সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান
সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান (মৃত্যু ২৮ জানুয়ারি ২০১০) ছিলেন একজন বাংলাদেশী সেনা কর্মকর্তা যিনি বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন।[১] অভ্যুত্থানে তার ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।[২][৩] ২৮ জানুয়ারী ২০১০ তারিখে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সৈয়দ ফারুক রহমান, একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ, মহিউদ্দিন আহমেদ এবং মোহাম্মদ বজলুল হুদার সাথে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।[৪]
সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান | |
---|---|
মৃত্যু | ২৮ জানুয়ারি ২০১০ পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার |
আনুগত্য | বাংলাদেশ |
সেবা/ | বাংলাদেশ সেনাবাহিনী |
পদমর্যাদা | লেফটেন্যান্ট কর্নেল |
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৭৩ সালে খান কুমিল্লার আর্মি স্কুল অব ফিজিক্যাল ট্রেনিংয়ের প্রধান পরিদর্শক ছিলেন। তার বন্ধু ও সহকর্মী মেজর শরিফুল হক ডালিম এবং তার স্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ গাজী গোলাম মোস্তফার ছেলেদের সাথে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। কিছু অফিসার গাজী গোলামের বাড়ি ভাংচুর করে, যার ফলে ডালিম এবং মেজর এস এইচ এম বি নূর চৌধুরীসহ অফিসারদের শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত করা হয়। এই ঘটনার জেরে খান সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করেন। খান ঢাকায় শেরি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ব্যবহৃত কনজিউমার ইলেকট্রনিক্সের দোকান খোলেন।[৫]
পদত্যাগের পর তিনি অবসরপ্রাপ্ত এবং চাকরিরত কিছু সহকর্মী সেনা কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। সেনা কর্মকর্তারা বাংলাদেশকে কীভাবে শাসন করা হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধাদের সুবিধার অভাব এবং শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা সরকার পরিবর্তনের উপায় নিয়ে আলোচনা করে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ আগস্ট তিনি সরকারের মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদের সাথে দেখা করেন, যিনি শেখ মুজিবুর রহমানের স্থলাভিষিক্ত ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট খানসহ সেনা কর্মকর্তারা অভ্যুত্থান শুরু করেন। তারা দলে বিভক্ত হয়ে যায়, একদল শেখ মুজিবের বাসভবনে যায়। আর খান ছিলেন সেই দলে, যারা ঢাকায় বাংলাদেশ বেতার (বেতার) অফিসে যায় এবং তথ্যের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য সম্প্রচার ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ নেয়।[৫]
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদসহ বাংলাদেশের ৪ জাতীয় নেতাকে কারাগারে হত্যা করতে সহায়তা করেন।[৬][৭] হত্যাকাণ্ডের পর তাকে নতুন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ খলিলুর রহমানের অধীনে নিয়োগ দেওয়া হয়।[৮]
বিচার
সম্পাদনা২০০৪ সালে জেল হত্যা মামলায় জড়িত থাকার জন্য খানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।[৯] ১৯ নভেম্বর ২০০৯-এ, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট অভ্যুত্থান ও হত্যাকাণ্ডে ভূমিকা রাখার জন্য ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করে।[১০]
মৃত্যু এবং উত্তরাধিকার
সম্পাদনাবাংলাদেশ সরকার ২৭ জানুয়ারী ২০১০ তারিখে খানকে তার ষড়যন্ত্রের ৪ সাথীর সাথে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল।[১০] তার মেয়ে শেহনাজ রশীদ খান এবং তার শ্যালক এবং অন্য দুজনকে ২০১১ সালের ৭ আগস্ট নিষিদ্ধ ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়।[১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Shahriar's confession"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ নভেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- ↑ "5 Bangabandhu killers hanged"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Justice kept in wait"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ নভেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "5 Bangabandhu killers hanged"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- ↑ ক খ Sarkar, Ashutosh (১৯ নভেম্বর ২০০৯)। "Shahriar's confession"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Jail Killing Day Today: 41yrs on, justice still eludes"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ নভেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Farooq's confession"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ নভেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "SC denounces Shafiullah's inactive role"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ অক্টোবর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "SC adjourns hearing till today"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ ডিসেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ ক খ "Four could not even be traced"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ আগস্ট ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "Rashid's daughter held with Yaba"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ৭ আগস্ট ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭।