বেলায়েত
বিলায়াহ্ (আরবি: وِلاية, প্রতিবর্ণীকৃত: Wilāyah) শব্দটির অর্থ হল “অভিভাবকত্ব”, “তত্ত্বাবধান” বা “কর্তৃত্ব”। এটি শিয়া ইসলামের একটি মৌলিক ধারণা যা ইমামতের প্রকৃতি ও কার্যকারিতাকে বোঝায়।[২]
বিলায়ত হল এমন ক্ষমতা যা কোনো ব্যক্তি, সম্প্রদায় বা দেশকে অন্যের পক্ষে দিকনির্দেশনা ও শাসনের কর্তৃত্ব বা অভিভাবকত্ব প্রদান করে। “ওয়ালি” হলেন তিনি যার অন্যের ওপর বিলায়ত তথা কর্তৃত্ব বিদ্যমান। উদাহরণস্বরূপ, ফিকহশাস্ত্র অনুসারে একজন পিতা হলেন তাঁর সন্তানদের “ওয়ালি”। ইসলামি আধ্যাত্মিক জীবন তথা সুফিবাদে ওয়ালি শব্দটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে এবং এটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে। এর নানান কার্যকারিতার ওপর ভিত্তি করে এটি নানান অর্থ ধারণ করতে পারে, যেমন: আত্মীয়, সহযোগী, বন্ধু, সহায়ক, অভিভাবক, পৃষ্ঠপোষক, সাধু ইত্যাদি। ইসলামে ولي الله ওয়ালিউল্লাহ[৩] শব্দটি দ্বারা মানুষের ওপর আল্লাহর পক্ষে কর্তৃত্ব অর্পিত ব্যক্তিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হতে পারে।
بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَنِ ٱلرَّحِيمِ إِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُواْ الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلاَةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ
“পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে: তোমাদের ওয়ালি কেবল আল্লাহ, তাঁর রসুল ও মুমিনগণ যারা নামাজ কায়েম করে এবং রুকুরত অবস্থায় জাকাত আদায় করে।”[কুরআন ৫:৫৫]
এই আয়াত নাজিলের ঘটনার মর্যাদা ও অর্থ ইসলামি পণ্ডিতদের মাঝে একটি আলোচনার বিষয়।[৪] সুন্নি ও শিয়া পণ্ডিতরা একমত যে উক্ত আয়াতটি আলীর শানে নাজিল হয়েছে, তথাপি এর তাফসীরের ক্ষেত্রে ভিন্নতা রয়েছে।[৫] সুন্নি পণ্ডিতেরা বিশ্বাস করেন যে এই আয়াতটি আলী বিষয়ক তবে এটি তাঁকে ইমাম (নেতা) হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না, অন্যদিকে শিয়া পণ্ডিতেরা বিশ্বাস করেন যে এই আয়াতের দ্বারা আল্লাহ আলীর বেলায়েত ঘোষণা করেছেন এবং আলীকে মুহাম্মাদের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে মনোনীত করেছেন।[৬][৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Badruddīn, Amir al-Hussein bin (১৮ ডিসেম্বর ২০০৮)। The Precious Necklace Regarding Gnosis of the Lord of the Worlds। Imam Rassi Society।
- ↑ Newman in Meri 2006, পৃ. 734
- ↑ "Walī (a., pl. awliyā;)"
- ↑ ক খ Shi'ite Encyclopedia।
- ↑ Rizvi & Rizvi (2006), p. 24.
- ↑ Steigerwald (2008), p. 375.