মিথ্যা নবী
ধর্মে, মিথ্যা নবী বা মিছে নবী হলেন একজন ব্যক্তি যিনি মিথ্যাভাবে নবুয়তের বা ওহীর, অথবা প্রভুর সাথে কথা বলার দাবি করে। এটি এমন যে কেউ প্রভুর সাথে একটি বিশেষ সংযোগ দাবি করে এবং তাকে বা নিজেকে রূহানিয়তের উত্স হিসাবে, একজন কর্তৃপক্ষ, প্রচারক বা উস্তাদ হিসাবে চলাফেরা করে।
ইসলাম
সম্পাদনাকুরআন শরীফে বলা হয়েছে যে মুহাম্মদ হলেন "নবীদের খতম",[১] যা মূলধারার মুসলমানদের দ্বারা বোঝা যায় যে তার বাদে যে কেউ নিজেকে নয়া নবী বলে দাবি করে সে একজন মিছে নবী ।[২] সমস্ত মূলধারার মুসলিম ওলামাদের দৃষ্টিভঙ্গি ঈসা নবীর দোসরা আগমনকে একজন নয়া নবীর আগমন হিসাবে দেখে না, যেহেতু ইসলামী মসীহ ইতিমধ্যেই একজন বর্তমান নবী ছিলেন এবং কুরআন শরীফ ও সুন্নত দ্বারা শাসন করবেন, কোন নওশরিয়ৎ নিয়ে আসবেন না।
ছাওবান ইবনে কাইদাদ বর্ণনা করেছেন যে, মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন;
"আমার উম্মৎ থেকে ৩০টি দজ্জাল থাকবে। প্রতিটই দাবি করবে যে সে একজন নবী; কিন্তু আমি নবীদের খতম, এবং আমার বাদে কোন নবী আসবে না।"
— আহমদ বিন হাম্বলের কাছে সহীহ.
আবু হুরায়রা বর্ণনা করেছেন যে মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন;
"কেয়ামৎ সংঘটিত হবে না যতক্ষণ দু’টি বড় দল পরস্পরে মহাযুদ্ধে লিপ্ত না হবে। উভয় দলের দাবি হবে অভিন্ন। আর যতক্ষণ ত্রিশের কাছাকাছি মিথ্যাচারী দাজ্জাল-এর প্রকাশ না পাবে। তারা প্রত্যেকেই নিজেকে আল্লাহর প্রেরিত রসূল বলে দাবি করবে..."
— বুখারী শরীফ, ৯২: কিতাবুল ফিতন, হাদিস নং ৭১২১।[৩]
মুহাম্মদ (সাঃ) আরও বলেছেন যে এই দজ্জালদের মাঝে আখেরী হবে ইসলামবিরোধী, আল-মসীহ আদ-দজ্জাল (প্রতারক মসীহ)[৪] দজ্জাল হাদিস সাহিত্যে উল্লেখ ও বর্ণনা করা হয়েছে।[৪]
সামুরা ইবনে জুনদুব বর্ণনা করেছেন যে একবার মুহাম্মদ (সাঃ) (একটি সূর্যগ্রহণের অনুষ্ঠানে একটি বয়ান দেওয়ার সময়) বলেছিলেন;
"وأنه والله لا تقوم الساعة حتى يخرج ثلاثون كذاباً آخرهم الأعور الكذاب"
আনাস ইবনে মালিক বর্ণনা করেন যে, মুহাম্মদ বলেছেন;
"সকল নবীই তার উন্মাতকে কানা মিথ্যাবাদী (দাজ্জাল) সম্পর্কে সাবধান করেছেন। সাবধান দাজ্জাল কানা হবে।[৫] তোমাদের রব কানা নন।.[৬] দাজ্জালের দু’ চোখের মধ্যস্থলেك ف ر অর্থাৎ كافر (কাফির) লেখা থাকবে।[৬][৭] আর প্রত্যেক মুসলিম মাত্রই এ লেখা পড়তে পারবে।"[৫][৮]
— সহীহ মুসলিম, পরিচ্ছেদঃ ২০. দাজ্জাল এর বর্ণনা, তার পরিচয় এবং তার সাথে যা থাকবে
ইমাম মাহদী কিয়ামতের আগে পৃথিবীতে আবির্ভূত হবেন।[৪][৯][১০] ঈসার দোসরা আগমনের সময়,[১১] নবী ঈসা দজ্জালকে কতল করতে ফিরে আসবেন।[৪][১২] মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে ঈসা এবং মাহদী উভয়ই দুনিয়াকে অন্যায়, বেইন্সাফ এবং জুলুম থেকে আজাদ করবে, সহী সালামৎ নিশ্চিত করবে।[১৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ কুরআন ৩৩:৪০
- ↑ কুরআন ৯:১২৮
- ↑ সহীহ বুখারী, ৯:৮৮:২৩৭ (ইংরেজি)
- ↑ ক খ গ ঘ Encyclopaedia Islamica।
- ↑ ক খ সহীহ মুসলিম, ৪১:৭০০৯ (ইংরেজি)
- ↑ ক খ সহীহ মুসলিম, ৪১:৭০০৭ (ইংরেজি)
- ↑ সহীহ মুসলিম, ৪১:৭০০৮ (ইংরেজি)
- ↑ "The Signs Before the Day of Judgment by Ibn Kathîr"। Qa.sunnipath.com। ২০০৫-০৭-০৩। ২০১২-০৩-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৪।
- ↑ Martin 2004: 421
- ↑ Glasse 2001: 280
- ↑ [কুরআন ৩:৫৫]
- ↑ ৪১:৭০২৩ (ইংরেজি)
- ↑ Momen 1985: 166-8