রাজাকার (পাকিস্তান)
রাজাকার বা রেজাকার হলো ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক গঠিত একটি আধাসামরিক বাহিনী। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী বাঙালি এবং উর্দুভাষী অবাঙালি অভিবাসীদের নিয়ে গঠিত হয়। অবরুদ্ধ বাংলাদেশে স্বাধীনতার জন্যে লড়াইরত মুক্তিবাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য ১৯৭১ সালের মে মাসে খুলনায় প্রথম রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়।
রাজাকার رضا کار | |
---|---|
সক্রিয় | ১৯৭১ |
দেশ | পাকিস্তান |
আনুগত্য | পাকিস্তান |
ধরন | অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, আইন প্রয়োগকারী |
আকার | ৩০,০০০–৪০,০০০ |
গ্যারিসন/সদরদপ্তর | খুলনা, কুষ্টিয়া, সাভার |
ডাকনাম | রাজাকার বাহিনী |
যুদ্ধসমূহ | বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ |
কমান্ডার | |
উল্লেখযোগ্য কমান্ডার | টিক্কা খান |
রাজাকার শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে আগত, এর অর্থ স্বেচ্ছাসেবী।[১][২] ১৯৪০-এর দশকে ভারতের হায়দ্রাবাদের নিজাম ওসমান আলী খানের শাসনামলে একটি সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলেন কাসেম রিজভী, যে বাহিনীর নাম দেওয়া হয়েছিল রাজাকার৷ হায়দ্রাবাদের সেই সশস্ত্র বাহিনীর অনুকরণেই ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে রাজাকার বাহিনী গঠন করে পাকিস্তানের সামরিক সরকার।[৩][৪]
পটভূমি
১৯৭১ সালে যুদ্ধরত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে রাজাকার দল গঠিত হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানকল্পে মে মাসে খুলনায় খান জাহান আলী রোডের একটি আনসার ক্যাম্পে ৯৬ জন পাকিস্তানপন্থী কর্মী নিয়ে হায়দ্রাবাদের ‘রাজাকার’-এর অনুকরণে রাজাকার বাহিনী গঠন করা হয়।[৫] মে মাসে ইসলামী ছাত্র সংঘের প্রধান মো. ইউসুফকে রাজাকার বাহিনীর সর্বাধিনায়ক করা হয়৷ পরবর্তীকালে দেশের অন্যান্য অংশেও রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলা হয়।
প্রথম পর্যায়ে রাজাকার বাহিনী ছিল এলাকার শান্তি কমিটির নেতৃত্বাধীন৷ ১৯৭১ সালের ১ জুন জেনারেল টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তান রাজাকার অধ্যাদেশ জারি করে আনসার বাহিনীকে রাজাকার বাহিনীতে রূপান্তরিত করেন৷ এর নেতৃত্ব ছিল পাকিস্তানপন্থী স্থানীয় নেতাদের হাতে৷ পরে ৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত অধ্যাদেশে রাজাকার বাহিনীর সদস্যদের সেনাবাহিনী সদস্যরূপে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
প্রশিক্ষণ
রাজাকার বাহিনীর প্রাথমিক পর্যায়ের প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছিল ১৫ দিন। ১৯৭১ সালের ১৪ জুলাই কুষ্টিয়ায় রাজাকারবাহিনীর প্রথম ব্যাচের ট্রেনিং সমাপ্ত হয়। পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক অধিনায়ক জেনারেল এ.এ.কে নিয়াজী ১৯৭১ সালের ২৭শে নভেম্বর সাভারে রাজাকার বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডারদের প্রথম ব্যাচের ট্রেনিং শেষে বিদায়ী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন। পরবর্তী পর্যায়ে রাজাকার বাহিনী একটি স্বতন্ত্র অধিদপ্তরের মর্যাদায় উন্নীত হয়।[২]
বিলুপ্তি
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের সঙ্গে সঙ্গে রাজাকার বাহিনীর স্বাভাবিক বিলুপ্তি ঘটে।
কয়েকজন অভিযুক্ত রাজাকার
- গোলাম আযম [৬][৭]
- আব্বাস আলী খান, জামাতে ইসলামী বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর [৮]
- মতিউর রহমান নিজামী [৬][৭]
- আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ- ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি এবং আলবদর বাহিনীর ঢাকা মহানগরীর প্রধান। [৯]
- মুহাম্মদ কামারুজ্জামান- জামাতে ইসলামী বাংলাদেশের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল [৮]
- দেলোয়ার হোসেন সাঈদী- জামাতে ইসলামীর মজলিসের শুরার সদস্য [৮]
- আবদুল কাদির মোল্লা, জামাতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক [৮]
- ফজলুল কাদের চৌধুরী [৭]
- সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী [৬]
- মীর কাসেম আলী [৬]
তথ্যসূত্র
- ↑ ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, শিবপ্রসন্ন লাহিড়ী, স্বরোচিষ সরকার (সম্পাদক)। "র"। বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান (প্রিন্ট) (জানুয়ারি ২০০২ খ্রিস্টাব্দ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলা একাডেমী। পৃষ্ঠা ১০২৯। আইএসবিএন 984-07-4222-1।
- ↑ ক খ মুনতাসীর মামুন (২০১২)। "রাজাকার"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস- ড: মোহাম্মদ হান্নান।
- ↑ মুখার্জি, নয়নিকা (২০০৯)। শারিকা থিরানাগামা, টোবিয়াস কেলি, সম্পাদক। Traitors: Suspicion, Intimacy, and the Ethics of State-Building (বিশ্বাসঘাতকঃ রাষ্ট্রসংঘটনে সন্দেহ, ঘনিষ্ঠতা, ও নৈতিকতা) (ইংরেজি ভাষায়)। পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৪৯। আইএসবিএন 978-0-8122-4213-3।
- ↑ "Razakar was launched with 96 Jamaat men"। দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ) (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ অক্টোবর ২০১২। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৬।
- ↑ ক খ গ ঘ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- ↑ ক খ গ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৪ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- ↑ ক খ গ ঘ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৪ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০০৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৬ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০০৯।
আরও পড়ুন
- চন্দন, আজাদুর রহমান (ফেব্রুয়ারি ২০১১) [২০০৯]। একাত্তরের ঘাতক ও দালালরা (সংশোধিত ২য় সংস্করণ)। ঢাকা: জাতীয় সাহিত্য প্রকাশ। পৃষ্ঠা ৪৮-৫৫।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |