সৈয়দ রেফাত আহমেদ
সৈয়দ রেফাত আহমেদ (জন্ম: ২৮ ডিসেম্বর ১৯৫৮) বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি।[১] সর্বশেষ আপিল বিভাগের বিচারপতি করে তাকে প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।[২] ইতঃপূর্বে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি ছিলেন।[৩]
মাননীয় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ | |
---|---|
বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ১১ আগস্ট ২০২৪ | |
নিয়োগদাতা | বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি |
রাষ্ট্রপতি | মোঃ সাহাবুদ্দিন |
পূর্বসূরী | ওবায়দুল হাসান |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ২৮ ডিসেম্বর ১৯৫৮ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
পিতামাতা | সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ (পিতা) সুফিয়া আহমেদ (মাতা) |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাসৈয়দ রেফাত আহমেদ ২৮ ডিসেম্বর ১৯৫৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বাংলাদেশের অন্যতম খ্যাতিমান আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ যিনি বাংলাদেশের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন। তার মাতা সুফিয়া আহমেদ জাতীয় অধ্যাপক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন।[৪]
রেফাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান লাভ করে আইনশাস্ত্রে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াদাম কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি ফ্লেচার স্কুল অফ ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি অফ টাফ্টস ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স এবং পিএইচডি সম্পন্ন করেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনাসৈয়দ রেফাত আহমেদ ১৯৮৪ সালে ঢাকা জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন। এরপর তিনি ১৯৮৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন। তিনি হংকং এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার হিসেবে কাজ করেছেন।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ ২০০২ সালে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ২৭ এপ্রিল ২০০৩ সালে বাংলাদেশ হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০০৩ সালে শামছুদ্দিন চৌধুরী মানিক তার গাড়িকে স্যালুট না দেয়ায় ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনেন। পরে বাংলাদেশ পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক শহুদুল হক এক বিবৃতিতে বলেন, ট্রাফিক পুলিশ কাউকে স্যালুট জানাতে বাধ্য নয় এবং কেবল সড়কে নিরাপদ হলে তারা তা করতে পারে। বিচারপতি এম এ মতিন ও বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ হাইকোর্ট বেঞ্চ আইন অনুযায়ী শহুদুল হকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ জারি করলে আইন অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাকে মহাপরিদর্শকের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। পরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির ক্ষমার ভিত্তিতে শহুদুল হকের চাকরিকে বেঁচে যায়।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
২০০৯ সালে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসতি স্থাপনকারী এক বাঙালি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবীর দায়ের করা একটি রিটের শুনানি করেন।
২০১৭ সালের অক্টোবরে বিচারপতি মোঃ সেলিম ও রেফাত আহমেদ বাংলাদেশ সরকারকে চার সপ্তাহের মধ্যে সাভারে চামড়ার কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। এরপূর্বে ৩০ জানুয়ারি তারা সংসদ সদস্য মাহবুবুর রহমান তালুকদারকে পটুয়াখালী জেলার ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পদ থেকে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন।
সৈয়দ রেফাত আহমেদকে ২০২৪ সালের ১০ আগস্ট বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।[৫][৬] ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট তারিখে তিনি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথপত্র পাঠ করে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।[৭]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ প্রতিবেদক, বিশেষ (২০২৪-০৮-১০)। "প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেলেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১০।
- ↑ "প্রধান বিচারপতি হলেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ"। দৈনিক ইত্তেফাক। ১০ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ "'Cops, judges must together ensure justice'"। ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৯-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-০৮।
- ↑ খান, বাহরাম (১০ আগস্ট ২০২৪)। "নতুন প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে যা জানা গেল"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ "নতুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ"। ডেইলি স্টার। ১০ আগস্ট ২০২৪।
- ↑ "প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেলেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ"। কালের কণ্ঠ। আগস্ট ২০২৪।
- ↑ "শপথ নিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ"। দৈনিক কালের কণ্ঠ। আগস্ট ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৪।