ভারতের বৈদেশিক সম্পর্ক
ভারতীয় প্রজাতন্ত্র বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল নির্বাচিত গণতন্ত্র। এই রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার অত্যন্ত দ্রুত। ২০০৭ সালে ৮.৯ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে এটি চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রধান অর্থব্যবস্থা।[১] ভারতের সামরিক বাহিনী বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম[২]। ক্রয়ক্ষমতা সমতায়ও চতুর্থ বৃহত্তম ভারত এই কারণে একটি আঞ্চলিক শক্তি[৩][৪] ও মধ্য শক্তি হিসেবে গণ্য হয়।[৫][৬][৭][৮] আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এই কারণে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ভারতের কণ্ঠস্বরকে মজবুত করেছে।[৯][১০][১১][১২]
১৯৪৭ সালে যুক্তরাজ্যের অধীনতাপাশ থেকে মুক্ত হয়ে ভারত কমনওয়েলথ অফ নেশনস-এ যোগ দেয় এবং ইন্দোনেশীয় জাতীয় বিপ্লব সহ বিভিন্ন উপনিবেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে জোরালো সমর্থন দান করে।[১৩] ভারত বিভাগ ও বিভিন্ন ক্ষেত্রীয় বিবাদকে (বিশেষত কাশ্মীর বিবাদ) কেন্দ্র করে পরবর্তী বছরগুলিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েনের সৃষ্টি করে। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় ভারত কোনো আন্তর্জাতিক শক্তিজোটকে সমর্থন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ভারত ঘণিষ্ঠ সংযোগ গড়ে তোলে এবং উক্ত রাষ্ট্র থেকে বহুবিধ সামরিক সহায়তাও লাভ করে।
ঠান্ডা যুদ্ধের সমাপ্তি সারা পৃথিবীর মতো ভারতের বিদেশনীতিতেও গভীর প্রভাব বিস্তার করে। এই সময় ভারত যে সকল আন্তর্জাতিক শক্তিগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করার দিকে মনোযোগ দেয়, সেগুলি হল: যুক্তরাষ্ট্র,[১৪] গণপ্রজাতন্ত্রী চীন,[১৫] ইউরোপীয় ইউনিয়ন,[১৬] জাপান,[১৭] ইসরায়েল,[১৮] মেক্সিকো,[১৯] ও ব্রাজিল [২০]। অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ-ইস্ট এশিয়ান নেশনস,[২১] আফ্রিকান ইউনিয়ন,[২২] আরব লীগ,[২৩] ও ইরানের [২৪] সঙ্গেও ভারত ঘণিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে।
ভারত রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক বজায় রেখে চললেও,[২৫] ইসরায়েল ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক সহযোগী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে;[২২] এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও ভারত শক্তিশালী এক রণনীতিসংক্রান্ত সহযোগিতা গড়ে তোলে।[১৪][২৬] ২০০৮ সালে ভারত-মার্কিন অসামরিক চুক্তি সাক্ষরিত ও প্রযুক্ত হয়। এই ঘটনাকে দেখা হয় ভারত-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির একটি ধাপ হিসেবে।[২৭]
ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সহযোগিতার সম্পর্কের ইতিহাস বেশ পুরনো। ভারতকে মনে করা উন্নয়নশীল বিশ্বের এক নেতা।[২৮][২৯] ভারত একাধিক আন্তর্জাতিক সংঘের সদস্য, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্রসংঘ, জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও জি২০ ইন্ডাস্ট্রিয়াল নেশনস। এছাড়াও যে সব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে, সেগুলি হল ইস্ট এশিয়া সামিট,[৩০] বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা,[৩১] আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার,[৩২] জি৮+৫ [৩৩] ও আইবিএসএ ডায়ালগ ফোরাম [৩৪]। ভারত যেসব আঞ্চলিক সংঘের সদস্য সেগুলি হল সার্ক ও বিম্সটেক। ভারত বিভিন্ন শান্তিপ্রক্রিয়া সংক্রান্ত অভিযানে অংশগ্রহণ করে এবং ২০০৭ সালে রাষ্ট্রসংঘের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনা সরবরাহকারী রাষ্ট্র ঘোষিত হয়।[৩৫] বর্তমানে ভারত রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও জি৪ নেশনস-এর স্থায়ী সদস্যপদ লাভের প্রত্যাশী।[৩৬]
বিশ্বের ১৫টি দেশে ভারতীয় পাসপোর্ট এ ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করা যায় । এগুলি হলো : নেপাল, ভুটান, হংকং, মালদ্বীপ, মরিশাস, জর্দান, কম্বোডিয়া, বলিভিয়া, ম্যাকাও, জামাইকা, ফিজি, হাইতি, ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো এবং ডোমিনিকা ।[৩৭]
নীতি
সম্পাদনাবিদেশমন্ত্রক
সম্পাদনাবিদেশমন্ত্রক হ'ল ভারতের বিদেশি সম্পর্কের জন্য দায়ী ভারতীয় সরকারের সংস্থা। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হিসাবে বিদেশমন্ত্রীর মন্ত্রিসভা পদমর্যাদা রয়েছে। মন্ত্রকের সদরদপ্তর সাউথ ব্লক, কেন্দ্রীয় সচিবালয় (ভারত) ।
প্রতিবেশী দেশ
সম্পাদনাচীন
সম্পাদনাপাঁচগুণ শক্তিধর প্রতিবেশী চিনের সঙ্গে সাম্প্রতিককালে কিছু সঙ্কট তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ
সম্পাদনাপার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের জোর কূটনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান। তবে দেশটিতে সাম্প্রতিককালে "বয়কট ইন্ডিয়া" ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। এছাড়াও দেশটির জনসাধারণের মধ্যে ভারত বিরোধী মনোভাব লক্ষ্যণীয়। অভিযোগ আছে যে, বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতীয় হস্তক্ষেপ রয়েছে।
ট্রান্সকন্টিনেন্টাল: ইউরেশিয়া
সম্পাদনারাশিয়া
সম্পাদনাঅস্ত্রসরঞ্জাম আমদানি এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সমন্বয়ের প্রশ্নে রাশিয়া ভারতের প্রাচীনতম মিত্র। কিন্তু ভারত-আমেরিকার ঘনিষ্ঠতা বাড়তে দেখে রাশিয়া আপত্তি করে ।
আন্তর্জাতিক সংস্থা
সম্পাদনা- জি-৭ : এই বৈঠকে ভারত অতিথি সদস্য হিসেবে যোগ দিচ্ছে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Indian economic growth rate - BBC
- ↑ "World Almanac: Nation's with Largest Armed Forces"। ৭ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ Indian Navy tsunami aid highlights country's role as 'super regional power
- ↑ India As a Regional Power
- ↑ India: Asia's Other Superpower Breaks Out
- ↑ "The Coverage of Three International Newspapers on India's Super Power Capabilities in the Region: A Content Analysis of The Times of India, New York Times and London Times"। ৩ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ "India: A Superpower in the making" (পিডিএফ)। ১০ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ India set to become an economic superpower: Chidambaram
- ↑ US Today on NIC report
- ↑ "The New Great Game: Why the Bush administration has embraced India"। ১৬ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ "E.U. India relations"। ১৯ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ "US-India relations"। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ http://old.thejakartapost.com/yesterdaydetail.asp?fileid=20080717.B08[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ Fact Sheet: United States and India: Strategic Partnership
- ↑ "India and China"। ৪ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ "The EU's relations with India - Overview"। ২ মে ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ India and Japan
- ↑ "India-Israel Partnership"। ২২ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ "Mexico » International Relations"। ১৭ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ India, Brazil ink nine agreements
- ↑ India & Asean
- ↑ ক খ World Report: "India 2nd largest importer of conventional weapons," Business Standard, February 14, 2008
- ↑ Indo-Arab relations; an account of India's relations with the Arab World from ancient up to modern times
- ↑ A special report on India: India elsewhere: An awkward neighbour in a troublesome neighbourhood December 11th 2008 The Economist
- ↑ "Prospects for India-Russia Security Relations - Carnegie Endowment for International Peace"। ১২ মে ২০০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ জুন ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২১।
- ↑ "US-India Nuclear Deal Goes Through"। ২৪ মে ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ "G8 SUMMIT: Developing Countries Stand Firm by Kyoto Protocol"। ১৯ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ [১][স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ http://goliath.ecnext.com/coms2/gi_0199-4519133/ANALYSTS-SAY-INDIA-S-POWER.html
- ↑ http://www.pjstar.com/business/x1906041915/Guebert-WTO-talks-show-declining-U-S-clout
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ মে ২০২০।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ http://www.bilaterals.org/article.php3?id_article=9969
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৯।
- ↑ http://news.bbc.co.uk/2/hi/americas/3678736.stm
- ↑ http://www.anandabazar.com/lifestyle/indians-can-visit-these-15-countries-without-visa-dgtl-1.410791
অন্যান্য সূত্র
সম্পাদনা- Foreign Relations: Ministry of external affairs, Government of India
- India-China Relations
- Harvard University homepage ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে India's Foreign Policy, Xenia Dormandy
- Russia-India relations