বীর উত্তম শহীদ সামাদ স্কুল এন্ড কলেজ
বীর উত্তম শহীদ সামাদ স্কুল এন্ড কলেজ (রংপুর শহরের রংপুর সেনানিবাস-এ অবস্থিত। এটি ১৯৭৪ সালে শহীদ মুখত্বার এলাহী চত্বরের পশ্চিমে সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে, ১৯৮১ সালে উত্তরবঙ্গের জিওসি মেজর জেনারেল আব্দুল মান্নাফ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি রংপুর সেনানিবাস-এর ভেতরে স্থাপন করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি মূলত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সন্তানদের জন্য হলেও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গের সন্তানরাও এতে পড়াশোনা করতে পারে।
) ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাবীর উত্তম শহীদ সামাদ স্কুল এন্ড কলেজ | |
---|---|
ঠিকানা | |
৫৪০১ | |
স্থানাঙ্ক | ২৫°৪৬′০৮″ উত্তর ৮৯°১৩′০৫″ পূর্ব / ২৫.৭৬৮৮৯° উত্তর ৮৯.২১৮১৮° পূর্ব |
তথ্য | |
নীতিবাক্য | সততা, শৃঙ্খলা, দেশপ্রেম |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৭৪ |
বিদ্যালয় বোর্ড | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, দিনাজপুর |
কর্তৃপক্ষ | সামরিক ভূমি ও ক্যান্টনমেন্ট অধিদপ্তর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় |
সেশন | জানুয়ারি-ডিসেম্বর |
বিদ্যালয় কোড | ৫২৭২ |
কলেজ কোড | ১২৭৩৭৭ |
ইআইআইএন | ১২৭৩৭৭ |
অধ্যক্ষ | জনাব মো: ফারুক হোসেন |
শ্রেণি | শিশু শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি |
লিঙ্গ | বালক এবং বালিকা |
ভাষা | বাংলা |
রং | সবুজ |
ক্রীড়া | ফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন |
বর্ষপুস্তক | সৃজনী |
ই-মেইল | busshs@gmail.com |
টেলিফোন | 0521-62436 |
ওয়েবসাইট | www.busshsr.edu.bd |
ইতিহাস
সম্পাদনাআবু মঈন মোহাম্মদ আশফাকুস সামাদ-এর নামানুসারে ১৯৭৪ সালে এ বিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। রংপুর সেনানিবাস এর ক্যান্টনমেন্ট শাখা পোস্ট অফিসের অদূরে স্ট্যাটিক সিগন্যাল কোম্পানির ইউনিট ভবনটির স্থলে তৎকালীন একটি টিনশেড বিল্ডিং এ ১৯৭৪ সালে বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে স্কুল ভবন হিসেবে 'এম ই এস' - এর জি-ই (আর্মি) বর্তমান মূল ভবন সংলগ্ন বিল্ডিং এ অস্থায়ীভাবে বিদ্যালয়ের পাঠদান শুরু করা হয়। ১৯৭৭ সালে শহীদ সামাদ বিদ্যালয়ের নিজস্ব ভবন শহীদ মুখতার এলাহী চত্বরের পশ্চিমে (বর্তমানে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর এর মূল ভবন টি) প্রস্তুত করা হয়। নিজস্ব ভবন যাত্রায় শহীদ সামাদ বিদ্যালয়ের নাম ১৯৭৮ সালে শহীদ সামাদ বিদ্যালয় থেকে পরিবর্তন করে নাম দেওয়া হয় ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ এবং সেখানে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ এর যাত্রা শুরু হয়। ১৯৮১ সালের ১৭ই মার্চ তৎকালীন উত্তরাঞ্চলের সামরিক অধিনায়ক মেজর জেনারেল আব্দুল মান্নাফ, পিএসসি কর্তৃক ২৫ বীর ইউনিট এর মাঠের উত্তর পাশে শহীদ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় এর মূল ভবন স্থাপন করেন।
একই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মাননীয় সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, এনডিসি, পিএসসি মহোদয় এর কর্তৃক বর্তমান স্থানে শহীদ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শুভ সূচনা হয়। পরবর্তীতে ২০০০ সালে শহীদ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নাম পরিবর্তন হয় 'বীর উত্তম শহীদ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয়' এবং ২০১৯ সালের ১ জুলাই তৎকালীন জেনারেল অফিসার কমান্ডিং,৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, রংপুর এরিয়া কর্তৃক কলেজ শাখার শুভ উদ্বোধন করা হয়।
কালক্রমে বিদ্যালয়টি ১৯৭৮ সালে নিম্ন মাধ্যমিক এবং পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসেবে উন্নীত হয়।
বিদ্যালয়টি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামরিক ভূমি ও সেনানিবাস অধিদপ্তর-এর আওতাধীন রংপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড দ্বারা পরিচালিত।
রংপুর সেনানিবাসের উত্তর প্রান্তে ঘাঘট নদীর পাশে ৬.০০ একর জমির উপর মাঠ ও প্রাঙ্গনসহ কলেজটির চতুর্দিকে প্রাচীর পরিবেষ্ঠিত। বিদ্যালয় ভবনটি সুপরিসর দ্বিতল বিশিষ্ট ‘L’ আকৃতির। ১৯৮১ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন উত্তারাঞ্চলের সামরিক অধিনায়ক মেজর জেনারেল আব্দুল মান্নাফ, পিএসসি বিদ্যালয় ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এবং ১৫ই সেপ্টেম্বর তৎকালীন সেনাপ্রধান লেঃ জেনারেল এইচ এম এরশাদ, এনডিসি, পিএসসি বিদ্যালয় ভবনটি শুভ উদ্বোধন করেন।
বিবরণ
সম্পাদনানামকরণ
সম্পাদনাশহীদ বীর উত্তম লে. আবু মঈন মোহাম্মদ আশফাকুস সামাদ কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের কারণে রংপুর সেনানিবাস তাঁর নাম অনুসারে এ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
প্রতীক
সম্পাদনাপ্রতিষ্ঠানটির প্রতীক বহন করে প্রতিষ্ঠানটির নীতিবাক্য ও শিক্ষার অঙ্গীকার এবং রং বহন করে প্রতিষ্ঠানটির চারটি হাউসের রঙ।
অবকাঠামো
সম্পাদনাবীর উত্তম শহীদ সামাদ স্কুল এন্ড কলেজ ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও অবস্থান পরিবর্তনের কারণে সর্বশেষ ১৯৮১ সালে রংপুর সেনানিবাসের উত্তরে মনোরম, শান্ত এবং সুন্দর পরিবেশে মূল ভবন প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটি সর্বশেষ স্কুল শাখার ভবন নির্মাণ শেষ করে। ২০১৯ সালে ৫ তলা বিশিষ্ট কলেজ শাখার নিজস্ব ভবনের কাজ শুরু হলেও শুধু ২ তলার কাজ করে বন্ধ করতে হয় কারণ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার যাতায়াত এবং হেলিপ্যাডে গমনে অসুবিধা হওয়ায়।
অবস্থান
সম্পাদনাশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি রংপুর সেনানিবাসের উত্তরে ৫ নং মিলিটারি পুলিশ চেকপোস্ট এর কাছাকাছি অবস্থিত। বিদ্যালয়ের সামনে একটি খেলার মাঠ অবস্থিত। এছাড়া বিদ্যালয়ের দক্ষিণে রংপুরের সবচেয়ে উচু বিল্ডিং যেটি ১৪ তলা হিসেবে পরিচিত অবস্থিত।
প্রসাশন
সম্পাদনাস্টেশন সদর দপ্তর রংপুর এবং রংপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর নেতৃত্বে এ প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন জিওসি ৬৬ পদাতিক ডিভিশন কর্তৃক মনোনীত একজন বিগ্রোডিয়ার জেনারেল পদে যুক্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা। সাধারণত স্টেশন সদর দপ্তর রংপুর এর কমান্ডার এ দায়িত্ব পান এবং সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন রংপুর সেনানিবাসের ক্যান্টনমেন্ট এক্সিউকিটিভ অফিসার।
শিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাএ প্রতিষ্ঠানে শিশু শ্রেণি হতে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড নীতিমালা অনুযায়ী শিশু থেকে দশম শ্রেণিতে এক শ্রেণির জন্য দুইটি শাখা প্রযোজ্য। বাৎসিক পাঠদানের পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সুন্দর এবং সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে তোলার চেষ্টা করা হয়। কলেজে বিজ্ঞান বিভাগ সহ ব্যবসা ও মানবিক বিভাগ রয়েছে।
সহ-শিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাপ্রতিবছর শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান/গণিত অলিম্পিয়াতসহ জাতীয় পর্যারে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য মেধাবী এবং দক্ষ শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয়।
সংস্থাসমূহ
সম্পাদনা- বিএনসিসি (শ্রীঘ্রই আসছে)
- রোভার স্কাউট
- বয়েজ স্কাউট
- গার্ল ইন স্কাউট
- গার্ল গাইড
হাউস সমূহ
সম্পাদনাবর্তমান চ্যাম্পিয়ন হাউস নজরুল হাউস
হাউস | রং | নীতিবাক্য ও মূল্যবোধ | নামকরণ |
---|---|---|---|
তিতুমীর হাউস |
হলুদ | আমরা নতুন আমরা কুঁড়ি | তিতুমীর |
শেরে বাংলা হাউস |
লাল | আমরা শক্তি আমরা বল | এ কে ফজলুল হক |
রোকেয়া হাউস |
সবুজ | সত্যই সুন্দর | বেগম রোকেয়া |
নজরুল হাউস |
নীল | মোরা ঝর্ণার মতো চঞ্চল | কাজী নজরুল ইসলাম |
অর্জন সমূহ
সম্পাদনা- ২০০৩- জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ- শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- ২০১১ - দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে ফলাফলের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী ২০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ১৮তম স্থান অধিকার করে।[১]
- ২০১৪ - দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের শীর্ষ ২০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫তম স্থান অধিকার।[২]
- ২০১৫ - দিনাজপুর বোর্ডের সেরা ২০–এ রংপুরের ১০টি প্রতিষ্ঠান স্থান করে; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ১৭তম স্থান অধিকার করে।[৩]
- ২০২৩- জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ- শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "বোর্ডসেরা রংপুরের ১০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান"। দৈনিক সংগ্রাম। মে ৮, ২০১২। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৫, ২০১৯।
- ↑ "দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডে শীর্ষ ২০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান"। দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। মে ১৭, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৫, ২০১৯।
- ↑ "বোর্ডসেরা রংপুরের ১০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান"। দৈনিক প্রথম আলো। মে ৩১, ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৫, ২০১৯।