অক্টোবর ২০২১-এ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
২০২১ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সংঘটিত হয়। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটিকে রক্তাক্ত শারদ নামেও আখ্যায়িত করা হয়।[৫][৬][৭][৮] ১৩ই অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে ১৮ই অক্টোবর পর্যন্ত সর্বশেষ এ ধরনের সহিংসতার খবর পাওয়া যায়।[১][২][৯] ১৩ই অক্টোবর বুধবার দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিনে বাংলাদেশের কুমিল্লা শহরের নানুয়ার দীঘির উত্তরপাড় পূজামণ্ডপে সকালবেলা সেখানে রাখা একটি হনুমান মূর্তির হাঁটুর উপর ইসলাম ধর্মের ধর্মগ্রন্থ কুরআন রাখার খবর সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই খবরকে কেন্দ্র করে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে উক্ত পূজামণ্ডপে হামলা করা হয়।[১০] হামলার সময় প্রতিমা, পূজামণ্ডপ ভাঙচুর ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মারধর করা হয়।[১১][১২][১৩] হামলাকারীরা বুধবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার নানুয়া দিঘির উত্তরপাড় পূজামণ্ডপের দুর্গা প্রতিমাটি পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে ফেলে দেয়।[১৪] কুমিল্লায় সহিংসতার পর হামলাকারীরা চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, চট্টগ্রামের বাঁশখালী, কক্সবাজারের পেকুয়াতে ও বান্দরবানের লামায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে ভাঙচুর করে।[১৫] কুরআন অবমাননার বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে কমপক্ষে ১৫টি জেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।[১৬]
অক্টোবর ২০২১-এ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা | ||||
---|---|---|---|---|
বাংলাদেশে ইসলামি উগ্রবাদ ও হিন্দু-বিরোধী সহিংসতার অংশ | ||||
তারিখ | ১৩ অক্টোবর, ২০২১- ১৮ অক্টোবর, ২০২১[১] | |||
অবস্থান | সমগ্র বাংলাদেশ | |||
কারণ | মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কোরআন অবমাননার গুজব | |||
পদ্ধতি | বিক্ষোভ, পাথর নিক্ষেপ, সম্মুখ মারামারি, ধর্মীয় উপাসনালয় ভাংচুর[২] | |||
পক্ষ | ||||
| ||||
নেতৃত্ব দানকারী | ||||
অকেন্দ্রীভূত নেতৃত্ব | ||||
ক্ষয়ক্ষতি | ||||
নিহত | ১০ জন[৩] | |||
গ্রেপ্তার | ৪৩+[৪] |
বাংলাদেশের কুমিল্লায় পূজামণ্ডপ, মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর সরকার ২২টি জেলায় বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) মোতায়েন করে।[১৬] সরকারের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালের ১৪ই অক্টোবর পর্যন্ত কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ‘উসকানি দিয়ে’ মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ৪৩ জনকে আটক করা হয়েছে।[৪] ঘটনার পর ছয়টি জেলায় ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ এবং ১৫ অক্টোবর সারা দেশের ফোরজি ও থ্রিজি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখা হয়; যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেবা বিঘ্নের জন্য কারিগরি ত্রুটির কথা উল্লেখ করে।[১৭] পূজামণ্ডপটিতে কে বা কারা কুরআন রেখেছিল, তাদের চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।[১৮] কুমিল্লায় পূজামণ্ডপের ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে লাইভ ভিডিও ছড়ানোর জন্য ফয়েজ আহমেদকে ১৩ অক্টোবর রাতে ও গোলাম মাওলাকে ১৪ অক্টোবর রাতে পুলিশ গ্রেফতার করে।[১৯][২০] মন্দির-মণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কুমিল্লায় ১২টি, নোয়াখালীতে ৩২টি, চাঁদপুরে ১০টিসহ মোট ৫৪টি মামলা হয়। তবে দুই বছরেও ৪২ মামলার বিচার শুরু হয়নি।[২১]
ঘটনার সূত্রপাত
সম্পাদনা১৩ অক্টোবর ২০২১, বুধবার দূর্গাপূজা চলাকালিন সময়ে অষ্টমীর দিনে খুব ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়ারদীঘির পাশের একটি পূজামণ্ডপের বাইরে রাম-সীতা-লক্ষ্মণ-হনুমান মূর্তিরস্থলে হনুমান মূর্তির কোলের উপর একটি কুরআন দেখা যায়। বিষয়টি দেখার পর কেউ একজন বাংলাদেশের জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে জানালে কুমিল্লা কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসে সেটি সরিয়ে ফেলে। কিন্তু ওই দিন সকাল ১০টা নাগাদ এর একটি ছবি ও ভিডিও ব্যাপকভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, মূর্তির হাঁটুর কাছে কুরআন রয়েছে এবং হনুমান মূর্তির হাতে থাকা অস্ত্রটি (গদা) নেই।[২২] অনেকে বিষয়টি নিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে কুরআন অবমাননার অভিযোগ করতে থাকেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে বিভিন্ন জেলায় পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর, মারধরের ঘটনা ঘটতে থাকে।[২৩] পরবর্তীতে বাড়িঘর ভাঙচুর, আগুন দেয়ার ঘটনাও ঘটে।[১] পুলিশ তদন্তে জানা যায়, সেখানে কুরআন রেখেছিল ইকবাল হোসেন নামক এক ব্যক্তি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় ঐদিন মধ্যরাতে নিকটবর্তী একটি মাজার থেকে কুরআন হাতে বের হয়ে তাকে পূজা মণ্ডপের দিকে যেতে দেখা যায় এবং শেষে হনুমানের হাতের অস্ত্রটি নিয়ে রাস্তায় ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়। যা দেখে ইকবাল হোসেনকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়।[২৪][২৫][২৬] সংশ্লিষ্ট মামলায় পরবর্তিতে ৫০ জনের বেশি আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।[২৭]
পরবর্তীতে ২০২১ সালে গাজীপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ইকবালকে কারাদণ্ড দেয়া হয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত কুমিল্লার ইকবাল আদালতে দোষ স্বীকার করেন। আদালত আসামি ইকবালকে ১ বছর ৪ মাস কারাদণ্ড দেন। এ মামলার প্রধান আসামি রোকন মিয়াও আদালতে দোষ স্বীকার করেন। ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট তাঁর ১ বছরের সাজা হয়। কুমিল্লার ঘটনার পর ১৮ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আসামি রোকন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে পোস্ট দেন। এ ঘটনায় রোকনের বিরুদ্ধে গাজীপুরের টঙ্গী থানায় মামলা হয়। মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর রোকন ও ইকবালের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০২২ সালের ২৯ জুন আসামি রোকন ও ইকবালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন।[২৮][২৯]
ঘটনাপ্রবাহ
সম্পাদনা- বাংলাদেশে ২০২১ সালে চরমপন্থী গোষ্ঠীর দ্বারা দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুরের প্রথম ঘটনাটি ২২ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া শহরে নথিভুক্ত করা হয়। ঘটনাটিতে নির্মাণাধীন দুর্গা প্রতিমাসহ অন্য সকল প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়।[৩০]
- কুষ্টিয়ার পর জয়পুরহাটে সহিংসতার দ্বিতীয় ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশ হিন্দু ঐক্য পরিষদ একই সপ্তাহে দ্বিতীয় ঘটনাটি নথিভুক্ত করার সময় বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
- ৮ অক্টোবর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নির্মাণাধীন অস্থায়ী পূজা মন্ডপের সবকটি প্রতিমা ভোররাতে ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা।[৩১][৩২]
- ১০ অক্টোবর চট্টগ্রামে কোতোয়ালি থানার ফিরিঙ্গবাজার এলাকায় দুর্গা প্রতিমাকে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়ার সময় সেখানে অবস্থিত ফলের আড়ৎ থেকে জাম্বুরা ছুড়ে মারা হয়, যার ফলে দুর্গা-বিগ্রহের একটি হাত ভেঙে যায়। চট্টগ্রামে বিক্ষোভ হলে পুলিশ ঘটনাটা ইচ্ছাকৃত না দুর্ঘটনা তা তদন্ত করবে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানায়।[৩৩]
- প্রতিমা ভাঙচুরের আরেকটি ঘটনা ১১ অক্টোবর ঢাকার আশুলিয়ার রাস্তামপুর গ্রামে ঘটে। একই দিনে টিপু সুলতান রোডে হামলার খবর পাওয়া গেছে। পূজা উদ্যোক্তারা প্রতিমা নিয়ে শঙ্খনিধি মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেনি। দুর্গা প্রতিমা নিয়ে রাস্তায় ভক্তরা বসে থাকে। স্থানীয় চরমপন্থীদের সন্ত্রাসের কারণে পূজা উদ্যোক্তারা ঐতিহাসিক মন্দিরটিতে পূজা করতে ব্যর্থ হয়ে, ভক্তদের পূজা করার জন্য একটি অস্থায়ী জায়গা দেওয়া হয়, যেখানে প্রতিমাগুলি স্থানান্তর করা হয়। ১২ অক্টোবর, চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকার করুণাময়ী কালীবাড়ির পূজা মণ্ডপে আরতি চলাকালীন একটি সাম্প্রদায়িক হামলার খবর পাওয়া যায় যেখানে অপরাধীদের মধ্যে একজন ধরা পড়ে এবং তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।[৩৪]
- ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর সপ্তমী পূজা শেষে কুমিল্লায় নানুয়া দীঘির উত্তরপাড় মণ্ডপটি রাত ১২ টায় বন্ধ হয়ে যায়। মণ্ডপে পরের দিন সকাল ৬টা পর্যন্ত নিরাপত্তা রক্ষী ছিল। তারপর তারা চলে যায়। সকাল আটটার দিকে পুরোহিত পূজামণ্ডপে উপস্থিত হন। পূজামণ্ডপে একটি প্রতিমার হাঁটুর উপরে কুরআন রাখা ছিল। কুরআন উদ্ধারের পর নানা ভাবে নানা ভাষ্যে খবর ছড়িয়ে পড়ে। কুরআন নিয়ে অবমাননার বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লাইভ করে ফয়েজ আহমেদ ।[৩৫] এরপর ওই মণ্ডপে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। ছাতিপাড়া চন্দ্রমনি রক্ষা কালী মন্দিরেও হামলা করে প্রতিমা ভাঙচুর ও আগুন দেয়া হয়। বাইরে আরো ১৫টি মন্দির ও মণ্ডপের পূজার গেটে আগুন দেয়া হয়, ভাঙচুর করা হয়। এই কারণে ওই দিন বেশ কিছু মন্দিরে পূজা বন্ধ হয়ে যায়।[১৬]
আক্রমণ
সম্পাদনাচট্টগ্রাম বিভাগ
সম্পাদনাকুমিল্লা জেলা
সম্পাদনাকুরআন অবমাননার অভিযোগে ২০২১ সালের ১৩ই অক্টোবর বুধবার সকালে প্রথমে কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে হামলা চালানো হয়। এরপর আরও বেশকিছু পূজামণ্ডপে হামলা করা হয়। নানুয়া দীঘি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে শহরের চকবাজার এলাকায় (কাপুড়িয়াপট্টি) শত বছরের পুরনো চাঁন্দমনি রক্ষাকালী মন্দির। চাঁন্দমনি কালী মন্দিরে বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত তিন দফায় হামলা করা হয়। উক্ত মন্দিরে চার ঘণ্টায় ৩ বার হামলা করা হয়। সেখানে সকাল ১১টার সময় প্রথম হামলার ঘটনা ঘটে। মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারাধন চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম (bdnews24.com) কে বলেন, ‘‘প্রথম দফায় হামলার চেষ্টা হয়। তবে ফটক টপকে তারা ঢুকতে পারেনি। সাড়ে ১২টার দিকে আরেকবার হামলার চেষ্টা করে তারা। কিছুক্ষণ ঢিলাঢিলি করে চলে যায়। এরপর বেলা ৩টার দিকে তারা মই, হাতুড়ি, পেট্রোল নিয়ে চুড়ান্ত হামলা চালিয়ে সব ভেঙেচুড়ে, পুড়িয়ে চলে যায়।’’ চাঁন্দমনি কালী মন্দিরে মই দিয়ে দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায় যে দীর্ঘ সময় ধরে ফোন করে পুলিশের সাহায্য পাওয়া যায়নি। সেখানে চার ঘণ্টায়ও পুলিশ আসেনি।[৩৬] রাজ রাজেশ্বরী কালীবাড়ি মন্দিরে ও হামলা করা হয় । এতে দিলীপ কুমার দাস ইটের আঘাতে আহত হন। প্রথমে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতিতে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ২১ অক্টোবর তার সেখানে মৃত্যু হয়।[৩৭]
চাঁদপুর জেলা
সম্পাদনাচাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার মনিনাগ এলাকা থেকে একটি মিছিল এসে ১৩ই অক্টোবর রাত ৮টার পর লক্ষ্মীনারায়ণ জিওর আখড়ায় (মন্দির) হামলা চালায়।[৩৮] বাজারের ওই মন্দির ছাড়াও ত্রিনয়নী সংঘের পূজামণ্ডপ, লহ্মীনারায়ণজী আখড়া,রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম,জমিদারবাড়ি দুর্গা মন্দির, শ্মশান কালী মন্দির, নবদুর্গা সংঘ পূজামণ্ডপ, দশভূজা সংঘ পূজামণ্ডপ, সোনাইমুড়ি গ্রামের পূজামণ্ডপ, হাজীগঞ্জ শহর পূজামণ্ডপ, রামপুর লোকনাথ মন্দির, ভদ্রকালী মন্দির, ত্রিশুল সংঘ পূজামণ্ডপ, রামপুর বলক্ষার বাজার পূজামণ্ডপ, হাজীগঞ্জ রাধাগোবিন্দ মন্দির, বাজারগাঁও মুকুন্দ সাহার বাড়ির দুর্গা মন্দির, হাটিলা গঙ্গানগর দূর্গা মন্দিরও কয়েকটি মন্দিরে হামলা হয়। হামলাকারীদের পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে ৩ জন নিহত ও ১৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়।[৩৮] এরপরে প্রশাসন হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। একই সঙ্গে বুধবার রাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়।[৩৮] চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মুসলিম ধর্মান্ধরা একটি হিন্দু পরিবারের মা, তার মেয়ে এবং তার ভাতিজিকে ধর্ষণ করে বলে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে খবর প্রকাশ পায়। [৩৯][৪০] তবে এরকম ঘটনা ঘটেনি বলে এবং এটি গুজব বলে সংবাদমাধ্যকে জানায় স্থানীয় পূজা উদযাপন পরিষদ। [৪১] হাজীগঞ্জ উপজেলা হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সত্য ব্রত ভদ্র মিঠুন বাংলানিউজকে বলেন, “হাজীগঞ্জের কোথাও হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো পরিবারে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্পূর্ণ মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে। যা গুজব। ”[৪২]
নোয়াখালী জেলা
সম্পাদনামুসলিম ধর্মান্ধরা ১৩ই অক্টোবর নোয়াখালী জেলার হাতিয়ায় শংকর মার্কেটে আশুতোষ ডাক্তার বাড়ির পূজামণ্ডপ, জগন্নাথ মহাপ্রভুর সেবাশ্রম পূজা মন্দির, রাধাগোবিন্দ সেবাশ্রম পূজা মন্দির, শ্রী লোকনাথ মন্দির পূজামণ্ডপ, তপোবন আশ্রম পূজা মন্দির, গুরুচাঁদ সত্যভামা পূজা মন্দির, হাতিয়া পৌরসভা কালী মন্দিরে আক্রমণ করে এবং হিন্দুদের ৪-৫টি ঘর ভাঙচুর করে।[৪৩] নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার ছয়আনি বাজারের ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে একটি পূজামণ্ডপে হামলা ও আগুন লাগানো হয়।[৪৪] পরের দিন ১৫ই অক্টোবর চৌমুহনীতে জুমার নামাজের পর মিছিলকারীরা 'তৌহিদী জনতা' ব্যানার নিয়ে হামলার উদ্দেশ্যে মিছিল করে। মিছিলটি সেখানকার কলেজ রোডে হামলা করে। পুলিশ মিছিলকারীদের বাধা প্রদান করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। চৌমুহনীতে সংঘর্ষের জের ধরে মিছিলকারীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের শ্রীকৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভান্ডার, রামকৃষ্ণ মিষ্টান্ন ভান্ডারসহ কিছু দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলা চালায়।[৪৫] হামলার সাথে জড়িত থাকার কারণে পুলিশ তিন ব্যক্তিকে(১৫ই অক্টোবর) আটক করে।[৪৪] পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, হামলার কারণে যতন কুমার সাহা নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়।[৪৬] যতন সাহাকে হত্যার বর্ণনা দিয়ে তার ভগ্নিপতি উৎপল সাহা দৈনিক সমকালকে বলেন,
‘শুক্রবার বেলা ৩টার একটু আগে প্রায় দুই হাজার লোক প্রথমে গনিপুর গালর্স হাইস্কুলে হামলা করে। এরপর চারদিক থেকে বিজয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে এবং ইসকন মন্দিরে হামলা চালায়। এ সময় ইসকন মন্দিরের লোকজনের সঙ্গে যতন সাহা মন্দিরের গেটে গেলে হামলাকারীরা পিটিয়ে তার পা ভেঙে দেয়। এরপর পায়ে আঘাতের স্থানে বরফ লাগিয়ে যতন সাহা ঘর থেকে বের হলে হামলাকারীরা আবার তাকে পিটিয়ে আহত করে। যতনকে হাসপাতালে নিতে অ্যাম্বুলেন্স ডেকেও পাওয়া যায়নি। প্রথমে তাকে ইসকন মন্দিরের অদূরে রাবেয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বেগমগঞ্জ উপজেলা কমপ্লেক্স ও পরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’ [৪৭]
পুলিশ জানায়, এখলাসপুরে আরও একটি মন্দিরের ভেতরে ঢুকে মূর্তি ভাঙচুর করা হয়।[৪৪] নোয়াখালী জেলার ইসকন মন্দিরে ১৫ই অক্টোবর শুক্রবারে তৌহিদী জনতারা হামলা করে। ইস্কনের সদস্য পার্থ দাসকে ২০০ জনেরও বেশি লোক নির্মমভাবে হত্যা করে। তার মৃতদেহ মন্দিরের পাশের পুকুরে পাওয়া যায়।[৪৮][৪৯][৫০] মুসলিম ধর্মান্ধরা নোয়াখালিতে রাম ঠাকুরের সমাধি আশ্রমে হামলা চালিয়ে পুরো ধ্বংস করে ৷[৫১][৫২]
কক্সবাজার জেলা
সম্পাদনাকক্সবাজার জেলার পেকুয়া ইউনিয়নের বিশ্বাসপাড়ার পূজামণ্ডপ ও আরেকটি পূজামণ্ডপে প্রতিমা এবং স্থানীয় হরিমন্দিরে লুটপাট ও ভাঙচুরের পাশাপাশি ১৬টি বসতঘরও লুট করা হয়।[৪৩] ১৩ই অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় একদল লোক মিছিল নিয়ে এসে হামলা ও ভাংচুর চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি বসতবাড়িতে ভাংচুর চালায়।[৫৩] হামলাকারীরা শিলখালী ইউনিয়নের কাছারী মুরা শীল পাড়া পূজামণ্ডপ ও স্থানীয় সরস্বতী মন্দিরে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর এবং মগনামায় কয়েকটি হিন্দু বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর করে।[৪৩] পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও র্যাবসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়। সেই রাতেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নয়জনকে আটক করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা
সম্পাদনাচট্টগ্রামের জেলার বাঁশখালী ও কর্ণফুলী উপজেলার মণ্ডপে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।[৫৪] জেএম সেন হলে পূজা মণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করে পুলিশ, একইসাথে কয়েকশ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।[৫৫] চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ হামলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিরাপত্তা না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিমা বিসর্জন না দেয়ার ঘোষণা দেয়।[৫৬] পরবর্তীতে পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের আশ্বাসে নির্ধারিত সময়ের পাঁচ ঘণ্টা পরে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়।[৫৭]
হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ পরদিন আধাবেলা হরতাল ডাকে।[৫৮] পরদিন শনিবার আধাবেলা হরতাল পালিত হয়।[৫৯][৬০] হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ আয়োজিত হয়।[৬১]
বান্দরবান জেলা
সম্পাদনা১৪ অক্টোবর কুরআন অবমাননার অভিযোগ ছড়িয়ে সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় সভা করে। লামা কোর্ট জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আজিজুল হক এই সভার সভাপতি ছিল। এতে বক্তব্য দেয় লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম, লামা বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোঃ ইব্রাহিম সহ অনেকে। এরপর তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে লামা বাজার পার হয়ে মাছ বাজারের মোড়ে গিয়ে সহস্র মানুষ ১০ টায় লামা বাজার কেন্দ্রীয় হরি মন্দিরে হামলা করে মন্দিরের মালামাল,লোহার গেইট, সীমানা দেয়াল, প্যান্ডেল, ডেকোরেশনের গেইট ভেঙে ফেলে। হামলাকারীরা ৩০টির বেশি হিন্দুদের দোকানপাট ও ৫টির বেশি বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাট করে। তারা ইটপাটকেল ছুঁড়ে ৫০ জন হিন্দুদের আহত করে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৫ ঘন্টা ব্যাপী এই আক্রমণ চলে।[৬২]
ফেনী জেলা
সম্পাদনা১৬ অক্টোবর বিকেলে কুমিল্লাতে পূজা মন্ডপে আক্রমণের প্রতিবাদে ফেনী জেলাতে হিন্দুরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করছিল। কিন্তু সে সময় ফেনী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে আসরের নামাজ শেষে বের হওয়া মুসল্লীরা বিভিন্ন ইসলামিক শ্লোগান দিয়ে আক্রমণ করে।[৬৩] হিন্দুদের উপর ইট ছুঁড়ে মারা হয় ও বাঁশ নিয়ে হামলা করা হয়। বাঁশপাড়া দুর্গামন্দির,জয়কালী মন্দির,কালীপাল গাজীগঞ্জ আশ্রম সহ একাধিক মন্দিরে হামলা করা হয়।[৬৪] এছাড়া হিন্দুদের ২০টি দোকানেও হামলা করে লুটপাট ও ভাংচুর করা হয়। সন্ধ্যা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই হামলা চলে। ট্রাংক রোডে যান চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এই ঘটনায় ২৯ জন আহত হয়।[৬৫] এই ঘটনার মূল হোতা আহনাফ তৌসিফ মাহমুদ লাবিবকে র্যাব ১৭ অক্টোবর সকালে গ্রেপ্তার করে। র্যাব জানায়,"ফেনী পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম রামপুর গ্রামের বাসিন্দা লাবিবকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে লাবিব র্যাবকে জানায়, গত শনিবার সন্ধায় সে ফেনীর বড় মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে তার দুই বন্ধু মুন্না ও সফীকে সঙ্গে নিয়ে এক বোতল পেট্রোলসহ কালী মন্দিরে যায়। সেখানে মন্দিরের পুরোহিতকে ব্যাপক মারধর ও মন্দিরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে, বলে লুঙ্গি পর, না হয় ধুতিকে লুঙ্গির মতো করে ঝুলিয়ে পর। এরপর তাকে 'লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিউল আজিম এবং লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ' পড়তে বলে।"[৬৬]
ঢাকা বিভাগ
সম্পাদনামুন্সীগঞ্জ জেলা
সম্পাদনা১৫ অক্টোবর মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে একটি মন্দিরে ৬টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়।[৬৭]
ঢাকা জেলা
সম্পাদনাএকই দিনে কুমিল্লায় ‘কুরআন অবমাননার' অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১৫ই অক্টোবর শুক্রবার ঢাকার বায়তুল মোকাররম থেকে জুমার নামাজের পর ‘মালিবাগ মুসলিম সমাজ' ব্যানার নিয়ে কয়েকশ মানুষ বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে৷ পুলিশ বিক্ষোভকারীদের কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড়ের কাছে বাধা প্রদান করে। এরপরে মিছিলকারীরা দুই ভাগ হয়ে যায়৷ তাদের একটি অংশ বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে শুরু করে৷ পুলিশ তখন বিভিন্ন গলির মুখে অবস্থান নেয় এবং টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছোঁড়ে৷ পুলিশ সেখান থেকে বিক্ষোভবিক্ষোভ একজনকে ধরে রমনা থানায় নিয়ে যায়৷[৬৮]
দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে প্রায় আধা ঘণ্টার মতো সংঘর্ষ এবং ধাওয়া–পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ সাতজন আহত হন। আহত দুই বিক্ষোভকারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার বায়জিদুর রহমান জানান, যে "সংঘর্ষে তিনিসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন"।[৬৯]
গাজীপুর জেলা
সম্পাদনাগাজীপুর জেলাতে মুসলিম জনতা ১৩ অক্টোবর কাশিমপুর সুবল দাশের পারিবারিক মন্দির ও কাশিমপুর বাজার কালী মন্দিরে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।[৪৩] কাশিমপুরের শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে ১৪ অক্টোবর সকালে হামলা চালানো হয়। এরপর একই দিনে কিছু লোক কাশিমপুর পশ্চিমপাড়ার ব্যবসায়ী সুবল দাসের পারিবারিক মন্দিরে এবং স্থানীয় পালপাড়া নামাবাজার সর্বজনীন মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার সাথে যুক্ত থাকার জন্য ঘটনাক্রমে ২০ হামলাকারীকে আটক করে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।[৭০] তাদের কাছে পুলিশ মূল ষড়যন্ত্রকারী লুৎফর রহমান, সাইফুল ইসলাম ও রবিউল হাসানের কথা জানতে পারে। পুলিশ বলে,"কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে পোশাক শ্রমিকদের কৌশলে রাস্তায় নামিয়ে মন্দির ভাঙচুর করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে জামায়াত-শিবিরের নেতা[৭১][৭২] লুৎফর রহমান, সাইফুল ইসলাম ও রবিউল হাসান নামে তিন ব্যক্তি।
রাজশাহী বিভাগ
সম্পাদনাচাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা
সম্পাদনা১৩ই অক্টোবর বুধবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জে কুরআনের অবমাননার অভিযোগ তুলে মনাকষা বিন্দাপাড়ার দুর্গা মন্দিরে হামলা করে মৌলবাদীরা পূজামণ্ডপ, প্রতিমা ভাঙচুর করে।[৫৪][৭৩][৭৪][৭৫]
সিলেট বিভাগ
সম্পাদনামৌলভীবাজার জেলা
সম্পাদনামৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কুরআনের অবমাননার অভিযোগ তুলে ১৩ই অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। ১৩ই অক্টোবর বুধবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে দুটি প্রতিমা ও পাঁচটি মণ্ডপে ভাঙচুর করা হয়। রাত সাড়ে ৮টায় মুন্সীবাজার ইউনিয়নের মঈডাইল পূজামণ্ডপের মূর্তি, কামারছড়া চা বাগান পূজামণ্ডপের মূর্তিসহ আরো তিনটি মণ্ডপের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়।[৭৬] কুলাউড়া উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।[৭৭]
রংপুর বিভাগ
সম্পাদনাকুড়িগ্রাম জেলা
সম্পাদনাকুমিল্লার পূজামণ্ডপে কুরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে ১৩ অক্টোবর রাতে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ, থেতরাই ইউনিয়নের ৭ টি মন্দির নেফরা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, হোকডাঙা ভারতপাড়া সর্বজনীন দুর্গা মন্দির, পশ্চিম কালুডাঙ্গা ব্রাহ্মনপাড়া দুর্গা মন্দির, পশ্চিম কালুডাঙ্গা সর্বজনীন দুর্গা মন্দির, থেতরাই ফাসিদাহ বাজার সার্বজনীন দুর্গামন্দির, হাতিয়া পুরাতন অনন্তপুর বাজার সার্বজনীন দুর্গামন্দির ও হাতিয়া ভবেশ নমঃদাস পাড়া দুর্গা সর্বজনীন মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও আগুন লাগায় মুসলিম চরমপন্থিরা । [৭৮] এ ঘটনায় ৩৫ ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে ও ৬০০-৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে মোট ৫ টি মামলা দায়ের করা হয়। এরমধ্যে পুলিশ ৪টি মামলার বাদি হয়েছে ও একটিতে মন্দির কমিটির সভাপতি বাদি হয়েছেন।[৭৯] উলিপুরের সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার তিনটি মামলার প্রধান আসামী করা হয়েছে উপজেলা ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সভাপতি আবু সাঈদ সুমন। পুলিশ জানায়, ১৭ অক্টোবর রাত পর্যন্ত ৩০ জন সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলার প্রধান আসামি হচ্ছেন উপজেলা ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সভাপতি আবু সাঈদ সুমন। তিনি পলাতক রয়েছেন। পুলিশ তাকে আটকের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।[৮০]
ঘটনার বর্ণনায় নেফরা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরের সভাপতি নিপেন রায় বলেন, রাত ১১টার দিকে প্রায় ৫ থেকে ৭শ’ লোক এসে মন্দিরের গ্রিল টিন, প্রতিমা ও পাশের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে। এরপর খড়ের গাদায় আগুন লাগিয়ে দেয়।[৮১]
হোকডাঙা ভারতপাড়া সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক কমলেন্দু রায় বলেন, রাত বারোটার দিকে লাঠি নিয়ে একদল লোক এসে মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর চালায়। এছাড়াও পাশের বাড়িতে হামলা করে তারা।
পশ্চিম কালুডাঙ্গা ব্রাহ্মনপাড়া দুর্গা মন্দিরের পুরোহিত জীবন কৃষ্ণ চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় ১ হাজার থেকে ১২শ’ মানুষ এসে মন্দিরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এতে প্রতিমাসহ সব কিছু ধ্বংস করে দেয়।[৮২]
রংপুর জেলা
সম্পাদনা১৭ অক্টোবর রবিবার রাত ১০টায় ফেসবুকে ইসলাম বিদ্বেষী মন্তব্য করার অভিযোগে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত মাঝিপাড়া, বটতলা ও হাতীবান্ধা গ্রামে আক্রমণ করে।[৮৩][৮৪] এ ঘটনায় মোট ৬৬টি পরিবার আক্রান্ত হয়। এসব পরিবারের ৭টি টিনের বাড়ি, ৯টি ইটের তৈরি বাড়ি, ৪টি মাটির ঘর, ২টি দোকানসহ প্রায় ২৫টি বাড়ি ও দোকান আগুনে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এসব বাড়িতে অগ্নি সংযোগ ছাড়াও লুট-পাট ও মন্দির ভাঙচুর করা হয়। হিন্দুরা প্রাণ বাঁচাতে গ্রাম ছেড়ে পালায়।[৮৫] রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (ডি) সার্কেল কামরুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এক হিন্দু যুবক ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট দিয়েছেন- এমন অভিযোগ তুলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়া হয়। ওই যুবকের বাড়িটি রক্ষা করতে পারলেও বেশ কিছু দূরের হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে আগুন দেয় উন্মত্ত জনতা।’
হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি সংঘটনে নেতৃত্ব দেন রংপুর কারমাইকেল কলেজের দর্শন বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র ও ওই বিভাগে ছাত্রলীগের কমিটির ১ নং সহ-সভাপতি এসএম সৈকত মণ্ডল (২৪)। তবে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রকাশ পেলে গত ১৮ অক্টোবর তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং তাকে আটকের পর অব্যহতির বিষয়টি প্রচার করা হয়।[৮৬]
এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। এরমধ্যে একটি মামলা হয়েছে হিন্দুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের অভিযোগে। এই মামলায় ৪১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় অনেককে আসামি করা হয়। দ্বিতীয় মামলাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার মন্তব্য করার অভিযোগে অভিযুক্ত আসামি পরিতোষ সরকার (১৫) এর নামে। [৮৭] পরিতোষকে ১৮ অক্টোবর রাতে জয়পুরহাট থেকে আটক করা হয়। অপর মামলাটি ফেসবুকে দুই জনের বিরুদ্ধে নতুন করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দুজন হলেন মাঝিপাড়া বড়করিমপুর এলাকার পাশের বড় মজিদপুর গ্রামের উজ্জ্বল হাসান (২১) ও সদর ইউনিয়নের কিশোরগাড়ি গ্রামের আল আমিন (২২)। [৮৮]
আপত্তিকর মন্তব্য করা নিয়ে পীরগঞ্জে হামলার ঘটনার ৪০ দিন আগে রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের পরিতোষ সরকারের সাথে পার্শ্ববর্তী বড় মজিদপুর গ্রামের উজ্জ্বল হাসান (২১) এর কথা কাটাকাটি হয়। পরিতোষকে শায়েস্তা করার জন্য তার দেওয়া আপত্তিকর পোস্টের স্ক্রিনশট বিভিন্নজনের কাছে পাঠায় উজ্জ্বল। এতে আশেপাশের লোকজন সংগঠিত ও উত্তেজিত হয়ে ওঠে।[৮৮]
আরও দেখুন
সম্পাদনা- নোয়াখালী দাঙ্গা
- ১৯৫০-এর বরিশাল দাঙ্গা
- ১৯৬৪ সালের পূর্ব-পাকিস্তানের দাঙ্গা
- বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
- ১৯৯২ সালের বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতন
- ২০১৬ নাসিরনগর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
- মার্চ ২০২১-এ বাংলাদেশে হিন্দু বিরোধী সহিংসতা
- রংপুরের পীরগঞ্জে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
- ২০১৭ গঙ্গাচড়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
- ২০২২ সালে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "এবার রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন"। বিবিসি বাংলা। ১৮ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ ক খ "With 3,679 attacks in 9 years, Bangladesh's Hindus at 'regular threat' of violence: ASK"। বাংলানিউজ২৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Bangladesh Strengthens Security as Violence Targets Hindu Festival"। The New York Times। ১৫ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ ক খ "বাংলাদেশ 'উসকানি' দিয়ে মন্দিরে হামলা, আটক ৪৩"। বিডিনিউজ২৪। ১৪ অক্টোবর ২০২১। ১৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "A bloody autumn's unerasable memory: Our thoughts on the latest bout of communal violence"। The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ১৮ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "দুর্গাপূজা শেষ হলো, শুভ বিজয়া"। www.prothomalony.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ দত্ত, বিনয় (২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২)। "রক্তাক্ত শারদ কবে শারদ সম্প্রীতিতে রূপ নেবে"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৩ নভেম্বর ২০২৪।
- ↑ "ফেসবুকে ভাইরাল 'রক্তাক্ত শারদ'"। ভোরের কাগজ। সংগ্রহের তারিখ ৪ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ "কুমিল্লা: মন্দিরে সংঘবদ্ধ হামলাকারীরা অচেনা, বলছেন স্থানীয়রা"। বাংলানিউজ২৪। ১৪ অক্টোবর ২০২১। ১৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ এলিস-পিটারসেন, হান্না (১৬ অক্টোবর ২০২১)। "Seven dead after violence erupts during Hindu festival in Bangladesh"। দ্য গার্ডিয়ান (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কুরআন পাওয়া নিয়ে শহরে উত্তেজনা, মণ্ডপে হামলা"। বিবিসি বাংলা। ১৩ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "সেদিন মন্দিরে হামলা ভাঙচুরেও ইকবাল"। সমকাল। ২০২১-১০-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "কুমিল্লার সহিংসতায় আহত দিলীপের মৃত্যু"। Newsbangla24। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।
- ↑ "বাংলাদেশের হিন্দুদের বাঁচাতে পারেন একমাত্র নরেন্দ্র মোদী, আবেদন জানিয়ে চিঠি শুভেন্দুর"। এশিয়ানেট নিউজa। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "At least 3 killed, Durga Puja pandals vandalised in Bangladesh"। ইন্ডিয়া টুডে। ১৪ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ ক খ গ "২২ জেলায় বিজিবি, কী ঘটেছিল কুমিল্লায়"। www.dw.com। DW.COM। ১৪ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "সারা দেশে থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট সেবা বন্ধ"। যুগান্তর। ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কুরআন রেখেছে কারা চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি, শহরে বিজিবি মোতায়েন"। বিবিসি বাংলা। ১৩ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "কুমিল্লার পূজামণ্ডপের ঘটনা নিয়ে অপপ্রচার, যুবক গ্রেফতার"। জাগোনিউজ। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "কুমিল্লার ঘটনায় আমার যত প্রশ্ন | মুক্তকথা"। সময় সংবাদ। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ ডেস্ক, প্রথম আলো (২০২৩-১০-১৮)। "মন্দির-মণ্ডপে হামলা: দুই বছরেও বিচার শুরু হয়নি ৪২ মামলার"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৩।
- ↑ বিবিসি বাংলা (অক্টোবর ১৩, ২০২১)। "পূজামণ্ডপে কুরআন রেখেছে কারা চিহ্নিত করতে তদন্ত কমিটি"। বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৮, ২০২১।
- ↑ প্রথম আলো (অক্টোবর ১৩, ২০২১)। "সারা দেশে গ্রেপ্তার শতাধিক, কঠোর অবস্থানে সরকার"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৮, ২০২১।
- ↑ হক, গাজীউল। "কুমিল্লার মণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখেছিলেন ইকবাল হোসেন: পুলিশ"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২০।
- ↑ "কুমিল্লার সেই পূজা মণ্ডপে কোরআন রাখেন ইকবাল হোসেন: পুলিশ"। Ekattor TV (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২০।
- ↑ "কুমিল্লার মণ্ডপে কোরআন রাখা ব্যক্তির পরিচয় জানাল পুলিশ"। RTV Online (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২০।
- ↑ সংবাদদাতা, নিজস্ব; কুমিল্লা (২০২২-০৩-২২)। "মন্দিরে হামলা: কুমিল্লায় গ্রেপ্তার আরও ১"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-১২।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০২৩-০৩-০২)। "ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত: কুমিল্লার সেই ইকবালের কারাদণ্ড"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১১।
- ↑ ডেস্ক, প্রথম আলো (২০২১-১০-২৮)। "একেক সময় একেক ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন সেই ইকবাল"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-১১।
- ↑ "কুষ্টিয়ায় নির্মাণাধীন মন্ডপে প্রতীমা ভাঙচুর"। ekattor.tv/blog। ekattor.tv/blog। ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "সুন্দরগঞ্জের পূজা মন্ডপে প্রতিমা ভাঙচুর"। www.jaijaidinbd.com। jaijaidinbd.com। ৮ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ Team, Hindu Voice (২০২১-১০-০৮)। "বাংলাদেশ: গাইবান্ধায় দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর, অধরা দুষ্কৃতীরা"। Hindu Voice (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১০-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ "জাম্বুরা দিয়ে ঢিল মেরে দুর্গা প্রতিমা ভাঙচুর, আটক ২"। Bangladesh Journal Online। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Durga Puja 2021: 'Black Day' for Bangladeshi Hindus"। www.eastmojo.com। eastmojo.com। ১৫ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "কুমিল্লার ঘটনায় 'অপপ্রচারকারী' আটক"। Newsbangla24। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ "কুমিল্লায় পুলিশের বিরুদ্ধে কাজে গাফিলতির অভিযোগ"। www.dw.com। DW.COM। ১৫ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে হামলার সময় আহত এক ব্যক্তি হাসপাতালে মারা গেছেন"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৩।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ গ "কুমিল্লার পর চাঁদপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, প্রাণহানি"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৪ অক্টোবর ২০২১। ১৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "Bangladesh: Blogger reveals chilling details of rape of an entire Hindu family by Islamists, police denies, calls it 'rumour'"।
- ↑ "Jihadis in Bangladesh rape all women in Hindu family; 10-year-old girl dies"। Sirf News (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১০-১৬। ২০২১-১০-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "Bangladesh: Blogger says Hindu family raped by Islamists"। OpIndia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১০-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ "হাজীগঞ্জে শিশু ধর্ষণ-মৃত্যুর ঘটনা গুজব"।
- ↑ ক খ গ ঘ "তিনদিনে ৭০ পূজামণ্ডপ ও ৮০ দোকান-বাড়িতে হামলা"। Bangladesh Journal Online। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ ক খ গ "পূজামণ্ডপ: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পূজামণ্ডপে হামলা-অগ্নিসংযোগ ও মন্দিরে ভাঙচুর"। www.bbc.com। বিবিসি বাংলা। ১৫ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "চৌমুহনীতে মন্দির ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, কাল ১৪৪ ধারা"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ "ঢাকা ও নোয়াখালীতে জুমার নামাজের পর সংঘর্ষ, ১ জনের মৃত্যু"। www.bbc.com। বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ দৈনিক সমকাল (অক্টোবর ১৮, ২০২১)। "বাবার জন্য চারদিন না খেয়ে আদিত্য"। দৈনিক সমকাল। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২০, ২০২১।
- ↑ Oct 16, TIMESOFINDIA COM / Updated:; 2021; Ist, 09:05। "iskcon: 1 dead in attack by mob at ISKCON temple in Bangladesh's Noakhali"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ "Body recovered from pond in Noakhali's Begumganj"। www.thedailystar.net। দ্য ডেইলি স্টার। ১৬ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "চৌমুহনীতে আরো একজনের মরদেহ উদ্ধার, ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিক্ষোভ"। www.bbc.com। বিবিসি বাংলা। ১৬ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "কুমিল্লার পর নোয়াখালি, বাংলাদেশে অব্যাহত হিন্দুদের ওপর আক্রমণ"। Khas Khobor। ২০২১-১০-১৫। ২০২১-১০-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ amaderbharat.com (২০২১-১০-১৬)। "বাংলাদেশ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তথাগত রায়ের পোস্টে বিপুল সমর্থন"। AmaderBharat.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ "কক্সবাজারে মন্দিরে, হিন্দুপল্লিতে হামলা: আটক ৯"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৫ অক্টোবর ২০২১। ১৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ ক খ "কক্সবাজারে পূজামণ্ডপ ও হিন্দু বাড়িতে হামলা, আটক ৯"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৪ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "চট্টগ্রামে পূজামণ্ডপে হামলা: ৮৩ জন শনাক্ত, মামলা"। বিডিনিউজ২৪। ২০২১-১০-১৬। ২০২১-১০-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "শনিবার চট্টগ্রামে হরতাল, প্রতিমা বিসর্জন বন্ধ | বাংলাদেশ"। সময় টিভি। ২০২১-১০-১৫। ২০২১-১০-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "Hindu leaders decide against immersing idols, declare half-day strike over attack on JM Sen Hall"। বিডিনিউজ২৪। ২০২১-১০-১৫। ২০২১-১০-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "চট্টগ্রামে আধাবেলা হরতাল পালিত"। বিডিনিউজ২৪। ২০২১-১০-১৬। ২০২১-১০-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "Hindu leaders decide against immersing idols, declare half-day strike over attack on JM Sen Hall"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০২১-১০-১৫। ২০২১-১০-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "চট্টগ্রামে আধাবেলা হরতাল পালিত | বাংলাদেশ প্রতিদিন"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২০২১-১০-১৬। ২০২১-১০-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ"। বিডিনিউজ২৪। ২০২১-১০-১৬। ২০২১-১০-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "রণক্ষেত্র লামা: কেন্দ্রীয় হরি মন্দির ভাংচুর, ওসি সহ আহত অর্ধশতাধিক"। বিজনেস বাংলাদেশ (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১০-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৭।
- ↑ Narayan (২০২১-১০-১৭)। "কুমিল্লার ভয়াবহতার পর এবার ফেনী! উন্মাদীদের হাত থেকে রক্ষা পেল না মা কালীর মন্দির"। India Rag (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১০-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৭।
- ↑ ডেস্ক, প্রথম আলো। "প্রতিবাদের মধ্যেই ফেনীতে সংঘর্ষ"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৭।
- ↑ "ফেনীতে ব্যাপক সংঘর্ষ, এএসপিসহ আহত ২৯"। Newsbangla24। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৭।
- ↑ সংবাদদাতা, নিজস্ব; ফেনী (২০২১-১০-১৮)। "ফেনীতে মন্দিরে হামলার মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "সিরাজদিখানে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৬ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "ঢাকায় মিছিল, সংঘর্ষ"। www.dw.com। DW.COM। ১৫ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "কুমিল্লার ঘটনার জেরে ঢাকায় বিক্ষোভ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ"। www.prothomalo.com। প্রথম আলো। ১৫ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "গাজীপুরে প্রতিমা ভাঙচুর, তিন মামলায় ১৮ জনের রিমান্ড মঞ্জুর"। প্রথম আলো। ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "কুমিল্লার ঘটনায় মূল সন্দেহভাজন শনাক্ত"। SAMAKAL (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-১০-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২০।
- ↑ "কুমিল্লায় কোরআন অবমাননাকারী"। BangladeshDarpan। ২০২১-১০-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২০।
- ↑ "দশমীতেও বাংলাদেশের মন্দিরে চলল তাণ্ডবলীলা, নোয়াখালিতে হামলা ইসকন মন্দিরে"। Hindustantimes Bangla। ২০২১-১০-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "মন্দিরে হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ-জুড়ে দফায় দফায় প্রতিবাদ, দেখুন"। Aaj Tak বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ ডটকম, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "কুমিল্লায় বিজিবি মোতায়েন, ঘটনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২০২১-১০-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "কমলগঞ্জে পূজামণ্ডপে হামলা, নিরাপত্তায় বিজিবি"। sylhetvoice.com। sylhetvoice.com। ১৫ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ "কুমিল্লায় পবিত্র কুরআন অবমাননা: কুলাউড়ায় বিক্ষোভ"। www.odhikar.news। odhikar.news। ১৪ অক্টোবর ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০২১।
- ↑ সংবাদদাতা, কুড়িগ্রাম জেলা। "কুড়িগ্রামের উলিপুরে ৭টি মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, গ্রেপ্তার ১৮"। DailyInqilabOnline। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ দৈনিক যুগান্তর (অক্টোবর ১৯, ২০২১)। "মন্দির ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ: উলিপুরে ৫ মামলায় আসামি ৭০০"। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৯, ২০২১।
- ↑ "মন্দির ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ: উলিপুরে ৫ মামলায় আসামি ৭০০"। দৈনিক যুগান্তর। অক্টোবর ১৯, ২০২১। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২০, ২০২১।
- ↑ বিডি, আই নিউজ। "Temple vandalism: উলিপুরে ৭টি মন্দির ভাঙচুর,আটক-১৮"। Eye News BD। ২০২১-১০-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ "উলিপুরে মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, আটক ১৮"। Odhikar। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ রিপোর্ট, স্টার অনলাইন (২০২১-১০-১৮)। "ফেসবুকে ধর্ম 'অবমাননার' অভিযোগে এবার পীরগঞ্জে বাড়ি-ঘরে আগুন"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "এবার রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন"। বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৮।
- ↑ "পীরগঞ্জে জেলে পল্লীতে আগুন: আটক ৪২"। দ্য ডেইলি স্টার। অক্টোবর ১৮, ২০২১। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২০, ২০২১।
- ↑ "পীরগঞ্জে হামলায় র্যাবের হাতে আটক সৈকত মণ্ডল ছাত্রলীগ নেতা"। দৈনিক প্রথম আলো। অক্টোবর ২৩, ২০২১। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২৩, ২০২১।
- ↑ "ফেসবুকে অবমাননাকর পোস্ট: সেই পরিতোষ সরকার গ্রেফতার"। দৈনিক যুগান্তর। অক্টোবর ১৮, ২০২১। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৮, ২০২১।
- ↑ ক খ "পীরগঞ্জে হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় আরও ১১ জন গ্রেপ্তার"। দৈনিক প্রথম আলো। অক্টোবর ২০, ২০২১। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২৩, ২০২১।