বাংলাদেশ রেলওয়ে
বাংলাদেশ রেলওয়ে হচ্ছে বাংলাদেশের একটি রাষ্ট্র-মালিকানাধীন ও রাষ্ট্র-পরিচালিত রেল পরিবহন সংস্থা।[৫] এর সদর দপ্তর ঢাকায় অবস্থিত। ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে এই সংস্থা নব্য প্রতিষ্ঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন নিজের কার্যক্রম পরিচালনা করে। মোট ২৫০৮৩ জন নিয়মিত কর্মচারীসহ বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট ২৯৫৫.৫৩ কিমি রুট রয়েছে।[৬]
ধরন | বাংলাদেশ রেলওয়ে |
---|---|
শিল্প | রেলওয়ে |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৬২ |
সদরদপ্তর | , |
বাণিজ্য অঞ্চল | বাংলাদেশ |
প্রধান ব্যক্তি | সরদার শাহাদাত আলী, মহাপরিচালক[১] |
পরিষেবাসমূহ | রেলওয়ে পরিবহন |
আয় | (২০২০-২১) |
কর্মীসংখ্যা | ২৭,৫৩৫[৩] (২০১৫) |
মাতৃ-প্রতিষ্ঠান | বাংলাদেশ সরকার |
বিভাগসমূহ | ২ (পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে ও পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে) |
ওয়েবসাইট | http://www.railway.gov.bd/ |
বাংলাদেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্ক | |
---|---|
পরিচালনা | |
জাতীয় রেল | রেলপথ মন্ত্রণালয় |
প্রধান পরিচালনকারী | বাংলাদেশ রেলওয়ে |
পরিসংখ্যা | |
যাত্রী সংখ্যা | ৬৫ মিলিয়ন (২০১৪)[৪] |
যাত্রী কিমি | ৮,১৩৫ মিলিয়ন[৪] |
পণ্য | ২.৫২ মিলিয়ন টন[৪] |
শৃঙ্খলা দৈর্ঘ্য | |
মোট | ২,৮৮৫ কিমি[৪] |
Double track | ৩৬৪ কিমি[৪] |
ট্র্যাক গেজ | |
মিটার গেজ | ১,৮৩৮ কিমি[৪] |
ব্রড গেজ | ৬৮২ কিমি[৪] |
বৈশিষ্ট্য | |
সেতুর সংখ্যা | ৩,৬৫০[৪] ৫৪৬ (প্রধান) ৩,১০৪ (অপ্রধান) |
দীর্ঘতম সেতু | পদ্মা রেল সেতু মোট দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি (৩.৮২ মাইল)।।বঙ্গবন্ধু ব্রিজ (ডুয়েল গেজ, ৪.৮ কিমি) হার্ডিঞ্জ ব্রিজ (ব্রড গেজ, ১.৮ কিমি) |
স্টেশন সংখ্যা | ৪৯৮ |
বাংলাদেশ রেলওয়ে বাংলাদেশের রেল পরিবহন ব্যবস্থার সিংহভাগ পরিচালনা করে। তবে এর পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোরও অংশগ্রহণ রয়েছে।[৭] যেমন, খাদ্য ও পানীয়ের ক্যাটারিং, কিছু নির্বাচিত রুট ও ট্রেনের রেলওয়ে রিজার্ভেশন ও টিকেটিং ব্যবস্থা এবং প্রধান রেলপথসমূহে ফাইবারঅপটিক কেবল স্থাপন, পরিচালন ও রক্ষনাবেক্ষনের কাজ বেসরকারি সংস্থার ওপর দেওয়া হয়েছে।[৭]
বাংলাদেশ রেলওয়েকে মূলত দুইটি অংশে ভাগ করা হয়, একটি অংশ যমুনা নদীর পূর্ব পাশে এবং অপরটি পশ্চিম পাশে। এদেরকে যথাক্রমে পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল নামে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। পূর্ব পাশের অংশের দৈর্ঘ্য ১২৭৯ কিলোমিটার এবং পশ্চিম পাশের অংশের দৈর্ঘ্য ১৪২৭ কিলোমিটার। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের রূপসা নদীর পূর্ব প্রান্তের ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রূপসা-বাগেরহাট ব্রড-গেজ রেলপথ সেকশনটিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের তৃতীয় অংশ হিসেবেও ধরা হয়।
বাংলাদেশে বর্তমানে দুই ধরনের রেলপথ চালু আছে: ব্রড-গেজ (৫ ফুট ৬ ইঞ্চি বা ১,৬৭৬ মি.মি.) এবং মিটার-গেজ (১০০০ মি.মি.)। দেশের পূর্বাঞ্চলে মিটার ও ব্রড-গেজ উভয় ধরনের রেলপথ বিদ্যমান, অবশ্য পূর্বাঞ্চলে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব রেলওয়ে স্টেশন হতে ঢাকা পর্যন্ত ব্রড-গেজ রেলপথও রয়েছে। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পদ্মা রেল সেতু চালু হয়।পূর্বে ন্যারো-গেজ (২ ফুট ৬ ইঞ্চি বা ৭৪৬ মি.মি.) রেলপথ চালু থাকলেও এখন আর তা ব্যবহার হয় না।
ইতিহাস
সম্পাদনাবাংলাদেশে রেলওয়ের কার্যক্রম শুরু হয় ব্রিটিশ শাসনামলে, ১৮৬২ সালে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন রেল কোম্পানি ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশে ছোট ছোট রেলপথ সেকশন চালু করতে থাকে। প্রথমদিকে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক কাজের জন্য রেলপথ চালু করা হয়। ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে নামক কোম্পানি প্রথম বাংলাদেশে রেলপথ স্থাপন করে। ১৮৬২ সালের ১৫ই নভেম্বর চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেল যুগে প্রবেশ করে।[৮]
ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে
সম্পাদনাইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি কোলকাতা থেকে রানাঘাট পর্যন্ত ব্রড-গেজ রেলপথ সেকশনটিকে ১৮৬২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর এবং রানাঘাট থেকে দর্শনা হয়ে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত রেলপথ সেকশনটিকে ১৮৬২ সালের ১৫ই নভেম্বর চালু করে এবং জগতি থেকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত সেকশনটি চালু হয় ১৮৭১ সালের ১লা জানুয়ারি। ১৮৭৪–১৮৭৯ সালে দুর্ভিক্ষ মোকাবেলার জন্য সাড়া থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত সেকশনটি নর্দান বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে মিটার-গেজে চালু করে। পার্বতীপুর থেকে দিনাজপুর এবং পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত মিটার-গেজ সেকশনটিও এই কোম্পানি চালু করে। ১৮৮৪ সালের ১লা জুলাই ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলে আসে এবং ১৮৮৭ সালের ১লা এপ্রিল তা নর্দান বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ের সাথে একীভূত হয়।
ঢাকা স্টেট রেলওয়ে নামক একটি ছোট কোম্পানি ১৮৮২–১৮৮৪ সালে দমদম জংশন থেকে খুলনা পর্যন্ত প্রায় ২০৪ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রড-গেজ সেকশনটি চালু করে। ১৯০৪ সালের ১লা এপ্রিল এটি ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলে আসে।
ব্রহ্মপুত্র–সুলতানপুর রেলওয়ে ব্রাঞ্চ নামক একটি কোম্পানি ১৮৯৯–১৯০০ সালে সান্তাহার জংশন থেকে ফুলছড়ি পর্যন্ত মিটার-গেজ সেকশনটি চালু করে। এই কোম্পানিও ১৯০৪ সালের ১লা এপ্রিল ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলে আসে। ১৯০৫ সালে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ কাউনিয়া–বোনারপাড়া মিটার-গেজ সেকশনটি চালু হয়।
১৯১৫ সালের ১লা জানুয়ারি, হার্ডিঞ্জ ব্রিজসহ ভেড়ামারা–শাকোলে সেকশন চালু হয়। ১৯১৪ সালে শাকোলে থেকে সান্তাহার পর্যন্ত মিটার-গেজ সেকশনটিকে ব্রড-গেজে রূপান্তরিত করা হয় এবং ১৯২৪ সালে সান্তাহার থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত প্রায় ৯৬ কিলোমিটার সেকশনটিকে মিটার-গেজ থেকে ব্রড-গেজে রূপান্তরিত করা হয়। ১৯২৬ সালে পার্বতীপুর থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত প্রায় ১৩৭ কিলোমিটার মিটার-গেজ সেকশনটিকে ব্রড-গেজে রূপান্তরিত করা হয়।
১৮৯৮–১৮৯৯ সালে ময়মনসিংহ হতে জগন্নাথগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্যক্তি মালিকানাধীন মিটার-গেজ রেলপথ সেকশনটি চালু হয়, যা পরে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ১৯১৫–১৯১৬ সালে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সাড়া–সিরাজগঞ্জ সেকশনটি সাড়া সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে কোম্পানি কর্তৃক নির্মিত হয়। ১৯৪৪ সালের ১লা অক্টোবর এই সেকশনটি সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলে আসে।
১৯১৮ সালের ১০ই জুন ৩১.৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপসা-বাগেরহাট ন্যারো-গেজ সেকশনটি একটি ব্রাঞ্চ লাইন কোম্পানির পক্ষে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে চালু করে। ১৯৪৮–৪৯ সালে এটি সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলে আসে।
১৯১৬ সালে ভেড়ামারা–রায়টা ব্রড-গেজ সেকশনটি চালু করা হয়। ১৯২৮–২৯ সালে তিস্তা হতে কুড়িগ্রাম পর্যন্ত ন্যারো-গেজ সেকশনটিকে মিটার-গেজে রূপান্তর করা হয়। ১৯৩০ সালে আব্দুলপুর–আমনুরা ব্রড-গেজ সেকশনটি চালু করা হয়। বাহাদুরাবাদ–জামালপুর টাউন মিটার-গেজ সেকশনটি চালু হয় ১৯১২ সালে।
১৮৯৭ সালে দর্শনা–পোড়াদহ সেকশনটি সিঙ্গেল লাইন থেকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়। পর্যায়ক্রমে ১৯০৯ সালে পোড়াদহ–ভেড়ামারা, ১৯১৫ সালে ভেড়ামারা–ঈশ্বরদী এবং ১৯৩২ সালে ঈশ্বরদী–আব্দুলপুর সেকশনগুলোকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়।
চা শিল্পের অগ্রযাত্রার জন্য যে বেঙ্গল যে বেঙ্গল ডুয়ার্স রেলওয়ের সূচনা হয়, তা ১৯৪১ সালে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সঙ্গে একত্রীভূত করা হয়। বাহাদুরাবাদ–ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ সেকশনটি ছাড়া ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সমস্ত অংশটুকুই যমুনা নদীর পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত।
আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে
সম্পাদনাআসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানিটি গঠিত হওয়ার মূলে ছিল আসামের চা কোম্পানিগুলো। ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ত্রিপুরা ও আসামের সমৃদ্ধ জেলাগুলোর পাট, চাল, চা রপ্তানী এবং কয়লা আমদানীর জন্য এই কোম্পানিটি গঠিত হয়। এই কোম্পানি কর্তৃক স্থাপিত রেলপথের সম্পূর্ণ অংশ যমুনা নদীর পূর্ব পাশে অবস্থিত এবং এর সমগ্রই মিটার-গেজ রেলপথ।
১৮৯৫ সালের ১লা জুলাই প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম–কুমিল্লা এবং ৬০.৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ লাকসাম–চাঁদপুর মিটার-গেজ সেকশন দুটি চালু হয়।[৯] একই সালের ৩রা নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে চট্টগ্রাম বন্দর সেকশনটি চালু করা হয়। ১৮৯৬ সালে কুমিল্লা–আখাউড়া এবং আখাউড়া–করিমগঞ্জ সেকশনটি চালু হয়। ১৯০৩ সালে তিনসুকিয়া পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারিত হয়। ১৯০৪ সাল পর্যন্ত সময়কালে নির্মিত প্রায় ১১৯১ কিলোমিটার রেলপথ চট্টগ্রামে উদ্বোধন করেন ভারতের তত্কালীন ভাইসরয় লর্ড কার্জন।
১৯০৩ সালে লাকসাম–নোয়াখালী সেকশনটি নোয়াখালী রেলওয়ে কোম্পানি কর্তৃক নির্মিত হয়। এই কোম্পানিটি আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি দ্বারা পরিচালিত হত। ১৯০৫ সালে এটি সরকার কর্তৃক অধিগৃহীত হয় এবং ১৯০৬ সালের ১লা জানুয়ারি আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের সাথে একীভূত করা হয়।
আখাউড়া–টঙ্গী সেকশনটি ১৯১০ থেকে ১৯১৪ সালে এবং কুলাউড়া–সিলেট ১৯১২ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে নির্মাণ করা হয়। এরপর ১৯২৮ সালে শায়েস্তাগঞ্জ–হবিগঞ্জ বাজার এবং ১৯২৯ সালে শায়েস্তাগঞ্জ–বাল্লা সেকশনটি চালু করা হয়।
চট্টগ্রামের চট্টগ্রাম–হাটহাজারী সেকশনটি ১৯২৯ সালে, হাটহাজারী–নাজিরহাট সেকশনটি ১৯৩০ সালে এবং ষোলশহর–দোহাজারী সেকশনটি ১৯৩১ সালে চালু করা হয়।
ময়মনসিংহ–ভৈরববাজার রেলওয়ে কোম্পানি ভৈরববাজার–গৌরীপুর, ময়মনসিংহ–নেত্রকোণা এবং শ্যামগঞ্জ–জারিয়া ঝাঞ্জাইল সেকশনগুলো ১৯১২ সাল থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যে নির্মাণ করে। এই সেকশনগুলোকে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি পরিচালনা করত। ময়মনসিংহ–ভৈরববাজার রেলওয়ে কোম্পানি ১৯৪৮–৪৯ সালে সরকার কর্তৃক অধিগৃহীত হয়।
মেঘনা নদীর পূর্ব প্রান্তের আশুগঞ্জের সাথে পশ্চিম প্রান্তের ভৈরব বাজারের মধ্যে কোন রেল সংযোগ ছিল না। পূর্ববঙ্গের রেলপথ তখন যমুনা নদী এবং মেঘনা নদী দ্বারা তিন খণ্ডে বিভক্ত ছিল। ১৯৩৭ সালের ৬ ডিসেম্বর, মেঘনা নদীর উপর স্থাপিত কিং ষষ্ঠ জর্জ ব্রিজ চালু করা হলে আশুগঞ্জ ও ভৈরব বাজারের মধ্যে প্রথম রেলপথ সংযোগ গঠিত হয়। এর মাধ্যমে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়।
১৯৪২ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানিকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নেয়া হয় এবং একে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সাথে একীভূত করে নাম দেওয়া হয় “বেঙ্গল এন্ড আসাম রেলওয়ে”।
পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ে
সম্পাদনা১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারত বিভক্তির পর বেঙ্গল-আসাম রেলওয়ে পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। পূর্ব বাংলা তথা পূর্ব পাকিস্তান উত্তরাধিকার সূত্রে পায় ২,৬০৬.৫৯ কি.মি. রেললাইন এবং তা ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে (ইবিআর) নামে পরিচিত হয়। ইবিআর পায় ৫০০ কিলোমিটার ব্রডগেজ এবং ২,১০০ কিলোমিটার মিটারগেজ।
বাংলাদেশ আমল
সম্পাদনাবাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর এদেশের রেলওয়ের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ রেলওয়ে, যা উত্তরাধিকার সূত্রে পায় ২,৮৫৮.৭৩ কিলোমিটার রেলপথ ও ৪৬৬টি স্টেশন। ৩ জুন ১৯৮২ সাল, রেলওয়ে বোর্ড বিলুপ্ত হয়ে এর কার্যক্রম যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের রেলওয়ে বিভাগের ওপর ন্যস্ত করা হয় এবং বিভাগের সচিব ডিরেক্টর জেনারেল পদপ্রাপ্ত হন। ১২ আগস্ট ১৯৯৫ সাল, বাংলাদেশ রেলওয়ের নীতিগত পরামর্শ দানের জন্য ৯ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ রেলওয়ে অথরিটি (BRA) গঠন করা হয় এবং এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু সেতু উন্মুক্তকরণের ফলে জামতৈল থেকে ইব্রাহিমাবাদ ব্রডগেজ রেলপথের মাধ্যমে পূর্ব-পশ্চিম রেল যোগাযোগ শুরু হয় ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন থেকে। সর্বশেষ ১৪ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর ফলে ঢাকা এবং কলকাতার মধ্যে সরাসরি রেল যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
কাঠামো
সম্পাদনা১৯৮২ সালের ২রা জুন পর্যন্ত রেলপথের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন ন্যস্ত ছিল একটি রেলওয়ে বোর্ডের নিকট, যাতে একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য থাকতো।[৫][৬] ১৯৮২ সালের ৩রা জুন প্রশাসনিক ও কার্যপরিচালনার সুবিধার্থে রেলওয়ে বোর্ডকে বিলুপ্ত করে এর কার্যক্রম যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের রেলওয়ে বিভাগের (ডিভিশন) নিকট ন্যস্ত হয়, এক্ষেত্রে উক্ত বিভাগের সচিব বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করত।[৫][৬] একই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ রেলওয়েকে দুটি বিভাগে ভাগ করা হয়, যথা পূর্ব ও পশ্চিম।[৫][৬] বিভাগ দুটি দুজন মহাব্যবস্থাপকের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে থাকত যারা বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের নিকট দায়বদ্ধ হয়।[৫][৬] ১৯৯৫ সালের ১২ই আগস্ট রেলপথের দৈনন্দিন কার্যক্রম মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক হয়ে রেলওয়ে প্রফেশনালদের নিয়ে মহাপরিচালকের ওপর ন্যস্ত হয়।[৫][৬] একই বছর নীতিগত পরামর্শ দানের জন্য ৯ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ রেলওয়ে অথরিটি (বিআরএ) গঠন করা হয়, এবং এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী।[৫][৬] তবে এর কার্যক্রম পরবর্তীতে অব্যাহত থাকেনি।[৮]
১৯৯৬–২০০৩ সালের সময়কালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।[৮] এরপর যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সড়ক ও রেলপথ বিভাগ হতে বাংলাদেশ রেলওয়ের কার্যক্রম পরিচালিত হতো।[৮] ২০১১ সালের ২৮শে এপ্রিল যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের আওতায় রেলপথ বিভাগ নামে নতুন বিভাগ গঠিত হয়।[৮]
২০১১ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে ভেঙ্গে নতুন রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়।[৭][৮] মন্ত্রণালয়টির প্রথম দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। এরপর ২০১২ সালে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মুজিবুল হক মুজিব। ২০১৯ সালে নতুন দায়িত্ব পান নূরুল ইসলাম সুজন।
বাংলাদেশ সরকারের অধীনে ২টি রেল বিভাগ রয়েছে:
- পশ্চিমাঞ্চল (১. রংপুর বিভাগ, ২. রাজশাহী বিভাগ, ৩. খুলনা বিভাগ, ৪. ফরিদপুর বিভাগ)
- পূর্বাঞ্চল (১. সিলেট বিভাগ, ২. চট্টগ্রাম বিভাগ, ৩. ঢাকা বিভাগ, ৪. ময়মনসিংহ বিভাগ)
পূর্ব ও পশ্চিম, এই দুটি অঞ্চলের জন্য দুজন মহাব্যবস্থাপক রয়েছে যাদের সহায়তা করেন বিভিন্ন বিশেষায়িত দপ্তর, যারা কার্য পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার জন্য দায়িত্বশীল থাকেন।[৫][৬] প্রতিটি অঞ্চল আবার দুইটি প্রধান কার্য পরিচালনা বিভাগে বিভক্ত, যা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) এর অধীনে পরিচালিত হয়, এবং সংস্থাপন, পরিবহন, বাণিজ্যিক, আর্থিক, যান্ত্রিক, রাস্তা ও কাজ (ওয়ে এন্ড ওয়ার্কস), সংকেত ও টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুত, চিকিৎসা, নিরাপত্তা বাহিনীর মত বিভিন্ন বিশেষায়িত দপ্তরের বিভাগীয় কর্মকর্তারা তাকে সহায়তা করে থাকেন।[৫][৬] এছাড়াও দুজন বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়কের অধীনে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলী ও পশ্চিমাঞ্চলের সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা আছে।[৬] আবার, ব্রড-গেজ ও মিটার-গেজ লোকোমোটিভের জেনারেল ওভারহলিং এর জন্য পার্বতীপুর চীফ এক্সিকিউটিভের নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা (কেলোকা) আছে।[৬]
বাংলাদেশ রেলওয়েতে সেক্টরের অধীনে ‘রেলওয়ে ট্রেনিং একাডেমী’ (আরটিএ), প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তার অধীনে ‘পরিকল্পনা কোষ’, প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের অধীনে ‘সরঞ্জাম শাখা’, দুই অঞ্চলের হিসাব ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের সমন্বয় ও পরামর্শের জন্য অতিরিক্ত মহাপরিচালকের অধীনে ‘হিসাব বিভাগ’ আছে।[৫][৬]
ট্রেন পরিচালনার সাথে সম্পর্কিত বাংলাদেশ রেলপথের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন এবং রেলপথে পরিবহনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রথমে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পৃথক রেলপথ বিভাগ ও পরে রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে।
নিম্নোল্লিখিত তথ্যাদি[১০] থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মপরিধির একটি সামগ্রিক ধারণা পাওয়া যাবে।
রেলপথের দৈর্ঘ্য | ২৯৫৫.৫৩ কিলোমিটার |
স্টেশন ও জংশনের সংখ্যা | ৪৫৮টি (২০১৬ খ্রি.)[১১] |
কম্পিউটারাইজড আসন সংরক্ষণ ও টিকেটিং ব্যবস্থা | উদ্বোধনঃ ১৯৯৪ । সুবিধা সংবলিত স্টেশন বর্তমানে ৬২ টি (পূর্বাঞ্চলে ৩৫টি, পশ্চিমাঞ্চলে ২৭টি) |
কম্পিউটারাইজড রেলের তথ্য পরিদর্শন ব্যবস্থা | ৫ টি রেলস্টেশন (ঢাকা, বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট) |
বাস্তব সময়ে রেল অনুসরণ ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা | উদ্বোধনঃ ২০১৪ সাল |
ই-টিকেটিং সেবা ৬টি রেলস্টেশন | (ঢাকা, বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা)। উদ্বোধন হয়েছিল ২৯/৫/২০১২ |
বাৎসরিক যাত্রী পরিবহন | ৪২,০০,০০০ জন (২০০৩ - ২০০৪ খ্রি.) |
বাৎসরিক পণ্য পরিবহন | ৩২,০৬,০০০ মেট্রিক টন (২০০৩ - ২০০৪ খ্রি.) |
বাৎসরিক রাজস্ব | ৳৪,৪৫,৬২,৪০,০০০ (২০০৪ - ২০০৫ খ্রি.) |
রেলসেতুর সংখা | ৩,৬৫০টি (২০০৪ - ২০০৫ খ্রি.)[১২] |
লেভেল ক্রসিং | ১,৬১০টি (২০০৪ - ২০০৫ খ্রি.)[১২] |
সারা দেশে চলাচলকারী ট্রেন সংখ্যা | ৩৪৭টি (আন্তঃনগর ৯০টা; মেইল এক্সপ্রেস ও ডেমু ১২০টি; লোকাল ১৩৫টি) (২০১৬ খ্রি.)[১১] |
আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী ট্রেন সংখ্যা | ৪টি (২০২২ খ্রি.)[১১] |
রোলিং স্টক
সম্পাদনালোকোমোটিভ
সম্পাদনাবর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ে ডিজেল-ইলেক্ট্রিক ও ডিজেল-হাইড্রোলিক লোকোমোটিভ পরিচালনা করে। পুরনো সকল বাষ্পীয় লোকোমোটিভ ৮০-এর দশকে বাতিল ঘোষণা করা হয়। কিছু বাষ্পীয় লোকোমোটিভ সংরক্ষণ করা হয়েছে।[১৩]
১৯৯৬-৯৭ সালে দেশে মোট ২৮৪টি লোকোমোটিভ ছিল।[৫] ২০০৫ সালের ৩০শে জুন পর্যন্ত দেশে মোট ২৫৩টি ডিজেল ইলেক্ট্রিক (৬৮টি বিজি ও ১৮৫টি এমজি) এবং ৩৩টি ডিজেল-হাইড্রোলিক (১০টি বিজি ও ২৩টি এমজি) লোকোমোটিভ ছিলো।[১৪]
কোচ ও ওয়াগন
সম্পাদনা১৯৯৬-৯৭ সালে বাংলাদেশে ১,২৪৫টি প্যাসেঞ্জার ক্যারিজ, ১৫২টি অন্যান্য কোচিং যান এবং ১২,৯৪৮টি মালবাহী ওয়াগন ছিল।[৫] ২০০৪-২০০৫ সালের শেষের দিকে দেশে মোট ১৪০৬টি যাত্রীবাহী কোচ রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ১০২৩৬টি ওয়াগন, যার মধ্যে ৭৩১০টি কাভার্ড, ১১১৫টি খোলা এবং ১৮১১টি বিশেষ শ্রেণীর ওয়াগন রয়েছে।[১৪]
মাল্টিপল ইউনিট
সম্পাদনাডিজেল-ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট (ডেমু) ট্রেন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালের ২৪শে এপ্রিল।[১৫] মোট ২০ সেট মিটার গেজ ডেমু চীনের থাংশান রেলওয়ে ভেহিকেল কোঃ লিঃ প্রস্তুত করে।[১৬] এসব ট্রেন সাধারণত ছোট ছোট রেল রুটে চলাচল করে, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের সাথে বড় বড় শহরাঞ্চলের যোগাযোগ রক্ষার লক্ষ্যে।[১৭] এছাড়াও ঢাকা মেট্রো রেলে ইলেক্ট্রিক মাল্টিপল ইউনিটের (এমু) ব্যবহার হবে।
রেলওয়ে কারখানা
সম্পাদনাযাত্রীবাহী কোচ এবং মালবাহী ওয়াগন রক্ষনাবেক্ষনের জন্য রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পাহাড়তলীতে কোচ ও ওয়াগন কারখানা, এবং পশ্চিমাঞ্চলের সৈয়দপুরে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা রয়েছে।[১৮] এছাড়া ব্রড-গেজ ও মিটার-গেজ লোকোমোটিভের জেনারেল ওভারহলিং এর জন্য পার্বতীপুর প্রধান নির্বাহীর নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা (কেলোকা) রয়েছে।[১৮] এটির একটি রেল প্রশিক্ষণ একাডেমীও রয়েছে। পাহাড়তলী, ঢাকা এবং পার্বতীপুরে ডিজেল কারখানা রয়েছে (যথাক্রমে পাহাড়তলী ডিজেল শপ, ঢাকা ডিজেল কারখানা এবং পার্বতীপুর ডিজেল কারখানা)।[১৮]
যাত্রী সেবা
সম্পাদনাবাংলাদেশ রেলওয়ে দেশের পরিবহন ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান মাধ্যম।[১৮] ২০০৩–২০০৪ সালে প্রায় ৪ কোটি ৩০ লক্ষ যাত্রী রেলে ভ্রমণ করে।[১৮] ২০০৪–২০০৫ সালে ৪ কোটি থেকে ৪ কোটি ২০ লক্ষ যাত্রী রেল সেবা গ্রহণ করে।[৭][১৮] ২০১৩–২০১৪ অর্থবছরে রেলপথে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি যাত্রী ভ্রমণ করে (৮১.৩৫ লক্ষ যাত্রী প্রতি কিমি)।[৭]
১৯৮৫ সালে দেশে আন্তঃনগর রেল সেবা চালু হয়।[১৮] ২০০৮ সালে মোট রেল যাত্রীর প্রায় ৩৮.৫% আন্তঃনগর ট্রেনের মাধ্যমে যাত্রা করে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট আয়ের প্রায় ৭৩.৩% এসেছে আন্তঃনগর রেল সেবা থেকে।[১৮] ২০১৬ সালে দেশে মোট ৩৪৭টি যাত্রীবাহী ট্রেন পরিচালিত হয়, যার মধ্যে আন্তঃনগর ৯০টি; মেইল, এক্সপ্রেস ও ডেমু ১২০টি এবং লোকাল ১৩৫টি। ২০২০ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়ে মোট ১০৪টি আন্তঃনগর (আপ ও ডাউন), ৫২টি মেইল/এক্সপ্রেস, ৬৪টি কমিউটার (ডেমু) ও ১৩৫টি শাটল/লোকাল ট্রেন পরিচালনা করে।
ভাড়া এবং টিকেট
সম্পাদনাবাংলাদেশ রেলওয়ের ভাড়া অপেক্ষাকৃতভাবে বাসের ভাড়ার চেয়ে কম। পুরো বাংলাদেশের সব স্টেশনেই টিকেটিং সেবা চালু আছে। সেই সাথে কিছু নির্দিষ্ট অতি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে চালু আছে ই-টিকেটিং। যার মাধ্যমে অনলাইনে বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টিকেট বুকিং এবং ক্রয় করা সম্ভব। বহু স্টেশনের টিকেটিং ব্যবস্থা কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এবং তা একটি কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত। টিকেট ক্রয়ের পর যাত্রীদেরকে মুদ্রিত টিকেট প্রদান করা হয়। যাত্রার সর্বোচ্চ দশ দিন পূর্বে টিকেট ক্রয় করা সম্ভব। যাত্রা সময়ের ৪৮ ঘণ্টা পূর্বে পর্যন্ত টিকেটের ১০০% (ক্লারিকেল চার্জ ছাড়া) মূল্য ফেরত পাওয়া সম্ভব।
শ্রেণীসমূহ
সম্পাদনাবাংলাদেশ রেলওয়েতে মূলত তিন ধরনের শ্রেনী চালু রয়েছে: তাপানুকুল শ্রেণী, প্রথম শ্রেণী এবং দ্বিতীয় শ্রেনী। বাংলাদেশ রেলওয়েতে তৃতীয় শ্রেনীও চালু ছিল, ১৯৮৯ সালের ১ আগস্ট থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাপানুকুল শ্রেণীতে তিনটি উপশ্রেণী রয়েছে: তাপানুকুল বার্থ, তাপানুকুল সিট এবং তাপানুকুল চেয়ার। প্রথম শ্রেণীতেও তাপানুকুলের মত তিনটি উপশ্রেণী রয়েছে: প্রথম বার্থ, প্রথম সিট এবং প্রথম চেয়ার। দ্বিতীয় শ্রেণীতেও তিনটি উপশ্রেণী রয়েছে: শোভন চেয়ার, শোভন এবং সুলভ। অধিকাংশ ট্রেনেই প্রথম শ্রেণী এবং দ্বিতীয় শ্রেণী সেবা রয়েছে। কিছু ট্রেনে আলাদা মেইল কমপার্টমেন্ট রয়েছে। আন্তঃনগর এবং দীর্ঘ দূরত্বের ট্রেনে খাবারগাড়ী ও পাওয়ার কার সংযুক্ত থাকে।
বহু আন্তঃনগর ট্রেন আংশিকভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং বার্থ যুক্ত। এবং ট্রেনগুলোতে যাত্রীদের প্রয়োজনীয় চাদর, বালিশ, কম্বল এবং খাদ্যও সরবরাহ করা হয়।
শ্রেণী | উপশ্রেণী | বিবরণ |
---|---|---|
তাপানুকুল (এসি) | তাপানুকুল বার্থ | এটি সবচেয়ে মূল্যবান শ্রেণী। এর কম্পার্টমেন্টগুলো সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এবং এতে ঘুমানোর স্থান রয়েছে। কম্পার্টমেন্টগুলোকে একাধিক কেবিনে ভাগ করা আছে এবং প্রতি কেবিনে মোট চারজনের ঘুমানোর স্থান রয়েছে। |
তাপানুকুল সিট | তাপানুকুল বার্থের মত এর কম্পার্টমেন্টগুলোও একাধিক কেবিনে বিভক্ত। প্রতি কেবিনে মোট আটজনের বসার স্থান রয়েছে। তাপানুকুল বার্থ এবং তাপানুকুল সিটের সেবা একই, শুধুমাত্র এতে ঘুমানোর পরিবর্তে বসার স্থান রয়েছে। | |
তাপানুকুল চেয়ার | এই কম্পার্টমেন্টগুলো তাপানুকুল চেয়ারকার বা স্নিগ্ধা হিসেবেও পরিচিত। কম্পার্টমেন্টগুলোতে কোন কেবিন নেই। তার পরিবর্তে রয়েছে চেয়ার, যেগুলো সুবিধামত হেলানো সম্ভব। ব্রডগেজ ট্রেনে এক সারিতে পাঁচটি এবং মিটারগেজ ট্রেনে এক সারিতে চারটি চেয়ার থাকে। | |
প্রথম শ্রেণী | প্রথম বার্থ | তাপানুকুল বার্থের মতই, শুধু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। |
প্রথম সিট | তাপানুকুল সিটের মতই, শুধু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। | |
প্রথম চেয়ার | তাপানুকাল চেয়ারের মতই, শুধু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় এবং চেয়ার হেলানো যায় না। | |
দ্বিতীয় শ্রেণী | শোভন চেয়ার | দ্বিতীয় শ্রেণীর শোভন চেয়ার মূলত এক ধরনের সিটার কোচ, যা প্রধানত মধ্যবিত্ত যাত্রীদের জন্য। তাপানুকুল চেয়ার এবং প্রথম চেয়ারের মত ব্রডগেজ ট্রেনে প্রতি সারিতে পাঁচটি এবং মিটারগেজ ট্রেনে চারটি চেয়ার রয়েছে। এই চেয়ারগুলো সুবিধামত হেলানো সম্ভব। |
শোভন | সবচেয়ে সস্তা শ্রেণীগুলোর অন্যতম। এর আসনগুলো তেমন আরামদায়ক নয়। | |
সুলভ | সবচেয়ে সস্তা শ্রেণী। এর আসনগুলো চাপানো কাঠ অথবা স্টিল দিয়ে তৈরি। শুধুমাত্র উপ-শহরীয় এবং স্বল্প দূরত্বের ট্রেনে এই শ্রেণী বিদ্যমান। কম্পার্টমেন্টে যাত্রার জন্য প্রবেশ নিশ্চিত হলেও, বসার আসন পাওয়া অনিশ্চিত। এই কম্পার্টমেন্টগুলো অধিকাংশ সময়ই জনাকীর্ণ থাকে। |
উচ্চ-গতির রেল
সম্পাদনাবাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সাথে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মধ্যে একটি উচ্চ-গতির রেলপথ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়,[১৯] যা হবে দেশের সর্বপ্রথম উচ্চ-গতির রেলপথ। নির্মিত রেলপথে ২০০ কিমি/ঘণ্টায় সর্বাধিক গতিতে উচ্চ-গতির ট্রেন চালানো হবে, যেখানে বাংলাদেশের বর্তমান আন্তঃনগর ট্রেনের গতি ৭০ কিমি/ঘণ্টা।[১৯] পরিকল্পনা অনুসারে, এই উচ্চগতির রেল লাইনটি টঙ্গী-ভৈরবের পরিবর্তে নারায়ণগঞ্জে হয়ে যাবে।[১৯] বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের দৈর্ঘ্য ৩২০ কিমি, যা টঙ্গী, নরসিংদী ভৈরব, আখাউড়া, কুমিল্লা ও ফেনী হয়ে যায়।[১৯] তবে প্রস্তাবিত ঢাকা-চট্টগ্রাম উচ্চ-গতির রেলপথের দৈর্ঘ্য ২৩০ কিমি,[১৯] যা পূর্বের রেলপথের চেয়ে ৯১ কিমি কম।[২০] ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে উচ্চ-গতির ট্রেন চালু হওয়ার পর দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি যাত্রী প্রতিদিন ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচল করতে পারবে।[১৯][২১]
পণ্যবাহী সেবা
সম্পাদনাবাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম বন্দর হতে ঢাকা ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডেপট পর্যন্ত কন্টেইনার পরিবহন করে, যেখানে কাস্টম সুবিধা রয়েছে।[৭][২২] ১৯৯১ সালের ৫ই আগস্ট একটি আলাদা কন্টেইনার ট্রেন সেবা চালু হয়।[১৮] একটি মালবাহী ট্রেন ভারতের সিঙ্ঘাবাদ ও পেট্রপোল থেকে বাংলাদেশের বেনাপোল ও রোহানপুর পর্যন্ত চলাচল করে।[২৩] ২০০৩–২০০৪ সালে ৩,৪৭৩ হাজার মেট্রিক টন এবং ২০০৪–২০০৫ সালে ৩,২০৬ হাজার মেট্রিক টন পন্য রেলে পরিবাহিত হয়।[১৮] ২০১৪ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে মোট ২৫.২ লাখ টন পণ্য পরিবহন করে (প্রতি কিলোমিটারে ৬৭.৬ কোটি টন)।
রেলওয়ে স্টেশন
সম্পাদনা২০০৪–২০০৫ সালের শেষে বাংলাদেশে মোট ৪৫৪টি রেলওয়ে স্টেশন ছিল, যার মধ্যে একটি ব্লক হাট, ১৩টি ট্রেন হল্ট ও ৪টি মালপত্র বুকিং পয়েন্ট রয়েছে।[১২] ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট ৪৮৯টি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ঢাকাতে অবস্থিত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন হচ্ছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় রেলওয়ে স্টেশন। ২০১৬ সালের হিসাবে বাংলাদেশে মোট ৪৫৮টি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ২০২১ সালের হিসাবে বাংলাদেশে মোট রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে ৪৯৩টি।
২০২৩-২০২৪ সালে পদ্মা সেতু এবং কক্সবাজার রুটে আরো কিছু নতুন স্টেশন যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজার রুটে কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন সহ নতুন ৮ টি স্টেশন যুক্ত হয়েছে। এবং পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলায় বেশ কিছু নতুন রেলস্টেশন যুক্ত হচ্ছে।
লেভেল ক্রসিং
সম্পাদনা২০০৪–২০০৫ সালের শেষে বাংলাদেশে ১,৬১০টি লেভেল ক্রসিং ছিল।[১২] ২০২০ সালের হিসাবে দেশে মোট লেভেল ক্রসিং ২,৮৫৬টি, যার মধ্যে ১,৪৯৫টি বৈধ এবং ১,৩৬১টি অনুমোদনহীন।[২৪] ক্রসিংগুলোর (বৈধ-অবৈধ) প্রায় ৮৪% অরক্ষিত।[২৪] পূর্বাঞ্চল রেলে মোট ১,৩৭৭টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে, যার মধ্যে ৮১১টি অবৈধ।[২৪] পশ্চিমাঞ্চলে মোট ১,৪৭৯টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে, যার মধ্যে ৫৫০টি অবৈধ।[২৪]
রেলওয়ে সেতু
সম্পাদনা২০০৪–২০০৫ সালে দেশে ৩,৬৫০টি রেলওয়ে সেতু ছিল, যার মধ্যে ৫৪৬টি প্রধান ও ৩,১০৪টি অপ্রধান।[১২][২৫] অধিকাংশ রেলওয়ে সেতু ১০০ বছরেরও অধিক পূর্বে নির্মিত, এবং তারা এখনও চলছে।[২৫] অধিকাংশ সেতুতে অনুমোদিত গতিবেগ ৩০–৫০ কিমি/ঘণ্টায় সীমিত।[২৫] গুরুত্বপূর্ণ নগর ও জেলা শহরে ফুট-ওভার ব্রিজ দেওয়া হয়।[১২]
২০২০ সাল অব্দি, বঙ্গবন্ধু (যমুনা) সেতু দেশের দীর্ঘতম সড়ক–রেল (মিশ্র) সেতু, যার দৈর্ঘ্য ৪.৮ কিমি।[২৫] শুধু রেলওয়ে সেতুর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ হচ্ছে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, যা ১.৮ কিমি দীর্ঘ।[২৫] প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু (যমুনা) রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে এটি হবে দেশটির সবচেয়ে দীর্ঘ রেলওয়ে সেতু, যা দৈর্ঘ্যে বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রায় সমান।[২৬]
আন্তর্জাতিক যোগাযোগ
সম্পাদনা১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের আগ পর্যন্ত ভারতের সাথে বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) বেনাপোল ও দর্শনা এই দুই যাত্রাপথে রেল যোগাযোগ ছিল। দীর্ঘ সময় পর ২০০৮ সালের ১৪ই এপ্রিল ঢাকা থেকে ভারত-এর কলকাতা শহর পর্যন্ত মৈত্রী এক্সপ্রেস নামক ট্রেনের মাধ্যমে সরাসরি রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপিত হয়।[২৭] এই ট্রেন গেদে-দর্শনা রুটের মাধ্যমে ভারতের কলকাতা রেলওয়ে স্টেশনের সাথে বাংলাদেশের ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করে। ২০১৭ সালের ৯ নভেম্বর বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয় যা খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করে।[২৮][২৯][৩০][৩১] ২০২১ সালের ২৬ শে মার্চ থেকে মিতালী এক্সপ্রেস নামে নতুন একটি ট্রেন ঢাকা-শিলিগুড়ি রুটে চলবে।[৩২] এছাড়াও বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রেন দুদেশে মধ্যে চলাচল করে।
২০২০ সাল অব্দি মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের কোনো রেল যোগাযোগ নেই। ২০১০ সালে মিয়ানমারের সাথে রেল সংযোগের জন্য দোহাজারী–রামু–গুন্দুম রুটে দ্বৈত-গেজ সিঙ্গেল-ট্র্যাক রেলপথ নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়।[৩৩] এটি বাংলাদেশকে ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সাথেও যুক্ত করবে।[৩৩][৩৪] ভারতের হলদিবাড়ি ও বাংলাদেশের নীলফামারীর চিলাহাটির মধ্যে বন্ধ থাকা রেল পরিষেবা দীর্ঘ ৫৫ বছর প্রতীক্ষার পর শুরু হয়েছে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে [৩৫]
দুর্ঘটনা
সম্পাদনাবাংলাদেশ রেলওয়ের একটি বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ধারণা করা হয় যে বাংলাদেশে ঘটা রেল দুর্ঘটনার ৭২% মানব-ত্রুটিজনিত, ২৩% যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত এবং বাকি ৫% অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং এবং যানবাহন চালক ও পথচারীদের অসতর্কতার সহিত রেল ক্রসিং পারাপারের কারণে ঘটে। মানব-ত্রুটিসমূহের মধ্যে রয়েছে লোকোমাস্টার, স্টেশনমাস্টার ও পরিচালকের ত্রুটি বা অবহেলা এবং বেপরোয়াভাবে ট্রেন চালানো। যান্ত্রিক ত্রুটি ঘটে লোকোমোটিভের ত্রুটি, ত্রুটিযুক্ত ট্র্যাক ও সিগন্যাল পদ্ধতির কারণে।[৩৬] ২০০৮–২০১৯ সালে লেভেল ক্রসিংগুলোয় ৩১০টি দুর্ঘটনায় ২৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে।[২৪] ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৯টি দুর্ঘটনায় ১৩ জন মারা গেছেন।[২৪]
বাংলাদেশে বহু প্রধান রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে যাতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ১৯৭২ সালের ৪ঠা জুন যশোর জেলায় স্টেশনে দাঁড়ানো একটি মালবাহী ট্রেনের সাথে খুলনা থেকে আসা একটি জনাকীর্ণ যাত্রীবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ ঘটে। এতে ৭৬ জন নিহত ও ৫০০ জন আহত হন।[৩৭][৩৮] সাত বছর পর, ১৯৭৯ সালের ২৬শে জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গাতে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে উল্টে যায়, ফলে ৭০ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হন।[৩৯] ১৯৮৯ সালের ১৫ই জানুয়ারি গাজীপুর জেলায় একটি উত্তরগামী মেইল ট্রেনের সাথে একটি চট্টগ্রামগামী এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে উভয় ট্রেনে মোট ২০০০ এরও অধিক যাত্রী ছিল, যাদের অনেকেই ছাদে বা কোচের মধ্যবর্তী স্থানে ভ্রমণ করছিল। এই দুর্ঘটনায় অন্তত ১৭০ জন নিহত ও ৪০০ জন আহত হন।[৪০]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "বাংলাদেশ রেলওয়ে-গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার"। বাংলাদেশ রেলওয়ে। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- ↑ ক খ "এক টাকা আয় করতে রেলের ব্যয় ৬ টাকা"। www.jugantor.com। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত "Railway Reform Progress Report" (PDF)। Adb.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-০৭।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ "Bangladesh Railway" [বাংলাদেশ রেলওয়ে] (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-১২-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৭।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ "বাংলাদেশ রেলওয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"। বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২০২০-০৩-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৭।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "RAILWAY REFORM PROGRESS REPORT" (পিডিএফ)। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৫।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"। রেলপথ মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)। ২০২০-০৯-০১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৭।
- ↑ "History"। বাংলাদেশ রেলওয়ে। ১৫ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ "Railway Stations" [রেলওয়ে স্টেশনসমূহ]। web.archive.org (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১২-০৫-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৭।
- ↑ ক খ গ http://www.railway.gov.bd
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "Track, Bridges and Stations" [ট্র্যাক, সেতু এবং স্টেশন]। web.archive.org (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-১২-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৭।
- ↑ "Preserved Steam Locomotives in Bangladesh"। www.internationalsteam.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-১৬।
- ↑ ক খ "Archived copy"। ৩০ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-১১।
- ↑ প্রতিবেদক, জ্যেষ্ঠ; ডটকম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "চীনা ডেমু ট্রেন আর কিনবে না সরকার"। bangla.bdnews24.com। ২০২০-১২-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৪।
- ↑ "PM opposes import of DEMU train"। New Age | The Most Popular Outspoken English Daily in Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৪।
- ↑ "বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রীবাহী ট্রেন | Bangladesh Railway-Government of the People of Republic Bangladesh | বাংলাদেশ রেলওয়ে-গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার"। web.archive.org। ২০১৬-০৩-২৪। Archived from the original on ২০১৬-০৩-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-০১।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ "Passenger And Freight Traffic" (ইংরেজি ভাষায়)। বাংলাদেশ রেলওয়ে। ৭ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "High-speed train planned for Dhaka-Chittagong route" [ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের জন্য উচ্চ-গতির ট্রেন পরিকল্পিত]। ঢাকা ট্রিবিউন (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৭-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৮।
- ↑ "দেড় ঘণ্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সমীক্ষার চুক্তি সই"।
- ↑ "Dhaka-Chittagong high speed trains to ferry 50,000 passengers daily" [ঢাকা-চট্টগ্রাম উচ্চ গতির ট্রেন দৈনিক ৫০,০০০ যাত্রী বহন করবে]। নিউ এজ (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৭-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৮।
- ↑ "Facilities of CPA | Chittagong Port Authority"। web.archive.org। ২০১৫-০৫-১২। Archived from the original on ২০১৫-০৫-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৪।
- ↑ TwoCircles.net। "India approves new railway link with Bangladesh – TwoCircles.net" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-২৪।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "রেলওয়ের ৮৪ শতাংশ লেভেল ক্রসিং অরক্ষিত"। দৈনিক যুগান্তর। ২০২০-১১-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৬।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "ANALYSIS OF PROBLEMS" [সমস্যার বিশ্লেষণ] (পিডিএফ)। বাংলাদেশ রেলওয়ে (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৭।
- ↑ "যমুনায় দ্বিতীয় রেল সেতুর কাজ শুরু নভেম্বরে, ব্যয় বাড়লো দ্বিগুণ"। বাংলা ট্রিবিউন। ২০২০-১০-১৯। ২০২০-১১-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৩।
- ↑ 2007-08-05T08:49:00+01:00। "Bangladesh - India order reopens"। Railway Gazette International (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-০২।
- ↑ "Bangladesh – India border reopens"। Railway Gazette International। ৫ আগস্ট ২০০৭।
- ↑ "Archived copy"। ১৮ মে ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৯-০২।
- ↑ ":The Daily Star: Internet Edition"। ২০১১-০৫-১৮। ২০১১-০৫-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-০২।
- ↑ "Prime Minister of India & Prime Minister of Bangladesh Jointly along with Chief Minister, West Bengal Flag off New Cross-Border Train between India & Bangladesh, "Kolkata-Khulna Bandhan Express" from Kolkata through Video Confencing"। pib.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-০২।
- ↑ ১০-কোচ-নিয়ে-ছুটবে-মিতালী-এক্সপ্রেস "১০ কোচ নিয়ে ছুটবে সম্প্রীতি এক্সপ্রেস"
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। the Daily star। ১০ মার্চ ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০২১। - ↑ ক খ "Bangladesh-Myanmar railway project goes slow" [বাংলাদেশ-মিয়ানমার রেল প্রকল্প ধীর হয়ে যায়]। নিউ এজ (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-০৮-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৪।
- ↑ "Bangladesh-Myanmar rail connectivity" [বাংলাদেশ-মিয়ানমার রেল সংযোগ]। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৪-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৪।
- ↑ অর্ধ শতাব্দী পর চালু হল হলদিবাড়ি-চিলাহাটি ট্রেন, অনলাইন বাংলা নিউজ, ১৭ ডিসেম্বর ২০২০
- ↑ "Human error behind 72% rail accidents in Bangladesh" [বাংলাদেশে ৭২% রেল দুর্ঘটনার পেছনে মানুষের ত্রুটি]। ঢাকা ট্রিবিউন (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-১১-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১২।
- ↑ Semmens 1994, পৃ. 182।
- ↑ "June 4, 1972—Trains collide in Bangladesh"। History Canada। ২০১৭-০৬-০৪। মার্চ ২৫, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-২৩।
- ↑ Semmens 1994, পৃ. 206।
- ↑ Semmens 1994, পৃ. 222।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- উইকিমিডিয়া কমন্সে Bangladesh Railway সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
- বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
- বাংলাপিডিয়ায় বাংলাদেশ রেলওয়ে