কেরি ও’কিফ
কেরি জেমস ও’কিফ (ইংরেজি: Kerry O'Keeffe; জন্ম: ২৫ নভেম্বর, ১৯৪৯) নিউ সাউথ ওয়েলসের হার্স্টভিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ও সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৭ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | কেরি জেমস ও’কিফ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | হার্স্টভিল, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া | ২৫ নভেম্বর ১৯৪৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | স্কাল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | লেগ ব্রেক গুগলি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | লেগ স্পিনার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২৫৩) | ২১ জানুয়ারি ১৯৭১ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৮ জুলাই ১৯৭৭ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৩৪) | ২ জুন ১৯৭৭ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ৬ জুন ১৯৭৭ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৮/৬৯-১৯৭৫/৭৬ ও ১৯৭৯/৮০ | নিউ সাউথ ওয়েলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৭১-১৯৭২ | সমারসেট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২ ডিসেম্বর ২০১৯ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলস ও ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সমারসেট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ লেগ স্পিনার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী প্রদর্শন করেছেন ‘স্কাল’ ডাকনামে পরিচিত কেরি ও’কিফ।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৬৮/৬৯ মৌসুম থেকে ১৯৭৯-৮০ মৌসুম পর্যন্ত কেরি ও’কিফের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।
স্পিন বোলার হিসেবে লেগ ব্রেক বোলিং করতেন। শুরুতে বেশ ভালো খেললেও কখনোই অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী সেরা লেগ স্পিন বোলার হবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হননি। ৩৮.০৭ গড়ে ৫৩ উইকেট দখল করেছিলেন। ১৯৭০-৭১ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলসের সদস্যরূপে সফররত ইংরেজ একাদশের বিপক্ষে ৬/৬৯ ও অপরাজিত ৫৫ রানের ইনিংস খেলার প্রেক্ষিতে জাতীয় দলে আহুত হন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চব্বিশ টেস্ট ও দুইটি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন কেরি ও’কিফ। ২১ জানুয়ারি, ১৯৭১ তারিখে মেলবোর্নে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২৮ জুলাই, ১৯৭৭ তারিখে নটিংহামে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম টেস্টে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। তবে, খেলায় তিনি খুব কমই ভূমিকা রাখেন। ফলশ্রুতিতে দল থেকে বাদ পড়েন। তবে, স্পিন উপযোগী এসসিজিতে সিরিজের সপ্তম টেস্টে পুনরায় তাকে দলে রাখা হয়। ৩/৪৮ ও ৩/৯৬ বোলিং পরিসংখ্যান গড়লেও খেলায় তার দল জয়লাভ করতে পারেনি ও অ্যাশেজ রক্ষায় ব্যর্থ হয়। এরপর ব্যাট হাতে ২৫.৭৬ গড়ে রান সংগ্রহের কারণে শতবার্ষিকী টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, বলের উপর তার বেশ মনোযোগ ছিল। টেস্টের ইতিহাসে সর্বাধিকসংখ্যক উইকেট কটের মাধ্যমে পেয়েছেন। প্রাপ্ত ৫৩ উইকেটের ৪৪টিই ছিল কটে যা শতাংশের হিসেবে ৮৪।[১] তার বোলিংয়ের যোগ্যতা নিয়েই মজাদার ঘটনা ঘটে। ১৯৭২ সালে ইংল্যান্ড সফরে ব্যাটসম্যানের বিপরীতে লেগ বিফোর উইকেটে আবেদন জানানো হলে আম্পায়ার তাকে নিরস্ত করেন। বলেন যে বলটি এরচেয়েও বেশি করেছে। অর্থাৎ, বল এতোটাই স্পিন করেছিল যে, স্ট্যাম্পের অনেক দূর দিয়ে চলে যায়। ও’কিফ জানান, আম্পায়ারের এ মন্তব্য বলে তার স্পিন না করার কথাই জানান দেয়। অনেকটা বিদ্রুপাত্মক ছিল বিষয়টি।
অবসর
সম্পাদনাক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর এবিসি রেডিওতে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করেন। নৈশভোজন শেষে ক্রিকেটারদের ক্লাবে বক্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন ও অট্টহাসিতে ফেটে পড়তেন। বিদেশী ধারাভাষ্যকার বিশেষ করে ভারতীয় ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলের সাথে কাজ করে যথেষ্ট আনন্দ পেতেন। ২০০৪ সালে ‘অ্যাকর্ডিং টু স্কাল’ শিরোনামীয় আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এছাড়াও, একগুচ্ছ সিডি প্রকাশ করেছিলেন।
২৭ ডিসেম্বর, ২০১৩ তারিখে মেলবোর্নের বক্সিং ডে টেস্টে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মধ্যকার খেলা চলাকালীন কেরি ও’কিফ জানুয়ারি, ২০১৪ সালে সিডনি টেস্ট শেষে তার অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। এ পর্যায়ে তিনি এবিসি থেকে অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধান লাভের প্রস্তাবনা গ্রহণ করেছিলেন।[২] তবে, ডিসেম্বর, ২০১৬ সালে ট্রিপল এমের নতুন ক্রিকেট সম্প্রচারের অংশ হিসেবে ক্রিকেট ধারাভাষ্যে পুনরায় প্রত্যাবর্তন করেন।
১৩ জুলাই, ২০১৮ তারিখে ২০১৮-১৯ মৌসুমের ফক্স স্পোর্টস ক্রিকেট ধারাভাষ্য দলে কেরি ও’কিফের যোগদানের কথা ঘোষণা করা হয়।[৩]
বিতর্কিত ভূমিকা
সম্পাদনা২০১৮ সালে ভারত ক্রিকেট দল অস্ট্রেলিয়া সফর করে। সিরিজের তৃতীয় টেস্ট চলাকালে ভারতের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ময়াঙ্ক আগারওয়ালের প্রথম-শ্রেণীর ত্রিশতক হাঁকানো প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন যে, এটি এসেছে রেলওয়ের খাবার দোকানের কর্মচারী একাদশের বিপক্ষে। অভিষেক ইনিংসে ৭৬ রান করার পর ভারতীয় দলের প্রধান কোচ রবি শাস্ত্রী ও’কিফের মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে মন্তব্য করেন যে, ময়াঙ্ক আগারওয়াল কেরিকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন। আপনি যখন খাবার দোকান খুলবেন, তিনি আসবেন ও কফির গন্ধ নেবেন। তিনি তুলনা করে দেশে নিয়ে যেতে চাইবেন। আপনার দোকানের কফি ভালো, না-কি দেশেরটি? তবে, সমর্থক ও সাবেক ক্রিকেটারদের কাছ থেকে বিরূপ মন্তব্য আসতে থাকলে তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন।[৪]
পরবর্তীতে একই টেস্টের চতুর্থ দিনে সতীর্থ ধারাভাষ্যকার শেন ওয়ার্নের কাছে চেতেশ্বর পুজারা ও রবীন্দ্র জাদেজার নামের উচ্চারণের সমস্যা নিয়ে রসিকতা করে চেতেশ্বর জাদেজা নামে আখ্যায়িত করেন। তাদের নাম পুরোদিনই বলতে শোনা যায়। এ মন্তব্যের কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে প্রকৃতিগতভাবে সাম্প্রদায়িক হিসেবে তুলে ধরা হয়।[৫] ভারতীয় বোলিং কোচ ভরত অরুণ মন্তব্য করেন যে, দলটি ও’কিফের আক্রমণাত্মক মন্তব্যে আঘাত পেয়েছে ও খেলোয়াড়েরা মাঠে সমুচিত জবাব দেবে।[৬] পঞ্চম দিনে ভারত দল জয় পেলে ও’কিফ লিখিতভাবে ভারত দল ও সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চান।[৭][৮]
চতুর্থ টেস্টের পূর্বদিন ভারতীয় সম্প্রচারকারী সংস্থা সনি ও’কিফের ফক্স ক্রিকেটে ধারাভাষ্য চলাকালে এড়িয়ে যাবার কথা প্রকাশ করে।[৯][১০] তবে, তাদের এ বক্তব্যের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ http://www.howstat.com/cricket/Statistics/Players/PlayerDismissBowlGraph.asp?PlayerID=1289
- ↑ "Kerry O'Keeffe retires from ABC Grandstand commentary team"। ABC News। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Brett Lee and Kerry O'Keeffe added to Fox Sports' all-star cricket crew"। Fox Sports। ১৩ জুলাই ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৮।
- ↑ Monga, Sidharth (২৯ ডিসেম্বর ২০১৮)। "India furious over Kerry O'Keeffe's 'Railways Canteen Staff XI' jibe"। ESPN। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "After Mayank Agarwal, Kerry O'Keefe now makes fun of Cheteshwar Pujara- Twitter calls out Aussie commentator"। DNA। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ [১]
- ↑ [২]
- ↑ [৩]
- ↑ Tagore, Vijay (২ জানুয়ারি ২০১৯)। "Kerry O'Keeffe's commentary to be blacked out in India"। Mumbai Mirror। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "After controversy, Sony opts to black out Kerry O'Keeffe's commentary in Sydney Test"। Deccan Chronicle। ৩ জানুয়ারি ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০১৯।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে কেরি ও’কিফ (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে কেরি ও’কিফ (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- Kerry O'Keeffe's Biography on ICMI Sport Speakers ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ মে ২০১৩ তারিখে
- Kerry O'Keeffe tells joke during Aus v Sri Lanka Final ODI at Gabba 2006