মাশরুম (ইংরেজি: Mushroom) এক ধরনের ছত্রাক এবং এদের অধিকাংশই ব্যাসিডিওমাইকোটা এবং কিছু অ্যাসকোমাইকোটার অন্তভুক্ত। অন্যান্য উদ্ভিদের ন্যায় মাশরুমের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য তৈরীর জন্য সূর্য থেকে আলোর প্রয়োজন পড়ে না। চীন, কোরিয়াসহ বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশসমূহে কয়েক ধরনের খাদ্যোপযোগী মাশরুম রান্না করার মাধ্যমে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বাংলাদেশেও আধুনিক খাবার হিসেবে মাশরুমের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটছে। যে-সকল ব্যক্তি মাশরুম সংগ্রহ করে খায়, তারা মাইকোফেজিস্টস বা 'মাশরুম খাদক' হিসেবে পরিচিত হন।[][] মাশরুম খোঁজার প্রক্রিয়াকে সাধারণতঃ মাশরুমিং বা মাশরুম শিকারী নামে অভিহিত করা হয়।

এগারিকাস বিসপোরাস (Agaricus bisporus) প্রজাতির মাশরুম বিশ্বের সর্বত্র চাষাবাদ করা হয়
বাংলাদেশী মাশরুমের একটি ছবি

গণপ্রজাতন্ত্রী চীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ খাবার উপযোগী মাশরুম উৎপাদনকারী দেশরূপে পরিচিতি পেয়েছে।[] দেশটি বিশ্বের মোট উৎপাদনের প্রায় অর্ধেক মাশরুম উৎপাদনকারীরূপে স্বীকৃত। প্রতি বছর এক বিলিয়নেরও অধিক জনগোষ্ঠীর জন্য মাথাপিছু ২.৭ কিলোগ্রাম (৬.০ পা) উৎপাদন করে।[]

প্রকারভেদ

সম্পাদনা
  • এগারিক্স - একাধারে এ জাতীয় মাশরুম খাবার উপযোগী বা ভক্ষণযোগ্য, বিষাক্ত এবং মাদক প্রকৃতির হয়ে থাকে।
  • বোলেটস/Boletes - এই গ্রুপের আধিকাংশই ভক্ষণযোগ্য এবং অনেকের কাছে সুস্বাদুকর খাদ্যরূপে বিবেচনা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ থেকে Borofutus (বড়ফুটুস) নামের একটি গণের/জেনাসের মাশরুম প্রথমবারের মতো ২০১২ সালে আবিস্কৃত হয়েছে এবং এটি Borofutus dhakanus (বড়ফুটুস ঢাকানুস) নামে প্রকাশ হয়েছে।[]
  • ব্র্যাকেট ফাঙ্গি
  • চান্টারেলেস - ভক্ষণযোগ্য।
  • কোরাল ফাঙ্গি - ভক্ষণযোগ্য।
  • কাপ ফাঙ্গি - সচরাচর খাবার উপযোগী।
  • জেলি ফাঙ্গি - সচরাচর খাবার উপযোগী হলেও খেতে তেমন সুস্বাদু নয়।
  • পলিপোরেস - বোলেটেসের অনুরূপ অর্থাৎ ভক্ষণযোগ্য এবং অনেক লোকের কাছে সুস্বাদুকর খাদ্যরূপে বিবেচিত।
  • সাইকেডেলিক - এটি শ্রুমস নামেও পরিচিত।
  • পাফবলস - সচরাচর খাবার উপযোগী।
  • স্টিঙ্কহর্নস - খাবার উপযোগী হলেও গন্ধ তেমন চমকপ্রদ নয়।
  • টুথ ফাঙ্গি - বিষাক্ত না হলেও, খাবার উপযোগী না।

বন-জঙ্গল থেকে সঠিক ধরনের মাশরুম সংগ্রহ করা খুবই কঠিন কাজ। কারণ, অধিকাংশ প্রজাতির মাশরুমই একই ধরনের দেখতে। সেজন্যে মাশরুম সংগ্রহকারীকে রাসায়নিক উপাদান সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হয়। খাবার উপযোগী মাশরুম বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বিভিন্নভাবে রান্না করে খেতে হয়। এ ধরনের মাশরুম সাধারণতঃ খামারে চাষাবাদ করা হয়। তবে, বিশ্বের অনেক স্থানের সাধারণ জনগণ শৈশবকাল থেকেই ভক্ষণযোগ্য ও সুস্বাদু প্রকৃতির বুনো মাশরুমের সাথে পরিচিত থাকেন।

বৈশিষ্ট্যাবলী

সম্পাদনা

পৃথিবীতে এ পর্যন্ত প্রায় চৌদ্দ হাজার প্রজাতির মাশরুমের কথা জানা যায়।[] অনেক প্রজাতির মাশরুমই এক রাতের মধ্যেই উৎপাদিত হতে দেখা যায়। অর্থাৎ, খুব দ্রুততার সাথে এর বৃদ্ধি ও প্রসার ঘটতে পারে। তবে অধিকাংশই ধীরে ধীরে বড় হয়। আবাদকৃত মাশরুম আকারে ক্ষুদ্রাকৃতির হয়ে থাকে। খাবার উপযোগী অংশটি অল্প কিছুদিন সতেজ থাকে। বিশ্বের অধিকাংশ মাশরুমেই একটি দণ্ড এবং ছাতার ন্যায় একটি টুপি থাকে। কখনো কখনো ছত্রাকজাতীয় অপুষ্পক উদ্ভিদের টুপির নিম্নাংশে বীজ কিংবা অঙ্কুর থাকে।

আরমিলারিয়া সোলিডিপেস (সাবেক আরমিলারিয়া ওস্টোয়ে) প্রজাতির মাশরুমের আবাসস্থল হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মালহিউর ন্যাশনাল ফরেস্টে দেখা যায় যা প্রায় ২,৪০০ বছরের পুরনো ও প্রাচীনতমরূপে আখ্যায়িত। প্রায় ২,২০০ একর (৮.৯ কিমি) আয়তনে বিস্তৃত হয়ে আছে।

পুষ্টি উপাদান

সম্পাদনা
Mushrooms, brown, Italian, or Crimini, raw
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান
শক্তি১১৩ কিজু (২৭ kcal)
৪.১ g
০.১ g
২.৫ g
ভিটামিনপরিমাণ দৈপ%
থায়ামিন (বি)
৯%
০.১ মিগ্রা
রিবোফ্লাভিন (বি)
৪২%
০.৫ মিগ্রা
নায়াসিন (বি)
২৫%
৩.৮ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি)
৩০%
১.৫ মিগ্রা
ভিটামিন সি
০%
০ মিগ্রা
খনিজপরিমাণ দৈপ%
ক্যালসিয়াম
২%
১৮ মিগ্রা
কপার
২৫%
০.৫ মিগ্রা
ফসফরাস
১৭%
১২০ মিগ্রা
পটাশিয়াম
১০%
৪৪৮ মিগ্রা
সোডিয়াম
০%
৬ মিগ্রা
জিংক
১২%
১.১ মিগ্রা
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।
উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল

কাঁচা অথবা রান্নাকৃত মাশরুম স্বল্প-ক্যালরীযুক্ত খাদ্য হিসেবে স্বীকৃত। কাঁচা অবস্থায় এতে ভিটামিন বি খাদ্যপ্রাণ থাকে যাতে রিবোফ্লোবিন, নায়াসিন এবং প্যান্টোথেনিক এসিড থাকে। এছাড়াও, প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান যথা - সেলেনিয়াম, কপার এবং পটাশিয়াম থাকে। চর্বি, শর্করা এবং ক্যালরীযুক্ত উপাদানের মাত্রা কম রয়েছে। তবে, ভিটামিন সি এবং সোডিয়ামজাতীয় উপাদানের অনুপস্থিতি রয়েছে।

অতিবেগুনী রশ্মির প্রতিফলনে মাশরুমে ভিটামিন ডি তৈরী হয়।[]

নিরামিষভোজী বিশ্বে মাশরুম মাংস হিসেবে পরিচিত।[] খাবার উপযোগী মাশরুম সাধারণতঃ চীনা, কোরিয়ান, ইউরোপীয়ান এবং জাপানি রান্নায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।

সুপারমার্কেটে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম বিক্রয় করা হয়ে থাকে। অধিকাংশ মাশরুমই খামারে উৎপাদন করা হয়। সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রজাতির মাশরুমরূপে আগারিকসা বিসপোরাস পরিচিত। এটি অধিকাংশ লোকের কাছে নিরাপদ মাশরুমরূপে বিবেচ্য। কেননা, এটি নিয়ন্ত্রিত পন্থায়, উপযোগী পরিবেশে জন্মানো হয়। এ. বিসপোরাস প্রজাতির কয়েক ধরনের মাশরুম রয়েছে যা বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হয়। তন্মধ্যে - হুয়াইটস, ক্রিমিনি এবং পোর্টোবেলো অন্যতম। অন্যান্য চাষযোগ্য প্রজাতির মাশরুম হিসেবে শিটেক, মাইটেক অথবা হেন-অব-দি-উডস, অয়স্টার মাশরুম এবং ইনোকি রয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আহারের বৈচিত্র্যতা ও ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে মাশরুম চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকেরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বীতা অর্জন করছে।[]

বৃদ্ধি

সম্পাদনা

মাশরুমের অনেক প্রজাতি আপাতদৃষ্টিতে রাতারাতি তৈরি হয়। এর কারন হল মাশরুমের দ্রুত বৃদ্ধি বা প্রসারণ। এই ঘটনার কারনে ইংরেজি ভাষায় "টু মাশরুম" বা "মাশরুমিং" (আকার বা পর্যাপ্ত সুযোগে দ্রুত প্রসারিত হওয়া) এবং "মাশরুমের মতো পপ আপ" (অপ্রত্যাশিতভাবে এবং দ্রুত উদয় হওয়া) সহ বেশ কয়েকটি সাধারণ অভিব্যক্তির বাক্য প্রচলন ঘটে। বাস্তবে সমস্ত প্রজাতির মাশরুম শুরুর দিকে দেহ গঠন করতে বেশ কয়েক দিন সময় নেয়, যদিও তারা তরল শোষণের মাধ্যমে দ্রুত প্রসারিত হয়।[১০][১১][১২][১৩]

চাষ করা মাশরুম ও সাধারণ মাশরুম, প্রাথমিকভাবে একটি ক্ষুদ্র ফলদায়ক শরীর গঠন করে। ছোট আকারের কারণে পিন স্টেজ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। সামান্য প্রসারিত থাকে তখন তাদের বোতাম বলা হয়। আপেক্ষিক আকার এবং আকৃতির কারণেও বোতাম বলা হয়। একবার এই ধরনের পর্যায়গুলি তৈরি হয়ে গেলে মাশরুম দ্রুত তার মাইসেলিয়াম থেকে জল টেনে নিতে পারে এবং প্রসারিত করতে পারে। তখন প্রধানত প্রাইমর্ডিয়াতে তৈরি হতে বেশ কয়েক দিন সময় লেগেছে এমন প্রিফর্মড কোষগুলিকে দ্রুত স্ফীত করে।[১৪]

একইভাবে, প্যারাসোলা প্লিকাটিলিস (পূর্বে কোপ্রিনাস প্লিক্যাটলিস ) এর মতো অন্যান্য মাশরুম রয়েছে যেগুলি রাতারাতি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বৃষ্টিপাতের পরে গরম দিনে বিকেলের মধ্যে মারা যায়। এধরনের মাশরুমগুলি প্রাইমর্ডিয়া অবস্থায় মাটির স্তরের বিভিন্ন স্থানে, আর্দ্র জায়গায় এবং ভারী বৃষ্টিপাতের পরে বা শিশিরযুক্ত অবস্থায় কয়েক ঘন্টার মধ্যে বেলুনের মত পূর্ণ আকারে তৈরি হয়। তখন এগুলি থেকে স্পোরগুলি ছেড়ে দেয় এবং তারপরে ভেঙে পড়ে। [১৫][১৬]

সমস্ত মাশরুম রাতারাতি প্রসারিত হয় না। কিছু খুব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং তাদের ফলদায়ক দেহে টিস্যু যোগ করে বেলুনের মত অংশের কিনারা থেকে বা হাইফে ঢুকিয়ে। উদাহরণস্বরূপ, প্লুরোটাস নেব্রোডেনসিস ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং মানুষ ব্যবহারের জন্য এগুলো সংগ্রহ করে ফলে এটি এখন বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় স্থান প্রাপ্ত হয়েছে।

যদিও মাশরুমের ফলের দেহগুলি স্বল্পস্থায়ী হয়, তবে অন্তর্নিহিত মাইসেলিয়াম নিজেই দীর্ঘজীবী এবং বিশাল হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মালহেউর ন্যাশনাল ফরেস্টে আর্মিলারিয়া সলিডিপসের একটি উপনিবেশ (একত্রে জন্মানোর স্থান) (পূর্বে আর্মিলারিয়া অস্টোয়াই নামে পরিচিত ) অনুমান করা হয় ২৪০০ বছর পুরানো এবং আনুমানিক ২২০০ একর (৮.৯ কিমি২ ) বিস্তৃত।[১৭] বেশিরভাগ ছত্রাকই ভূগর্ভস্থ এবং ক্ষয়প্রাপ্ত কাঠ বা মৃত গাছের শিকড় সাদা মাইসেলিয়া আকারে কালো জুতার ফিতা-সদৃশ রাইজোমর্ফের সাথে মিলিত হয় যা ভিন্ন ভিন্ন কাঠের উৎসের সাথে সংযুক্ত থাকে।[১৮]

মানুষের ব্যবহার

সম্পাদনা

ভোজ্য মাশরুম

সম্পাদনা

মাশরুম রান্নায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় উল্লেখযোগ্য চীনা, কোরিয়ান, ইউরোপীয় এবং জাপানি। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ এগুলোকে খাদ্য হিসেবে মূল্যায়ন করে আসছে। [১৯]

সুপারমার্কেটে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ মাশরুম বাণিজ্যিকভাবে খামারে জন্মানো হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ প্রজাতিটি হল Agaricus bisporus। যা বেশিরভাগ লোকের খাওয়ার জন্য নিরাপদ বলে মনে করা হয় কারণ এটি নিয়ন্ত্রিত, জীবাণুমুক্ত পরিবেশে জন্মায়। A. bisporus- এর বিভিন্ন জাতের যেমন সাদা, ক্রিমিনি এবং পোর্টোবেলোসহ আরো কয়েকটি জাত বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। অন্যান্য চাষ করা প্রজাতি অনেক স্থানীয় দোকানে পাওয়া যেমন হেরিকিয়াম এরিনেসিয়াস , শিতাকে , মাইতাকে (হেন-অফ-দ্য-উডস), ​​প্লুরোটাস এবং এনোকি। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, উন্নয়নশীল দেশগুলির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মাশরুম চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি করেছে। যা এখন ছোট কৃষকদের জন্য একটি সম্ভাব্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্থান হিসাবে দেখা হচ্ছে।[২০]

চীন একটি প্রধান ভোজ্য মাশরুম উৎপাদনকারী দেশ।[২১] দেশটি সমস্ত পৃথিবীতে চাষকৃত মাশরুমের প্রায় অর্ধেক উত্পাদন করে। প্রতি বছর ১.৪ বিলিয়ন মানুষ প্রায় ২.৭ কিলোগ্রাম (৬.০ পাউন্ড) মাশরুম খায়।[২২] ২০১৪ সালে পোল্যান্ড ছিল বিশ্বের বৃহত্তম মাশরুম রপ্তানিকারক, বার্ষিক আনুমানিক ১৯৪,০০০ টন।

[২৩]

 
মাশরুমের মাইক্রোস্কোপিক দৃশ্য

বিষাক্ত মাশরুম

সম্পাদনা

অনেক মাশরুম প্রজাতি সেকেন্ডারি মেটাবোলাইট তৈরি করে যা বিষাক্ত, মস্তিষ্ক বিভ্রান্তকারী, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভাইরাল বা বায়োলুমিনেসেন্ট হতে পারে। যদিও অল্প সংখ্যক প্রাণঘাতী প্রজাতি রয়েছে তবুও এগুলি আরও কয়েক রকমের গুরুতর এবং অপ্রীতিকর উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। বিষাক্ততা সম্ভবত বেসিডিওকার্পের কার্যকারিতা রক্ষায় ভূমিকা পালন করে। রক্ষকের ভূমিকার কারনে মাশরুমের মাইসেলিয়াম তার স্পোরগুলিকে দক্ষতার সাথে বিতরণ করার জন্য একটি কাঠামো তৈরি করতে যথেষ্ট শক্তি এবং প্রোটোপ্লাজমিক উপাদান ব্যয় করে যার ফলশ্রুতিতে বিষাক্ততা তৈরি হয়। মাশরুমের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কারনে রাসায়নিকের বিবর্তন হয় যা মাশরুমকে অখাদ্য করে তোলে। উপরন্তু, ২০০৮ সালের শেষের দিকে তেজস্ক্রিয় সহ ভারী ধাতুগুলিকে শোষণ করার জন্য মাশরুমের সক্ষমতার কারণে। চেরনোবিল বিপর্যয়ের অঞ্চলে ইউরোপীয় মাশরুমগুলি ১৯৮৬ সাল থেকেই বিষাক্ততা (রেডিওএকটিভ পদার্থ) শোষন করে থাকতে পারে। যার ফলে ঐ মাশরুমগুলি আরো পরীক্ষা নিরীক্ষার করা যেতে পারে।[২৪][২৫]

লোক ঔষধ

সম্পাদনা

কিছু মাশরুম লোক ওষুধে ব্যবহৃত হয়।[২৬] কয়েকটি দেশে পলিস্যাকারাইড-কে, সিজোফিলান, পলিস্যাকারাইড পেপটাইড বা লেন্টিনানের মতো নির্যাসগুলি সরকার-নিবন্ধিত ক্যান্সার সহায়ক থেরাপির অর্ন্তভুক্ত।[২৭][২৮][২৯] কিন্তু এই কার্যকারিতার জন্য ক্লিনিকাল প্রমাণ এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি।[৩০][৩১]

যদিও কিছু মাশরুম প্রজাতি বা তাদের নির্যাস থেরাপিউটিক প্রভাবের জন্য খাওয়া যেতে পারে তবুও কিছু নিয়ন্ত্রক সংস্থা, যেমন আমেরিকান ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এই ধরনের ব্যবহারকে খাদ্যতালিকাগত পরিপূরক হিসাবে বিবেচনা করে যার সরকারি অনুমোদন বা সাধারণ ক্লিনিকাল অনুমোদন নেই। ফলে এটিকে একটি প্রেসক্রিপশন ড্রাগ হিসাবে ব্যবহার স্বীকৃত নয়। [৩২]

অন্য ব্যবহার

সম্পাদনা
  • পশমে রংকরণসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক তন্তুতে মাশরুমের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। মাশরুমের রঙে রাসায়নিক যৌগিক উপাদান রয়েছে যা শক্ত ও উজ্জ্বল রঙ উৎপাদনে সক্ষম। সকল ধরনের রঙের বর্ণালি মাশরুমের রঙে বিদ্যমান। কৃত্রিম রঙ আবিষ্কারের পূর্বে মাশরুম ছিল অনেক টেক্সটাইলে রঙের প্রধান উৎসস্থল।[৩৩]
  • সম্প্রতি মাশরুমকে চামড়ায় পরিণত করে পোশাক তৈরিতে সাফল্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গ্যানোডার্মা লুসিডাম ও প্লেউরোটাস জ্যামর প্রজাতির মাশরুম দিয়ে গবেষণায় সাফল্য মিলেছে। এ বিষয়ে গবেষণার ফলাফল ‘রিসার্চ ডিরেকশন: বায়োটেকনোলজি ডিজাইন’ নামের জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে।[৩৪]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Texas mushrooms: a field guide"books.google.com। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর ২০১০ 
  2. Metzler V, Metzler S. (১৯৯২)। Texas Mushrooms: a Field Guide। Austin, Texas: University of Texas Press। পৃষ্ঠা 37। আইএসবিএন 0-292-75125-7। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৮-০৪ 
  3. "China Becomes World's Biggest Edible Mushroom Producer"। Allbusiness.com। আগস্ট ২১, ২০০৩। ২০০৯-০৯-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৮-০৪ 
  4. Hall et al., 2003, p. 25.
  5. Hosen MI, Feng B, Zhu XT, Li YC, Yang ZL. (২০১৩)। "Borofutus, a new genus of Boletaceae from tropical Asia: phylogeny, morphology and taxonomy"। Fungal Diversity58: 215–226। ডিওআই:10.1007/s13225-012-0211-8 
  6. Miles PG, Chang S-T. (২০০৪)। Mushrooms: Cultivation, Nutritional Value, Medicinal Effect, and Environmental Impact। Boca Raton, Florida: CRC Press। আইএসবিএন 0-8493-1043-1 
  7. Koyyalamudi SR, Jeong SC, Song CH, Cho KY, Pang G. (২০০৯)। "Vitamin D2 formation and bioavailability from Agaricus bisporus button mushrooms treated with ultraviolet irradiation" (পিডিএফ)Journal of Agricultural and Food Chemistry57 (8): 3351–5। ডিওআই:10.1021/jf803908qপিএমআইডি 19281276। ২২ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১২ 
  8. Haas EM, James P. (২০০৯)। More Vegetables, Please!: Delicious Recipes for Eating Healthy Foods Each & Every Day। Oakland, California: New Harbinger Publications। পৃষ্ঠা 22। আইএসবিএন 978-1-57224-590-7 
  9. FAO, Making Money by growing Mushrooms[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  10. Falconer, William (২০০৯)। Mushrooms: How to Grow Them - A Practical Treatise on Mushroom Culture for Profit and Pleasure (2nd সংস্করণ)। Read Books। আইএসবিএন 9781444678925 
  11. DLong (২০১৯-০৮-২৯)। "How Mushrooms are Grown"Canadian Food Focus (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-১৯ 
  12. Sayner, Adam (২০২২-০২-২৩)। "How Long Does It Take To Grow Mushrooms? All Questions Answered"GroCycle (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-১৯ 
  13. Gordon, Tom (২০২১)। A Complete Mushroom Cultivation Guide on How to Grow Gourmet Mushrooms and Identify Wild Common Mushrooms and Other Fungi for Beginners। Independently Published। আইএসবিএন 9798702942391 
  14. Herman, K.C.; Bleichrodt, R. (সেপ্টেম্বর ২০২২)। "Go with the flow: mechanisms driving water transport during vegetative growth and fruiting"Fungal Biology Reviews41: 10–23। আইএসএসএন 1749-4613ডিওআই:10.1016/j.fbr.2021.10.002বিবকোড:2022FunBR..41...10H 
  15. "Parasola plicatilis, Pleated Inkcap mushroom"www.first-nature.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-২৬ 
  16. "The Dish on Deliquescence in Coprinus Species :Cornell Mushroom Blog"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৬-২৬ 
  17. "A Humongous Fungus Among Us", Dinosaur in a Haystack, Harvard University Press, ১৯৯৫, পৃষ্ঠা 335–343, আইএসবিএন 978-0-674-06342-6, ডিওআই:10.4159/harvard.9780674063426.c38 
  18. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; urlUSFS নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  19. Valverde, M. E.; Hernández-Pérez, T.; Paredes-López, O. (২০১৫)। "Edible Mushrooms: Improving Human Health and Promoting Quality Life"International Journal of Microbiology2015: 376387। ডিওআই:10.1155/2015/376387 পিএমআইডি 25685150পিএমসি 4320875  
  20. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; FAO2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  21. "Production of Cultivated Edible Mushroom in China With Emphasis on Lentinula edodes - isms.biz"isms.biz (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০২-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-২৫ 
  22. Hall et al., p. 25.
  23. "Poland: The world's largest mushroom exporter"। Fresh Plaza। ৮ এপ্রিল ২০১৫। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ 
  24. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; FreshPlaza নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  25. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Turhan2007 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  26. Pdq Integrative, Alternative (১৭ জুন ২০২১)। "Medicinal mushrooms"। PDQ Cancer Information। পিএমআইডি 28267306। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০২১ 
  27. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; cancer.org নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  28. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Borchers নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  29. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; pdq2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  30. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; pdq3 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  31. "Mushrooms in cancer treatment"। Cancer Research UK। ৩০ জানুয়ারি ২০১৫। ১৫ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৭ 
  32. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; pdq4 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  33. Mussak R, Bechtold T. (2009). Handbook of Natural Colorants. New York: Wiley. pp. 183–200. আইএসবিএন ০-৪৭০-৫১১৯৯-০.
  34. মাশরুম থেকে চামড়া তৈরিতে সফলতা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, প্রথম আলো, ১৯ মে ২০২৪

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

সনাক্তকরণ

সম্পাদনা

Field Guides database

গবেষণা সমিতি

সম্পাদনা