রাষ্ট্রপতি

স্বাধীন দেশের প্রধান

রাষ্ট্রপতি বা প্রেসিডেন্ট (বাংলা উচ্চারণ: [রাষ্ট্রপতি] (শুনুন)) নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি হিসেবে স্বাধীন দেশের প্রধানরূপে নির্বাচিত কিংবা মনোনীত হয়ে শাসন কার্যে অংশগ্রহণ করেন।

পাঁচজন নামকরা রাষ্ট্রপতি।

উৎপত্তিগতভাবে নেতৃত্বে আসীন হয়ে যিনি সভাপতিত্ব করেন তিনিই প্রেসিডেন্ট বা সভাপতি। ল্যাটিন শব্দ প্রেইজেস থেকে প্রেসিডেন্ট শব্দে অনুষ্ঠান বা সভা পরিচালনা করেন তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে চিহ্নিত। প্রেসিডেন্ট শব্দটি অনেক সময় কোন সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, শ্রমিক সংঘ, বিশ্ববিদ্যালয়েও ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানগণকে সম্মানজনক পদবীরূপে রাষ্ট্রপতি বলা হয়। সচরাচর অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বগণই নির্বাচনের মাধ্যমে কিংবা সাংবিধানিক গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত হন।

রাষ্ট্রপতি শাসনব্যবস্থা

সম্পাদনা

সাধারণত বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন কিংবা মনোনীত হয়ে থাকেন। কখনো কখনোবা তিনি পুনরায় নির্বাচিত বা মনোনীত হতে পারেন। পরবর্তীতে শপথগ্রহণপূর্বক নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকেন তিনি। তিনি ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকার ভেঙে দিতে পারেন, যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন, সংবিধানের উপর ভেটো প্রয়োগ করারও অধিকারী তিনি। অনেক দেশেই একজন প্রেসিডেন্ট দেশের সামরিক বাহিনীর প্রধান হয়ে থাকেন। তবে সব ক্ষেত্রেই তার এ ক্ষমতা সরকারের গঠনতন্ত্রের উপর নির্ভরশীল।

রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার ব্যবস্থায় একজন প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকার প্রধান - উভয়ই হয়ে থাকেন। তিনি সরাসরি সরকারের বিভিন্ন শাখার প্রধান নির্বাহী।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইলেক্টোরাল কলেজে ভোটারদের পছন্দের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যসমূহে ভোটারদের পছন্দসই প্রার্থী বা ইলেক্টরের জয়লাভের উপর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে থাকেন। তবে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ মোট ভোট প্রাপ্তির উপর প্রেসিডেন্টের নির্বাচন নির্ভরশীল নয় যা ১৮২৪, ১৮৭৬, ১৮৮৮ এবং ২০০০ এবং ২০১৬ সালের নির্বাচনের ফলাফলে প্রভাব ফেলেছিল।

ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে চার বছরের জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন। তাকে মোট বৈধ ভোটের ৫০% পেতে হয়। যদি কোন প্রার্থী প্রয়োজনীয় ভোট প্রাপ্তিতে ব্যর্থ হন, তাহলে শীর্ষস্থানীয় দু'জন প্রার্থীকে পুনরায় নির্বাচনে অংশ নিতে হয় ও সর্বোচ্চ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। একাধারে দু'বারের বেশি মেয়াদে তিনি নির্বাচিত হতে পারবেন না। তবে, মেয়াদ সংখ্যার কোন সীমারেখা নেই। দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশ, মধ্য আমেরিকা এবং আফ্রিকার দেশগুলো এ পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে।

সংসদীয় গণতন্ত্র

সম্পাদনা

সংসদীয় পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতির পদ শুধু আনুষ্ঠানিকতায় পরিপূর্ণ। এখানে তিনি নামেমাত্র রাষ্ট্রের প্রধান হয়ে থাকেন যা সরকারের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ও তার দলীয় সংসদ সদস্য কর্তৃক মনোনীত হন তিনি। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইসরায়েল, মাল্টা, ইতালি, হাঙ্গেরী, জার্মানি, গ্রিস প্রভৃতি দেশসমূহে এ ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি মনোনীত করা হয়। অপরদিকে পোল্যান্ড, আইসল্যান্ড,আয়ারল্যান্ড প্রভৃতি দেশগুলোতে প্রত্যক্ষ ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। [][][]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা