আইসল্যান্ড

ইউরোপের রাষ্ট্র

আইসল্যান্ড আইসল্যান্ডীয়: Ísland; টেমপ্লেট:IPA-is) সরকারী নাম আইসল্যান্ড প্রজাতন্ত্র (Lýðveldið Ísland লীদ়্‌ভ়েল্‌তিদ়্‌ ঈস্‌লান্ত্‌ আ-ধ্ব-ব: [ˈliðvɛltɪð ˈislant]), ইউরোপ মহাদেশের একটি প্রজাতান্ত্রিক দ্বীপ রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম রেইকিয়াভিক। দেশটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে গ্রীনল্যান্ড, নরওয়ে, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, এবং ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে, উত্তর আমেরিকাইউরোপের সদাসক্রিয় ভূ-গাঠনিক প্লেটগুলির সীমারেখার ঠিক উপরে অবস্থিত একটি আগ্নেয় দ্বীপ।[] আইসল্যান্ডের উত্তর প্রান্ত সুমেরুবৃত্তকে স্পর্শ করেছে। ডিম্বাকার এই দ্বীপটি পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ৪৮৫ কিলোমিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৩৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ। পার্শ্ববর্তী গ্রিনল্যান্ডকে উত্তর আমেরিকার অংশ ধরা হলেও আইসল্যান্ডকে ইউরোপের অন্তর্গত রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য করা হয়। দেশটির জলবায়ু, ভূগোল ও সংস্কৃতি বৈপরীত্য ও বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ।

আইসল্যান্ড

Ísland
আইসল্যান্ডের জাতীয় পতাকা
পতাকা
আইসল্যান্ডের জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
নীতিবাক্য: নেই
জাতীয় সঙ্গীত: লোফ্‌সঙুর
ইউরোপ মহাদেশের (ধূসর) আইসল্যান্ডের (সবুজ) অবস্থান
ইউরোপ মহাদেশের (ধূসর) আইসল্যান্ডের (সবুজ) অবস্থান
রাজধানী
ও বৃহত্তম নগরী বা বসতি
রেইকিয়াভিক
সরকারি ভাষাআইসল্যান্ডীয় (কার্যত)
জাতীয়তাসূচক বিশেষণIcelander
সরকারসংসদীয় প্রজাতন্ত্র
গুদনি জোহানেসসন
কাত্রিন জাকবসতোত্তির
স্বাধীনতা 
• স্বশাসন
১লা ফেব্রুয়ারি, ১৯০৪
• সার্বভৌমত্ব
1 December 1918
• প্রজাতন্ত্র
17 June 1944
আয়তন
• মোট
১,০৩,০০০ কিমি (৪০,০০০ মা) (১০৭ তম)
• পানি (%)
২.৭
জনসংখ্যা
• 1 January 2015 আনুমানিক
৩,২৯,১০০ (১৮২তম)
• ঘনত্ব
৩.২/কিমি (৮.৩/বর্গমাইল) (233rd)
জিডিপি (পিপিপি)২০০৬ আনুমানিক
• মোট
$১২.১৭২ বিলিয়ন (১৩২তম)
• মাথাপিছু
৪০,২৭৭ (২০০৫) (৫ম)
জিডিপি (মনোনীত)২০০৬ আনুমানিক
• মোট
$১৬.৫৭৯ বিলিয়ন (৯৩তম)
• মাথাপিছু
$৬২,৯৭৬ (৪র্থ)
মানব উন্নয়ন সূচক (2014)অপরিবর্তিত 0.899[]
অতি উচ্চ · 16th
মুদ্রাআইসল্যান্ডীয় ক্রোনা (ISK)
সময় অঞ্চলইউটিসি+0 (GMT)
• গ্রীষ্মকালীন (ডিএসটি)
পালিত হয় না
কলিং কোড354
ইন্টারনেট টিএলডি.is
  1. "Statistics Iceland:Key figures"। www.statice.is। 1 October 2007  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
সাধারণ টপোগ্রাফিক মানচিত্র

ভূ-গঠনগত দিক থেকে আইসল্যান্ড অপেক্ষাকৃত নবীন। বিগত ৬০ মিলিয়ন বছর ধরে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের অবশেষ থেকে দ্বীপটি উৎপত্তি লাভ করে। এখনও দ্বীপটিতে অনেকগুলি আগ্নেয়গিরি সক্রিয় আছে। ভূমিকম্প বেশ সাধারণ ব্যাপার। ভূ-গর্ভস্থ উষ্ণ পানির প্রস্রবণগুলি দেশটির ভবনগুলিকে সারা বছর ধরে উষ্ণ রাখে এবং কৃষিকাজে সহায়তা করে। দক্ষিণ-পশ্চিমের প্রস্রবণগুলি থেকে নির্গত জলীয় বাষ্পের কারণে সেখানে অবস্থিত আইসল্যান্ডের রাজধানীর নাম দেয়া হয়েছে রেইকিয়াভিক, অর্থাৎ "ধোঁয়াটে উপসাগর"। ভৌগলিকভাবে অত্যন্ত উত্তরে সুমেরুর কাছে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের উষ্ণ উপসাগরীয় সমুদ্রস্রোতের কারণে এখানকার জলবায়ু তুলনামূলকভাবে মৃদু। ফলে আইসল্যান্ড পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরে অবস্থিত মানববসতিগুলির একটি। এটিকে তাই সুমেরু অঞ্চলীয় রাষ্ট্র হিসেবেও গণ্য করা হয় না। আইসল্যান্ডের রুক্ষ্ম পর্বতশ্রেণীগুলি হিমবাহে আবৃত। এদের মধ্যে ভাৎনায়কুল (Vatnajökull) হিমবাহটি ইউরোপের বৃহত্তম। আইসল্যান্ডের সমুদ্র উপকূল প্রায় সারা বছর ধরে জাহাজ ভেড়ার জন্য উন্মুক্ত থাকে। কেবল শীতকালে মেরুদেশীয় অঞ্চল থেকে আগত ভাসমান বরফের কারণে দেশের উত্তর ও পূর্বের বন্দরগুলি বন্ধ রাখতে হয়।

প্রায় ১০০০ বছর আগে খ্রিস্টীয় ৯ম শতকে নর্স অভিযানকারীরা আইসল্যান্ডে বসতি স্থাপন করে। আইসল্যান্ডবাসীরা তাদের নর্স ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করে। অনেকেই একেবারে শুরুর দিকের বসতিস্থাপকদের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক খুঁজে বের করতে পারে। এখানে বসবাসকারী জনগণ জাতিতে নর্সকেল্টীয়। শুরুর দিকে মূলত নরওয়েজীয় নাবিক ও অভিযানকারীরা এখানে বসবাস করত এবং এখান থেকে পরবর্তীতে গ্রিনল্যান্ড ও উত্তর আমেরিকাতে অভিযান চালাত (নরওয়েজীয়রা উত্তর আমেরিকার নাম দিয়েছিল ভিনল্যান্ড)। আইসল্যান্ডের সাথে নিকটতম ইউরোপীয় প্রতিবেশী দেশ স্কটল্যান্ডের দূরত্ব প্রায় ৮০০ কিলোমিটার। কিন্তু তা সত্ত্বেও সমগ্র ইতিহাস জুড়ে আইসল্যান্ড বৃহত্তর ইউরোপীয় সভ্যতার অংশ হিসেবেই বিদ্যমান। আইসল্যান্ডের গাথাগুলিকে মধ্যযুগের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সাহিত্যিক নিদর্শনের অংশ হিসেবে মনে করা হয়। এই গাথাগুলিতে ইউরোপের চিন্তাধারা যেমন প্রতিফলিত হয়েছে, তেমনি ইউরোপ মহাদেশ থেকে বহু দূরে অবস্থিত লোকদের ইতিহাস ও রীতিনীতিও ফুটে উঠেছে। ভাইকিংদের মুখের প্রাচীন নর্স ভাষার সাথে আইসল্যান্ডীয় ভাষার পার্থক্য খুবই কম, ফলে তারা সহজেই এই গাথাগুলি পড়তে পারে।

আইসল্যান্ডের রাজধানী রেইকিয়াভিকেই দেশের প্রথম কৃষি খামার গড়ে উঠেছিল। বর্তমানে এটি একটি বর্ধনশীল শহর এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিক এখানে বাস করে। অন্যান্য বড় শহরগুলির মধ্যে আছে উত্তর-মধ্য উপকূলের আকুরেইরি (Akureyri), দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের হাফনারফিয়র্ডর (Hafnarfjördhur) এবং দক্ষিণের নিম্নভূমিতে অবস্থিত সেলফস (Selfoss)।

আইসল্যান্ড একটি রুক্ষ দেশ। এখানে কৃষি ও খনিজ সম্পদ খুব কম। দ্বীপের তিন-চতুর্থাংশই উদ্ভিদ জন্মানোর অযোগ্য। উদ্ভিজ্জ্জের মধ্যে তৃণভূমি প্রধান, যেখানে ভেড়া, গবাদি পশু ও শক্তসমর্থ আইসল্যান্ডীয় ঘোড়া পালন করা হয়। দ্বীপের চারপাশের সমুদ্রে বিভিন্ন জাতের মাছ পাওয়া যায় এবং মৎস্যশিকার এখানকার লোকদের আদি ও প্রধান পেশা। বর্তমানে আইসল্যান্ডের রপ্তানির অর্ধেকই মাছ ধরা ও মাছ প্রক্রিয়াকরণ খাত থেকে আসে।

আইসল্যান্ড একটি স্ক্যান্ডিনেভীয় রাষ্ট্র এবং আধুনিক বিশ্বের বিশ্বের প্রথমদিকের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলির একটি। এর জনসংখ্যার জাতিগত প্রকৃতি অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় তেমন পরিবর্তনশীল নয়, বরং সমসত্ত্ব। এ কারণে জিন গবেষকেরা বংশগত রোগ নিয়ে গবেষণা ও এদের চিকিৎসা খুঁজে পাওয়ার লক্ষ্যে অনেক সময় আইসল্যান্ডের লোকদের উপর পরীক্ষা চালিয়ে থাকেন। যদিও আইসল্যান্ডের অধিবাসীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি ইউরোপের মূলধারার সাথে মিশে যাচ্ছে, তা সত্ত্বেও তারা তাদের ঐতিহ্য, রীতিনীতি ও ভাষা ধরে রেখেছে। এখনও বহু গ্রামীণ আইসল্যান্ডীয় অধিবাসী প্রাচীন নরওয়েজীয় পূরাণের নানা দৈত্য-দানব যেমন এল্‌ফ, ট্রোল, ইত্যাদির অস্তিত্বে বিশ্বাস করে। অন্যদিকে শহরের আইসল্যান্ডীয়দের অধিকাংশ নিজেদের দেশকে একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে মনে করতেই পছন্দ করেন।

ইতিহাস

সম্পাদনা

রাজনীতি

সম্পাদনা

আইসল্যান্ডের রাজনীতি-র ভিত্তি একটি সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, যেখানে আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারপ্রধান। এটি একটি বহুদলীয় ব্যবস্থা। নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত। আইন প্রণয়ন ক্ষমতা সরকার ও সংসদ উভয়ের হাতে ন্যস্ত। বিচার বিভাগ নির্বাহী ও আইন প্রণয়ন বিভাগ হতে স্বাধীন।

ওলাফুর রাগণার গ্রিমসন ১৯৯৬ সাল থেকে দেশটির বর্তমান রাষ্ট্রপতি। ইয়োহানা সিগুরদারডোটির ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী।

অর্থনীতি

সম্পাদনা

জনসংখ্যা

সম্পাদনা
Affiliation by religious movement (1 January 2015)[]
Church of Iceland
  
৭৩.৮%
Other Christian
  
১১.৭%
Other and not specified
  
৭.১%
Unaffiliated
  
৫.৬%
Germanic neopaganism
  
০.৮%
Buddhism
  
০.৩%
Islam
  
০.৩%
Humanist association
  
০.৩%
Bahá'í Faith
  
০.১%

সংস্কৃতি

সম্পাদনা

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "2015 Human Development Report" (পিডিএফ)। United Nations Development Programme। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  2. "CIA - The World Factbook -- Iceland"GovernmentUnited States Government। ২০ জুলাই ২০০৬। ১৮ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০২০ 
  3. "Populations by religious organizations 1998–2015"। Reykjavík, Iceland: Statistics Iceland