আবুল খায়ের (অভিনেতা)
আবুল খায়ের (৪ এপ্রিল ১৯২৯ - ২ ফেব্রুয়ারি ২০০১) ছিলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র ও নাট্য অভিনেতা। তিনি হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত এইসব দিনরাত্রি (১৯৮৫), বহুব্রীহি (১৯৮৮), আজ রবিবার (১৯৯৯) নাটকে অভিনয় করে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেন।[১] চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি চারবার শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণের ভিডিও ধারণ করেছিলেন।[২]
আবুল খায়ের | |
---|---|
জন্ম | ৪ এপ্রিল ১৯২৯ |
মৃত্যু | ২ ফেব্রুয়ারি ২০০১ | (বয়স ৭১)
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশী |
পেশা | অভিনেতা |
কর্মজীবন | ১৯৫৬-২০০০ |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | দহন, অন্য জীবন, দুখাই |
পুরস্কার | জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (৪ বার) |
কর্মজীবন
সম্পাদনাআবুল খায়েরের আসল নাম মোহেব্বুর রহমান খয়ের। তিনি ১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথ্য মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ছিলেন।[৩] আবুল খায়ের ১৯৭৩ সালে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত তিতাস একটি নদীর নাম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি তিনি টেলিভিশনে নিয়মিত অভিনয় করতেন। তিনি হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত এইসব দিনরাত্রি (১৯৮৫) নাটকে একজন গ্রাম্য শিক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করেন।[৪] পরবর্তীতে তিনি হুমায়ূন আহমেদের বহুব্রীহি (১৯৮৮) নাটকে দাদা, নিমফুল (১৯৯৭), আজ রবিবার (১৯৯৯) নাটকে শহুরে বাবা, পিতৃত্ব নাটকে গ্রাম্য পিতা চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।[৫]
৭ই মার্চের ভাষণ ধারণ
সম্পাদনা৭ মার্চ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর কাঙ্খিত ভাষণ রেডিও এবং টেলিভিশনে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষণটির ভিডিও করেছিলেন তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ও অভিনেতা আবুল খায়ের। ভাষণটির ভিডিও তিনি মঞ্চের এক পাশ থেকে সচল ক্যামেরা নিয়ে ধারণ করেন। ওই সময়ের ক্যামেরাগুলো বেশ বড় আকার হওয়ার কারণে আবুল খায়েরের একার পক্ষে সেটা নাড়াচাড়া করা বেশ কষ্টকর ছিল। এ কারণে সাতই মার্চের ১০ মিনিটের একটি ভিডিও চিত্রই বর্তমানে দেখা যায়। বাঙালি বেতারকর্মী ও আপামর জনতার দাবির প্রেক্ষিতে ভাষনটির রেকর্ড পরদিন ৮ মার্চ বেতারে প্রচার করা হয়।[৬]
চলচ্চিত্রের তালিকা
সম্পাদনা- তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩)
- এখনই সময় (১৯৮০)
- জন্ম থেকে জ্বলছি (১৯৮১)
- লাল সবুজের পালা (১৯৮১)
- পেনশন (১৯৮৪)
- সখিনার যুদ্ধ (১৯৮৪)
- দহন (১৯৮৫)
- রাজলক্ষী শ্রীকান্ত (১৯৮৭)
- চন্ডীদাস ও রজকিনী (১৯৮৭)
- জ্বীনের বাদশা (১৯৮৯)
- বন্ধু আমার (১৯৯২)
- সে (১৯৯৩) (স্বল্পদৈর্ঘ্য)
- পদ্মা নদীর মাঝি (১৯৯৩)
- চাকা (১৯৯৩)
- একাত্তরের যীশু (১৯৯৩)
- অবুঝ সন্তান (১৯৯৩)
- অন্য জীবন (১৯৯৫)
- নদীর নাম মধুমতি (১৯৯৬)[৭]
- দীপু নাম্বার টু (১৯৯৬)
- দুখাই (১৯৯৭)
- শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯)
- ইতিহাস কন্যা (২০০০)
নাটক
সম্পাদনা- এইসব দিনরাত্রি (১৯৮৫)
- দ্বিতীয় জন্ম (১৯৮৭)
- বহুব্রীহি (১৯৮৮)[৮]
- অয়োময় (১৯৮৮)
- প্রিয় পদরেখা (১৯৯২)
- ইতিকথা (১৯৯৪)
- হিমু (১৯৯৪)
- নিমফুল (১৯৯৭)
- আজ রবিবার (১৯৯৯)
- সমুদ্র বিলাস প্রাইভেট লিমিটেড (১৯৯৯)
- "নক্ষেত্রের রাত"
পুরস্কার
সম্পাদনা- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা - দহন (১৯৮৫)
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা - রাজলক্ষী শ্রীকান্ত (১৯৮৭)
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা - অন্য জীবন (১৯৯৫)
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ পার্শ্বচরিত্রে অভিনেতা - দুখাই (১৯৯৭)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "হুমায়ূন আহমেদের শিল্পীরা"। দৈনিক আমার দেশ। ২১ জুলাই ২০১১। ৪ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৬।
- ↑ ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি ধারণের নেপথ্যে ছিলেন এই অভিনেতা, কালের কণ্ঠ, ৭ মার্চ ২০২২
- ↑ ৭ মার্চের ভাষণ রক্ষায় ঝুঁকি নিলেন আমজাদ আলী খন্দকার, কালের কণ্ঠ, ৭ মার্চ ২০২২
- ↑ "হুমায়ূন আহমেদের অভিনয় শিল্পীরা"। দৈনিক যায় যায় দিন। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৬।
- ↑ "হুমায়ূন স্পর্শে সোনারকাঠি"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। ১৩ নভেম্বর ২০১৪। ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৭।
- ↑ যেভাবে ভাষণের অডিও-ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল, ভোরের কাগজ, ৭ মার্চ ২০২০
- ↑ "বিজয়ের মাসে তানভীর মোকাম্মেলের চার সিনেমা"। নিউজনেক্সটবিডি। ১০ ডিসেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ শাকুর মজিদ (৯ নভেম্বর ২০১৪)। "বহুব্রীহি ও 'তুই রাজাকার'"। বিডিনিউজ। ৩০ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে আবুল খায়ের (ইংরেজি)
- বাংলা মুভি ডেটাবেজে আবুল খায়ের