সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ (১৮ জানুয়ারি ১৯৩২ - ১২ জুলাই ২০০৩) ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী আইনজ্ঞ, আইনজীবী এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞ।[] তিনি সেই বিরল ব্যক্তিদের একজন যারা দুটি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন;[] তিনি ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় এটর্নি জেনারেল হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[] তিনি ‘জাতির অভিভাবক’ নামে পরিচিত ছিলেন এবং সব সময় রাজনৈতিক পরিচিতি এবং সম্পৃক্ততা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছেন।[]

সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ
বাংলাদেশের ৩য় অ্যাটর্নি জেনারেল
কাজের মেয়াদ
২২ মার্চ ১৯৭৬ – ৬ মে ১৯৭৬
পূর্বসূরীফকির শাহাবুদ্দীন
উত্তরসূরীমোস্তফা কামাল
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯৩২-০১-১৬)১৬ জানুয়ারি ১৯৩২
গাজীপুর, উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১২ জুলাই ২০০৩(2003-07-12) (বয়স ৭১)
ঢাকা, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
দাম্পত্য সঙ্গীসুফিয়া আহমেদ (বি. ১৯৫৫)
সন্তান
পিতাসৈয়দ জাফর আহমেদ
প্রাক্তন শিক্ষার্থী
পেশাআইনজীবী

জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি

সম্পাদনা

সৈয়দ ইশতিয়াক ১৯৩২ সালের ১৮ জানুয়ারি অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের যুক্ত প্রদেশের গাজীপুরে জন্মগ্রহণ করেন।[] তার পিতা সৈয়দ জাফর আহমেদ দিনাজপুরের (পশ্চিমবঙ্গ) হিলির জমিদার ও ব্যবসায়ী ছিলেন।

শিক্ষাজীবন

সম্পাদনা

ইশতিয়াক হিলির রামনাথ ইংরেজি হাইস্কুলে ও পরে কলকাতা মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর পরিবারের সাথে পূর্ব বাংলায় চলে আসেন ও ১৯৪৮ সালে ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে আই.এ., ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৫৪ সালে এম.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি উচ্চশিক্ষার্থে বৃটেন যান এবং ১৯৫৮ সালে সেখানকার লিংকনস ইন থেকে বার-এট-ল এবং লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিকস থেকে অর্থনীতিতে এম.এসসি. ডিগ্রী লাভ করেন।[]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

১৯৬০ সাল থেকে আমৃত্যু আইন পেশায় নিয়োজিত থাকা ব্যারিস্টার ইশতিয়াক ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন শাস্ত্রের খন্ডকালীন অধ্যাপক, ১৯৭২ সালে অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এবং ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের তৃতীয় এটর্নি জেনারেল ছিলেন।[] তিনি বিচারপতি হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন ১৯৯৬ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ৩০ মার্চ হতে ২৩ জুন পর্যন্ত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে এবং বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ১৬ জুলাই হতে ১০ অন্টোবর পর্যন্ত আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন।[]

সম্মাননা

সম্পাদনা

তার নামে আইন সাংবাদিকতায় পদক চালু করা হয়েছে, যাতে প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ক্যাটাগরির প্রতিটিতে দু’টি করে মোট চারটি পদক দেয়া হয়।[]

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ১৯৫৫ সালের জুনে সুফিয়া আহমেদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। সুফিয়া আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় অধ্যাপক[] তাদের দুই সন্তান; পুত্র সৈয়দ রেফাত আহমেদ বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি এবং কন্যা রাইনা আহমেদ একজন চিকিৎসক।[]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "ব্যারিস্টার ইশতিয়াকের জন্মবার্ষিকী আজ"দৈনিক জনকন্ঠ। ১৬ জানুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  2. "Syed Ishtiaq Ahmed & Associates (SIA&A) : About Us"। SYED ISHTIAQ AHMED & ASSOCIATES। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  3. সুফিয়া আহমেদ (জানুয়ারি ২০০৩)। "আহমেদ, সৈয়দ ইশতিয়াক"। সিরাজুল ইসলামবাংলাপিডিয়াঢাকা: এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশআইএসবিএন 984-32-0576-6। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  4. "লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ : সাবেক মন্ত্রীগণের কর্মকালসহ তালিকা"। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৮ মার্চ ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  5. "আইন সাংবাদিকতায় ব্যারিস্টার ইশতিয়াক পদক"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  6. "DR SUFIA AHMED"দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  7. খান, বাহরাম (১০ আগস্ট ২০২৪)। "নতুন প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে যা জানা গেল"দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৪ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
আইন দফতর
পূর্বসূরী
ফকির শাহাবুদ্দীন আহমদ
বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল
১৯৭৬–১৯৭৭
উত্তরসূরী
মোস্তফা কামাল