রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ (রাজনীতিবিদ)

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ
(মোহাম্মাদ রিয়াজ উদ্দীন আহমেদ থেকে পুনর্নির্দেশিত)

রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ নিজ এলাকায় ভোলা মিয়া নামে পরিচিত, যিনি বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রাক্তন মন্ত্রী এবং যিনি তৎকালীন রংপুর-১৩রংপুর-১৫ এবং লালমনিরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের চতুর্থ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ছিলেন।

অ্যাডভোকেট
রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ
শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৪ নভেম্বর ১৯৮১ – ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
কৃষি মন্ত্রী, শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ – ২৪ মার্চ ১৯৮২
রংপুর-১৩ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
৭ মার্চ ১৯৭৩ – ৬ নভেম্বর ১৯৭৬
রংপুর-১৫ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ – ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২
লালমনিরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
৩ মার্চ ১৯৮৮ – ২৪ নভেম্বর ১৯৯৫
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার
কাজের মেয়াদ
২৫ এপ্রিল ১৯৮৮ – ৪ এপ্রিল ১৯৯১
পূর্বসূরীএম কোরবান আলী
উত্তরসূরীশেখ রাজ্জাক আলী
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯২৩ সালের ২৪ অক্টোবর
লালমনিরহাট, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৯৯৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী
লালমনিরহাট
রাজনৈতিক দলজাতীয় পার্টি (এরশাদ)
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
ডাকনামভোলা মিয়া

প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ১৯২৩ সালের ২৪ অক্টোবর লালমনিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম দালাল উদ্দিন আহমেদ এবং মাতার নাম রহিমা বেগম। রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের পিতা ছিলেন কুড়িগ্রামের একজন খ্যাতনামা উকিল। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি ১৯৪৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ পাশ করেন এবং আইন বিষয়ে ভর্তি হয়েও রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ায় তিনি আর লেখাপড়ায় অগ্রসর হতে পারেননি।

রাজনৈতিক জীবন

সম্পাদনা

রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ একজন বাংলাদেশী আইনজীবী ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট আসনে তিনি মনোনয়ন লাভ করেন এবং পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট অঞ্চলের লোকজনদের সংগঠিত করে একজন সক্রিয় সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি তৎকালীন রংপুর-১৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[]

পরবর্তীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগ দিয়ে তিনি ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন রংপুর-১৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[] আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভায় তিনি প্রথমে শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এবং পরে কৃষি মন্ত্রী, শ্রম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৮ সালের চতুর্থ ও ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে লালমনিরহাট -৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[][] ১৯৮৮ সালের ২৫ এপ্রিল তাকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি ১৯৯১ সালের ৪ এপ্রিল পর্যন্ত উক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি মোট পাঁচবার জাতীয় সংসদ সদস্য (এমপি) এবং মন্ত্রীসভায় চার বার পূর্ণ মন্ত্রী থাকার পর বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ এর নেতৃত্বে ১৯৮২ সালের ১৯ আগস্ট ঢাকাস্থ লালমনিরহাট জেলা বাস্তবায়ন কমিটি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এইচ.এম.এরশাদের সাথে সাক্ষাৎ করে লালমনিরহাটকে জেলায় উন্নীতকরণের দাবীনামা পেশ করেন। ফলস্বরুপ ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন সমাজ কল্যাণ ও মহিলা বিষয়ক উপদেষ্টা (মন্ত্রী) ডঃ শাফিয়া খাতুন কর্তৃক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে লালমনিরহাট মহকুমা জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

তিনি ১৯৯৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. "৪র্থ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।