আলিপুর বোমা মামলা

ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিরোধী আন্দোলনের একটি ঘটনাক্রম

আলিপুর বোমা মামলা হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কোর্টের মামলার বিচার যেটি মে ১৯০৮ থেকে মে ১৯০৯ পর্যন্ত চলেছিলো।[] এই মামলায় ৩৭ জনের অধিক সন্দেহভাজনকে আলিপুর সেশন কোর্টে বিচার করা হয়, ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে বিচার করে পি. সি. বিচক্রফট।[]

আলিপুর বোমা মামলার আদালত কক্ষ, ১৯৯৭ এর আলোকচিত্র।

আলিপুর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার জেলা-সদর ও কলকাতার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত একটি অঞ্চল। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গেও এই অঞ্চলের যোগ অত্যন্ত গভীর।

৩০ এপ্রিল ১৯০৮-এ মুজাফফরপুর, বিহারে রাত সাড়ে আটটায় ইওরোপিয়ান ক্লাবের সামনে বোমা ছুড়ে তিনজনকে হত্যা করেন ক্ষুদিরাম বসু। সেই ঘটনার পরা এই মামলা শুরু হয়। হত্যার দায়ে অভিযুক্তদের বিচার শুরু হয় ২১ মে ১৯০৮ তারিখে। বিচারক ছিলেন জনৈক ব্রিটিশ পি. সি. বিচক্রফট এবং দুইজন ভারতীয়, লাথুনিপ্রসাদ ও জানকিপ্রসাদ।

বিচার ও রায়

সম্পাদনা

৩০ এপ্রিল, মুজাফফরপুর বোমা হামলার ঘটনার পরে ২ মে ৩২ নং মুরারিপুকুরের বাগানবাড়ি তল্লাশি করে পুলিশ বোমার কারখানা আবিষ্কার করে। পরে মামলা শুরু হয় ২১ মে ১৯০৮ তারিখে। ১৯০৯ সালের ৬ মে আলিপুর বোমা মামলার রায় দেওয়া হয়। রায়ে বিচারক বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, ও উল্লাসকর দত্তকে মৃত্যুদণ্ড দেন। উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র কানুনগো, বিভূতিভূষণ সরকার, বীরেন্দ্র সেন, সুধীর কুমার সরকার, ইন্দ্রনাথ নন্দী, অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য, শৈলেন্দ্রনাথ বসু, হৃষিকেশ কাঞ্জিলাল, ইন্দুভূষণ রায়ের, দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। পরেশ মৌলিক, শিশির ঘোষ, নিরাপদ রায় ১০ বছর দ্বীপান্তর দণ্ড, অশোক নন্দী, বালকৃষ্ণ হরিকোণে, শিশির কুমার সেন ৭ বছর দ্বীপান্তর দণ্ড এবং কৃষ্ণজীবন সান্যাল ১ বছর কারাদণ্ড প্রাপ্ত হন। আপিলে বারীন্দ্রকুমার ঘোষ ও উল্লাসকর দত্তের মৃত্যুদণ্ড রহিত হয় এবং তার বদলে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। অরবিন্দ ঘোষ মুক্তি পান এবং অনেকের সাজা হ্রাস করা হয়।[]

আলিপুর বোমা মামলায় অভিযুক্ত বিপ্লবী

সম্পাদনা

আলিপুর বোমা মামলায় অভিযুক্ত বিপ্লবীদের তালিকা।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Documents in the Life of Sri Aurobindo: The Judgment in the Alipore Bomb Case", Sri Aurobindo Ashram Trust, 2007, webpage: SriAurobindoAshram.org-doc16 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে.
  2. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গণ, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ৭৯।