শফিক রেহমান

বাংলাদেশী সাংবাদিক

শফিক রেহমান (জন্ম ১১ নভেম্বর ১৯৩৪) একজন বাংলাদেশি সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, টিভি উপস্থাপক ও লেখক।[] তাকে বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবসের প্রচলক হিসেবে মনে করা হয়।[] ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি ইংল্যান্ডে বাংলাদেশের পক্ষে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর সাথে কাজ করেন।[]

শফিক রেহমান
জন্ম
শফিক-উর-রহমান

(1934-11-11) ১১ নভেম্বর ১৯৩৪ (বয়স ৯০)
জাতীয়তাবাংলাদেশি
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা কলেজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাসাংবাদিক, লেখক
দাম্পত্য সঙ্গীতালেয়া রেহমান
স্বাক্ষর

১৯৮৪ সালে তিনি সাপ্তাহিক যায়যায়দিন পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেন যা সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সমালোচনার জন্য পরিচিত ছিল। ১৯৮৬ সালে এরশাদ সরকার যায়যায়দিনের ডিকলারেশন বাতিল করার পর তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি লন্ডনে অবস্থান করেন।[][] ইংল্যান্ডে তিনি স্পেকট্রাম রেডিও-এর পরিচালক ছিলেন।[] দেশে ফিরে তিনি ডেমোক্রেসি ওয়াচ নামক একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন-এ লাল গোলাপ নামক একটি টক শো উপস্থাপনা করতেন, পরবর্তীকালে যা বাংলাভিশনে প্রচার শুরু হয়।

প্রারম্ভিক জীবন ও শিক্ষা

সম্পাদনা

রেহমান ১৯৩৪ সালের ১১ নভেম্বর বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম শফিক-উর-রহমান। তার পিতা সাঈদ-উর-রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের শিক্ষক ছিলেন যিনি শেখ মুজিবুর রহমানেরও শিক্ষক ছিলেন।[][]

১৯৪৯ সালে শফিক পুরান ঢাকার সেইন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৫১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন।[] পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ও অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও ১৯৫৬ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।[][] উচ্চ শিক্ষার জন্য পরে ইংল্যান্ড গমন করেন এবং ১৯৬৫ সালে ‘ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস ইন ইংল্যান্ড ও ওয়েলস’ থেকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

শফিক রেহমান মধ্য আশির দশক থেকে নব্বইয়ের দশকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত লন্ডনে বসবাস করতেন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং দেশের সাংবাদিকতা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শফিক রেহমান এর কর্মজীবন ও বিভিন্ন অবদানের জন্য তিনি সর্বদাই স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।[]

২০০৯ সাল থেকে তিনি মৌচাকে ঢিল নামে একটি সাময়িকীর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।[] ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে “অপহরণ ও হত্যা-চেষ্টা ষড়যন্ত্রের” অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়।[][১০] পরবর্তীতে তিনি জামিন লাভ করেন।[][১১]

পুরস্কার ও স্বীকৃতি

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Shafik Rehman - who is he?"দ্য ডেইলি স্টার। এপ্রিল ১৬, ২০১৬। 
  2. "বাংলাদেশে ভালোবাসা দিবসের সূচনা শফিক রেহমানের"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  3. "Who is Shafik Rehman?"ঢাকা ট্রিবিউন। এপ্রিল ১৬, ২০১৬। জুলাই ২৪, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯ 
  4. Ahmed, Mahiuddin (২০১৬)। Ganamadhyam Nipiran: 1972-2012 গণমাধ্যম নিপীড়ণ: ১৯৭২-২০১২। Bibhash। পৃষ্ঠা 56। আইএসবিএন 978-984-90285-7-4 
  5. "Bangladeshi Editor, 81, Is Accused in Plot to Kill Leader's Son"The New York Times। এপ্রিল ১৬, ২০১৬। 
  6. "Making sound waves"India Today। অক্টোবর ১৫, ১৯৯০। 
  7. Team, Kaler Kothon। "শফিক রেহমান: জীবনের আলো ও অন্ধকার"Kaler Kothon (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-১৯ 
  8. "Bangladesh: 81-year-old magazine editor arrested for sedition"The Indian Express। এপ্রিল ১৬, ২০১৬। 
  9. "কারাগারে দুঃসহ জীবনযাপন করছেন শফিক রেহমান"। ডিডব্লিউ। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  10. "সাংবাদিক শফিক রেহমান গ্রেফতার : ৫ দিনের রিমান্ডে" (ইংরেজি ভাষায়)। ইনকিলাব। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  11. "মাহমুদুর ও শফিক রেহমানের প্রকৃত চেহারা মানুষ বুঝতে পারেনি: প্রধানমন্ত্রী"। বাংলাদেশ টুডে। ৫ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  12. "সিজেএফবি পুরস্কার পেল চরকির সিরিজ-সিনেমা, আরও পুরস্কার পেলেন যাঁরা"দৈনিক প্রথম আলো। ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০২৫