হাতি
হাতি বৃহত্তম স্থলচর স্তন্যপায়ী। প্রোবোসিডিয়া (শূণ্ডধারী) বর্গের (order proboscidea) একমাত্র জীবিত বংশধর (জাতভাই ছিল ম্যামথ ইত্যাদি যারা বিলুপ্ত)। শুঁড়কে হাত(হস্ত/কর)-এর মত ব্যবহার করতে পারার জন্য এর নাম "হাতি"("হস্তী"/"করী")।
হাতি সময়গত পরিসীমা: Pliocene–Recent | |
---|---|
আফ্রিকান হাতি | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | কর্ডাটা |
উপপর্ব: | Vertebrata |
শ্রেণী: | Mammal |
মহাবর্গ: | Afrotheria |
বর্গ: | Proboscidea |
পরিবার: | Elephantidae Gray, 1821 |
Genera | |
তিনটি প্রজাতি: একটি দুটি আফ্রিকান (লক্সোডন্টা আফ্রিকানা, লক্সডন্টা সাইক্লোটিস) ও এশীয় (এলিফাস ম্যাক্সিমাস)। প্রাপ্তবয়স্ক (এশীয় হলে শুধু পুরুষ) হাতির উপরের ইনসিসর দাঁত দুটি লম্বা হয়ে গজদন্ত তৈরি করে।
হাতি দলবদ্ধ জন্তু। দলপতি হয় সবথেকে শক্তিশালী দাঁতাল। দলের কেন্দ্রে বাচ্চাদের ঘিরে থাকে মা-দিদিমারা। বাচ্চারা বড় হলে দলের বাইরের সারিতে স্থান নেয়। দলছুটও হতে থাকে। পরিণত দাঁতালরা নিজেদের দল গঠনের চেষ্টা করে। তরুণ দাঁতালরা "মস্ত" হবার মরসুমে কানের সামনে অবস্থিত "মস্তগ্রন্থি"র অত্যধিক ক্ষরণে মত্ত বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং দলপতি বা অন্য দাঁতাল বা যেকোন শাসনকারীকে(যেমন মাহুত) আক্রমণ করে। তখন দলপতি লড়াই বা আত্মগোপনের চেষ্টা করতে পারে। গজদন্তহীন পুরুষ হাতিদের বলে মাকনা। এরা মাদী হাতিদের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে, এবং দাঁতালদের অজ্ঞাতসারে বংশবিস্তার করতে পারে।
হাতির গর্ভকাল প্রাণীরাজ্যে দীর্ঘতম- প্রায় দুবছর (২২ মাস)। গল্পে একশ বছর বাঁচে বলা হলেও হাতিরা আসলে ৬০-৮০ বছরের বেশি বাঁচেনা। কারণ এদের জীবদ্দশায় ছয়বার (আমাদের মত দুবার নয়) কষদাঁত বের হয়, আবার চিবিয়ে চিবিয়ে ক্ষয়ে যায়- কষদাঁতের শেষ সেট ষষ্ঠ দশকে গজায়, যা ক্ষয়ে যাবার পর অনাহারে মৃত্যু অনিবার্য।
বিজ্ঞানীদের ধারণা অগভীর জলে সহজ করে নিশ্বাস নিতে সুবিধা হওয়ায় প্রোবোসিডিয়াদের জলচর পূর্বপুরুষদের নাক লম্বা হয়ে শুঁড়ে (proboscis) বিবর্তিত হয়েছিল। [১]। এদের নিকটতম স্তন্যপায়ী আত্মীয়রা হল ডুগং, মানাটি, সমুদ্র-গাভী (sea cow) ইত্যাদি যারা জলচর সিরেনিয়া বর্গের অন্তর্ভুক্ত। এদের শরীরবৃত্তীয় অনন্যতা হল যে জন্মের পরে এদের প্লুরার (ফুসফুসের আবরণ) শূন্যস্থান সংযোজক কলা দ্বারা ভরাট হয়ে যায় (সম্ভবতঃ লম্বা শূঁড়ের ডেড স্পেস সমেত হাওয়া টানবার জন্যে এত বেশি ঋণাত্মক বায়ুচাপ করতে হয় যে প্লুরা গহ্বর থাকলে রক্তবাহ ফেটে তার মধ্যে রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকত।[১]
ভৌগোলিক বিস্তার
সম্পাদনাহাতিরা তৃণভূমিতে বসবাস করে। হাতি প্রায় সবদেশে পাওয়া যায়। বেশি পাওয়া যায় আফ্রিকার দেশগুলোতে। তবে ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপালে ভারতীয় হাতি পাওয়া যায়। দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা, জিম্বাবুয়ে, কেনিয়া, তানজানিয়া, জাম্বিয়া, অ্যাঙ্গোলা, নামিবিয়া, রুয়ান্ডা, মোজাম্বিকে পাওয়া যায়। হাতি পৃথিবীর অন্যতম প্রাণী। ভারত উপমহাদেশে এদের প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ John B. West Why Doesn't the Elephant Have a Pleural Space? News Physiol Sci 17: 47-50, 2002. http://physiologyonline.physiology.org/cgi/content/full/17/2/47 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে