা, কুরআন ও হাদিসের লেখনীকে তাঁরা কোনো রকম প্রশ্ন করা ব্যতিরেকে গ্রহণ করে থাকে, যাকে বলা হয় "বি-লা কাইফা", যার ফলে এই মতবাদটিকে কুরআনীয় অক্ষরবাদী বা ইসলামী অক্ষরবাদী মতবাদও বলা হয়ে থাকে।

ঐতিহ্যবাদী ধর্মতত্ত্ব বা আসারি মতবাদ মুহাদ্দিসদের মাঝে বিস্তৃতি লাভ করে, যারা পরবর্তীতে আহমদ ইবনে হাম্বলের (৭৮০-৮১৫) অনুসরণে "আহলুল হাদিস" নামে একটি আন্দোলনের মাধ্যমে সংগঠিত হন।[২৪] ধর্মবিশ্বাসের বিষয়সমূহে, তাঁরা মুতাজিলা ও সমসাময়িক অন্যান্য ধর্মতত্ত্বের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল, এবং তারা সেসকল ধর্মতত্ত্বের মূলনীতির বিভিন্ন বিষয়কে দোষারোপ করতো, যার মধ্যে অন্যতম ছিল অন্যান্যদের নিজস্ব আত্মরক্ষামূলক যুক্তিনির্ভর ব্যাখ্যাপদ্ধতি।[২৪] ১০ম শতাব্দীতে, আশআরীমাতুরিদি ধর্মতত্ত্ব মুতাজিলা যুক্তিবাদ ও হাম্বলি আক্ষরিকতাবাদের মাঝখানে মুতাজিলাদের যুক্তিনির্ভর ব্যখাপদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে মধ্যস্থতা তৈরি করে, যাকে মুতাজিলাগণ আছারীদের অধিকাংশ বিশ্বাসকে প্রতিহত করতে ব্যবহার করত।[২৫] যদিও যে সকল হাম্বলি পণ্ডিত এই সংমিশ্রণকে প্রত্যাখ্যান করেছিল তাঁরা ছিল সংখ্যালঘু, তাদের ধর্মবিশ্বাসের প্রতি তাদের আবেগপ্রবণ ও বর্ণনা-ভিত্তিক পদক্ষেপ কিছু এলাকার শহুরে লোকজনের মধ্যে প্রভাবশালী অবস্থায় থেকে গিয়েছিল, আর তা ছিল প্রধানত আব্বাসীয় খিলাফতের শাসনামলে বাগদাদ এলাকায়।[২৬]

যদিও আশআরীমাতুরিদি মতবাদকে প্রায়শই সুন্নি "সনাতন ধারা" বলে ডাকা হয়, আছারী মতবাদও এদের পাশাপাশি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, যার অনুসারীরা একে সনাতন সুন্নি ধর্মবিশ্বাস বলে দাবি করে আসছে।[২৭] আধুনিক যুগে, ইসলামী ধর্মতত্ত্বের উপর আছারী মতবাদের একটি ধারণাতীত প্রভাব রয়েছে, যা ওয়াহাবি ও অন্যান্য সমসাময়িক ঐতিহ্যবাদী (আসারি) সালাফি অনুসারীদের দ্বারা অনুসৃত হচ্ছে এবং তা হাম্বলি মতাদর্শের সীমা অতিক্রম করে আরও বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।[২৮]

  1. জাফরি (শিয়া; ইসমাইলিসহ)
  2. জায়েদি (শিয়া)
  3. দ্বাদশী (উসূল আল দীন) (শিয়া)

শিয়া মুসলমানরা বিশ্বাস করেন যে আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের পাঁচটি দিক রয়েছে: ঐশ্বরিক একত্ব (ইসলামে যাকে "তাওহিদ" বলা হয়), ন্যায়বিচার, নবুওয়ত (নবিত্ব), ইমামত্বপরকালবিদ্যা

জায়েদি

সম্পাদনা

জায়েদি (আরবি: الزيدية, প্রতিবর্ণীকৃত: al-Zaidiyyah; পঞ্চমী নামে পরিচিত) হল শিয়া ইসলামের একটি শাখা যা ধর্মতাত্ত্বিক দিক দিয়ে ইবাদিমুতাজিলা চিন্তাধারার এবং ফিকহশাস্ত্রীয় ক্ষেত্রে হানাফি মাজহাবের নিকটবর্তী। অষ্টম শতাব্দীতে শিয়া চিন্তাধারা থেকে জায়েদি মতবাদ উৎপত্তিলাভ করে।[২৯] তৃতীয় ইমাম হোসাইন ইবনে আলীর দৌহিত্র এবং চতুর্থ ইমাম আলী ইবনে হোসাইনের পুত্র জায়েদ ইবনে আলীর নামানুসারে জায়েদিদের নামকরণ করা হয়।[২৯] জায়েদি মাজহাবের অনুসারীদের জায়েদি শিয়া নামে অবিহিত করা হয়। জায়েদিরা ইয়েমেনের মোট মুসলিম জনসংখ্যার ৫০% যা দেশটির বৃহত্তম শিয়া মুসলমান সম্প্রদায়৷[৩০][৩১]

বাতেনি

সম্পাদনা

বাতিন (আরবি: باطن) শব্দের আক্ষরিক অর্থ- "ভিতর", "অভ্যন্তরীণ", "লুকানো" ইত্যাদি। উদাহরণস্বরূপ, কুরআনের বাহ্যিক বা আপাত অর্থে, যহিরের বিপরীতে একটি লুকানো অর্থও আছে। সুফিরা বিশ্বাস করে যে প্রত্যেক ব্যক্তির আত্মার জগতে একটি বাতিন আছে। ইহা ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ সত্ত্বা; যখন আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শকের আলো দ্বারা শুদ্ধ করা হয়, তখন তা আধ্যাত্মিকভাবে উন্নীত হয়।[৩২][৩৩] এই ধারণা লুকানো আল্লাহর গুণাবলীর সাথে সংযুক্ত, যাকে দেখা যায় না কিন্তু জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিদ্যমান।

ইসনা আশারিয়া

সম্পাদনা

ইসনা আশারিয়াত যার বাংলা অর্থ দ্বাদশী (আরবি: ٱثْنَا عَشَرِيَّة, প্রতিবর্ণীকৃত: ʾIthnā ʿAšarīyah; ফার্সি: شیعه دوازده‌امامی, প্রতিবর্ণীকৃত: Šī'eh-ye Davâzdah-Emâmī), যা ইমামিয়াত (আরবি: إِمَامِيَّة, প্রতিবর্ণীকৃত: Imāmīyah) নামেও পরিচিত, হল শিয়া ইসলামের বৃহত্তম শাখা। দ্বাদশী শব্দটি দ্বারা এর অনুসারীদের বারোজন ঐশ্বরিকভাবে মনোনীত নেতা তথা বারো ইমামে বিশ্বাস এবং সর্বশেষ ইমাম মুহম্মদ আল-মাহদীকে অন্তর্হিত ইমাম ও প্রতীক্ষিত মাহদী হিসেবে বিশ্বাস করাকে বোঝানো হয়। শিয়া ঐতিহ্য অনুসারে মাহদীর শাসনামল নবী ঈসার দ্বিতীয় আগমনের সমসাময়িক হবে এবং ঈসা মাহদীকে দজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহযোগিতা করবেন।

ইসনা আশারিয়ারা বিশ্বাস করে যে বারো ইমাম হলেন নবী মুহাম্মদের আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক উত্তরসূরী। এই ধর্মতত্ত্ব অনুযায়ী বারো ইমাম অনুকরণীয় মানবীয় ব্যক্তিত্ব যাঁরা ন্যায়বিচারের সাথে সমাজ পরিচালনার পাশাপাশি শরীয়তকোরআনের গূঢ়ার্থ সংরক্ষণ ও ব্যাখ্যা করতে সক্ষম। মুহাম্মদ ও ইমামদের কথা ও কাজ (সুন্নত) জনসমাজের জন্য অনুসরণীয় পথপ্রদর্শক ও আদর্শ; ফলে তাঁদের অবশ্যই ত্রুটি ও পাপমুক্ত হতে হবে এবং অবশ্যই মুহাম্মদের মাধ্যমে ঐশী ফরমান বা নাস দ্বারা মনোনীত হতে হবে।[৩৪][৩৫][৩৬]

ইসনা আশারিয়া মতবাদ শিয়া ইসলামের বৃহত্তম শাখা যা গোটা শিয়া সম্প্রদায়ের ৮৫% এবং সংখ্যায় প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ মিলিয়ন।[৩৭][৩৮][৩৯][৪০]

জাহমি (আরবি: جهمي) একটি মতবাদ। জা’দ ইবন দিরহাম (১১৮ হি) নামক একজন নতুন প্রজন্মের পারসিক মুসলিম মহান আল্লাহর গুণাবলি অস্বীকার করে তাঁকে ‘নির্গুণ’ বলে দাবি করতে থাকেন। তার ছাত্র জাহম ইবন সাফওয়ান সামারকান্দী (১২৮ হি)।[৪১] তিনি এ মতটিকে জোরালোভাবে প্রচার করতে থাকেন এবং এর সাথে অনেক দর্শনভিত্তিক মতবাদ তিনি প্রচার করেন।

ক্বাদারিয়া

সম্পাদনা

মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণকারী হিসেবে ইসলামে কাদারিয়া সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে। তাদের কাদারিয়া বলা হয় কারণ তারা এই মত পোষণ করেন মানুষের কাজ করার 'কাদর' বা শক্তি আছে।[৪২][৪৩] এই মতবাদের প্রবক্তারা মানুষের ইচ্ছা বা কর্মের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। কাদারিয়াদের মতে, আল্লাহ বা বিধাতা কাজের জন্য সরাসরি দায়ী হতে পারেন না, কারণ কাজ ভালো বা মন্দ উভয়ই হতে পারে। মানুষ তার নিজের কাজের মালিক কিন্তু তার কাজ করার ক্ষমতা বিধাতা কর্তৃক প্রদত্ত। এই অর্থে বিধাতা চূড়ান্তভাবে কাজের কর্তা বা মালিক। কোনো বহিঃশক্তি দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে মানুষ তার নিজের কাজের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণে তার নিজস্ব শক্তি আছে।[৪৪] এই সম্প্রদায়ের কেউ কেউ দাবি করেন যে মানুষের কাছে কিছু ঐশী ক্ষমতা হস্তান্তর বা অর্পণ করা হয়েছে এবং মানুষের যেটা সঠিক এবং যেটা ভুল তা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নিঃশর্ত বিবেচনামূলক ক্ষমতা আছে।[৪৫] তাদের কিছু মতবাদ পরে মু'তাজিলিদের দ্বারা গৃহীত হয় এবং আশআরিয়দের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়।[৪৪]

কাদারিয়া ইসলামের প্রথমদিকে দার্শনিক ধর্মতত্ত্বের একটি। এই আন্দোলন নিয়ে পাওয়া প্রাচীনতম দলিল হচ্ছে হাসান আল-বসরির রিসালা, যা ৭৫/৬৯৪ থেকে ৮০/৬৯৯ এর মধ্যে লেখা হয়। অবশ্য ইসলামে মুক্ত ইচ্ছা নিয়ে বিতর্ক এই লেখার পূর্বে পাওয়া যায়।

সুন্নি সূত্র মতে, জরাথুস্ট্রবাদের সাথে তুলনা দিয়ে মুহাম্মদ নিজেই এর নিন্দা জানিয়েছেন।[৪৬] সুনান আবু দাউদে বর্ণিত হয়েছে: "আব্দুল্লাহ ইবনে উমর: নবী বলেন, "কাদারিয়াহ হল এই সম্প্রদায়ের মাজিয়ান। যদি তারা অসুস্থ হয়, তবে তাদের কাছে যাবেন না, আর যদি তারা মারা যায় তবে তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যাবেন না।"

মুহাক্কিমা

সম্পাদনা

বিচারের ঘটনার শেষে যে দলগুলো আলীর সেনাবাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল তারা মুহাক্কিমা (আরবি: محكمة) নামক শাখা গঠন করেছিল। তারা প্রধানত খারেজী ও ইবাদি নামে দুটি প্রধান সম্প্রদায়ে বিভক্ত।

খারেজি

সম্পাদনা

খারিজি (আরবি: الخوارج, আল-খাওয়ারিজ, একবচন خارجي, খারিজি), আশ-শুরাহও বলা হয় (আরবি: الشراة, প্রতিবর্ণীকৃত: আশ-শুরাহ "যে (টাকা) ভাঙিয়ে দেয়") শব্দ দ্বারা ইসলামের প্রথম যুগে উদ্ভব হওয়া একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে বুঝায়। ৭ম শতাব্দীতে এই গোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছিল। ইরাকের দক্ষিণাশে তারা কেন্দ্রীভূত হয়েছিল। সুন্নিশিয়াদের থেকে খারিজিরা ভিন্ন মত পোষণ করত। পরবর্তীতে সময়ের সাথে সাথে খারিজিরা সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়। খলিফা আলি ইবনে আবি তালিবের শাসন শুরু হওয়ার পর তারা প্রথমে তা মেনে নেয়, তবে পরে তার শাসন প্রত্যাখ্যান করে। আলি নিজেও আবদুর রহমান ইবনে মুলজাম নামক একজন খারিজির হাতে নিহত হন।

ইবাদি ইসলাম (আরবি: الإباضية, প্রতিবর্ণীকৃত: al-Ibāḍiyyah), ইবাদি মতবাদ বা ইবাদি আন্দোলন হল ইসলামের একটি শাখা যা ওমানে সবচেয়ে প্রভাবশালী।[৪৭] এছাড়া আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়াপূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে এর অস্থিত্ব রয়েছে। বলা হয়ে থাকে যে এই আন্দোলন ৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে বা মহানবী হজরত মুহম্মদের (স.) মৃত্যুর ২০ বছর পর শুরু হয় যা সুন্নিশিয়া মতবাদের চেয়েও প্রাচীন।[৪৮] আধুনিক ঐতিহাসিকেরা এর উৎপত্তি সন্ধান করতে গিয়ে একে খারিজি আন্দোলনের একটি মধ্যপন্থী ধারা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।[৪৯][৫০][৫১]: সমসাময়িক ইবাদিরা তাদের খারিজি হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করার তীব্র বিরোধিতা করেন, যদিও তারা স্বীকার করেন যে তাদের আন্দোলন ৬৫৭ খ্রিষ্টাব্দের খারিজি বিদ্রোহ থেকে উৎপত্তিলাভ করেছে।[৫১]:

ইবাদি ইসলামের একটি ক্ষুদ্র মাযহাব। এই মাযহাব সুন্নি বা শিয়া পন্থার অন্তর্ভুক্ত নয়। এর আবির্ভাব ইবাদি আন্দোলন থেকে। এই আন্দোলন মহানবীর প্রয়াণের ২০ বছর পর শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। আব্দুল্লাহ ইবন ইবাদ আল-তামিমিকে এই মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা মনে করা হয়। কিন্তু এই মাযহাবের অনুসারীরা দাবি করেন যে এর প্রতিষ্ঠাতা জাবির ইবন জাইদ আল-আজদি। এই মতবাদের ওপর খারিজিদের প্রভাব আছে বলে মনে করা হয়।[৫২] ইবাদিরা নিজেদের "মুসলমান" বা "সরলতার লোক" বলে উল্লেখ করেন।[৫৩][৫৪]

মুরজিয়া

সম্পাদনা

মুরজিয়াহ (আরবি: المرجئة) ছিল একটি প্রাথমিক ইসলামী বিদ্যালয় যার অনুসারীরা আরবিতে "মুরজিউন" বা "আল-মুরজিউন" (المرجئون) নামে পরিচিত। পাপ এবং ধর্মত্যাগের (রিদা) মধ্যে সম্পর্ক বিষয়ে এটি খারিজিদের প্রাথমিক প্রশ্নের জবাবে মুরজিয়া একটি ধর্মতাত্ত্বিক বিদ্যালয় হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল। মুরজিয়াহরা বিশ্বাস করতেন যে পাপ একজন ব্যক্তির বিশ্বাস (ইমান) প্রভাবিত করে না বরং তাদের পূণ্য বা তাকওয়াই ইমানকে প্রভাবিত করে। অতএব, তারা "বিলম্বিত রায়" (ইরজা) ধারণার পক্ষে ছিল। মুর্জিয়ারা বলে যে, যে কেউ ন্যূনতম ঈমান ঘোষণা করে তাকে অবশ্যই মুসলমান হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং শুধুমাত্র পাপই কাউকে কাফের করতে পারে না। মুরজিয়ার মতবাদ শেষ পর্যন্ত খারিজিদের উপর প্রাধান্য পায় এবং সুন্নি ইসলামের মূলধারার মত হয়ে ওঠে। সুন্নি ধর্মতত্ত্বের পরবর্তী বিদ্যালয়গুলো তাদের অবস্থানকে নিজেদের ভেতরে গ্রহণ করে এবং তা থেকে আরও বিকশিত ধর্মতাত্ত্বিক বিদ্যালয় এবং ধারণা তৈরি করে।

তাশবিহ

সম্পাদনা

তাশবিহ (আরবি: تشبيه) একটি ইসলামিক ধর্মীয় ধারণা যার অর্থ নৃতাত্ত্বিকতা, ঈশ্বরকে তাঁর সৃষ্টির সাথে একীভূত করা/তুলনা করা। ইসলামী ধর্মতত্ত্বে, দুটি বিপরীত শব্দ আল্লাহর প্রতি আরোপিত হয়, তাশবিহ এবং তানজিহ (অতিক্রম)।

তাশবিহের পূর্ণ অর্থ হল 'সাদৃশ্য নিশ্চিত করা', অর্থাৎ ঈশ্বর ও তাঁর সৃষ্টির মধ্যে সাদৃশ্য নিশ্চিত করা। এই ধারণাটি চিরন্তনভাবে আল্লাহর তানজিহ (অতিক্রম বা 'অসংগতি ঘোষণা') এর সাথে যুক্ত।

তা'তিল, ঈশ্বরকে তাঁর গুণাবলী থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া এবং তাশবিহ, নৃতাত্ত্বিকতা, উভয়কেই সুন্নিদের দ্বারা ধর্মদ্রোহিতা বলে মনে করা হয়।

শিয়া শিক্ষায় তাশবিহ বহুল প্রচলিত ছিল, বিশেষ করে ৮ম শতকের খ্রিস্টাব্দের জাইদি ইমাম আল-কাসিম আল-রাসি-এর চিন্তাধারায়।

কারিমিয়াত

সম্পাদনা

কাররামিয়াহ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন কাররাম। ইবনে কাররাম মনে করতেন যে ঈশ্বর একটি পদার্থ এবং যখন তিনি আরশের সংস্পর্শে আসেন তখন নির্দিষ্ট দিকে তাঁর একটি সসীম দেহ (জিসম) ছিল।

চরমপন্থী শিয়া ইতিহাসে আল্লাহর মানবরূপ ধারণ

সম্পাদনা

অবতারের বিশ্বাস প্রথমে সাবাইয়াতে আবির্ভূত হয়েছিল, এবং পরে কিছু ব্যক্তিত্বকে যেমন মুহাম্মদ ইবনে আল-হানাফিয়া, আবু মুসলিম, সানপদ, ইসহাক আল-তুর্ক, আল-মুকান্না, বাবাক খোররামদিন, মাজিয়ার এবং প্রথম ইসমাইলকে আল্লাহর অবতার হিসেবে গুলাত শিয়াগণ বিশ্বাস করতেন।

আহমদীয়া

সম্পাদনা

আহমদীয়া; পূর্ণরূপে আহমদীয়া মুসলিম জামাত (উর্দু: احمدیہ مسلم جماعت‎‎; আরবি: الجماعة الإسلامية الأحمدية) একটি মুসলিম ধর্মীয় পুনর্জাগরণ অথবা মসিহবাদী আন্দোলন যার উদ্ভব হয়েছিল ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ব্রিটিশ ভারতের কাদিয়ান এলাকার মির্যা গোলাম আহমদের জীবন ও শিক্ষার ভিত্তিতে। মির্যা গোলাম আহমদ (১৮৩৫-১৯০৮) দাবী করেছিলেন যে আল্লাহ তাকে আখেরী জামানায় প্রতিশ্রুত ও মুসলমানদের প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদীপ্রতিশ্রুত মসীহ (যীশু বা ঈসা) উভয় হিসেবেই প্রেরণ করেছেন ইসলামের চূড়ান্ত বিজয় শান্তিপূর্ণভাবে সংঘটিত করতে এবং অন্যান্য ধর্মীয় মতবাদের প্রতীক্ষিত পরকালতাত্ত্বিক ব্যক্তিত্বদের মূর্ত করতে। নবী মোহাম্মদের বিকল্প নাম 'আহমদ' থেকে এই আন্দোলন ও সদস্যগণ ('আহমদী মুসলিম' বা সংক্ষেপে 'আহমদী') নিজেদের নামকরণ করলেও সাধারণভাবে মুসলিম বিশ্বে তাদের প্রতিষ্ঠাতার জন্মগ্রহণকারী অঞ্চলের নাম কাদিয়ান এর নামে কাদিয়ানী হিসেবেই আখ্যায়িত করা হয়।

আহমদীরা বিশ্বাস করে যে মির্যা গোলাম আহমদ ইসলামকে তার আসল প্রথমযুগীয় অবস্থায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী কিতাবে উল্লেখিত যীশু বা ঈসার গুণবিশিষ্ট ইমাম মাহদী হয়ে এসেছেন ইসলামকে পুনরুজ্জীবিত করতে ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে এর নৈতিক ব্যবস্থা চলমান করতে। তারা আরও বিশ্বাস করে যে মির্যা গোলাম আহমদ ইসলামের শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ(সা.) এর প্রদর্শিত পথে পাঠানো একজন “উম্মতী নবী”। তাদের মতে নবুয়াত খাতামান্নাবিঈন এর অর্থ নবুয়াত এর সমাপ্তি নয় বরং খাতামান্নাবিঈন মানে "নবীগনের মোহর" বা নবীগনের সত্যায়নকারী। তাদের মতে নবী মোহাম্মদ এর প্রকৃত অনুসরণে নতুন নবী আসতে পারবেন তবে তিনি হবেন ‘উম্মতী নবী’ ও তিনি কোনো নতুন শরীয়ত আনবেন না।[৫৫] আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত বা সুন্নীদের মতে, এই ‘উম্মতী নবীর’ ধারণা কুরআনহাদীস দ্বারা সমর্থিত নয় এবং তারা তাদেরকে ইসলামের অন্তর্ভুক্ত মানে না।[৫৬][৫৭] আহমদীয়াদের মতে যেহেতু তারা কালিমা তৈয়্যিবা ‘লা ইলাহা ইলাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ মনে প্রাণে বিশ্বাস করে বলে তাদের ‘অমুসলিম’ ঘোষণা করার অধিকার কারো নেই।[৫৮]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. ইলাহী, মোহাম্মদ মানজুরে। যাকারিয়া, আবু বকর মুহাম্মাদ, সম্পাদক। সমাজ সংস্কারে সঠিক আকীদার গুরুত্ব, (পিডিএফ)। রিয়াদ, সৌদি আরব: Islamic Propagation Office in Rabwah। পৃষ্ঠা ১৯–২৮। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০২২ 
  2. Re: The Ummah is Ashari - Abu Mussab Wajdi Akkari / Yusuf Qaradawi (ইংরেজি ভাষায়), সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১১ 
  3. "al-Ashʿari" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে. Random House Webster's Unabridged Dictionary.
  4. Halverson 2010, পৃ. 14-15।
  5. Weeks, Douglas. "The Ideology of Al Muhajiroun." Al Muhajiroun. Palgrave Macmillan, Cham, 2020. 103-140.
  6. Gyekye, Kwame. "Theology and Law in Islam." (1976): 304-306.
  7. Fah̲rī, Mağīd. Ethical theories in Islam. Vol. 8. Brill, 1991.
  8. Hashas, Mohammed. "Is European Islam Experiencing an Ontological Revolution for an Epistemological Awakening?." American Journal of Islamic Social Sciences 31: 4 (2014): 14.
  9. Cyril Glassé, Huston Smith The New Encyclopedia of Islam Rowman Altamira 2003 আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭৫৯-১০১৯০-৬ page 63
  10. Tabyin Kadhib al-Muftari fima Nussiba ila al-Imam al-Ash`ari (Ibn 'Asakir)
  11. Juan Eduardo Campo Encyclopedia of Islam New York, NY 2009 আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪৩৮-১২৬৯৬-৮ page 66
  12. Halverson 2010, পৃ. 9।
  13. Hughes 2013, পৃ. 193-194।
  14. Pall, Zoltan (৩১ জানুয়ারি ২০১৩)। Lebanese Salafis Between the Gulf and Europe। Amsterdam University Press। পৃষ্ঠা 18। আইএসবিএন 9789089644510। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৬ 
  15. Schlesinger, Sarah J. "The Internal Pluralization of the Muslim Community of Bosnia-Herzegovina: From Religious Activation to Radicalization." Master’s Research Paper. Boston University (2011).
  16. Жусипбек, Галым, Жанар Нагаева, and Альберт Фролов. "Ислам и плюрализм: Что могут предложить идеи школы аль-Матуриди? Журнал Аль-Фараби, Алматы, No 4 (56), 2016 (p. 117-134)." "On the whole, the authors argue that the Maturidi school which is based on 'balanced theological rationalism', 'metaphysics of diversity', 'subjectivity of faith' and 'to be focused on justice and society-centeredness' "
  17. Zhussipbek, Galym, and Zhanar Nagayeva. "Epistemological Reform and Embracement of Human Rights. What Can be Inferred from Islamic Rationalistic Maturidite Theology?." Open Theology 5.1 (2019): 347-365.
  18. "Maturidiyah"Britanicca। Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৬ 
  19. Thomas Pierret (২৫ মার্চ ২০১৩), Religion and State in Syria: The Sunni Ulama from Coup to Revolution, Cambridge University Press, পৃষ্ঠা 102, আইএসবিএন 9781139620062 
  20. Abrahamov (2014)
  21. Halverson, Jeffry R. (২০১০)। Theology and Creed in Sunni Islam: The Muslim Brotherhood, Ash'arism, and Political Sunnism। Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 36। আইএসবিএন 9781137473578The Atharis can thus be described as a school or movement led by a contingent of scholars (ulama), typically Hanbalite or even Shafi'ite, which retained influence, or at the very least a shared sentiment and conception of piety, well beyond the limited range of Hanbalite communities. This body of scholars continued to reject theology in favor of strict textualism well after Ash'arism had infiltrated the Sunni schools of law. It is for these reasons that we must delineate the existence of a distinct traditionalist, anti-theological movement, which defies strict identification with any particular madhhab, and therefore cannot be described as Hanbalite. 
  22. Halverson, Jeffry R. (২০১০)। Theology and Creed in Sunni Islam: The Muslim Brotherhood, Ash'arism, and Political Sunnism । Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 36আইএসবিএন 9781137473578 
  23. Halverson, Jeffry R. (২০১০)। Theology and Creed in Sunni Islam: The Muslim Brotherhood, Ash'arism, and Political Sunnism । Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 36–37। আইএসবিএন 9781137473578 
  24. Lapidus (2014)
  25. Blankinship (2008); Lapidus (2014)
  26. Halverson (2010)
  27. Brown (2009): "The Ash‘ari school of theology is often called the Sunni ‘orthodoxy.’ But the original ahl al-hadith, early Sunni creed from which Ash‘arism evolved has continued to thrive alongside it as a rival Sunni ‘orthodoxy’ as well."
  28. Hoover (2014)
  29. Regional Surveys of the World: The Middle East and North Africa 2003। London, England: Europa Publications। ২০০৩। পৃষ্ঠা 149। আইএসবিএন 978-1-85743-132-2 
  30. Stephen W. Day (২০১২)। Regionalism and Rebellion in Yemen: A Troubled National Union। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 31আইএসবিএন 9781107022157 
  31. http://gulf2000.columbia.edu/images/maps/Yemen_Ethno_Religious_summary_lg.png
  32. Daftary, Farhad (2000). Intellectual traditions in Islam New York: St. Martins Press. আইএসবিএন ১৮৬০৬৪৭৬০X. p. 90.
  33. Gleave, Robert (2011). Islam and literalism: Literal meaning and interpretation in Islamic legal theory. Edinburgh: Edinburgh University Press. আইএসবিএন ০৭৪৮৬৩১১৩৫. Page 64.
  34. Tabataba'i 1977, পৃ. 10
  35. Momen 1985, পৃ. 174
  36. Weiss 2006, পৃ. 14
  37. worldatlas.com
  38. worldometers.info
  39. Atlas of the Middle East (Second ed.). Washington D.C: National Geographic 2008
  40. The World Factbook 2010 Retrieved 2010-08-25.
  41. Hoover, J. (১ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। "Perpetual Creativity in the Perfection of God: Ibn Taymiyya's Hadith Commentary on God's Creation of this World"। Journal of Islamic Studies15 (3): 287–329। ডিওআই:10.1093/jis/15.3.287 
  42. জে. এম কাওয়ান (সম্পাদক) (১৯৭৬)। The Hans Wehr Dictionary of Modern Written Arabic। উইসবাডেন, জার্মানি: স্পোকেন ল্যাঙ্গুয়েজ সার্ভিসেস। আইএসবিএন ০-৮৭৯৫০-০০১-৮
  43. Qadariyah, Britannica.com
  44. জন এল. এসপোসিতো, সম্পাদক (২০১৪)। "Qadariyyah" দ্য অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ ইসলাম। অক্সফোর্ড: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। 
  45. নজরুল ইসলাম মজুমদার (১০ জুন ২০১১)। "মুর্জিয়া, কাদারিয়া, জাবারিয়া এবং সিফাতিয়া"কালের কণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  46. সাচিকো মুরাতা, উইলিয়াম চিটিক (১৯৯৪)। "৬"। The vision of Islam (চিত্রিত সংস্করণ)। প্যারাগন হাউস। পৃষ্ঠা ২৫৮। আইএসবিএন 9781557785169 
  47. Vallely, Paul (১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। "Schism between Sunni and Shia has been poisoning Islam for 1,400 years - and it's getting worse"The Independent 
  48. Donald Hawley, Oman, pg. 201. Jubilee edition. Kensington: Stacey International, 1995. আইএসবিএন ০৯০৫৭৪৩৬৩৬
  49. John L. Esposito, সম্পাদক (২০১৪)। "Ibadis"The Oxford Dictionary of Islam। Oxford: Oxford University Press। ২০ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ নভেম্বর ২০২২ 
  50. Lewicki, T. (১৯৭১)। "al-Ibāḍiyya" Lewis, B.; Ménage, V. L.; Pellat, Ch. & Schacht, J.The Encyclopaedia of Islam, New Edition, Volume III: H–Iram। Leiden: E. J. Brill। পৃষ্ঠা 648–660। 
  51. Hoffman, Valerie Jon (২০১২)। The Essentials of Ibadi IslamSyracuse: Syracuse University Pressআইএসবিএন 9780815650843 
  52. "faith and power",(1982)
  53. "ধর্মীয় শিক্ষা ও ওমানের অভিজ্ঞতা"। ২০১৮-০২-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-১৯ 
  54. "মুসলিম বিশ্ব : ধর্ম ও রাজনীতি | daily nayadiganta"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-১৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  55. Finality of Prophethood
  56. "কাদিয়ানী সম্প্রদায় পর্যালোচনা"। মাসিক আলকাউসার। ফেব্রুয়ারি ২০১৩। 
  57. "কাদিয়ানী সম্প্রদায় পর্যালোচনা ২"। মাসিক আলকাউসার। মার্চ ২০১৩। 
  58. Ahmadis are True Muslims

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা