মরিস শ্লিক

জার্মান দার্শনিক

মরিস শ্লিক (জার্মান: Friedrich Albert Moritz Schlick) (এপ্রিল ১৪, ১৮৮২ – জুন ২২, ১৯৩৬) একজন জার্মান দার্শনিক, পদার্থবিজ্ঞানী এবং যৌক্তিক ইতিবাদের উদ্গাতা। আইনস্তাইনের ব্যাখ্যাতা হিসেবেও তার সুখ্যাতি রয়েছে।

মরিস শ্লিক
মরিস শ্লিক, ১৯৩০
জন্ম(১৮৮২-০৪-১৪)১৪ এপ্রিল ১৮৮২
মৃত্যু২২ জুন ১৯৩৬(1936-06-22) (বয়স ৫৪)
যুগবিংশ শতাব্দীর দর্শন
অঞ্চলপাশ্চাত্য দর্শন
ধারাবিশ্লেষণী দর্শন, যৌক্তিক ইতিবাদ, ভিয়েনা চক্র
প্রধান আগ্রহ
যুক্তি, বিজ্ঞানের দর্শন, গণিতের দর্শন, নীতিশাস্ত্র

প্রাথমিক জীবন এবং কাজ

সম্পাদনা

মরিস শ্লিক ১৯২২ সালে ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরোহী বিজ্ঞানের দর্শনের অধ্যাপক নিয়োজিত হন।

দার্শনিক কর্ম

সম্পাদনা

মরিস শ্লিকের সুযোগ্য নেতৃত্বে ভিয়েনা সার্কেল নামে এক দার্শনিক গোষ্ঠীর আবির্ভাব ঘটে, যে গোষ্ঠীর দার্শনিক আলোচনার মূল উৎস ভিতগেনস্তাইন রচিত অধিবিদ্যাবিরোধী গ্রন্থ, ‘Logico Tractus Philosophicus’।

যাচাইকরণ নীতি

সম্পাদনা

মরিস শ্লিক বাক্যের অর্থ নিরূপণের উপর অত্যধিক গুরুত্ব প্রদান করেন, বাক্যের অর্থ তার যাচাই বা পরখ করার পদ্ধতিতেই নিহিত বলে তিনি মনে করেন। যাচাই করার অর্থ হচ্ছে যাচাই করার সম্ভাব্যতা। কোন বাক্য যদি নীতিগতভাবে অপরখযোগ্য হয়, তবে তা অর্থহীন হয়ে পড়ে। তিনি উল্লেখ করেন, অধিবিদ্যক বাক্যগুলো অর্থহীন, কারণ এইসব বাক্য প্রচলিত ভাষা প্রয়োগের নিয়ম ও যৌক্তিক নিয়মাবলি খণ্ডন করে। এইসব বাক্যের অর্থ প্রতিপাদন করা কোনোভাবেই যাচাই করার সম্ভাব্যতার আওতায় পড়ে না।[] যাচাইকরণ নীতি সংকীর্ণ ও ব্যাপক অথবা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ- এই দু’অর্থে ব্যবহৃত হয়। সংকীর্ণ অর্থে অর্থপূর্ণ উক্তিকে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সত্য বা মিথ্যা বলে প্রতিপাদনযোগ্য হতে হবে। শ্লিক প্রথমে অর্থপূর্ণ উক্তির এই "সংকীর্ণ অর্থের" উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। কিন্তু এটি কঠোরভাবে সমালোচিত হওয়ায় "ব্যাপক অর্থে" যাচাইকরণ নীতি অবলম্বন করেন। এই নীতি অবলম্বনকে "সংকীর্ণ অর্থের" সংশোধনও বলা হয়ে থাকে। "ব্যাপক অর্থে" তিনি বলেন, বাক্যশব্দ বাস্তবে (in practical) যাচাইযোগ্য না হলেও চলবে। তবে তিনি পাশাপাশি এও বলে রেখেছেন, বাস্তবে না হলেও এগুলোকে অবশ্যই নীতিগতভাবে (in theory of principle) প্রতিপাদনযোগ্য হতে হবে।

ভাষা দর্শন

সম্পাদনা

মরিস শ্লিক ভাষা-সম্পর্কীয় যৌক্তিক বিশ্লেষণী দর্শনের প্রখ্যাত প্রবক্তা। তিনি উল্লেখ করেন, দর্শনের কাজ হচ্ছে সমীক্ষণ এবং সর্বপ্রকার সমস্যা ও তাদের সমাধানজনিত ধারণা ও প্রচেষ্টার অনুসন্ধান। তিনি শব্দ ও বাক্যের অর্থ-নিরূপণ সম্পর্কে বিশেষ আলোচনা করেন। তিনি অর্থের অভিজ্ঞতাভিত্তিক ইতিবাদী মানদণ্ডের আলোচনায় যৌক্তিক ভিত্তির উপরও গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি মনে করেন, ভাষাসম্বন্ধীয় নিয়ম পরিশেষে প্রদর্শনমূলক সংজ্ঞায়িত অভিজ্ঞতার (ostensively defined experience) উল্লেখ করে এবং এই কারণে অর্থকে আবিষ্কার করতে গিয়ে আমাদেরকে জগৎ সম্পর্কেও পর্যবেক্ষণ করতে হয়।[]

  1. William J. Deangelis (১৭২)। Ludwig Wittgenstein - a Cultural Point of View: Philosophy in the Darkness of This Time। Ashgate Publishing, Ltd.। আইএসবিএন 9781409485377Positivists did not merely reject religious discourse as meaningless, they rejected religion. They thought of religious belief as confused and nonsensical. ...their unofficial leader, Moritz Schlick, thought of religion as a kind of childhood phase in the intellectual development of humankind, a phase that will wither and become obsolete as scientific ways of knowing become the accepted paradigm. To this extent, one can say that Schlick's attitude and that of most of his fellow Positivists was atheistic. 
  2. ইসলাম, আমিনুল, পাশ্চাত্য দর্শন : আধুনিক ও সাম্প্রতিককাল
  3. হালিম, মো. আবদুল, দার্শনিক প্রবন্ধাবলি : তত্ত্ব ও বিশ্লেষণ, মে ২০০৩, বাংলা একাডেমি, ঢাকা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  • Edmonds, David and John Eidinow. Wittgenstein's Poker. New York: HarperCollins, 2001.
  • Fynn Ole Engler, Mathias Iven. Moritz Schlick. Leben, Werk und Wirkung. Berlin: Parerga 2008. (জার্মান)
  • Schlick, Moritz. Positivism and Realism. Originally appeared in Erkenntnis 111 (1932/33); translated by Peter Heath and reprinted in Moritz Schlick: Philosophical Papers, Volume II (1925–1936) from Vienna Circle Collection, edited by Henk L. Mulder (Kluwer, 1979), pp. 259–284.

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা