আবুল হাসান যশোরী
আল্লামা আবুল হাসান যশোরী (১৯১৮–১৯৯৩) একজন মুক্তিযোদ্ধা, মুহাদ্দিস, রাজনীতিক ও ইসলামী চিন্তাবিদ। তিনি জামিয়া ইসলামিয়া গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় হাদিসের অধ্যাপক (শায়খুল হাদীস) হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন এবং জামিয়া এজাজিয়া দারুল উলুম যশোরে অধ্যক্ষ ও শায়খুল হাদীস হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন।[১][২]
আল্লামা, মাওলানা আবুল হাসান যশোরী | |
---|---|
উপাধি | মুক্তিযোদ্ধা, শায়খুল হাদিস |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
জন্ম | ১৯১৮ |
মৃত্যু | ৮ জুলাই ১৯৯৩ | (বয়স ৭৪–৭৫)
ধর্ম | ইসলাম |
জাতিসত্তা | বাঙালি |
অঞ্চল | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
ধর্মীয় মতবিশ্বাস | সুন্নি |
রাজনৈতিক দল | জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম |
যেখানের শিক্ষার্থী | দারুল উলুম দেওবন্দ |
কাজ | শিক্ষকতা, রাজনীতি |
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাআবুল হাসান ১৯১৮ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ড উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আলী বিশ্বাস। নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভ করে পরে মাগুরা হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। অতঃপর তিনি মাগুরা কলেজে লেখাপড়া করেন। ১৯৩৭ সালে ইসলামি উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য তিনি দিল্লির ফতেহপুর মাদ্রাসায় ভর্তি পড়ালেখার পর দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন। দারুল উলুম দেওবন্দে তার উল্লেখ যোগ্য শিক্ষক শাইখুল ইসলাম সৈয়দ হোসাইন আহমদ মাদানি, আল্লামা ইবরাহিম বলিয়াবী, শাইখুল আদব ইজায আলী, মুফতী মুহাম্মাদ শফী উসমানী প্রমুখ। এর পর সৈয়দ হোসাইন আহমদ মাদানি ও মুফতী আযীযুল হকের নিকট থেকে তিনি আধ্যাত্মিক দীক্ষা গ্রহণ করেন।[১][২]
রাজনৈতিক ও কর্মজীবন
সম্পাদনাআবুল হাসান শিক্ষা জীবন শেষ করে ১৯৪৮ সালে ফরিদপুর জামিয়া ইসলামিয়া গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় হাদিসের অধ্যাপক (শায়খুল হাদীস) হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন এবং ১৯৬৯ সালে যশোর রেল স্টেশন মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ ও শায়খুল হাদীস হিসেবে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন।[১][২][৩]
তিনি প্রথমদিকে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৪৫ সালে জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি এ সংগঠনে যোগ দেন। তিনি এ সংগঠনের সহ-সভাপতি হিসেবে ১৯৬৭ সাল থেকে আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন। ইসলামের প্রচার ও শিরক-বিদাত সহ অন্যান্য কুসংস্কারের বিপক্ষে বিশেষ অবদান রয়েছে তার।[১][২]
তিনি ১৯৭১ সালে বয়ান-বক্তৃতার মাধ্যমে জনসাধারণকে মহান মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেছেন। মাদ্রাসায় মুক্তিযোদ্ধাদের ও সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের আশ্রয় দিয়েছিলেন।[২][৪]
মৃত্যু
সম্পাদনাআবুল হাসান ৮ জুলাই ১৯৯৩ সালে যশোরে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে যশোর রেল স্টেশন মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে দাফন করা হয়।[১][২]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ মু. আফাজ উদ্দীন (২০১২)। "যশোরী, আবুল হাসান"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-৩০।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ মুফতী আব্দুল্লাহ ফারুক (১ মে ২০০৫)। আল্লামা আবুল হাসান যশোরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি : জীবন ও আদর্শ। ঢাকা, বাংলাদেশ: কোহিনূর লাইব্রেরী। পৃষ্ঠা ১২৮।
- ↑ "আকরাম ফারূক স্মৃতি তার ভোলা ভার"। দৈনিক সংগ্রাম। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-৩০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি যশোরের ৫১ শহীদের"। banglanews24.com। এপ্রিল ৪, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-৩০।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- বাংলাপিডিয়ায় আবুল হাসান যশোরী
- আল্লামা আবুল হাসান যশোরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি : জীবন ও আদর্শ
- আলম, মোঃ মোরশেদ (২০১৪)। "হাদীস শাস্ত্র চর্চায় বাংলাদেশের মুহাদ্দিসগণের অবদান"। পিএইচডি অভিসন্দর্ভ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ১৭২। ৩ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০২১।
- উল্লাহ, মুহাম্মদ আহসান (২০২১)। বাংলা ভাষায় হাদিস চর্চা (১৯৫২-২০১৫) (পিএইচডি)। বাংলাদেশ: ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৩৯৪।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]