বাংলাদেশের জেলা
জেলা বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর। কয়েকটি উপজেলা নিয়ে একটি জেলা গঠিত হয়। প্রশাসনিকভাবে একটি জেলা একটি বিভাগের অধিক্ষেত্রভুক্ত।
বর্তমানে বাংলাদেশের বিভাগ ৮টি: ১. ঢাকা বিভাগ, ২. চট্টগ্রাম বিভাগ ৩. রাজশাহী বিভাগ, ৪. রংপুর বিভাগ, ৫. বরিশাল বিভাগ, ৬. সিলেট বিভাগ, ৭. খুলনা বিভাগ, ও ৮. ময়মনসিংহ বিভাগ। বিভাগগুলোর অন্তর্গত ৬৪টি জেলা রয়েছে। এছাড়া প্রস্তাবিত নতুন দুইটি বিভাগ রয়েছে। এগুলো হলো ফরিদপুর বিভাগ[১] এবং মেঘনা বিভাগ[২]। ১৯৭১-এ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকালে জেলার সংখ্যা ছিল ১৯ টি। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ মহকুমাগুলোকে জেলায় উন্নীতকরণের প্রক্রিয়া চালু করেন।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠালগ্নে পূর্ব পাকিস্তান তথা বর্তমান বাংলাদেশের জেলার সংখ্যা ছিল ১৭ টি। ১৯৬৯-এ ময়মনসিংহ জেলার টাঙ্গাইল মহকুমা ও বরিশাল জেলার পটুয়াখালী মহুকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ১৯৭৮ সালে ময়মনসিংহের জামালপুর মহুকুমাকে একটি জেলায় উন্নীত করা হয়।[৩]
শ্রেণিবিভাগ
সম্পাদনাবাংলাদেশ সরকার জেলা সমূহকে গুরুত্ব ও উপজেলার সংখ্যার ভিত্তিতে ৪টি শ্রেণিতে ভাগ করে। শ্রেণিগুলো হলো 'বিশেষ', 'এ', 'বি' ও 'সি'। বর্তমানে ৬৪টি জেলার মধ্যে ‘বিশেষ’ শ্রেণিতে ৬টি, ‘এ’ শ্রেণিতে ২৬টি, ‘বি’ শ্রেণিতে ২৬টি এবং ‘সি’ শ্রেণিতে ৬টি জেলা রয়েছে।
৮ বা এর বেশি উপজেলা নিয়ে গঠিত জেলাকে ‘এ’, ৫ থেকে ৭টি উপজেলা নিয়ে গঠিত জেলাকে ‘বি’ এবং পাঁচটির কম উপজেলা নিয়ে গঠিত জেলাকে ‘সি’ শ্রেণির জেলার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। অবস্থানগত কারণে বেশি গুরুত্বপূর্ণ জেলাকে ‘বিশেষ ক্যাটাগরি’র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গুরুত্ব বিবেচনায় ‘বিশেষ ক্যাটাগরি’তে ছয়টি জেলা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ময়মনসিংহ, খুলনা, ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী। এছাড়াও ‘এ’ শ্রেণিতে ২৬টি, ‘বি’ শ্রেণিতে ২৭টি ও ‘সি’ শ্রেণিতে ৫টি জেলা রয়েছে।
ঢাকা বিভাগে ‘এ’ শ্রেণির ৩টি, ‘বি’ শ্রেণির ৭টি ও ‘সি’ শ্রেণির ১টি জেলা রয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে ৭টি ‘এ’ শ্রেণি, ৩টি ‘বি’ শ্রেণির জেলা রয়েছে। রাজশাহী বিভাগে ৪টি ‘এ’ শ্রেণি ও ৩টি ‘বি’ শ্রেণির জেলা রয়েছে। রংপুর বিভাগে ‘এ’ শ্রেণির জেলা ৩টি, ‘বি’ শ্রেণির জেলা রয়েছে ৫টি। খুলনা বিভাগে এ শ্রেণির জেলা রয়েছে ২টি, ‘বি’ শ্রেণির জেলা রয়েছে ৪টি জেলা এবং ‘সি শ্রেণির রয়েছে ৩টি জেলা। বরিশাল বিভাগে ‘এ’ শ্রেণির জেলা ২টি, ‘বি’ শ্রেণির জেলা ৩টি এবং ‘সি’ শ্রেণির জেলা ১টি। ময়মনসিংহ বিভাগে ‘এ’ শ্রেণির জেলা ১টি, বি শ্রেণির জেলা ২টি। সিলেট বিভাগের চারটি জেলায়ই ‘এ’ শ্রেণির।
শ্রেণি অনুযায়ী সরকার জেলার সরকারি দফতরগুলোতে জনবল নিয়োগ, উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ত্রাণ বরাদ্দও করে। নতুন কিছু উপজেলা সৃষ্টি হওয়ায় অনেক জেলারই শ্রেণি পরিবর্তন হওয়ায় সেগুলোকে একত্রিত করে নতুন শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে।[৪]
জেলা পরিষদ
সম্পাদনাএকজন চেয়ারম্যান, পনেরো জন সদস্য ও পাঁচ জন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠিত হয়, যারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন।[৫]
জেলার প্রধান
সম্পাদনাবাংলাদেশের জেলার বিচার বিভাগের প্রধান। জেলার প্রধান বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা, জেলার দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতের কর্ণধার এবং জাস্টিস অব পিস বা শান্তি রক্ষাকারী বিচারপতি। তিনি জেলাতে একমাত্র গ্রেড-১ অফিসার।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাংলাদেশের জেলার প্রধান ম্যাজিস্ট্রেট। তিনি একাধারে জেলার ম্যাজিস্ট্রেটদের অধিকর্তা, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের কর্ণধার, জেলা ম্যাজিস্ট্রেসির প্রধান এবং জাস্টিস অব পিস বা শান্তি রক্ষাকারী বিচারপতি হিসেবে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখার নিমিত্তে ত্বরিত সিদ্ধান্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দায়িত্ব ও ক্ষমতাপ্রাপ্ত।[৬] জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, সর্বত্র শান্তি রক্ষা করা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তার দায়িত্ব। ফৌজদারি কার্যবিধির বিধান মোতাবেক প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেলার পুলিশ, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও বিভাগগুলো ক্ষমতার অপব্যবহার করছে কিনা বা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে কিনা তা দেখভাল করেন। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জেলাতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির সাথে যোগাযোগের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাংলাদেশের জেলার দ্বিতীয় প্রধান কোর অফিসার বা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কর্মকর্তা। বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদমর্যাদা ১৭ নং ক্রমিকে অবস্থিত।[৭][৮]
জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার ডিভিশন ভিত্তিক সেনানিবাসের প্রধান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা জিওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশে ঢাকা, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, যশোর,পটুয়াখালী, বগুড়া, রংপুর, সিলেট ইত্যাদি জেলাতে ডিভিশন ভিত্তিক সেনানিবাস রয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, যে সেনানিবাসে একটি ডিভিশন আছে সেই সেনানিবাসের প্রধান থাকেন একজন মেজর জেনারেল পদমর্যাদার অফিসার। আর যেই সেনানিবাসে একটি ব্রিগেড বা লগ এরিয়া রয়েছে সেই সেনানিবাসের প্রধান থাকেন একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অথবা কর্নেল পদের অফিসার। অন্যদিকে, যেই সেনানিবাসে মাত্র একটি ইউনিট থাকে সেই সেনানিবাসের প্রধান থাকেন একজন লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদের অফিসার। বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী মেজর জেনারেলের পদমর্যাদা ১৬, ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের পদক্রম ২১, কর্নেলের পদক্রম ২২ এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেলের পদক্রম ২৪।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জেলা পরিষদের প্রশাসনিক প্রধান। তার নেতৃত্বে ১৫ জন সদস্য ও ৫ জন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠিত হয়, যারা জেলার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন।[৫] বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদক্রম ২৪।
জেলা প্রশাসক জেলার মুখ্য আমলা ও ভূমিরাজস্ব কর্মকর্তা। তিনি একই সাথে জেলা কালেক্টর, ডেপুটি কমিশনার ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। ফলে তিনি ভূমি ব্যবস্থা পরিচালনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমন্বয় সাধন এবং সাধারণ ও স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে কাজ করেন। জেলা প্রশাসক মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের একজন প্রতিনিধি। তিনি তার কাজের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট জবাবদিহি করেন। তিনি জেলার মুখ্য প্রটোকল অফিসার হিসেবে জেলাতে সফরকারী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের প্রটোকল দেবার দায়িত্ব পালন করেন। অর্ডার অব প্রিসিডেন্স অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের পদক্রম ২৪।
পুলিশ সুপার জেলার পুলিশ বাহিনীকে নেতৃত্ব দেন। তিনি থানায় দায়েরকৃত মামলার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক নির্ধারিত আমলী আদালতের অধিক্ষেত্রের প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের ব্যবস্থা করেন। পুলিশ সুপার অপরাধ প্রতিরোধ, উদঘাটন এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে সচেষ্ট থাকেন। তিনি আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ওয়ারেন্ট, সমন, তদন্তের আদেশ ইত্যাদি তামিল ও বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আদালত কর্তৃক সুষ্ঠু বিচারকার্য সম্পাদনার স্বার্থে তিনি প্রসিকিউশন বিভাগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদালতের সাথে সমন্বয় ও সম্পর্ক রক্ষা করেন। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে পুলিশ সুপারের পদক্রম ২৫।
পদমর্যাদা
সম্পাদনাবাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী সিনিয়র পদক্রম ১৫, মেজর জেনারেলের পদক্রম ১৬, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদক্রম ১৭, অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদক্রম ২১, কর্নেলের পদক্রম ২২, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদক্রম ২৩, জেলা প্রশাসক (ডিসি)/লেফটেন্যান্ট কর্নেলের পদক্রম ২৪ এবং পুলিশ সুপার (এসপি) এবং মেজরের পদক্রম ২৫ নম্বরে অবস্থিত।[৯][১০][১১]
জেলার তালিকা
সম্পাদনাবিভাগীয় জেলাসমুহ
সম্পাদনাজেলার নাম | বিভাগ | সৃষ্টিক্রম |
---|---|---|
চট্টগ্রাম জেলা | চট্টগ্রাম বিভাগ | ১৬৬৬ |
ঢাকা জেলা | ঢাকা বিভাগ | ১৭৭২ |
রাজশাহী জেলা | রাজশাহী বিভাগ | ১৭৭২ |
রংপুর জেলা | রংপুর বিভাগ | ১৭৭২ |
বরিশাল জেলা | বরিশাল বিভাগ | ১৭৯৭ |
সিলেট জেলা | সিলেট বিভাগ | ১৭৮৬ |
ফরিদপুর জেলা | ফরিদপুর বিভাগ | ১৭৮৬ |
খুলনা জেলা | খুলনা বিভাগ | ১৮৮২ |
ময়মনসিংহ জেলা | ময়মনসিংহ বিভাগ | ১৭৮৭ |
সৃষ্টির সময়রেখা
সম্পাদনা{{columns-list|colwidth=40em|
- ১৬৬৬
- ১৭৬৯
- ১৭৭২
- ১৭৮১
- ১৭৮৬
- ১৭৮৭
- ১৭৯০
- ১৭৯৭
- ১৮২১
- ১৮৩২
- ১৮৬০
- ১৮৮২
- ১৯৪৭
- অবিভক্ত নদীয়া জেলা থেকে দেশ ভাগের কারণে কুষ্টিয়া জেলা সৃষ্টি
- ১৯৭১
- ঢাকা বিভাগ: ঢাকা জেলা, ফরিদপুর জেলা, ময়মনসিংহ জেলা
- চট্টগ্রাম বিভাগ: পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা, চট্টগ্রাম জেলা, কুমিল্লা জেলা, নোয়াখালী জেলা, সিলেট জেলা
- রাজশাহী বিভাগ: বগুড়া জেলা, দিনাজপুর জেলা, রাজশাহী জেলা, রংপুর জেলা, পাবনা জেলা
- খুলনা বিভাগ: বরিশাল জেলা, যশোর জেলা, খুলনা জেলা, কুষ্টিয়া জেলা
- ১৯৮৪
- ঢাকা জেলা থেকে মানিকগঞ্জ জেলা, মুন্সিগঞ্জ জেলা, নারায়ণগঞ্জ জেলা, গাজীপুর জেলা, নরসিংদী জেলা সৃষ্টি
- রাজশাহী জেলা থেকে নাটোর জেলা, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা, নওগাঁ জেলা সৃষ্টি
- যশোর জেলা থেকে নড়াইল জেলা, ঝিনাইদহ জেলা, মাগুরা জেলা সৃষ্টি
- কুষ্টিয়া জেলা থেকে মেহেরপুর জেলা, চুয়াডাঙ্গা জেলা সৃষ্টি
- ফরিদপুর জেলা থেকে রাজবাড়ী জেলা, গোপালগঞ্জ জেলা, মাদারীপুর জেলা, শরিয়তপুর জেলা সৃষ্টি
- খুলনা জেলা থেকে সাতক্ষীরা জেলা, বাগেরহাট জেলা সৃষ্টি
- চট্টগ্রাম জেলা থেকে কক্সবাজার জেলা সৃষ্টি
- বরিশাল জেলা থেকে পটুয়াখালী জেলা, পিরোজপুর জেলা, বরগুনা জেলা, ঝালকাঠি জেলা, ভোলা জেলা সৃষ্টি
- রংপুর জেলা থেকে কুড়িগ্রাম জেলা, লালমনিরহাট জেলা, গাইবান্ধা জেলা সৃষ্টি
- দিনাজপুর জেলা থেকে ঠাকুরগাঁও জেলা, পঞ্চগড় জেলা সৃষ্টি
- বগুড়া জেলা থেকে জয়পুরহাট জেলা সৃষ্টি
- পাবনা জেলা থেকে সিরাজগঞ্জ জেলা সৃষ্টি
- পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে রাঙামাটি জেলা, খাগড়াছড়ি জেলা, বান্দরবান জেলা সৃষ্টি
- সিলেট জেলা থেকে সুনামগঞ্জ জেলা, হবিগঞ্জ জেলা, মৌলভীবাজার জেলা সৃষ্টি
- কুমিল্লা জেলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, চাঁদপুর জেলা সৃষ্টি
- নোয়াখালী জেলা থেকে লক্ষ্মীপুর জেলা, ফেনী জেলা সৃষ্টি
- ময়মনসিংহ জেলা থেকে শেরপুর জেলা, নেত্রকোণা জেলা, টাঙ্গাইল জেলা, কিশোরগঞ্জ জেলা সৃষ্টি
বৃহত্তর জেলা
সম্পাদনাবৃহত্তর জেলা হল ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর বর্তমান বাংলাদেশের ভূখণ্ডে যেসকল জেলা বিদ্যমান ছিল সেগুলো বৃহত্তর জেলা হিসেবে পরিচিত। বৃহত্তর জেলা ১৭ টি; দেশ ভাগের পূর্বে পূর্ববঙ্গে ১৫ টি জেলা ছিল। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় নদীয়া জেলা থেকে বৃহত্তর কুষ্টিয়াকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফলে জেলার সংখ্যা হয় ১৬ টি। পরবর্তীতে গণভোটের মাধ্যমে বৃহত্তর সিলেট পাকিস্তানে যোগদান করলে জেলা হয় ১৭ টি।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে জেলা ছিল ১৯ টি; পাকিস্তান শাসনামলে ১৯৬৯ সালে টাঙ্গাইল ও পটুয়াখালী জেলার সৃষ্টি হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম নবগঠিত জেলা জামালপুর; ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশের ২০তম জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসের দ্বারা ৬৪ টি জেলা গঠন করা হয় ১৯৮৪ সালে; এরশাদ সরকারের সময়।
বৃহত্তর জেলাগুলোর তালিকা :
১. বৃহত্তর দিনাজপুর: দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়।
২. বৃহত্তর রংপুর: রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও গাইবান্ধা।
৩. বৃহত্তর বগুড়া: বগুড়া ও জয়পুরহাট।
৪. বৃহত্তর রাজশাহী: রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
৫. বৃহত্তর পাবনা: পাবনা ও সিরাজগঞ্জ।
৬. বৃহত্তর কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর।
৭. বৃহত্তর ফরিদপুর: ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর।
৮. বৃহত্তর যশোর: যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল।
৯. বৃহত্তর খুলনা: খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা।
১০. বৃহত্তর বরিশাল: বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও ভোলা।
১১. বৃহত্তর ঢাকা: ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও নরসিংদী।
১২. বৃহত্তর ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর,টাঙ্গাইল, জামালপুর ও কিশোরগঞ্জ।
১৩. বৃহত্তর সিলেট: সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার।
১৪. বৃহত্তর চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার।
১৫. পার্বত্য চট্টগ্রাম: রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি।
১৬. বৃহত্তর কুমিল্লা: কুমিল্লা, চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
১৭. বৃহত্তর নোয়াখালী: নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "'বৃহত্তর ফরিদপুরকে ফরিদপুর বিভাগ ঘোষণা করা হবে'"।
- ↑ "প্রস্তাবিত কুমিল্লা বিভাগের নাম হবে ময়নামতি/মেঘনা বিভাগ প্রধানমন্ত্রী"।
- ↑ "বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো"। Archived from the original on ৪ সেপ্টেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "৬৪ জেলার নতুন শ্রেণিবিন্যাস"। Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১০-০৭।
- ↑ ক খ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি" (পিডিএফ)। ২৬ জুলাই ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১২।
- ↑ "ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮"।
- ↑ "পদমর্যাদা ক্রমে জেলা জজ ১৬ ও চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১৭ তে উন্নীত"।
- ↑ "Supreme Court releases full verdict on Warrant of Precedence"।
- ↑ "সাংবিধানিক পদ সর্বাগ্রে থাকবে"। ১ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০২২।
- ↑ "দশ পদের পদমর্যাদা পরিবর্তন"।
- ↑ "ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের রায় প্রকাশ"।