হোটেল রুয়ান্ডা
হোটেল রুয়ান্ডা (ইংরেজি ভাষায়: Hotel Rwanda) ১৯৯৪ সালের রুয়ান্ডার গণহত্যার উপর ভিত্তি করে নির্মীত চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন উত্তর আয়ারল্যান্ডীয় পরিচালক টেরি জর্জ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি ও দক্ষিণ আফ্রিকার যৌথ প্রযোজনায় নির্মীত এই ছবিটি ২০০৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল। দুই প্রতিযোগী স্বাধীন চলচ্চিত্র স্টুডিও লায়ন্স গেট ফিল্ম্স ও ইউনাইটেড আর্টিস্ট্স যৌথভাবে এই ছবির জন্য কাজ করেছে। ছবির শুটিং হয়েছে মূলত দক্ষিণ আফ্রিকাতে। অবশ্য কিছু দ্বিতীয় ইউনিট শুটিং রুয়ান্ডার রাজধানী কিগালিতে করা হয়েছে।
হোটেল রুয়ান্ডা | |
---|---|
পরিচালক | টেরি জর্জ |
প্রযোজক | টেরি জর্জ |
রচয়িতা | Keir Pearson টেরি জর্জ |
পরিবেশক | লায়ন্স গেট ফিল্ম্স ইউনাইটেড আর্টিস্ট্স |
মুক্তি | ১১ই সেপ্টেম্বর, ২০০৪ |
স্থিতিকাল | ১২১ মিনিট |
দেশ | যুক্তরাজ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতালি দক্ষিণ আফ্রিকা |
ভাষা | ইংরেজি ফরাসি |
নির্মাণব্যয় | ১৭,৫০০,০০০ মার্কিন ডলার |
আয় | ৩৩,৮৮২,২৪৩ ডলার |
হোটেল রুয়ান্ডাকে অনেকেই আফ্রিকান শিন্ডলার্স লিস্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার ঠিক ১০ বছর আগে রুয়ান্ডাতে মানব ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নানান ধরনের খবরের ভিড়ে এই গণহত্যার সংবাদ আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে খুব কমই স্থান পেয়েছিল। এই সুযোগেই গণহত্যা বিভৎস রূপ ধারণ করেছিল। মাত্র তিন মাসে ৮০০,০০০ লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। হুটু গোষ্ঠীর আগ্রাসী লোকেরা বিদ্রোহী টাট্সি গোষ্ঠীর মানুষদের হত্যা করে। সে সময় কিগালির এক সাধারণ হোটেল কর্মকর্তা পল রুসেসাবেগিনা প্রায় ১২৬৮ জন হুটু ও টাট্সি শরণার্থীকে রক্ষা করেন। তিনি অত্যন্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এদের সবাইকে নিজের হোটেলে (হোটেল মি কোলিন) আশ্রয় দিয়েছিলেন। সম্পূর্ণ সত্য এই ঘটনা অবলম্বনেই ছবিটি নির্মীত হয়েছে। রুসেসাবেগিনা চরিত্রে অভিনয় করেছেন Don Cheadle।
চরিত্রসমূহ
সম্পাদনা- Don Cheadle - পল রুসেসাবেগিনা
- Sophie Okonedo - টাটিয়ানা রুসেসাবেগিনা
- Nick Nolte as কর্নেল অলিভার (বাস্তবে Roméo Dallaire)
- Fana Mokoena - জেনারেল অগাস্টিন বিজিমংগু
- Joaquin Phoenix - সাংবাদিক জ্যাক ড্যাগলিশ
- জঁ রেনো - স্যাবিনা এয়ারলাইন্সের সভাপতি মিস্টার টিলেন্স
- Desmond Dube - ডুবে
- Hakeem Kae-Kazim - জর্জ রুটাগান্ডা
প্রতিক্রিয়া
সম্পাদনাপ্রায় সব সমালোচকই ছবিটির প্রশংসা করেছেন। রটেন টম্যাটোস-এ শতকরা ৯২ জনই ইতিবাচক সমালোচনা করেছেন। মেটাক্রিটিক-এ রেটিং ৭৯% এবং সেখানে দর্শকরা ১০ এর মধ্যে ৮.৫। আইএমডিবি রেটিং ৮.৪। যুক্তরাষ্ট্রে এটা প্রথমে "R" রেটিং পেয়েছিল। কিন্তু এটি গুটিকয়েক ছবির একটি যেগুলো পুনরায় আবেদনের মাধ্যমে এই রেটিং এড়াতে পেরেছে। কিছু নৃশংস দৃশ্যের জন্য শেষে একে "PG-13" রেটিং দেয়া হয়। ছবিটি তিনটি ক্ষেত্রে একাডেমি পুরস্কার মনোনয়ন লাভ করে: সেরা অভিনেতা, সেরা পার্শ্ব অভিনেতা এবং সেরা মৌলিক চিত্রনাট্য। অবশ্য কোনটিই জিততে পারেনি।
অ্যামেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট ছবিটিকে সর্বকালের সেরা "প্রেরণাদায়ক চলচ্চিত্রের" তালিকায় এটিকে ৯০তম স্থান দিয়েছে। চলচ্চিত্র সমালোচক রিচার্ড রোপার বলেন, এটা তার জীবনে দেখা সেরা প্রেরণাদায়ক ছবিগুলোর একটা এবং তিনি একে ২০০৪ সালের সেরা ছবি হিসেবে মনোনীত করেন। রজার ইবার্ট ছবিটিকে ৪ তারকা দিয়েছেন এবং ২০০৪ সালের সেরা ছবির তালিকায় ৯ নম্বরে স্থান দিয়েছেন। ইবার্টের ওয়াবসাইটে হোটেল রুয়ান্ডার পাতায় অন্যান্য সমালোচনাগুলোরও লিংক দেয়া আছে।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে হোটেল রুয়ান্ডা (ইংরেজি)
- Filming the Unfilmable - The challenge of the genocide movie
- Hotel Rwanda at the আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেরা ১০০ চলচ্চিত্র - আর্টস অ্যান্ড ফেইথের তালিকা
- হোটেল রুয়ান্ডা নিয়ে Don Cheadle এর সাক্ষাৎকার
- ইম্মর্টাল চ্যাপলেইন্স ফাউন্ডেশন রুসেসাবেগিনাকে সম্মানিত করেছে এবং ছবির কাহিনীকে সম্পূর্ণ ঠিক বলে স্বীকৃতি দিয়েছে