ম্যানুকা ওভাল
ম্যানুকা ওভাল অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরার ম্যানুকায় অবস্থিত একটি আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেট মাঠ। সম্প্রচারস্বত্ত্বজনিত কারণে অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবল খেলায় মাঠটি স্টারট্র্যাক ওভাল ক্যানবেরা নামে পরিচিত।[১] ১৩,৫৫০ আসনবিশিষ্ট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গ্রীষ্মকালে ক্রিকেট ও শীতকালে অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবল খেলার আয়োজন করা হয়।[২]
প্রাক্তন নাম | ম্যানুকা সার্কেল পার্ক |
---|---|
অবস্থান | গ্রিফিথ, অস্ট্রেলিয়ান ক্যাপিটাল টেরিটরি |
স্থানাঙ্ক | ৩৫°১৯′৫″ দক্ষিণ ১৪৯°০৮′৫″ পূর্ব / ৩৫.৩১৮০৬° দক্ষিণ ১৪৯.১৩৪৭২° পূর্ব |
মালিক | এসিটি সরকার |
পরিচালক | টেরিটরি ভ্যানুজ এন্ড ইভেন্টস |
ধারণক্ষমতা | ১৩,৫৫০ |
উপস্থিতির রেকর্ড | ১৪,৯২২ (২০০৬, ক্যাঙ্গারুজ ব সিডনি সোয়ান্স, এএফএল) |
আয়তন | ১৭৯x১৫০মি |
উপরিভাগ | ঘাস |
স্কোরবোর্ড | জ্যাক ফিঙ্গলটন স্কোরকার্ড |
চালু | ১৯২৯ |
ভাড়াটে | |
জিডব্লিউএস জায়ান্টস, এএফএল ক্যানবেরা কমেটস, ফিউচার্স লীগ ইস্টলেক ডেমন্স, এনইএএফএল এসিটি মেটিয়র্স, ডব্লিউএনসিএল |
ইতিহাস
সম্পাদনাওভালটি প্রকৃতপক্ষে একটি উদ্যান ছিল ও আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যানুকা সার্কেল পার্ক নামে পরিচিত ছিল। ১৯২০-এর দশকের শেষদিকে ম্যানুকা ওভাল হিসেবে পরিচিতি পায়। উদ্যান ও কাছাকাছি থাকা বিপণী কেন্দ্র লেপটুস্পেরাম স্কোপারিয়াম বৃক্ষের মাওরি নাম ম্যানুকা অনুসরণে রাখা হয়। ১৯২৯ সালে মাঠের উন্নয়নের লক্ষ্যে বেড়া লাগিয়ে ম্যানুকা ওভালের কাজ শুরু হয়। পূর্বে মাঠটি রাগবি লীগ ও অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবলে ব্যবহার করা হতো।
এপ্রিল, ১৯৩০ সালে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট পীচে খেলা শুরু হয়। স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের সম্মানার্থে ওভালের প্রধান স্ট্যান্ড ব্র্যাডম্যান প্যাভিলিয়ন ১৯৬২ সালে নির্মাণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী একাদশ দলে খেলার লক্ষ্যে ক্যানবেরায় আগত দলের বিপক্ষে খেলার জন্য দুই অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী রবার্ট মেনজাইস ও বব হকের নাম অনুসরণে ১৯৮৭ ও ১৯৯২ সালে যথাক্রমে রবার্ট মেনজাইস স্ট্যান্ড ও বব হক স্ট্যান্ড নির্মিত হয়।[৩]
২০০৪ সালে ম্যানুকা ওভাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হবার পর ৭৫তম বার্ষিকী উদ্যাপন করে। ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময় ৪.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করে। এ কার্যক্রমে অতিরিক্ত ৪,৩০০ অস্থায়ী আসন, নতুন মিডিয়া ও কর্পোরেট সুবিধাদি, হক ও ব্র্যাডম্যান স্ট্যান্ডের উন্নয়ন অন্তর্ভুক্ত।[৪][৫] ২০১২ সালের শেষদিকে ফ্লাডলাইট স্থাপন করা হয়। এরফলে রাতে খেলার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হয়। ২৯ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও প্রধানমন্ত্রী একাদশের মধ্যে দিন/রাতের ক্রিকেট খেলা অনুষ্ঠিত হয়।[৬]
ক্রিকেট খেলা
সম্পাদনা১৩ এপ্রিল, ১৯৩০ তারিখের ইস্টার মানডেতে প্রথম ক্রিকেট খেলা আয়োজন করা হয়।[৭] সাংবার্ষিক ওভালে প্রধানমন্ত্রী একাদশ খেলে থাকে। ১৯৫১ সালে রবার্ট মেনজাইস এ ধারার সূচনা ঘটান। তার প্রধানমন্ত্রী মেয়াদকালে ১৯৬৫ সালের মধ্যে আরও ছয়টি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৮৪ সালে বব হক খেলাটিকে এ মাঠে ফিরিয়ে আনে ও বার্ষিকাকারে খেলার প্রচলন ঘটতে থাকে।
১৯৯২ সালে এ মাঠে প্রথমবারের মতো একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সূত্রপাত হয়। ১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার এ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। কিন্ত এরপর থেকে শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটের আর কোন খেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।
ক্যানবেরা কমেটস দলের প্রধান অনুশীলনী মাঠ হিসেবে এ মাঠ ব্যবহার করা হয়। দলটি ১৯৯৭-৯৮ মৌসুম থেকে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুম পর্যন্ত মার্কেন্টাইল মিউচুয়্যাল কাপে অংশগ্রহণ করে। বর্তমানে দলটি ফিউচার্স লীগে খেলছে।
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ তারিখে স্বাভাবিক আন্তর্জাতিক সফরের অংশ হিসেবে অস্ট্রেলীয় ত্রি-দেশীয় সিরিজে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ওডিআই খেলাটি দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করে।[৮] প্রথম আন্তর্জাতিক খেলা হিসেবে ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ তারিখে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্য অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় অস্ট্রেলিয়া ৩৯ রানে জয়লাভ করে।[৯]
২০১৩ সালে ক্যানবেরা শহরের শতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো টেস্ট ক্রিকেট আয়োজনের চেষ্টা চালায় ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কাছে আবেদন করে। কিন্তু তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়।[১০]
অন্যান্য
সম্পাদনাওভালের স্কোরবোর্ড অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান, রাজনৈতিক সংবাদদাতা ও প্রথিতযশা লেখক জ্যাক ফিঙ্গলটনের স্মতিকে চিরজাগরুক রাখতে ‘জ্যাক ফিঙ্গলটন স্কোরবোর্ড’ নামে পরিচিতি ঘটায়।[১১][১২] প্রকৃতপক্ষে এটি ১৯০১ সালে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্থাপন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৮০-এর দশকের সূচনালগ্নে এমসিজি কর্তৃপক্ষ নতুন ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড ম্যানুকা ওভালের ন্যায় প্রতিস্থাপন করে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "StarTrack secures naming rights of Manuka Oval"। Prime Mover Magazine। ১৬ এপ্রিল ২০১৩। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ "Manuka Oval - Overview"। ১৩ জুলাই ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ "Manuka Oval, Canberra"। England and Wales Cricket Board। ২৫ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১১।
- ↑ Anderson, Stephanie (২৯ এপ্রিল ২০১১)। "Manuka Oval and Canberra Stadium get $6m spruce-up"। The Canberra Times। ৩০ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১১।
- ↑ "Investing in our sporting and event venues"। Andrew Barr, MLA - Media Releases। ACT Government। ৩ মে ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৩ মে ২০১১।
- ↑ Gaskin, Lee (৩০ জানুয়ারি ২০১৩)। "Manuka lights fantastic, and so was the atmosphere"। The Canberra Times। ৩১ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ Mr D. Selth। "Manuka Oval"। Cricket ACT। ৯ অক্টোবর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০০৭।
- ↑ "Australia alter summer schedule to satisfy India"। Cricinfo। ২০ এপ্রিল ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০০৭।
- ↑ Luke Sheehan (৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। "ODI series moves to Canberra"। Sportal। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Chris Dutton (২ জুন ২০১১)। "NSW support needed to attract Aussie cricket team: Barr"। The Canberra Times। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুলাই ২০১১।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Manuka Oval - History"। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১১।
- ↑ Growden, Greg (২০০৮)। Jack Fingleton : the man who stood up to Bradman। Crows Nest, New South Wales: Allen & Unwin। আইএসবিএন 978-1-74175-548-0।