সিনকোনা
সিনকোনা যা সাধারণভাবে কুইনা নামে পরিচিত, রুবিয়াসিয়াসি পরিবারের একটি গোত্র যার ২৫ টি প্রজাতি সনাক্ত করা হয়েছে, আদিনিবাস দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিমাংশে অবস্থিত আন্দিজ জঙ্গলে।[২] সামান্য কিছু প্রজাতি মধ্য আমেরিকা, জ্যামাইকা, ফরাসি পলিনেশিয়া, সুলাওয়েসি, দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত সেন্ট হেলেনা এবন নিরক্ষীয় আফ্রিকার উপকূলে সাঁও টোমে এন্ড পিন্সিপেতে প্রাকৃতিক ভাবে জন্মে। কুইনিনের অল্প কিছু প্রজাতির ঔষধি গুণ আছে। এই সকল গাছের বাকল থেকে কুইনিন এবং অন্যান্য যৌগ আহরণ করা হয়।
সিনকোনা | |
---|---|
Cinchona pubescens - flowers | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
শ্রেণীবিহীন: | Angiosperms |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Asterids |
বর্গ: | Gentianales |
পরিবার: | রুবিয়াসিয়াসি |
উপপরিবার: | Cinchonoideae |
গোত্র: | Cinchoneae[১] |
গণ: | সিনকোনা ক্যারোলাস লিনিয়াস |
আদর্শ প্রজাতি | |
সিনকোনা অফিসিনালিস ক্যারোলাস লিনিয়াস | |
প্রজাতি | |
৩৮ টি প্রজাতি |
বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস ১৭৪২ সালে পেরুর সেই সময়কার ভাইরয়ের পত্নী কাউন্টেস অফ সিনকোন এর নামানুসারে এই বৃক্ষের নামকরণ করেন। যদিও কয়েক শতাব্দী ধরে মানুষ এই গাছের ছালের বাকলের উপকারীতার কথা অবগত ছিলো। সিনকোনা গাছ ইকুয়েডর[৩] এবং পেরুর[৪] জাতীয় বৃক্ষ।
বর্ণনা
সম্পাদনাসিনকোনা গাছ ৫-১৫ মিটার (১৬-৪৯ ফুট) উঁচু হয়। পাতা বিপরীতমুখী, ১০-৪০ সে.মি. লম্বা। ফুল সাদা, গোলাপী বা লাল বর্ণের হয়। ছোট ক্যাপস্যুলের মত ফলের মধ্যে অনেকগুলো বীজ থাকে।
ঔষধী ব্যবহার
সম্পাদনাসিনকোনা গাছে ঔষধি গুণ আবিষ্কার করে পেরু, বলিভিয়া ও ইকুয়েডর অঞ্চলের কুইচুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। নিম্ন তাপমাত্রায় কম্পন থেকে রক্ষা পেতে তারা দীর্ঘকাল ধরে এই গাছের চাষ করে। ম্যালেরিয়া জ্বরে তীব্র কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। এই কাঁপুনি নিরাময়ে তারা সিনকোনা গাছের পাতা ব্যবহার করতো। জেসুইট মিশনারীগণ সিনকোনা গাছ প্রথম ইউরোপে নিয়ে আসে।
বাস্তুবিদ্যা
সম্পাদনালেপিডোপ্টেরা প্রজাতির কিছু লার্ভা সিনকোনা গাছ থেকে খাবার হিসেবে ব্যবহার করে।
রসায়ন
সম্পাদনাসিনকোনা অ্যালক্যালয়েড
সম্পাদনাসিনকোনা গণের বিভিন্ন গাছের ছাল বিভিন্ন ধরনের অ্যালক্যালয়েডের উৎস হিসেবে কাজ করে। এর মধ্যে সবথেকে পরিচিত রূপ হচ্ছে কুইনিন। একটি এন্টিপাইরেটি (জ্বরনাশক) উপাদান যা বিশেষ করে ম্যালেরিয়া চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। সিনকোনা অ্যালক্যালয়েডসে থাকেঃ
- সিনকোনাইন এবং সিনকোনাডাইন (জ্যামিতিক সমানু এখানে R = ভিনাইল, R' = হাইড্রোজেন)
- কুইনিন এবং কুইনিডাইন (জ্যামিতিক সমানু এখানে R = ভিনাইল, R' =মিথোক্সি)
- ডাইহাইড্রোকুইনিডাইন এবং ডাইহাইড্রোকুইনিন (জ্যামিতিক সমানু এখানে R = ইথাইল মূলক, R' = মিথোক্সি)
অজৈব রসায়নে অসম্পৃক্ত সংশ্লেষনে এগুলোকে অজৈব প্রভাবক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
অন্যান্য রাসায়নিক
সম্পাদনাঅ্যালক্যালয়েডের পাশাপাশি অনেক সিনকোনা গাছের বাকলে সিনকোট্যানিক এসিড পাওয়া যায়, একটি বিশেষ ধরনের ট্যানিন, যা জারণের মাধ্যমে দ্রুত গাঢ় বর্ণের ফ্লোবাফেনে রুপান্তরিত হয়,[৫] যা লাল সিনকোনিক নামে পরিচিত,[৬] সিনকোনো-ফুলভিক এসিড অথবা সিনকোনা লাল নামেও ডাকা হয়।[৭]
প্রজাতি
সম্পাদনাউদ্ভিদবিজ্ঞানীদের মতে ৩১ প্রজাতির সিনকোনা গাছ পাওয়া যায়। কিন্তু সংকরায়নের মাধ্যমে এর প্রজাতি সংখ্যা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
ঔষধি প্রজাতি
সম্পাদনা- সিনকোনা ক্যালিসায়া Wedd. (১৮৪৮)
- সিনকোনা লেজেরিয়ানা (Howard) Bern.Moens ex Trimen
- সিনকোনা অফিসিনালিস লিনিয়াস (১৭৫৩) - কুইনিন বাকল
- সিনকোনা পিউবেসেনস Vahl (১৭৯০) - কুইনিন গাছ
- সিনকোনা সুকিরুব্রা
(সিনকোনা রোবুস্টা বিভিন্ন সংকর সুকিরুব্রার সংকর।
অন্যান্য প্রজাতি
সম্পাদনা
|
আরো পড়ুন
সম্পাদনাবিস্তারিত পাঠ
সম্পাদনা- Reader's Digest, Strange Stories, Amazing Facts II; Title : "The Bark of Barks" -Reader's digest publication
- The Journals of Hipólito Ruiz: Spanish Botanist in Peru and Chile 1777–1788, translated by Richard Evans Schultes and María José Nemry von Thenen de Jaramillo-Arango, Timber Press, 1998
- Druilhe, P.; ও অন্যান্য। "Activity of a combination of three Cinchona bark alkaloids against Plasmodium falciparum in vitro"। Antimicrobial Agents and Chemotherapy। 32 (2): 25–254।
তথ্য উৎস
সম্পাদনা- ↑ "Genus Cinchona"। Taxonomy। UniProt। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০২-১৩।
- ↑ Motley, Cheryl। "Cinchona and its product--Quinine"। Ethnobotanical leaflets। Southern Illinois University Herbarium। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১০।
- ↑ "Arcoiris Rerserve San Francisco Cloud Forest – Podocarpus National Park"। Arcoiris Ecologic Foundation। ২৩ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ Deborah Kopka (১২ জানু ২০১১)। Central & South America। Milliken Pub. Co.। পৃষ্ঠা 130। আইএসবিএন 978-1429122511। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ Henry G. Greenish (১৯২০)। "Cinchona Bark (Cortex Cinchonae). Part 3"। A Text Book Of Materia Medica, Being An Account Of The More Important Crude Drugs Of Vegetable And Animal Origin। J. & A. Churchill। এএসআইএন B000J31E44।
- ↑ Alfred Baring Garrod (২০০৭)। "Cinchonaceae. Part 2"। Essentials Of Materia Medica And Therapeutics। Kessinger Publishing। আইএসবিএন 1-4326-8837-5।
- ↑ "Quinine"। [[Encyclopaedia Britannica]] (10 সংস্করণ)। ১৯০২। ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- The Cinchona project
- The Cinchona Project - biologist Maricela Argudo
- U. Minnesota: Cinchona Bark ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে
- Using Bark to Cure the Bite
- Cinchona Alkaloids[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- Botanical.com - Peruvian Bark
- Cinchona photos
- Photos of Cinchona pubescens ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ তারিখে
- Cinchona Project Field Books, 1938-1965 from the Smithsonian Institution Archives