স্যামি কার্টার

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

হ্যানসন স্যামি কার্টার (ইংরেজি: Sammy Carter; জন্ম: ১৫ মার্চ, ১৮৭৮ - মৃত্যু: ৮ জুন, ১৯৪৮) ইয়র্কশায়ারের নর্থোরাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ বংশোদ্ভূত প্রথিতযশা অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯০৭ থেকে ১৯২১ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

স্যামি কার্টার
আনুমানিক ১৯০৯ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে স্যামি কার্টার
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম১৫ মার্চ, ১৮৭৮
নর্থোরাম, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৮ জুন, ১৯৪৮ (৭০ বছর)
বেলেভ্যু হিল, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরন
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৮৮)
১৩ ডিসেম্বর ১৯০৭ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৬ নভেম্বর ১৯২১ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৮ ১২৮
রানের সংখ্যা ৮৭৩ ২৮৯৭
ব্যাটিং গড় ২২.৯৭ ২০.১১
১০০/৫০ ০/৪ ২/১৩
সর্বোচ্চ রান ৭২ ১৪৯
বল করেছে
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪৪/২১ ১৮১/৮৯
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন স্যামি কার্টার

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

সম্পাদনা

১৮৯৪ সালে সিডনি বয়েজ হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন।[] ১৮৯৭-৯৮ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। দুইটি খেলায় অংশ নেয়ার পর ১৯০১-০২ মৌসুমে ইংল্যান্ড সফরের জন্য মনোনীত হন তিনি। ১৯০২ সালে দলের ভারপ্রাপ্ত উইকেট-রক্ষক হিসেবে অংশ নেন। ১৯০৪-০৫ মৌসুমে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ১৪৯ রান তুলেন।

টেস্ট ক্রিকেট

সম্পাদনা

১৯০৭-০৮ মৌসুমে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলার সুযোগ পান। ১৩ ডিসেম্বর, ১৯০৭ তারিখে টেস্ট অভিষেক ঘটে স্যামি কার্টারের। এ পর্যায়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পাঁচ টেস্টের প্রত্যেকটিতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। ১৯০৯ সালে পুনরায় ইংল্যান্ড গমন করে পাঁচ টেস্টের সবকটিতে খেলেন। তার সহকারী হিসেবে বার্লো কারকিককে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ১৯১০-১১ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার অস্ট্রেলিয়া আগমন ঘটে ও ১৯১১-১২ মৌসুমে ইংল্যান্ড সফরে যান। ১৯১১-১২ মৌসুমে অ্যাডিলেড টেস্টে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে তিন নম্বরে নেমে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংস ৭২ তোলেন। ১৯২০-২১ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ দুই টেস্টে অংশগ্রহণের মাধ্যমে পুনরায় টেস্ট জগতে ফিরে আসেন। প্রায় ৪৩ বছর বয়স হলেও ১৯২১ সালে ইংল্যান্ডে যান। ১৯২১-২২ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকায় শেষ দুই টেস্টে অংশ নেন স্যামি কার্টার।

খেলার ধরন

সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২৮ টেস্টে অংশগ্রহণ করেন তিনি। ৪৪ ক্যাচ ও ২১ স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজ নামকে জড়িয়ে রাখেন। ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রায়শঃই তাকে ফাইন-লেগ অঞ্চল দিয়ে পাঠানো স্কুপ শটের প্রচলনকারী হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।[] এছাড়াও মাঝে-মধ্যে দলের জন্যে রান তোলায় মনোনিবেশ ঘটাতেন। সচরাচর শেষ ব্যাটসম্যানের পূর্বেই তাকে মাঠে ব্যাট হাতে দেখা যেতো। প্রথম উইকেট-রক্ষক হিসেবে কোমর বাঁকা না করে উবু হয়ে উইকেটের পিছনে অবস্থান করতেন।[]

১৯৩২ সালে ৫৪ বছর বয়সে ভিক রিচার্ডসনের নেতৃত্বে অনানুষ্ঠানিকভাবে দলের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা গমন করেন। ১৯৪৬ সালে ইংল্যান্ডের দলনায়ক ওয়ালি হ্যামন্ড এবং ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের সম্পাদক ও এমসিসি দলের সফর ব্যবস্থাপক মেজর রুপার্ট হাওয়ার্ড সিডনিতে স্যামি কার্টারকে দেখতে আসেন। ১৯২১ সালে ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের নেতৃত্বে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলে উইকেট-রক্ষক স্যামি কার্টার তখন হুইলচেয়ার ব্যবহার করতেন। তারা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত ওল্ড ট্রাফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ড পুণঃনির্মাণে উদ্বৃত্ত অর্থ থেকে £১,০০০ পাউন্ড স্টার্লিং তাকে দান করেন।

শবদেহ সৎকার কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। কখনোবা শবযানে চড়ে খেলা দেখতে আসতেন।[] ৮ জুন, ১৯৪৮ তারিখে ৭০ বছর বয়সে নিউ সাউথ ওয়েলসের বেলেভ্যু হিল এলাকায় স্যামি কার্টারের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Australian Sporting Representatives ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৩ মার্চ ২০১৯ তারিখে. shsobu.org.au
  2. Patrick Kidd (10 August 2008). "The batting evolution." Cricinfo.
  3. The Oxford Companion to Australian Cricket, Oxford, Melbourne, 1996, p. 100.
  4. Christopher Martin-Jenkins (1983). The Complete Who's Who of Test Cricketers. Rigby, Adelaide. p. 183. আইএসবিএন ০৮৫৬১৩৪৮৭২.

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা