সুমাত্রা
সুমাত্রা (ইন্দোনেশীয়: Sumatera; ইংরেজি: Sumatra) ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমে অবস্থিত একটি দ্বীপ। এককভাবে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ হিসেবে সুমাত্রা বৃহত্তম (এ অঞ্চলে বোর্নিও আর নিউ গিনি সুমাত্রার চেয়ে বড় হলেও এসব দ্বীপে অন্য দেশের অংশ রয়েছে)। সুমাত্রার আয়তন ৪,৭৩,৪৮১ বর্গ কিলোমিটার এবং পৃথিবীর দ্বীপগুলোর মধ্যে এটি আয়তনের দিক থেকে ৬ষ্ঠ। সংশ্লিষ্ট ছোটখাটো দ্বীপের অধিবাসীসহ সুমাত্রার জনসংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি।[১]
ভূগোল | |
---|---|
অবস্থান | দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া |
স্থানাঙ্ক | ০০° উত্তর ১০২° পূর্ব / ০° উত্তর ১০২° পূর্ব |
দ্বীপপুঞ্জ | বৃহত্তর সুন্দা দ্বীপপুঞ্জ |
আয়তনে ক্রম | ৬ষ্ঠ |
সর্বোচ্চ বিন্দু | কিরিন্সি পর্বত |
প্রশাসন | |
Indonesia | |
প্রদেশ | আচে, বেঙ্কুলু, জাম্বি, লাম্পুং, রিয়াউ, পশ্চিম সুমাত্রা, উত্তর সুমাত্রা, দক্ষিণ সুমাত্রা |
বৃহত্তর বসতি | মেদান (জনসংখ্যা ২১,০৯,৩৩০ (২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী)) |
জনপরিসংখ্যান | |
জনসংখ্যা | ৫,০৩,৬৫,৫৩৮ (২০১০) |
জাতিগত গোষ্ঠীসমূহ | আচেনীয়, বাতাক, মিনাংকাবাউ, মালয় জাতি, তিয়ংহোয়া |
ভূপ্রকৃৃতি
সম্পাদনাভারত মহাসাগর সুমাত্রার উত্তর-পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম ও সমগ্র পশ্চিমাঞ্চল ঘিরে রেখেছে। উত্তর-পূর্বে দ্বীপটি মূল ভূখণ্ড মালয় উপদ্বীপ থেকে মালাক্কা প্রণালীর মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্বে সুন্দা প্রণালীর মাধ্যমে জাভা থেকে এটি পৃথক হয়ে গেছে। দ্বীপটির উত্তর মাথায় আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত। এর পূর্বে জাভা সাগর আর গুটিকয়েক ছোট ছোট দ্বীপ অবস্থিত। বুকিত বারিসান পর্বতমালা দ্বীপটির প্রায় সমগ্র পশ্চিম দিক জুড়ে রয়েছে। এ পর্বতমালা অসংখ্য জীবন্ত আগ্নেয়গিরি ধারণ করে আছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অসংখ্য নদীনালার জটিল বিন্যাস নিম্নভূমি, জলাভূমি আর প্যারাবন সৃষ্টি করেছে। বিষুব রেখা এ দ্বীপের উপর অবস্থিত এবং এর ফলে এর জলবায়ু বিষুবীয়, উষ্ণ এবং আর্দ্র। এ অঞ্চলে প্রাধান্য বিস্তার করেছে বিষুবীয় রেইনফরেস্ট।
ইতিহাস
সম্পাদনাসুমাত্রায় মানব বসতির শুরু খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দে। ১২৯২ সালে বিখ্যাত পর্যটক মার্কো পোলো সুমাত্রা ভ্রমণ করেন। দ্বীপটি বিখ্যাত শ্রীবিজয় সাম্রাজ্যের কেন্দ্র ছিল। খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ ও ৭ম শতাব্দীতে আরব ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ইসলাম সুমাত্রায় প্রবেশ করে। ১৩ শতকে সমুদ্র রাজ্যের রাজা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। দ্বীপপুঞ্জের অন্যান্য অংশ ধীরে ধীরে ইসলাম গ্রহণ করে, ১৬ শতকের শেষের দিকে জাভা এবং সুমাত্রায় ইসলাম প্রভাবশালী ধর্ম হয়েছে।[২] আচেহ আচেহ সালতানাতের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে। ১৭ শতাব্দীতে ইংরেজরা ও ১৮ শতাব্দীতে ওলন্দাজরা দ্বীপটিতে উপনিবেশায়ন শুরু করে। ১৯৪৫ সালে নেদারল্যান্ডস ইস্ট ইন্ডিজের অংশ হিসাবে ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে স্বাধীনতা লাভ করে। বর্তমানে এ দ্বীপের প্রায় ৮৭% মানুষ মুসলিম। ইন্দোনেশিয়ার মোট জনসংখ্যার ২২% এখানে বাস করে।
জীববৈচিত্র্য
সম্পাদনাসুমাত্রার জীববৈচিত্র্য বিস্ময়করভাবে সম্বৃদ্ধ। কিন্তু বিগত ৩৫ বছরে এখানকার ৫০ শতাংশ বনভূমি ধ্বংস হয়ে গেছে। সুমাত্রার বাঘ, সুমাত্রার গন্ডার, সুমাত্রার ওরাংওটাংসহ অসংখ্য প্রাণী বর্তমানে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে।
আরো দেখুন
সম্পাদনা- ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপসমূহ
- টোবা হ্রদ
- মালাক্কা প্রণালী
- সুন্দা প্রণালী
- ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাস
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Sumatra"। Encyclopaedia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুলাই ২০১৩।
- ↑ Ricklefs, Merle Calvin (২০০১)। A history of modern Indonesia since c. 1200 (3rd সংস্করণ)। Basingstoke; Stanford, CA: Palgrave; Stanford University Press। পৃষ্ঠা 12–14। আইএসবিএন 978-0-8047-4480-5।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- উইকিভ্রমণ থেকে সুমাত্রা ভ্রমণ নির্দেশিকা পড়ুন।
- William Marsden, The History of Sumatra, (1783); 3rd ed. (1811) on line.
- Sumatra Travel, Sumatra Tourism and Travel Guide.