সাইমন জোন্স
সাইমন ফিলিপ জোন্স, এমবিই (ইংরেজি: Simon Jones; জন্ম: ২৫ ডিসেম্বর, ১৯৭৮) সোয়ানসি এলাকার মরিস্টোনে জন্মগ্রহণকারী ও ওয়েলশীয় বংশোদ্ভূত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। বেশ কয়েকটি কাউন্টি দলের পক্ষে খেলেছেন। তন্মধ্যে, গ্ল্যামারগন, ওরচেস্টারশায়ার ও হ্যাম্পশায়ার অন্যতম। পরবর্তীতে ডিসেম্বর, ২০১১ সালে পুনরায় দুই বছরের চুক্তিতে প্রথম কাউন্টি দল গ্ল্যামারগনে ফিরে যান 'হর্স', 'শো পাই' ডাকনামে পরিচিত সাইমন জোন্স। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলিং করতেন। পাশাপাশি নিচেরসারিতে বামহাতে ব্যাটিং করে প্রভূতঃ সফলতা পেয়েছেন। তার বাবা জেফ জোন্স ১৯৬০-এর দশকে গ্ল্যামারগন ও ইংল্যান্ড দলের পক্ষে খেলেছিলেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | সাইমন ফিলিপ জোন্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | মরিসটন, সোয়ানসি, ওয়েলস | ২৫ ডিসেম্বর ১৯৭৮|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | হর্স, শো পাই | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি (১.৯১ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | আইজে জোন্স (পিতা) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৬১০) | ২৫ জুলাই ২০০২ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৮ আগস্ট ২০০৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১৮৬) | ৪ ডিসেম্বর ২০০৪ বনাম জিম্বাবুয়ে | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ১২ জুলাই ২০০৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১২–২০১৩ | গ্ল্যামারগন (জার্সি নং ৫০) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১১ | → গ্ল্যামারগন (কর্জকৃত) (জার্সি নং ৫০) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৯–২০১১ | হ্যাম্পশায়ার (জার্সি নং ১০) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৮–২০০৯ | ওরচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৯৮–২০০৭ | গ্ল্যামারগন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ২০ ডিসেম্বর ২০১৭ |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাদীর্ঘদেহী ছয় ফুট তিন ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম বোলার জোন্সের কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামারগনের পক্ষে অভিষেক ঘটে। ২২ আগস্ট, ১৯৯৮ তারিখে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে প্রতিপক্ষ দল ছিল ডার্বিশায়ার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনা২৫ জুলাই, ২০০২ তারিখে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে। এ সময় তার বয়স ছিল ২৩ বছর। ব্যাট হাতে নিয়ে ৪৩ বলে ৪৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। এরপর ভারতের প্রথম ইনিংসে ২১ ওভারে ২/৬১ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। অজয় রাত্রা ও অজিত আগরকর তার শিকারে পরিণত হন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০১/৬ ডিক্লেয়ার করলে জোন্সের ব্যাটিং করার প্রয়োজন পড়েনি। ৫৬৮ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় ভারত দল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে। জোন্স ২/৬৮ পান। বীরেন্দ্র শেওয়াগকে বোল্ড ও ভিভিএস লক্ষ্মণকে মাইকেল ভনের হাতে কটে পরিণত করেন। ইংল্যান্ড দল ১৭০ রানে জয়লাভ করে। তবে পরবর্তী তিন টেস্টে তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। চার টেস্টের ঐ সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে ড্রয়ে পরিণত হয়।
ঐ টেস্টে বিরাট সাফল্য লাভের প্রেক্ষিতে জোন্সকে ২০০২-০৩ মৌসুমের অ্যাশেজ সফরে জন্য নির্বাচিত করা হয়। তবে, ব্রিসবেন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টের সকালে ৭ ওভার বোলিং করে জাস্টিন ল্যাঙ্গারের উইকেট লাভ করার পর আঘাতপ্রাপ্ত হলে তিনি মাঠ থেকে চলে যান। দীর্ঘদিন পর সুস্থ হলে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে সফরে যান।
ক্যারিবীয়া সফর
সম্পাদনামার্চ, ২০০৪ সালে ক্যারিবীয় সফরে ইংল্যান্ড আশাতীত সাফল্য লাভ করে। জোন্স ঐ দলের সদস্য ছিলেন। জ্যামাইকার কিংস্টনের সাবিনা পার্কে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট খেলতে নামে ইংল্যান্ড। খেলায় জোন্স ৩/৭২ পান যাতে ব্রায়ান লারা, রিডলি জ্যাকবস ও রায়ান হাইন্ডসের উইকেট ছিল। ১০ উইকেটে জয় পায় ইংল্যান্ড দল। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে শিবনারায়ণ চন্দরপলের একমাত্র উইকেট পেলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫/৫৭ পান। ক্রিস গেইল, ডেভন স্মিথ, রামনরেশ সারওয়ান ও রিডলি জ্যাকবসের ন্যায় প্রথম চার ব্যাটসম্যানের উইকেটসহ পরবর্তীতে পেড্রো কলিন্স তার শিকারে পরিণত হন। এটিই জোন্সের টেস্টে প্রথম পাঁচ উইকেট লাভের ঘটনা। বার্বাডোসের ব্রিজটাউনের তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে জোন্স কলিন্সের একমাত্র উইকেট পান। দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং না করা স্বত্ত্বেও ইংল্যান্ড খেলায় ৮ উইকেটের জয় পেয়ে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টটি তেমন সফলতা পাননি জোন্স। মোটে এক উইকেট পান। তবে, প্রথম ইনিংসে ব্রায়ান লারা অপরাজিত ৪০০ রান তুলে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন। ইংরেজ দল ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ করায়ত্ত্ব করে।
মে, ২০০৪ সালে নিউজিল্যান্ড দল ইংল্যান্ড সফরে আসে। লর্ডসের প্রথম টেস্টে অংশগ্রহণ করেন তিনি। খেলায় তিনি ৪/১৪৬ পান। ইংল্যান্ড খেলায় ৭ উইকেটে জয় পেলেও জোন্সকে দল থেকে বাদ দেয়া হয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিরতি সফরে তাকে দলে নেয়া হয়।
জুলাই, ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আগমন ঘটে। আবারও লর্ডসে একটি খেলায় অংশ নেন। এক উইকেট লাভের প্রেক্ষিতে টেস্ট দলের বাইরে অবস্থান করেন। চার খেলার টেস্ট সিরিজটিতে ইংল্যান্ড ৪-০ ব্যবধানে জয় পায়।
ঐ বছরের ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ইংল্যান্ডের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ৪ ডিসেম্বর, ২০০৪ তারিখে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওডিআইয়ের মাধ্যমে তার ওডিআই অভিষেক হয়। ওভার প্রতি ৫.৩৭৫ গড়ে জোন্স ২/৪৩ পান। খেলায় ইংরেজ দল ৭ উইকেটে জয় তুলে নেয়। এরপর সিরিজের চূড়ান্ত একদিনের আন্তর্জাতিকে ৪.১২ গড়ে ১/৩৩ পান। এবারও ৭৪ রান জয় পায় তার দল ও ৪-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফর
সম্পাদনাজোহেন্সবার্গে প্রথম টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণ করেন জোন্স। প্রথম ইনিংসে বোয়েতা ডিপেনারের উইকেট পান। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ৪/৩৯ লাভ করেন। তন্মধ্যে, জ্যাকুয়েস ক্যালিসকে ৬১ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন তিনি। খেলায় ইংল্যান্ড দল ৭ উইকেটে জয় পায়। প্রথম ইনিংসে তিনি ২৪ রান তুলেছিলেন। ডারবানের কিংসমিডে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ২১ রান তুলেন। খেলায় তিনি ২/১১৭ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়। নিউল্যান্ডসের তৃতীয় টেস্টে খেলায় তিনি ৩/৮৪ পান। চতুর্থ টেস্টে তার স্থলাভিষিক্ত হন জেমস অ্যান্ডারসন। ঐ টেস্ট ইংল্যান্ড জয় পায় ও চূড়ান্ত টেস্টে তাকে অন্তর্ভুক্ত করে। গটেংয়ের সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্কে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে মাত্র ৪৭ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নেন। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র এক উইকেট দখল করেন। খেলাটি ড্র হলেও ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে।
বাংলাদেশের মোকাবেলা
সম্পাদনানিজদেশে অনুষ্ঠিত সফরকারী বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে উভয় খেলায় অংশ নেন। ২০০৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজকে সামনে রেখে হগার্ড, হার্মিসন, ফ্লিনটফ ও জোন্সকে নিয়ে চারজনের পেস আক্রমণে ইংল্যান্ড দল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। এ পেস আক্রমণে বাংলাদেশ দল তাদের প্রথম ইনিংসে ১০৮ রানে গুটিয়ে যায়। জাভেদ ওমরকে আউট করেন জোন্স। তিনি ৪ ওভার বোলিং করে ৬ রান দেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলাদেশ দল নিম্নমূখী রান তুলে। এবার তারা ১৫৯ রানে অল-আউট হয়। খেলায় জোন্স ১১ ওভার বোলিং করে ৩/২৯ পান। অন্যদিকে ফ্লিনটফ, হগার্ড ও হার্মিসন যথাক্রমে তিন, দুই ও দুই উইকেট লাভ করেন। খেলায় ইংরেজ দল ইনিংস ও ২৬১ রানের ব্যবধানে জয় তুলে নেয়। দ্বিতীয় টেস্টেরও একই গতিতে অগ্রসর হয়। ইংল্যান্ডের পেসারেরা ২০ উইকেটের ১৯টি লাভ করেন। তন্মধ্যে, জোন্স খেলায় ১/৭৫ পান। ইংল্যান্ড দল ইনিংস ও ২৭ রানে বিজয়ী হয়।
জুন-জুলাই, ২০০৫ সালে অনুষ্ঠিত ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের দুইটি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেন। এজবাস্টনে সিরিজের পরিত্যক্ত ঘোষিত অষ্টম খেলায় ২/৫৩ পেয়েছিলেন। এরপর প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলাটি টাইয়ে পরণিত হয়। ঐ খেলায় তিনি ১/৪৫ পেয়েছিলেন। এরপর অ্যাশেজকে সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে খেলেন। সিরিজের তিন খেলার দুইটিতে অংশ নিলেও কোন উইকেট লাভে ব্যর্থ হন।
অ্যাশেজ সিরিজ
সম্পাদনালর্ডসে অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২/৪৮ পান। অস্ট্রেলিয়াকে ১৯০ রানে অল-আউট হতে সহায়তা করেন। মাত্র ২১ বলে অপরাজিত ২০ রান তুলে ইংল্যান্ডের রানকে ১৫৫-তে উত্তরণ ঘটাতে সক্ষমতা দেখান। দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া ৩৮৪ রানে অল-আউট হলে ইংল্যান্ডের জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৪২০। জোন্স ১৮ ওভার বোলিং করে ১/৬৯ পেয়েছিলেন। প্রত্যুত্তরে ইংল্যান্ড মাত্র ১৮০ রানে অল-আউট হলে অস্ট্রেলিয়া ২৩৯ রানে জয় তুলে নেয়।
এজবাস্টনের দ্বিতীয় টেস্টে জোন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২৪ বল খেলে অপরাজিত ছিলেন ১৯ রানে। এরফলে তার দল ৪০৭ রানে অল-আউট হয়। নিয়ন্ত্রিত সুইংয়ে জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও ব্রেট লি তার শিকারে পরিণত হয়। ২/৬৯ নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ৩০৮ রানে অল-আউটে সহায়তা করেন। ৯৯ রানে এগিয়ে থেকে জোন্স আবারও অপরাজিত ১২ রান তুলেন। ম্যাথু হেইডেনকে ৩১ রানে বিদায় করেন। লি-ওয়ার্নের সাহসী চেষ্টা স্বত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া মাত্র ২ রানে পরাজিত হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে জোন্সের বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ১/২৩।
তৃতীয় টেস্টটি ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত হয়। জোন্সের জন্য এ খেলাটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রিকি পন্টিং, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, শেন ওয়ার্ন, মাইকেল ক্লার্ক, জেসন গিলেস্পি ও ব্রেট লিকে আউট করে ৬/৫৩ পান যা তার সেরা ইনিংস ছিল। তন্মধ্যে, মাইকেল ক্লার্ককে রিভার্স সুইংয়ে অফ-স্ট্যাম্প গুড়িয়ে দেন। খেলায় তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৭/১১০ যা তার ব্যক্তিগত সেরা। খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়। পঞ্চম দিনে এক উইকেট হাতে রেখে ৫২ রানে পিছিয়ে ছিল সফরকারীরা।
ট্রেন্ট ব্রিজে চতুর্থ টেস্ট চলাকালে জোন্স প্রথম ইনিংসে বিধ্বংসী বোলিং পরিসংখ্যান ৫/৪৪ দাঁড় করান। তন্মধ্যে, অধিনায়ক পন্টিং তার অন্যতম শিকারে পরিণত হন। তবে, দ্বিতীয় ইনিংস গোঁড়ালির আঘাতের কারণে ৪ ওভারে কোন উইকেট পাননি। এ আঘাতের কারণে সিরিজ নির্ধারণী ওভালের টেস্টে তাকে মাঠের বাইরে অবস্থান করতে হয়েছিল। এছাড়াও শীতকালে পাকিস্তান সফর থেকেও তাকে বাদ দেয়া হয়। অ্যাশেজ সিরিজে ২১.০০ গড়ে ১৮ উইকেট নিয়েছিলেন। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের প্রেক্ষিতে ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো অ্যাশেজ করায়ত্ত্ব করে। অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্টটি তার আন্তর্জাতিক টেস্টের সর্বশেষ খেলায় পরিণত হয়।
আঘাতপ্রাপ্তি
সম্পাদনা২৬ ফেব্রুয়ারি ভারত সফরকে ঘিরে অনুশীলনীমূলক খেলায় বোলিংকালে বামপায়ের গোঁড়ালিতে আঘাত অনুভব করেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি জোন্সকে বাড়িতে ফেরৎ পাঠানো হয়। এরফলে ঐ টেস্ট সিরিজে অংশগ্রহণের সুযোগ আর তার রইল না।
শীতে বিশ্রাম নিয়ে প্রথম খেলতে নামেন গ্ল্যামারগনের বিপক্ষে। কার্ডিফ ইউসিসিই দলের বিপক্ষে ২৩ রান দিয়ে ১ উইকেট পান। সুস্থতার বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেন। ১ মে সিএন্ডজি ট্রফিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ী খেলায় বামপায়ের হাঁটুতে নতুন আঘাত পান। এরফলে পরের সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ থেকে সরে দাঁড়ান।
জুন, ২০০৬ সালে কলোরাডোয় ড. রিচার্ড স্টিডম্যানের অধীনে হাটুর অস্ত্রোপচার করতে চলে যান। ফলশ্রুতিতে ইংল্যান্ড দল পরবর্তী পাঁচ মাসের জন্য বোলিং থেকে তার দূরে সরে থাকার কথা ঘোষণা করে। দূর্ভাগ্যবশতঃ ২০০৬-০৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে বাদ দেয়।[১]
কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ
সম্পাদনাসেপ্টেম্বর, ২০০৬ সালে ক্রমাগত আঘাতের সমস্যায় জর্জড়িত থাকার পরও ২০০৭ সালের ঘরোয়া মৌসুমে ফিরে আসেন। ইসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় আরও ১২ মাসের জন্য নবায়ণ করা হয়। এপ্রিল, ২০০৭ সালে নিজ কাউন্টি গ্ল্যামারগনের পক্ষে খেলতে নামেন। ২০০৭ মৌসুম শেষে গ্ল্যামারগনের সাথে চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে জোন্সের সম্পর্ক ছিল। আপাদদৃষ্টিতে হ্যাম্পশায়ারের সাথে যুক্ত ছিলেন।[২] ১৯ অক্টোবর দ্বিতীয় সারির ওরচেস্টারশায়ারের সাথে দুই বছরের চুক্তিতে খেলেন। ২০০৮ মৌসুমের প্রথম খেলাতেই তিন ওভার করার পর ঘাড়ে আঘাত পান।[৩]
১১ মে, ২০০৮ তারিখে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে একদিনের খেলায় স্বরূপ ধারণ করেন। ১০ ওভারে নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৫/৩২ করে রেকর্ড গড়েন। গড়ে তিনি ৯০ মাইলেরও অধিক বেগে বোলিং করেন। এরফলে ধারণা জন্মায় যে, তিনি হয়তোবা আবারও ইংল্যান্ড দলে ফিরে আসবেন।[৪][৫]
জোন্সকে দূরে সরিয়ে আশ্চর্যজনকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য ড্যারেন প্যাটিনসনের ডাক আসে। জোন্স আবারও হাঁটুর আঘাতে জর্জড়িত হলে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে।[৬]
২০০৯ মৌসুমে আর খেলার সুযোগ না থাকায় চুক্তির শেষ বছরে ১৯ জুলাই ওরচেস্টারশায়ার তাকে মুক্তি দেয়।[৭] ২০০৯ সালের ঘরোয়া মৌসুমে জোন্স গ্ল্যামারগন ও হ্যাম্পশায়ারের সাথে কথাবার্তা চালিয়ে যান।
জোন্স হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে চুক্তিতে আবদ্ধ হন ও ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০০৯ তারিখে যোগ দেন। ২০১০ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে তার সুস্থতা অটুঁট থাকবে বলে দেখা যায়।[৮] ঐ মৌসুমে সীমিত ওভারের অনেকগুলো খেলায় অংশ নেন। মৌসুম শেষে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় দলের পক্ষে অভিষেক হয়।[৯] একমাত্র ইনিংসে বোলিংয়ের সুযোগ পেয়ে ৪/৬০ লাভ করেন।[১০]
জানুয়ারি, ২০১১ সালে ক্যারিবীয় টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য হ্যাম্পশায়ারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রতিযোগিতার সবকটি খেলাতেই তিনি অংশ নেন। তন্মধ্যে, ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর বিপক্ষে চূড়ান্ত খেলায় হেরে যায় তার দল। দলীয় সঙ্গী হামজা রিয়াজউদ্দিনের সাথে ১২ উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট শিকারী ছিলেন।[১১]
১৭ জুন, ২০১১ তারিখে এক মাসের জন্য কর্জকৃত খেলোয়াড় হিসেবে গ্ল্যামারগনে খেলেন।[১২] হ্যাম্পশায়ার কর্তৃপক্ষ আগামী বছরের জন্য তাকে দলের সদস্যরূপে রাখার কথা চিন্তা করছিল। তবে, ১৯ অক্টোবর, ২০১১ তারিখে গ্ল্যামারগন কর্তৃপক্ষ জানায় যে, খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করা ওয়েলস কাউন্টিতে দুই বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। প্রথম মৌসুমের সিবি৪০ ও টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় তাকে বসিয়ে রাখা হয়।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনা১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩ তারিখে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। এরপর ওয়াইবি৪০ প্রতিযোগিতা শেষে লিস্ট এ ক্রিকেটকে বিদায় জানান সিমন জোন্স।[১৩]
ডিসেম্বর, ২০১১ সালে জাস্টিন নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন ও কার্ডিফে বসবাস করছেন। নভেম্বর, ২০০৬ সালে হার্ভে ও এপ্রিল, ২০০৮ সালে চার্লি নামীয় দুই পুত্র রয়েছে তাদের।[১৪] জুলাই, ২০১৫ সালে নিজ আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ 'দ্য টেস্ট: মাই লাইফ এবং দি ইনসাইড স্টোর অব দ্য গ্রেটেস্ট অ্যাশেজ সিরিজ' র্যান্ডম হাউজ থেকে প্রকাশিত হয়।[১৫]
সম্মাননা
সম্পাদনাঅ্যাশেজ প্রতিযোগিতায় সফলতম ভূমিকার রাখার প্রেক্ষিতে ২০০৬ সালে নববর্ষের সম্মাননায় তাকে এমবিই পদবীতে ভূষিত করা হয়। এপ্রিলে উইজডেন কর্তৃক তাকে বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে ঘোষণা করা হয়। ফেব্রুয়ারি, ২০০৬ সালে নিউ ওম্যান সাময়িকীর পাঠকদের ভোটে জোন্সকে নবম ও বিশ্বের শ্রেষ্ঠ যৌনউদ্দীপক পুরুষরূপে শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়াবিদের সম্মানে ভূষিত করে।[১৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Ashes heartbreak for bowler Jones: BBC Sport Cricket, 8 June 2006. Retrieved 9 June 2006.
- ↑ Hampshire clear to speak to Jones BBC Sport – 3 September 2007
- ↑ Worcestershire seal Jones signing BBC Sport – 19 October 2007
- ↑ Jones rolls back the years to shatter Hampshire hopes The Independent – 12 May 2008
- ↑ "Jones delight at England call-up"। BBC। ৪ জুলাই ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-০৪।
- ↑ http://content-uk.cricinfo.com/ci/content/story/376712.html
- ↑ "Worcestershire release Simon Jones"। Cricinfo। ১৫ জুলাই ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৫।
- ↑ "Hampshire sign Simon Jones"। Cricinfo। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৯-৩০।
- ↑ https://cricketarchive.com/cgi-bin/player_oracle_reveals_results2.cgi?playernumber=5595&testing=0&opponentmatch=exact&playername=simon%20jones&resulttype=All&matchtype=All&teammatch=exact&startwicket=&homeawaytype=All&opponent=&endwicket=&wicketkeeper=&searchtype=MatchList&howout=All&endscore=&playermatch=contains&branding=cricketarchive&captain=&endseason=&startscore=&team=&startseason=
- ↑ https://cricketarchive.com/Archive/Scorecards/263/263044.html
- ↑ "Bowling in Caribbean T20 2010/11"। CricketArchive। ২৫ জানুয়ারি ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-২৫।
- ↑ "Simon Jones joins Glamorgan on loan from Hampshire"। BBC Sport। ১৭ জুন ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৬-২৪।
- ↑ "Glamorgan: Simon Jones to retire from first-class cricket"। BBC Sport। BBC। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ New baby for high-life shy Simon Wales News – 21 October 2007
- ↑ The Test: My Life, and the Inside Story of the Greatest Ashes Series ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে Accessed 3 September 2015.
- ↑ Berkmann, Marcus (২০০৯)। "Chapter 19: 2005"। Ashes to Ashes: 35 years of humiliation (and about 20 minutes of ecstasy) watching England v Australia। London: Little, Brown। পৃষ্ঠা 295। আইএসবিএন 978-1-4087-0179-9।
[Jones'] only consolation, in the desolate years of injury that would follow, was a 2006 poll in New Woman magazine that voted him the ninth sexiest man in the world. George Clooney came tenth.
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে সাইমন জোন্স (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে সাইমন জোন্স (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)