বাগবাটি গণহত্যা
বাগবাটি গণহত্যা আল-বদর, পাকিস্তান সেনাবাহিনী, রাজাকার ও শান্তি কমিটির সমন্বয়ে এবং বৃহত্তর পাবনার পূর্ববর্তী জেলা সিরাজগঞ্জ উপ-বিভাগের বাগবাটি ইউনিয়নে ২০০ শতাধিক নিরস্ত্র বাঙালি হিন্দুদের শীতল রক্তপাতকে বোঝায়।[১] গণহত্যার পরে মৃতদেহগুলি গণকবর বা ফেলে দেওয়া হয়।
বাগবাটি গণহত্যা | |
---|---|
স্থান | বাগবাটি, পাবনা, পূর্ব পাকিস্তান |
তারিখ | ২৭ মে ১৯৭১ (UTC+6:00) |
লক্ষ্য | বাঙ্গালী হিন্দু |
হামলার ধরন | গণহত্যা |
ব্যবহৃত অস্ত্র | রাইফেল |
নিহত | ২০০ এর অধিক |
হামলাকারী দল | আল-বদর, রাজাকার, পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি, পাকিস্তান সেনাবাহিনী |
পটভূমি
সম্পাদনাবাগবাটি ইউনিয়ন সিরাজগঞ্জ মহকুমা সদর থেকে ১৪ কিমি উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত। এটি এখন সিরাজগঞ্জ জেলা সদর উপজেলাধীন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন অপারেশন সার্চলাইট শুরু করে এবং সিরাজগঞ্জ দখল করে, তখন সিরাজগঞ্জ ও আশেপাশের অঞ্চল থেকে কয়েকশ বাঙালি হিন্দু বাগবাটি ইউনিয়নের অন্তর্গত বাগবাটি, হরিণগোপাল, পিপুলবেরিয়া এবং ধলদব গ্রামগুলিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গণহত্যার একদিন আগে রাজাকার ও শান্তি কমিটির মধ্যে ঘোড়াছাড়া স্কুলে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।[২] সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে বাগবাটি, হরিণোপাল এবং অলোকদিয়ার ৫ শতাধিক লোককে নির্মূল করা হবে।
হত্যাকাণ্ড
সম্পাদনা২৭ শে মে ভোরে, একটি যৌথ অভিযানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী, আলবদর, রাজাকার এবং পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি গ্রামগুলিকে ঘিরে ফেলে। আল বদররা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে দুই শতাধিক লোককে হত্যা করেছিল, বেশিরভাগ বাঙালি হিন্দু।[১] আল বদর, রাজাকার এবং পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির সদস্যরা আগুন লাগিয়ে অসংখ্য আবাস্থল লুট করেছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনী মহিলাদের ধর্ষণ করেছে। গণহত্যার পরের দিন, বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা বাগবাটি ও ধলদবের পূর্ববর্তী জমিদারদের নির্জন বাড়ির কূপে মৃতদেহ ফেলে দেয়।
স্মৃতিরক্ষা
সম্পাদনাএই গণহত্যায় শহীদদের প্রতিবছর স্মৃতিতে স্মরণ করা হয়।[৩] বাগবাটি ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয়দের যৌথ উদ্যোগে কয়েক বছর আগে যে সমস্ত কূপে মৃতদের লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছিল তার একটিতে একটি ছোট স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছিল। স্থানীয়রা গণহত্যার জায়গা ও গণকবর পুনরুদ্ধারের দাবি করেছে।[৪]
আরো দেখুন
সম্পাদনা- ডেমরা গণহত্যা
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "১৯৭১ গণহত্যায় শহীদ মুক্তিযুদ্ধাদের তালিকা"। সিরাজগঞ্জ জেলা (Bengali ভাষায়)। Government of Bangladesh। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ Liton, Fazl-e-Khoda (১ ডিসেম্বর ২০১২)। "গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ"। Daily Ittefaq (Bengali ভাষায়)। Dhaka। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৩।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "সিরাজগঞ্জের বাগবাটি গনহত্যা দিবস"। hotnewsbd24.com (Bengali ভাষায়)। ৪ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ Sanchay, Sajirul Islam (২৬ মে ২০১৩)। "আজ বাগবাটি গণহত্যা দিবস"। Daily Juger Katha (Bengali ভাষায়)। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৩।