সৌমেন্দু রায়
সৌমেন্দু রায় বা সৌম্যেন্দু রায় (৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৩২ - ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩) [১] ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি চিত্রগ্রাহক। তিনি বিখ্যাত পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত হন।[২] ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে দেবী দিয়ে শুরু করে ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ঘরে-বাইরে পর্যন্ত মোট ছাব্বিশটি ছবিতে কাজ করেছেন। সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছায়াছবি পথের পাঁচালীতে তিনি ছিলেন সুব্রত মিত্রের সহকারী। [৩] সেরা সিনেমাটোগ্রাফির জন্য সৌমেন্দু রায় তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
সৌম্যেন্দু রায় | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | (বয়স ৯১)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | আশুতোষ কলেজ কলকাতা |
পেশা | সিনেমাটোগ্রাফার |
পিতা-মাতা | কনক কুমার রায় (পিতা) গার্গী রায় (মাতা) |
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাসৌমেন্দু রায়ের জন্ম ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ৭ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের উত্তর কলকাতার গ্রে স্টিটে। পিতা কনক কুমার রায় ও মাতা গার্গী রায়। তবে সৌমেন্দুর শৈশবের দশ বৎসর কেটেছে অধুনা ছত্তিশগড়ের ধরমজয়গড়ে। আদি নিবাস ছিল কাঁচড়াপাড়ায়। দেবীর পর চলে আসেন কলকাতায় রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে তার এক জ্যাঠামশাই ডাক্তার বিমলকুমার রায়ের বাড়িতে। পড়াশোনা তীর্থপতি ইনস্টিটিউশনে। বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ পড়াশোনা করেন আশুতোষ কলেজে। এখান থেকেই তিনি বিজ্ঞানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হন। স্কুল জীবনেই তার সিনেমার প্রতি বিশেষকরে ছবি তোলার আগ্রহ জন্মায়। স্কুলের এক বন্ধু অসিত রানার সহায়তায় ফটোগ্রাফির প্রথম পাঠ পান। তারপর স্থানীয় এক স্টুড়িওতে দুই বন্ধু মিলে নিয়মিত যাতায়াত করে নেগেটিভ পরিস্ফুটনের কাজও শিখে নেন।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাপুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনাচিত্রগ্রাহক হিসাবে সৌমেন্দু রায় অসামান্য কাজের জন্য তিন বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন-
- জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-
- ১৯৭৪ : সেরা সিনেমাটোগ্রাফি : অশনি সংকেত
- ১৯৭৫ : সেরা সিনেমাটোগ্রাফি : সোনার কেল্লা
- ১৯৭৮: সেরা সিনেমাটোগ্রাফি : শতরঞ্জ কে খিলাড়ি
- ১৯৯৩: সেরা নন-ফিচার ফিল্ম সিনেমাটোগ্রাফি : সুচিত্রা মিত্র
১৯৮২ : সেরা সিনেমাটোগ্রাফার : কান সিভান্থাল মান সিভাক্কুম
জীবনাবসান
সম্পাদনাসৌম্যেন্দু রায় দীর্ঘ দিন বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন। ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের ২৭ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে তার জীবনাবসান হয়।[২] [৪]
চলচ্চিত্রের তালিকা
সম্পাদনা- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯৬১)
- তিন কন্যা (১৯৬১)
- অভিযান (১৯৬২)
- পলাতক (১৯৬৩)
- টু (স্বল্প দৈর্ঘ্য) (১৯৬৪)
- আলোর পিপাসা (১৯৬৫)
- অভয়া ও শ্রীকান্ত (১৯৬৫)
- বাক্সবদল (১৯৬৫)
- মহাপুরুষ (১৯৬৫)
- কাপুরুষ (১৯৬৫)
- একটুকুবাসা (১৯৬৫)
- চিড়িয়াখানা (১৯৬৭)
- বালিকা বধূ (১৯৬৭)
- বধূবরণ (১৯৬৭)
- গুপী গাইন বাঘা বাইন (১৯৬৯)
- অরণ্যের দিনরাত্রি (১৯৭০)
- প্রতিদ্বন্দ্বী (১৯৭০)
- কুহেলি (১৯৭১)
- সিকিম (১৯৭১)
- সীমাবদ্ধ (১৯৭১)
- দ্য ইনার আই (১৯৭২)
- অশনি সংকেত (১৯৭৩)
- সাধু যুধিষ্ঠিরের কড়চা (১৯৭৪)
- সোনার কেল্লা (১৯৭৪)
- জন অরণ্য (১৯৭৬)
- নিধিরাম সর্দার (১৯৭৬)
- শতরঞ্জ কে খিলাড়ি (১৯৭৭)
- জয়বাবা ফেলুনাথ (১৯৭৯)
- হীরক রাজার দেশে (১৯৮০)
- বালা (স্বল্প দৈর্ঘ্য)
- সদগতি (১৯৮১) (টেলি ফিল্ম )
- কান সিভান্থাল মান সিভাক্কুম (তামিল ছায়াছবি) (১৯৮২)
- ফটিকচাঁদ (১৯৮৩)
- পিকু (স্বল্প দৈর্ঘ্য) (১৯৮৩)
- ইসলাম ইন ইন্ডিয়া (তথ্যচিত্র)
- ঘরে বাইরে (১৯৮৫)
- সুন্দবন (তথ্যচিত্র) (১৯৮৫)
- ভোম্বল সর্দার (স্বল্প দৈঘ্য) (১৯৮৮)
- আগুন (১৯৮৮)
- দেবতা (১৯৯০)
- উইল টু লিভ (ইংরাজী)
- আনোখা মোতি
- এক ডক্টর কী মৌত (১৯৯১)
- অন্তর্ধান (১৯৯২)
- পোটলি বাবা কী (১৯৯১) (টিভি সিরিজ)
- চরাচর (১৯৯৩)
- হুইলচেয়ার (১৯৯৪)
- শতাব্দীর কন্যা[৫]
- আজব গাঁয়ের আজব কথা (১৯৯৮)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "চিত্রগ্রাহকদের শেষ নবাব সৌম্যেন্দু রায়"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৮।
- ↑ ক খ "নিঃশব্দেই চলে গেলেন কিংবদন্তি সৌমেন্দু রায় , প্রয়াত সত্যজিতের সিনেমাটোগ্রাফার"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৯।
- ↑ "প্রয়াত বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী! চলে গেলেন সত্যজিতের সিনেমাটোগ্রাফার সৌমেন্দু রায়"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৮।
- ↑ "Soumendu Roy, Satyajit Ray's trusted cinematographer & close associate passes away at 90"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৯-২৮।
- ↑ Filmography New York Times