লামিয়া
প্রাচীন গ্রিক পুরাণে লামিয়া (গ্রিক: Λάμια) ছিল লিবিয়ার একজন সুন্দরী রানি যে একটি বাচ্চাখেকো দানবে পরিণত হয়েছিল। গ্রিক ভাষা অনুযায়ী লামিয়া মানে বড় হাঙর।[১] অ্যারিস্টোফেনিসের মতে, গ্রিক শব্দ অন্ননালী থেকে লামিয়া শব্দটি এসেছ, যা তার বাচ্চা খাওয়ার অভ্যাসকে নির্দেশ করছে।[২]
Creature | |
---|---|
উপ-বিভাগ | দানব |
Similar creatures | এম্পুসা, মরমো |
তারিখ | |
পুরাণ | গ্রীক পৌরণিক তত্ত্ব |
দেশ | জন্মান লিবইয়াতে, কিন্তু সারা ইউরোপ পরিভ্রমণ করেন |
কারও কারও মতে, তার কোমরে সাপের মতো লেজ আছে।[৩] লামিয়ার এই বর্ণনাটি ১৮১৯ সালে জন কিটসের জনপ্রিয় কবিতা থেকে পাওয়া যায়।[৪] কিছু ঐতিহ্যবাহী ধারণার মতে, গ্রামীণ প্রাচীন দৈত্য যা রক্তচোষা এবং সাকিউবাসের মতো যা তরুণদের ফুসলাতো ও তাদের রক্ত খেয়ে জীবনধারণ করত।[৫]
পৌরাণিক ইতিহাস
সম্পাদনাডিয়োডরাস সিকিউলাসের মতে, মিশরের রাজা বেলাসের সুন্দরী কন্যা ছিল লামিয়া। লামিয়া ছিল পোসেইডন এবং লিইবির নাতনি।[৬] তার বাবার মৃত্যুর পর সে লিবইয়া রানি হয়।[৭] লামিয়ার সাথে জিউসের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং সন্তানের জন্য সে তাকে বিরক্ত করত। যখন জিউসের স্ত্রী হেরা বিষয়টা জেনে ফেলে তখন সে রাগে বাচ্চাদের মেরে ফেলে। বাচ্চাদের মৃত্যুর শোকে পাগল হয়ে সে তার বাচ্চাদের খেয়ে ফেলতে শুরু করে। ডিয়োডরাসের মতে, তার চেহারা তখন বিকট আকৃতির হয়ে যায়।[৮]
জিউস তাকে তার চোখ অপসারণ করার ক্ষমতা দান করে। ডিয়োডরাস মতে, এর উদ্দেশ্য অস্পষ্ট কিন্তু অন্য একটি জায়গায় উল্লেখ যে এটি আসে ভবিষ্যৎবাণীর উপহার হিসেবে। তার বাচ্চা হারানোর শোক প্রশমিত করতে জিউস এটা করেছিল।[৯] কিছু গল্প বলে যে অভিশাপে লামিয়ার চোখ বন্ধ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, যাতে সে সারাক্ষণ তার মৃত সন্তানদের চিন্তায় মগ্ন থাকে। কারোও (হরেস উল্লেখযোগ্য) মতে, হেরা তার সন্তানদের খেতে তাকে বাধ্য করেছিল। পৌরাণিক বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করে যে, লামিয়া শোকে পরে হেরার রাগে বিকট দানব আকৃতি ধারণ করে। হেকাতে মেয়ে হিসেবে এটা স্বাভাবিক ছিল।[১০]
ব্যাখ্যা
সম্পাদনাসারা ইউরোপের মায়েরা তাদের সন্তানদের লামিয়ার গল্প বলে ভয় দেখাত।[১১] ওয়েবস্টেইনের মতে, “সে শিশুতোষ গল্পের চরিত্রে পরিণত হয় যাকে ন্যানিরা ও মায়েরা তাদের সন্তানদের মাঝে ভাল আচরণ প্রচলন করার জন্য ব্যবহার করত।"[১২] হার্বাট জেমস ড্রাপার ১৯০৯ সালে লামিয়াকে আঁকেন। তার আঁকা ছবিতে লামিয়ার শরীরের নিচের অংশ মানুষের মতোই ছিল এবং তার সরীসৃপ ইতিহাস তিনি পরোক্ষভাবে উল্লেখ করেন কোমর থেকে সাপ গড়িয়ে দিয়ে। খ্রিস্টান লেখকরা লামিয়ার ফুসলানো আচরণের ব্যাপারে সতর্ক করেন। হিঙ্কমার, রেইমসের আর্চবিশপ ৯ম শতকে বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যাপারে দীর্ঘ প্রবন্ধে অতিপ্রাকৃতিক বিপদের তালিকায় লামিয়াকে লিপিবদ্ধ করেন যা বিয়ের প্রতি হুমকিস্বরূপ এবং তাদের চিহ্নিত করেন জেনিসিয়ালইস ফেমিনার[১৩] সাথে, যা আসলে নারী পুনরায় উৎপাদনকারী আত্মা।[১৪]
জন কিটস, লামিয়া এবং অন্যান্য কবিতায় লামিয়ার নানা বর্ণের দিকগুলো বার্টনের দ্যা অ্যানাটমি অব মেলানচলি অনুযায়ী বর্ণনা করেন।[১৫] কিটসের গল্পে লামিয়ার বিয়ের আগের প্রকৃত রূপটিই ফুটে উঠেছে। আধুনিক গ্রিসের গ্রামীণ গল্পে লামিয়া এখনো জীবন্ত। বুলগেরিয়ার লোক কথা ও বাস্ক কিংবদন্তিতে গ্রিসে লামিয়াকে গুহা ও স্যাঁতস্যাঁতে স্থানের সাথে মেলানো হয়ে থাকে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Definition of Lamia on Theoi.com
- ↑ Aristophanes, The Wasps, 1177.
- ↑ Compare Typhon/Typhoeus, Echidna, the Gigantes and other archaic chthonic bogeys.
- ↑ Keats, "Lamia"
- ↑ "Information on Lamia from the Online Encyclopedia"। ২৮ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১০।
- ↑ (Lybie is a personification of the country of Libya.)
- ↑ ডিয়োডরাস সিকিউলাস, Library of History xx.41.
- ↑ Diodorus Siculus, Library of History xx.41.
- ↑ Bell, Women of Classical Mythology, drawing upon Diodorus Siculus 22.41; Suidas 'Lamia'; Plutarch 'On Being a Busy-Body' 2; Scholiast on Aristophanes' Peace 757; Eustathius on Odyssey 1714)
- ↑ Odyssey12.124 and scholia, noted by Karl Kerenyi, Gods of the Greeks 1951:38 note 71.
- ↑ Tertullian, Against Valentinius (ch.iii)
- ↑ Leinweber 1994:77.
- ↑ Hincmar, De divortio Lotharii ("On Lothar's divorce"), XV Interrogatio, MGH Concilia 4 Supplementum, 205, as cited by Bernadotte Filotas, Pagan Survivals, Superstitions and Popular Cultures in Early Medieval Pastoral Literature (Pontifical Institute of Mediaeval Studies, 2005, p. 305.
- ↑ In his 1628 Glossarium mediae et infimae latinitatis, Du Cange made note of the geniciales feminae, and associated them with words pertaining to generation and genitalia; entry online.
- ↑ Keats made a note to this effect at the end of the first page in the fair copy he made: see William E. Harrold, "Keats's 'Lamia' and Peacock's 'Rhododaphne'" The Modern Language Review 61.4 (October 1966:579–584) p 579 and note with bibliography on this point.